দিবসপঞ্চক — নভেম্বর ২০১৮

ষষ্ঠ পাণ্ডব's picture
Submitted by Shashtha Pandava on Thu, 29/11/2018 - 1:45pm
Categories:

২৫শে নভেম্বর ২০১৮

খবর-১: নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার সৈয়দনগর দড়িপাড়া এলাকায় নাজমা বেগমের ছাগল স্থানীয় মোরশেদ মিয়া ও তার সহযোগীরা চুরি করে নিয়ে যায়। নাজমা এই ব্যাপারে অভিযোগ করলে মোরশেদ মিয়া ছুরিকাঘাতে নাজমার বাম চোখ উপড়ে ফেলে।

খবর-২: গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মণ্ডলপাড়া এলাকায় গার্মেন্টস কর্মী জুলেখাকে তার স্বামী রাজমিস্ত্রী ইলিম ফকির শ্বাসরোধ করে হত্যা করে পালিয়ে গেছে।

খবর-৩: পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি পৌরসভার সোনালী ব্যাংক এলাকায় মাকসুদা বেগম নামে এক নারীকে গলা কেটে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে। তাঁর স্বামী গৃহকর্মী ও তার সহযোগীদের দ্বারা ডাকাতি প্রচেষ্টার অভিযোগ করলেও বাসা থেকে নগদ অর্থ বা স্বর্ণালঙ্কার লুট হয়েছে কিনা তা জানাতে পারেননি।

খবর-৪: গাজীপুর জেলার টঙ্গীর খরতৈল এলাকার একটি বাড়ি থেকে অজ্ঞাতনামা এক নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, দুই সপ্তাহ আগে ঐ নারী এবং একজন পুরুষ স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়ে ওই ঘর ভাড়া নেন। ঘটনার সময় থেকে স্বামীর পরিচয়দানকারী ব্যক্তি পলাতক আছে।

সংবাদপত্র থেকে এই দিনের এই খবরগুলো সংগ্রহের পর মনে হলো — কী হবে! আরও খোঁজ করলে এমন আরও অনেক খবর পাওয়া যাবে। বছরের যে কোন দিনের সংবাদপত্র ঘাঁটলে নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতার এমন খবর গণ্ডায় গণ্ডায় পাওয়া যাবে।

১৯৬০ সালের ২৫শে নভেম্বর দোমিনিকান প্রজাতন্ত্রের তৎকালীন একনায়ক রাফায়েল লিওনিদাস ত্রুখ্বিযো মলিনা’র দুর্বৃত্তের দল স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের অংশগ্রহনের অভিযোগে মিরাবালদের তিন বোন প্যাত্রিয়া মার্সেদেস মিরাবাল, মারিয়া আর্খ্বেন্তিনা মিনের্ভা মিরাবাল আর আন্তোনিয়া মারিয়া থেরেজা মিরাবালকে লা কুমব্রে পর্বতমালা এলাকার আখক্ষেতে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৮১ সাল থেকে এই দিনটি ‘আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিবাদ দিবস’ হিসাবে পালন করা হয়। ১৯৯৯ সালে জাতিসংঘ এই দিনটিকে ‘আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন বিলোপ দিবস’ হিসাবে পালনের ও ২৫শে নভেম্বর থেকে ১০ই ডিসেম্বর পর্যন্ত ‘আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিবাদ পক্ষ’ হিসাবে ঘোষণা করে।

এখনো সারা দুনিয়ায় প্রতি বছর কমপক্ষে ৮৭ হাজার জন নারী খুন হন, মানে প্রায় প্রতি ৬ মিনিটে ১ জন নারী খুন হন। এই ৮৭ হাজার জনের মধ্যে কমপক্ষে ৩০ হাজার জন খুন হন তাদের বর্তমান বা সাবেক সঙ্গীর দ্বারা, আর ২০ হাজার জন খুন হন পরিবারের অন্য সদস্য অথবা ঘনিষ্টজনদের দ্বারা। এখনো প্রতি ৯ সেকেন্ডে একজন নারী প্রহৃত হন বা শারিরীক নির্যাতনের শিকার হন। এখনো সারা দুনিয়ায় প্রতি বছর কমপক্ষে ১২ কোটি নারী ধর্ষণ বা যৌন নির্যাতনের শিকার হন। আমরা জানি, যৌন নির্যাতনের প্রকৃত সংখ্যা এই রিপোর্টেড সংখ্যার কয়েকগুণ হবে।

কাজীর গরু চিরকাল কেতাবেই বাস করে যায়, গোয়ালে কখনো তার দেখা পাওয়া যায় না।

২৬শে নভেম্বর ২০১৮

দশ বছর আগের এই দিনে সকালে বাচ্চাকে স্কুলে নামিয়েছি, সারা দিন অফিস করেছি, সন্ধ্যায় বাসায় ফিরে টেলিভিশনে খবর দেখেছি, ফাঁকে ফাঁকে সচলায়তন পড়েছি আর পরের দিন একটা পোস্ট দেবো এমনটা ভেবে টুকটুক করে কিছু লিখেছি। আমি যখন নিশ্চিন্ত মনে এসব করছি তখন পাকিস্তানের ইসলামী জঙ্গী দল লস্কর-ই-তৈয়্যবা’র ১০ জন খুনী মুম্বাই আক্রমণ করছে। পরের দিনটা গেছে সারা দিন টেলিভিশনের এই চ্যানেল ওই চ্যানেল দেখে। এই ঘটনার ৮ বছর পর গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে ইসলামী জঙ্গীগোষ্ঠীদের আক্রমণের সময় সারাটা রাত চরম উৎকণ্ঠায় কাটানোর সময় বুঝতে পারছিলাম ২০০৮ সালের নভেম্বরের ২৬ থেকে ২৯ তারিখ পর্যন্ত মুম্বাইসহ সারা ভারতের শত কোটির অধিক মানুষ কী সীমাহীন আতঙ্ক আর উৎকণ্ঠায় পার করেছেন! ১৭৪ জনের অধিক মানুষকে হত্যা, ৩০০ জনের অধিক জনকে আহত করার এই ঘটনায় ঐ ১০ জন খুনী আর তাদের দলের বাকিরা কী অর্জন করলো? কয়েকশ’ পরিবারকে ধ্বংস করে দিয়ে তারা কোন সন্তুষ্টি অর্জন করলো?

মুম্বাইয়ের ঘটনা যেমন শুরু ছিল না, এটা তেমন শেষ ঘটনাও ছিল না। তবে পাকিস্তান থেকে ১০ জন খুনীর দল এসে মুম্বাইয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ মহানগরে এসে এমন তাণ্ডব চালাতে পারাটা যেমন ভারতের নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতাকে প্রকটভাবে চিহ্নিত করেছে, তেমন বিনা কারণে নিরীহ মানুষের ওপর বড় আকারের এবং এক দেশ থেকে আরেক দেশে গিয়ে হত্যাযজ্ঞ চালানোর ব্যাপারে ইসলামী জঙ্গীগোষ্ঠীগুলির সক্ষমতাকেও চিহ্নিত করেছে।

অনেকে মনে করতে পারবেন ঐ সময়ে এই হামলাকে সমর্থনকারী অনেকের কুৎসিত উল্লাস সামাজিক মাধ্যমগুলোতে দেখা গেছে। বুঝতে হবে — জঙ্গীরা আকাশ থেকে পড়ে না, আমাদের মতো দেখতে জীবদের মধ্য থেকেই বের হয়।

