প্রাণ কী ৮: ত্বকের কোষ থেকে কিভাবে পূর্ণাঙ্গ মানুষ তৈরি করবেন

সজীব ওসমান's picture
Submitted by Shajib Osman on Tue, 17/04/2018 - 2:36am
Categories:

কৃত্রিম মানুষ কি তৈরি করা সম্ভব? ব্যাপারটা আমার-আপনার মতো অনেককে ভাবাতে বাধ্য। বিজ্ঞানীদেরও ভাবিয়েছে। সেই ভাবনা, প্রশ্ন, কৌতুহল থেকে বেশ কিছু গবেষণায় অগ্রগতি ঘটেছে। মানুষকে ক্লোন করা, বা নতুন করে শুধুমাত্র একটি কোষ থেকে তৈরি করার সম্ভাবনা জাগিয়েছে নিধিকোষ গবেষণা। সেসব নিয়েই আজকের আলোচনা।

নিধিকোষের অফুরান সরবরাহ

নিধিকোষ হলো দেহের সেসব কোষ যারা দেহের প্রয়োজনে বিভিন্ন ধরনের কোষ তৈরি করতে পারে। বলে রাখা ভালো, দেহের সব কোষ কিন্তু একইরকম নয়। হৃদকোষ এবং মস্তিষ্কের কোষের মধ্যে পার্থক্য আছে। নিধিকোষ এরকম বিশেষায়িত কোষ তৈরি করে দেয় আমাদের জন্য (প্রচ্ছদ এনিমেশান)। প্রথমেই যেহেতু ত্বকের কোষকে নিধিকোষে পরিণত করতে হবে সেহেতু এদেরকে নিয়ে আরেকটু বলে নেই। তিন ধরনের নিধিকোষ হয়।

ফেইসবুকের বাংলা শব্দ পেইজটা নিধিকোষ নিয়ে একটা চমৎকার জ্ঞাপচিত্র তৈরি করেছে। এখান থেকে দেখে নিতে পারেন। পেইজের লিংক পাবেন এখানে।

প্রথমে আমি কিছুটা আলোচনা করবো আমাদের হাতে কী কী ধরনের সুযোগ আছে সেটা নিয়ে। সেজন্য, কিছুটা জানা আবিষ্কারের কথা।

২০০৬ সালে এক জাপানি বিজ্ঞানী এবং তাঁর দল পূর্ণবয়স্ক মানুষের কোষকে ভ্রূণায়িত নিধিকোষে পরিণত করার উপায় বের করেছেন। পদ্ধতিটা জানতে নিচের ছবিটা অনুসরণ করুন।

ক. প্রথমে একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের কাছ থেকে কোন কোষ বা কলা সংগ্রহ করতে হবে। এখানে ত্বকের কোষ নেয়া হচ্ছে (১)।
খ. কোষগুলিকে লালন কোষের সারে রেখে বিভিন্ন পরিবর্তন (ট্রান্সক্রিপশান ফ্যাক্টর নামের কিছু প্রোটিন দিয়ে) এনে বা জিনগত পরিবর্তন করে (২), কয়েকদিন ধরে বাঁচিয়ে রেখে (৩), ভ্রূণায়িত নিধিকোষে পরিণত করা হয় (৪)।
গ. ভ্রুণায়িত নিধিকোষগুলিকে এবার লালনসারে রেখে বিভিন্ন উপদান দিয়ে বিভিন্ন বিশেষায়িত পূর্ণ নিধিকোষে পরিণত করা চলে (৫)। যেমন, রক্তকণিকা, পাকস্থলীর কোষ, হৃদকোষ ইত্যাদি।

পরবর্তীতে বহু গবেষণা হয়েছে এই পদ্ধতিটিকে ব্যবহার করে ভ্রণায়িত নিধিকোষ তৈরি করে তারপরে সেটাকে দেহের যেকোন কোষে পরিণত করতে।

