চর আলেকজান্ডার

মুস্তাফিজ's picture
Submitted by Mustafiz on Tue, 23/03/2010 - 2:49pm
Categories:

ভোর চারটা। আমি ঘুমানোর চেষ্টা করছি। মাথাটা কেমন ঝিম ঝিম করছে। মনে হচ্ছে এখনও দৌড়ের উপর, গাড়ি চালাচ্ছি, একবার ডানে আরেকবার বামে ঘুরছি আমি। বালিশে মাথা রেখে মনে হলো বিছানা দুলছে। উঠে যেয়ে এসি ছেড়ে দিলাম, একটা ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা বাতাস বয়ে গেলো ঘরটা জুড়ে। উলটো দিক থেকে গুনতে শুরু করলাম এবার একশো, নিরানব্বই, আটানব্বই, সাতানব্বই...

বেলা এগারোটা। চর আলেকজান্ডার। একটু আগে ঘুম থেকে উঠে নাস্তার টেবিলে, সবার নাস্তা সারা হয়ে গেছে এরই মাঝে। মাতিস দৌড়াচ্ছে এ ঘর থেকে সে ঘরে, আবার দৌঁড়ে বাইরে গেলো, আমার নাস্তা প্রায় শেষ এমন সময় কাছে এসে বললো “বাবা শব্দটা কীসের?” আমি বললাম ঝিঁ ঝিঁ পোকা।

মফস্বল শহরের পাকা বাড়ি, যখন বানানো হয় নদী ছিল পনেরো কিলোমিটার দূরে। এখন এক কিলোমিটারও হবে না, তাই সুযোগ থাকা সত্ত্বেও একতলা বাড়ি উপরে বাড়েনি। বিশাল এলাকা নিয়ে বাংলো মতন বাড়িটার সামনে পেছনে দুটো পুকুর, বৃষ্টি নাই বলে নিচের মাটি দেখা যায়। আর আছে গাছ, আম, জাম্বুরা, কাঠ বাদাম, কামরাঙ্গা, সুপারি, নারকেল কত জাতেরই না গাছ দেখলাম সেখানে। শাঁসওয়ালা ডাবের পানি হাতে মাতিসের সাথে বাইরে এলাম, সামনে পেছনে, উপরে নিচে একটানা ডেকে গেলেও একটা ঝিঁ ঝিঁ পোকারও সন্ধান করতে পারলাম না।

‘৭০ এর ঘূর্ণিঝড়ে বাংলাদেশের এ এলাকার উপর দিয়ে তাণ্ডব বয়ে গিয়েছিল। আমি তখন ছোট। থাকতাম ময়মনসিংহে। মনে আছে সকাল থেকেই চারদিক ছিল সন্ধ্যা সন্ধ্যা, ঘন নীল আকাশ আস্তে আস্তে নেমে আসছিল নিচের দিকে, সেই নীলাকাশ কালো হবার আগেই স্কুল ছুটি হয়ে গেলে বাসায় ফিরতে ফিরতে চারদিক অন্ধকার। পরবর্তী কয়েকদিন বড়োভাই পত্রিকা কেটে কেটে ঝড়ের ছবি জমিয়েছে, ইত্তেফাক, আজাদ এসব পত্রিকার পাতায় পাতায় বীভৎস সেসব ছবি, পাতাহীন বিশাল বৃক্ষের চূড়ায় পতাকার মতো আটকে আছে টিনের চাল কিংবা দুলছে মানুষের লাশ। চর আলেকজান্ডারের নাম তখনই শোনা। ইচ্ছা ছিল গৃহকর্তার থেকে সেদিনের বিবরণ শুনব, বয়সের ভারে চোখ আর কান দুটোতেই উনার সমস্যা থাকায় সে সুযোগ হলো না। বাড়ির বড়ো ছেলে মুক্তিযোদ্ধা হান্নান ভাই সুইডেন প্রবাসী, জুনে ফেরার কথা, ইচ্ছাটা তখনকার জন্য তুলে রেখে বর্তমানে ফিরে এলাম।