২৭শে নভেম্বর ২০১৮

খবরঃ জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদকে আজ ২৭শে নভেম্বর, ২০১৮ মঙ্গলবার সকালে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। জাপা চেয়ারম্যানের প্রেস সচিব সুনীল শুভ রায় জানান, তিনি হাঁটুব্যথাসহ নানা শারিরীক জটিলতায় ভুগছেন।

২৮ বছর আগে সারা বাংলাদেশ যখন সামরিক স্বৈরাচার এরশাদকে উৎখাতের আন্দোলনে নেমেছে তখন ঠিক এই দিনে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ থেকে টিএসসি হয়ে শাহবাগ যাবার পথে ডাঃ মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন আর ডাঃ শামসুল আলম মিলনকে বহনকারী রিক্‌শাকে আততায়ীরা থামায়। আততায়ীরা খুব কাছ থেকে গুলি করে ডাঃ মিলনকে হত্যা করে। এই ঘটনায় সারা দেশ প্রতিবাদে ফেটে পড়ে। ৯ দিনের মাথায় এরশাদের পতন ঘটে।

ডাঃ মিলন হত্যার সঠিক বিচার হয়নি। আজকাল অনেক দলের অনেকেই এই দিনে ডাঃ মিলন হত্যার পুনঃতদন্ত ও পুনঃবিচার দাবি করেন। খোদ এরশাদও গত বছর দাবি করেছে সে ক্ষমতায় যেতে পারলে ডাঃ মিলন হত্যার বিচার করবে।

এরশাদ অমন দাবি করতেই পারে। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল এবং ৯ বছরের দুঃশাসনের জন্য এরশাদের বিচার গত ২৮ বছরে হয়নি। তার সম্পদের প্রকৃত হিসাব নেয়া হয়নি বা সম্পদের উৎস সম্পর্কে তাকে জবাবদিহী করতে হয়নি। এই সময়ে বার বার রংপুরের মানুষ তাকে ভোট দিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত করেছে। সে মন্ত্রীর পদমর্যাদায় প্রধানমন্ত্রীর দূত হয়েছে। ৯ বছর ধরে এরশাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রামকরা দলগুলোর অনেকগুলো আজ তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী, নির্বাচনের সঙ্গী। ইংরেজিতে একটা কথা আছে, রাজনীতি অদ্ভূত শয্যাসঙ্গী তৈরি করে।

এরশাদকে নিয়ে গত ২৮ বছর ধরে বিভিন্ন দলের রাজনীতি দেখলে কারো মনে হতেই পারে নীতি-নৈতিকতা আর রাজনীতি দুটো মিউচ্যুয়ালি এক্সক্লুসিভ বিষয়।

২৮শে নভেম্বর ২০১৮

আজ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন জমা দেবার শেষ দিন। আমি নিজে পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়কাল থেকে ভোটার। তখন থেকে আজ পর্যন্ত ৬টি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ২টিতে ভোট দেবার সুযোগ হয়নি — প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় নির্বাচিত হয়েছে বলে। বাকি ৪টি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ইতিহাসে একবার বিএনপি’র একজন প্রার্থী এবং ঐ বারই আওয়ামী লীগের একজন কর্মী আমার কাছে ভোট চেয়েছিলেন। এছাড়া বাকি ৩ বার এবং এই সময়কালে ঘটা অনেকগুলো স্থানীয় সরকার নির্বাচনের কোনটাতে আমার কাছে কেউ ভোট চাননি – না কোন প্রার্থী, না তার কোন কর্মী। এই সময়কালে বাসস্থান পরিবর্তনজনিত কারণে আমি ৩টি পৃথক নির্বাচনী এলাকার ভোটার ছিলাম। কিন্তু কোন এলাকাতেই কোন প্রার্থী বা তার কর্মী আমার কাছে ভোট চাইতে আসেননি, আমার বাসায় নির্বাচনী ইশতেহার বা প্রার্থীর ক্রেডেনশিয়াল রেখে যাননি। এই ব্যাপারে আমি আমার আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, প্রতিবেশী-সহকর্মীদের জিজ্ঞেস করেছি। তাঁদের কারো অভিজ্ঞতা আমার চেয়ে খুব বেশি ব্যতিক্রম নয়। অথচ উচিত ছিল প্রতিটি নির্বাচনে খোদ প্রার্থী বা তার কর্মী আমাদের প্রত্যেকের কাছে এসে ভোট চাইবেন, তাদের নির্বাচনী ইশতেহার ও প্রার্থীর ক্রেডেনশিয়াল দিয়ে যাবেন, প্রকাশ্য স্থানে নির্বাচিত হলে তিনি কী কী করবেন তার ফিরিস্তি ঝোলাবেন। আমরা সেসব দেখে শুনে বুঝে ভোট দেবো। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। বাস্তবে আমরা দেখতে পাই প্রার্থীর ছবি আর তার নির্বাচনী প্রতীক সংবলিত পোস্টার ঝুলানো থাকে যেখানে লেখা থাকে ‘অমুককে তমুক মার্কায় ভোট দিন’। কিন্তু তাকে কেন ভোট দেবো, বা তার প্রতিদ্বন্দ্বীকে কেন ভোট দেবো না সেকথা লেখা থাকে না। কেউ এসে সেকথা বলেও যান না।

আমরা শুনি এক একটা নির্বাচনে এক একজন প্রার্থী নাকি প্রচার-প্রচারণায় বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করেন। নির্বাচনের সময়ে তারা এবং তাদের কর্মীরা নাকি কাজ করতে করতে নাওয়া-খাওয়া করার সময় পান না। যদি ভোটারের কাছে নাই পৌঁছাতে পারেন তাহলে ঐসব নেতাকর্মীরা কোন কাজে এতো ব্যস্ত থাকেন! যদি ভোটারদের কাছে নির্বাচনী ইশতেহার আর প্রার্থীর ক্রেডেনশিয়াল না পৌঁছায় তাহলে কোন কাজে তারা এতো অর্থ ব্যয় করেন! যে প্রার্থী নিজে বা তার কর্মী ভোট চাইবার জন্য আমার কাছে পৌঁছাতে পারেন না, তিনি নির্বাচিত হলে তার চৌহদ্দিতেও কি আমি পৌঁছাতে পারবো!

আমি ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষায় আছি। দেখি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোন প্রার্থী বা তার কর্মী আমার কাছে ভোট চাইতে আসেন কিনা। অথবা তারা তাদের নির্বাচনী ইশতেহার বা প্রার্থীর ক্রেডেনশিয়াল আমার বাসায় পৌঁছে দেন কিনা।

২৯শে নভেম্বর ২০১৮

সচলে আমার দেয়া পোস্টগুলোতে মোট ছবির সংখ্যা ৫টিও হবে না। এর কারণ হচ্ছে ১১ বছরেও আমি এই ব্যাপারটাতে সড়গড় হইনি। তা আমি পারি বা না পারি যারা পারেন তারা প্রায়ই চমৎকার সব ছবি ব্লগে পোস্টান। ইদানীংকালে লক্ষ করলাম সচলের পুরনো অনেক ব্লগ থেকে ছবি উধাও! অনেক ছবিব্লগ এখন ছবিবিহীনব্লগে পরিণত হয়েছে। এর কারণ বোধকরি ছবিগুলো যেখান থেকে এখানে যোগ করা হয়েছিল সেই জায়গাগুলো এখন নাই হয়ে গেছে। এই কারণে সচলের অসংখ্য পোস্টে থাকা ইস্নিপস-এর সব লিঙ্ক বা ইউটিউবের পুরনো লিঙ্কগুলো অকেজো হয়ে গেছে। একই ঘটনা ঘটেছে অসংখ্য পত্রপত্রিকার প্রতিবেদনের লিঙ্কগুলোর ক্ষেত্রে। এতে অনেক পোস্ট অবোধ্য হয়ে গেছে।

