'শতরঞ্জ কি খিলাড়ি'

আয়নামতি's picture
Submitted by aaynamoti [Guest] on Sat, 01/04/2017 - 3:16pm
Categories:

একজন সুচতুর দাবাড়ু :
গল্পটি খুব চেনা একজন পাকিস্তানী মেজরের। মেজরটি একজন যোদ্ধা হলেও মূলতঃ একজন দক্ষ দাবাড়ু। তার একেকটা দূরদর্শী চালে তিনি কিভাবে মাত করেছিলেন তার পথের বাধা, সেটাই এই গল্পের মূলকথা। ৩০ বছর বয়সে তিনি ক্যাপ্টেন যোদ্ধা হিসেবে পাকিস্তান সরকারের কাছ থেকে একটি হিলাল-ই-জুরাত, দুটি সিতারা-ই-জুরাত, নয়টি তামঘা-ই-জুরাত লাভ করেন। এত সব খেতাব তিনি তাঁর পেয়ারা পাকিস্তান রক্ষায় 'বিনা যুদ্ধে নাহি দিব সুচ্যগ্র মেদিনী' প্রমাণের যোগ্যতা হিসেবে লাভ করেন তাতে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নাই।

স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে এই ব্যক্তি যে বীর উত্তম পুরস্কার অর্জন করেন তা যত না যুদ্ধের বীরত্বে, তার চেয়েও বেশী মস্তিষ্কপ্রসূত দাবাড়ু বুদ্ধিতে। তিনি সামরিক বাহিনির সদস্য হলেও ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ সন্ধ্যে সাতটা থেকে তাঁর বুদ্ধি রাজনৈতিক এবং কুটনৈতিক খাতেই প্রবাহিত হতে শুরু করেছিল।

সেই কুটনৈতিক বুদ্ধি মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তেমন সুবিধা করতে পারেনি। মুক্তিযুদ্ধ শেষ হবার পর তিনি আর দশজন সেক্টর কমান্ডারের একজন মাত্র। তিনি যে ২৭শে মার্চ রেডিওতে ঘোষণাপাঠ করেছিলেন সেটা খুব বেশী মানুষের কাছে পৌঁছায়নি। চট্টগ্রাম আর আশপাশের এলাকাতেই সীমিত কিছু মানুষের কাছে পৌঁছেছিল। সেই ঘোষণার উপর নির্ভর করে যে দেশের মানুষ যুদ্ধ করেছিল তাও না।

তবু স্বাধীনতা পরবর্তী সাড়ে তিন বছরে তিনি কোন জাদুতে বাকি সব সেক্টর কমান্ডারের চেয়ে এত বেশী প্রচারণা পেলেন, পরিচিত হলেন? সেই প্রচারের ঢোল বা ঢাকের কাঠি কে হয়েছিল? মেজরের হাতেই ছিল সে ঢাকের কাঠি। স্বাধীনতার সূর্যোদয়ের অতি প্রত্যুষেই তিনি নিজেই বাজাতে শুরু করেছিলেন সেই ঢোল। দেশের শীর্ষস্থানীয় একটি পত্রিকায় একের পর এক বানোয়াট বীরবন্দনা প্রকাশিত হওয়াটা ধারণা করি তার সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনারই একটি অংশ।

দাবাড়ু হবার একটি মূল্যবান যোগ্যতা হলো পরবর্তী চালগুলো সম্পর্কে অনুমান সক্ষমতা। যে দাবাড়ু যত বেশী সংখ্যক চাল আগাম অনুমান করতে পারেন, তত বেশী খেলায় বিজয়ী হবার সম্ভাবনা তার দিকে যায়। বাংলাদেশের ইতিহাসে এই মেজর একজন সফল সামরিক রাজনৈতিক দাবাড়ু। সেই দাবা খেলার মূল্যবান একটি গুটি হিসেবে তিনি নিয়েছিলেন মিডিয়াকে। মাত্র কয়েক মিনিটের একটা সিদ্ধান্ত অনাগত ইতিহাসের উপর কিভাবে প্রভাব বিস্তার করতে পারে ১৯৭১ সালের ২৭শে মার্চে কালুরঘাট বেতারের সন্ধ্যাটি তার একটি প্রমাণ।

