লক্ষ্মী সরস্বতী দীপাবলী

নজমুল আলবাব's picture
Submitted by albab on Fri, 01/06/2018 - 5:46am
Categories:

দক্ষিণের জানালায় দাঁড়ালে হিমেল হাওয়ার ঝাপটা লাগে। শীত এলো বলে। আগে এমন সময় শীত প্রায় চলেই আসতো। দূর্গা পূজার সময় থেকেই হালকা কুয়াশা আর শেষরাতে ঠান্ডা ভাবটা শুরু হতো। রাতে পূজো দেখার কিংবা পাড়া ঘুরার সময় সেটা টের পাওয়া যেতো। এখন আর সেরকম হয় না। মাঘ মাসেই শীত আসে কী আসে না।

দীপালির একটু একটু গরম লাগে। অস্বস্তি হয়। জানলার পাশে দাঁড়িয়ে শরীরটা জুড়ানোর চেষ্টা করে। সন্ধ্যা আরতী সেরে এলো। বারান্দার এক কোনে ছোট্ট ঠাকুর ঘর। ধূপ জ্বেলে প্রণাম ঠেকিয়েই শেষ করে আরতী। শরীরে এর বেশি সহ্য হয়না ইদানিং। পরিশ্রান্ত লাগে।

এ পাশটায় আগে একটা ছোট্ট পুকুর ছিলো। তারপর ধানি জমিন। জমিনের লাগোয়া বড় রাস্তা। পুকুর আড়াল করা গাছের ফাঁক দিয়ে সেসব দেখা যেতো। বিয়ের পর পর, দীপালি সেই ফাঁকফোকর দিয়েই দেখে ফেলতো নিজের বাপ-ভাইকে। বাজার থেকে উত্তর পাড়ায়, তাদের বাড়িতে যাবার এই একটাই রাস্তা। শীতের সময় মাঠ শুকিয়ে খটখটা হয়ে গেলে মহাদেব বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে কোনাকোনি দৌঁড়ে আসতো বোনের কাছে। নাড়ু, মোয়া ধরিয়ে দিয়ে যেতো। দেখতে দেখতে সব বদলে গেলো। এই ধানি জমির বেশিরভাগই ছিলো ওর শ্বশুর বাড়ির জ্ঞাতি গোষ্ঠির। এখন কিচ্ছু নাই। কেউ টাকার বিনিময়ে, কেউ জীবনের বিনিময়ে, কেউ বউ-ঝিদের ইজ্জতের দামে সেইসব জমি বেঁচে দিয়েছে। এখন আর সেখানে ধান হয় না। বড় রাস্তাটা পাকা হয়েছে। সোনার মতো দামি হয়েছে সেই জমি। উঠেছে ঘর-দোর। রাস্তার লাগোয়া হয়েছে দোকান। জমিছাড়া অনেকে বাড়িছাড়া হয়েছে, হয়েছে দেশছাড়া। তারপরও যারা টিকে আছে, তারাই এখন জড়াজড়ি করে থাকে এখানে, হাতেগোনা ১৩ টা ঘর।

পুকুরটা ছিলো শরিকানা। মুক্তার মিয়া বল্ল, জমি গেছে, পুকুরতো তোরা রাখতে পারবি না। তারচে আমারে দিয়ে দে। ক'টা টাকা অন্তত পাবি। কথাটা মিথ্যা নয়। এখন আর কেউ টাকা দিয়ে জমি নিতে চায় না। দখল করাটা বরং সহজ। নিরঞ্জনের কিছুটা টানাটানিও চলছিলো। বাড়ির সামনের টং দোকানটার অবস্থা ভালো না। নড়বড়ে হয়ে গেছে। শক্ত করে না বাঁধলে দানাপানির টান পড়বে। দোকানটা যখন শুরু করেছিলো ঘরে মানুষ ছিলো তিন জন। মা চলে গেছেন পরপারে, তার স্থান নিয়েছে লক্ষ্মী আর সরস্বতী। দুই মেয়ে পাল্লা দিয়ে বড় হচ্ছে। এরমাঝে হঠাৎ করেই আবার পোয়াতি হলো দীপা। অবশ্য খুশিই হয়েছে ওরা। দুইটাই মেয়ে। একটা ছেলেও চাই তাদের।

জানলায় দাঁড়িয়ে আট মাসের পোয়াতি পেটে হাত রাখে দীপা। ভেতর থেকে টের পায় যেনো। নড়ে উঠলো। খুব নড়াচড়া করে এইটাতে। আগের দুটো মিলেও যা করতে পারেনি, এবার একাই সেটা পুষিয়ে দিচ্ছে যেনো। সবাই বলছে ছেলে হবে। দীপারও তাই মনে হয়। অনেক দস্যি একটা ছেলে হবে ওর। যন্ত্রনা দেবে বিস্তর। এখনই সেটা টের পাওয়া যাচ্ছে। আলতো করে হাতটা নিজের ফুলে থাকা পেটে হাত বুলাতে বুলাতে চোখ বুঁজে দীর্ঘ একটা শ্বাস নেয় দীপালী, তার নাকের নিচে হালকা ঘাম, ঠোঁটে মৃদু হাসি...