কানাডা প্রবাসী মাতিসের বড়োমামীদের পৈত্রিক নিবাস এখানে। মার্চের ১৮ তারিখ বৃহস্পতিবার অফিস করে কাপড় না বদলেই রওয়ানা দিয়েছিলাম। তখন বিকেল ছয়টা, ধারণা পেয়েছিলাম রাত বারোটার আগেই পৌঁছে যেতে পারি আলেকজান্ডার। কিন্তু রাত আটটা বেজে গেলেও যখন কাচপুর সেতু পেরুতে পারলাম না বুঝলাম দুঃখ আছে কপালে। কাচপুর পেরিয়ে কুমিল্লা, সেখান থেকে লাকসাম, সোনাইমুড়ি, বেগমগঞ্জ হয়ে লক্ষ্মীপুর পর্যন্ত চলে এলাম মোটামুটি শান্তভাবেই। সামনের সিট এলিয়ে মাতিস নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছে। পেছনে রিতা আর মাতিসের নানা। টুকটাক কথাবার্তা হচ্ছে আমাদের মাঝে, সমস্তই আমি যেন গাড়ি চালাতে যেয়ে ঘুমিয়ে না পড়ি সেজন্য। লক্ষ্মীপুর এসে শুনলাম আরো চুয়াল্লিশ কিলোমিটার যেতে হবে। এই সেই চুয়াল্লিশ কিলোমিটার, মনে হলো এবড়ো খেবড়ো উঁচু নিচু মাটির রাস্তায় খুব জোরে চালানো গরুর গাড়িতে বসে আছি। প্রতি সেকেন্ডে সেকেন্ডে ঝাঁকি খেতে খেতে রাত তিনটা নাগাদ সে রাস্তাও পেরিয়ে সবাই যখন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে আমি তখন ভাবছি কয়েকঘন্টা পরই আবার এ রাস্তাতেই আমাকে ফিরে যেতে হবে।

শুক্রবারের দুপুর, চারদিক প্রচণ্ড গরমের মাঝে বের হলাম মেঘনার মোহনা দেখব বলে। বাড়ি থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে যেখানে সরকারি রাস্তা এসে মেঘনায় ক্রমাগত বিলীন হয়ে যাচ্ছে সেখানে দাঁড়িয়ে অনুভব করার চেষ্টা করলাম এর বিশালত্ব। আমার সামনে তিনদিকে যতদূর দৃষ্টি যায় শুধু পানি আর পানি, সামনের নীল পানি দৃষ্টি সীমার ওপারে ধূসর হতে হতে মিশে গেছে আকাশের সাথে। কড়া রোদে আকাশে মেঘ নেই, বর্ণ নেই। নদী আর আকাশের সীমানা তাই আলাদা করা যায় না। পায়ের নিচে ঢেউ এসে ধাক্কা দিয়ে দিয়ে মাটি সরিয়ে নিয়ে যায়। সে মাটির রং কালো, মাটি উর্বর। এখানে পানির গভীরতা সর্বোচ্চ দুই হাজার ফুটের কাছাকাছি।

আমরা সবাই দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছি। কত দেশ কত জনপদ পাড়ি দিয়ে, কতজনের দুঃখ আর ভালোবাসা বুকে নিয়ে মেঘনা এসে মিশে যাচ্ছে সাগরে। গঙ্গা, যমুনা আর ব্রহ্মপুত্রের প্রায় সব পানি যে ধারণ করতে পারে তার বিশালত্ব কীভাবে কল্পনা করি আমি? বিশ্বের সবচাইতে চওড়া নদীগুলোর একটি এই মেঘনা এখানে প্রায় ১৫কিলোমিটারের মতন চওড়া ভাবতেও কেমন যেন লাগে।

