জঙ্গিবাদের নাটক: যুওল নোয়াহ হারারি

ত্রিমাত্রিক কবি's picture
Submitted by shopnobaz on Tue, 28/03/2017 - 11:15am
Categories:

জঙ্গিবাদ মূলত একটি সামরিক কৌশল, যেটা মানুষের মধ্যে ভয় সঞ্চার করার মাধ্যমে একটা ভৌগোলিক অঞ্চলের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের চেষ্টা করে। বেশিরভাগ সময় দেখা যায়, কোনো একটা গোষ্ঠী যদি সামর্থের দিক থেকে খুব দুর্বল হয়, বা তারা যাদেরকে প্রতিপক্ষ মনে করে তাদের খুব বেশি বাস্তব ক্ষতি করার ক্ষমতা না থাকে, সে ধরনের গোষ্ঠীই সাধারণত এই ধরনের কৌশলের আশ্রয় নিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লোটার চেষ্টা করে। যদিও এ কথাও সত্যি যে প্রায় সব সামরিক কর্মকাণ্ডই কিছু না কিছু ভয়ের সঞ্চার করে, কিন্তু প্রচলিত অর্থে আমরা যাকে যুদ্ধ বলি সেখানে ভয়টা আসে মূলত বাস্তব ক্ষয়ক্ষতির উপজাত হিসেবে, এবং সাধারণত দেখা যায় এই ক্ষয়ক্ষতি বা ভয় সেই সামরিক শক্তির সামর্থের সাথে অনেকটাই সমানুপাতিক সম্পর্ক রেখে চলে। অথচ জঙ্গি হামলাগুলোর ক্ষেত্রে দেখা যাবে, এখানে ভয় দেখানোটাই মুখ্য উদ্দেশ্য। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই ধরনের গোষ্ঠীর প্রকৃত শক্তি, আর তাদের ভয় দেখানোর ক্ষমতার তুলনা করলে বিশাল একটা অসামঞ্জস্যই চোখে পড়বে।

সহিংসতার মাধ্যমে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের ব্যাপারটা আসলে এতটা সহজ নয়। ১৯১৬ সালের জুলাইয়ের ১ তারিখে সাম (battle of the Somme) যুদ্ধের প্রথম দিনেই প্রায় ১৯,০০০ ব্রিটিশ সৈন্যকে হত্যা করা হয়েছিল। যুদ্ধে আহত হয়েছিল আরও প্রায় ৪০,০০০ সৈন্য। নভেম্বরে যখন যুদ্ধ শেষ হলো, তখন দেখা গেলো দুই পক্ষ মিলে নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে তিন লাখের মতো, আর হতাহতের মোট সংখ্যা দশ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। অথচ এই ভয়াবহ পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতিও কিন্তু ইউরোপের রাজনৈতিক চিত্র খুব একটা পাল্টাতে পারেনি। এর পরে আরও দুই বছর ধরে লাখ লাখ হতাহতের ঘটনার পরে ইউরোপের রাজনৈতিক চরিত্রের কিছুটা পরিবর্তন আসে।

সামের যুদ্ধের সাথে যদি তুলনা করা হয়, তাহলে বলতেই হয় জঙ্গিবাদ একটা সামান্য ঘটনা। লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, অধিকাংশ জঙ্গি আক্রমণে হতাহতের সংখ্যা খুব বেশি হয় না। ২০০২ সালে যখন ইজরায়েলে প্রায় প্রতিদিন বাস, রেস্টুরেন্ট ইত্যাদি জায়গায় হামলা করা হচ্ছিল সে বছর জঙ্গি হামলা জনিত কারণে ইজরায়েলে মোট নিহতের সংখ্যা ছিল ৪৫১। সেই একই বছর ৫৪২ জন ইজরায়েলি মারা যান সড়ক দুর্ঘটনায়। খুব কম জঙ্গি হামলায়ই হতাহতের সংখ্যা একশ ছাড়িয়ে যায়। নাইন-ইলেভেনের সন্ত্রাসী হামলা এই ক্ষেত্রে একটা নতুন মাইলফলক তৈরি করে, যেখানে নিহতের সংখ্যা গিয়ে পৌছে প্রায় তিন হাজারে। তারপরেও প্রচলিত অর্থে আমরা যাকে যুদ্ধ বলি তার সাথে তুলনা করলে এই সংখ্যাকেও আসলে একেবারেই ক্ষুদ্র মনে হবে। ১৯৪৫ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ইউরোপে জাতীয়তাবাদি, ধর্মভিত্তিক, বামপন্থী, ডানপন্থী বিভিন্ন ধরনের গোষ্ঠীর যতো মানুষ এই ধরনের হামলায় নিহত হয়েছে তাদের সংখ্যা প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কোনো একটা লড়াইয়ের নিহতের সংখ্যার তুলনায় নগণ্য। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, এইন্নের তৃতীয় যুদ্ধে (3rd battle of the Aisne) হতাহতের সংখ্যা ছিল প্রায় ২,৫০,০০০ অথবা আইসঞ্জো এর দশম যুদ্ধে (10th battle of the Isonzo) এই সংখ্যা ছিল প্রায় ২,২৫,০০০।

এখন প্রশ্ন হলো, তাহলে এই ধরনের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে এই জঙ্গিরা কীভাবে খুব বেশি কিছু অর্জনের আশা করে? এরকম এক একটা হামলার পরেও যাদেরকে এই জঙ্গিরা শত্রুপক্ষ বলে বিবেচনা করে তাদের সৈন্যসংখ্যা, অস্ত্রশস্ত্র, গোলাবারুদ, যুদ্ধজাহাজ এগুলোর পরিমাণ তো তেমন বদলায় না। তাদের যোগাযোগ, রাস্তাঘাট, রেলপথ, বন্দর, কলকারখানা এসবও মূলত অক্ষত থাকে। জঙ্গিরা জানে তারা তাদের শত্রুপক্ষের তেমন কোনো বাস্তব ক্ষতি করতে পারবে না, কিন্তু তারা মূলত আশা করে যে, একটা ভয় আর সন্দেহ যদি ছড়িয়ে দেয়া যায় তাহলে শত্রুপক্ষ হয়ত তাদের শক্তি অপ্রয়োজনীয় জায়গায় ভুলভাবে খরচ করবে। এদের কৌশল অনেকটা তাই-চি মাস্টারের মতো। এরা প্রতিপক্ষের শক্তি দিয়েই প্রতিপক্ষকে বধ করবার চেষ্টা করে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ১৯৫০ সালে ফরাসিরা আলজেরিয়াতে ন্যাশনাল লিবারেশান ফ্রন্টের কাছে হেরে যায়নি, বরং ন্যাশনাল লিবারেশান ফ্রন্টের সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বিপথগামী এবং ভুল পথে পরিচালিত প্রতিক্রিয়ার কারণে হেরেছিল। ইরাক এবং আফগানিস্তনের ঘটনাও অনেকটা একই রকম। আল-কায়দার একটু আধটু ধমকি-ধামকির বিপক্ষে শক্তিধর আমেরিকার এতটা শক্তি প্রদর্শনের হয়ত প্রয়োজন ছিল না।