সবাই জানেন তাঁকে ২৭শে মার্চ বিকেলে পটিয়া থেকে ডেকে আনা হয়েছিল কালুরঘাট বেতার কেন্দ্রের নিরাপত্তার জন্য। কালুরঘাট বেতারকেন্দ্রে বসা অবস্থায় বেলাল মোহাম্মদের সেই প্রস্তাব- 'আপনি তো মেজর আপনিও একটা ঘোষণা দেন'। এই কথার কথা ধরনের প্রস্তাবটি দেবার সাথে সাথেই দাবাড়ু বুঝেছিলেন, এখনই সময়। তিনি কলম চেয়ে, কাগজ নিয়ে একটা ঘোষণা লিখে ফেললেন। তিন ঘন্টা আগেও যিনি জানতেন না তিনি কালুরঘাট সেতু পার হয়ে এই ট্রান্সমিটার পাহারা দিতে আসবেন। তিনি নিজেকে রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে বসলেন বেতারের মাইক্রোফোন সামনে পেয়ে। ব্যাপারটা খুবই অদ্ভুত এবং রহস্যময়। তখন সেই ঘোষণা চট্টগ্রামের বিশিষ্টজনেরা শোনার পর আঁতকে উঠে তড়িঘড়ি করে সংশোধন করতে বললেন। নইলে এটা রাজনৈতিক যুদ্ধের বদলে সেনাবিদ্রোহ হয়ে যাবে। দেশে তো নেতা একজনই। তিনি শেখ মুজিব। মেজর তাই নতুন করে আবার ঘোষণা দিলেন শেখ মুজিবের পক্ষে। কিন্তু ইতিমধ্যে একটা গুরুত্বপূর্ণ অর্জন তার ভবিষ্যতের থলিতে জমা হয়ে গেছে। দেশের কিছু অংশে (চট্টগ্রামের আশপাশে) মেজরের নামটি প্রচারিত হয়ে গেছে। মেজরের পরবর্তী কর্মকাণ্ড এমনটাই প্রমাণ করে যে, কালুরঘাটে তার প্রথম ঘোষণাটি ছিল তার দাবার একটি চাল মাত্র।

১৯৭১ সালের ২৭শে মার্চ সন্ধ্যার সময় তিনি যখন কালুরঘাট বেতারে আসেন তার আগের ৩২ ঘন্টায় অন্ততঃ আটবার কেউ না কেউ স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করে গেছেন যার মধ্যে এম.এ. হান্নানের নাম অন্যতম। মেজর জিয়াকে যখন বেলাল মোহাম্মদ কথার কথা হিসেবে একজন মেজর হিসেবে ঘোষণা দিতে বলেছিলেন তখন মেজর জিয়া পূর্বেকার সেই ঘোষণটিই পাঠ করতে পারতেন যা বঙ্গবন্ধুর পক্ষ থেকে পাঠানো হয়েছিল ঢাকা থেকে। কিন্তু মেজর জিয়া সেই ঘোষণাটি পাঠ না করে নিজে একটি ঘোষণা লিখে নিজেকে যে রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে প্রচার করলেন সেটি নেহায়েত একটি অসতর্ক ভুল তা আমরা নিশ্চিত করে বলতে পারি না। এ প্রসঙ্গে ডঃ আনিসুজ্জামানের 'আমার একাত্তর' বইটিতে জিয়ার প্রসঙ্গ উল্লেখপূর্বক মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক সম্পর্কে তার(জিয়া'র) শ্লেষাত্মক মন্তব্যটি পোস্ট লেখকের মনে উঁকি দিয়ে যায়, 'পুওর শেখ! হি মাস্ট বি ইন আটক জেল নাও।'

পরবর্তী নয় মাস তীব্র যুদ্ধে লক্ষ লক্ষ মানুষের রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশে স্বাধীনতা এলো। মেজরও সেই যুদ্ধে সামিল ছিলেন। কিন্তু যোদ্ধা হিসেবে যুদ্ধক্ষেত্রের প্যাজলগুলো ঠিক মেলে না, যতটা মেলে দাবা খেলা নিয়ে। অন্য সেক্টর কমান্ডারগণ যখন যুদ্ধে প্রাণপাত করেছেন, তিনি তখন মাথা খেলিয়েছেন তেলিয়াপাড়ায়, মুজিবনগরে, থিয়েটার রোডের নানান সামরিক কুটনীতিতে, বিভাজনের রাজনীতিতে। কামালপুরের যে যুদ্ধে তার অংশগ্রহন ছিল, ভুল যুদ্ধের খেসারত হিসেবে অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রাণ হারান বলে তিনি ওই যুদ্ধের ঘটনা কোন স্মৃতিচারণেও আনেননি কখনো। তার মত একজন জাদরেল যোদ্ধা(তার পূর্ব রেকর্ড অনুসারে)র কাছ থেকে তাই আমরা পাইনা কোনো যুদ্ধের স্তরবিন্যাসের বর্ণনা, পাকিস্তানি বাহিনির আক্রমণের সময় ও ক্ষমতার ব্যবহার, বাঙ্গালি সেনাবাহিনির প্রতিআক্রমণ ও কার কী ভূমিকা ইত্যাদির বিশদ বর্ণনা। যা অন্যান্য সেক্টর কমান্ডার বা মুক্তিযোদ্ধার স্মৃতিচারণ বা বর্ণনাতে পেয়েছি। তবু যুদ্ধ শেষ হবার পর জেড ফোর্সের কমান্ডার হিসেবে বীর উত্তম পদক এসে যায়। মেজর থেকে পদোন্নতি ঘটে লে.কর্নেল পদে।