আমরা যেখানে দাঁড়িয়ে তার পাশে ছোট্ট একটা চায়ের দোকান, দুটো বেঞ্চ আর একটা টুল। মাতিস সেই কখন থেকে টুলে বসে আছে, রোদে পুড়ে যাচ্ছে কিন্তু উঠার নাম নেই, তাকিয়ে আছে সামনের দিকে, সেদিকে একটার পর একটা ঢেউ লাখ লাখ গ্যালন পানি নিয়ে ফেলছে সমুদ্রে, ঢেউ এর মাথায় মাঝে মাঝেই ভেসে উঠছে শুশুক। সে বসে আছে, আমিও যেয়ে বসলাম ওর পাশে। আস্তে করে মাতিস আমাকে বললো “বাবা, আমরা আর কোনোদিন কি এখানে আসব?’

আমাদের ফিরতে হয়, ফিরতে হয় কিছু মন্ত্রমুগ্ধ সুন্দর সময়ের স্মৃতি নিয়ে, যেই স্মৃতি একসময় গল্প হয়ে ভেসে বেড়াবে প্রজন্মান্তরে। তবে ফেরাটা অসহনীয় ছিল না মোটেই। মেঘনার মোহনা দর্শন সাথে আলেকজান্ডারের মহিষের দুধের দই আর ইলিশের স্বাদ ফেরার পুরোটা পথ যেভাবে আচ্ছন্ন করে রেখেছিল তাতে ঢাকায় ফিরেও মনে হচ্ছিল আবারো যাওয়া যেতে পারে সেখানে।

20100319_9623

20100319_9617


Comments

মামুন হক's picture

ছবি কম হইসে। আর কয়েকটা দেওন যায়না বুড়া ভাই?

মুস্তাফিজ's picture

বেশী ছবি তুলি নাই
নেন আরেকটা দিলাম
20100319_9637

...........................
Every Picture Tells a Story

কিংকর্তব্যবিমূঢ়'s picture

পিছন থেকে নেয়া মাতিসের ছবিটা বেশি অসাধারণ ...
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...

মুস্তাফিজ's picture

ধন্যবাদ

...........................
Every Picture Tells a Story

অতিথি লেখক's picture

ছবিটা সত্যিই অনেক সুন্দর!

-স্নিগ্ধা করবী

মুস্তাফিজ's picture

ধন্যবাদ করবী

...........................
Every Picture Tells a Story

নাশতারান's picture

Quote:
আমার সামনে তিনদিকে যতদূর দৃষ্টি যায় শুধু পানি আর পানি, সামনের নীল পানি দৃষ্টি সীমার ওপারে ধূসর হতে হতে মিশে গেছে আকাশের সাথে। কড়া রোদে আকাশে মেঘ নেই, বর্ণ নেই। নদী আর আকাশের সীমানা তাই আলাদা করা যায় না।

প্রথম ছবিটা, তাই না? কী দারুণ বর্ণনা !

ছবিটা আচ্ছন্ন করে দেয় দু' চোখ।

[বানান বিষয়ক পাকনামিঃ দৌড়াচ্ছে, ঘূর্ণি, অনুভব, ইলিশ]

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

মুস্তাফিজ's picture

Quote:
[বানান বিষয়ক পাকনামিঃ দৌড়াচ্ছে, ঘূর্ণি, অনুভব, ইলিশ]
ঠিক করলাম ভাই

...........................
Every Picture Tells a Story

মামুন হক's picture

ধন্যবাদ মুস্তাফিজ ভাই। আমিও নদীর দেশের মানুষ। নদীর ছবি দেখলে, নদীর কথা শুনলে মন কেমন যেন উদাস হয়ে যায়। শুশুকের ছবি দেখিনা কতকাল। আমরা বলতাম ঊদ, সে সময়ে ছোট নদীতেও শুশুক দেখা যেত হরদম। আটকে গেছি যান্ত্রিক জীবনে বড় ভাই, মাঝে মাঝে খুব ইচ্ছা করে নদীর পাড়ে গিয়ে চুপ করে অনেকটা সময় ধরে বসে থাকতে।

