অবাক হৃদয়

সত্যপীর's picture
Submitted by mir178 on Mon, 29/10/2018 - 12:13am
Categories:

ছুটির দিন সকালবেলা আমি সাধারণত লেখাটেখা নিয়ে ঘুটঘাট করি। মেয়েটাকে নিয়ে সকালে বাজার করেছি, তারপর নাস্তা নিতে থেমেছিলাম পথে। সেই নাস্তা খেতে খেতে মেয়েটা ঘুরঘুর করছে পায়ের কাছে। আমি আধাশোয়া হয়ে মোগল রাজপুত গুঁতাচ্ছি, অনেকদিন লেখা নামানো হয়না। অলস ছুটির দুপুর, পাশে জানালা দিয়ে দেখা যায় এক পরিবার বাড়ি পাল্টাচ্ছে, বিশাল চারকোণা একটা বিছানা দুই তিনজনে মিলে ট্রাকে ওঠাতে ব্যাপক কারিকুরি। ওপরে ছয় তলায় বারান্দায় এই ঠাণ্ডার মধ্যেও হাফপ্যান্ট পরে কফি খাচ্ছে এক দাড়িওলা যুবক। নিচে রিসেপশনের কাছে মোটা রঙচঙে জামা পরে এদিক ওদিক দৌড়াচ্ছে কয়টা ছোট বাচ্চা, পাশে বয়স্ক দুইজন কি কি আলাপ করছে।

এসবের মধ্যে খুটখাট টাইপ করতে করতে তবু মনে পড়ে গেল আইয়ুব বাচ্চু আর নাই।

ইস্কুলে থাকতে আমাদের একটা ঢাউস ক্যাসেট প্লেয়ার ছিল, সেটাতে নব ঘুরিয়ে রেডিও ও শোনা যেত। পরে এইট নাইনে ওঠার পরে একটা ছোট পোর্টেবল ক্যাসেট প্লেয়ার পাই, তার উপরে একটা সিডি প্লেয়ার ছিল। সিডি তখন অত্যন্ত দামী জিনিস, দুই তিনশ টাকা ছিল একেকটা সিডি। ক্যাসেট ছিল পঁয়ত্রিশ টাকা। ক্যাসেটই শোনা হত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় সিডি/ডিভিডিতে এম্পিথ্রি কিনতাম বা কপি করে নিতাম কারো কাছ থেকে, কম্পিউটারে শুনতাম। অটোয়ায় মাস্টার্স করার সময় একটা আইপড কিনেছিলাম। পাশ করে দুই হাজার দশের দিকে আইফোন। সেসবে কপি করা ছিল গান। গত দুই তিন বছর গুগল মিউজিক আর স্পটিফাই। ইদানিং ইউটিউব মিউজিক। পঁচিশ বছরে আমার ব্যবহৃত এই সমস্ত জিনিসপাতি জানে আইয়ুব বাচ্চুর নাম। স্পটিফাই আমার কাছে একাধিকবার চ-বর্গীয় গালি খেয়েছে “আর্টিস্টস সিমিলার টু আইয়ুব বাচ্চু” শিরোনামে হৃদয় খানকে দেখিয়ে। গুগল মিউজিক একাধিকবার “আইয়ুব বাচ্চু রেডিও” আমাকে ছাড়তে বলে দুই তিনটা গানের পরে শুনাতে চেয়েছে তাহসানের কত দূর কত পথ। কত বাল কত চ্যাট। বিরক্ত হয়ে ইদানিং ইউটিউব মিউজিক শুনি, প্লেলিস্ট ঠিকমত দিলে চমৎকার সব গান বাজে। এয়াই এমেল পোষায় না, মানুষের তৈরি করা প্লেলিস্টই ভালো।