মিডিয়া ক্যুর জন্মকথা:

যুদ্ধ শেষ। বাংলাদেশ স্বাধীন। এবার মেজরের দাবা খেলার দ্বিতীয় পর্যায়। দ্বিতীয় পর্যায়ে দাবা খেলার ফ্রন্ট বেশ কয়েকটি হলেও আমরা শুধু একটি দিকেই দেখবো আপাতত। এটিকে মিডিয়াপর্ব বলা যেতে পারে। দেশ স্বাধীন হলেও বঙ্গবন্ধু তখনো পাকিস্তানের জেল থেকে মুক্তি পাননি। তাঁকে নিয়ে অনিশ্চিত অবস্থা কাটেনি পুরোপুরি। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির পত্রিকার পাতায় তখন নানান হাহাকার কিংবা যোদ্ধাদের বীরত্ব গাঁথা প্রকাশ পাওয়া খুব স্বাভাবিক ঘটনা। সেরকম কিছু স্বাভাবিক ঘটনার পাশাপাশি ১৯৭২ সালের ২ জানুয়ারী সংখ্যার দৈনিক বাংলার পেছনের প্রচ্ছদে চার কলাম দিয়ে একটি বিশাল প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। শিরোনাম ছিল - 'মেজর জিয়া যখন দুর্বার প্রতিরোধ গড়ে তুলছিলেন, হানাদার বাহিনী তখন তার পরিবার পরিজনের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল'। যদিও নির্যাতনের কোন নমুনা আমরা পাই না। মেজর জিয়া বিদ্রোহ ঘোষণা করে তার উপরস্থ কমাণ্ডার রশিদ জানজুয়াকে কথিত গ্রেফতার(তাকে কে হত্যা করে জানা যায় না) করে বিদ্রোহী বেতারে স্বাধীনতা ঘোষণা করার পরও মিসেস জিয়া ঢাকা সেনানিবাসে আসিফ জানজুয়ার নিরাপদ আশ্রয়ে ছিলেন বলে ইতিহাসে উল্লেখ পাই। তবু সেই সংবাদ প্রকাশকে স্বাভাবিক বলেই ধরে নেবো আমরা। মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বের কাহিনী পত্রিকার পাতায় আসাই স্বাভাবিক, যদিও অন্য সেক্টরকমান্ডারদের কথা সেভাবে আসেনি। আপাতঃ দৃষ্টিতে ব্যাপারটা হয়তো তুচ্ছ। কিন্তু পরের ঘটনাগুলো যখন অনুসরণ করি তখন সন্দেহ নতুন দিকে মোড় নেয়।

[ ২ জানুয়ারী পত্রিকার কাটিং]

দশদিন না যেতেই ১১ জানুয়ারী ১৯৭২ মেজর জিয়ার উপর আবারো আরেকটা প্রতিবেদন। পাঁচ কলামে পূর্ণ পৃষ্ঠায় বড় বড় শিরোনাম - 'সশস্ত্র প্রতিরোধ সংগ্রাম, চট্টগ্রামে যেমন করে শুরু'। সেখানেই শেষ নয়।

[ ১১ জানুয়ারী পত্রিকার কাটিং]

ওই বছরই ২৬শে মার্চ ১৯৭২ সালে ৫ কলামে পূর্ণ পৃষ্ঠা ব্যাপী বিশাল একটি সাক্ষাতকার লে.কর্নেল জিয়াউর রহমানের। শিরোনাম- 'সেদিন চট্টগ্রামে যেমন করে লড়াই শুরু হয়েছিল'।

[ ২৬ মার্চ পত্রিকার কাটিং]

পরবর্তী তিন বছর ধরে দৈনিক বাংলার বিশেষ সংখ্যাগুলোতে মেজর জিয়া কীর্তন চলেছিল সবার জ্ঞাতসারেই। প্রত্যেক বছর ২৫শে মার্চ কিংবা ২৬শে মার্চের দৈনিক বাংলা সহ অন্যন্য পত্রিকাতেও জিয়ার বানোয়াট ঘোষণা, বানোয়াট বীরত্ব নিয়ে প্রচার প্রপাগাণ্ডা। এইসব মিথ্যাচারের প্রতিবাদ কেউ করেনি, এমনকি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও টু শব্দ করেনি। কিন্তু কোনো এক সুদূর পরিকল্পনা মোতাবেক সেই একই লেখা কপি করে প্রতিবছর ছাপানো হতে থাকে। ১৯৭৪ সালে দৈনিক বাংলা ছাড়িয়ে বাংলাদেশের বাংলা ইংরেজি সবগুলো পত্রিকা এই মেজরের বানোয়াট বীরত্বের কাহিনি প্রচার করেছিল। কেউ জানে না এক নিঃশব্দ দাবাড়ুর পায়ে পায়ে এগিয়ে আসছিল সময়মতো কিস্তি মাত করতে। খুব আশ্চর্যজনকভাবে এই প্রচার থেমে যায় ১৯৭৫ সালে। যেখানে প্রতিবছর নিয়ম করে দৈনিক বাংলা সহ নানান পত্রিকায় একাত্তরের এই সেক্টর কমান্ডারের বীরত্বের কাহিনি প্রচার অব্যাহত ছিল ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর সেই প্রচারের 'চেক মেট' ঘটে। ঠিকমত চাল দিতে জানলে নগন্য সৈন্যের হাতেও রাজা বধ করা সম্ভব। পচাত্তরের ১৫ আগস্ট সেটাই প্রমাণিত হয়েছিল।

