কিভাবে মোগল হবেনঃ একটি সহজ পপি গাইড

সত্যপীর's picture
Submitted by mir178 on Mon, 05/02/2018 - 2:24am
Categories:

মনসব ও বিবাহ পর্ব

কবি বলেছেন জন্ম হউক যথা, তথা কর্ম হউক ভালো।

আজাইরা বাকোয়াজ। জন্মই আসল কথা। কর্ম হইলে হইল না হইলে নাই। উঁচু বংশে জন্মাতে না পারার বেদনা থেকে কবি এই ছত্র লিখেছেন। মোগল বংশে আগের পর্বে জন্ম নিলেন স্মরণ আছে? এইসব ফাউ কবিতার ছত্র আপনার জন্য প্রযোজ্য নহে। মৌজে থাকেন। পান চিবান। শীষ দিয়ে গান ধরেন টিকাটুলির মোড়ে একটা হল রয়েছে। হলে নাকি ইয়ার কন্ডিশন রয়েছে।

তবে, মৌজে পান চিবানোর জন্য অর্থের জোগান প্রয়োজন। আইসেন পাঠক টিয়াপৈসা নিয়া কিঞ্চিৎ কথা কই। অর্থমনর্থম। মনে করেন ইচ্ছা হল কটকটি খাবেন। বা হুক্কায় টান দিবেন। বা আংটি কিনবেন। কিছু একটা। টাকার জোগাড় কিরূপ? টাকার জোগাড় সহজ। বালক মোগল রাজকুমার হিসাবে আপনার নামে হাতখর্চা বরাদ্দ হবে। সাধারনতঃ খৎনার পরে বা ইস্কুল শুরু হলে হাতখরচ বরাদ্দ হতে শুরু করে। তবে ব্যতিক্রম আছে, কেউ কেউ তার আগেও পায়। আওরঙ্গজেবের দুইটি নাতি ওয়ালা জাহ এবং মুহিউসসুন্নাত জন্মের সাথে সাথে হাতখরচ পেতে আরম্ভ করে। লিখিত আছে ওয়ালা জাহের দৈনিক ভাতা ছিল আশি রূপী। #রিচকিডসঅফআওরঙ্গাবাদ।

সকলেই জানেন শাজাহানের চার পুলা। দারা সুজা আওরঙ্গজেব আর মুরাদ। আপনার মত তারা যখন বালক ছিল তখন তারাও হাতখরচ পেত, সেই হাতখরচের গাণিতিক সূত্র ছিল “বড় ভাই বিয়োগ ২৫০”। খুলে বলি। দারা পেত দিনে হাজার রূপী। সুজা ৭৫০ রূপী। অর্থাৎ দারা বিয়োগ ২৫০। আওরঙ্গজেব ৫০০ রূপী। অর্থাৎ সুজা বিয়োগ ২৫০। মুরাদ পেত ২৫০ রূপী। অর্থাৎ আওরঙ্গজেব বিয়োগ...

এই হল সূত্র। বড় ভাই বিয়োগ ২৫০। হিসাবে শাজাহানের পাঁচ ছেলে থাকলে সে পেত শুন্য রূপী। ছয়টা ছেলে হইলে ষষ্ঠ ছেলেকে মনে হয় উল্টা ২৫০ রূপী পিতাকে গুণতে হত। গণিত ভয়ঙ্কর।

হাতখরচ ভালো জিনিস। কিন্তু দুইটা কথা। দো বাতে। মনে রাখা চাই হাতখরচ আসবে পরাক্রমশালী পিতার খাজাঞ্চী থেকে, সে আপনার আয় নয় ঠিক। পুলাপানের ভাতা। আরেকটু বড় হলে আপনাকে বাদশা মনসব দিবেন। তখন শুরু হবে আসল খেলা। কেননা মনসবের আয় আপনার নিজের আ্‌য়। ভাতার মধ্যে কেমন পরমুখাপেক্ষী গন্ধ।

এস্থলে মনসব জায়গির ফের ঝালাই করা যাক। সকালে উঠিয়া আমি মনে মনে বলি। মনসব মোগল সামরিক পদ। মনসব পাওয়া মানে আপনি সরকারি সামরিক বাহিনীর সদস্য। মনসবের সাথে আসবে দ্বৈতপদমর্যাদা, ডুয়াল র‍্যাঙ্ক। জাট ও সওয়ার। জাট দরবারে আপনার সম্মানসূচক। সওয়ার আপনার ঘোড়ার হেডকাউন্ট। জাট-সওয়ার অনুযায়ী আপনাকে জায়গির দেয়া হবে এবং সেই জায়গিরের আয় আপনার। জমি সরকারের।

মনে পড়েছে সব? বেশ। মনে না পড়লে আরেক ট্যাবে মনসবদার জায়গিরদার লেখাটা ফের পড়ে আসুন। সব মনে পড়ে যাবে কুলু কুলু পানির মত। আচ্ছা। অতএব আপনি বালক। ভাতা পান। মনসবের কতদূর?

মনসব সাধারনতঃ আপনি পাবেন কৈশোরে, বা যৌবনে। বাল্যকালে নয়। তবে ব্যতিক্রম আছে। এবং ব্যতিক্রমের একটা অর্থও আছে। মনসব পেয়ারার মত গাছে ঝুলেনা। মনসব জায়গির বরাদ্দ হয় নানান হিসেব কষে। মানুষের বুড়া বয়েসেই অনেক সময় মনসব পেতে জান বের হয়ে যায়, আর বালক বয়েসে তো দূরের কথা। আপনি ছুডোকালে মনসব পেলে অবশ্যই ধরে নিতে হবে ড্যাডি লাবস ইউ। বা ড্যাডিস ড্যাডি। বাদশা। বালক বয়েসে মনসব দেয়া বাদশার এক ধরনের মেসেজ। পরিবারে, দরবারে ও সমাজে। বালক মনসবদারি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

ধরেন সেলিম এর পুত্র খসরু সাত বছর বয়েসে ৫০০০ জাটের মনসবদার হয়ে বসে! গদিতে তখন বৃদ্ধ এবং পরাক্রমশালী বাদশা আকবর। জোয়ান পুত্র সেলিম থাকতে ৫০০০ জাটের মনসবদারি নাতিকে দিয়ে বাদশা আকবর কি বার্তাখান টেলিগ্রাম কচ্ছেন কন্দিকি? হাঁ। বার্তা পরিষ্কার। টরে টক্কা টরে টক্কা। ওরে পুত্র সেলিম। বিদ্রোহ করিস না রে টরে টক্কা। বেশি বেতাবি বেচেয়নি দেখলে তোর পুলা খসরুকে হিন্দুস্তান দিয়ে যাব মনে কর হুঁ হুঁ। টরে টক্কা। খুউপ সাবধান। টরে টক্কা টরে টরে।


ছবিঃ দাদু আকবর, মনসবধারী বালক খসরু এবং মনসববিহীন বালক খুররম। ছবিসূত্রঃ, পৃষ্ঠা ৭১।

তবু মনসবের গদির খেলা কঠিন। টরে টক্কা উল্টেও যাইতে পরে। নাইট ইজ ডার্ক অ্যান্ড ফুল অফ টেরর্স। আকবর পটল তুলার পরে পিতা সেলিম জাহাঙ্গীর বনে গিয়ে খসরুকে বন্দী করে অন্ধ করে রাখেন গোয়ালিয়র দূর্গে এবং বলেন তর মনসবের মায়েরে আন্টি। বন্দী খসরুর দায়িত্ব দেয়া হয় ইতিবার খাঁ খাজাসারা নামক জাহাঙ্গীরের এক খয়েরখাঁ কে। মনসব প্রডিজি খসরুকে শিকল পরিয়ে রাখা সেই ইতিবার খাঁর উপর খুশি হয়ে জাহাঙ্গীর তাকে চার হাজার জাটের মনসব ও গোয়ালিয়রের উপকণ্ঠে জায়গির প্রদান করেন। সুতরাং মনসব যায় মনসব আসে। মনসব থাকলেই আনন্দে পিশাব করে দেওয়ার কিছু নাই। টেক ইট ইজি। সত্যরে লও সহজে।