মুস্তাফিজ's picture

উদ আর শুশুক দুই জিনিষ, প্রথমটা চারপায়া আর পরেরটা ডলফিন গোত্রের।

...........................
Every Picture Tells a Story

দুর্দান্ত's picture

অসাধারন। আপনার ছবির নীল রংটি মনে পড়িয়ে দিল সেই ২০০০ সালের শীতকালকে। চান্দপুর থেকে নীলকমল, গোয়াল ভাওর, কালুপুরা/চর মেদুয়া, চর মুন্সী, চর আলেক্সান্ডার, চর আলগী, চর গাজী পার হয়ে নলছিড়া চ্যানেল ঘুরে সন্দ্বীপ পর্যন্ত গিয়েছিলাম। পানির এই অসাধারন রংটি বোধ হয় জোয়ারের সময়ে, ভাটির সময় কি এর রং আরেকটু বাদামী হয়?

আহ সেই সকাল গুলো। প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে জেগে জাহাজ এর গলুইতে এসে দাঁড়িয়ে প্রাণ ছেড়ে গাইতাম "আমার সোনার বাংলা, আমি তো মার ভালবাসি", নয়তো "ধন ধান্যে পুষ্পে ভরা"। চেষ্টা করতে হত না, প্রকৃতিই গান টেনে বের করত।
মহিষের দুধের দই এর এক বিঘত ননি অতিক্রম করে তাতে কড়া পাকানো খেজুরের রস ফেলে তাতে মাখানো চিড়া - এই ছিল প্রতিদিনের নাস্তা। আর দুপুরে অবশ্যই ইলিশ। পদ্মার রুপালী চওড়া ইলিশ নয়, সেই ইলিশ আকারে ছোট আর পাখনাগুলো হলদেটে।

ধন্যবাদ মুস্তাফিজ ভাই।

মুস্তাফিজ's picture

Quote:
মহিষের দুধের দই এর এক বিঘত ননি অতিক্রম করে তাতে কড়া পাকানো খেজুরের রস ফেলে তাতে মাখানো চিড়া
আসলেই জিনিষ একটা

...........................
Every Picture Tells a Story

ফাহিম's picture

অসাধারণ মুস্তাফিজ ভাই। আপনার এই লেখাগুলোতে খাঁটি ট্রাভেল ব্লগের মজা পাওয়া যায়!! পারলে আরও কয়টা ছবি দিয়েন...

=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;

=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;

মুস্তাফিজ's picture

ধন্যবাদ ফাহিম

...........................
Every Picture Tells a Story

বইখাতা's picture

প্রথম ছবিটা দেখে ইচ্ছা করছে আমিও বসে থাকি এভাবে সারাদিন। ভীষণ সুন্দর ছবি।

মুস্তাফিজ's picture

জায়গাটা অদ্ভুত বললেও কম বলা হবে

...........................
Every Picture Tells a Story

তানভীর's picture

এক সময় চট্টগ্রামের রাস্তায়/হোটেলে "রামগতি আর চর আলেকজান্ডারের মোষের দই পাওয়া যায়" সাইনবোর্ড দেখতাম। কখনো খাওয়া হয় নি মন খারাপ

ছবি, বর্ণনা দু'টোই ভালো লাগল।

মুস্তাফিজ's picture

রামগতি উপজেলা সদর মনে হয় চর আলেকজান্ডার।

...........................
Every Picture Tells a Story

তিথীডোর's picture

ঘুমে চোখ টেনে আসছে, কাল মন দিয়ে পড়বো...
মাতিসকে কিউউউট দেখাচ্ছে! খাইছে

--------------------------------------------------
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

মুস্তাফিজ's picture

আচ্ছা কালকে কথা বলবো

...........................
Every Picture Tells a Story

তিথীডোর's picture

এবার মন দিয়ে পড়েছি... দেঁতো হাসি
কি- বোর্ড, ক্যামেরা:
জিতলো দুটোই!!
চলুক

--------------------------------------------------
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