তাই যখন কেউ বলে জিয়া নিজের জীবদ্দশায় কখনো স্বাধীনতার ঘোষক ইত্যাদি দাবী করেনি, তখন ইতিহাস প্রবল দুঃখেও হেসে দেয়। আমরা সে হাসি শুনতে পাইনা, কিংবা শুনেও না শোনার ভান করে নতুন কাসুন্দিতে জাড়িত করি বানোয়াট জিয়া বন্দনার কেচ্ছা।

১৯৭১ সালে দেশের ভয়ংকর ক্রান্তিকালেও মেজর জিয়া মিডিয়ার শক্তি সম্পর্কে সচেতন ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের পুরোটা সময় হয়তো তিনি একটা পরিকল্পনা পুষে রেখেছিলেন। যার নজির আমরা দেখতে শুরু করি দেশ স্বাধীন হবার পরপরই। এই সমস্ত লেখা এবং সাক্ষাতকারগুলো অসংখ্য মিথ্যা ভাষণে পরিপূর্ণ। স্বাধীনতা পরবর্তী অস্থিরতার দোলাচালে কেউ খেয়াল করেনি একজন সুচতুর মেজর কিভাবে নিজেকে মেলে ধরতে শুরু করেছেন অনাগত এক ভবিষ্যতের পথে। মুক্তিযুদ্ধে আরো অনেক সেনা অফিসার ছিলেন যাঁদের বীরত্বের ঘটনা আরো বেশী দুঃসাহসিক আরো বেশী বৈচিত্র্যময়। তাঁদের কারো বীরত্ব গাঁথা এত বেশী গুরুত্ব দিয়ে ছাপা হয়নি। হলেও এত বেশীবার লেখা হয়নি। কিন্তু মেজর জিয়ার বীরত্বকাহিনি এতটা ফলাও করে প্রচার করার কারণ কী?

আসলে মুক্তিযুদ্ধ বাঙালীর জীবনে এমন একটা আবেগ, সেখানে যদি সঠিকভাবে বিনিয়োগ করা যায় তাহলে তার ফলাফল সুদূরপ্রসারী। মেজর জিয়া এই সত্যটি যতখানি বুঝেছিলেন সেটা আর কেউ বোঝেনি। শেখ মুজিবের সাথে মেজর জিয়ার তুলনা করার কোন অবকাশই নেই। বঙ্গবন্ধু যখন ১৯৭১ সালে একটা বটগাছ, মেজর জিয়া তার নীচে ছোট্ট একটা চারাগাছ মাত্র। অথচ সেই মেজর জিয়া পাঁচ বছর পরে সেই মহীরূহকে ধ্বংস করতে সক্ষম হয়েছিলেন। মেজর জিয়া ফলাফল সম্পর্কে ১% নিশ্চিন্তও ছিলেন না এটা নিশ্চিত। কিন্তু যে বীজটা বপন করা হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের সূচনালগ্নেই, দেশ স্বাধীন হবার পর তা লালনপালন করে গেছেন নিঃশব্দে। ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর সেই গাছের ফল পাড়তে খুব বেশী সময় লাগেনি তাই।

মেজর জিয়া সম্পর্কে যে প্রশ্নগুলো তুলতেই পারি:

১. পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর যেসব চেনা অফিসার বাঙালীদের হাতে মারা গেছে তাদের মধ্যে লে.কর্নেল জানজুয়াও আছে। কিন্তু অন্য যেসব অফিসার মারা গেছে তাদের কে মেরেছে সেটা আমরা জানলেও জানজুয়ার ব্যাপারটা জানি না। আগ্রাবাদ থেকে 'উই রিভোল্ট' বলে ফিরে এসে জানজুয়াকে জিয়া গ্রেফতার করেছিলেন বলে জানিয়েছেন আমাদের। কিন্তু সেই গ্রেফতার কিভাবে করা হয় তা পরিষ্কার না। জিয়া যখন সোয়াতের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন তখন ঢাকায় ট্যাংক নেমে গেছে, চট্টগ্রামে বেসামরিক লোকেরাও তার খবর জানে। অথচ জিয়া জানেন না এটা অবিশ্বাস্য। ফিরে এসে জানজুয়াকে গ্রেফতার করতে গেলেন একা, একা কেন?