আগে যখন অনেক বাড়ি ছিলো। দূর্গা পূজোর আয়োজন হতো। ৪/৫ বছর হতে চল্ল আর হয় না। যে কয়েক ঘর অবশিষ্ঠ আছে, তাদের পক্ষে এতবড় আয়োজন করা সম্ভব হয় না। ধর্ম-কর্ম বলতে মাঝে মাঝে কীর্তন, ঘরে ঘরে ঠাকুর আছে সবার, সেই ঠাকুরের আরাধনা আর লক্ষ্মীপূজার মতো ছোট পরিসরের পূজার আয়োজন হয়।

নগেন কাকার উঠোনে হচ্ছে আজ পূজো। আগে সবার বাড়ি বাড়ি লক্ষী পূজা হতো। এখন পূরা পাড়ায় এই একজনই পূজো করে। সবাই সেটায় গিয়ে হাজির হয়। দীপার ইচ্ছে ছিলো যাবে। কিন্তু শরীরটা মানলো না। দুই মেয়ে সকাল থেকে যাচ্ছে আর আসছে। সন্ধ্যার পর থেকে আর আসারই নাম নেই। মাঝে মাঝে শুধু কল-কল শব্দে বাপের সাথে কথা বলতে শোনা যাচ্ছে। দোকানে বাজি-পটকা এসব এনেছে নিরঞ্জন। বাচ্চারা একটু পর পর একটা দুটো কিনে নিয়ে যাচ্ছে। এসব এনেছে আসলে নিজেরাই ফুটাবে বলে। বাচ্চাদের জন্য খুচরো কিছু। সেসবই নিচ্ছে ওরা। দোকান বন্ধ করে নগেন কাকার উঠানে সবাইকে নিয়ে ফোটাবে। সবাই মিলে একটু আনন্দ ফুর্তি হলো।

দোকান বন্ধ করে নিরঞ্জন একবার ঘরে ঢু মেরে যায়। বউকে অনুরোধ করে, যাবার জন্য। দীপার পক্ষে সম্ভব না। সে শুয়ে থাকতে চায়। নিরঞ্জন মেনে নেয়। হেসে বলে, পরের বার ছেলে কোলে নিয়ে দেখা যাবে। দীপাও সায় দেয়। জানালা দিয়ে নগেন কাকার উঠানটা দেখা যায় না। মাঝখানে বাসন্তির ঘর।

ধানি জমিতে বাড়ি হয়েছে, রাস্তার লাগোয়া হয়েছে দোকান। বড় একটা মসজিদও হয়েছে। বড় মাইক লাগানো হয়েছে সেখানে। সুর করে দিনে পাঁচ বার আজান হয়। তাছাড়া ওয়াজ হয় নিয়মিত। বছরে একবার বড় করেতো হয়ই তার বাইরেও কতবারযে মাহফিল হয়। হিন্দুদের আছে বারো মাসে তেরো পার্বন। মুসলমানরাও কম যায় না। প্রতি শুক্রবারেই ওয়াজ হয় সেই মসজিদে। ঘরে বসে সব শোনা যায়। মুক্তার মিয়া বলে বয়ান। সেসব বয়ান শুনে দীপার ভয়ই করে।

এর বাইরে হিন্দু পাড়ায় কোন আয়োজন থাকলেও মসজিদের মাইকে ওয়াজ হয়। বিকাল থেকে সেটা শুরু হয়। বেশিরভাগই হয় দেবীদের নিয়ে। আগে এরকম হতোনা। মুক্তার মিয়ার মেঝো ছেলেটা গতবার কোথায় থেকে বড় পাশ দিয়ে এসে মসজিদের ইমাম হলো, তারপর থেকে এটা শুরু হলো। দীপা এরে চিনে। আব্দুর রহমান নাম। ইসকুলে দীপাদের দুই ক্লাস উপরে পড়তো। শান্ত মতোন ছিলো। তারপর বাপ তারে পাঠিয়ে দিলো হাটহাজারী না কি নাম একটা জায়গার, সেখানটাতে। মাদ্রাসায় পড়ার জন্য। বছরে দু-এক বার আসতো। দীপার বিয়ের পর, এ পাশটায় জমি কিনে মুক্তার মিয়া যখন বাড়ি বানিয়ে চলে এলো, তখন বাড়ি এলে ওর দেখা মিলতো। তারপরতো গত বছর একেবারে ফিরে এলো গ্রামে। ইয়া বড়ো দাঁড়ি, সবসময় মাথায় পাগড়ী থাকে। লোকজন খুব সমিহ করে। মুক্তার মিয়াকে এমনিতেই লোকজন ভয় করে এর সাথে এখন ছেলের কল্যানে সমিহও আদায় করে নিয়েছে।