মুস্তাফিজ's picture

ধন্যবাদ তিথীডোর

...........................
Every Picture Tells a Story

সুহান রিজওয়ান's picture

এক নম্বর ছবিটার জন্যে কোন বিশেষণই যথেষ্ঠ নয়... ওটা একটা কবিতা।

_________________________________________

সেরিওজা

মুস্তাফিজ's picture

ধন্যবাদ সুহান

...........................
Every Picture Tells a Story

প্রকৃতিপ্রেমিক's picture

লেখাটা পড়তে পড়তে মনে মনে চাইছিলাম যেন ছবি এসে লেখার ফ্লো-টাকে নষ্ট না করে। মুস্তাফিজ ভাই, আপনার লেখা দিন দিন উপর দিকে উঠতেছে। খুবই ভালো লেগেছে বর্ণনা, আবেগ। সুপার্ব।

মুস্তাফিজ's picture

Quote:
আপনার লেখা দিন দিন উপর দিকে উঠতেছে
হুঁ এখন তো এসবই বলবেন, যখন কোন জাতের লেখা হতোনা সেসময় তো কিছুই বলেন নাই। তবে আমি লীলেন'দাকে ধন্যবাদ দেই লেখার ব্যাপারে পরামর্শ দেবার জন্য।

...........................
Every Picture Tells a Story

প্রকৃতিপ্রেমিক's picture

ভালো পয়েন্ট ধরেছেন। সবকিছু সবসময় বলতে পারিনা, দূর্বল মানুষ তো। অনেক আগে, ইশতির পরামর্শে দুয়েকবার ট্রাই করেছিলাম। ফলাফল নেগেটিভ। লোকে ভালভাবে নেয়না।

আমার মন্তব্য পাঠের পর সামান্য মন্তব্য মাত্র। লেখা খারাপ লাগলে অনেক সময় খারাপ বলতে পারিনা, তবে ভালো লাগলে বলে ফেলি। আপনার লেখা কখনোই খারাপ মনে হয়নি।

মুস্তাফিজ's picture

আবারো ধন্যবাদ পিপি দা

...........................
Every Picture Tells a Story

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর's picture

যেমন লেখা তেমন ছবি... দূর্দান্ত...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

মুস্তাফিজ's picture

ধন্যবাদ নজরুল ভাই।

...........................
Every Picture Tells a Story

উজানগাঁ's picture

১.
একজন ভালো ফটোগ্রাফার ভালো লেখক হলে সমস্যাটা কোথায় জানেন ? প্রথম থেকেই পাঠকরা ভেবে রাখেন, লেখাটা খুললেই কিছু ভালো ছবি দেখতে পাবেন। যখন পুরো পোস্ট জুড়ে ছবির থেকে লেখার আধিক্য দেখেন তখনই মর্মাহত হন। অনেকেই দায়সারা ঘোচের মন্তব্য দিয়ে সরে পড়েন।

২.
আমার মনে হয় লেখাটা পোস্টানোর আগে এই ভাবনাটা আপনারও হয়েছিল। আপনিও ভেবেছিলেন আপনার এই লেখা আপনার ছবিকে ছাড়িয়ে যেতে পারলো কী না।

৩.
এই লেখাতে কোনো ছবি না থাকলেও আমার সমস্যা হতো না। লেখার বর্ণনা আপনার ছবিকে ছাড়িয়ে গেছে এইটা নি:সন্দেহে বলতে পারি।

৪.
এখন আপনি হাসবেন না কাঁদবেন আপনি ডিসাইড করেন। চোখ টিপি

মুস্তাফিজ's picture

উজানগাঁ
আমার ছবি পোস্টানোর আলাদা প্লাটফর্ম আছে তুমি জানো, তারপরও সচলে ছবি যে পোস্টাইনা তা না। তবে ইদানীং কেন যেনো তোমাদের লেখা পড়ে মনে হয় আমার লেখার আরো উন্নতি চেষ্টা করলেই করতে পারি, আমি সে চেষ্টাই করছি। হ্যাঁ এখানে আমি চাইব আমার লেখা যেন ছবিকে ছাড়িয়ে যায়।
ধন্যবাদ তোমাকে।

