“সুশীল বুদ্ধি সমাজের” লাশের রাজনীতি

শেহাব's picture
Submitted by shehab on Fri, 17/10/2014 - 4:00pm
Categories:

(এটি মূলত: বিডিনিউজ২৪.কমের জন্য লেখা। কিন্তু আমি পাঠানোর পর পরই এই নিউজটি বের হয় যে কারণে আমার লেখা কিছুটা প্রাসংগিকতা হারায়। তাই ভাবলাম এখানে দিয়ে রাখি।)

সদ্যপ্রয়াত ড. পিয়াস করিমের মরদেহ শহীদ মিনারে আনা না আনা নিয়ে যে উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে সেটি নিয়ে আমি অত্যন্ত মর্মাহত। ব্যক্তিগত ভাবে আমি ড. করিমের সাথে একই নৈতিক সমতলে অবস্থান করি না। কিন্তু তার মৃত্যুর পর পর পাবলিক ফোরামে তার কোন কোন বিষয় আমি অনৈতিক মনে করতাম তার লম্বা ফিরিস্ত দেয়াটিও একটি কুরুচিপূর্ণ কাজ বলে মনে করছি। তিনি এখন এইসব সমালোচনার উর্দ্ধে চলে গেছেন। তার শোকস্তব্ধ পরিবারের জন্য এখন সবচেয়ে বেশী দরকার তাদের নিজেদের মত একান্ত সময় যাতে এই আঘাত থেকে তারা সেরে উঠে পারেন। কিস্তু সম্প্রতি তার পরিবারের ভয়াবহ শোকানুভূতির উপরে, কিছু মানুষের ড. করিমের মরদেহটি শহীদ মিনারে নিয়ে যাওয়ার ঘোষণা চাপিয়ে দেয়ার কাজটি দেখে ভীষণ দু:খ পেয়েছি। আমার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি বয়সী এই সব মানুষদের তো এটা বুঝতে সমস্যা হওয়ার কথা নয় যে তরুণ প্রজন্ম যারা গত বছর শাহবাগে গিয়েছিল তারা ড. করিমের উপর ভীষণ রেগে আছে এবং কখনই তার মরদেহ শহীদ মিনারে রাখতে দিবে না। যেকোন কারণেই হোক ড. করিমের সাথে হৃদয়ে মুক্তিযুদ্ধের প্রতি অশেষ আবেগ ধারণ করে রাখা তরুণ প্রজন্মের একটি বিশাল অংশের সাথে দূরত্ব তৈরি হয়ে গেছে। এরা হল সেই সব তরুণ, তরুণী, কিশোর, কিশোরী, ছাত্র-ছাত্রী যারা এখনও দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর ফাঁসি না হওয়ার ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে পারেন নি। জাতীয় স্মৃতিসৌধ কিছুটা দূরে হওয়ায় ভাষা আন্দোলনের শহীদ মিনারই আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সবচেয়ে বড় প্রতীক হয়ে শহরের বুকে গৌরবের সাথে দাঁড়িয়ে আছে। কেউ যখন এর পাশ দিয়ে রিকশা করে বা হেঁটে যায় তখন ভাষা আন্দোলনের পাশাপাশি এই শহীদ মিনার তাকে স্মরণ করিয়ে দেয় মুক্তিযুদ্ধের চার মূলনীতি (যেটি লিপিবদ্ধ হয়েছিল বাহাত্তরের সংবিধানে) জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা, গণতন্ত্র ও অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার অর্থে সমাজতন্ত্র। কাজেই এখানে তরুণ তরুণীরা সবসময় তাদেরই চায় যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার এই মূলনীতিগুলোর প্রতি বিশ্বস্ত ছিলেন এবং যুদ্ধাপরাধের বিচারের দাবীতে সোচ্চার ছিলেন। এর কোন ব‌্যত্যয় হলে সেটি মেনে নেয়ে তাদের পক্ষে সম্ভব না। এই আবেগ থেকেই কিন্তু শাহবাগের জন্ম হয়েছিল। ড. পিয়াস করিমের পরিবারের সদস্যরা এই আবেগের দূরত্বটি বুঝতে পেরেছিলেন। যে কারণে তারা অনুমান করেছিলেন এটি নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে তরুণ-তরুণীরা ক্ষুব্ধ হবে এবং পরিস্থিতি আরো উত্তপ্ত হবে। সেরকম হলে তারা মরদেহ নিবেন না ঠিক করেছিলেন। একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের বেশির ভাগ সংগঠন যখন নিজেদের ক্যাম্পাসে কোন কিছুর প্রতিবাদ করে তখন বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের বেশিরভাগ মানুষের ইচ্ছা কি সেটা খুব সহজেই বোঝা যায়। তাহলে এই জটিল উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হল কেন?

প্রথম পর্যায়ে পরিবারের সদস্যরা উত্তপ্ত পরিস্থিতি এড়াতে চাওয়ার পরও যে মানুষগুলো জাতীয় প্রেসক্লাবে মরদেহটি শহীদ মিনারে নিয়ে যাওয়ার উদ্ধত ঘোষণা দিয়েছিলেন তাদের তো এটা বোঝার কথা যে একটি মরদেহের প্রতি সম্মান প্রদর্শন কোন যুদ্ধে জেতার বিষয় নয়। এখানে তাদের প্রধান লক্ষ্য শহীদ মিনার দখল নয় বরং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সুবিধাজনক স্থানে সম্মান প্রদর্শনের ব্যাপারটি সেরে ড. করিমকে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়া। তাহলে তারা কেন এই কাজটি করলেন? তারা কি চেয়েছিলেন সেখানে তারা চর দখলের মত কিছু অনুসারী নিয়ে গিয়ে হাজার হাজার তরুণ-তরুণীদের সাথে মারপিট করে একটি বিশ্রী দৃশ্যের অবতারণা করবেন? আমার মনে হয় না।

প্রেসক্লাবে বসা এই সব উদ্ধত মানুষগুলো খুব ভাল করেই জানেন শহীদ মিনারে তারা কাজটি করতে পারবেন না। শেষ মুহুর্তে যদি দেখা যায় তারা কিছু অনুসারী নিয়ে এই সব ক্ষুব্ধ তরুণ-তরুণীদের মুখোমুখি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রশাসন দিয়ে ১৪৪ ধারা জারি করিয়েই জায়গাটি পরিষ্কার করে দিবেন। এই টুকু বোঝার মত বুদ্ধি তাদের আছে। ফেসবুকে আমার বন্ধু জাহিদের সাথে আলাপের পর মনে হল এনাদের লক্ষ্য শহীদ মিনার নয়, এনাদের লক্ষ্য হল শহীদ মিনার-বনাম-বায়তুল মোকাররম বিরোধ ধরণের একটি পরিবেশ তৈরি করা।