সচলায়তনের বাইরে আরও কিছু ব্লগে এককালে অল্প কিছু পোস্ট দিয়েছিলাম। সেসব ব্লগ এখন হয় বিলুপ্ত হয়ে গেছে নয়তো আগের সবকিছু মুছে নতুন চেহারায় এসেছে। ফলে ঐসব ব্লগে দেয়া আমার সব পোস্ট ভোগে গেছে। এর কোন কোন লেখার ব্যাক-আপ না থাকায় আমার ওই লেখাগুলো চিরতরে হারিয়ে গেছে। এক সময় একটা পেন ড্রাইভে আমার যাবতীয় লেখা রাখতাম, অন্য কোন ব্যাক-আপ ছিল না। এক সকালে দেখি পেন ড্রাইভ ফক্‌ফকা, তাতে কোন ফাইল নেই। নানা কায়দা কানুন করে ইংলিশে লেখা ফাইলগুলো উদ্ধার করা গেলেও বাংলা ফাইলগুলো চিরতরে হারিয়ে যায়। এই ঘটনায় আমার বুকের ভেতরটা ফাঁকা হয়ে যায়। অনেকদিন পর্যন্ত আমার কেমন যেন খালি খালি লাগতো।

আমি কোন বিখ্যাত ব্যক্তি না। আমি মারা যাবার পর কেউই আমার নাম মনে রাখবে না। সুতরাং আমি চলে যাবার পর আমার লেখা টিকে থাকলো কি থাকলো না এটা নিয়ে আমার কোন মাথাব্যথা নেই। কিন্তু আমি যতদিন বেঁচে আছি ততদিন পর্যন্ত আমি চাইবো আমার লেখাগুলো কোথাও না কোথাও থেকে যাক যাতে কখনো মনে হলে সেগুলো আবার যেন পড়তে পাই। এরপর সেগুলোর কোন অস্তিত্ত্বও না থাকলে কোন আফসোস নেই।

*************************

প্রতি নভেম্বরে আমি অপেক্ষা করি এক দিন এক বেলাতেও যেন বৃষ্টি হয়। তাহলে ২৩ বছর আগের মতো আমি আবার শীতল বৃষ্টিতে ভিজবো, চীৎকার করবো, ঊচ্চ শব্দে ‘গানস্‌ এন’ রোজেস’-এর ‘নভেম্বর রেইন’ বাজাবো।

এবছরের নভেম্বরের আরও একটা দিন বাকি আছে, দেখি বৃষ্টি হয় কিনা!

When there's no one left to blame
So never mind the darkness
We still can find a way
'Cause nothin' lasts forever
Even cold November rain


Comments

নুরুজ্জামান মানিক's picture

হাজিরা দিয়ে গেলাম ।

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

ষষ্ঠ পাণ্ডব's picture

এখানে আপনার হাজিরা দেখতে পেয়ে কী যে ভালো লাগছে তা বলে বোঝাতে পারবো না। আশা করি শুধু মন্তব্য না, অচিরেই পোস্ট নিয়েও হাজির হবেন।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অনার্য সঙ্গীত's picture

ভয় দেখায়েন না। উনি মন্তব্যেই হাজিরা দিক আপাতত। সবাই মন্তব্যে হাজিরা দিলে লেখারও কিছু লোক পাওয়া যাবে।

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

অনার্য সঙ্গীত's picture

আমি একবারই ভোট দিয়েছি। ২০০৮ সালে। নতুন ভোটার তখন আমি। ব্যারিস্টার তাপসের অঞ্চলে ভোটার ছিলাম। ভোট কেন দেব সেসব লেখা একটা লিফলেট পেয়েছিলাম বলে মনে পড়ে।

নীতি নৈতিকতা জিনিসগুলোতে আমার কোন আস্থা নেই। কেউ নীতিবান হয়ে ভালো কাজটি করবেন, সেই আশা করি না।

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

ষষ্ঠ পাণ্ডব's picture

Quote:
কেউ নীতিবান হয়ে ভালো কাজটি করবেন, সেই আশা করি না

- মানুষ তাহলে কীসের বলে বলীয়ান হয়ে ভালো কাজ করবে?


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

হাসিব's picture

১।
আমি গত ৬ মাস ইন্ডিয়ায় সংবেদনশীলতার যুক্তরাষ্ট্রীয় চেহারা বোঝার চেষ্টা করছি। আমার প্রাথমিক অনুমান হল বেশিরভাগ ঘটনা বা দুর্ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রীয় পর্যায়ে কোন দাগ ফেলতে পারে না। দক্ষিণে দূর্ঘটনায় ১০০ জন মরলেও পূর্বে, উত্তরের অনলাইন ঠেকগুলোতে কোন সাড়া পাওয়া যায় না। মুম্বাই হত্যাযজ্ঞের ক্ষেত্রেও সম্ভবত এটা খাটে। আমাদের দেশে হোলি আর্টিজান নিয়েও একই বিষয়। নির্দিষ্ট শ্রেণীর বাইরে এর কোন প্রভাব নেই। এমনকি ঢাকা শহরে যেসব কাণ্ড হয় সেসব নিয়ে মফস্বলে থাকা লোকেরা ভাবে কিনা সেটা নিয়েও সন্দেহ আছে। ভাবলে সেটার প্রকাশ কোথাও না কোথাও দেখা যেত। এর থেকে এলাকায় সেলফিযোগ্য কোন সেতু তৈরি হবার ঘটনা গুরুত্বপূর্ণ।

২।
শুধু রাজনীতি না, সকল ক্ষেত্রেই নীতি নৈতিকতা কোন প্রভাবক নয়।

৩।
নির্বাচনি ইশতেহার লেখার যে পদ্ধতি এবং আধেয় তাতে নির্বাচনি ইশতেহার পাওয়া না পাওয়ায় কিছু এসে যায় না। তবে কিছু একটা হাতে পেলে নিজে একটা কিছুর অংশ সেটার ভাবনাটা আসে। এটারও দরকার আছে।

৪।
সবসময় একটা ব্যাকআপ রাখা উচিত যেটা টেকসই। আমি সবসময় চেষ্টা করি টিকে থাকবে এরকম কোন সাইটে কন্টেন্ট সেভ করতে। ফিজিক্যাল ব্যাকআপ যেমন হার্ডডিস্ক, পেন ড্রাইভ কোন কাজের জিনিস না। ক্লাউডে সেভ করা নিরাপদ। তবে সেটা এমন ক্লাইড হতে হবে যেটা দীর্ঘদিন টিকে থাকবে যেমন ছবির জন্য ফ্লিকার, ইমগুর; ভিডিওর জন্য ইউটিউব; অন্যান্য ফাইলের জন্য গুগল ড্রাইভ। নতুন পোস্ট লিখতে সরাসরি গুগল ডক, বা ওয়ানড্রাইভে ড্রাফট করার অভ্যাস করতে পারেন। এতে লেখা হারিয়ে যাবার ভয় থাকে না।

আরেকটা অভ্যাস জরুরি। সেটা হল নিজের পিসি/ল্যাপটপের ফাইল মাসে একবার করে ঝাড়পোছ করা। ফাইলপত্র সব জায়গামতো সঠিক নামসহ ফোল্ডার করে সাজানো থাকা দরকার। আমি বাজি ধরে বলতে পারি ৯৯ শতাংশ লোক এই কাজটা করেন না।

ষষ্ঠ পাণ্ডব's picture

২।

Quote:
সকল ক্ষেত্রেই নীতি নৈতিকতা কোন প্রভাবক নয়

- নীতি-নৈতিকতা যদি কোন ক্ষেত্রেই প্রভাবক না হয় তাহলে মানুষ কীসের দ্বারা চালিত হয়? নীতি-নৈতিকতা কি অসার একটি বিষয়? একটা র‍্যাশনাল সমাজ নির্মাণের ভিত্তি তাহলে কী হওয়া উচিত?