এই আবিষ্কারের প্রচুর ব্যবহার রয়েছে চিকিৎসায়। কোন রোগীর দেহের কোন কোষে ঝামেলা হলে রোগ তৈরি হয়, সেটা প্রাণঘাতি তো হতেই পারে, আবার পঙ্গুত্ব বা অন্ধত্বও তৈরি করতে পারে। সেজন্য তাদের জন্য যদি নতুন কোষ তৈরি করে দেয়া যায় তবে রোগ সারানো যেতে পারে। চিন্তা করতে পারেন, তবে অন্য কারো, মানে সুস্থ কোন মানুষের কাছ থেকে কিছু কোষ নিয়ে রোগীকে দিয়ে দিলেই তো হয়। সেটায় একটা ঝামেলা আছে। আমাদের দেহের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থা এমনভাবে তৈরি যে তারা বিদেশী জিনিসপাতি চিনতে পারে। তেমনি, উপকারের জন্য কিছু দেয়া হলেও তারা সেটার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা তৈরি করতে পারে। সেজন্য, কোষ প্রতিস্থাপন যদি নিজের কোষ দিয়েই করা যায় তবে সবচেয়ে ভালো।

আর সেখানেই কাজে লাগে নিধিকোষ তৈরির কেরামতি। কোন রোগির ত্বকের কোষ নিয়ে যদি আমরা যেকোন ধরনের কোষ তৈরি করতে পারি তবে তো সেটা দিয়ে কোষে সমস্যাজনিত রোগ আরোগ্য সম্ভব। আসলেই সম্ভব, এবং এটা প্রমাণিত। এভাবে মানুষের অন্ধত্ব থেকে শুরু করে হাড়ের জোড়ায় আঘাত, হৃৎপিন্তে সমস্যা, মেরুরজ্জুতে আঘাত, কিডনিরোগ, মস্তিষ্কের সমস্যা এবং ক্যান্সার ইত্যাদি চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে উপশম করা হয়েছে।

ত্বকের কোষ থেকে ভ্রূণায়িত নিধিকোষ তৈরি

ত্বকের কোষ থেকে একজন পূর্ণাঙ্গ মানুষ তৈরি করা সফল করতে হলে ধাপগুলির সাথে আরেকটা প্রযুক্তি যোগ করার প্রয়োজন ছিলো। পদ্ধতিটার নাম সোমাটিক সেল নিউক্লিয়ার ট্রান্সফার (SCNT), যেটা বেশ আগে থেকেই আমাদের কাছে পরিচিত। প্রথম ক্লোন করা প্রাণী ডলী ভেড়াকে এভাবেই তৈরি করা হয়েছিল। মানুষের ত্বকের কোষকে শুধু পূর্ণ নিধিকোষ বানালেই হবেনা, একটি ভ্রূণ থেকে পূর্ণাঙ্গ মানুষ তৈরির জন্য চাই ভ্রূণ নিধিকোষ। উপরের ছবি থেকেই জানেন, কৃত্রিমভাবে ভ্রূণ নিধিকোষ বানালে সেটাকে বলা চলে ভ্রুণায়িত নিধিকোষ। যেই নিধিকোষ পরে অন্যান্য পূর্ণ নিধিকোষ তৈরি করতে পারবে।

২০১৩ সালে বিজ্ঞানীরা আরেকটি বাঁধা পেরোলেন। তারা ত্বকের কোষকে ভ্রূণায়িত নিধিকোষে পরিবর্তিত করতে সমর্থ হলেন। নিচের ছবিটা দেখুন -

প্রথমে কারো ত্বকের কোষ নিলাম (১), এবং একজন নারীর ডিম্বকোষ থেকে তার নিউক্লিয়াস (মানে যেখানে ডিএনএ থাকে) বের করে নিলাম (২)। তারপরে, প্রথমজনের ত্বকের কোষ থেক নিউক্লিয়াসটি বের করে নিয়ে ডিম্বকোষে স্থানান্তর করতে হবে (৩)। সেই ভ্রূণকোষকে তারপর কিছুটা হাওয়াবাতাস দিলে তারা ভ্রুণায়িত নিধিকোষ তৈরি করবে (ব্লাস্টোসিস্টে)। সেখান ভ্রূণায়িত নিধিকোষকে তারপরে কোষে লালন ব্যবস্থায় রেখে দেয়া যায়।