ইউটিউবের কথাই হোক তাহলে। আমি দেশ থেকে বহুদূরে থাকি, ইচ্ছে হলেই নিউমার্কেট কিম্বা ইস্টার্ন প্লাজায় গিয়ে ক্যাসেট কেনা আমার হয়না। হঠাৎ করে যদি মনে হয় আইয়ুব বাচ্চুর একটা পুরাতন ক্যাসেট শুনব, আমি নিরুপায়। কিন্তু ইন্টার্নেট একটি চমৎকার জিনিস, যেভাবে আমার খটাখট টাইপ করে লেখা ব্লগরব্লগর আপনার চোখের সামনে এই মুহুর্তে পৌঁছে গেল ঠিক সেইভাবে কোন এক অজানা শুভানুধ্যায়ী আমার জন্য প্রচুর পুরাতন অ্যালবাম আপিয়ে রেখেছেন। আইয়ুব বাচ্চুর ৮৬ সালে রিলিজ হওয়া অ্যালবাম রক্তগোলাপ সেইখানে আছে। সাদার উপর গোলাপি ডিজাইন করা শার্ট পরিহিত কোঁকড়া চুলের গায়কের ছবি উপরে। নাম লেখা মোহাং আইয়ুব বাচ্চু। বাংলা আধুনিক গান। মোহাম্মদের নাম ছোট করে মোঃ এমনকি মোহাঃ আমি দেখেছি, মোহাং দেখা এই প্রথম। গান ছাড়লাম, পয়লা গানটা শুনলে মনে হয় হ্যাঁ আধুনিক গানই বটে। তবলা সরোদ হারমোনিয়াম প্যাঁ পোঁ চলছে, সাথে অতি সাধারন গলায় গান গাইছেন মোহাং আইয়ুব বাচ্চু। অলস দুপুরে, উঠোন জুড়ে, কৃষ্ণচূড়ার ছায়া। অত্যন্ত তৃতীয় শ্রেণীর গান, দাঁতে দাঁত চেপে শুনতে হয়। আমি ধৈর্য না হারিয়ে শুনে চলি। তিন বা চার নম্বর গানে এসে গীটার শুনতে পাই। খুব আহামরি গীটার বাদন নয়, তবু আমার প্রশিক্ষিত কানে ধরা পড়ে যে এই গীটারই রূপালী গীটারের পূর্বপুরুষ। মোহাং বাচ্চুই যে আরও কয়েক বছর পরে কষ্ট নামের একটি আশ্চর্য অ্যালবাম বের করবেন, যেখানে সাদা গোলাপি শার্ট পরিহিত একজন অর্ধ-আত্মবিশ্বাসী গায়কের ছবির বদলে আপাদমস্তক কালো পোষাকে দুর্দান্ত স্মার্ট একটি মানুষের সোফায় আধশোয়া হয়ে বসা ছবি আসবে এতে আমার অবাক হবার কিছু থাকেনা।

বিড়ি কোম্পানি বেন্সন হেজেস ২০০৫ এ মিরপুর স্টেডিয়ামে একটা কনসার্ট করেছিল। অ্যাম্পফেস্ট। সেখানে আইয়ুব বাচ্চুর পরে গান গাইতে আসেন গুরু আজম খান। বাংলাদেশ গান গাইতে গাইতে আজম খান হঠাৎ দেখেন বাচ্চু আবার উঠে এসেছেন মঞ্চে। অমনি চোখের পলকে মাইক বাচ্চুকে ছেড়ে দিয়ে আজম খান নাচতে আরম্ভ করলেন আর বললেন গা বাচ্চু। গা। গীটারে ঝড় তুলে আইয়ুব বাচ্চু গান ধরলেন মা তার কাঁদে। ছেলেটি মরে গেছে। হায় আমার বাংলাদেশ। আস্ত স্টেডিয়াম এই অভূতপূর্ব যুগল গানের আনন্দে তখন দিশেহারা। সন্ধ্যে ঘনিয়ে তখন রাত। স্টেজের পাগলা আলো ছুটোছুটি করছে আজম খান আর আইয়ুব বাচ্চুর ওপর। পেছনে কীবোর্ডে বাজিয়ে চলেছেন ফীডব্যাকের ফুয়াদ নাসের বাবু। আস্ত স্টেডিয়াম সেই আশ্চর্য জ্যামিং এ নেচে চলেছে। বাংলাদেশ। বাংলাদেশ। হায় আমার বাংলাদেশ। কত আশা ছিল তার জীবনে। যে চলে যায়, সে কি আসে?