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

ষষ্ঠ পাণ্ডব's picture

৩। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহীতা আবশ্যক একটা বিষয়, কর্মপরিকল্পনাও তাই। আমাদের দেশে এগুলো প্রায় ডুমুরের ফুল বলে সেটাকে স্বতঃসিদ্ধ বলে মেনে নেয়াটা ঠিক না।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

ষষ্ঠ পাণ্ডব's picture

৪।

Quote:
তবে সেটা এমন ক্লাইড হতে হবে যেটা দীর্ঘদিন টিকে থাকবে যেমন ছবির জন্য ফ্লিকার, ইমগুর; ভিডিওর জন্য ইউটিউব; অন্যান্য ফাইলের জন্য গুগল ড্রাইভ

- যেগুলোর নাম বললেন সেগুলোর মধ্যে গুগল ড্রাইভ ছাড়া বাকি সবার কাছ থেকে চরম ধরা খেয়েছি। কারে বিশ্বাস যাই!

ঝাড়পোঁছের কথা যা বললেন সেটা মাসে একবার না হলেও ২/৩ মাসে একবার করি। তার পরেও অদ্ভূত সব কারণে কিছু কিছু জিনিস হারিয়ে যায়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

ষষ্ঠ পাণ্ডব's picture

১।
ঘটনা-১: ১৯৯০ সালের নভেম্বর মাসের এক বিকাল। এরশাদবিরোধী আন্দোলন তখন তুঙ্গে, ডাঃ মিলন তখনও খুন হননি। ইডেন কলেজের মেয়েদের একটা দল মিছিল করছে, এরশাদবিরোধী শ্লোগান দিচ্ছে আর পুলিশ তাদের তাড়া করছে। এটা হচ্ছে সেই সময় যখন পুলিশ মিছিল ভাঙতে লাঠিপেটা করা, কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়াকে যথেষ্ট মনে করতো না তার সাথে ফাঁকে-ফোকরে কয়েকটা গুলিও করতো এবং তাতে টুপটাপ দুয়েকজন ঝরে পরতো। পুলিশের তাড়া খেয়ে মেয়েরা নিকটস্থ একটা ছেলেদের হোস্টেলে ঢুকে পড়লো। ভেতরে ঢুকে মেয়েরা বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গেলো — দেখে হোস্টেলের ছেলেদের একদল ভলিবল খেলছে আর বাকিরা সেটা দেখছে, হই হই করছে কিন্তু ঠিক গেটের বাইরে কী হচ্ছে সেটা নিয়ে তারা নির্বিকার।

ঘটনা-২: ১৯৯৩ সালের গোড়ার দিকের কথা। সামরিক স্বৈরাচার উৎখাত পররবর্তী ‘নির্বাচিত গণতান্ত্রিক’ সরকার ছাত্রদের দাবিদাওয়া, বিশেষত গণআন্দোলনের সময়কার ১০-দফা দাবির বাস্তবায়নের ব্যাপারে কতোটা উদাসীন সেটা বোঝা হয়ে গেছে। আশাভঙ্গ হওয়া ছাত্রসংগঠনগুলো (জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ও ইসলামী ছাত্র শিবির ব্যতীত) নিজেদের দাবি পূরণ না হওয়ার প্রতিবাদ জানাতে শিক্ষাভবন ঘেরাও কর্মসূচী দেয়। নির্ধারিত দিনে ঢাকার সব শিক্ষায়তন থেকে (যেখানে যেখানে ছাত্র রাজনীতি কার্যকর ছিল) ছাত্ররা মিছিল নিয়ে দোয়েল চত্ত্বরের দিক থেকে শিক্ষা ভবনের দিকে আগাতে থাকে। হাইকোর্টের পূর্ব গেটের কাছে পুলিশ কৌশলে দুই পাশে সরে যায়। ছাত্ররা আরেকটু বেশি আগালে পুলিশ তাদেরকে সাঁড়াশির মতো দুইদিক থেকে চেপে ধরে বেধড়ক পেটাতে থাকে। রাস্তার উত্তর পাশে হাইকোর্টের দেয়াল, দক্ষিণ পাশে কার্জন হলের উঁচু গ্রিলের দেয়াল, পূর্ব দিকে পুলিশের বহর, পুলিশ দুই পাশের দেয়াল ঘেঁষে পশ্চিম দিকের রাস্তাও বন্ধ করে দিচ্ছে। পুলিশের মার খেয়ে কেউ দোয়েলের দিকে পালানোর চেষ্টা করলো আর কেউ কার্জন হলের গ্রিলের দেয়াল টপকানোর চেষ্টা করলো। যারা কার্জন হলের চত্ত্বরে ঢুকতে পেরেছিল তারা অবাক বিস্ময়ে দেখে ভেতরে শান্ত-স্বাভাবিক জীবনযাত্রা চলছে — কেউ ক্লাসে যাচ্ছে, কেউ ক্লাস থেকে বের হচ্ছে, কেউ দলবেঁধে সিড়িতে বসে আড্ডা দিচ্ছে, কেউ ঝোপের পাশে ঘাসে বসে প্রেম করছে। গ্রিলের ভেতর দিয়ে ওপাশের যে তাণ্ডব দেখা যাচ্ছে সেটা নিয়ে তারা নির্বিকার।

এই দুইটা ঘটনা থেকে মনে হতে পারে খুব বড় আলোড়নের পরিসরও জনসমূদ্রে খুব বেশি নয়। কথাটা আপাত সত্য। প্রথম ঘটনার ছেলেদের হোস্টেলের অনেকই এরশাদবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত ছিল। তাদের মধ্যে কারো কারো গুলি খাওয়ার ঘটনাও আছে। এবং সবার সম্মিলিত প্রয়াসে এক মাসেরও কম সময়ের মধ্যে এরশাদের পতন ঘটে। দ্বিতীয় ঘটনায় কার্জন হলের অনেকে সেদিন ঐ মিছিলে ছিল। ঐদিনের ফলোআপ কর্মসূচীগুলোতেও কার্জন হলের বাসিন্দাদের সক্রিয় অংশগ্রহন ছিল।

নিঃসন্দেহে সব মানুষ কখনো এক মত, এক অনুভূতি, এক বিশ্বাস, এক পথের অনুসারী হবে না। তবে সব বড় অভিঘাতের কম্পন মৃদুমাত্রায় হলেও প্রান্তিক অবস্থানে পৌঁছায়। হলি আর্টিজানের ঘটনায় এর পক্ষ ও বিপক্ষ উভয়প্রকার প্রতিক্রিয়া দেশের প্রান্তিক পর্যায়েও পৌঁছেছে। এই ঘটনার ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতি ও উন্নয়ন কার্যক্রমে যে ব্যাপক ও দীর্ঘ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছিল সেটা প্রচুর মানুষকে সরাসারি ক্ষতিগ্রস্থ করেছে – রুটিরুজিতে হাত দিয়েছে। ফলে তাদের মধ্যে এটা নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ ও হতাশা আছে। আবার তৃণমূলের গভীরে ইসলামী জঙ্গীবাদ প্রসারের অনেকগুলো কারণের মধ্যে এই প্রকার ঘটনাও আছে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

পৃথ্বী's picture

লেখা সংরক্ষণ করার জন্য গুগল ড্রাইভ ছাড়াও আরেকটা উপায় হলো নিজস্ব হোস্টিং স্পেসে ব্লগ হোস্ট করা। সবচেয়ে জনপ্রিয় ওয়েবহোস্টগুলোর কোনটায় হোস্টিং স্পেস কিনলে সেটা উধাও হয়ে যাবার সম্ভাবনা কম। প্রায় শতভাগ গ্যারান্টি চাইলে গুগল ড্রাইভ আছে। গুগল, মাইক্রোসফট, আমাজন প্রকৃতির কোম্পানিগুলোর ক্লাউড স্টোরেজ সেবা ভবিষ্যতে বন্ধ হবার কোন সম্ভাবনা নেই।


Big Brother is watching you.