সেই শুরু করেছে এসব আকতা ওয়াজ। আগে কীর্তন হলে মুসলমান বাচ্চাগুলো এদিকটায় এসে ভীড় জমাতো। সব বাচ্চারা মিলে হুটোপুটি করে বেড়াতো। এখন সেটা একদম বন্ধ হয়ে গেছে। এমন পূজা আর্চার দিনে আব্দুর রহমান শুরু করে ওয়াজ। বাচ্চা কাচ্চারা সেখানে গিয়ে জড়ো হয়। ওয়াজ না বলে খিস্তি বলাই ভালো। শুরুতে কয়েকটা দোয়া দরুদ পড়া হয়, তারপর হঠাৎ করেই আব্দুর রহমান দেবীমা'দের নিয়ে কথা বলা শুরু করে। ও মাগো কী সব অশ্লিল কথা সেসব। শুনলেও পাপ। দীপার প্রথম প্রথম চোখ ফেটে কান্না হতো। এখন আর সেসব হয়না। কিন্তু প্রচন্ড মন খারাপ হয়।

আজও বিকাল থেকে শুরু করেছে আব্দুর রহমান। লক্ষী মূর্তির বর্ণনা দিয়েছে সারা বিকেল। তারপর শুরু করেছে খাবার দাবার নিয়ে। হিন্দুদের বাড়ির খাবার খাওয়া যাবেনা, এটা হারাম। আগেই বলেছিলো এসব। আজকে বলেছে হিন্দুর দোকান থেকে মিস্টি জিলাপি এসব কেনাও হারাম। এসব শুনে ধক করে উঠেছে দীপার বুকে। বাজারে কোনমতে টিকে আছে মহাদেবের মিস্টির দোকানটা। বাবা মারা যাবার পর, মা বাড়িতে অল্প স্বল্প মিস্টি, জিলাপি, নিমকি বানায় তাতে কোনমতে দোকানটা চলে। সেসবের ক্রেতাতো সব মুসলমানই। এ পাড়ায় তেরো ঘর হিন্দু, আর ওর বাপের বাড়ির পাড়ায় আছে সতেরো ঘর। আশে-পাশের গ্রাম গুলোতে হয়তো আরো কয়েক ঘর পাওয়া যাবে। এদের কারো অবস্থাই ভালো না। ভাতের জোগাড়ই হয়না, তারা মিস্টি খাবে কেমন করে!

টানা পটকার শব্দে দীপার স্বম্বিত ফিরে। জানালায় চোখ রাখে। নগেন কাকার বাড়ীর আকাশে সাঁই সাঁই করে পটকা উঠে যাচ্ছে। দেখতে ভালই লাগে ওর। কিন্তু নিরঞ্জন এতো টাকা খরচ করলো কোন আক্কেলে সেটা ভেবে পায়না সে। এসবেরতো অনেক দাম হবার কথা। সেসব ভাবনার মাঝেই কানে ভেসে আসে আব্দুর রহমানের কর্কশ কন্ঠস্বর। মসজিদের মাইকে গর্জে উঠে সে... মালাউনদের এতো সাহস! এইখানে ওয়াজ চলতেছে আর তারা পটকা ফোটায়! এইসব নাফরমানি তারা কেমনে করে? এদের উচিত শিক্ষা দিতে হবে... মসজিদের ভেতর থেকে শোরগোল ভেসে আসে... আব্দুর রহমান আরো কিসব বলতে থাকে। সেসব আর দীপা শোনে না। সে উপুড় হওয়া কলসির মতো ফুলে থাকা পেটটা একহাতে ধরে আরেক হাতে ঘোমটা টানতে টানতে ঘর থেকে বেরিয়ে আসে। পটকার শব্দে এসব কিছুই শোনার কথা নয় নিরঞ্জনের, তাকে না থামালে অনিষ্ঠ হয়ে যাবে। ঘর থেকে বেরুতেই মাইকের সেই কোলাহলকে আরো জোরে জোরে শুনতে পায় দীপা।