২. মুক্তিযুদ্ধের দলিলপত্রে অন্য সব সেক্টর কমান্ডারের যুদ্ধের ঘটনার বর্ননা আছে তাঁদের দেয়া সাক্ষাতকারগুলোতে। কিন্তু জিয়ার কোন যুদ্ধ সাক্ষাতকার নেই। জিয়াকে নিয়ে যেসব লেখালেখি পত্রিকায়, দলিলপত্রে লেখা আছে সেখানেও জিয়া যুদ্ধের কথা না বলে অন্যন্য প্রসঙ্গ এনে সাহিত্য করেছেন। একজন গুরুত্বপূর্ণ সেক্টর কমান্ডার তার যুদ্ধ অভিজ্ঞতা নিয়ে লিখলেন না কেন?

৩. জিয়ার স্বাধীনতা ঘোষণার বিষয়টি দুই দুইটি খণ্ডে বিস্তৃতভাবে লেখা হয়েছে স্বাধীনতার দলিলপত্রে। ৩য় খণ্ডে বেসামরিক প্রশাসন অংশের শুরুতে প্রথম তিনটি প্রতিবেদনই স্বাধীনতা ঘোষণা বিষয়ক যার দুটি জিয়াউর রহমানের ঘোষণা। প্রথমটি বঙ্গবন্ধুর নামে থাকলেও ঘোষণাটি কে পাঠ করেছিলেন তার নাম নেই। আবার ৫ম খণ্ডে এসে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের বিবরণের যাত্রা শুরু মেজর জিয়ার ঘোষণা দিয়ে। সেখানেও একাধিকবার জিয়া ও অন্য সামরিক অফিসারের ঘোষণার কথা আছে। কিন্তু যারা সেই বেতার কেন্দ্র পরিচালনা করছেন, ঘোষণা দিয়েছেন, তাদের কারো নাম নেই। এম এ হান্নান কিংবা বেলাল মোহাম্মদ অথবা বেতার কেন্দ্র কিভাবে যাত্রা শুরু করলো সেই সব ইতিহাস অনুপস্থিত কেন?

শেষ কথা:

ঐতিহাসিক কোন ঘটনার বিবরণ লিখতে গিয়ে সেই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কোন ব্যক্তি যখন সরাসরি ঘটনার বর্ননা দেবার চেয়ে দার্শনিক মালমশলার উপস্থাপনের চেষ্টা করছেন তখন বুঝতে হবে সেখানে কিছু গণ্ডগোল আছে। ঘটনার সত্যতা তিনি প্রকাশ করার চেয়ে আড়াল খোঁজার চেষ্টা করছেন। যিনি ঘটনার সাথে জড়িত কিংবা প্রত্যক্ষদর্শী তিনি যদি ঘটনার সরাসরি বর্ণনার চেয়ে রূপকের দিকে ঝুঁকে যান তিনি তখন সাহিত্যিকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হচ্ছেন এবং এরকম পরিস্থিতিতে সাহিত্যিকের ভূমিকায় অবতীর্ণ ব্যক্তি সত্য প্রকাশে অনাগ্রহী। তাঁর বর্ণিত ইতিহাস বিশ্বাস করলে ইতিহাসের প্রতি অবিচার করা হয়। এই জাতির অন্যতম একটা মৌলিক চরিত্র হলো ইতিহাস বর্ণনাতেও আমিত্ববোধে আক্রান্ত হওয়া। আমিত্ববোধ নিয়ে লেখা ইতিহাস থেকে সত্য উদঘাটন একটু কষ্টকর। মেজর জিয়া আমিত্ববোধে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে সফলতম। তবে আমিত্ববোধে জাতির বিরাট একটা অংশ জড়িত হলেও বাংলাদেশে কৃতিত্ব ছিনতাইয়ের প্রথম একক নায়ক সম্ভবত এই 'ব্যাতিক্রমী' সেক্টরকমান্ডার। জাদুকর যেভাবে রুমাল নেড়ে খেলা দেখিয়ে দর্শক মাত করে, কালো চশমায় ঢাকা এ মানুষটি সেভাবে মাত করে গেছেন বোকা বাঙ্গালিকে। মাতোয়ারা বাঙ্গালির স্লোগানে লোকান্তরিত জিয়া তাই লক্ষ জিয়া হয়ে ঘরে ঘরে পয়দা হতে থাকে। বানোয়াট বীরের ধাক্কায় অনেক দূরে সরে যান জগৎজ্যোতি, রুমী, আজাদেরা। স্বাধীনতার আনন্দেও বিষন্নতা দীর্ঘশ্বাস জমা রাখে লাল সবুজের পতাকায়।