Goodreads shelf

হাসিব's picture

নিজের জায়গা কেনা খুব খরুচে। এর থেকে প্রতিষ্ঠিত কোন ক্লাউড স্টোরেজ কেনা উত্তম। মাসে দুই ডলার দিলে ১০০ জিবি গুগল ড্রাইভ পাওয়া যায়। ১০০ জিবি ডকুমেন্ট স্টোর করার জন্য যথেষ্ট। ওখানে ব্যান্ডউইডথ গোনে না। একটা সিঙ্ক টুল আছে। ছবির জন্য ফ্লিকারের ফ্রি এক জিবি যথেষ্ট। না হলে আমাজনের আনলিমিটেড কেনা যায়।
আর কোন সার্ভিসই ভবিষ্যতে বন্ধ হবে না এরকম নিশ্চয়তা দেবে না। কিছুদিন আগে আমাজন প্রাইমের সাথে ফ্রি আনলিমিটেড ভিডিও হোস্টিং দিত। এখন সে সার্ভিস বন্ধ। আনলিমিটেড প্রাইম ফটো কবে তুলে দেয় কে জানে!

ষষ্ঠ পাণ্ডব's picture

আমি জনপ্রিয় ক্লাউড স্টোরেজ সার্ভিসে জায়গা কেনার পক্ষপাতী। এখানেও শতভাগ গ্যারান্টি বলে কিছু নেই। কোন একবার বিল পরিশোধ করতে দেরি হলে বা তারা নিজেরা অভ্যন্তরীণ নীতিতে পরিবর্তন আনলেও আমার হাতে হ্যারিকেন হতে পারে। তাছাড়া রামলালের কোম্পানী যখন শ্যামলালের কোম্পানীর সাথে একীভূত হয় বা যদুলালের কোম্পানীকে অধিগ্রহন করে তখনো রাজায় রাজায় যুদ্ধে কিছু উলুখাগড়ার প্রাণ চলে যায়।

বিনা পয়সায় দেয় এমন সার্ভিস যত বড় কোম্পানীর কাছ থেকেই আসুক না কেন আখেরে সেটা বন্ধ হবে। ইদানীং অবশ্য নিজেকে 'পণ্য' হতে দিলে কিছু আপাত ফাও সার্ভিস মেলে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

হাসিব's picture

ওরা আপনাকে বকেয়া পরিশোধের জন্য মেইল করবে।

ষষ্ঠ পাণ্ডব's picture

হ্যাঁ, তারা মেইল করে, আগেভাগেই করে। কিন্তু একজন মানুষ কোন না কোন কারণে তারিখ মিস্‌ করতে পারেন। সমস্যাটা হয় তখনই।

ইদানীংকালে আমি গুগল ড্রাইভের পেইড সার্ভিসে (গুগল ড্রাইভ ফাইল স্ট্রিম) একটা সমস্যা পাচ্ছি। ফাইলগুলোর অফলাইন অ্যাক্সেস থাকার কথা থাকলেও বাস্তবে তা পাওয়া যাচ্ছে না। বাংলাদেশের মতো দেশে এটা একটা বড় সমস্যা। ফলে কখনো নেট না থাকলে বা উপরোক্ত বাকিবকেয়া থাকলে গুগল ড্রাইভের রাখা নিজের সহায়সম্পদ 'পরহস্তে ধন'-এর মতো হয়ে যায়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

আয়নামতি's picture

*
‘আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিবাদ দিবস’, ‘আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন বিলোপ দিবস’ ইত্যাদি কাগুজে বাঘের হালুমে কোথাও কিস্যু হয় না আসলে। নিয়মিতই পৃথিবীর নানা প্রান্তে নানান সহিংসতার বলি হয় নারী। তারা কী তখন পৃথিবীকে ডেকে জানতে চায়,
"এত যদি ব্যূহ চক্র তীর তীরন্দাজ, তবে কেন
শরীর দিয়েছ শুধু, বর্মখানি ভুলে গেছ দিতে!" ...কী জানি। মন খারাপ

**
হতভাগা জাতি আমরা, তাই এরশাদের মতো নষ্ট লোকের চলমান রাজনৈতিক নষ্টামি চোখ মেলে দেখতে হয়। তাকে আশকারা দেয়া পক্ষের লজ্জাহীনতা চুপচাপ মেনে নেই। আমরা অদ্ভূত!

***
এলাকা ভেদে মনে হয় প্রার্থী নিজে বা তার(দের) নিযুক্ত কর্মীরা বাড়ি বাড়ি ভোট চাইতে যান। আমাদের এলাকায় আসতে দেখেছি।

****
অনেক লেখা হারিয়ে ফেলেছেন শুনে সত্যিই কষ্ট পেলাম পাণ্ডবদা। আহা কত সময়, কত তথ্যভরা লেখাগুলো... গুগল ড্রা্ইভ নিরাপদ মনে হয় আমার কাছে।

*****
ঢাকার আজকের(৩০ নভেম্বর) আবহাওয়া চার্ট দেখে এলাম। আলামত তো আপনার গান শোনার বিপক্ষে... মন খারাপ

ষষ্ঠ পাণ্ডব's picture

+ আমার মনে হয় নারী নিজেই একদিন এই অন্তত আক্রমণের পথ চিরতরে রুদ্ধ করার উপায় বের করে ফেলতে পারবে। অবিমৃষ্যকারী পুরুষের নিস্ফল আস্ফালন সেদিন পরিহাসের বিষয় হবে।

++ শুধু নেতারা নীতিহীন নয়। তাদেরকে যারা নেতা বানায়, তাদেরকে যারা টাকা-সহযোগিতা-ভোট দেয়, তাদেরকে যারা মাথায় তুলে রাখে - তাদের প্রত্যেকে নীতিহীন।

+++ বিশাল হইচই সমৃদ্ধ মিছিল নিয়ে বাড়ির সামনে নরকগুলজার করে হঠাৎ ডাকাতের মতো বাড়ির ভেতরে একদল লোক ঢুকে বলেন, "স্লামালাইকুম ভাই, আমারে/অমুক ভাইরে তমুক মার্কায় ভোটটা দিয়েন"। এটাকে যদি ভোট চাওয়া বলা বলা যায় তবে অনেকে ভোট চাইতে যান - সেটা বলা যায়। কিন্তু তাতেও কি বেচারা ভোটার বুঝতে পারেন অমুক ভাইকে কেন ভোটটা দেবেন?