শরীরটা টানতে টানতে নগেন কাকার উঠানে যেতে পারেনা দীপা। তার আগেই উঠানের ওপাশ দিয়ে মসজিদের লোকজন এসে পড়ে। সবার সামনে আব্দুর রহমান। চিৎকার করে সব থামাতে বলে সে। এমন উটকো লোকজন আর চিৎকারে সবাই হতচকিত হয়ে পড়ে। কাউকে কিছু বুঝে উঠতে না দিয়েই লোকজন উঠানের এক পাশে রাখা লক্ষী মূর্তিটার দিকে এগিয়ে যায়। কেউ একজন হেঁচকা টানে ছুঁড়ে ফেলে ছোট্ট মুর্তিটা। স্বম্বিত ফিরে পেয়ে নিরঞ্জন দৌঁড় দেয় সেই দিকে। মণ্ডপটা বাঁচাতে চায়। কিন্তু পারেনা। আব্দুর রহমান লাথি মেরে তাকে মাটিতে ফেলে দেয়। তার সাথে যোগ দেয় নয়া দোকানের মজিদ আর দক্ষিণ পাড়ার হেলাল। দীপা ভুলে যায় তার ভরন্ত শরীরের কথা। বিকাল থেকে হতে থাকা অস্বস্তির কথা ভুলে যায় সে। ধনুক মুক্ত তীরের মতো জটলাটার দিকে দৌঁড় দেয়। একদম মাঝখানে ঢুকে পড়ে।

ভরা পোয়াতি পেটে আব্দুর রহমানের লাথিটা পড়ার আগ পর্যন্তু সমস্ত শরীর দিয়ে নিরঞ্জনকে বাঁচাতে চেষ্টা করেছিলো দীপালী। নিভে যাবার আগে সে দেখে যেতে পারেনি নিরঞ্জনের নিথর শরীরটা।


Comments

সোহেল ইমাম's picture

চমৎকার গল্প, কিন্তু এক নাছোড়বান্দা বিষাদ আঁকড়ে ধরেছে গল্পটা পড়ার পর। খুব ভালো হতো যদি এই লেখাটা একটা গল্পমাত্র হতো। আমাদের এলাকাতেও আজকাল বড় বেশি ওয়াজমাহফিলের আয়োজন হচ্ছে। একদার প্রগতিশীল রাজনৈতিক নেতারাই এখন এই ওয়াজমাহফিলের প্রধান অতিথি হন।

---------------------------------------------------
মিথ্যা ধুয়ে যাক মুখে, গান হোক বৃষ্টি হোক খুব।

নজমুল আলবাব's picture

আমাদের দেশে প্রগতিশীল কোন রাজনৈতিক নেতা আছেন, এটা বিশ্বাস করিনা।

pritom's picture

মনে হলো জীবনের অনেক গুলো বাস্তব ঘটনার যে কোন একটা পড়লাম হাসি
শৃভ কামনা হাসি

নজমুল আলবাব's picture

ধন্যবাদ।

সত্যপীর's picture

মাঝে মাঝে ষাট সত্তুর দশকের ছোটগল্প পড়লে এক মুহুর্তের জন্য হলেও সেই সময়ে ফিরে যাওয়া যায়। হাজার পুরাতন পত্রিকার কলাম বা বই পড়েও যা মাঝেমধ্যে সম্ভব হয়না। আজ থেকে বহুদিন পরে কোন এক ভবিষ্যত পাঠক আপনার এই গল্পটা পড়ে ফিরে যাবে ২০১৮ এর দীপাবলীর জীবনে। শক্তিশালী গল্পটির জন্য ধন্যবাদ।

..................................................................
#Banshibir.

নজমুল আলবাব's picture

আপনার এই মন্তব্যটা অনেক বড় পাওয়া। আনত হই।

নীড় সন্ধানী's picture

আগে ভাবতাম বিশ শতক মানুষকে অনেক সভ্য করে তুলেছে। কিন্তু একুশ শতকে এসে যেন এমন গল্পের প্রাসঙ্গিকতা আরো বাড়ছে, ভুতের মতো পেছন দিকে যাচ্ছে এই জাতির বড় একটা অংশ। মর্মান্তিক বাস্তবতা। মন খারাপ

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

নজমুল আলবাব's picture

হাতে গোনা কয়েকটা বোকা মানুষ ছাড়া আর কেউই এসব নিয়ে ভাবেন না এখন।

আয়নামতি's picture

গুরু গুরু এমন লাথি দীপাবলী নিরঞ্জনদের সয়ে যেতে হয় কাল থেকে কালান্তরে। মর্মান্তিক বাস্তবতার সামনে নিজেকে বড্ড ক্ষুদ্র আর অসহায় মনে হলো।