জঙ্গিরা জানে যখন তাদের প্রতিপক্ষ তাদের মোকাবেলার জন্য সমস্ত শক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়বে সেটা যে রকম রাজনৈতিক আর সামরিক অস্থিতিশীলতা তৈরি করবে সেটা তারা নিজেরা কোনোদিনও করতে পারবে না। আর এইরকম অস্থিতিশীল সময়ে হিসেবের বাইরে অনেক কিছু ঘটে যায়। অনেক ভুলভাল হয়, সহিংস ঘটনা ঘটে, জনমত বদলায়, মানুষের মনে সন্দেহের সৃষ্টি হয়, নিরপেক্ষরা তাদের অবস্থান পরিবর্তন করে আর এর সাথে সাথে ক্ষমতার ভারসাম্যেও অদলবদল ঘটার সম্ভাবনা থাকে। জঙ্গিরা জানে না যে আসলে এই অস্থিতিশীলতার ফলাফল কী হবে, কিন্তু এরকম অস্থিতিশীল ঘোলা পানিতে তাদের শিকারে সফল হবার সম্ভাবনা সাধারণ শান্তিপূর্ণ অবস্থার চেয়ে অন্তত অনেক বেশি।

নতুন সুযোগের অপেক্ষায়

সামরিক কৌশল হিসেবে জঙ্গিবাদ একেবারেই আকর্ষনীয় নয়। কারণ এখানে সব গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষমতা প্রতিপক্ষের হাতেই রয়ে যায়। যেহেতু জঙ্গিরা তেমন উল্লেখযোগ্য মাত্রায় ক্ষতি করতে পারে না, তাই হামলার আগে আর পরে প্রতিপক্ষের শক্তিমত্তার মধ্যে বিশেষ কোনো পার্থক্য হয় না। যে কোনো সেনাবাহিনী সাধারণত যে কোনো মূল্যে এই ধরনের পরিস্থিতি এড়িয়ে চলবার জন্য চেষ্টা করে। যখন কোনো সেনাবাহিনী কোথাও আক্রমণ করে তখন তারা এ জন্য আক্রমণ করে না যে, তাদের আক্রমণের পরে শত্রুপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে প্রতি-আক্রমণ করতে উদ্বুদ্ধ হয়। বরং তারা চেষ্টা করে প্রতিপক্ষকে একেবারেই গুঁড়িয়ে দিতে, বিশেষ করে তাদের সবচেয়ে শক্তিশালী জায়গাগুলো ধ্বংস করে দিতে, যাতে চাইলেও তারা প্রতি-আক্রমণ করতে না পারে। জাপান যখন ১৯৪১ সালের ডিসেম্বর মাসে আমেরিকার সমুদ্রসীমার পার্ল হারবারে আক্রমণ করছিল, তাদের লক্ষ্য ছিল, যে কোনো মূল্যেই হোক আমেরিকা যেন অন্তত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় নিকটবর্তী সময়ে আক্রমণের জন্য কোনো রণতরী পাঠাতে না পারে।

শত্রুপক্ষের বিশেষ কোনো ক্ষতি না করে বরং তাদের উস্কে দেয়ার কৌশল মূলত একটা বেপরোয়া সিদ্ধান্ত। আর কোনো উপায় না থাকলেই কেবল এরকম কাজ কেউ করতে পারে। কারও যদি আসলেই সামর্থ থাকে বড় কোনো ক্ষতি করে ফেলার, শুধু ভয় দেখিয়ে তো সে ক্ষান্ত হতে চাইবে না। ১৯৪১ এ জাপান যদি শুধুমাত্র আমেরিকাকে উস্কে দেবার জন্য পার্ল হারবারকে অক্ষত রেখে সাধারণ মানুষ বহনকারী কোনো একটা জাহাজকে আক্রমণ করে বসত তাহলে সেটা হতো পাগলামিরই নামান্তর।

যারা জঙ্গিবাদকে তাদের সামরিক কৌশল হিসবে বেছে নেয়, তারা আসলে জানে তাদের একটা সত্যিকারের যুদ্ধ করবার সামর্থ নেই। এজন্য তারা একটা চোখধাঁধানো নাটক সাজাবার চেষ্টা করে। এদের চিন্তা ভাবনা সে অর্থে সেনাবাহিনীর অধিনায়কের মতো না, বরং এরা চিন্তা করে অনেকটা নাটক নির্মাতার মতো। নাইন-ইলেভেনের হামলা সম্পর্কে যদি মানুষকে জিজ্ঞেস করা হয়, বেশিরভাগ মানুষেরই সম্ভবত বলবে আল-কায়দা কর্তৃক ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের টুইন টাওয়ার ধ্বংসের কথা। যদিও নাইন-ইলেভেনের হামলা শুধুমাত্র এই দুইটি টাওয়ারে হামলার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না। তাহলে অধিকাংশ মানুষ কেন নাইন-ইলেভেনের অন্য হামলা দু’টির কথা ভুলে যায়? নাইন-ইলেভেন যদি একটা মূলধারার সামরিক হামলা হতো, তাহলে পেন্টাগনে যে হামলা হয়েছিল সেটাই সম্ভবত সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পেত। এই হামলায় আল-কায়দা তার শত্রুপক্ষের প্রতিরক্ষা সংস্থার কেন্দ্রীয় ভবনের একাংশ ধ্বংস করে দিল, উচ্চপদস্থ কমান্ডারদের আহত, নিহত করল, তারপরেও কেন সাধারণ মানুষের মনে কিছু আমজনতার মৃত্যু আর দু’টি ভবন ধ্বংসের স্মৃতি বেশি প্রাধাণ্য পেল? এটার মূল কারণ হলো পেন্টাগন ভবনটি একদিকে প্রায়সমতল, তাছাড়া ভবন হিসেবেও দৃষ্টিনন্দন নয়, অন্যদিকে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের সুউচ্চ ভবন দু’টি ভেঙ্গে পড়ার দৃশ্য মানুষের মনে একটি অন্যমাত্রার প্রণোদনা তৈরি করে, অনেকটা একটি দৃষ্টিনন্দন চলচ্চিত্রের দৃশ্যের মতো। যে একবার সেই দৃশ্য দেখেছে তার পক্ষে সেটা ভুলে যাওয়া প্রায় অসম্ভব। আমরা বুঝতে পারছি যে জঙ্গিবাদ আসলে একটা নাটকের মতো, তাই এর বাস্তব ক্ষয়ক্ষতির খুব বেশি না করতে পারলেও এটা মানুষের মনে অনেক গভীর একটা ক্ষত রেখে যায়। আমরা ধারণা করতে পারি, হয়ত ওসামা বিন লাদেন আরও খুশি হতো যদি হামলাটা তারা স্ট্যাচু অব লিবার্টিতে করতে পারত। সেক্ষত্রে হয়ত আরও অনেক কম মানুষ মারা যেত, সামরিক ক্ষয়ক্ষতিও হয়ত তেমন হতো না, কিন্তু এটা মানুষের মনে কী পরিমাণ প্রভাব সৃষ্টি করতে পারত সেটা বোধহয় ধারণাও করা যায় না।