খুররম পনেরো বছর বয়েসে মনসব পান। ৮০০০ জাট ৫০০০ সওয়ার। তার পাঁচ বছর পর ১৬১২ সালে প্রমোশন পেয়ে হন ১২০০০ জাট ৫০০০ সওয়ার। তারও চার বছর পরে জন্মদিনের দিন জাট বেড়ে হয় কুড়ি হাজার আর সওয়ার লম্ফ মেরে হয় দশ হাজার। মাশাল্লা।

উনিশ বছর বয়েসে আওরঙ্গজেবের জাট ছিল বারো হাজার আর সওয়ার সাত হাজার। তার পিয়ারা ভাই দারা শুকোর আঠেরো বছর বয়েসে ছিল বারো হাজার জাট আর ছয় হাজার সওয়ার। সেইটা বেড়ে ১৬৪৮ সালে (দারার বয়েস তখন তেত্রিশ) দারার মনসবদারি গিয়ে ঠেকে তিরিশ হাজার জাট আর কুড়ি হাজার সওয়ার! তিনি তখন হিসাবে মাগুরগিয়ার থেকেও বড় জেনারেল। জাটে জাটে ধূল পরিমাণ।

সুতরাং আমরা বুঝলাম বাদশার প্রিয় পুত্র হিসাবে আপনি অতি উচ্চ লম্বুরি জাট পাবেন। পাঁচ হাজার তো বটেই, বা আরও বেশি। ধরেন পেলেন আট হাজার জাট। কইঞ্চাইন দেখি আট হাজার জাটের সাথে সওয়ার ছয় হাজার পাবেন না নয় হাজার পাবেন? এবং কেন? কুটিল পাঠক আপনার জন্য ধাঁধা রইল। সঠিক উত্তরদাতা পাবেন “মনসবজান্তা” উপাধি। আর না পারলে চক্ষের জলে হবেন মনsobদার।

মনসব যখন হাতের মুঠোয়,এবার চাই টুকটুকে বউ কি বলেন। বিবাহ টাইম। সাধারণতঃ মোগল রাজকুমার মনসব পেয়ে যেত পয়লা বিয়ের আগে, (যদিও দারা ও সুজা ব্যতিক্রম)। ধরেন আপনার পিতা মহান বাদশা রাজি তার ভাইঝি নার্গিস বেগমের সাথে আপনার বিবাহের আঞ্জামে। রূপের রাণী নার্গিসের স্বপ্নে আপনার মনে আনন্দের ঝিলিক। চাঁদনী রাত। তারো কি বারাত। ছম ছমা ছম ছম।

হাঁ। আপনার মতই এক বুক আনন্দ নিয়ে বিয়ে বসেছিলেন শাজাহানের ফেভারিট পুলা দারা শুকো, চাচাতো বোন নাদিরা বেগমের সাথে। সেই বিবাহের বিরিয়ানি খেয়ে ঢেকুর তুলতে তুলতে নানাবিধ হিসাব লিখে গেছেন দরবারের লেখকবৃন্দ। বর্ণনায় কিঞ্চিৎ চাপাবাজি ও বাড়িয়ে বাড়য়ে বলা যে হয়নি তা নয়, তবু তা কমিয়ে সমিয়ে ধরলেও খরচের অঙ্ক প্রকৃতই ধুন্ধুমার।

দারার বিবাহের বিরিয়ানির পূর্বে কিঞ্চিৎ পারিবারিক ইতিহাস। সকলেই জানেন শাজাহানের চার পুলা। দারা সুজা আওরঙ্গজেব মুরাদ। তাদের বোন জাহানারা রওশনআরা গওহরআরা। দারা জাহানারা এক পার্টি। আওরঙ্গজেবের সাপুটার রওশনআরা। গওহরআরা একটি বয়তল। ভাইবোনঘটিত গিয়াঞ্জাম থাকলেও কথা এই যে, সকল ভাইবোনই মুমতাজ মহল প্রোডাকশন। একই মাতা। মোগল রাজপরিবারের জন্য এইটা কিঞ্চিৎ বিরল। তা ১৬৩১ সালে জাতীয় মাতা মুমতাজ মহল শাজাহানের চৌদ্দতম বাচ্চা গওহরআরাকে জন্ম দিতে গিয়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মারা গেলেন।

এরপর হেরেমে সঙ্গিনীর কোলে শুয়ে শোকে কাতর শাজাহান ভাবলেন চলে যদি যাবি দূরে স্বার্থপর। পাথর এ বুকে ফুল কেন ফোটালি। চোখের পানি মুছে তিনি ঠিক করলেন কোটি টাকার সফেদ মর্মর দিয়ে আজাইরা একটা ইমারত খাড়া করানো যাক মুমতাজের স্মৃতির উদ্দেশ্যে। যে ভাবা সেই কাজ। দরবারে ব্যাপক স্থপতি টীম খাড়া করিয়ে তিনি কইলেন হে স্থপতিগণ। মহা-চ্যালেঞ্জ! স্থাপত্যের মায়েরে বাপ করে দেও দিকি বাছারা। মেরা বিবি মর গিয়া। সাদা ইম্পোর্টেড মর্মর দিয়ে এমন বস্তু বিবিকা উপর খাড়া করাও যেন দূর ভবিষ্যতে তাবৎ ভারতের লোক বিদেশে গিয়ে এই কবরের নামে খাবারের দোকান খুলতে পারে। যমুনার তীরে উত্তম জমিতে এমন পাঙ্খা কব্বর সাজাও যেন একদিন এই ইমারত দেখে বিটিশ আশ্চর্য হয়ে অবিশ্বাসের কণ্ঠে বলে নো গডড্যাম ইন্ডিয়ান ক্যান মেইক দিস। প্রোপস্ট্রাস! ইট ওয়াজ মেইড বাই অস্টিন অফ বোর্ডো, দ্য ফ্রেঞ্চম্যান। হাঁ!। শুরু কর হে মহাস্থপতীগণ এই অবিশ্বাস্য শিল্পকর্ম। টাকা লাগে কুনো সমস্যা না, চাষাভুষার কর বাড়িয়ে তিন ডবল করে দিচ্ছি। তারা দাক্ষিণাত্য গুজরাত কি খান্দেশে দুর্ভিক্ষে মরছে সমস্যা নাই, আমারো মনে লেগেছে মড়ক হায়। বিবি কিঁউ মর গিয়া। হাঁ, মহা-চ্যালেঞ্জ!

স্থপতীগণ মাথা ঝুঁকিয়ে বার্নি স্টিন্সনের মত কইলেন চ্যালেঞ্জ এক্সেপ্টেড। ইট উইল বি লেজেন-ওয়েইট ফর ইট-...