নজমুল আলবাব's picture

আমরা অসহায়ের দলে।

ষষ্ঠ পাণ্ডব's picture

সম্প্রদায় থাকলে প্রকাশ্য বা অপ্রকাশ্য সাম্প্রদায়িকতা থাকবে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির যেমন সুযোগ থাকবে তেমন সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সম্ভাবনাও থাকবে। সম্প্রদায় থাকলে সংখ্যাগুরু-সংখ্যালঘু ব্যাপারটা থাকবে, কালেভদ্রে ঠাণ্ডা মাথায় পরিকল্পনা করে সংখ্যালঘু নিধণের ব্যাপারও থাকবে। সম্প্রদায় আছে বলে মানুষ প্রায়ই মানুষ হবার বদলে সাম্প্রদায়িক জীবে পরিণত হয়। এটা যে ন'বছরে ছ'বছরে একবার হয় তা না। বরং ভিন্ন সম্প্রদায়ের উপস্থিতি থাকলে প্রায়শই হয়। সংখ্যালঘুর ওপর অস্ত্রশস্ত্রের আঘাত কখনো সখনো আসে, কিন্তু বাক্য আর আচরণের আঘাত প্রতিনিয়ত আসে।

সম্প্রদায়ের পরিচয় মুছে ফেলে মানুষ কি কখনো কেবল মানুষ হবে?


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

নজমুল আলবাব's picture

ধর্মের আফিম থেকে সম্ভবত মানুষের কোন মুক্তি নাই। মানুষ একদিন মানুষ হবে এই চিন্তা করার সাহসও আর অবশিষ্ঠ নাই।

এক লহমা's picture

আচ্ছা, যে বাস্তবতা আপনাকে এ গল্প লেখায় সেই বাস্তবতা থেকে উত্তরণের গল্প কি আজ একেবারেই অবাস্তব?

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

ষষ্ঠ পাণ্ডব's picture

উত্তরণের জন্য তো প্রথমে সমস্যাটা স্বীকার করতে হবে। রাষ্ট্রযন্ত্র, সরকার, রাজনৈতিক দলদেরকে জিজ্ঞেস করে দেখুন তো তারা এমন কোন বিষয়ের অস্তিত্ব আছে বলে মানে কিনা।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

নজমুল আলবাব's picture

পাণ্ডবদা একদম আসল কথাটা বলে দিলেন। সমাজের প্রতিটি স্থরে বিষ ঢুকে গেছে।

তুলিরেখা's picture

এই ধরণের লেখাও আজকাল বেশি দেখছি। ফেবুতে তো বটেই, বিভিন্ন অনলাইন ম্যাগাজিনে হঠাৎ করেই যেন বেড়ে গিয়েছে এই ধরণের লেখা। শুধু ফিকশন না, নন-ফিকশনও। আলোচনা, প্রবন্ধ, তর্ক বিতর্ক ও।
আজ থেকে বছর পাঁচ-ছয় আগেও এতটা প্রকট ছিল না।
অথচ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এসব কমে যাবারই তো কথা ছিল!

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

নজমুল আলবাব's picture

পাঁচ ছয় বছর না, তারও বেশি সময় ধরেই একটা প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে যাচ্ছিলো দুনিয়া। এর ফলটা ফলতে শুরু করেছে হয়ত পাঁচ ছয় বছর ধরে। এই প্রক্রিয়ায় ডোনাল্ড ট্রাম্প যেমন প্রেসিডেন্ট হয়েছে তেমনি করেই বিশ্বের সবচে বড় গণতন্ত্রের দেশ পরিণত হয়েছে বিশ্বের সবচে বড় মৌলবাদী রাস্ট্রে।

তুলিরেখা's picture

মাঝে মাঝে সোশ্যাল নেটোয়ার্কের কিছু কিছু গ্রুপ দেখে অবাক হয়ে যাই। চব্বিশ ঘন্টা পারস্পরিক গালাগালি চলছে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে। একদল একটা ইস্যু তুলে ঘন্টার পর ঘন্টা গালাগাল দিয়ে ঘুমাতে চলে যায়, আরেক্দল এসে উল্টা গালাগালি দেয় আরো বহু ঘন্টা। ততক্ষণে আগের দলের ঘুম থেকে ওঠার সময় হয়ে যায়, ওরা এসে বিপুল উৎসাহে তুমুল গালাগালি শুরু করে আবার।