----------------------------------

তথ্যসুত্র :
১. লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে - মেজর(অব.) রফিকুল ইসলাম, বীর উত্তম
২. স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র - বেলাল মোহাম্মদ
৩. মূলধারা ৭১ - মঈদুল ইসলাম
৪. আমার একাত্তর - আনিসুজ্জামান
৫. স্বাধীনতা যুদ্ধের দলিলপত্র - হাসান হাফিজুর রহমান সম্পাদিত (৩য় খণ্ড, ৫ম খণ্ড, ১০খণ্ড, ১১খণ্ড)
৬. দৈনিক বাংলা - জানুয়ারী, মার্চ ১৯৭২। মার্চ ১৯৭৩। মার্চ ১৯৭৪।
৭. যুদ্ধের ময়দান থেকে জিয়ার পলায়ন - সিরু বাঙালী
৮. মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি - ব্যারিষ্টার আমীরুল ইসলাম
৯. তিনটি অভ্যূত্থান ও কিছু না বলা কথা - কর্নেল(অব.) হামিদ

ছবি: 
20/07/2010 - 5:39পূর্বাহ্ন

Comments

অতিথি লেখক's picture

জিয়াউর রহমান সত্যি একজন সুচতুর ব্যক্তি ছিলেন। বঙ্গবন্ধু হত্যার সময় সেটা আমাদের চোখে ধরা পড়েছে। কিন্তু সেই চাতুর্যের সূচনা এত আগে থেকে শুরু হয়েছিল তা জানা ছিল না। পত্রিকার পাতায় ১৯৭২ সাল থেকে যে প্রচারনা শুরু সে বিষয়ে যারা জড়িত ছিল তাদের মধ্যে আমাদের মহান সাংবাদিককুলের কারা কারা ছিলেন, তাদের নামধাম খুজে দেখা দরকার। ইতিহাসে এসব বিভ্রান্তি গোজামিল ঢুকিয়ে মুক্তিযুদ্ধের আসল ইতিহাসকে হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছেন তারা। স্বাধীনতার সুফলের স্ট্যাটাস হিসেবে বাংলাদেশে জিয়া পরিবার শীর্ষে অবস্থান করছে। একটা বায়বীয় মতবাদ দাড় করিয়ে স্বাধীনতার মতো অবিসংবাদিত বিষয়ে বাংলাদেশকে সফলভাবে দ্বিধাবিভক্ত করতে সক্ষম হয়েছে এই ধূর্ত জেনারেল। আপনার পোস্টের অনুসন্ধানী তথ্যগুলো সত্যি অসাধারন। এমন একটি কষ্টসাধ্য লেখা খুব সহজ নয়। আপনার জন্য অনেক শুভকামনা।

-সোহরাব হাসান সৌরভ

আয়নামতি's picture

সে সময়ে হলি ডে'র মত দৈনিক বাংলা পত্রিকাতেও যে এজেন্ডা ভিত্তিক লেখা ছাপা হতো সেটা অন্তত এরকম বায়বীয় পরিবেশনার মাধ্যমে প্রমাণিত(আমার মতে)। একজন সাংবাদিকের নামই ঘুরে ফিরে এসেছে এ সুত্রে। তার নাম সৈয়দ মনজুর আহমদ। তিনি হয়ত এসব খবর ছাপানোর বিষয়টা ক্লিয়ার করতে পারেন। কিন্তু 'কোথায় পাবো তারে?' যাইহোক, পোস্ট পড়ে মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

প্রৌঢ় ভাবনা's picture

অনেক তথ্যসম্বৃদ্ধ কষ্টসাধ্য একটি পোস্ট। এর সাথে আমি কিছু তথ্য সরবরাহ করি।

বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পরে বাংলাদেশের সেনাপ্রধান হতে চেয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। আর সেই যোগ্যতা প্রমাণের জন্যই তাঁর এই আত্মপ্রচার। কর্নেল সফিউল্লাহ্ সেনাপ্রধান নিযুক্ত হওয়ায় তিনি খুব ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন। সেই সময়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে উপপ্রধানের কোন পদ ছিলোনা।

বঙ্গবন্ধু স্বাধীন বাংলাদেশে প্রত্যার্পনের পরে তিনি প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন হাজী গোলাম মোরশেদকে তাঁর অবৈতনিক সহকারী হিসেবে নিযুক্তি দেন। উল্লেখ্য যে, হাজী গোলাম মোরশেদ ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চে বঙ্গবন্ধুর ৩২ নং এর বাড়ি থেকে পাকসেনার হাতে বন্দী হয়েছিলেন। তাঁকে তদানিন্তন ঢাকা সেনানিবাসে বন্দী রেখে নির্মম অত্যাচার করা হয়।
বঙ্গবন্ধু তাঁকে চিকিৎসার জন্য জার্মানি পাঠিয়েছিলেন।