হেরেমের জানালার ফুটা দিয়ে পিতার লেজেন্ডারি তাজ মহল নির্মাণকর্ম দেখতে দেখতে বড় কন্যা জাহানারা ভাবলেন আমিও একটা কিছু করে দেখাইনা কেন। খাড়াও। ভবিষ্যতের বাদশা দারা শুকোর বিবাহের বয়েস হইল, তাকে শান শওকত জাঁক জমক ধুম ধাড়াক্কা সহকারে এমন বিবাহ দিব যে এই বিবাহের কথা ভবিষ্যতে পপি গাইডে একদিন লিপিবদ্ধ হবে উদাহরণ হিসাবে।

জাহানারা ছিলেন ব্যাপক ধনবতী, তার প্রচুর জায়গির ছিল। শোনা যায় কেবল তার পানের খরচ আসত সুরাটের বন্দর জায়গির হতে। আমি মাঝে মাঝে কল্পনা করি মন্দা ব্যবসার সময়ে ভারতীয় ইয়োরোপীয় ব্যবসাদার শুল্ক দিতে ব্যর্থ হলে তাদের জাহাজ বা মালসামান আটকে নিলামে উঠিয়ে বেচে দেয়া হত জাহানারার পানের ডিব্বা ঠিকঠাক ভরে রাখার জন্য। বেশ। মন্দ নয়। তা সে যাক, জাহানারার হাতখরচ ছিল বছরে ছয় লক্ষ রূপী। তার মাতা মুমতাজ মহল শাজাহান গদিতে উঠার পরে হাত খরচ পেতেন বচ্ছরে দশ লাখ রূপী। জামাজুতাপ্যান্টিপাইজামাআংটিগয়নাপানসুপারি ইত্যাদি বাবদ খরচের পরে মুমতাজ ঐ সামান্য মাসোহারা থেকে টাকা বাঁচিয়ে রেখেছিলেন দারার বিবাহের জন্য। সেই টাকার সাথে জাহানারা যোগ করলেন তার নিজের টাকা। সেই জড়ো করা টাকায় দারার শাদীর নৌবত প্যাঁ প্যাঁ করে বেজে উঠল।

মোটমাট খরচ নাকি হয়েছিল ষোল লক্ষ রূপী। সেইটাকা দিয়ে একশত মনসবদারদের জন্য খিলাত (সম্মানসূচক জামা), তাদের বৌঝিদের জন্য অত্যুৎকৃষ্ট কাপড় ও আংটিগয়না খরিদ করা হয়। আংটিগয়নার একেকটি ডালিতে সাত থেকে নয়টি করে জিনিস ছিল। দরবারের সর্বোচ্চ আপিসার আমিনুদ্দৌলার জন্য বরাদ্দ হয় নয়টি সোনার কাজ করা জামা, মণিমুক্তাখচিত ছোরা আর ব্যাপক একখানি তরবারি।


ছবিঃ দারা শুকোর বিবাহের রাত্রি।

অতএব আপনি বিবাহ করুন দারা শুকো স্টাইলে। রাত্তির বেলা হাতির পিঠে চড়ে কনে পক্ষ বর পক্ষের লোক আসুক প্রাসাদ চত্বরে। গানের তালে তালে নাচুক বালকবালিকা। দ্রুম দ্রুম দ্রুম বেজে চলুক তিরিশ ঢাক। মোম হাতে হাজার পেয়াদা আপনার ঘোড়ার সামনে তুলে ধরুক আলো। চাকরের পর চাকর উপহারের ডালি মাথায় তাল ধরুক গানে। তুমুল আতশবাজিতে অন্ধকার আকাশ দিনের আলোর চাইতেও উজ্জ্বল হয়ে উঠলে পরে দূর অন্ধকার গ্রামের মানুষ ক্ষুধা পেটে ময়লা দাঁত বের করে আনন্দে হেসে দিয়ে বলুক, মারহাবা। বাদশাজাদা কি জয়! মুবারক হো।

আমিন।

তা বেশ। মনসবদারি বিবাহ দুইই হল তবে। এইবার পিতার একটা প্রদেশের সুবাদারি পেয়ে যেতে পারেন। রাজধানীতে পিতার প্রাসাদের কাছে আপন প্রাসাদের আঞ্জাম হবে। আজ আপনি আর নন গো বালক, আজ আপনি গদির পথে এক পাও বাড়িয়ে ধরা তরুণ। সামনে আছে শুভদিন। শের খুরশিদে ভোট দিন। ঝাক্কাস।

কিন্তু খাড়ান পাঠক। তিষ্ঠান ক্ষণকাল। গদির লাইনে আপনি তো আর একলা না। আপনার ভাইটি কি আর বসে বসে ডুডু খাচ্ছে? সেই ভাইয়ের সাথে গাঁটছড়া বেঁধে আপনার বোন আর সৎ তথাপি অসৎ মাতা কী পরিকল্পনায় মত্ত? আপনার বৃদ্ধ পিতা মোদো মাতাল হয়ে কি সেই ভাইকে আস্কারা দিচ্ছে? প্রধানমন্ত্রী জাফর খাঁ সায়েব, যার মেয়ে আপনার ভাবী, সেই জাফর কুকুর নাকি চায় তার দামাদকে গদিতে বসাতে? হোয়াআআআট?!

হাঁ ভাই। আজকের পর্ব এখানেই খতম। আসছে পর্বে আপনি লাবু রহমানের সুরে সুর মিলিয়ে গাইবেন এখন আমি বিদ্রোহী। আর নহি অভিমানী। একা একা চলেছি এ পথ।

বুম বুম বুম। বাতাসে লাশের ঘ্রাণ। খুউপ সাবধান।


(পরের পর্বে সমাপ্য)


সূত্রঃ
মুনিস ডি ফারুকি, দ্য প্রিন্সেস অফ দ্য মুঘল এম্পায়ার
সতীশ চন্দ্র, মেডীভাল ইন্ডিয়াঃ ফ্রম সুলতানাত টু মুঘলস পার্ট টু
আর নাথ, প্রাইভেট লাইফ অফ দ্য মুঘলস ইন ইন্ডিয়া
স্টুয়ার্ট ক্যারি ওয়েলচ, দ্য এম্পেরর্স অ্যালবামঃ ইমেজেস অফ মুঘল ইন্ডিয়া
লেসলি ডুটেম্পল, দ্য তাজ মহল
বনি সি ওয়েড, ইমেজিং সাউন্ডঃ অ্যান এথনোমিউজিকোলজিকাল স্টাডি অফ মিউজিক, আর্ট অ্যান্ড কালচার ইন মুঘল ইন্ডিয়া
মাইকেল ফিশার, অ্যা শর্ট হিস্ট্রি অফ মুঘল এম্পায়ার
https://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/4/4d/The_marriage_procession_of_Dara_Shikoh_-_Google_Art_Project.jpg


Comments

অতিথি লেখক's picture

"মাগুরগিয়ার" কে?

জাট তো ছিল মূলতঃ পদাতিক সৈন্য। জাট আর সওয়ারের মধ্যে কি কোন ফর্মুলা ছিল? "মনসবদার জায়গিরদার"-এ তো দেখলাম প্রতি সওয়ারের জন্য মন্সব্দারকে দুইটা ঘোড়া পালতে হত।

তাজমহলরে একদম "আজাইরা" ইমারত বানায়া দিলেন?!

Emran

সত্যপীর's picture

লাখো মানুস আর নাতা, সকাল বেলার পাকি। মাগুর গিয়া।

আওরঙ্গজেবের আগে সওয়ার নম্বর হত জাটের সমান বা তার থেকে কম। আওরঙ্গজেব জাট হতে সওয়ার বাড়ানোর অনুমতি দেন। ঠিক কি ক্রাইটেরিয়ায় জাট সওয়ার ঠিক হত তার ফর্মুলা পাইনাই, তবে পাঁচ হাজারের উপরের জাট ছিল বাদশাজাদা বা শক্তিশালী রাজাদের জন্য বরাদ্দ ছিল।

তাজ মহল ভারত সরকারের উচ্চ আয়ের উৎস, সেই হিসাবে আজাইরা না অবশ্য। ঠিকই বলছেন...