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

মন মাঝি's picture

হে হে, আপনি এগুলি দেখেন??!! দেঁতো হাসি

আমার ধারণা এদের একটা বড় অংশ চরম ইনফিরিওরিটি কমপ্লেক্সে ভোগা অপদার্থ, অকালকুষ্মাণ্ডের দল। এরা আসলে শুধু গালিই দিতে জানে; কাকে দিচ্ছে, কেন দিচ্ছে - এমনকি সেসবও এদের কাছে অতটা গুরুত্বপূর্ণ না। বাস্তব জীবনে এদের অনেকেই হয়তো ভালো কিছু দূরে করা থাক, গালিটাও হয়তো দেয়ার রুচি থাকলেও সাহস রাখে না। কিন্তু কীবোর্ডের আড়ালে অপরিচয়ের ব্যবধানে অসাক্ষাতের দূরত্বের আপাত নিরাপত্তায় বসে এরা নিজেদেরকে নিজেদের কাছে "গুরুত্বপূর্ণ" করানোর একমাত্র যে ক্ষমতার স্বাদ পেয়েছে, সেটা হলো এই - "গালি"! কেন, কাকে, কি লাভ - এমনকি এসবেও কিছু এসে যায় না। যে কেউ এবং যে কোন কারন হলেই চলে। এটা একটা নেশা বা মাদকাসক্তির মতো। তবে চোখের সামনে একটা ফ্রি পাঞ্চিং ব্যাগ পেলে সবাই দলবেধে সেটার উপর ঝাঁপিয়ে পড়তে খুব মজা পায়। আর সেই পাঞ্চিং ব্যাগ যদি শারীরিকভাবে পালটা জবাব দেয়ার ক্ষমতা না রাখলেও তাদের মতই বাক্যবীর হয় - তাহলে তো আর কথাই নেই। কুকুর-বিড়ালকে দেখবেন, কোনোকিছু নড়াচড়া করলেই তার প্রতি তাদের প্রবল উৎসাহ জাগ্রত হয়, কিন্তু নড়াচড়া বন্ধ হয়ে গেলেউ উৎসাহ হারিয়ে ফেলে। এদেরও তাই, কিন্তু এদের দুই পক্ষেরই পরম সৌভাগ্য যে এদের কোনোপক্ষই নড়াচড়া থামায় না। ফলে গালাগালির উৎসাহে ভাটা পড়ার সুযোগই আসে না। হাসি

****************************************

মন মাঝি's picture

শুধু কীর্তন না, গত ১০-১৫ বছর যাবৎ যাত্রাপালা বা আউলবাউলদের আসর বা জলসাও প্রায় বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বা গেছে - যা আমাদের শেয়ারড (অর্থাৎ হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে) সংস্কৃতির একটা অবিচ্ছেদ্য অংশ। ৮-১০ বছর আগে পর্যন্তও ঢাকা শহরে প্রতি শীত মৌসুমে বিভিন্ন জায়াগায় বাউলদের, বাউলগানের ওপেন-এয়ার আসর বসত, বসানো হত। এখন অনেকদিন আর সেসব দেখি না। ঐসব জায়াগায় এখন বরং শামানদের আসর হয়। গ্রামে-গঞ্জেও একই অবস্থা - মেরেপিটে তুলে দেয়া হচ্ছে এবং হয়েছে। ২০০৮-এ মাইগাঁওর ঘিলাছড়া ইউনিয়নে হাকালুকি হাওর পারের নির্জন প্রান্তরে এক নিশুতি রাতে বাউলের আসরে প্রায় আপার্থিব আনন্দের অভিজ্ঞতা হয়েছিল। তারপর থেকে প্রায় প্রতি বছরই ওদিকে যাই, বাউলের আসর খুঁজি, কিন্তু পাই না। শুনি শামানদের দৌড়ানি খেয়ে এখন আর ওসব হয় না। মন খারাপ হয়ে যায়। এরপর অনেকদিন পর কিশোরগঞ্জের হাওরাঞ্চলের একটি গ্রামে একটি বড় আসরে আমন্ত্রিত হই। গিয়ে দেখি অন্য ঘরাণার আসর। উঠে আসার উপায় ছিল না, রাতে ওখানেই থাকার বন্দোবস্ত। রাত ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত কোনোমতে বসে থেকে শুতে গেলাম। পরে সকালে শুনি তারপরেই নাকি শুরু হয়েছিল বাউল আসর। বিজ্ঞাপণ ও মুখবন্ধটা এক ঘরানায়, তারপর আসল জিনিস বেশ রাত করে আসে। কমলগঞ্জের ভানুগাছের ওদিকে গিয়ে আরেক শীতে এই একই ব্যাপার দেখলাম। বাউল গানের আসরের কথা জিজ্ঞেস করতে অনেকে আশেপাশের কিছু জায়াগার কথা বললেন। রাতে শব্দও পেলাম - কিন্তু অন্য ঘরাণায়। এগুলিও ঐ রকমই ছিল কিনা জানি না - শুরুতে আপাত নিরাপদ ঘরাণায়, তারপর মনের আসল ঘরাণায়? মনে হলো এইসব লুকোচুরির পিছনে সেই দৌড়ানি-পিটুনি খাওয়ার ভয়। কেন এত ভয়? সিলেটে এইসব বাউল/মারফতি/লোকগানের আসর/জলসার কথা বলবেন কিছু?