...........................
Every Picture Tells a Story

আলমগীর's picture

ছবি তোলেন কোন হাতে, আর লিখেন কোন হাতে? একটা আরেকটারে পাল্লা দিচ্ছে।

মুস্তাফিজ's picture

ধন্যবাদ, ইদানীং হাতের ব্যথাটা আবার বেড়েছে, ডাক্তারের পরামর্শ নেব নেব করে নেয়া হচ্ছেনা।

...........................
Every Picture Tells a Story

বাউলিয়ানা's picture

কূল নাই কিনার নাই এরকম নদী দেখা হয় নাই, যদিও সাগর পাড়ে থেকেছি।
অসাধারন লাগল মুস্তাফিজ ভাই।
লেখা আর ছবি দুটোর জন্যই চলুক

মুস্তাফিজ's picture

ধন্যবাদ বাউলিয়ানা। আমি আরো কয়টা নদীর মোহনা দেখেছি কিন্তু এমন বিশালত্ব দেখিনি।

...........................
Every Picture Tells a Story

স্পর্শ's picture

আপনার ছবি, লেখা, আঁকা ঘোরাঘুরি দেখি আর ভাবি, এই মানুষটা বাঁচতে জানে।
পৃথিবীর খুব কম মানুষই বাঁচতে শেখে। আপনি তাদের একজন। অভিনন্দন গ্রহন করুন। হাসি


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

মুস্তাফিজ's picture

ধন্যবাদ স্পর্শ, মতের কিছুটা ভিন্নতা আছে। তবে আমি জীবন উপভোগ করি।

...........................
Every Picture Tells a Story

নজমুল আলবাব's picture

ভাই, নতুন করে কিছু বলতে হবে?

------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল

মুস্তাফিজ's picture

হবে।

...........................
Every Picture Tells a Story

দুষ্ট বালিকা's picture

ধুর মিয়াভাই...আপ্সুসগুলা খালি বাড়ায়ে যান... মন খারাপ

লেখা অসাধারণ হয়েছে...আর ছবি...আহ!

-----------------------------------------------------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে আমার প্রাণের কাছে চলে আসি, বলি আমি এই হৃদয়েরে; সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।

মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।

মুস্তাফিজ's picture

আপুরে আমি কোত্থেকে আফসোস বাড়াইলাম বুঝলামনা।

...........................
Every Picture Tells a Story

অতন্দ্র প্রহরী's picture

মাতিসের ছবিটা অসম্ভব সুন্দর। কিন্তু তারচেয়েও সুন্দর আপনার বর্ণনা। আপনার ছবি তো বটেই, লেখাও বরাবরই ভাল্লাগতো আমার। কিন্তু এই লেখাটা আগের সব লেখাকে ছাড়িয়ে গেছে। আপনার পোস্ট দেখলেই, লোকজনের সাধারণত সুন্দর ছবির লোভে ঢোকার দিন শেষ, মুস্তাফিজ ভাই খাইছে

মুস্তাফিজ's picture

ধন্যবাদ প্রহরী। মন থেকে।

...........................
Every Picture Tells a Story

রানা মেহের's picture

এই লেখায় ছবির কোন দরকারই ছিলনা।
পুরো লেখাটাই একটা ক্যানভাস

তারপরো....
মাতিসের ছবিটা অনেক সুন্দর লাগলো
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

মুস্তাফিজ's picture

আপনি এলেন এবং চলেও গেলেন, ঠিকমত কথাও হলোনা। আমি কিন্তু কথা রেখেছিলাম সুন্দরবন যাবার বন্দোবস্ত করে। হাসি

ধন্যবাদ রানা।

...........................
Every Picture Tells a Story

s-s's picture

ছবি, ছবি ছবি.. ... ... ... ... ... ... বাংলা সিনেমার স্টাইলে ফেইড আউট করে বললাম।
কই কই কই.... .. ....
আরো আরো আরো .... ... ... ...