ত্বকের কোষকে ডিম্বকোষ এবং শুক্রকোষে পরিবর্তন

ত্বকের কোষকে কি ডিম্বাণু এবং শুক্রাণুতে রূপান্তরিত করা চলে? মান মনে করেন একজন মানুষের ত্বকের কোষ আপনি কোনভাবে পেলেন, তাকে কি এখন একটা মানুষে তৈরি করে ফেলতে পারবেন? ভবিষ্যতের পৃথিবীতে বা এখনকার সায়েন্স ফিকশানে অবশ্যই সম্ভব। কিন্তু আমাদের বর্তমান গবেষণাগুলি সেদিকে অগ্রসর হওয়ার সকল সরঞ্জাম নিয়ে তৈরিই আছে।

এবার আসি সবচেয়ে সাম্প্রতিক দুইটা গবেষণায়।

২০১৬ সালে ইঁদুরের ত্বকের কোষ কারিকুরি করে কিছু বিজ্ঞানী সম্প্রতি সম্পূর্ণ কর্মক্ষম, উর্বর এবং প্রাপ্তবয়স্ক ডিম্বাণুতে রূপান্তরিত করেছেন। প্রথমে তারা ত্বকের কোষকে ভ্রূণায়িত নিধিকোষে পরিণত করেছেন, তারপরে সেখান থেকে কারিকুরি করে ডিম্বাণুতে পরিণত করেছেন। এই ডিম্বাণুগুলি থেকে পরে বেশ কিছু ইঁদুরছানাও তৈরি করেছেন। ছবিতে দেখুন -

শুধু তাই নয়, একই বছর ইঁদুরের ত্বকের কোষ থেকে শুক্রাণুও সফলভাবে তৈরি করতে পেরেছেন কিছু গবেষক। এদের দিয়ে ডিম্বাণুকে নিষিক্ত করিয়ে সুন্দর ছোট ছোট ইঁদুরছানাও পেয়েছেন। তারা বড় হয়েছে (ডানের) এবং সেই ইঁদুরের আবার স্বাস্থ্যবান ছানাপোনাও হয়েছে। তার ছবি -

নিধিকোষ থেকে কৃত্রিম ভ্রূণ তৈরি

ভাবছেন, সবইতো হলো, আবার এসব কী? হুম, সবই হলো, কিন্তু পুরোপুরি কৃত্রিম মানুষ তৈরিতে আরও কিছু বাধা অতিক্রমের ব্যাপার আছে। যেমন, শুধু ভ্রুণ তৈরি করলেই চলছেনা, আমাদেরকে ভ্রুণ বেড়ে তোলার জন্য অমরাও তৈরি করতে হবে। আর সেটাও সম্ভব ভ্রুণায়িত নিধিকোষ থেকে।

বিজ্ঞানীরা গতবছরের শুরুর দিকে সফলও হয়েছেন। তারা দুইধরনের নিধিকোষ ব্যবহার করেছেন, ভ্রুণায়িত নিধিকোষ এবং বহিঃভ্রুণ ট্রফোব্লাস্ট নিধিকোষ (extra-embryonic trophoblast stem cells)। আমাদের ভ্রুণে এই দুইটি নিধিকোষ জন্মায় সর্বপরিণামা নিধিকোষ থেকে। পরের নিধিকোষটিকে অমরাতে পাওয়া যায় যা কার্যক্ষম অমরা তৈরি এবং রক্ষা করে। একধরনের গাঠনিক সাহায্য নিয়ে ত্রিমাত্রিক অমরা তৈরি সম্ভব হয়েছে যেখানে ভ্রুণ বেড়েও উঠেছে। এই কৃত্রিম ভ্রুণ প্রাকৃতিক ভ্রুণের মতোই কাজকারবার করতে পারে। ভ্রুণের ছবিতে নীল অংশটুকু তৈরি হয়েছে বহিঃভ্রুণ ট্রফোব্লাস্ট নিধিকোষ থেকে এবং লাল অংশটুকু ভ্রুণায়িত নিধিকোষ থেকে।

এই আবিষ্কার আমাদেরকে মানুষকে সম্পূর্ণ নতুন উপায়ে তৈরি করার সম্ভাবনা তৈরি করে দিয়েছে।

কৃত্রিম গর্ভ

একটা লাফ দেই এবার। সরাসরি চলে আসি জীবিত ভ্রুণকে কিভাবে মানব শরীরের বাইরেই গর্ভের মতো পরিবেশ দেয়া যায়, যার মাধ্যমে একটা জীবিত প্রাণী জন্ম নিতে পারে।