++++ তোমার সঞ্চয়, দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

+++++ না, গতকাল বৃষ্টি হয়নি। অসুবিধা নেই, ২৩ বছর অপেক্ষা করেছি, আরও কিছু বছর অপেক্ষা করতে পারবো।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

আয়নামতি's picture

*** না পাণ্ডবদা, ওভাবে না। জনা পাঁচেক কর্মী এসেছিলেন তাদের প্রার্থীর হয়ে ভোট চাইতে।

***** ২৩ বছর! আপনার ধৈর্য্যকে সালাম। হাসি

অবনীল's picture

লেখা হারিয়ে গেছে জেনে খারাপ লাগল। আমার সব লেখা গুগল ডকে থাকে। এখান থেকে মুছে যাবার সম্ভবনা খুব কম। এছাড়া ফ্লিকার আর ইউটিউবে একাউন্ট করা আছে। সেখানে ছবি আর ভিডিও আপলোড করে , সেখান থেকে পোস্টে লিংক করে দেই । এজন্য এগুলোরো হঠাৎ লিংক অকেজো হবার কারণ নেই।

___________________________________
অন্তর্জালিক ঠিকানা

ষষ্ঠ পাণ্ডব's picture

যেসব সার্ভিস পয়সা দিয়ে কেনা হয়েছে সেগুলোর মহাজন বড় কোম্পানী হলে এবং সেগুলোতে পেমেন্ট বকেয়া না থাকলে তাতে জমানো মালসামান নিরাপদ থাকবে। এর একটু টের-বেটের হলে হাতে হ্যারিকেন!


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

নৈষাদ's picture

কোন এক বিচিত্র কারণে ধারণা হয়েছিল, আমাদের মত তথাকথিত ‘অনুন্নত’/’উন্নয়নশীল’ দেশেই মনে হয় নারীদের অবস্থা খারাপ। ‘উন্নত’ দেশের একজন সুখী/সংসারী মন্ত্রী তার অধস্থন কর্মীর সাথে গোপণ প্রণয়, তাকে অবৈধ সুবিধা দান এবং শেষমেশ পর্যন্ত সেই কর্মী গর্ভবতী হয়ে যাওয়ার পরও এটা ব্যক্তিগত নাকি ব্যক্তিগত না এ নিয়ে বিতর্ক চলে, তখন অবাকই হই।

একবারই মুম্বাই গিয়েছিলাম মাত্র দুই দিনের জন্য, হামলার ঠিক একবছর আগে (অফিসের কাজে)। মনে আছে গভীর রাত পর্যন্ত Leopold Cafe তে আড্ডা দিয়েছিলাম। পরের বছরের মুম্বাই হামলা আমাকে বেশ আলোড়িত করেছিল মনে আছে। পরবর্তীতে আনেক দিন এই সংক্রান্ত প্রতিবেদন গুলি অনুসরণ করছিলাম। ভারতীয় কোন একটি ইংরেজি পত্রিকা অনুসন্ধান পরবর্তী প্রায় ৬৫ পৃষ্ঠার একটা ‘ডোশিয়ে’ তৈরি করেছিল – কৌতূহলোদ্দীপক।
মজার ব্যাপার হল, এই বছরের ২৫ তারিখেই কোন এক রেডিও স্টেশনে এই ঘটনার উপর লিখা ‘Seige’ নামের বইয়ের লেখকের সাথে আলোচনা শুনছিলাম – সেটাও কৌতূহলোদ্দীপক। যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যের গোয়েন্দা সংস্থাগুলি বিস্তারিত আগাম খবর পেয়েছিল (আক্রমনকারীর বর্ণনাসহ), ভারতকেও ‘জানানো’ হয়েছিল নাকি। পাকিস্থানে পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থার একজন ‘মোল’ ছিল। লেখক এমন কথাও বলতে চাইল - লাদেনের কাছাকাছি পৌছানোর জন্য ‘কিছু সেক্রিফাইস’ করা হয়েছে হয়ত।

ভোটের ব্যাপারে আমার অভিজ্ঞতা ভাল। কোন বারই ভোট মিস হয়নি (১৪ সহ)। আমার-আপনার কাছে প্রার্থী না আসলে কী- একটা লেভেলে ব্যাপক অর্থনৈতিক কর্মকান্ড শুরু হয়, খাওয়া দাওয়া, উপহার, নগদ টাকা। এবার তো মজাই মজা। আমার এলাকায় (মৌলভীবাজার ২, যদিও আমি ঢাকায় ভোটার), আওয়ামীলিগের বজ্রকন্ঠ এবার ধানের শীষে, আবার আওয়ামী দূর্গে যে প্রথমে আঘাত হেনে ধানের শীষে জয়লাভ করেছিল, সে নৌকার আশায় আছে। মধ্যেখানে হয়ত এরশাদ সাহেবের পোয়াবারো হয়ে যাবে...। জোকস আপার্ট, যেমনটি হাসিব মাহমুদ বলেছেন, নির্বাচনি ইশতেহার লেখার যে পদ্ধতি এবং যে বাগাড়ম্বরতা তাতে নির্বাচনি ইশতেহার খুব একটা প্রভাব বিস্তার করতে পারে বলে মনে হয় না। এবং খুব কম সংখ্যক মানুষই এটা নিয়ে চিন্তিত। আমার নিজের বেলায় দুই বড় পার্টির ইশতেহার কোন প্রভাব ফেলবে বলে মনে হয় না। ইশতেহারের কোন জবাবদিহিতা আছে বলেও কখন মনে হয়নি।

ষষ্ঠ পাণ্ডব's picture

+ হ্যাঁ, অপেক্ষাকৃত 'উন্নত' দেশে নারীর অবস্থা ভালো এমন ভ্রান্ত ধারণা আমাদের মধ্যে কাজ করে। অন্তত নিজে ঠোক্কর খাওয়া না পর্যন্ত। আমি মেটার্নিটি লিভ, গর্ভকালীন ও প্রসবোত্তরকালে কর্মক্ষেত্রে নারীর দিনকাল নিয়ে লোকজনের সাথে আলাপ করে দেখেছি। সেখানে তথাকথিত উন্নত দেশের অনেকগুলোর খবর শুনে আমার ভ্রান্ত পূর্বধারণা কেটে গেছে। সেসব দেশে কর্মক্ষেত্রে বা পথে নারীর যৌন হয়রানী, কর্মক্ষেত্রে বৈষম্য, গার্হস্থ্য সহিংসতা (ডমিস্টিক ভায়োলেন্স), ধর্ষণ ইত্যাদির পরিসংখ্যান পড়লে 'নারীর কোন দেশ নেই' ধরনের কথাকে সত্য বলে মনে হয়।

++ আমি আদ্রিয়ান লেভি, ক্যাথে স্কট-ক্লার্কদের কথায় আস্থা রাখছি না। এই প্রকার কিছু হয়ে থাকলে ভারতের মতো দেশে সেটা ধামাচাপা দেয়া সম্ভব হতো না। আগে হোক, পরে হোক সেটা প্রকাশিত হতোই। কোন না কোন পক্ষ আরেক পক্ষকে ঘায়েল করার জন্য হলেও এটা প্রকাশ করে দিত। আর লাদেনের কাছে পৌঁছানোর জন্য লস্কর-ই-তৈয়্যবাকে ছাড় দেবার কিছু নেই। লাদেন আর লস্কর উভয়ে কর্তাদের বেতনভূক্ত অথবা সহযোগিতাভূক্ত পার্টি। তারচেয়ে বেশি সত্য হচ্ছে তারা সর্বদা কর্তাদের নিরাপত্তার পক্ষ্মপুটেই থাকে। লেভি-ক্লার্করা তাদের বইয়ের ব্যাপারে কিছু সেনসেশন তৈরি করতে চাইতেই পারে।

+++ বাংলাদেশের নির্বাচনেও ইশতেহারের কিছু প্রয়োজনীয়তা আছে। এক, যাকে দিয়ে লেখানো হয়ে থাকুক না কেন, ইশতেহার পড়লে ঐ প্রার্থী ও তার দলের মেধা, প্রজ্ঞা, অবস্থান, দর্শন সম্পর্কে একটা গ্রস ধারণা পাওয়া যায়। দুই, ইশতেহারে কী কী প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে সেখান থেকে প্রার্থীর যোগ্যতা সম্পর্কে গ্রস ধারণা পাওয়া যায়। তিন, ভবিষ্যতে কখনো নূন্যতম পর্যায়ের জবাবদিহীতা তৈরি হলেও ইশতেহার নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির প্রতিশ্রুতি রক্ষা বিচারের মাপকাঠি হতে পারবে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