জঙ্গিদের মতই যারা জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় কাজ করছেন তাদেরও উচিত এখন সেনা অধিনায়কের মতো না ভেবে নাটক নির্মাতার মতো করে চিন্তা করতে শেখা। আমরা যদি জঙ্গিবাদকে কার্যকারীভাবে মোকাবেলা করতে চাই আমাদের প্রথমেই বুঝতে হবে, জঙ্গিরা যে ধরনের কার্যকলাপ করে সেগুলো আমাদেরকে পরাজিত করবার জন্য যথেষ্ট নয়। বরং আমরা যদি অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখাই, তাদের উস্কানিতে তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করতে শুরু করি, তাহলে আমাদের নিজেদের কারণেই আমরা পরাজিত হতে শুরু করব।

জঙ্গিরা যে উদ্দেশ্যে কাজ করছে সেটা প্রায় অসম্ভব। প্রায় শূন্য সামরিক শক্তি নিয়ে তারা এক একটা দেশের রাজনৈতিক ভারসাম্য রদবদলের চেষ্টা করছে। তাদের লক্ষ্য অর্জনের জন্য তারা রাষ্ট্রকে বারবার সেই অসম্ভব কর্তব্যের কথা মনে করিয়ে দেয় যে, রাষ্ট্র যে কোনো সময় যে কোনো জায়গায় তার সকল নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তারা এই সুযোগে রাজনীতির খেলায় একটা সম্ভাব্যতার সুযোগটা নিয়ে দেখতে চায়। তারা বারবার পরখ করে দেখতে চায়, এই খেলায় ভাগ্যের জোরে হলেও তাদের হাতে কোনো টেক্কা উঠে আসে কিনা!

এ কথা সত্যি যে রাষ্ট্র চাইলে অনেক সময়েই তার নাগরিকদের নিরাপত্তা বিধানের জন্য নানা রকম রাজনৈতিক সংঘাত থেকে জনগণকে রক্ষার জন্য অনেক জঙ্গিবাদী সংগঠনকে গুঁড়িয়ে দিতে পারে। অতীতে অনেক রাষ্ট্রই এরকম অনেক জঙ্গিবাদী সংগঠনকে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে। ২০০২-০৪ সালে ইজরায়েল প্রমাণ করেছে যে জঙ্গিবাদী প্রচারণাকে পেশী শক্তির মাধ্যমে অনেকটাই দমন করা সম্ভব। জঙ্গিরা ভালো করেই জানে তারা যে ধরনের কার্যকলাপ করে তাতে তাদের জয় লাভের সম্ভাবনা সামান্যই। কিন্তু যেহেতু তারা একটা সংগঠন হিসেবে খুবই দুর্বল, এবং যেহেতু তাদের উল্লেখযোগ্য কোনো সামরিক শক্তি নেই, তাই তাদের আসলে হারানোর মতো তেমন কিছু নেই। বরং এই যে জঙ্গিবাদ মোকাবেলার নামে যদি একটা রাজনৈতিক টানাপোড়েন আর অস্থিতিশীলতা তৈরি হয় এটা তাদের কাজে আসলেও আসতে পারে। এই সুযোগটা পাওয়ার সম্ভাবনা আছে বলেই তারা এই জুয়াটা খেলতে চায়। তারা জানে তাদের হাতে যে তাস আছে তাতে তাদের হারানোর মতো কিছু নেই, কিন্ত ভাগ্য একটু ভালো হলে নতুন দানে তাদের হাতে ভালো কিছু তাস চলে আসলেও আসতে পারে।


শূন্য কলসে ভাঙ্গা পয়সার আওয়াজ

কিন্তু একটা রাষ্ট্র কেন রাজি হবে জঙ্গিদের সাথে নতুন দান খেলতে? যেহেতু জঙ্গিবাদের বাস্তব ক্ষয়ক্ষতি খুব উল্লেখযোগ্য কিছু নয় তাহলে রাষ্ট্র তো চাইলে এ ব্যাপারে কিছু না করেও বসে থাকতে পারে। অথবা এমন কিছু শক্ত ব্যবস্থা নিতে পারে যেগুলো সাংবাদিক বা সাধারণ মানুষের নজরে আসবে না। আসলে রাষ্ট্র অনেক সময়েই ঠিক এই কাজটাই করে থাকে। কিন্তু অনেক সময়েই রাষ্ট্রও মাথা গরম করে ফেলে জঙ্গিদের উস্কানিতে সাড়া দেয়, এবং জঙ্গিরা যা চায় ঠিক সেটাই করতে শুরু করে।