একটা প্রটোটাইপের নকশা করেছিলেন বিজ্ঞানী Emanuel M. Greenberg, ১৯৫৫ সালে যা পেটেন্ট করেন (ছবি দেখুন)। এই নকশায় মূলতঃ দুইটা প্রধান জিনিস - ক) পুষ্টিপ্রদান এবং পয়োঃনিশ্কাষণ। এই ব্যবস্থাটিতে সমসময়ের জন্য অক্সিজেনসহ রক্তপ্রবাহেরও ব্যবস্থা ছিলো। তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা হতো উষ্ঞ পানির প্রবাহের মাধ্যমে। সবই খুব উৎসাহপ্রদায়ক, কিন্তু এটা কি কাজ করবে সত্যি সত্যিই?

১৯৯০ সালে এই জিনিস পরীক্ষা করেছিলেন কিছু জাপানী বিজ্ঞানী। তারা ১২০ দিনের অন্তঃসত্তা একটি ছাগীর গর্ভ থেকে ফিটাস (বড় হওয়া ভ্রুণ) সিজারিয়ান প্রক্রিয়ায় বের করে নিয়ে সেটাকে একটি কৃত্রিম গর্ভে চালান করে দেন। যার ভেতরে ছিলো কৃত্রিম গর্ভরস। ১৭ দিন পরে একটি ছোট ছাগল জন্ম নিলো সেখান থেকে! নিচের ভিডিওটি থেকে দেখতে পারেন সে কৃত্রিম গর্ভটি -

এভাবে, ২০১৭ সালে ফিলাডেলফিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা কিছু ভেড়াকে নিয়ে একইরকম পরীক্ষা করেন। তুলতুলে লোম তৈরি করা ভেড়া জন্মাতে পেরেছেন তারা এভাবে কৃত্রিম গর্ভ তৈরি করে।

কৃত্রিম মানুষ তৈরি

যদিও অপ্রাপ্ত ফিটাসকে বৃদ্ধি করানো আর কৃত্রিম ভ্রুণকে বৃদ্ধি করানোর মধ্যে তফাৎ আছে, তবুও এই গবেষণা বেশ কৌতুহলকর এবং আশাবাদী। আবার ২০১৬ সালে কিছু গবেষক কৃত্রিম ভ্রুণকে নারীর গর্ভে বৃদ্ধি করাতেও সক্ষম হয়েছেন।

নৈতিক বিধিনিষেধের জাঁতাকলে এই গবেষণায় কতটুকু উন্নতি কতদ্রুত হবে সেটা বলাটা মুশকিল। নৈতিক বিধিনিষেধের ব্যাপারটা গভীর আলোচনার বিষয় এবং আমি সেটা এখানে তুলছিনা। কিন্তু আমরা ধারণা করতে পারি তাহলে ত্বকের কোষ থেকে কিভাবে পূর্ণাঙ্গ মানুষ তৈরি করা যায় তার একটি নীলনকশা আমরা তৈরি করতে পেরেছি। নিচের ছবিটি দেখুন -

আমিতো বেশ উত্তেজিত বিজ্ঞানের এই অগ্রযাত্রায়, আপনিও কি না?

সূত্র:
পুরো লেখাটি তৈরি করেছি হাশেম আল-ঘাইলির এই লেখা থেকে। রেফারেন্সগুলিও এখানেই পাবেন, আমি আলাদাভাবে দিচ্ছিনা।

http://dailyaccord.com/how-to-create-human-beings-from-skin-cells/


পরবর্তী পর্বগুলি -

১। জীবনের সংজ্ঞা
২। আত্মাহীন রসায়ন
৩। বিশ্বভরা প্রাণ!
৪। আরএনএ পৃথিবীর আড়ালে
৫। শ্রোডিঙ্গারের প্রাণ!
৬। প্রথম স্বানুলিপিকারকের খোঁজে
৭। প্রাণের আধ্যাত্মিক সংজ্ঞার পরিসর দিন দিন ছোট হয়ে আসছে
৮। ত্বকের কোষ থেকে কিভাবে পূর্ণাঙ্গ মানুষ তৈরি করবেন
৯। গবেষণাগারে কিভাবে প্রাণ তৈরি করছেন বিজ্ঞানীরা
১০। সম্পূর্ণ সংশ্লেষিত জেনোম দিয়ে প্রথমবারের মতো ব্যাকটেরিয়া সৃষ্টি: এ কি কৃত্রিম ব্যাকটেরিয়া তৈরি হলো?