একটু পরিষ্কার করি। প্রেসক্লাবে বসা এই সব মানুষ কিন্তু নিয়মিত পত্রিকায় কলাম লিখেন, টিভিতে নিয়মিত কথা বলেন। গতবছর (২০১৩) তাদের একজন বিএনপি জামাতের ককটেল মেরে মানুষ পুড়িয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনকে শ্রেণী সংগ্রামের সাথে তুলনা করেছিলেন। কেউ এসব থিওরীকে পাত্তা দেয়নি কারণ সাধারণ মানুষ খুব ভাল করেই জানে তারা কোন শ্রেণীতে পরে আর যেই শ্রেণীটি ককটেল মারছে সে তার শ্রেণীর একজন সদস্য কিনা। আমরা অত বোকা না! আরেকজন আইনের অধ্যাপক বছরের পর বছর ধরে যুদ্ধাপরাধের বিচার "স্বচ্ছ ও আন্তর্জাতিক মানের নয়" এই প্রচারণা চালিয়ে গেছেন কিন্তু এখন পর্যন্ত এ নিয়ে তার কোন সুনির্দিষ্ট প্রকাশনা নেই যে ঠিক কোথায় স্বচ্ছ ও আন্তর্জাতিক মানের ঘাটতি আছে। এই সব মানুষ জনপ্রিয় লেখক মুহম্মদ জাফর ইকবালের প্রচলিত "মুক্তিযুদ্ধ ফিল্টারে" আটকে গেছেন। তারা খুব ভালভাবেই জানেন বেশিরভাগ তরুণ-তরুণী যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রশ্নে তাদের অবস্থানে প্রত্যাখান করেছে। এই তরুণ-তরুণীরাই আজকের ও আগামী দিনের বাংলাদেশ। অনেক সময়ই বয়স্ক মানুষজন যারা হয়তো কোন উঁচু পদে বা অবস্থানে আছেন ভুলে যান যে তারা আসলে তাদের সময়ের কোন কিছু নিয়ন্ত্রণ করেন না। তারা ওই পর্যায়ে পৌঁছে গেছেন এর মানে হল তাদের চলে যাওয়ার সময় এসেছে। খুব শীগগির তাদের জায়গা দখল করে নিবে তাদের চেয়ে কম বয়সীরা। একটি দেশের আবেগ ও চেতনার সংজ্ঞা তাই কখনই তার প্রৌঢ় নাগরিকরা নন বরং সেটি হল সেই দেশের তরুণরা। মুক্তিযুদ্ধ ছিল তাই তরুণ আর যুবকদের যুদ্ধ।

কিন্তু এর পরও এই মানুষগুলো এই উদ্ধত ঘোষণা দিলেন যাতে করে শুক্রবার যেদিন কিনা বায়তুল মোকাররমে সবচেয়ে বেশি মানুষ আসে সেদিনকার জানাজার সমাবেশের সাথে শহীদ মিনারে যেতে না পারার একটি তুলনা দাঁড় করানো যেতে পারে। তখন ব্যক্তি পিয়াস করিম তাদের আগ্রহ থেকে হারিয়ে যাবেন আর যেই বিরোধটি নিয়ে কৃত্রিমভাবে শোরগোল তোলা হবে সেটি হল বায়তুল মোকাররম বনাম শহীদ মিনার। অথচ আমাদের তরুণ-তরুণীদের সাথে কি বায়তুল মোকাররমের বিরোধ ছিল? না! তাহলে? এটা সেই নতুন বোতলে পুরোনো মদ। এর আগে যেভাবে শাহবাগকে নাস্তিক আর ‌ফ্যাসিবাদী আন্দোলন বলেছেন তারা। অথচ শাহবাগ আন্দোলন নাস্তিক ছিল না, ছিল ধর্মনিরপেক্ষ। গত দেড় বছরের অতিব্যবহারে সেই বিষয়টি পুরোনো হয়ে গেছে। এখন এই সব "সুশীল বুদ্ধি সমাজের" দরকার একটি নতুন ইস্যু। এর জন্য ড. করিমের মরদেহটি ব্যবহার করতেও তাদের বাঁধল না। কী অদ্ভুৎ!

আমি ড. করিমের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই আর আশা করব তারা এই ফাঁদে পা দিবেন না। এখন তাদের সবচেয়ে বেশি দরকার একটু একান্ত সময় আর শান্তি।


Comments

নজমুল আলবাব's picture

পিয়াস করিম বিষয়ে কোমল ভাবনা লেখার বাকি অংশের সাথে সাংঘর্ষিক।

এটা বিডি নিউজের জন্যই যথাযথ ছিলো সম্ভবত।

রাজিব মোস্তাফিজ's picture

Quote:
পিয়াস করিম বিষয়ে কোমল ভাবনা লেখার বাকি অংশের সাথে সাংঘর্ষিক।

সেটাই। ফেসবুকে এক বন্ধুর স্ট্যাটাস থেকে জানলাম

Quote:
পাকিস্তান গণপরিষদে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার প্রথম দাবী উত্থাপনকারী ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত'র অন্যতম হত্যাকারী পিয়াস করিমের বাবা অ্যাডভোকেট এম এ করিম

কিন্তু লেখার বাকি অ্যানালাইসিসটুকু ভালো লেগেছে!

----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!

রাজিব মোস্তাফিজ's picture

'সুশীল বুদ্ধি সমাজ' আর 'মুক্তিযুদ্ধ ফিল্টার' এই শব্দগুলোর জন্য এই ভিডিওটা প্রাসঙ্গিক। পিয়াস করীম সম্ভবত মুক্তিযুদ্ধ ফিল্টারে আটকে যাবে।

----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!