হাসিব's picture

Quote:
ইশতেহারে কী কী প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে সেখান থেকে প্রার্থীর যোগ্যতা সম্পর্কে গ্রস ধারণা পাওয়া যায়।

সেটা একটু বেশি গ্রস হবে। এই নির্বাচনে অনেক প্রার্থী তাদের ক্যাম্পেইন কন্টেন্ট (অনলাইন এবং অফলাইন) বিজ্ঞাপন সংস্থা দিয়ে করাচ্ছে। সেখানে কপিরাইটাররা মনের মাধুরী মিশিয়ে ভাল ভাল কথা দিয়ে প্রার্থী ইশতেহার লিখছে। এগুলো আরও বাড়বে। আগামী ৩-৪ টা ইলেকশনের মধ্যেই পুরো নির্বাচন প্রচারণা এরকম পেশাদারদের হাতে চলে যাবে।

ষষ্ঠ পাণ্ডব's picture

ক্যাম্পেইন কনটেন্ট পেশাদারদের দিয়ে করানোর কাজ অনেক দিন ধরে হচ্ছে, আস্তে আস্তে তার শতকরা হার বাড়ছে। আগামীতে নির্বাচনে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিগুলোর কাজও বাড়বে। আমার পর্যবেক্ষণ বলে, পেশাদারদের দিয়ে কোন কিছু লেখা/বানানো হলেও খোদ প্রার্থী বা তার ঘনিষ্ট দায়িত্ববান নেতা সেখানে কিছু যোগ-বিয়োগ করেন, কিছু ফাইন টাচ দেন। ঐ যোগ-বিয়োগ, ফাইন টাচ থেকে ধারণা করা যায় প্রার্থীর দৌড় কোনদিকে কত দূর।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

আলতাইর's picture

আমার রুমমেট একজন সংগ্রামী উদীয়মান চিত্রতারকা! মানে এখনো পরিচালকের ফাইফরমাশ খাটা লেভেলে আছে। তার কাছেই শোনা গেল এবারের ইলেকশনে দক্ষিনাঞ্চলীয় প্রার্থীদের কয়েকজন এলাকায় যাত্রাপালার আয়োজন করেছেন। যাত্রার বিষয়বস্তু বংগবন্ধুর জীবনের আলোকে। যদিও কতটুকু বংগবন্ধু আর কতটুকু প্রার্থীর নিজের গুনগান সেটা নিয়া সন্দেহ আছে। তারপরেও এইটারে একটা পজিটিভ দিক হিসাবে ধরা যায়।

পুনশ্চঃ আমার রুমমেট সেই যাত্রাপালায় একখানা চরিত্র পেয়েছে। আমি তাহাকে নিয়া আশাবাদী

ষষ্ঠ পাণ্ডব's picture

নির্বাচনে স্থানীয় জনপ্রিয় গায়ক/গায়েন/বয়াতী/বাউল/পালাকারের ব্যবহার ১৯৩৭ সাল থেকে চলে আসছে। এই সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে সৈয়দ শামসুল হকের গল্প/নাটকও আছে। নির্বাচনে গ্রাম থিয়েটার/নাট্যদলের ব্যবহারের কথা ১৯৯১ সাল থেকে শুনছি। সেটা আরো আগে থেকেও হতে পারে। এক কালে জনপ্রিয় ঐতিহাসিক চরিত্র নিয়ে যাত্রাপালা হতো। যাত্রার কিংবদন্তী অমলেন্দু বিশ্বাস মাইকেল মধুসূদন দত্ত, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর এমনকি লেনিনকে নিয়ে পর্যন্ত যাত্রাপালা করেছেন। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে যাত্রাপালা আরও অনেক আগেই হওয়া উচিত ছিল। সেটা নিয়ে এখনো যদি কেউ কাজ করে থাকেন তাহলে তিনি ধন্যবাদার্হ। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে ব্যবহার করে কেউ যদি নিজের নির্বাচনী বৈতরণী পার হবার ধান্ধা করে থাকেন তাহলে তিনি নিন্দার্হ।

পুনশ্চঃ অভিনয়শিল্পী হওয়া একটা অসম্ভব কঠিন কাজ। কঠোর পরিশ্রম, নিরলস সাধনা, বিপুল আত্মত্যাগ, লেগে থাকার অদম্য স্পৃহা না থাকলে অভিনয়শিল্পী হওয়া যায় না। আর কেউ যদি 'সুপারস্টার' হতে চান তাহলে তার ত্বরিকা ভিন্ন।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

এক লহমা's picture

২৫শে নভেম্বর ২০১৮:
পথটা লম্বা কিন্তু অনিঃশেষ নয়। আর এমনও নয় যে পথের শেষেই শুধু সাফল্য। চলতে থাকতে পারলেই সাফল্য জমে উঠতে থাকবে। প্রতিটি সাফল্য পরের সাফল্যের পাথেয়। দরকার হচ্ছে চলতে থাকা। মেয়েরা কিন্তু থেমে নেই। যে ছেলেরা থেমে থাকবে তারা যত মারই মারুক, মেয়েদের থামিয়ে রাখতে পারবে না।

২৬শে নভেম্বর ২০১৮
সন্ত্রাস ব্যাধি নয়, উপসর্গ। ব্যাধি কি কোনদিন সারবে? মনে তো হয় না।

২৭শে নভেম্বর ২০১৮
রাজনীতি অদ্ভূত শয্যাসঙ্গী তৈরি করে - যথার্থ। তার মধ্যে আবার কারো কারো জন্য অদ্ভুত কথাটা-ও যথেষ্ট হয় না।

২৮শে নভেম্বর ২০১৮
হাসিবের মন্তব্যর সাথে একমত "আগামী ৩-৪ টা ইলেকশনের মধ্যেই পুরো নির্বাচন প্রচারণা এরকম পেশাদারদের হাতে চলে যাবে।"। অন্ততঃ বড় মাপের গুলোর জন্য অবশ্যই।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

ষষ্ঠ পাণ্ডব's picture

২৫ঃ দিগন্তে রূপালী রেখা যদি ৩০ বছর বা তারও পরে দেখা দেয় তাহলে আমার কী লাভ! আমাকে তো আফসোস্‌ নিয়েই মরতে হবে। আর এই সময়ের মধ্যে যে অন্যায়-অবিচারগুলো হবে সেগুলোরও তো কোন প্রতিকার হবে না। কে বলে প্রকৃতি সাম্য-স্থিতাবস্থা বজায় রাখে!