কিন্তু রাষ্ট্র এই জঙ্গিদের উস্কানির ব্যাপারে এতটা সংবেদনশীল কেন হয়ে ওঠে এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এর উত্তরে বলা যেতে পারে, আধুনিক রাষ্ট্রের একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রতিশ্রুতি হলো রাজনৈতিক সহিংসতাকে সাধারণ জনতার পরিসর থেকে দূরে রাখা। একটা রাষ্ট্র অনেক সত্যিকার ঝামেলাতেও টিকে থাকতে পারে, এমনকি একেবারে পাত্তা না দিয়েও টিকে থাকতে পারে, যদি এমন হয় যে সেই রাষ্ট্রের টিকে থাকার জন্য সেই বিশেষ সমস্যাটি নিয়ে সতর্ক হবার ব্যাপারে কারও পক্ষ থেকে বিশেষ কনো আশাবাদ বা শর্ত নেই। অথচ একটা রাষ্ট্র একটা ছোট্ট সমস্যাতেও ধ্বংস হয়ে যেতে পারে যদি দেখা যায় সেটার ব্যাপারে রাষ্ট্রের কাছ থেকে এক ধরনের আশাবাদ আছে। চতুর্দশ শতকে প্লেগের কারণে এক-চতুর্থাংশ থেকে অর্ধেক ইউরোপিয়ানের মৃত্যু হয়। কিন্তু এত প্রাণহানির পরেও ইউরোপে কিন্তু কোনো রাজার পতন হয়নি। যদিও কোনো রাজা প্লেগ থামানোর জন্য কোনো উল্লেখযোগ্য চেষ্টাও করেনি। কারণ কেউ তখন মনেই করেনি যে, প্লেগ থামানোর চেষ্টা করা কোনো রাজার কাজের মধ্যে পড়ে। অন্যদিকে যে সব শাসক প্রচলিত ধর্মের সাথে সাংঘর্ষিক ধর্মমত নিজের রাজ্যে অনুমোদন করেছিল তারা অনেকেই তাদের মুকুট হারিয়েছে, কেউ কেউ মুকুট পরার জায়গাটাও।

আজকের যুগে একটা সরকার চাইলে পারিবারিক আর যৌন সহিংসতার প্রতি লক্ষ্য না করলেও টিকে থাকতে পারে, কারণ এটা রাষ্ট্রের প্রতি নাগরিকের আশাবাদকে লঙ্ঘন করে না। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ফ্রান্সে প্রতি বছর প্রায় ১০০০ এর মতো ধর্ষণ মামলা হয় এবং আরও হাজার ধর্ষণের ঘটনা ঘটে যেগুলো এমনকি নথিবদ্ধও করা হয় না। অথচ এত এত ধর্ষক অথবা অত্যাচারী স্বামীকে কিন্তু রাষ্ট্রের প্রতি হুমকিস্বরূপ দেখা হয় না। কারণ ঐতিহাসকিভাবে ধর্ষণ আর পারিবারিক সহিংসতাকে মোকাবেলা করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে রাষ্ট্রের জন্ম হয় নি। অন্যদিকে জঙ্গিবাদের ঘটনা এই ঘটনাগুলোর তুলনায় একেবারেই অনুল্যেখযোগ্য হলেও এটাকে রাষ্ট্রের প্রতি একটা হুমকিস্বরূপ দেখা হয়। কারণ গত কয়েক শতক ধরে আধুনিক পাশ্চিমা রাষ্ট্র ধীরে ধীরে সাধারণ জনতার পরিসর থেকে রাজনৈতিক সহিংসতাকে থেকে দূরে রাখার যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছে এই ধরনের হামলাগুলো সেই প্রতিশ্রুতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে দেয়।

যদি আমরা মধ্যযুগের দিকে তাকাই তাহলে দেখব, তখন কিন্তু সাধারণ জনগণ এই রাজনৈতিক সহিংসতার বাইরে ছিল না। বরং রাজনীতির ক্ষেত্রে যারা এই ধরনের সহিংসতাকে যত বেশি ব্যবহার করতে পারতো তাদের পক্ষে রাজনীতির খেলায় গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠার অনেক সহজ ছিল। সে সময় শুধু সম্ভ্রান্ত পরিবারই যে নিজেদের অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত বাহিনী রাখত এমন নয়, বরং নগর, গির্জা, শিল্পীগোষ্ঠী এমনকি সন্ন্যাসীদের মঠ পর্যন্ত নিজেদের লাঠিয়াল বাহিনী রাখত। যখন কোনো উচ্চপদস্থ কেউ একজন মারা যেত তখন কে তার স্থলাভিষিক্ত হবে এসব নির্ণয় করার জন্য অনেক সময়েই সাধু-সন্ন্যাসী, এলাকার মাস্তান থেকে সাধারণ মানুষ পর্যন্ত হাতে অস্ত্র তুলে নিত, আর অস্ত্রের মাধ্যমেই সেসবের সমাধান হতো।

এই রকম সময়ে জঙ্গিবাদেরর কোনো অস্তিত্ব ছিল না। যাদের সামর্থ ছিল না যথেষ্ট উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি করার তাদের এই ধরনের কাজ বিশেষ পাত্তা পেত না। যদি ১১৫০ সালে কিছু মুসলিম মৌলবাদী জেরুজালেমে কিছু সাধারণ জনতাকে হত্যা করে দাবী করত যে ক্রুসেডারদের এই পবিত্র ভূমি থেকে সরে যেতে হবে, তাহলে সেটাকে কেউ সন্ত্রাস ভাবত না, বরং হাসাহাসি করত। কারণ সেরকম দাবী যদি কেউ করতে চায় তাদের তাহলে তার উচিত এরকম কাজের জন্য ঠিকভাবে প্রস্তুতি নেয়া, শক্তি সঞ্চয় করে দু একটা দুর্গ টুর্গ গড়ে তোলা। আমরা যে ধরনের জঙ্গিবাদ নিয়ে এখন চিন্তিত হই সেটা নিয়ে আমাদের মধ্যযুগের পূর্বপুরুষেরা এতটা চিন্তিত ছিলেন না, কারণে তাঁদের জীবনে আরও কঠিন কঠিন সব সমস্যার অস্তিত্ব ছিল।

আধুনিক সময়ে রাষ্ট্র ধীরে ধীরে জনসাধারণের পরিসর থেকে রাজনৈতিক সহিংসতাকে কমিয়ে এনেছে। বিশেষ করে গত কয়েক দশকে পশ্চিমা দেশগুলোতে রাজনৈতিক সহিংসতার পরিমাণ প্রায় শূন্যের কাছাকাছি নেমে এসেছে। আধুনিক রাষ্ট্রের নাগরিকেরা কোনো পেশী শক্তির সাহায্য না নিয়েই বিভিন্ন সংগঠন এমনকি রাষ্ট্র পরিচালনার কাজেও অংশ নেবার চেষ্টা করতে পারে। কোটি কোটি ইউরো, লক্ষ লক্ষ সৈন্য, হাজার হাজার জাহাজ, উড়োজাহাজ, পারমাণবিক অস্ত্রের দখল এক দল থেকে আরেক দলের হাতে চলে আসছে কোন রকম গুলি বিনিময় ছাড়াই। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই মানুষ এখন এই নিয়মেই অভ্যস্ত হয়ে গেছে, আর এটাকেই স্বাভাবিক বলে ধরে নিয়েছে। আর এরই ফলস্বরূপ এখন মানুষ কিছু বিচ্ছিন্ন রাজনৈতিক সহিংসতাকেও রাষ্ট্রের অস্তিত্বের প্রতি হুমকিস্বরূপ বিবেচনা করে। একটা খালি কলসির ভেতর একটা পয়সা যেমন বিকট আওয়াজ করতে পারে এটা যেন অনেকটা সেরকমই।