আপনি কোন প্রক্রিয়ার কথা বলছেন জানি না, তবে আমি ঐতিহাসিক কালে (আমার মতে!) এবং আমাদের দেশে এই প্রক্রিয়াটাকে ৩টা ফেজে দেখতে পাই। '৭০-এর ২য়ার্ধে সুপরিকল্পিতভাবে এই প্রক্রিয়ার বীজ বপন করা হয়েছিল - সুদুরপ্রসারী চিন্তা বা পরিকল্পনা মাথায় রেখে। এরপর নানাভাবে প্রকাশ্যে-নেপথ্যে পেলেপুষে বড় করে তোলা হয়েছে, ছড়ানো হয়েছে। "৯২-র স্বৈরাচার পতনের পর এটা একটা রাষ্ট্রীয় রেকগনিশন ও লেজিটিমেসি পেয়ে যায়। প্রচুর পরিমান ফ্রি অক্সিজেন পেয়ে ফুলে-ফেঁপে উঠে প্রকাশ্যেই এই ২য় ফেজে। বাংলাদেশে এই প্রক্রিয়ার স্থানীয় রূপের সাথে আন্তর্জাতিক রূপেরও ভাল যোগসাধন হয় মনে হয়। টুইন-টাওয়ার, আফঘানিস্তান ও ইরাক যুদ্ধের পর এটা আরেকটা ফেজে ঢুকে পড়ে। এই সময় থেকেই, এই ৩য় ফেজে এসে, আমাদের দৈনন্দিন চলাফেরা ও সংস্কৃতিতে এই প্রক্রিয়ার প্রভাবজনিত বাহ্যিক পরিবর্তনগুলি প্রকাশ্যে একদম খালি চোখেই ধরা পড়তে শুরু করে। এই মুহূর্তে আমরা মনে হয় এই ৩য় ফেজেরই একটা চোরা ক্রান্তিকালীণ সাবফেজে আছি!

ও হ্যাঁ, ডোটার্ড ট্রাম্পের প্রক্রিয়াটা বোধহয় আলাদা। ওটা আমার মতে আম্রিকার অভ্যন্তরীণ ট্রাইবাল ওয়ার আর ক্লাস ওয়ারের মাঝামাঝি বকচ্ছপ টাইপের একটা ইউনিক প্রক্রিয়া। হাসি

****************************************

ষষ্ঠ পাণ্ডব's picture

আগে বিভিন্ন মাজারের বার্ষিক ওরসে বয়াতীদের দিয়ে বৈঠকী গানের আসর আয়োজন করা হতো। গানের বিষয়বস্তু লৌকিক ইসলাম সংক্রান্ত। এখন আসর বসানোর জায়গায় টান পড়েছে, ওরসের আয় কমে না গেলেও গানের জন্য বরাদ্দ কমেছে, বয়াতীদের অনেকে পেটের দায়ে গান ছেড়েছেন, এসব গান-বাজনাকে বিদাহ্‌ বলে লাঠিপেটা করে তাড়ানোর মানুষ বেড়েছে। শেষোক্ত মানুষের দল আগেও ছিল - ব্রিটিশ-পাকি-হাঁটু-কালো চশমা/কোট সব আমলেই - কখনো রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায়, কখনো স্বউদ্যোগে। আগে তাদের বক্তব্য প্রকাশের ভাষা রাগে গজ গজ, গালাগালি, চড়থাপ্পড়ে সীমাবদ্ধ ছিল; এখন সেটা প্রাণঘাতী হামলাতে উন্নীত হয়েছে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

ষষ্ঠ পাণ্ডব's picture

বাউল, গল্প লিখে চুপচাপ বসে থাকলে চলবে? আমাদের সাথে একটু আলোচনাও তো করতে হবে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

মন মাঝি's picture

আলোচনা শুরু করতে পারেন, কিন্তু চালাতে পারবেন কি? আর চালিয়েই বা কি হবে! সবই তো সবার জানা কথা - অল রোড্‌স লিড টু রোম। সব রাস্তাই শেষ পর্যন্ত রোমে যায়। আপনি কি রোমে যেতে চান? হাসি

****************************************

ষষ্ঠ পাণ্ডব's picture

পাঠকের সাথে মিথষ্ক্রিয়াটা অনলাইন মিডিয়াতে একটা আবশ্যিক বিষয়। নজমুল আলবাব যে মিথষ্ক্রিয়াতে অংশ নেন সেটার প্রমাণ তাঁর আগের যে কোন পোস্টে আছে। এই দফা তিনি একেবারে চুপ কেন সেটা জানতে চাইছিলাম।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