..................................................................
#Banshibir.

অনার্য সঙ্গীত's picture

মহাকবি আব্দুল বাসেতের নামোল্লেখ করলেন না যে?!

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

অনার্য সঙ্গীত's picture

ধুর্মিয়া, আপ্নের খালি ধান্দাবাজি! পড়তে পড়তে হুট কইরা কন পরের পর্বে সমাপ্য! অদ্দিন না বাঁচলে?!

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

সত্যপীর's picture

ছবি দিয়া লেখা টাইনা বড় করলাম তো!

পরের পর্ব পজ্জন্ত বাঁচা উচিৎ। পচুর ফাইটিং, বেঈমানি, ছলাকলাচাতুরি, চক্ষু উৎপাটন, কল্লা কর্তন, ভুঁড়ি ফাঁসানি, কারাগারে ইন্দুরের সাথে বসবাস ইত্যাদি সীমাহীন নাটক দেখা যাইবে বিদ্রোহ পর্বে। পাঁচ টাকার বুটবাদাম কিনা বসেন। সামাজিক অ্যাকশনধর্মী শেষ পর্ব অচিরে শুভমুক্তি।

..................................................................
#Banshibir.

ষষ্ঠ পাণ্ডব's picture

দেকামেরনের প্রথম দিনের প্রথম গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র সের চেপ্পারেল্লি সারা জীবন ইতরামী-বদমায়েশী করার পর ভীনদেশে যখন মরতে বসে তখন পুরুতের কাছে পাপ স্বীকার করার সময় নিজেকে নিষ্পাপ হিসেবে বর্ণনা করে। ফলে মরার পর 'বদমাশ চেপ্পারেল্লি' রাতারাতি 'সাধু চেপ্পারেল্লি' হিসেবে পরিচিত হয়ে যায়।

'পাদশাহ্‌ বেগম' জাহান আরা বেগম সাহিবা'র সমাধিফলকে তার লেখা কবিতার একটা লাইন উৎকীর্ণ আছেঃ

بغیر سبزہ نہ پو شد کسے مزار مرا کہ قبر پوش غریباں ہمیں گیاہ و بس است‬

সমাধিতে মোর চিরকাল রোক তৃণের আস্তরণ
দীনার কবরে হেন তৃণই সুযোগ্য আভরণ


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সত্যপীর's picture

হায় দীনা বইনটির দুঃখে চক্ষে জল চলে আসল। ভুল ঘোড়া ব্যাক করার ফলাফল এরমই হয়। পিতার পরিকল্পনামত দারা গদিতে বসলে সারাটি জীবন আরামায়েসে সুরাট বন্দরের পয়সা দিয়ে খরিদ করা পান খাইয়া ঠোঁট লাল করিতে পারিতেন বেগম সাহিব। কবিতা, গানা ও বাগবাগিচার কলকাকলীতে কেটে যেত দিন।

..................................................................
#Banshibir.

তুলিরেখা's picture

দাদীজান(অথবা নানীজান) ও গরীবিয়ানায় কম না, নূরজাহানের কবরেও তো শুনি এরকম কিছু আছে,
"গরীব গোরে দীপ জ্বেল না ফুল দিও না কেউ ভুলে/ শামাপোকার না পোড়ে পাখ দাগা না পায় বুলবুলে ।"

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

সত্যপীর's picture

নানাজানের বইন কি দাদিজান না নানিজান? ভালো কুশ্চেন। সে যাক, কব্বরে ঢঙ্গের কবিতা লেখা ছাড়াও এই দুই ধনবতী নারীর আরও মিল আছে। ইনিও জাহানারার মত ভুল ঘোড়া ব্যাক করছিলেন জাহাঙ্গীর মরার পরে। জীবন কঠিন।

..................................................................
#Banshibir.

তুলিরেখা's picture

দাদিজান আব্বার দিক দিয়াও বলা যায় না? আব্বারও সৎ মা তো! হাসি

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

সত্যপীর's picture

..................................................................
#Banshibir.

তুলিরেখা's picture

হাসি এইটা নূরজাহান (আজকের দিনে)। লেসদেওয়া কলার যখন । হাসি
শোনা যায় লেস জরি (বাদলকিনারি )এইসবের প্রচলন নাকি নূরজাহানই করেন?
আরে আমি তো ভেবেছিলাম ঐভাবে সদ্যোজাতা মেহেরুন্নিসাকেই যখন রাস্তায় ফেলে চলে আসছিল, তখন মা মহিলাটির কী অবস্থা? হয়তো সদ্যপ্রসূতি অবস্থায় পথেই মারা যান তিনি । তারপরে দেখি তা তো না! তিনি বহাল তবিয়তে বেঁচে ছিলেন । পরবর্তীকালে গোলাপের আতর আবিষ্কার করেন!!!!

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

সত্যপীর's picture

আসমাত বেগম বহাল তবিয়তেই ছিলেন। তার গোলাপের আতর "আতর এ জাহাঙ্গিরি"র (অত্যন্ত অর্জিনাল নাম কিন্তু) খুব পশংসা করে গেছেন দামাদ জাহাঙ্গীর। তবে মাতাল ও আফিংখোরের কথা ধরতে নাই। সত্যই সেই আতর পাইলে হয়ত দেখা যাইত রুহ আফজার গন্ধ ইয়ে, মানে...

..................................................................
#Banshibir.

তুলিরেখা's picture

শাশুড়ীর প্রশংসা করবেন না? বাদশা বলে কি তাঁর জানের ডর নাই? নিন্দা করলে শাশুড়ীর মেয়ে তো --- আর বললাম না হাসি

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

সত্যপীর's picture

শাশুড়ির মেয়েটি নিজ নামে সোনার মুদ্রা ছাড়ার ব্যবস্থা করছিলেন। মুদ্রার গায়ে খোদাই ছিল "এই সোনা শতগুণ হইল সুন্দর, যখন তাতে ফুটিল নূর জাহান বাদশা বেগমের নাম।" কয়েনে লিখো নাম, সে নাম রয়ে যাবে। হুঁউউ যদি...

নিজ নামে কয়েন ছাড়ার সাহস মোগল আমলে আর কোন নারী দেখাইতে পারেন নাই। জাহাঙ্গির ডরাইবেন তো বটেই।

..................................................................
#Banshibir.

তুলিরেখা's picture

নুরজাহাঁ বেগম একাই দুই তিনটা বাদশাহের সমান । চেহারা বুদ্ধি সাহস ---কোনোটার কমতি ছিল না । এইরকম এক মেয়েকে সাত তাড়াতাড়ি শের আফগানের সঙ্গে বিবাহ দিয়ে বর্ধমানে পাঠানোর ব্যাপারটার পেছনে কোনো রহস্য ছিল । মনে হয় আকবর শাহের কারুকুরি এইসব হাসি

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

সত্যপীর's picture

কারিকুরি কইরা লাভ হইল কোন? সেইতো রূপের রাণী নূর জাহান ঠিকই সেলিমরে পেটিকোটে গুঁজল। মুদ্রাও বাইর করল। মুদ্রাকপালী একটা।

..................................................................
#Banshibir.