আর ঠিক এই জিনিসটিই এই জঙ্গিবাদের নাটককে এতটা শক্তিশালী করে তোলে। আধুনিক রাষ্ট্রে যেহেতু এই ধরনের রাজনৈতিক সহিংসতা প্রায় হয় না বললেই চলে, তাই রাষ্ট্রকে আমরা একটি রাজনৈতিক সহিংসতা বর্জিত একটি বিরাট খালি কলস হিসেবে বিবেচনা করতে পারি। এই বিশাল শূন্যতা ঠিক একটি বিবর্ধকের মতো কাজ করে এবং ছোটখাটো কোনো হামলার ঘটনার শব্দও অনেক জোরে আমাদের কানে এসে পৌছায়। একটা রাষ্ট্রে রাজনৈতিক সহিংস ঘটনার পরিমাণ যতো কম হয় সেখানে এই ধরনের হামলার প্রভাব ততো বেশি। এ জন্যেই প্যারিসে ১৭ জন মানুষ হত্যা করে জঙ্গিরা যে রকম মনোযোগ পায় নাইজেরিয়া বা ইরাকে শত শত মানুষ মেরে ফেললেও তার কাছাকাছি মনোযোগও পায় না। তাহলে এটা বলা যায় যে, আধুনিক রাষ্ট্র এই ধরনের রাজনৈতিক সহিংসতা থেকে মুক্ত বলেই এই ধরনের জঙ্গি হামলায় তার অস্তিত্ব বিপন্ন হবার উপক্রম হয়। অথচ একটা মধ্যযুগীয় রাজ্যে এ ধরনের হামলা সম্ভবত পাত্তাই পেত না।

নিজের রাষ্ট্রীয় সীমানায় যে কোনো ধরনের রাজনৈতিক সহিংসতা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি বিভিন্ন আধুনিক রাষ্ট্র অনেক দিন থেকেই দিয়ে আসছে। একই সাথে এইসব রাষ্ট্রের নাগরিকরাও এই ধরনের সহিংসতায় এখন আর অভ্যস্ত নয়। ফলে এই জঙ্গি হামলার ঘটনাগুলো এই নাগরিকদের মধ্যে ভয়াবহ নৈরাজ্যের একটা ধারণা তৈরি করে, তারা ভাবতে থাকে সমাজের সব কিছু বুঝি ধ্বসে পড়ছে। আমাদের শত শত বছরের রক্তাক্ত ইতিহাসের পরে আমরা যখন হামাগুড়ি দিয়ে সেই অন্ধকার গহবর থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছি, আমরা বারবার দেখছি সেই অন্ধকার সেখানেই অপেক্ষা করছে, আর চেষ্টা করছে আমাদের বারবার গ্রাস করবার। এজন্য দুই-একটা এরকম ঘটনা ঘটে আর আমরা ভাবতে থাকি আমরা বোধহয় আবার সেই পেছনের দিকেই ফিরে যাচ্ছি।

এই ভয়গুলো কমানোর জন্য বা দূর করার জন্য রাষ্ট্র তখন তখন প্রতিক্রিয়া দেখায় রাষ্ট্রের হাতে থাকা নিজস্ব ব্যবস্থার মঞ্চায়নের মাধ্যমে। জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সবচেয়ে কার্যকরী অস্ত্র হতে পারে ভালো গোয়েন্দা সংস্থা বা জঙ্গিদের বিরুদ্ধে কিছু গোপন অভিযান, বিশেষ করে এদের যোগাযোগ আর অর্থনৈতিক জাল ছিঁড়ে দেবার জন্য। যখনই রাষ্ট্রের নাগরিকেরা টুইন টাওয়ার ধ্বংসের সন্ত্রাস মঞ্চস্থ হতে দেখলো তখনই রাষ্ট্রও একই মাত্রার একটি জঙ্গিবিরোধী কর্মকাণ্ড মঞ্চস্থ করার প্রয়োজন বোধ করল। রাষ্ট্র এসব ক্ষেত্রে চুপেচাপে পর্দার আড়ালে কার্যকরভাবে কাজ করার বদলে বরং একটি লোকদেখানো জঙ্গিবিরোধী ঝড় তোলবার প্রয়োজন বোধ করে। আর এই ধরনের গোষ্ঠীরা ঠিক এই জিনিসটাই চায়।

পারমাণবিক জঙ্গিবাদ

জঙ্গি গোষ্ঠীগুলো যদি পারমাণবিক বা জৈবিক অস্ত্র ব্যবহার করে জঙ্গি কার্যকলাপ ঘটাতে শুরু করে তাহলে কী হবে? অনেকে যেমন ভবিষ্যদ্বাণী করেন তেমন কি আসলেও হতে পারে? জঙ্গি গোষ্ঠীরা যদি সত্যি সত্যি বড় ধরনের হত্যাকাণ্ড চালানোর মতো অস্ত্রশস্ত্র জমা করে সত্যি সত্যি বিশাল কোনো ক্ষতি করে ফেলে? এরকম যদি আসলেই ঘটে তাহলে আজকের আধুনিক রাষ্ট্রের যে পরিচয় আমরা জানি তা হয়ত তখন বিলুপ্ত হয়ে যাবে। কিন্তু এই আধুনিক রাষ্ট্রের বিলুপ্তির সাথে সাথে যে বিশেষ ধরনের জঙ্গিবাদের কথা আমরা বলছি সেটাও ধ্বংস হয়ে যাবে। ঠিক যেমন পোষকের মৃত্যু হলে তার ওপর নির্ভরশীল পরজীবীরও মৃত্যু হয়।