২৬ঃ স্বীকার করি আর না করি, সন্ত্রাস আমাদের মজ্জাগত। ব্যক্তিভেদে এর মাত্রাটা ভার্চুয়াল থেকে ভয়াবহ নৃশংস হয়।

২৭ঃ ব্যাপারটা কি অদ্ভূত তাই না! আমরা জেনে বুঝে একদল পেশাদার দুর্বৃত্তের হাতে বার বার জীয়নকাঠি তুলে দেই।

২৮ঃ ভারতে ব্যাপারটা আরও আগে গেছে। বাংলাদেশে এবার বেশ ব্যাপক মাত্রায় গেছে। খোদ আওয়ামী লীগ এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী নির্বাচনে তৃণমূল পর্যায়ের সংগঠন থেকে প্রার্থীদের ব্যাপারে গোপন রিপোর্ট না নিয়ে পেশাদারদের দিয়ে করা ৬টা সার্ভে রিপোর্টের ওপর নির্ভর করেছে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

তাসনীম's picture

অনেকদিন পরে সচলে ঢুকে তোমার লেখা পেলাম। খুব ভালো লাগলো। এই বছর আমি একটা মাত্র লেখা দিয়েছি। ফেসবুকে নিজের কিছু লেখা আছে, ড্রাফট করা আছে আরও কিছু লেখা। সেগুলো হারিয়ে গেলে খুব খারাপ লাগবে। অন্য কারো কাছে না হোক, আমার নিজের কাছে এই লেখাগুলোর খুবই মূল্যবান। আমি সব লেখার ড্রাফট জিমেইলে সেইভ করে রাখি। কিন্তু ব্যক্তিগত ব্লগে বা গুগল ডকে তুলে রাখলে মনে হয় আরও ভালো।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

ষষ্ঠ পাণ্ডব's picture

আপনি ফেসবুকে নিয়মিত লেখেন বলে শুনতে পাই। লেখাগুলো প্রথমে সচলে দিয়ে পরে ফেসবুকে দিলে বা ফেসবুকে তার লিঙ্ক দিলে দুটো জায়গায় লেখাটা যেমন থেকে যায়, তেমন আমার মতো পাঠক যারা ফেসবুকে নেই তারাও পড়তে পাবে। ব্যাপারটা আপনি ভেবে দেখতে পারেন।

যেসব লেখার মূল্য কেবল নিজের কাছে সেগুলোর শক্ত আর নরম কপি নানা জায়গায় রেখে দেয়া যেতে পারে। তাহলে কিছু জায়গা হারিয়ে গেলেও অন্য কোথাও না কোথাও সেসব পাওয়া যাবে। সমস্যা হচ্ছে, এইটুকু খাটুনিই দেয়া হয়ে ওঠে না।

এর বাইরে বাকি লেখাগুলোর মধ্যে যেগুলো দৈনন্দিন পঁচে যাওয়া বিষয় নিয়ে নয় সেগুলোকে একটু ঘষে মেজে আসলে বই বের করা উচিত - শক্ত ও নরম উভয় প্রকারের। এতে কারো না কারো বুকশেলফের কোনায় অথবা আন্তর্জালের জগতের কোন না কোন কোনায় সেটা থেকে যাবে। যেহেতু বইগুলো চিন্তাভাবনা করে, খাটাখাটুনি দিয়ে লেখা সেহেতু সেগুলো কখনো না কখনো, কারো না কারো কাজে লাগবে। আমার নাম টিকে থাকবে কিনা সে চিন্তা অপ্রয়োজনীয়, কিন্তু আমার চিন্তা বা পরিশ্রম আরেক জনের কাজে লাগতে পারছে কিনা সে চিন্তা প্রয়োজনীয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

নীড় সন্ধানী's picture

অনেকদিন পর একটা খাটি ব্লগরব্লগর পড়লাম। কত কিছু মনে পড়ে গেল এই এক পোস্ট ও তার মন্তব্যের সুত্র ধরে। আশির দশক থেকে এই একুশ শতকের দ্বিতীয় দশক। কত কিছু পরিবর্তন ঘটে গেছে গত তিন দশকে। কিন্তু নির্বাচনের মানুষগুলো, নির্বাচনী সংস্কৃতি এতটুকু বদলায়নি। দলবদল, সুবিধাভোগী, ডিগবাজীকর, সব একই রয়ে গেছে। অনেক ক্ষেত্রে সেই মানুষগুলোই নতুন মার্কা নিয়ে পুরোনো প্রতিশ্রুতির বন্যায় ভাসিয়ে দিচ্ছে। নির্বাচন নিয়ে মাথাব্যথা তেমন নেই, নিজের মাথার ব্যথা তার চেয়ে অনেক বেড়ে গেছে বলে বোধহয়। তবে আগামী দশ দিনের আশংকা সুপ্তাবস্থায় থাকবে। তারপর কী হয়। আলুপোড়া খাওয়ার জন্য বসে থাকা মানুষদের সংখ্যা এদেশে কখনোই কম ছিল না। খুব আশাবাদী মানুষ না হলেও অন্ততঃ এটুকু আশা করি দেশের অর্থনৈতিক মেরুদণ্ডে কোন আঘাত আসবে না।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

ষষ্ঠ পাণ্ডব's picture

এবারের নির্বাচনে কয়েকটা বিষয় দেখলাম যেগুলো আগে এমন করে দেখা যায়নি।

(ক) দলনির্বিশেষে প্রার্থীরা নিজের নির্বাচনী এলাকায় আগেভাগে কাজ করে নিজের মনোনয়ন নিশ্চিত করার পরিবর্তে কেন্দ্রে তদবির, লাফঝাঁপকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। ব্যাপারটা এমন যেন, ভোটারদের ভোট পাবার চেয়ে বিশেষ কোন মার্কার মনোনয়ন পাওয়াটাই নির্বাচিত হবার জন্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

(খ) প্রার্থীদের প্রচার প্রচারণার পরিমাণ অনুল্লেখযোগ্য। এটাকে তারা বোধকরি গুরুত্বপূর্ণ ভাবছেন না। (আবারও, ব্যাপারটা এমন যেন, ভোটারদের ভোট পাবার চেয়ে বিশেষ কোন মার্কার মনোনয়ন পাওয়াটাই নির্বাচিত হবার জন্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ)। কিছু প্রার্থী আছেন যারা আদতেই কোন প্রচার প্রচারণায় যাচ্ছেন না। এমন প্রার্থী আগেও থাকতেন, তবে এবার তার হার অনেক বেশি। হেভিওয়েট প্রার্থীদের নির্বাচনী ক্যাম্পে নিজেদের কর্মীদের জন্য প্রতিদিন বিপুল পরিমাণে রাজসিক আহারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এমনটা আগে দুই/তিন দিন ধরে হতো, এবার তা মাসব্যাপী চলছে। এই বিপুল ব্যয়ের উৎসের খোঁজ নেবার ব্যাপারে দুদক বা জারাবো'র কোন চিন্তাভাবনা আছে কিনা জানা নেই।

(গ) সাধারণ ভোটারদের মধ্যে ভোট নিয়ে আলোচনা ও উৎসাহ আগের তুলনায় (১৯৮৮, ১৯৯৬ ফেব্রুয়ারী ও ২০১৪ ছাড়া) অনেক কম। ভাবটা এমন - কী হবে এসব আলোচনা করে!

গত দশ/বারো বছর ধরে সারা দুনিয়া জুড়ে দফায় দফায় মন্দা আঘাত হেনেছে, এবং হেনে যাচ্ছে। এগুলো নিয়ে ধনী-দরিদ্র অনেক দেশের সরকারই নানা প্রকার পদক্ষেপ নিয়েছে, আরও অনেক স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী প্রকল্প হাতে নিচ্ছে। কিছু দেশ আছে যারা মন্দার ব্যাপারটাই স্বীকার করে না। তারা অবিরাম উন্নয়নের ঢ্যাঁড়া পিটিয়ে যায়। অথচ বর্তমান দুনিয়ায় কোথাও বড় কিছু ঘটলে তার অভিঘাত সর্বত্র লাগে। এই অভিঘাত ঠেকানোর উপায় নেই, তবে মোকাবেলার উপায় আছে। এর জন্য প্রথমে অভিঘাতটির কথা স্বীকার করতে হবে। তারপর মোকাবেলার পরিকল্পনা করে সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে হবে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

Post new comment

The content of this field is kept private and will not be shown publicly.