ষষ্ঠ পাণ্ডব's picture

নূরজাহানকে নিয়ে আমার কয়েকটা সম্ভাবনার কথা মনে হয়।
এক, শের আফগানকে হত্যা করার পর থেকে তিনি বাকী জীবন মুঘলদের ওপর এই হত্যাকাণ্ডের নানা প্রকার শোধ তুলে গেছেন।
দুই, তিনি সেলিমকে আগে থেকেই ভালোবাসতেন। মাঝখানে শের আফগান পর্বের জন্য তার যা কিছু ক্ষতি হয়েছে আজীবন সেটার শোধ জাহাঙ্গীর ও মুঘলদের কাছ থেকে আদায়ের চেষ্টা করে গেছেন।
তিন, বাপ-ভাই-আত্মীয়দের সহযোগিতায় ভারতের ক্ষমতা থেকে পন্টিক-কাস্পিয়ান/ইউচী/কুশান-স্কিথিয়ান/সাদা হান/মোঙ্গল-চাঘতাই/তুর্কীস্তানী/সুন্নীদের ক্রমে ক্রমে উৎখাত করে বিশুদ্ধ পারসী/শিয়াদের শাসন প্রতিষ্ঠিত করা।
চার, পিতা ও পরিবারের এক কালের দুর্দশার জন্য তাবৎ দুনিয়াকে দোষী সাব্যস্ত করে বাকী জীবনভর সেটার ক্ষতিপূরণের চেষ্টা করে যাওয়া, প্রতিশোধ নেয়া।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সত্যপীর's picture

সম্ভাবনাগুলা কি অর্ডারে দিলেন, গুরুত্ব অনুসারে? দুই তিনবার পড়লাম আপনার পয়েন্টগুলা। আমার মনে হয় অর্ডার ২-১-৩-৪।

পাশনোটঃ বাদাউনি কবে মরছিলেন? ১৬০৫ না ১৬১৫? নূর জাহানের অনৈছলামিক কারবার বাদাউনিকে মরার আগে দেখতে হইছিল কিনা জানতে মঞ্চায়। দুই জায়গায় দুই মরার তারিখ পাইতেছি।

..................................................................
#Banshibir.

তুলিরেখা's picture

তিন নম্বর সম্ভাবনাটাই জোরালো লাগছে। নূরজাহানের মতন নারীর কাছে জাহাঙ্গীর বা শের আফগান সবই বাহন মাত্র। ক্ষমতা নামধারী প্রেমিকে যে মজেছে, তার কাছে মানুষ প্রেমিকরা নেসেসারি ইভিল মাত্র। আর ওদের পরিবার প্রচন্ড উচ্চাকাঙ্ক্ষী, পরবর্তীকালে বাপ ভাই ইত্যাদিরা অনেকেই বড় বড় উচ্চপদ দখল করে। মেহেরকে শের আফগানের সঙ্গে বিয়ে দিয়ে সরিয়ে দেওয়ার পেছনে নির্ঘাৎ আকবর ও তাঁর রাজপুত লবি সক্রিয় ছিল। কারণ মেহেরের সঙ্গে সেলিমের বিয়ে অল্পবয়সেই হয়ে গেলে ওদের সন্তানই সিংহাসনের খুব জোরালো দাবীদার হত। আকবর তো শুরু থেকেই সেলিমকে বাইপাস করার চেষ্টায় ছিলেন। নাতি খসরু কে সম্ভবতঃ দিয়ে যেতেন মসনদ। সেক্ষেত্রে খসরুর রাজপুত মামারাই ওই উঁচু উঁচু পোস্টগুলো নিত।
মোগলদের এ জিনিস গেম অব থ্রোনের চেয়ে অনেক বেশি ইন্টারেস্টিং। চমৎকার চমৎকার টুইস্ট অ্যান্ড টার্ণ দেখা যায়।

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

সত্যপীর's picture

তিমুরিদ-পারসিক-রাজপুত (পরবর্তীকালে মারাঠা শিখ ইত্যাদি) দলাদলি রেষারেষি মারামারি চুলাচুলি ও পরিবারতন্ত্র পুনরায় তুলে ধরায় আপনাকে ও পাণ্ডবদাকে ফুলেল শুভেচ্ছা। বেশ কয়দিন আগে মোগল ভারতের এই বংশের ও রক্তের খেলা, গেম অফ হাউজেস অ্যান্ড ব্লাড, নিয়া একটা ভিড্যুব্লগের খসড়া নামাইছিলাম। কিন্তু নিঠুর পৃথিবী মোরে দিলনা সুমায়।

আকবরের রাজপুত প্রেম ও আওরঙ্গজেবের রাজপুত বিদ্বেষ নিয়াও এক তাড়া লেখা নামানো যায়। খসড়াগুলা আরেকটু সাফা কইরা মাসখানেক কিম্বা বছরখানেক পরে নামাই দিবনি। গেম অফ থ্রোনস - লিমিটেড মোগল এডিশন। একটি পপি লাইব্রেরি প্রকাশনা।

..................................................................
#Banshibir.

মন মাঝি's picture

Quote:
খসড়াগুলা আরেকটু সাফা কইরা মাসখানেক কিম্বা বছরখানেক পরে নামাই দিবনি। গেম অফ থ্রোনস - লিমিটেড মোগল এডিশন। একটি পপি লাইব্রেরি প্রকাশনা।

চলুক

****************************************

সত্যপীর's picture

বছরখানেকের পেট কেটে দিলে চলবে? চা পান খাইতেছি, মাস গড়ায় বছর হইতে পারে পরিবারতন্ত্র খাউজাখাউজি নিয়া লিখতে। ধৈজ্জ ধরেন। পপি গাইড শেষ করি আগে। শিখ রাজপুত নিয়া আলাদা লেখা দেই। তারপর কম্পেরেটিভ আলুচনায় যাবনি। এই লেখা দেওয়ার আগে যেমন মনসবদারি খোলাসা করছি, কম্পেরেটিভ লেখার আগে মোগল সমসাময়িক নন-তিমুরিদ খেলোয়াড় নিয়ে আলাদা করে আলোকপাত প্রয়োজন বোধ করি। বুঝেনই তো।

..................................................................
#Banshibir.

ষষ্ঠ পাণ্ডব's picture

সম্ভাবনাগুলো আসলে যেভাবে মনে এসেছে সেভাবে লিখেছিলাম। অনিচ্ছাকৃত বিভ্রান্তি সৃষ্টির জন্য দুঃখিত। আমার মনে হয় ৪>২>৩>১।

পাশনোটঃ
আবদ্‌ আল ক্বাদীর বাদা'উনী'র মৃত্যুকাল নিয়ে আমার নিজস্ব মত -
মুনতাখাব উত্‌ তাওয়ারিখ লেখা শেষ হয় ১৫৯৫-এ। তার দশ বছর পরে আকবর মারা যান। তার মানে মুনতাখাবে আকবরের শেষের দশ বছর নাই। এর একটা কারণ হচ্ছে, তিনি মনে করেছিলেন যা কিছু লেখা হয়েছে তাতে জালাল উদ্‌ দীন না হোক মুবারাকের ছেলে তার কল্লা নামিয়ে দিতে পারে। তিনি কিন্তু আকবর পিরিয়ড যে খণ্ডে ছিল (দ্বিতীয় খণ্ড) সেটা আকবরের জীবদ্দশায় পাবলিশ করতে দেননি, তার আগেই তৃতীয় খণ্ড প্রকাশ করেছেন। দ্বিতীয় খণ্ড বের হয়েছে জাহাঙ্গীরের করোনেশনের কমপক্ষে দশ বছর পরে, যখন আকবর আর আবুল ফযল কেউই তার ক্ষতি করতে পারবে না। অর্থাৎ, দ্বিতীয় খণ্ড আসলে বের হয়েছে বাদা'উনী মারা যাবার পর। তার মানে বাদা'উনী মারা গেছেন ১৫৯৫ + ১০ + ১০ = ১৬১৫ সালে। হার্ডি সায়েবের লেখা 'এনসাইক্লোপিডিয়া অভ ইসলাম'-এর কপি পেলে জাহাঙ্গীরের আমলের ভাষ্যকারদের মতটা যাচাই করা যেতো।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সত্যপীর's picture

১৬১৫ সালে গত হইলে তো তিনি নূর জাহানের উত্থান দেইখা দাঁত কিড়মিড় করতে করতে গত হইছেন। বুড়া বয়েসে দরবারের শান শৌকত বাদ দিয়া মরার খাটে শুইয়া এইসব দেখতে হইল হায়। আওরঙ্গজেব তার আত্মাকে শান্তি দিছিলেন আশা করি।

..................................................................
#Banshibir.