শেহাব's picture

পিয়াস করিম যেটা করেছে সেটা হল পয়সার বিনিময়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার আর শাহবাগ আন্দোলন সম্পর্কে সিস্টেমেটিক অপপ্রচার যেটা আমাদের ঠিকঠাক মত আইন থাকলে তাকে জেলে নিয়ে যেত।

শেহাব's picture

আমি কিন্তু আসলেই এই মুহুর্তে তার পরিবারকে একান্ত সময় দেয়ার পক্ষে। কিন্তু ওই মানুষগুলো পরিবারের সম্মতি ছাড়া লাশের ব্যাপারে এমন কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে যেটার এখতিয়ার তাদের নেই।

সাইদ's picture

নজমুল আলবাব এর মন্তব্যের সাথে সম্পূর্ণ একমত। খুবই হতাশ হলাম এরকম সুশীলিয় লেখা দেখে আপনার কাছ থেকে।

শেহাব's picture

আসলেই মনে হয় লেখা একটু সুশীলিয় হয়েছে। যখন অপ-এড স্পেসে লিখি তখন কিছু বায়বীয় নীতিকথা লিখতে হয় যেগুলো ব্লগে লেখার সময় রাখি না। এর কারণ সম্ভবত: ব্লগের পাঠকদের চাইতে অপ-এডের পাঠকদের মধ্যে সমমনা মানুষের অনুপাত কম কাজেই নিজের পয়েন্ট ক্ল্যারিফাই করার জন্য ত্যানা একটু বেশি প্যাঁচাতে হয়। আপনাকে হতাশ করার জন্য আমি অত্যন্ত দু:খিত।

শেহাব's picture

তবে এটা আমার জন্য একটি ভাল শিক্ষা হয়ে থাকল। অন্তত এর পর থেকে আমি যদি অপ-এড স্পেসের জন্য লেখা কোন কিছু এখানে পোস্ট করি এবং তাতে যদি টোনে বড়সড় পার্থক্য থাকে হয় ব্যাখ্যা দিব অথবা লেখাটা আবার ঠিক করে নিব।

মন মাঝি's picture

অনলাইন মিডিয়ার জন্য টোনে বড়সড় পার্থক্য করার কি সত্যি খুব একটা দরকার আছে? বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমেই প্রকাশিত এই লেখাটা বিবেচনা করে দেখতে পারেন -- http://www.banglanews24.com/beta/fullnews/bn/332125.html

****************************************

শেহাব's picture

আমি আসলে তার মৃত্যুর একই সপ্তাহেই তার অন্যায়ের তালিকা তৈরি করতে চাই নি। আমার কাছে মনে হয়েছে তার পরিবারকে এই প্রাইভেসীটুকু দেয়া উচিৎ। আর ঐ মুহুর্তে আমার কাছে মনে হচ্ছিল মৃত পিয়াস করিমের চেয়ে জীবিত ফরহাদ মাজহার বা আসিফ নজরুল অনেক বেশি ক্ষতিকর দেশের জন্য। কাজেই ওনাদের উপর রাগটা বেশি হয়েছিল। আমি জানি না আমার এই অবস্থান নৈতিকভাবে কতটুকু গ্রহণযোগ্য।

মন মাঝি's picture

আপনি আপনার মানবিকতা, সভ্যতা ও রুচিবোধের দিক থেকে দেখছেন বোধহয় বিষয়টা। এদিক থেকে ঠিকই আছে আপনার অবস্থান বা এপ্রোচ। আমি আসলে অন্য বিষয়ে -- অন ও অফলাইন মিডিয়া আর ব্লগের লেখায় টোনের পার্থক্য থাকা দরকার কিনা বা থাকলে কখন ও কতটুকু সেটাই চিন্তা করছিলাম, জানতে চেয়েছিলাম।

****************************************

হিমু's picture

শহীদ মিনারের সাবান দিয়ে রাজাকারবান্ধবসাফাই চলবে না, প্রতিরোধের এই নতুন ধারাটা পিচাশই উদ্বোধন করে দিয়ে গেলো।

সাক্ষী সত্যানন্দ's picture

চলুক

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

এক লহমা's picture

চলুক

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

মাসুদ সজীব's picture

শেহাব ভাই, আপনি পিচাশের পরিবারের জন্যে সমবেদনা জানাচ্ছেনে এই বিষয়টা বিস্ময়কর ঠেকলো। পত্রিকায় লেখার জন্যে লেখাকে নরম ফিল্টারে ভিজিয়ে নিতে হবে এমন আপোষ করাটা কি খুব জরুরী?

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

শেহাব's picture

কোন লোকের মৃত্যুর পর তার পরিবারের প্রাইভেসীর দরকার আছে। যেন তারা সামলে উঠতে পারে। আমি এই মুহুর্তে ব্যাপারটিকে এভাবে দেখেছি। পিয়াস করিম মৃত্যুর পরে তাদের প্রাইভেসী নষ্ট হওয়া শুরু হয় যখন আসিফ নজরুল সেই মৃতদেহটিকে শহীদ মিনারে নেয়ার ধান্ধা শুরু করে। তখন ইতিমধ্যে তার উপর যারা রেগেছিল তারা তখন পিয়াস করিমের করা অন্যায়গুলোর তালিকা দিয়ে যুক্তি দেখায় যে তার শহীদ মিনারে যাওয়ার কোন অধিকার নেই। এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার জন্য আসিফ নজরুল আর ফরহাদ মাজহার দায়ী। তারা পিয়াস করিমের পরিবারের প্রাইভেসীর বিনিময়ে শহীদ মিনার বনাম বায়তুল মোকাররম একটা বিরোধ তৈরি করতে চেয়েছিল। তারা যে ব্যর্থ হয়েছে তাতে অবাক হওয়ার কিছু নাই। কারণ এদের মাথায় গোবর ভর্তি।

আমি পরিবারের প্রতি খুব বেশি সহানুভূতি সম্পন্ন নই কিন্তু আমার মনে হচ্ছে তাদের প্রাইভেসী দেয়া উচিৎ। এছাড়া আমার মনে হয় ফরহাদ মাজহার আর আসিফ নজরুল এই বদমায়েশী না করলে কেউই পিয়াস করিমকে নিয়ে দুইটাকার মাথা ব্যাথাও করত না। তখন তাদের সেই প্রাইভেসী নষ্ট হতো না। আমি কি আপনার বিস্ময় কিছুটা দূর করতে পেরেছি?

মন মাঝি's picture

চলুক

****************************************

মাসুদ সজীব's picture

প্রথম প্রশ্নের উত্তর চলুক কিন্তু দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর পেলাম না। প্রশ্নটা আবার করছি,

Quote:
পত্রিকায় লেখার জন্যে লেখাকে নরম ফিল্টারে ভিজিয়ে নিতে হবে এমন আপোষ করাটা কি খুব জরুরী?