তা, এই হাজী গোলাম মোরশেদ ছিলেন জিয়াউর রহমানের দূর-সম্পর্কের আত্মীয়। এই আত্মীয়তার সুবাদে জিয়াউর রহমানের হাজী গোলাম মোরশেদের বাসায় যাতায়াত ছিলো।
তিনি প্রায়শই হাজী গোলাম মোরশেদের বাসায় যেয়ে তাঁর অসন্তুষ্টির কথা প্রকাশ করতেন। জিয়াউর রহমানের ধারণামতে তাঁর প্রতি অন্যায় করা হয়েছে,তিনি বঞ্চনার শিকার।
প্রতি নিয়ত তাঁর এই আক্ষেপের কারণে হাজী গোলাম মোরশেদের সুপারিশে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে উপপ্রধানের পদ সৃষ্টির আদেশ দেন এবং ঐ পদে জিয়াউররহমানকে বহালের নির্দেশ দেন।

জিয়াউর রহমান ছিলেন অতি উচ্চাকাঙ্খী এক ব্যক্তি। উপপ্রধানের পদ পেয়েই তিনি কর্নেল সফিউল্লাহর বিপরীতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভিতর তাঁর শক্তি সংহত করতে থাকেন। পরবর্তীতে এর প্রভাব আমরা প্রত্যক্ষ করেছি।

হাজী গোলাম মোরশেদ কথাচ্ছলে একদিন আমায় বলেছিলেন, 'এই উপপ্রধানের পদ সৃষ্টি করে সেই পদে জিয়াউর রহমানকে বহাল করা ছিল জীবনের চরম এক ভুল।'

আয়নামতি's picture

অজানা এই তথ্যের জন্য উত্তম জাঝা! ভাবনাদা। আসলেই বিরাট ভুল করেছিলেন গোলাম মোরশেদ সাহেব। একই রকমের আক্ষেপের কথা পড়েছি 'তিনটি সেনা অভ্যুত্থান ও না বলা কিছু কথা'র লেখক কর্ণেল এম এ হামিদের বয়ানে। 'ব্যাতিক্রমী'কে নাকি সুইজারল্যাণ্ডে কুটনীতিক হিসেবে পাঠানোর প্রায় ঠিক হয়ে গিয়েছিল। যেহেতু হামিদ ছিলেন জিয়ার বন্ধু তার সাহায্যে একে ওকে ধরে সেটি ঠেকানো হয়েছিল। পরে যথা সময়ে বন্ধু এম এ হামিদকে যথার্থ প্রতিদান দিয়ে ধন্য করেন। কর্ণেল হামিদ সে প্রতিদানের ভার সহ্য করতে না পেরে স্বেচ্ছা অবসরে চলে যান। তাহলে আরো কী জানলেম জিয়া সম্পর্কে? তিনি লবিং মাস্টার হিসেবেও তুখোড় ছিলেন! একই অঙ্গে বিধাতা এত্ত গুণ কোন প্রকারে দিয়েছিলেন সেটাও গবেষণার বিষয় হতে পারে বটে। পোস্ট পাঠপূর্বক তথ্য শেয়ার এবং মন্তব্যের জন্য আবারও আন্তরিক সাধুবাদ থাকলো। হাসি

এক লহমা's picture

এই বিশ্লেষণগুলো হওয়া খুব জরুরী। ভাল লিখেছ।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

আয়নামতি's picture

এসবে আমাদের আগ্রহ নাই তেমন। তাই সেরকম জরুরী কিনা বুঝিও না সময়ে সময়ে।
**
তুমি কী লেখালিখি ছেড়ে দিয়েছো নাকি হে?

পোস্ট পাঠপূর্বক মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। হাসি

মেঘলা মানুষ's picture

চমৎকার ভাবে দাবার গুটিগুলোকে খেয়ে দিয়েছেন এক লেখায়। চলুক

প্রথম এবং তৃতীয় ছবিটি দেখতে পাচ্ছি না।

শুভেচ্ছা )

আয়নামতি's picture

লিংক ঠিক করলাম। আশা করি এবার দেখা যাবে। পোস্ট পড়বার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ। আপনাকেও শুভেচ্ছা জানালেম হাসি

নীড় সন্ধানী's picture

ইন্টারেস্টিং বিশ্লেষণ! অনুসন্ধানী রিপোর্ট ধরণের হলো।

সিরু বাঙালী নামে একজন মুক্তিযোদ্ধা মেজর জিয়ার বিষয়ে বেশ কয়েকটা বই লিখেছেন। আমি একটি কিনে পড়েছিলাম। প্রথম দেখায় বইটি দেখে খুব বেশী ভক্তি আসেনি। ছাপা বাধাই সম্পাদনা সবই বাজে। তাছাড়া লেখাগুলো দেখে প্রথমেই মনে হয় এ কেবলই পরনিন্দা। জিয়াকে পছন্দ করে না বাংলাদেশে অনেকে। ইনি তার একজন। এরকম বই পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে থাকে।