ষষ্ঠ পাণ্ডব's picture

গোটা মুনতাখাব যে পড়তে পাইনি এটা নিয়ে আফসোস আছে। বাদাউ'নী বিশুদ্ধ ভারতীয় মানুষ প্লাস কট্টর সুন্নী। জালাল উদ্‌ দীন আর মুবারারাকের পোলার সাথে তার খাপলাটা তাদের অনৈসলামী কাজকারবার আর দরবারে সূর্য উপাসক রাজপুত বেগমদের বাপ-ভাইদের মাতব্বরী বাড়ার কারণে। বাপের সাথে দ্বন্দ্বের কারণে জাহাঙ্গীরকে তার উপরে উপরে ভালো লাগার কথা। স্বভাব-চরিত্রের কারণে ভেতরে ভেতরে জাহাঙ্গীরও তার না-পছন্দ হবার কথা। নূরজাহানকে তার পছন্দ করার কোন কারণ নেই। মুনতাখাবের তৃতীয় খণ্ড পড়লে বোঝা যেতো বাদাউ'নী ইলমুল মা'রিফা'র কোন স্কুলের অনুসারী ছিলেন। আমার ধারণা, তিনি নকশ্‌বন্দীয়া-মুজাদ্দিদীয়া ত্বরিকার অনুসারী ছিলেন। অন্তত আকবরের সময়ে যেসব সুন্নী আকবরের ধর্মনীতির বিরোধী ছিলেন তারা মূলত নকশ্‌বন্দীয়া-মুজাদ্দিদীয়া ত্বরিকার অনুসারী ছিলেন। এই ত্বরিকার অনুসারীরা পারসী (জাতি অর্থে) বা শিয়াদের ভালু পাওয়ার কথা না। সুতরাং নূরজাহান বাদাউ'নীর কালো তালিকায় থাকবেন। আওরঙ্গযেব তো মাজার ভাঙা পার্টি। বাদাউ'নী'র কোন মাজার তার আমলে অবশিষ্ট থাকলে তিনি তা মাটিতে মিশিয়ে দেবার কথা।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অতিথি লেখক's picture

জালাল উদ্‌ দীন না হয় বুঝলাম আকবর; কিন্তু মুবারাক কে?

Emran

ষষ্ঠ পাণ্ডব's picture

আবুল ফযলের বাপ!


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অতিথি লেখক's picture

ধন্যবাদ! বাদাউনির সঙ্গে আবুল ফযলের বাবার কি কোন (ধর্মতাত্ত্বিক/রাজনৈতিক) বাদানুবাদ হয়েছিল?

Emran

ষষ্ঠ পাণ্ডব's picture

ধর্মতাত্ত্বিক মতদ্বৈততাটি বাদাউ'নী বনাম আকবর-আবুল ফযল গং-এর। প্রথমে সুন্নী স্কুলের বাইরে যাওয়া, পরে ইসলামের বাইরে যাওয়া, তারও পরে দ্বীন-ই-ইলাহী নিয়ে। বাদানুবাদ হয়েছিল কিনা বলা মুশকিল। হলে হয় বাদাউ'নীর কল্লা যেতো অথবা আয়রোজগার বন্ধ হয়ে যেতো।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সত্যপীর's picture

কালকা থিকা গুগল বুক্স আর জেস্টরে হারিকেন দিয়া খুঁজলাম বাদাউনির তরিকা। যা দেখলাম বাকি বিল্লা বাদাউনির মতই আকবরের ধর্মনীতির উপর ক্ষেপা আছিলেন, আর শায়খ সিরহিন্দির জনপ্রিয়তায় জাহাঙ্গির তারে এক বছর কয়েদের রুটি খাওয়াইছেন। এই দুই তালেবে এলেমের সাথে বাদাউনির যুগাযুগ ছিল কিনা পাইলাম না।

মুনতাখাব ভল্যুম তিন পাইনাই অবশ্য। ভল্যুম টু পাইছি। ভল্যুম তিনে কি এই রহস্যের চাবি আছে?

আরেকটু পড়ে দেখতে হচ্ছে চিশতিয়া কাদিরিয়া নকশবন্দীয়া-মুজাদ্দেদিয়া সুহরাওয়ার্দি হাবিজাবি। ঘটনা সেইখানেই ঘনীভূত।

..................................................................
#Banshibir.

ষষ্ঠ পাণ্ডব's picture

রাযী উদ্‌ দীন মুহাম্মাদ বাক্বী (খাজা বাক্বী বিল্লাহ) এবং আহ্‌মাদ আল্‌ ফারুক্বী সিরহিন্দী (মুজাদ্দিদ আলফে সা'নী) উভয়েই ১৫৬৪ সালে জন্মালেও রাযী নক্‌শবন্দীয়া ত্বরিকায় আহ্‌মাদের গুরু। বাদাউ'নী বয়সে এই দুই জনের চেয়ে ২৪ বছরের বড়। সুতরাং বাদাউ'নী'র নক্‌শবন্দীয়া ত্বরিকায় গুরু এই দুই জনের কেউ না। তার গুরু সম্ভবত রাযী'র পিতা ক্বাযী আবদ্‌ আস্‌ সালাম সমরখন্দী। সুতরাং রাযী ও বাদাউ'নী হচ্ছেন আব্দ্‌ আস্‌ সালামের তালিবুল ইল্‌ম আর আহ্‌মাদ হচ্ছেন রাযী'র তালিবুল ইল্‌ম।

নূর উদ্‌ দীন আর তার বাপ দুইজনেই আহ্‌মাদের শির কাটার ধান্দায় ছিল। সুযোগ পায় নাই অথবা সাহস করতে পারে নাই। নূর উদ্‌ দীন ক্ষমতায় বসায় প্রথমে আহ্‌মাদ খুশিই হয়েছিলেন, পরে তাঁর ভুল ভাঙে। ঠোকাঠুকি চরমে উঠলে নূর উদ্‌ দীনের ঝোল খাওয়া মোল্লারা আহ্‌মাদকে 'ক্বাফির' বলে ফতওয়া দেয়। ব্যাস! আহ্‌মাদ জেলে।

মুনতাখাবের তৃতীয় খণ্ড হচ্ছে বিভিন্ন আলিম-উলামা-শায়খ-মুফতী-ইমাম'দের কথা আর তাদের শিক্ষা নিয়ে লেখা। সুতরাং সেখানে ক্লু পাওয়া যাবার কথা।

সচলেই আগে কোথাও ত্বরিকা নিয়ে একবার বলেছিলাম। আবারও সংক্ষেপে বলে যাই। ইল্‌মুল মা'রিফা'র স্কুলের সংখ্যা সম্ভবত হাজারখানেক। তবে বাংলাদেশে জনপ্রিয় স্কুল হাতে গোনা কয়েকটা। শারিয়াহ্‌ হিসাবে সেগুলোর সবই হচ্ছে হানাফী মাযহাবের অন্তর্ভুক্ত।

হানাফী ------
* ক্বাদিরিয়া > চিশ্‌তিয়া
* নক্‌শবন্দীয়া > মুজাদ্দিদিয়া
* মাইজভাণ্ডারিয়া
* মাদারিয়া

এর বাইরে এই উপমহাদেশে অন্য মাযহাবগুলোর যেসব স্কুল দেখা যায়।

শা'ফী ------
* সুহরাওয়ার্দীয়া > কলন্দরিয়া

হান্বালী ------
* আত্ত্বাশিয়া

মালিকী ------
* শা'দিলিয়া


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

আব্দুল্লাহ এ.এম.'s picture

এত সস্তায় এত মূল্যবান তথ্যরাজি, আমি তো রীতিমত তড়িতাহত! গুরু গুরু

আব্দুল্লাহ এ.এম.'s picture

মোগল বাদশা ভালা পাই। এত সস্তায়(আমি অবশ্য এই পপি গাইড পুরা মাঙনায় পাইছি) মোগল হইতে পারিয়া আমার মনের আশা পুরাইছে। আপনের জন্য অনেক দোআ!