যদি অল্পকিছু মৌলবাদী মানুষের প্রতিনিধিত্বকারী এইসব ছোট সংগঠন একটা দেশ ধ্বংস করে দিতে পারে, লক্ষ লক্ষ মানুষকে হত্যা করতে পারে, তাহলে আমরা আমাদের রাজনৈতিক সহিংসতাহীন রাষ্ট্রের যে বর্তমান চরিত্র সেটা হারিয়ে ফেলব। তখন সমাজ ও রাজনীতির চরিত্রের আগাপাশতলা বদলে যাবে। এটা বলা খুব কঠিন যে তখন মানুষের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড কীভাবে পরিচালিত হবে, তবে এটা নিশ্চয়ই বলা যায় যে সেটা বর্তমানের জঙ্গিবাদী আর জঙ্গিবিরোধী কর্মকাণ্ডভিত্তিক রাজনীতির চেয়ে অনেকাংশেই ভিন্ন হবে। যদি ২০৫০ সালে পৃথিবীর জঙ্গিবাদীরা যদি পারমাণবিক আর জৈব অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে যায়, তখন হয়ত ভুক্তভোগী মানুষ আজকের পশ্চিমা বিশ্বের দিকে তীব্র অবিশ্বাস নিয়ে পেছন ফিরে তাকাবে এবং ভাববে, এত নিরাপত্তার মধ্যে বাস করেও তখনকার মানুষ নিজেকে কেন এতটা নিরাপত্তাহীন ভাবতো?

[*লেখাটি গার্ডিয়ানে প্রকাশিত গবেষক এবং সুলেখক Yuval Noah Harariর the theatre of terror লেখাটির ভাবানুবাদ। অনুবাদের সময় আমি লেখাটির মূল ভাব ঠিক রেখে কিছু ক্ষেত্রে নিজের মতো বাক্য গঠন করেছি। আশা করছি এতে লেখাটির মূলভাব কোথাও নষ্ট হয়নি। তারপরেও কারও চোখে কোন অসংগতি ধরা পড়লে মন্তব্যের জানালে কৃতজ্ঞ থাকব। লেখাটি খোমাখাতার মাধ্যমে নজরে আনার জন্য হাঁটুপানির জলদস্যুকে কৃতজ্ঞতা।

*এটি সম্পূর্ণভাবে অনুবাদকের মতামতের প্রতিফলন নয়।

*টাইপো এবং অজ্ঞতা জনিত বানান ভুল কেউ ধরিয়ে দিলে কৃতজ্ঞ থাকব।]


Comments

ঈয়াসীন's picture

চলুক

------------------------------------------------------------------
মাভৈ, রাতের আঁধার গভীর যত ভোর ততই সন্নিকটে জেনো।

ত্রিমাত্রিক কবি's picture

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

ইশতিয়াক রউফ's picture

ভালো লাগলো পড়ে।

ত্রিমাত্রিক কবি's picture

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

অতিথি লেখক's picture

ভাই শব্দটা "তাই-চাই" না, হইব "তাই-চী" বা 太极, এডা একখান চীনা শব্দ, এর মানে হইল গিয়া "মহান"। তাই-চী হইল গিয়া একধরণের মার্শাল আর্ট, আসলে এই কিসিমের মার্শাল আর্ট রে কয় 太极拳 বা "তাই-চী চুয়ান" এর মানে হইল গিয়া "মহামল্লযুদ্ধ", 拳 মানে মল্লযুদ্ধ। লেখায় উত্তম জাঝা!

ত্রিমাত্রিক কবি's picture

অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। ঠিক করে দিচ্ছি।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

বোম্বাগড়ের প্রজা's picture

পড়ে ভাল লাগলো।

খালি চোখে ধরা পড়া কিছু প্রমাদঃ
ভৌগলিক -> ভৌগোলিক
ধরণ -> ধরন
ইওরোপ -> ইউরোপ
অপ্রোয়োজনীয় -> অপ্রয়োজনীয়
উদহরণ -> উদাহরণ
কোনোদিন -> কোনদিন (দুইটাই শুদ্ধ মনে হয়)
কোনো -> কোন (দুইটাই শুদ্ধ মনে হয়)
জানেনা -> জানে না
ডিসেম্বার -> ডিসেম্বর
প্রাধাণ্য -> প্রাধান্য
সামন্যই -> সামান্যই
স্থালভিষিক্ত -> স্থলাভিষিক্ত
বুরং -> বরং
উপায় উপায় -> উপায়
বার বার -> বারবার
ভবিষ্যতবাণী -> ভবিষ্যদ্বাণী
কীভাবে -> কিভাবে
তাঁকানো -> তাকানো

বোম্বাগড়ের প্রজা's picture

আহা এরপর ফখা ইবনে চখার 'জঙ্গি দমনের নামে নাটক করছে সরকার' আর কে কে অস্বীকার করবে! চোখ টিপি ;)

ত্রিমাত্রিক কবি's picture

অসংখ্য ধন্যবাদ হাসি

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

সোহেল ইমাম's picture

চমৎকার একটা লেখা, অনুবাদটা সুন্দর হয়েছে। পড়ার সময় মনে হয়নি অনুবাদ পড়ছি। জঙ্গিবাদ নিয়ে এই স্বচ্ছ আলোচনাটার খুবই দরকার ছিলো।

---------------------------------------------------
মিথ্যা ধুয়ে যাক মুখে, গান হোক বৃষ্টি হোক খুব।

ত্রিমাত্রিক কবি's picture

অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

আব্দুল্লাহ এ.এম.'s picture

চমৎকার বিষয়বস্তু নিয়ে চমৎকার একটি লেখা। শুধু শেষাংশের এই অংশটুকুর অর্থ আসলে কী, তা ভালভাবে বুঝতে পারলেম না- "যদি ২০৫০ সালে পৃথিবীর জঙ্গিবাদীরা যদি........ তখনকার মানুষ নিজেকে কেন এতটা নিরাপত্তাহীন ভাবতো?"