নজমুল আলবাব's picture

গল্পটা সচলে আসলো রাতে। সকাল হতেই সামনে আসলো কক্সবাজারের সেই ভয়ঙ্কর ফোনালাপ। একেবারে কুকড়ে গেলান। আমার কি হলো সেটা বুঝাতে পারবোনা। লম্বা সময় ধরে একটা ট্রমার মাঝেই আছি। সেটা শুধু দীর্ঘ হচ্ছে।

ষষ্ঠ পাণ্ডব's picture

গত পাঁচ/ছয় বছরে এমন কতগুলো ঘটনা ঘটেছে যে সেগুলোর ধাক্কা থেকে আমৃত্যু বের হতে পারবো না। এর কয়েকটা প্রতিদিন কোন না কোন ভাবে একবার ধাক্কা দিয়ে যায়। আশঙ্কার ব্যাপার হচ্ছে এই ট্রমার তালিকা আগামী দিনে আরও দীর্ঘ হবে।

সুদিন আসবে অমন দুরাশা করি না। তাই বাউল আসুন আমরা বরং কথা বলি। এতে মন হালকা হবে কিনা নিশ্চিত না, তবে থম ধরে বসে থেকে ভেতরে ভেতরে মরে যাবার চেয়ে উত্তম।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

মন মাঝি's picture

অংশত হলেও ট্রমা এড়ানোর একটা প্রায়-অবাস্তব বুদ্ধি দিতে পারি। পত্রিকা পড়া আর টিভিতে দেশি চ্যানেল (অন্তত নিউজ আর টকশো) দেখা বন্ধ করে দিন! পারবেন? সম্ভব? এটা পারলে কিন্তু অনেকটাই আরাম পাবেন। হাসি

****************************************

ষষ্ঠ পাণ্ডব's picture

দেশী পত্রিকা পড়ি অনিয়মিতভাবে সেটা মোটামুটি না পড়ার শামিল, দেশী/বিদেশী টিভি চ্যানেল মাসে এক ঘন্টার জন্য দেখি কিনা সন্দেহ (টক শো কখনোই না), ফেসবুকে নাই, ফোনে-চায়ের দোকানে-সামাজিক অনুষ্ঠানে লোকজনের সাথে দেশ-দশ-পরিবেশ-পরিস্থিতি-রাজনীতি ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করি না। আর কী কী বন্ধ করতে বলবেন! তার পরেও কি চোখ-কান বন্ধ থাকে? যে বিষয়গুলো একেবারে গায়ে পড়ে আসে সেগুলো ঠেকাবেন কী করে!


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

নজমুল আলবাব's picture

সারা দুনিয়াকে চামড়ায় মোড়ে দেবো না শুধু নিজের পা টাকে চামড়ায় মুড়বো?
নিজেকে সবকিছু থেকে প্রত্যাহার করে নিতে নিতে আর কিইবা বাকি থাকলো!

কর্ণজয়'s picture

কিছু কিছু সুন্দর, অসুন্দর হয়
মনে হয় এই সুন্দরের জন্ম না হলেই বোধহয় ভাল হতো

নজমুল আলবাব's picture

আপনি যখন আপাদমস্তক অসুন্দরে মোড়া একটা সময়ে বাস করবেন, তখন আর সুন্দরের কথা ভাববেন কেমন করে?

কনফুসিয়াস's picture

এই সময়ের বড় বেশি সত্যি গল্প। তিনবার মন্তব্য লিখে মুছে ফেললাম বারবার। কিচ্ছু বলার নেই আসলে।
অনেকদিন পরে গল্প পড়লাম আপনার অপু ভাই।

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

নজমুল আলবাব's picture

এখনতো আর লেখতে পারিনা।

এটা যখন লেখা হচ্ছিলো, আমি আর হিমু কথা বলছিলাম। পুরনো সময় মনে পড়ছিলো। হিমু বলছিলো, আহা, কনফু আর শিমুল যদি কিছু একটা লিখে ফেলতো আজ... খুব করে চাইছিলাম তুমি আর শিমুলও কিছু লেখো।

কনফুসিয়াস's picture

...।

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

আহমদ সায়েম's picture

গল্পটা শেষ করে শ্বাস নিতে পারছিলাম না। ওয়াজমাহফিলে আমাদের চারপাশের দেয়াল গুলো পচন ধরেছে কিছু দিন থেকে, এর শেষ কোথায় মাবুদ’ই ভালো জানেন। গল্পের শেষের দিকে দীপালির জন্য ভয় হচ্ছিল, ভয়টাই গল্পের শক্তি করে দিলেন। গল্পের গল্পটা মানে বিষয়টা হাজার বছরেও ম্লান হবার নয়। ভালো লাগলো।

সুমন চৌধুরী's picture

কিছু বলার নাই। পড়লাম। পড়তে থাকবো। লাশ পড়তে থাকবে।
কোন ব্যাপান্না।

Post new comment

The content of this field is kept private and will not be shown publicly.