সত্যপীর's picture

সবই উপরওলার ইচ্ছা।

..................................................................
#Banshibir.

সত্যপীর's picture

ও আচ্ছা। সমরকন্দি সায়েব সমরকন্দ থিকা কাবুল গিয়া বাড়ি তোলেন, তিনিই বাদাউনির গুরু হইতে পারেন আমি বুঝি নাই। আমি ভাবছি তার ফেমাস পুলা বাকি বিল্লার সাথে বাদাউনির যুগাযুগ হইছিল।

তরিকা সিলসিলার পূর্ণ বিবরণ পোস্টে দেননাই মনে হয়, কোথাও মন্তব্যে দিছিলেন স্মরণ হয়। পোস্ট আসা দরকার মোগল হাই স্প্যারো নিয়া। একটা পোস্ট নামান, কিম্বা মালমশলা দেন আমি নামাই। সবচাইতে ভালো হয় ইনফোগ্রাফিক করতে পারলে।

..................................................................
#Banshibir.

ষষ্ঠ পাণ্ডব's picture

'হাই স্প্যারো' শব্দটার মানে কী সেটা জানতে আমাকে গুগল করতে হয়েছে। দুনিয়ার কত অল্প জিনিসই যে জানি!

ত্বরিকা নিয়ে কোন পোস্ট দেই নাই। বেশ কয়েকবার বিভিন্ন জায়গায় মন্তব্যে খাবলা খাবলা বলেছি। সচলদের মধ্যে এই ব্যাপারটা সবচে' ভালো জানেন রণদা'। কিন্তু এখন তো উনার নাগাল পাওয়া মুশকিল।

মুঘলদের শারিয়াহ্‌-মা'রিফা-হাক্বিকাহ্‌-ত্বরিকাহ্‌ নিয়ে ইনফোগ্রাফিক করলে সবচে' সহজপাচ্য হতো। তবে আপনিও জানেন এই ব্যাপারে তথ্যের ঘাটতি ব্যাপক। কেউ চিশতিয়া ত্বরিকা'র অনুসারী হলে তার মা-বাবা-ভাই-বোন-স্ত্রী-পুত্র-কন্যা চিশতিয়া ত্বরিকার হবেন এমন কোন কথা নেই। বড় ত্বরিকাগুলোর আবার সাব, সাব-সাব ত্বরিকা অনেক। একই ত্বরিকার দুই ভিন্ন গুরুর পথ অপসারী হতে পারে। তাছাড়া শিয়াদের নিজস্ব ত্বরিকাগুলোর ব্যাপারে প্রায় কিছুই জানি না। অবশ্য ত্বরিকতের পথে শিয়া-সুন্নী ভেদ থাকার কথা না। সায়েবদের লেখা মুঘলদের ইতিহাসে এই ব্যাপারগুলো প্রায় আসেই না। সম্ভবত তারা বিষয়টিকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন না, অথবা এর জটিলতা বোঝার জন্য সময় দিতে রাজী না।

এরচেয়ে আপনি যেভাবে গাইড লিখে যাচ্ছেন, মনের আনন্দে তা লিখে যান। কোথাও ঠেস্‌ দিতে হলে আমরা সবাই তো আছিই।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

মন মাঝি's picture

উনি কেমন আছেন এখন?

****************************************

সত্যপীর's picture

ঠিক আছে। মোগলের চৌদ্দ গুষ্টির তরিকা এক চার্টে ফেলা কঠিন ও প্রায় অসম্ভব স্বীকার করি, তবে বিবিধ বাদশা ও গুটিকয় প্রধান খেলোয়াড়ের সিলসিলা ম্যাপ করলে বিষয়টা আরেকটু পষ্ট হইত। যাক, আপাতত সেই সাগর সেঁচার কাজ মুলতবি রাখলাম।

Quote:
দুনিয়ার কত অল্প জিনিসই যে জানি!

এইটা ভালো জুক্স হইছে দেঁতো হাসি

..................................................................
#Banshibir.

মন মাঝি's picture

দেঁতো হাসি

****************************************

ষষ্ঠ পাণ্ডব's picture

কিছু দিন আগে পুত্রের কাছ থেকে একটা শব্দ শিখলাম - horcrux! এই রকম আরও অনেক কিছু প্রতিনিয়ত তার কাছ থেকে শিখি। কিছুদিন পরে ভাগ্নে-ভাগ্নী, ভাস্তে-ভাতিজীদের কাছ থেকেও শিখবো।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সত্যপীর's picture

এই শব্দের মানে গুগল কইরা ভয়ানক ডরাইলাম মন খারাপ

..................................................................
#Banshibir.

অতিথি লেখক's picture

পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম আসিতেছে? - কাজি

সত্যপীর's picture

কারে কন? প্রতিমন্তব্য দেয়ালে পিষে যাইতেছে, কিডা কারে কিতা কয় বুঝা বড় দায়।

..................................................................
#Banshibir.

অতিথি লেখক's picture

ভালো লাগছে সিরিজটি। আগামী পর্বে শেষ না করলে কী হয়!

মোখলেস হোসেন।

সত্যপীর's picture

আগামী পর্বে বিদ্রোহ ফিনিশ কইরা গদিতে বসবেন। তারপর কিভাবে হিন্দুস্তান চালাবেন সেইটা ভিন্ন পপি গাইড। সুতরাং এই গাইড পরের পর্বেই ইন্নালিল্লা।

..................................................................
#Banshibir.

অতিথি লেখক's picture

আহা, তা কেন! মনসব আর বিবাহের পরেই বিদ্রোহ? আমার হেরেমের কথা কিছু বলবেন না! একটু ফুর্তিফার্তা করে নেই, তারপর না হয় যুদ্ধ।

---মোখলেস হোসেন

সত্যপীর's picture

ভাবতেছি সেটলার্স অফ কাটানের এক্সপানশন প্যাকের মত পপি গাইড এক্সটেনশন নামামু। হেরেম এক্সটেনশন। শাকিব খান অভিনীত ছবির মত সুপারহিট হবে ধারণা করি।

(পরের পর্বে হেরেম নাই। হবে কোন এক সময়। তারাবাঈয়ের গল্প এখনো বাকি আছে)

..................................................................
#Banshibir.

হিমু's picture

মনসব কি কেবলই সামরিক র‍্যাঙ্ক, নাকি বেসামরিক মোগল আমলারাও মনসবদারি পেতো?