ত্রিমাত্রিক কবি's picture

আমার মনে হয় এখানে যা বোঝাতে চাওয়া হয়েছে সেটা হলো, জঙ্গিরা যদি আসলেই ২০৫০ সালে রাজনৈতিক ক্ষমতা দখল করে ফেলে তাহলে মানুষ এত নিরাপত্তাহীনতাইয় থাকবে যে তখন এই সময়কার নিরাপত্তাহীনতা নিয়ে আমাদের যে অভিযোগ সেটা সে সময়কার মানুষের কাছে হাস্যকর মনে হবে।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

স্পর্শ's picture

লেখার মূল বক্তব্যে সহমত। তবে লেখাটা অসম্পূর্ণ।

আর এই নোয়াহ হারিরি কি ইসরায়েলী নাকি? এই লেখায়, ইসরায়েল একটা ধোয়া তুলশি পাতা নানান রকম সন্ত্রাসবাদী আক্রমনের শিকার, টাইপের একটা ভাব।
রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদ বলেও একটা অনেক বড় ব্যাপার আছে। সেটার প্রসঙ্গ এই লেখায় আসেইনি। জংগিদের আক্রমনে যত লোক মরছে তার চেয়ে বহুগুনে বেশি মরছে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদে। গতকালও এক বড় জেনারেল দায় স্বীকার করলেন বোমা ফুটীয়ে হরে দরে সিভিলিয়ান হত্যার।

আলোচনার এধরনের অসম্পূর্ণতা ক্ষতিকর। কারণ তা পাঠককে একচোখা করে তোলে।


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

ত্রিমাত্রিক কবি's picture

কথা সত্যি। তবে যেহেতু এটা অনুবাদ এখানে সম্পূর্ণ বা অসম্পূর্ণ করার ক্ষমতা তো আমার হাতে নেই। এই লেখা নিয়ে আলোচনা হতে পারে। বিশেষ করে এই লেখাটা অনেকটাই পশ্চিমা দেশগুলোর দৃষ্টিকোণ থেকে লেখা। আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে একই ধরণের ইস্যু নিয়ে আলোচনা হতে পারে।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

আয়নামতি's picture

পোস্টে আমাদের দেশের বর্তমান পরিস্হিতি নিয়ে চমৎকার আলোচনার সুযোগ আছে। আলোচনা হোক, আগ্রহ নিয়ে ফলো করবো।
অনুবাদ চমৎকার হয়েছে কবি। হাসি

ত্রিমাত্রিক কবি's picture

কেউ আর এখন আলোচনা করে না -_-

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

নীড় সন্ধানী's picture

এই সময়ের জন্য অতি প্রাসঙ্গিক একটি বিষয়।
জঙ্গীবাদ ক্রমশঃ বিবর্তিত হচ্ছে হিংস্রতার গাণিতিক প্রবৃদ্ধির লক্ষণ নিয়ে। ভবিষ্যতের পৃথিবীটা আগাগোড়া একটা হুমকির মধ্যে থাকবে এবং নিরাপদ বলে কোন রাষ্ট্র আর থাকবে না কোথাও।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

ত্রিমাত্রিক কবি's picture

মন খারাপ

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

হাসিব's picture

সাব স্ট্যান্ডার্ড প্রবন্ধ। টেররিজমের খণ্ডিত একটা রূপ সুবিধামতো (অথবা অজ্ঞাতে) নিয়ে উনি কিছু একটা বলার চেষ্টা করেছেন যেটা আসলে বিশেষ কিছুতে গিয়ে দাড়ায়নি।
অনুবাদ ভাল হয়েছে। শুধু টেরোরিজমের অনুবাদ জঙ্গিবাদ কিনা সেটা নিয়ে আমি দ্বিমত করবো।

মন মাঝি's picture

Quote:
শুধু টেরোরিজমের অনুবাদ জঙ্গিবাদ কিনা সেটা নিয়ে আমি দ্বিমত করবো।

আপনার মতে তাহলে কি হওয়া উচিত সেটা? সন্ত্রাসবাদ? ভীতিবাদ? জনত্রাসবাদ? অন্য কিছু?

****************************************

হাসিব's picture

- আক্ষরিক অর্থে করলে সন্ত্রাসবাদ হয়। কিন্তু সেভাবে খুঁজলে এর মধ্যেও সমস্যা পাওয়া যাবে। সবাই ত্রাস সৃষ্টি করার জন্য এসব করেনা।
- বাংলাদেশে জঙ্গি যাদের বলা হয় সেখানে ফ্রেমিং-এ সমস্যা আছে। আমি কাউন্টার টেররিজমের এক বড় কর্তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম এই জঙ্গি বলতে তাদের কোন অফিসিয়াল ডেফিনিশন আছে কিনা। উনি জানালেন এটা নেই এবং বললেন যে মিডিয়া যে ফ্রেমটা ব্যবহার করে সেটাই ব্যবহৃত হয়। উনি স্বীকার করেছেন যে এটা সমস্যাজনক। কারণ জঙ্গি বলতে বাংলাদেশে বোঝা হয় আনসার ইসলাম, জেএমবি এসবকে। এদের মধ্যে আবার জামাত নেই। আপনি কখনো দেখবেন না জামাতি সন্ত্রাসের সময় জঙ্গি শব্দটার ব্যবহার হতে। তাত্ত্বিকভাবে জামাতে ইসলামও আনসার বা জেএমবির মতো সালাফি দল এবং এদের মিলিট্যান্ট কর্মকাণ্ডের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। জামাত ছাড়াও প্রধান দুই দলেরও এ ধরণের কাজ পাওয়া যাবে যেগুলোকে কাজ হিসাবে সন্ত্রাসী কাজ (সাধারণভাবে, জালাও পোড়াও খুন) বলা যাবে। আবার এই কাজগুলো যখন বামপন্থীরা করে তাদের মিডিয়াতে চরমপন্থি বলে। এদের কারোরই কাজকর্ম জঙ্গি কাজ হিসাবে পরিচিত না। অর্থাৎ অবস্থাটা এরকম যে আমরা কাজ নয়, দলভিত্তিতে কাজকে জঙ্গি কি জঙ্গি না সেটা বলছি। এটা সমস্যা জনক।
- এই যে একই কাজের জন্য এক পক্ষকে একটা খারাপ ফ্রেমে ফেলা এবং অন্য পক্ষকে ঐ খারাপ অভিধায় না ফেলার বিকল্প আছে। আমি জার্মানির উদাহরণ আনতে পারি এই ক্ষেত্রে। এরা টেররিজমের রিপোর্ট করারা সময় ৩টা ক্লাসিফিকেশন করে। ১। ইসলামিক টেররিজম ২। ডানপন্থী টেররিজম ৩। বামপন্থী টেররিজম। বাংলাদেশেও এভাবে ভাগ করা যায়।

আব্দুল্লাহ এ.এম.'s picture

ইসলামীস্ট দের জঙ্গি বলার এটা হয়ত একটা কারন যে, জঙ্গ এক হিসাবে একটা ইসলামী শব্দ। অনেক আগে থেকেই ভারতবর্ষের এক শ্রেণীর মুসলমান যুদ্ধ, খণ্ডযুদ্ধ, জেহাদ ইত্যাদি কার্যক্রমের সমার্থক হিসেবে জঙ্গ শব্দটি ব্যবহার করে আসছেন। সে তুলনায় বামপন্থীদের কার্যক্রমের সাথে আর যাই হোক, ইসলামী জঙ্গের কোন সম্পর্ক নেই। সে কারনেই বোধ হয় তারা চরমপন্থী, আর একসময় অন্য আরেকদল সন্ত্রাসবাদী নামে পরিচিতি লাভ করেছিলেন।

হাসিব's picture

 এই ইসলামি শব্দ জিনিসটা কী?