মুস্তাফিজ's picture

বেশী রোদে ছবি তুললে মেকাপ নষ্ট হয়। হাসি

...........................
Every Picture Tells a Story

s-s's picture

কী হবে তাহলে?বলুন তো? কোথায় ভাবছিলাম বাংলাদেশে গিয়ে মেকআপ দিয়েই বাজিমাত করে দেবো মন খারাপ মন খারাপ আপনার ক্যামেরায় ধরা পড়ে গ্যালে তো মুশকিল!

মুস্তাফিজ's picture

অসুবিধা নাই, তখন না হয় একটা ফিল্টার লাগিয়ে নেয়া যাবে। হাসি

...........................
Every Picture Tells a Story

অমিত's picture

জায়গাটা সুন্দর বোঝা যাচ্ছে। কিন্তু সমস্যা হল এসব জায়গায় যেয়ে আধা বেলার বেশি থাকতে ভাল লাগে না। খুব বেশি হলে একদিন। এরপরই শহরে ফেরার জন্য অস্থির লাগতে থাকে।

মুস্তাফিজ's picture

থাকাটা নির্ভর করে কতটুকু পিছুটান ফেলে এসেছেন বা কী কী কাজ ফেলে এসেছেন তার উপর। আমি যা করি কোথাও বেড়াতে গেলে সাধারণত ঢাকায় যোগাযোগ একদমই রাখিনা। ইদানীং একটু ব্যতিক্রম হয় ছেলেকে রেখে গেলে।

...........................
Every Picture Tells a Story

ওডিন's picture

আহ! সেইরকম ছবি, সেইরকম লেখা। ভাবতেছি এখন থেকে আপনার লেখায় ইমোটিকন দিয়ে মন্তব্য করবো। আমার ভোকাবুলারি নিঃশেষপ্রায়।

আচ্ছা- মহিষের দুধের দই জিনিসটা খুব ভালো কিছু? মহিষ জিনিসটা তো বিপদজনক মনে হয় আমার কাছে তাই বলছিলাম আর কি।
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না

মুস্তাফিজ's picture

ধন্যবাদ ওডিন, আমি কিন্তু তোমার লেখা খুব আগ্রহ নিয়ে পড়ি, ছবিও কম যায়না।
যতদূর জানি মহিষের দুধ অনেক দিক থেকে গরুর দুধের চাইতে ভালো, এ সংক্রান্ত একটা লিংক দিলাম http://www.indiadairy.com/info_buffalo_milk_vs.html দেখতে পারো।

...........................
Every Picture Tells a Story

ওডিন's picture

দুইবার- তাই ঘ্যাচাং!
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না

তাসনীম's picture

দারুন লেগেছে।

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++
মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, চিরদিন কেন পাই না?

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

মুস্তাফিজ's picture

ধন্যবাদ তাসনীম।

...........................
Every Picture Tells a Story

ইশতিয়াক রউফ's picture

কেন যেন প্রথম ছবিটা দেশের কথা খুব মনে করিয়ে দিলো...

মুস্তাফিজ's picture

চলে আসেন।

...........................
Every Picture Tells a Story

আনন্দী কল্যাণ's picture

প্রথম ছবিটা খুব ভাল লাগল, বিশেষ করে কুঁজা হয়ে বসার ভঙ্গিটা....

মুস্তাফিজ's picture

ধন্যবাদ আনন্দী কল্যাণ

...........................
Every Picture Tells a Story

সাইফ তাহসিন's picture

গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

মুস্তাফিজ's picture

আরে ভাই পাগল নাকি?