সত্যপীর's picture

এই বিষয়ে কয়দিন আগে বিস্তারিত ঘাঁইটা যা পাইছিলাম তা হইলঃ মনসব একটা সামরিক পদবী কেননা (আকবরের রিফর্মের পরে) সকল মনসবদারের সওয়ার র‍্যাঙ্ক থাকে। জাট এবং সওয়ার মনসবদারির দুইটা অংশ। সওয়ার এর অর্থ আপনি ঘোড়া এবং সিপাই পালার পয়সা পাবেন সরকার থেকে। এই সওয়ার নম্বরের জন্যই আপনি টেকনিক্যালি মিলিটারি র‍্যাঙ্কহোল্ডার, বেসামরিক লোক সিপাই রাখবে কেন? (জাট র‍্যাঙ্কের সাথে সামরিক সম্পর্ক আমি পাই নাই)

বেসামরিক লোক কিন্তু জায়গির পাইতে পারে। সকল মনসবদারই জায়গিরদার কিন্তু সকল জায়গিরদার মনসবদার নয়। যেমন বেগম সাহিব জাহানারার সুরাট বন্দর জায়গির ছিল, কিন্তু তার মনসব ছিলনা। দরবারে কবিসাহিত্যিকগাতকবাদকের জায়গির থাকত (ইনাম জায়গির), কিন্তু তারা সামরিক সদস্য ছিলনা। এই আর কি।

..................................................................
#Banshibir.

অতিথি লেখক's picture

Quote:
কইঞ্চাইন দেখি আট হাজার জাটের সাথে সওয়ার ছয় হাজার পাবেন না নয় হাজার পাবেন? এবং কেন?

স্বপ্নে পাওয়া ফর্মুলাঃ- লম্বর অব জাট > লম্বর অব সওয়ার। সুতরাং, আট হাজার জাটের সাথে সওয়ার হবে ছয় হাজার।
কিন্তু একটা খটকা, সওয়ার মানে যতদূর বুঝলাম ঘোড়ায় চাপা সৈন্য। জাট মানে কি তাইলে পদাতিক সৈন্য??

- আতোকেন।

সত্যপীর's picture

সাব্বাস, প্রায় ধরে ফেলছেন সওয়ার সংখ্যা। তবে মনসবজান্তা উপাধি পাইতে হলে আওরঙ্গজেবের রিফর্মের কথাটাও ভেবে দেখতে হবে।

জাট পদাতিকঘটিত কিছু না। পদাতিক রাখার ভাতা আপনি পাবেন জায়গিরদারি হতে। পুরাতন লেখা হতে কপি মারিঃ

Quote:
জাট হল দরবারে আপনার অবস্থাসূচক। মনে করেন নওরোজ। আকবর বাদশা আপনাকে আগ্রাতে দাওয়াত দিয়েছেন বিরিয়ানি খাওয়ার। দরবারে দেখা হল আপনার সাথে আরেক রাজপুত নেতা চরম সিং রান্ধাওয়ার। আপনি বললেন, হে চরম, তোমার জাট কত। চরম বলল, গরম, আমার জাট ৬০০।

অর্থাৎ আপনার জাট তার চেয়ে বেশি। দ্বিগুণ সত্যি কথা বলতে। আপনার ১২০০ তার ৬০০। সুতরাং দরবারে আপনি চরম সিং এর চেয়ে অধিক গুরুত্বপূর্ণ। আপনি সারিতে সামনে থাকবেন, বাদশার দেওয়া খিলাত (সম্মানসূচক জামা) আপনাকে আগে পরানো হবে, বাদশার জুতায় আপনি পয়লা চুমা খাবেন ইত্যাদি। জাট গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

..................................................................
#Banshibir.

এক লহমা's picture

জব্বর হইচ্চে! চলুক হাততালি

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

সত্যপীর's picture

পপি গাইড, বাজারের সেরা গাইড।

(অটঃ পপি গাইড গুগল করলে পয়লা পাতায় আমার পোস্ট চলে আসতেছে দেখি। শরমের ব্যাপার লইজ্জা লাগে )

..................................................................
#Banshibir.

এক লহমা's picture

হাঃ - হাঃ - হাঃ! তা বটে, শরমের কাজ-ই হৈছ। দেঁতো হাসি

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

অতিথি লেখক's picture

Quote:
হেরেমের জানালার ফুটা দিয়ে পিতার লেজেন্ডারি তাজ মহল নির্মাণকর্ম দেখতে দেখতে বড় কন্যা জাহানারা ভাবলেন আমিও একটা কিছু করে দেখাইনা কেন।

মেয়েদের জন্যও হেরেম ছিল নাকি?
ইন্নালিল্লা করার পর "আফিম যুদ্ধ"টারেও কি ইন্নালিল্লা করবেন নাকি ওইটা আজীবণ ICU তে থাকবে?
-বৃদ্ধ কিশোর

সত্যপীর's picture

মেয়েদের জন্যই তো হেরেম ছিল। জাহানারা ছিলেন পিতার আমলে হেরেমসর্দারনি। আওরঙ্গজেব আসলে পরে তাকে লাথি দিয়ে সর্দারনি হয়ে বসে রওশনআরা।

আফিম যুদ্ধ ইন্নালিল্লা করব ক্যান খাইছে , লালু লাও বাঙ এর গল্প আবার আসবে। যেহেতু ধারাবাহিক না, বিচ্ছিন্ন সিরিজ, তাই লালু-লাও বাঙ এর গল্প ছাড়া ছাড়া দিতে সমিস্যা নাই।

দুয়া রাইখেন।

..................................................................
#Banshibir.

আয়নামতি's picture

মোগলদের ঘরে(পয়সার জোর ছিল যাদের) ছেলে সন্তান জন্ম নিলে জশনে জুলুছের যেরকম বর্ণনা পড়লাম(আগের পর্বে) বাপ্রে বাপ! কী অহেতুক পয়সাপাতি নষ্ট করছে তারা। আচ্ছা, মেয়ে সন্তান হইলে কী করা হতো? পপিগাইডের পকাশনা জব্বর হচ্ছে।

সত্যপীর's picture

মেয়ে সন্তান হইলেও জশনে জুলুছ হইত তবে জিলাপি কিছু কম হইত এই আর কি। ছেলের আকিকায় যেরম দুইটা খাসি আর মেয়েশিশুর আকিকায় একটা খাসি, সেই একই গাইডিং প্রিন্সিপল।

..................................................................
#Banshibir.

সোহেল ইমাম's picture

দুস্পাচ্য মোগলাই পরোটা আপনার দয়ায় মুখে তুলতে পারলাম নইলে ইতিহাসের ফুটন্ত হাঁড়িতে চড়তে গিয়ে জ্বলন্ত চুলোয় পড়ে শিঁককাবাব হয়ে যেতাম। পীরসাহেবের কলমের পায়ে কোটি কোটি সেলাম।

---------------------------------------------------
মিথ্যা ধুয়ে যাক মুখে, গান হোক বৃষ্টি হোক খুব।

সত্যপীর's picture

Quote:
ইতিহাসের ফুটন্ত হাঁড়িতে চড়তে গিয়ে জ্বলন্ত চুলোয় পড়ে শিঁককাবাব হয়ে যেতাম।

হো হো হো

কড়া উপমা হৈছে হাততালি

..................................................................
#Banshibir.

নীড় সন্ধানী's picture

এক মাস তো পার হয়ে গেল পাঞ্জেরী, পরের পর্বের আর কত দেরী? ইয়ে, মানে...

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

সত্যপীর's picture

পাঞ্জেরী?! ধুর মিয়া লিখতেছি তো পপি গাইড।

আসতেছে, ডর নাই। পরের পর্বে খতম।

..................................................................
#Banshibir.

মন মাঝি's picture

আজকে "বেঙ্গল বই"-এর দোকানে "বঙ্গভঙ্গ" নামে ঐতিহাসিক 'বঙ্গভঙ্গ' নিয়ে প্রমথনাথ বিশীর একটা ঐতিহাসিক কাম রাজনৈতিক উপন্যাস দেখলাম।

****************************************

Post new comment

The content of this field is kept private and will not be shown publicly.