নির্ঘন্ট
নিধিকোষ = stemcell
ভ্রুণ নিধিকোষ = pluripotent stem cell
ভ্রূণায়িত নিধিকোষ = induced pluripotent stem cell
কোষ লালন = cell culture
কোষ লালনসার = cell culture medium
জ্ঞাপচিত্র = infographic
সর্বপরিণামা নিধিকোষ = omnipotent stem cells (or totipotent)


Comments

এক লহমা's picture

পড়ে ফেললাম। চমৎকার লেখা হয়েছে। কয়েকদিন যাবত খুব ইচ্ছে হচ্ছিল এই নিয়ে একটু ওয়াকিবহাল হতে। আপনার কারণে সেই ইচ্ছেটা ভালভাবে পূর্ণ হল।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

সজীব ওসমান's picture

থ্যাংকু।

অনার্য সঙ্গীত's picture

শিনয়া ইয়ামানাকা (যৌথভাবে জন গর্ডনের সঙ্গে) নোবেল প্রাইজ পেয়েছিলেন তার উদ্ভাবণের মাত্র ৬ বছর পর!

নিধিকোষ ভালো শব্দ। কিন্তু প্লুরিপটেন্ট এর বাংলা ভ্রুণ হিসেবে মানতে পারছি না। তার বোধহয় এমব্রায়োনিক শব্দের বাংলা করেছে ভ্রুণ। এমব্রায়োনিক স্টেম সেল আসলে প্লুরিপটেন্ট। তারমানে আবার অন্য কোনো স্টেমসেল কখনো প্লুরিপটেন্ট হতে পারবেনা, তা নয়।

ভ্রুণায়িত শব্দটিও "induced" এর বাংলা হিসেবে ভালো লাগছে না!

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

ষষ্ঠ পাণ্ডব's picture

induced = প্রবৃত্ত, নিবেশিত


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সোহেল ইমাম's picture

Quote:
নৈতিক বিধিনিষেধের জাঁতাকলে এই গবেষণায় কতটুকু উন্নতি কতদ্রুত হবে সেটা বলাটা মুশকিল।

নিধিকোষ নিয়ে গবেষণায় অতিনৈতিকতার শুচিবায়ুগ্রস্ততা নিয়ে আগেও শুনেছি, কিন্তু বুঝতে পারিনা বিজ্ঞানের অনুসন্ধিৎসায় প্রাচীর তুলে দাঁড়ানোর মত যৌক্তিকতা কি আদৌ আছে।

---------------------------------------------------
মিথ্যা ধুয়ে যাক মুখে, গান হোক বৃষ্টি হোক খুব।

সজীব ওসমান's picture

কিছুটা বিধিনিষেধ থাকার দরকার আছে। লোকে যাচ্ছেতাইভাবে নাহলে ব্যবহার করবে যার ফল শুভ নাও হতে পারে। তবে নৈতিকতার বিষয়গুলা আসলে লোকজনের অহেতুক ভয় পাওয়ার ফসল বেশিরভাগ সময়।

আব্দুল্লাহ এ.এম.'s picture

সোহেল ভাই, বিধিনিষেধ অবশ্যই দরকার আছে। ধরেন আমি ক্যাটারিনার একটা ডুপ্লিকেট বানায়ে পকেটে নিয়া ঘুরি। সেই দেখাদেখি আপনেও যদি একটা বানাইতে চান সেইটা তো আটকানো দরকার তাই না?

সোহেল ইমাম's picture

ভাই ক্যাটারিনার ক্যাটারিঙে আমরা সবাই মিলেমিশে সম্মিলিত শ্লোগান দিলেতো কারো ক্ষতি নাই। আপনার আপত্তি থাকলে আমি অবশ্য অন্য কারো ডুপ্লিকেট বানিয়ে নিবো। আমাদের পরমতি সহিষ্ণু হতে হবে। চাল্লু

---------------------------------------------------
মিথ্যা ধুয়ে যাক মুখে, গান হোক বৃষ্টি হোক খুব।