প্রথমবার গুরুত্বের সাথে না নিলেও স্বাধীনতাযুদ্ধের দলিলপত্র নিয়ে পড়াশোনা করার সময় সিরু বাঙালীর বইটা (সেনাপতির মুক্তিযুদ্ধ ছিনতাই) আবার হাতে নিলাম কিছু ঘটনা মেলানোর জন্য। তখন অবাক হয়ে দেখলাম অযত্নে ছাপা বইটিতে অনেক গুরুতর তথ্য আছে যা স্বাধীনতা যুদ্ধের দলিলপত্রেও পাওয়া গেছে। দৈনিং বাংলার ২৬শে মার্চ সংখ্যার খবরটিও আমি ওখানে দেখেছিলাম। কিন্তু সেটি যে আগেও এরকম বারবার প্রকাশিত হয়েছিল তা জানা ছিল না। ১৯৭৪ সালের বিচিত্রায় জিয়ার একটা লেখা ছাপা হয়েছিল। সেটাই সবচেয়ে বেশি প্রচারিত। কিন্তু তার এত আগ থেকে যে সাপুড়িয়া বাঁশী বাজাতে শুরু করেছিল কে জানতো। এখন তো সন্দেহ হচ্ছে দৈনিক পত্রিকাগুলোর সাথে জিয়ার কোন একটা যোগসুত্র নিশ্চয়ই ছিল ৭২ থেকে ৭৫ পর্যন্ত।

দৈনিক বাংলার সেই মনজুর আহমেদ কি বর্তমানে আমেরিকা প্রবাসী সাংবাদিক মনজুর আহমেদ যিনি সাপ্তাহিক আজকাল নামে একটি পত্রিকার সম্পাদক? যদি তাই হয়ে থাকে তাহলে তাঁর সাথে যোগাযোগ করে ওই রিপোর্টগুলো প্রকাশের পেছনে মেজর জিয়ার কোন ভূমিকা কাজ করেছিল কিনা, তা যাচাই করা সম্ভব।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

আয়নামতি's picture

সিরু বাঙালীর খান দুয়েক লেখা পড়েছি। বেশ ছাইসহ চেপে ধরেছি ধাঁচে লিখেন ভদ্রলোক।

নিজের অবস্হান শক্ত করতে আর জনপ্রিয়তা বাড়াতে যতভাবে সম্ভব জিয়া সেগুলোর প্রায় সবই ট্রাই করেছিলেন মনে হয়। প্রিন্ট মিডিয়া তার একটা। হুম, বিচিত্রার কলামখানা সর্বাাধিক প্রচারিত।

সাংবাদিক সৈয়দ মনজুর আহমেদের বর্তমান অবস্হান কিংবা কর্মকাণ্ড সম্পর্কে আমার তেমন কিছুই জানা নেই ভাইয়া।

পোস্ট পাঠের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ। হাসি

ঈয়াসীন's picture

দরকারী পোষ্ট। চলুক

------------------------------------------------------------------
মাভৈ, রাতের আঁধার গভীর যত ভোর ততই সন্নিকটে জেনো।

আয়নামতি's picture

পোস্ট পাঠের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ। হাসি

ummehasina's picture

অনেক কিছু জানলাম এই স্বৈরশাসক সম্পর্কে । ধন্যবাদ। এত বুদ্ধি !
তার এক উপদেষ্টা ছিল নাম বলতে পারছিনা। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করার পরে বেশ কিছু ভড়ং (যেমন খাল কাটা, কলা গাছ লাগানো) সেই উপদেষ্টার বুদ্ধিপ্রসূত।

Emran 's picture

যতদূর শুনেছিলাম, মহিউদ্দিন খান আলমগীর ছিলেন খাল খনন কর্মসূচির এক অতি উৎসাহী সমর্থক। ঊলশী-যদুনাথপুর প্রকল্প নাকি তারই মানসসন্তান!

অতিথি লেখক's picture

না। মশিউর রহমান যাদু মিয়া ছিলেন খাল কাটা কর্মসূচীর আইডিয়া প্রদানকারী ব্যক্তি। মহিউদ্দিন আহমেদ-এর বিএনপিঃ সময়-অসময় বইয়ে বিস্তারিত বলা হয়েছে। জিয়া ভালো বাংলা বলতে পারত না। পারতো ইংলিশ এবং উর্দু । তাই মশিউর রহমান যাদু মিয়া তাকে বলেছিল গ্রামে গঞ্জে যেতে আর খাল খনন করতে। একই জিনিষ করেছে জিয়ার উত্তরসূরি এরশাদ।
-কাজী

Post new comment

The content of this field is kept private and will not be shown publicly.