ত্রিমাত্রিক কবি's picture

আমি হয়ত সাব স্ট্যান্ডার্ড বলব না প্রবন্ধটাকে বরং খুবই খন্ডিত একটি আলোচনা বলব। এটা অবশ্যই অ্যাকাডেমিক স্টাডি না, খুব ভালো গবেষণাপ্রসূতও মনে হয় না বরং অনেকটাই পত্রিকার সম্পাদকীয় কলাম ধরণেরই লেখা (আসলেও তো তাই)। এখানে যে বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে সেভাবে আমি কখনও ভাবিনি বা অন্য কোথাও এই দৃষ্টিকোণের আলোচনা পড়িনি। সেই হিসেবে আমার কাছে লেখাটা গুরুত্বপূর্ণ মনে হলো।

'টেরোরিজম' অনুবাদ করতে গিয়ে আমিও কিছুটা ভেবেছি। লেখাটার অধিকাংশ জায়গায় জঙ্গিবাদ বলতে অন্তত আমি যা বুঝি সেটাই টেরোরিজম বোঝাচ্ছে বলে মনে হয়েছে। এই লেখাতেই দুএক যায়গায় 'টেরোরিজম'কে 'সন্ত্রাসবাদ' হিসেবেও অনুবাদ করেছি।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

হাসিব's picture

 লেখাটা কোন সাংবাদিকের লেখা হলে এতো কথা প্রয়োজন হতো না। এখানে লেখক একজন ট্রেইন্ড সোশ্যাল সায়েন্টিস্ট। উনি যা লিখেছেন, খন্ড হিসাবে উপস্থাপন করার জন্য যে খন্ড বেছে নিয়েছেন, সেটা একদম অজ্ঞানতা থেকে এটা মানা কঠিন। এই খন্ড বাছার পেছনে সবসময় একটা রাজনীতি ক্রিয়াশীল থাকে। এই রাজনীতির কারণেই সব কিছু রেখে বার্গ্ম্যানের তকলিফ নিয়ে নামী বিদেশী পত্রিকায় সম্পাদকীয় ছাপা হয়। এই রাজনীতির কারণেই শুধুমাত্র প্রাচ্যের বাদামি নন-ষ্টেট এক্টরদের টেররিস্ট বলা হয়।

মন মাঝি's picture

খুব একটা উচ্চমানের লেখা না। জঙ্গিরা যে তাদের প্রতিপক্ষ থেকে সামরিকভাবে অনেক দুর্বল এবং প্রচলিত পন্থায় তাদের জয়ের কোন আশাই নেই - এই কারনেই যে তারা মুলত গতানুগতিক সামরিক পন্থায় না গিয়ে জঙ্গিপন্থা অবলম্বন করে - মেন্টালি রিটার্ডেড ছাড়া আর কাউকে বোধহয় সেটা বলে দেয়া লাগে না! এরপর হারারি উস্কে দিয়ে ঘোলা জলে মাছ শিকার করার যে কৌশলের কথা বলেছেন - সেটিও সম্ভবত হাজার বছরের বাসি সর্বজনবিদিত কৌশল। আমাদের বাংলাতেই তো এই কৌশলের একটা বহু পুরনো ও বহুল-প্রচলিত নাম রয়েছে -- "ঘোলা জলে মাছ শিকার করা" । হা হা হা! আমাদের রাজনীতিবিদ, অভ্যুত্থানাকাঙ্খী সাফারি বা জলপাই নেতারা, বা রাজনৈতিক দলগুলি নিয়মিত এটা করে থাকে। হারারির উচিত বাংলাদেশে এসে এই কৌশলের উপর উচ্চতর ডিগ্রী বা পিএইচডি করে যাওয়া।

আরেকটা বিষয়ঃ এই লেখাটা অনেকটাই পাশ্চাত্য-কেন্দ্রিক। লেখকের মতে রাষ্ট্র প্রকাশ্যে ওভার-রিয়্যাক্ট না করলে এইসব টুকটাক ফুটফাট দিয়ে জঙ্গিরা কিছুই অর্জন করতে পারবে না। রাষ্ট্রের পতন তো নয়ই। এই কথাটা পাশ্চাত্যের উন্নত দেশগুলির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হলেও - মনে হয় আমাদের মত দেশের ক্ষেত্রে - যেখানে একটা বিশাল, হয়তো সংখ্যাগরিষ্ঠ নিরুপায় জনগনেরই রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অজস্র এবং কঠিনতম সব অত্যন্ত বাস্তব ও সত্য অভাব-অভিযোগ এমনকি তীব্র ঘৃণা পর্যন্ত রয়েছে এবং যারা সেকারনেই খুব সহজেই ইম্প্রেশনেবল - সেসব দেশে হারারির এই 'ওরা কিছুই না' তত্ত্ব পুরোপুরি খাটবে না। এইরকম দেশে এইসব জঙ্গিদের পক্ষে ইম্প্রেশনেবল সাধারন জনগনের একটা বিরাট অংশের বিভিন্ন অভাব-অভিযোগের সুযোগ নিয়ে তাদের বিভ্রান্ত করে একটা বড় সরব বা নীরব সাপোর্ট বেইস গড়ে তুলে রাষ্ট্রের জন্য সত্যিকারের হুমকিস্বরূপ কোন মোমেন্টাম গড়ে তোলা হয়তো অসম্ভব নয় মোটেই। উপরন্তু, অনেক সময় দায়িত্বহীণ ও ক্ষমতালোভী মেইনস্ট্রীম রাজনৈতিক দল ও অন্যবিধ প্রতিষ্ঠানসমূহের আশ্রয়-প্রশ্রয়ও পেয়ে যায় এরা। সেটা হয় তাদের জন্য সোনায় সোহাগা। হারারির ইউরোসেন্ট্রিক অব্জার্ভেশন তাই পৃথিবীর বড় একটা অংশেই খাটে না!

হারারির এই অলস লেখায় আমি ঠিক ইম্প্রেসড হলাম না।

****************************************

আয়নামতি's picture

কিছুমিছু আলোচনার জন্য হাসিবভাই আর মনমাঝি ভাইকে সাধুবাদ।

Post new comment

The content of this field is kept private and will not be shown publicly.