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

শেহাব's picture

না আপোষ করাটা জরুরী না।

আমি যখন লিখছিলাম তখন আমার কাছে আপোষ মনে হচ্ছিল না। অপ-এড স্পেসের জন্য যখন টুকটাক লিখি আমার মাথায় এটা থাকে যে এর পাঠক সংখ্যা আর পাঠকদের পাঠ প্রস্তুতি সচলায়তনের চেয়ে ভিন্ন। কাজেই প্রচুর জায়গা কনটেক্সট বোঝানোর জন্য খরচ হয়। এর পাশাপাশি অপ-এড লেখার সময় আমার রিয়েকশন আমি মোটামুটি বাদ দেয়ার চেষ্টা করি। অনেকটা আমার রিসার্চ পাবলিকেশন যেভাবে লিখি সেভাবে লেখার চেষ্টা করি। এখন পর্যন্ত অপ-এডের জন্য যতগুলো রিয়েক্টিভ লেখা পাঠিয়েছি প্রত্যেকটাই রিজেক্ট হয়েছে।

ভাল কথা! একটা ব্যাপার একটু পরিষ্কার হয়ে নেই। আপনার আপোষ কোন ব্যাপারটিকে মনে হচ্ছে? আমি পিয়াস করিমের পরিবারের জন্য প্রাইভেসী চাচ্ছি এটাকে নাকি পিয়াস করিমের কোন খারাপ কাজ নাম ধরে উল্লেখ করিনি এই ব্যাপারটিকে?

মাসুদ সজীব's picture

Quote:
তার মৃত্যুর পর পর পাবলিক ফোরামে তার কোন কোন বিষয় আমি অনৈতিক মনে করতাম তার লম্বা ফিরিস্ত দেয়াটিও একটি কুরুচিপূর্ণ কাজ বলে মনে করছি

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী-গণজাগরণ বিরোধী, রাজাকারবান্ধব, কারো মৃত্যু সেই মানুষের সকল অন্যায়কে ঢেকে দিতে পারে না। তাই তার অন্যায় কিংবা অনৈতিক কাজের আলোচনা কুরুচিপূর্ণ হওয়ার কথা না, বরং সেটি বেশি করে হওয়া উচিত। কারণ আপনি-আমি যদি চুপ থাকি তবে তার মুরীদরা তাকে মহান দেশপ্রেমিক পীর বানিয়ে ফেলবে, যেমন করে অতীতে অনেককে বানানো হয়েছে। এইখানে মনে হচ্ছে আপনি কিছুটা আপোষে গেছেন। এছাড়া দুই জায়গায় দুই রকম লেখতে হবে বিষয়টা অনেকটা আপোষ মনে হয়েছে আমার।

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

শেহাব's picture

আমি আপনার পয়েন্ট বুঝতে পেরেছি।

এক লহমা's picture

পূর্ণ সহমত।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

সাক্ষী সত্যানন্দ's picture

Quote:
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী-গণজাগরণ বিরোধী, রাজাকারবান্ধব, কারো মৃত্যু সেই মানুষের সকল অন্যায়কে ঢেকে দিতে পারে না। তাই তার অন্যায় কিংবা অনৈতিক কাজের আলোচনা কুরুচিপূর্ণ হওয়ার কথা না, বরং সেটি বেশি করে হওয়া উচিত।

একমত,
আজকের প্রথমালোতে মক্সুদ সাব ঠিক এই কামডাই করছে। বাপের গীত গাইতে গাইতে পিয়াসের সবচাইতে বড় অপকর্ম যে উত্তরাধিকার না তার নিজের কর্ম সেই অংশটা পুরা ব্লাক আউট।

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

এক লহমা's picture

শেহাব-ভাই, কত যে যথার্থতার ছদ্মবেশে সুশীলিয় আপোষ ঢুকে আসে! প্রথমে একটুখানি যায়গা, তারপর পুরোটাই দখল করে, সময় মত শেষ সুতোটাও খুলে নিয়ে হাতে ভিক্ষাপাত্র ধরিয়ে ছেড়ে দেয়। আপনি ধীমান মানুষ, নিশ্চয়ই সতর্ক থাকেন, ঘরপোড়া গরু আমার সিঁদুরে মেঘের আভাষে ডর লেগে যায়; বুড়ো হয়ে গেছি নিশ্চয়ই।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

শেহাব's picture

আপনার সাথে একমত এবং একটু বাড়তি সতর্কতাতে দোষের কিছু নেই। আর তাছাড়া এরকম না যে আমি খুব নিঁখুত কাজ করেছি।

শেহাব's picture

ফরহাদ মাজহার ঠিক ঠিকই সেই বিতর্ক তৈরি করার জন্য একটি লেখা আজকে লিখেছে।

http://www.jugantor.com/sub-editorial/2014/10/25/163960

সাক্ষী সত্যানন্দ's picture

শেহাব ভাই,
এখানেই দিয়ে রাখলাম। আপত্তি নেই আশা করি। হাসি

যুগান্তরে প্রকাশিত বিশিষ্ট বামাতী ফরহাদ মজহারের লেখায় যত হেজেমনি:

Quote:
মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড, গণজাগরণ মঞ্চের একাংশ, মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম, বঙ্গবন্ধুর সৈনিক প্লাটুন, সিপি গ্যাং ইত্যাদি অজ্ঞাত, অখ্যাত সংগঠনের কব্জায় চলে গেছে শহীদ মিনার।

“অখ্যাত” সংগঠন গুলোর সামান্য কর্মকান্ডে মেগা-সেলিব্রেটি ফরহাদ মজহারের এত ভয় কেন?

*** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** ***

Quote:
১৯ অক্টোবর আইনমন্ত্রীর খবরটি যখন পড়ি তখন বিশ্বাস করিনি। কিন্তু সন্ধ্যায় টেলিভিশনে দেখলাম তিনি নিজেই তার কথার পক্ষে দাঁড়িয়ে কথা বলছেন। দেরিতে হলেও তিনি সাহস করে পিয়াসের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও কুৎসার জবাব দিয়েছেন। তাকে ধন্যবাদ জানাই।

পিয়াস নিজেই যে আইনমন্ত্রীর দাবীর বিপক্ষে সাক্ষ্য দিয়ে গেছেন সেটি ফরহাদ সাহেব সজ্ঞানে চেপে গেছেন। পিয়াসের ব্যাপারে পিয়াসের সাক্ষ্যও গ্রহণযোগ্য না, দারুণ ব্যাপার।

*** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** ***

Quote:
শহীদ মিনার কোনো গোষ্ঠীর বাপের সম্পত্তি নয়। কোনো গোষ্ঠী শহীদ মিনার দখল করে বলতে পারে না, অন্যদের আমরা এখানে আসতে দেব না। সেটা বেআইনি কাজ। এই ধরনের কোনো নজির তৈরির পরিণতি ভয়াবহ হতে পারে। ক্ষমতার হাতবদল হলে অন্যরাও বলতে পারে, বাংলাদেশের মাটিতে কোনো ফ্যাসিস্টদের স্থান হবে না।

হুমম... ফ্যাসিবাদ... হেগেল... হেজিমনি... ব্লা ব্লা ব্লা। হঠাৎ শহীদ মিনারে এসে জাতে ওঠবার ইচ্ছে উথলে উঠছে কেন?

*** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** ***

Quote:
তবে এটা বোঝা যায়, পিয়াসের প্রতি নাগরিক শ্রদ্ধা জানানোর প্রয়াস প্রতিরোধের এই নোংরা তৎপরতার বিরুদ্ধে সুশীল, আওয়ামীপন্থী ও সেক্যুলারদের মধ্যে বেশ অস্বস্তি তৈরি হয়েছে। এটা অধিকাংশই ভালোভাবে নেননি। সেটা খুবই ভালো।

নাকি আপনার মত টকমারানীদের মধ্যেই অস্বস্তি তৈরি হয়েছে গুমোর ফাঁস হয়ে যাচ্ছে দেখে?

*** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** ***

Quote:
বাংলাদেশকে যদি আমরা রক্ষা করতে চাই, তাহলে বিভাজন ও বিভক্তির ঊর্ধ্বে উঠে নীতিগত ঐক্যের জায়গাগুলো চিহ্নিত করা দরকার।

উত্তম কথা। বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে নীতিগত ঐক্যের সবচেয়ে বড় বিষয় বাংলাদেশ নিজেই। এর বিপক্ষে গিয়ে ঠিক কিভাবে অবিভাজিত থাকা সম্ভব?

*** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** ***

Quote:
প্রথম আলো শহুরে সেক্যুলার মধ্যবিত্তের পত্রিকা, সুশীলদের মুখপত্র এবং পাশ্চাত্যের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অনন্ত যুদ্ধের সহযোগী। একান্তই কর্পোরেট স্বার্থের সঙ্গে তাদের সরাসরি জড়িত থাকার কারণেই দুনিয়াব্যাপী সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অনন্ত যুদ্ধের রাজনীতিতে ডেইলি স্টার-প্রথম আলোর সম্পৃক্তি। যে কারণে তাদের সেক্যুলার লিবারেল রাজনীতির মূলমন্ত্র লিবারেল বা উদার রাজনীতি নয়, বরং প্রায়ই তার বিরোধিতা। বাংলাদেশের সামাজিক ও ঐতিহাসিক বাস্তবতা অস্বীকার করে কোনো পত্রিকার ক্রমাগত ইসলাম প্রশ্নে বিরূপ থাকা ও নির্বিচারে ইসলামপন্থী রাজনীতির বিরোধিতা করা সেক্যুলার ও উদার গণতান্ত্রিক রাজনীতি নয়, হতে পারে না। এটা আমাদের স্পষ্ট বুঝতে হবে।

ইন্টারেস্টিং।

*** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** ***

Quote:
ইসলাম তো নিছক ধর্মতত্ত্ব বা ব্যক্তিগত বিশ্বাস নয়। গ্রিকো-খ্রিস্টীয় চিন্তা, দর্শন ও সংস্কৃতিকে যেমন সেক্যুলার জায়গা থেকে পাঠ ও আত্মস্থ করা সম্ভব, ইসলামও তার ব্যতিক্রম হতে পারে না। সমাজ ও রাষ্ট্র পরিগঠনে ধর্মতাত্ত্বিক ইসলামী ব্যাখ্যায় সেক্যুলার আপত্তি থাকতে পারে, তাতে অসুবিধা নেই। যেমন সেক্যুলার আদর্শের জায়গা থেকে সেক্যুলাররা শরিয়াভিত্তিক ইসলামী রাষ্ট্রের বিরোধিতা করে। সেটা করুক। কিন্তু এ ধরনের আপত্তি বহাল রেখেও ইসলামের দার্শনিক মর্ম থেকে সুনির্দিষ্ট সেক্যুলার প্রস্তাবও পাঠ করা যায়।

সেটি কি সহীহ ইসলাম হবে? গ্রিকো-খ্রিস্টিয় চিন্তা’র সাথে ইসলামকে এক কাতারে নিয়ে আসার কথা অন্য কেউ বললে কল্লার দাবিতে মিছিল বেরিয়ে যেত এতক্ষনে। ফরহাদ মজহার বড্ড ভাগ্যবান। তাঁর কথায় অনুভূতিতে বড়জোর সুড়সুড়ি লাগে, আঘাত লাগে না।

*** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** ***

Quote:
যেমন- ইসলাম সাম্যের কথা বলে, জাতপাত আভিজাত্যের ভেদাভেদ মানে না; ব্যক্তিকে সমষ্টি বা সমাজের চেয়ে বড় গণ্য করে না; সুশাসনের জন্য নীতিবান ও সৎ মানুষকে পছন্দ করে ইসলাম চোর, ডাকাত ও দুর্বৃত্তদের কঠোরভাবে শাস্তি দেয়ার পক্ষপাতী। সম্পদের সহনশীল বণ্টনকে ধর্ম ও নীতিনৈতিকতার দিক থেকে ইসলাম বাধ্যতামূলক মনে করে।

হুমম মেনে নিলাম, তাহলে চোর ডাকাত দুর্বৃত্ত দের শহীদ মিনারে নিয়ে সম্মানিত করতে যারা বাঁধা দিয়েছেন তারা তো ইসলামের সুমহান আদর্শের পক্ষেই আছেন। তাহলে ফরহাদ মজহারের ভয় টা কোথায়? তিনি চোর, ডাকাত ও দুর্বৃত্ত দের কাতারে এসে গেলে লোকে তাঁর কথা উদ্ধৃত করেই তাকে কঠোর ভাবে শাস্তি দেবার পক্ষপাতী হবে বলে ভাবছেন কি?

*** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** ***

Quote:
বাংলাদেশের যে কোনো উদার ও সেক্যুলার মানুষই বুঝবেন যে, ইসলামের কথা ঘুণাক্ষরে উচ্চারণ না করেও এসব কর্মসূচি বা নীতি বাস্তবায়নের কথা অনায়াসেই বলা যায়। যদি বলি তবে সেটা শুধু সেক্যুলার রাজনীতিই হবে না, একই সঙ্গে ইসলামী রাজনীতিও হবে। আধুনিক পুঁজিতান্ত্রিক ও বাজার ব্যবস্থা যদি খ্রিস্টীয় প্রটেস্ট্যান্ট স্পিরিট হয়, তাহলে উপরে বর্ণিত আধুনিক নীতি ও আদর্শও অবশ্যই ইসলামী স্পিরিট। আলবত।

পুজিতান্ত্রিক ব্যাবস্থার সাথে খ্রিস্টীয় স্পিরিটের হেজেমনিটা বুঝিনি। কেউ বুঝিয়ে দেবেন?

*** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** ***

Quote:
এ দিক থেকে আধুনিক বাজার ব্যবস্থা ও আধুনিক রাষ্ট্রের ধারণাকে সেক্যুলার বলার অর্থ এ ধরনের সমাজ ও রাষ্ট্রের ইহুদি ও খ্রিস্টীয় চরিত্রকে আড়াল করে রাখা। তাকে ধোয়া তুলসি পাতা হিসেবে হাজির করা। ভাবখানা এ রকম- খ্রিস্টীয়, ইহুদি বা অন্য কোনো ধর্মচিন্তার সঙ্গে এ ধরনের সমাজ ও রাষ্ট্রের কোনো যোগ নেই। সমাজ ও রাষ্ট্র মাত্রই ইহুদি বা খ্রিস্টীয় চরিত্রের হতে হবে, এটা সেক্যুলার চিন্তা হতে পারে না, ঠিক তেমনি ইসলামী সমাজ বা রাষ্ট্র মানেই ধর্মতাত্ত্বিক সমাজ ও রাষ্ট্র, তার কোনো যৌক্তিকতা নেই।

সমাজ মাত্রই ইহুদী বা খৃস্টীয় চরিত্রের কিভাবে হচ্ছে? কোথায়? ইজ্রায়েল ছাড়া প্রথমটি খুঁজে পাই নি, দ্বিতীয়টি আরও পাইনি!

*** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** ***

Quote:
শুধু সেক্যুলাররা নয়, ইসলামপন্থী রাজনীতি যারা করেন, তাদেরও এই সত্য বুঝতে হবে। ইসলামী চিন্তা, দর্শন ও নীতিকে কীভাবে বিশেষ সম্প্রদায়ের ধর্মতত্ত্ব হিসেবে নয়, বরং সার্বজনীন নীতি ও আদর্শ হিসেবে হাজির করতে হয় সেটা আধুনিককালের ইহুদি ও খ্রিস্টধর্মের ইতিহাস বিচার করলেই বোঝা সম্ভব। আধুনিককালে এটা রপ্ত করার ওপর ইসলামের মতাদর্শিক আধিপত্য বিস্তার ও ইসলামপন্থী রাজনীতির ভবিষ্যৎ নিহিত।

ইন্টারেস্টিং। “ইসলামের মতাদর্শিক আধিপত্য বিস্তার ও ইসলামপন্থী রাজনীতির ভবিষ্যৎ” মানে কি প্রকারান্তরে জামায়াতে ইসলামের ভবিষ্যৎ? কোন ভাসুরের নাম মুখে আনতে মজহার অস্বস্তি বোধ করছেন?

*** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** ***

Quote:
সেক্যুলাররা ধর্মতাত্ত্বিক রাষ্ট্রের বিরোধিতা করতে পারে, কিন্তু বাংলাদেশে ইসলাম যেন তার দার্শনিক প্রস্তাবনা নিয়ে উদার গণতান্ত্রিক রাজনীতির পরিমণ্ডলে হাজির থাকতে পারে তার জন্য পরিবেশ ও পরিস্থিতি সুগম করাই ছিল সেক্যুলার রাজনীতির দিক থেকে সহি পথ। স্টার-প্রথম আলো গ্রুপ তাদের জনপ্রিয়তা ও আধিপত্যের জন্য এই কাজটি খুব ভালোভাবে করতে পারত এবং উদার গণতান্ত্রিক রাজনীতির বিকাশের ক্ষেত্রে ইতিবাচক অবদান রাখতে পারত বলে আমি মনে করি। কিন্তু তারা তা না করে সেক্যুলারিজম বা ধর্মনিরপেক্ষতাকে নিরন্তর একটি ইসলামবিরোধী মতাদর্শ হিসেবে হাজির করেছে। ধর্মপ্রাণ মানুষকে ক্রমাগত আহত করেছে এবং খেয়ে না খেয়ে ইসলামের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ও আতংক ছড়ানোকেই সেক্যুলারিজম বলে চর্চা করেছে। যে কারণে তারা আওয়ামী লীগ, ফ্যাসিবাদ ও ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্র ব্যবস্থার মাঝেমধ্যে সমালোচনা করলেও আওয়ামীপন্থী রাজনীতির বাইরে আসতে পারেনি। শুধু তাই নয়, বিএনপি ও তার জোটের বিরুদ্ধে সবসময়ই অবস্থান নিয়েছে। কার্যত ইসলামপন্থীদের সঙ্গে জোট করায় বিএনপির বিরোধিতা করাকে তারা তাদের উদার ও সেক্যুলার রাজনীতির জন্য অতি আবশ্যিক নৈতিক কর্তব্য গণ্য করেছে। যার ফল হচ্ছে বর্তমান ফ্যাসিবাদ ও ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্র ব্যবস্থা।

মজহারের “নিরঙ্কুশ বাক স্বাধীনতা” রক্ষায় নিরন্তর যোদ্ধা প্রথম আলো এভাবে মজহারের কাছেই গালি খেল? চউক্ষ্যে পানি আয়া পড়ল রে। আচ্ছা, প্রথমালু মজহারের লেখা ছাপায় না ক্যান? এটা কি সেই অভিমান থেকে লেখা?

*** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** ***

Quote:
স্টার-প্রথম আলোর ঔরসেই শহীদ মিনার মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড, গণজাগরণ মঞ্চের একাংশ, মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম, বঙ্গবন্ধুর সৈনিক প্লাটুন, সিপি গ্যাং ইত্যাদির জন্ম হয়েছে। নিজেদের ঔরসজাত সন্তানদেরই তাদের এখন প্রকাশ্য নিন্দা করতে হচ্ছে। ২৩ অক্টোবর প্রথম আলোয় কালের পুরাণ (সিপি গ্যাং, গং এবং নিষিদ্ধ শহীদ মিনার) কলাম পড়ে আওয়ামী সৈনিক পুরনো বন্ধু সোহরাব হাসানের জন্য আমার খুবই করুণা হল। অনেক দেরি হয়ে গেছে। পরিস্থিতি যেখানে এসে ঠেকেছে, তাতে তাদের এই গোনাহর কাফফারা আরও বড়ভাবে আদায় করা ছাড়া এ ধরনের ইসলাম-বিদ্বেষীদের অন্য কোনো পথ আছে কি-না, আমার চোখে পড়ছে না।

আমি প্রায় নিয়মিত প্রথম আলো পড়ি। মজহার উল্লিখিত আন্ডারলাইন করা অংশগুলো আমার কখনো চোখে পরে না কেন? আমার চশমায় কি হেজেমনি লাগাতে হবে?

*** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** ***

Quote:
প্রথম আলো জনপ্রিয় পত্রিকা হওয়ার কারণে তাদের ভূমিকায় বাংলাদেশের ক্ষতি হয়েছে বিপুল। রাজনীতিতে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচারের মতো গণতান্ত্রিক আদর্শ চর্চার সাংস্কৃতিক, মতাদর্শিক ও রাজনৈতিক পরিবেশ তৈরি করে দেয়াই ছিল সঠিক অবস্থান। সেই রাজনীতিতে ইসলামের অবদান রাখার সুযোগ যেমন তৈরি হতো, একই সঙ্গে সেক্যুলার অর্থাৎ পাশ্চাত্য এনলাইটমেন্টকে যারা ধর্মজ্ঞান করেন তারাও অবদান রাখতে পারতেন। কিন্তু প্রথম আলো ধর্মনিরপেক্ষতার নামে নির্বিচার ইসলাম বিরোধিতাকেই সেক্যুলার চিন্তা মনে করেছে। ফলে বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষতার বাস্তব অর্থ হয়েছে ইসলামের বিরোধিতা করা।

প্রথম বাক্যটির সাথে আমি একমত। কিন্তু প্রথম আলো সেকুল্যারিজমের প্রচারক হল কবে? আমার চোখে পড়েনি কেন? আমার চশমায় কি ডানদিকে হেগেল আর বামদিকে ফুকো লাগাতে হবে? শেষ বাক্যে মজহার কথিত বাস্তব অর্থটি তো হুবহু জামায়াত কর্তৃক প্রচারিত ব্যাখ্যার অনুরূপ। ইন্টারেস্টিং বৈকি!

*** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** ***

Quote:
এখানে একটি কথা বলে রাখা দরকার। বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল স্বাধীনতার ঘোষণার ভিত্তিতে। স্বাধীনতার ঘোষণায় সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচারকে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ হিসেবেই গ্রহণ করা হয়েছিল; তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষতা, সমাজতন্ত্র ও বাঙালি জাতীয়তাবাদ নয়। বাংলাদেশে এখন আমরা যে ধরনের রাজনৈতিক বিভাজন, বিভেদ, সন্ত্রাস ও সহিংসতা দেখছি তার কারণ স্বাধীনতার ঘোষণা অস্বীকার করে আওয়ামী লীগের দলীয় মতাদর্শকেই রাষ্ট্র গঠনের আদর্শ হিসেবে পরবর্তীকালে চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। যা আদতে ফ্যাসিস্ট মতাদর্শ; ঔদার্য, সহনশীলতা ও গণতন্ত্রের সঙ্গে যার কোনোই সম্পর্ক নেই। স্টার-প্রথম আলো ধরে নিয়েছে, মুক্তিযুদ্ধের আওয়ামী বয়ানই বাংলাদেশের গণ-ইতিহাসের সঠিক বয়ান। যা মোটেও ঠিক নয়।

স্টার-প্রথম আলো কবে থেকে এগুলো ধরে নিল? আমার চোখে উল্টোটা পরে কেন? ফরহাদ মজহারের জন্য কি প্রথম আলোর স্পেশাল এডিশন বের হয়? (নাকি সুকৌশলে প্রথম আলোকে মজহারের বিরোধী পক্ষের স্থানে দাঁড় করিয়ে প্রথম আলোর গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানোর চেষ্টা করছেন। সিউডো-শত্রুতা দেখিয়ে বোঝাতে চাইছেন আমি খারাপ হয়ে থাকলেও প্রথম আলো এখনো ভালো আছে। এই কাজটির অর্থ কিন্তু দাঁড়ায় অখ্যাত গ্রুপগুলোর প্রচারনায় মজহারের ইমেজের চৌদ্দটা বেজে গেছে।)

*** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** ***

Quote:
আমি ব্যক্তিগতভাবে স্টার-প্রথম আলোর ইতিবাচক ভূমিকাই কামনা করি। আমার আশা, স্টার-প্রথম আলো এক-এগারোর মতো আবারও ষড়যন্ত্রের নায়ক হবে না।

এ কি কথা শুনি আজ মন্থরার মুখে। হাস্তে হাস্তে মইরা গেলুম রে মনু।

*** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** ***

Quote:
ইসলাম এ দেশের মানুষের ধর্ম ও সংস্কৃতি। এ দেশের মানুষের পারিবারিক ও সামাজিক সম্পর্ক নির্মাণের ইসলাম গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র। অতএব বাংলাদেশের জনগণের চিন্তায়, দর্শনে ও রাজনীতিতে ইসলাম থাকবেই। একে রোখার কোনো শক্তি কারও আছে বলে আমি মনে করি না। প্রশ্ন হচ্ছে, কীভাবে থাকবে? তার রূপ কী হবে? এটাই এখনকার আলোচনার বিষয়। যারা বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ আন্দাজ করতে পারছেন, তারা ঠিকভাবে তাদের কর্তব্যও নির্ধারণ করতে সক্ষম। ইসলামপন্থীদের দমন-পীড়ন উদার গণতান্ত্রিক রাজনীতির পথ হতে পারে না।

ইসলামপন্থীদের দমন-পীড়ন কোথায়-কিভাবে-কবে হল? ইসলামপন্থীদের না জামায়াতে ইসলামপন্থী? জামায়াতে ইসলামপন্থীদের কারো কারো বিচার হয়েছে। দমন-পীড়ন তো হয় নি। ঝেড়ে কাশুন মজহার সাহেব।

*** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** ***

Quote:
খেয়াল করতে হবে, শহীদ মিনারের দ্যোতনা ধর্মীয়। শহীদ ও মিনার দুটোই ধর্মীয় দ্যোতনা বহন করে। একই সঙ্গে তারা সেক্যুলার। সেক্যুলার পরিমণ্ডলে ধর্মীয় চেতনা ও আবহ ধারণ করার গুরুত্বপূর্ণ নজির হচ্ছে শহীদ মিনার। এখানে জাতি, ধর্ম, সম্প্রদায় নির্বিশেষে যে কেউই আসতে পারে, যদিও অলিখিত নিয়মে শহীদ মিনারে গরিব-মেহনতি-চাষাভূষা-শ্রমিকের স্থান নেই। কিন্তু তত্ত্বগতভাবে আমরা ধরে নিতে পারি, সবাইকেই শহীদ মিনার ধারণ করতে পারে।

ইন্টারেস্টিং। ভাষার খুব সুন্দর মারপ্যাঁচ। আরবী থেকে বাংলায় আত্মীকৃত ‘শহীদ’ শব্দটি কিন্তু মূলভাষায় ব্যাবহৃত অর্থে বাংলায় ব্যাবহৃত হয় না। মিনার বলতে মজহার কি শুধু মসজিদের মিনারই চেনেন? ইংরেজি টাওয়ার শব্দের বাংলা প্রতিশব্দ কিন্তু মিনার। আইফেল টাওয়ার কে শুদ্ধ বাংলায় আইফেল মিনার বলা হলে তাতেও কি মজহার সাহেব ধর্মীয় দ্যোতনা খুঁজে পাবেন? 'আইভরি টাওয়ার' নামের ইংরেজি শব্দবন্ধের বাংলা অনুবাদও কিন্তু 'গজদন্ত মিনার'! এ এক নিদারুণ হেজেমনি বটে। ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হল কলকাতাতেও শহীদ মিনার আছে। ফেলুদায়ই বহুবার এর উল্লেখ আছে। সেখানেও কি মজহার সাহেব ধর্মীয় দ্যোতনা খুঁজে পান? নাকি তিনি আসলে বোঝাতে চাচ্ছেন যেহেতু শহীদ মিনার ধর্মীয় একটি হেজেমনি, সেহেতু শহীদ মিনারের পবিত্রতা রক্ষা করতে গিয়ে তাকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করায় ধর্মানুভূতি আহত হয়েছে?

*** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** ***

Quote:
কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড, গণজাগরণ মঞ্চের একাংশ, মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম, বঙ্গবন্ধুর সৈনিক প্লাটুন, সিপি গ্যাংদের কারণে সমাজে অনেকেই অবাঞ্ছিত, যারা এই গ্যাং-এর রাজনীতি করে না। শহীদ মিনার সেক্যুলারদের তৈরি স্থান ও ভাবগত পরিমণ্ডলে জাতীয় ঐক্য ও চেতনার প্রতীক। এই সেক্যুলার পরিমণ্ডলটি পিয়াসকে অস্বীকার করার মধ্য দিয়ে কার্যত ভেঙে ফেলা হল। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতিতে ও জাতীয় ঐক্য ধারণ করার ক্ষেত্রে সেক্যুলারদের মতাদর্শিক ও ভাবগত ঐক্যের অবসান ঘটল।

কোন এক অখ্যাত গ্যাং অবাঞ্চিত ঘোষণা করা মাত্রই “সমাজে অনেকেই অবাঞ্ছিত” হয়ে গেল? তাহলে এতদিন তারা কি হেজমনি আউড়ানোর সুবাদে ঠিক কি ছিঁড়ে ছিঁড়ে আঁটি বেঁধেছেন? ভয়টা ভালই লেগেছে দেখা যায়।

*** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** *** ***

Quote:
পিয়াসসহ ভিন্নমতের সবাইকে যদি বায়তুল মোকাররমের দিকে ঠেলে দেয়া হয় আর বায়তুল মোকাররমই যদি ফ্যাসিবাদ ও ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্র ব্যবস্থার বিপরীতে জাতীয় ঐক্য ও চেতনার প্রতীক হয়ে ওঠে, তাহলে তো আসলে রাজনীতির নতুন অভিমুখের সূচনা হল। পিয়াসের লাশের ভার শহীদ মিনার বহন করতে পারেনি বা বহন করতে অস্বীকার করেছে। বায়তুল মোকাররম তা সম্মান ও শ্রদ্ধার সঙ্গে গ্রহণ করেছে। ধর্মপ্রাণ বাংলাদেশের জনগণকে অভিনন্দন। সেক্যুলাররা ব্যর্থ; কিন্তু আগামীতেই বোঝা যাবে জাতীয় চেতনা ও ঐক্যের ভার ইসলামপন্থীরা আদৌ বহন করতে সক্ষম কিনা।

আবারও ধর্মীয় হেজেমনি সৃষ্টির প্রয়াস। ১৩’র মার্চে যেমন এন্টি-শাহবাগ হিসাবে হেফাজতকে দাঁড়া করানো হয়েছিল, এবার এন্টি শহীদ মিনার হিসাবে বায়তুল মোকাররম কে বসানোর পাঁয়তারা। নিজের কথাবার্তা কতটা খেলো হলে শহীদ মিনারে বাঞ্ছিত হবার কান্নাকাটি করতে করতে বায়তুল মোকাররমের মত এত বড় ঢালের আড়ালে নিজেকে লুকোতে হয়, মজহার সাহেব?

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

ইয়ামেন's picture

চলুক

--------------------------------------------------------------------------------------------------------------------

সব বেদনা মুছে যাক স্থিরতায়
হৃদয় ভরে যাক অস্তিত্বের আনন্দে...

অতিথি লেখক's picture

একটা গুরুত্বপুর্ন জিনিস বুঝতে হয় আমার ভুল হচ্ছে । পিয়াস করিমের লাশ শহীদ মিনারে নেয়ার দাবীটা তার পরিবারের তরফ থেকে উঠেছে বলে তো মনে পড়ে না । দাবীটা উঠেছে তার সমমনা কিছু বুদ্ধি বেশ্যার কাছ থেকে । পিয়াস করিম বেঁচে থাকাকালীন সময় এই একই ভাগাড়ের অন্য কোন শকুন মারা গেলে হয়তো তিনি নিজেও একই কাজ করতেন । তবে সেটা আমরা নিশ্চিত করে বলতে পারি না ।

কেউ মারা যাওয়ার পর তার পরিবারের উপর শোক নেমে আসে সেটাই স্বাভাবিক । যদি তার পরিবারের সদস্যরা লাশ শহীদ মিনারে নেয়ার নোংরা চেষ্ঠাটা শুরু করতো তাহলে বুঝতাম তারা শোক কাটিয়ে উঠে লাশের রাজনীতিতে নেমেছেন । কিন্তু সংবাদে ঘেটে দেখতে পাচ্ছি তারা জানাচ্ছেন , "গুনগ্রাহীদের পরামর্শে লাশ শহীদ মিনারে নেয়ার কথা ভাবা হয়েছিল, কিন্তু এ ব্যপারে প্রতিবাদ এবং সমালোচনা শুরু হওয়ায় পারিবারিক ভাবে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে তা না করার । " সমস্যার মুলে দেখা যাচ্ছে রয়েছেন এসব তথাকথিত গুনগ্রাহী বুদ্ধিবেশ্যাদের । পিয়াশ করিমের লাশ তার পরিবারের গন্ডির বাইরে নিয়ে আসার দায় এই বুদ্ধিবেশ্যাদেরই । মৃত পিয়াস করিমের এবং তার বাবার আদর্শের ব্যবচ্ছেদ হওয়াটা জরূরি তবে সেটা তার পরিবারের শোক এবং প্রাইভেসিকে সম্মান জানিয়েই, যতক্ষন না তারা নিজেইরাই সেটা পাবলিক ডোমেইনে ঠেলে দিচ্ছেন ।

========================
দস্যু ঘচাং ফু

Post new comment

The content of this field is kept private and will not be shown publicly.