...........................
Every Picture Tells a Story

চড়ুই's picture

এই লেখার প্রতিটা প্যারাই আলাদা আলাদা ভাবে আলাদা আলাদা অনুভুতি তৈরী করে। আপনার অন্যান্য লেখার চাইতে অন্যরকম হয়েছে এবারেরটা।
আর ছবি? নাহ্‌ , লেখা দিয়ে ছবিকে ছাড়িয়ে যেতে পারেননি। প্রথম ছবিটার কথা বলি, এমন শুধু কল্পনাতেই দেখা যায়।
আরো বেশী বেশী বেড়াতে যান। হাসি

মুস্তাফিজ's picture

পেনাং যাবো শীঘ্রই

...........................
Every Picture Tells a Story

শরতশিশির's picture

দেখেছি আগেই, মন্তব্য করা হয়নি। মেঘনা আমি দেখেছি রাতে, একদম গা ছমছমে কালো-কুচকুচে পানি। সেই তুলনায় প্রখর রোদে এরকম 'টারকোয়েজ ব্লু' - অসাধারণ! আমার দুঃখ, আমি কোনদিন শুশুক দেখলাম না মেঘনায়, অথচ প্রায় সবাই দেখে। প্রথম ছবিতো দুর্দান্ত, আর পরেরটা সুন্দর হলেও নদী ভাঙনের ভয়াবহতা মনে করিয়ে দেয়।

সাথে আপনার বর্ণনাও চমৎকার! ক'দিন আগে ছড়াও লেখলেন - এত গুণ আপনার, খুব ভাল লাগে।

আমরা যখন ছোটবেলায় শীতের ছুটিতে গ্রামের বাড়ি যেতাম, তখন আমাদের দিদা (দাদী), বিকেলবেলায় মহিষের দুধের সর, গাঢ় করে সাথে গুড় মেখে, গরম গরম খেতে দিতেন। আমাদের সীমান্ত এলাকায় গ্রাম, ঠান্ডা আর সন্ধ্যা হাতে হাত ধরে আগে নেমে পড়তো। আপনার মন্তব্য দেখে মনে পড়ে গেলো এসব। ওঁনারাও বেঁচে নেই, আমাদেরও আর যাওয়া হয় না, আর এসব স্মৃতি আর নতুন করে তৈরী হয় না। আমি খুব মিস করি এসব খুব ছোট ছোট অথচ কী মধুর টুকরো টুকরো ছবি। দিদা'র লাকড়ির চুলোয় রান্না করা সব খাবার, ঢেঁকিছাটা চাল, সদ্য নদী থেকে ধরে আনা মাছ, উঠোনে চড়ে বেড়ানো মোরগ আর টাটকা ডিম, বিকেল হলেই ''মালাই'' খাওয়া, আর সন্ধ্যা হলেই একটু খেয়ে দুরদর্শন দেখতে দেখতে (বর্ডার কাছে হওয়াতে ওটাই পরিষ্কার আসতো বিটিভি'র চেয়ে) বেহুশ হয়ে আমি, আমার ভাই আর কাজিন ঘুম - আমি কোনোদিন ভুলবো না!

ভাল থেকেন মুস্তাফিজ ভাই, ঢাকায় আসলে দেখা হবে অবশ্যই! হাসি

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
আমি দেখতে চাই না বন্ধু তুমি
কতখানি হিন্দু আর কতখানি মুসলমান
আমি দেখতে চাই তুমি কতখানি মানুষ।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
আমি দেখতে চাই না বন্ধু তুমি
কতখানি হিন্দু আর কতখানি মুসলমান
আমি দেখতে চাই তুমি কতখানি মানুষ।

মুস্তাফিজ's picture

আপনারাও ভালো থাকবেন।

নদী ভাঙ্গন এমন পর্যায়ে গিয়েছে যে ঐ ছবিটার অংশটুকু চারদিন পরই ইতিহাস হয়েগেছে শুনলাম।

আমাদের যাদের গ্রামে যাতায়াত আছে আমার ধারণা সবাই সেই স্মৃতিগুলো আজীবন বয়ে বেড়াবে।

আসুন দেখা হবে।

...........................
Every Picture Tells a Story

আহমাদ নাসিফ's picture

খুব সুন্দর। ধন্যবাদ।

Post new comment

The content of this field is kept private and will not be shown publicly.