ষষ্ঠ পাণ্ডব's picture

"আমাদের পরমতি সহিষ্ণু হতে হবে" - ভুল!
"আমাদের পররতি সহিষ্ণু হতে হবে" - সঠিক! শয়তানী হাসি


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সোহেল ইমাম's picture

চিন্তিত

---------------------------------------------------
মিথ্যা ধুয়ে যাক মুখে, গান হোক বৃষ্টি হোক খুব।

আব্দুল্লাহ এ.এম.'s picture

কী আশ্চর্য্য! বিশুদ্ধ সৌন্দর্যবোধ জনিত শিল্পানুরাগের মধ্যে আবার রতি ফতির অনুপ্রবেশ ঘটছে কী ভাবে! চিন্তিত

আব্দুল্লাহ এ.এম.'s picture

নাউজুবিল্লাহ! কী হচ্ছে এসব?

ইয়ে, মানে ক্যাটরিনা কাইফের ত্বকের খানিকটা কোষ কিভাবে যোগার করা যায় বলতে পারেন?

সজীব ওসমান's picture

তার গান কি শুনেন নাই? 'ইউ আর নট গনা গেট মাই বডি, মাই নেইম ইজ শিলা ..... '

হ্যান্ডশেকের সুযোগ পাইলে একটু খামচি দিয়ে দিয়েন, তাইলেই অল্পকিছু ত্বকের কোষ পাবেন।

হিমু's picture

সময়ের সাথে কি আমাদের ডিএনএ খানিকটা, মানে খুব সামান্য হলেও পাল্টায় না? সেক্ষেত্রে কারো ত্বক থেকে (বা অন্য কোনো কলা থেকে) কোষ নিয়ে সেটাকে ভ্রুণায়িত নিধিকোষে রূপান্তর করলে সেটা কি অবিকল তার ভ্রুণ নিধিকোষের মতো হবে, নাকি গোনায় ধরার মতো পার্থক্য রয়ে যাবে?

সজীব ওসমান's picture

হয়। সেইটা একটা সমস্যাও। সবচেয়ে ঝামেলা যেটা হয় সেটাই হলো ক্রোমোজমের টেলোমিয়ার দৈর্ঘ্য কমে যাওয়া। এই দৈর্ঘ্য কমাটা বয়স বাড়ার লক্ষণ। তৈরি হওয়া নিধিকোষে এই দৈর্ঘ্য স্বল্পতা যেতে পারে এবং সেখানে থেকে তৈরি হওয়া দেহকোষে সেই বৈশিষ্ট্য যেতে পারে। বিজ্ঞানীরা এটা নিয়ে কাজ করছেন।

অতিথি লেখক's picture

লেখা ভাল লাগলো ধন্যবাদ। তবে কিছু কিছু বৈজ্ঞানিক শব্দ গুলোর বঙ্গানুবাদ পড়তে বার বার নির্ঘন্টের সাহায্য নিতে হচ্ছিল।

একান্তই আমার ব্যাক্তিগত মতামত:
স্টেম সেল, ক্রোমোজম, সেল কালচার, সেল কালচার মিডিয়া/মিডিয়াম ইত্যাদি বহুল ব্যাবহৃত শব্দ গুলো বিশ্বব্যাপী এই নামেই পরিচিত/ডাকা হয় বলেই জানি (সাধারণ পাঠকদের জন্যও)। তাই এই শব্দগুলোকে আমার মনে হয় সেভাবেই পরিচিত করা যেতে পারে আমাদের জন্য (যদিও "নিধিকোষ" শব্দটা ভাল লেগেছে)।

ক্লোন৯৯

ক্লোন৯৮'s picture

স্টেম সেল, ক্রোমোজম, সেল কালচার, সেল কালচার মিডিয়া/মিডিয়াম ইত্যাদি বহুল ব্যাবহৃত শব্দ গুলো বিশ্বব্যাপী এই নামেই পরিচিত/ডাকা হয় বলেই জানি (সাধারণ পাঠকদের জন্যও)।

এই বিশ্বে কি রুশ-ফরাসি-জার্মান-স্প্যানিশ-জাপানি-চীনা-কোরীয় ভাষাগুলো আছে? নাকি এই বিশ্বে সবাই ইংলিশ ফুটিয়ে কাজ চালায়?

Post new comment

The content of this field is kept private and will not be shown publicly.