আজম খান ওঠার আগে আইয়ুব বাচ্চু সেই কনসার্টে তিন চারটা গান গেয়েছিলেন। সবশেষে যখন সেই তুমি কেন এত অচেনা হলে শুরু হল, তখন স্টেডিয়ামের বাতি নিভিয়ে আইয়ুব বাচ্চু গীটার ধরলেন। পেছনে মৃদু ড্রামবিট। আস্ত স্টেডিয়াম গাইছে তুমি কেন বোঝনা তোমাকে ছাড়া আমি অসহায়। আমার সবটুকু ভালোবাসা তোমায় ঘিরে। আমার অপরাধ ছিল যতটুকু তোমার কাছে।

আমি কৈশোর পার করে এসেছি অনেক আগে। আবেগ এখন আমার তেমন নেই বললেই চলে, যুক্তি দিয়ে দুনিয়া বিচার করতে চেষ্টা করি আমি। ঠাণ্ডা মাথায় সেই তুমি গানটির কথা আমি অনেকবার পড়েছি। কবিতার মত। কবিতা হিসেবে, কিম্বা নিছক কিছু কথা হিসেবে গানের লাইনগুলো আমার কাছে কখনই মনে হয়নি তেমন অসাধারন। শিরোনামহীন জামাতি টিভিতে গান গাইবার আগে আমার অত্যন্ত পছন্দের ব্যান্ড ছিল, তাদের প্রথম অ্যালবাম থেকেই আমি তাদের পাখা। পতিত সেই ব্যান্ডের কিছু গানের কথা প্রকৃতই অসাধারন। মেঘদল ব্যান্ডের কিছু গানের কথা অসাধারণ। বাচ্চুর কষ্ট অ্যালবামের কষ্ট কাকে বলে গানের কথা অসাধারন। জেমসের যে পথে পথিক নেই গানের কথা অসাধারণ। সেই তুমি এরকম কেস নয়। খুব চেনা, সাধারন কিছু কথা সেই তুমি। চেনা সাধারন সেই কথাগুলোকেই রূপালী গীটারে সুর বসিয়ে এরকম আস্ত একটা জেনারেশনকে বুঁদ করে ফেলার মত গান যে মানুষটা বেঁধেছিলেন তাকে এই অলস ছুটির সকালে আমার মনে পড়বে এতে হ্যাশট্যাগ অবাক হবার কিছু নেই।

আইয়ুব বাচ্চুর মৃত্যুর পর পাতার পর পাতা লেখা হয়েছে। আমি নতুন করে আর কী যুক্ত করব। সকালবেলা সিসোদিয়া মোগল কামড়াকামড়ি নিয়ে খসড়া লিখতে লিখতে মনে পড়ে গেল বাচ্চু আর নেই, তাই লিখলাম হাজারখানেক শব্দ। গত সপ্তাহ পুরোটাই কেটেছে টানা আইয়ুব বাচ্চু শুনে। বাড়িতে, গাড়িতে, অফিসে। ফেসবুকে একের পর এক বাচ্চুর গান শেয়ার। নানা পরিচিত গানের ভিড়ে আচমকা একটা হয়তো পুরোন গান যা কখনও শুনিনি বা শোনা হয়নি বছর বিশেক। গান শুনতে শুনতে আবারও মনে পড়ে যায় কী চমৎকার একটা জীবন পার করেছি আমি। কী চমৎকার কিছু সময় আমাকে উপহার দিয়ে গেছেন আমাকে না চেনা রূপালী গীটারবাদক মোহাং আইয়ুব বাচ্চু। আপনাকে ধন্যবাদ। আজ আপনি নেই তবু বহু বছর আগে আমাকেই আপনি বলে গেছেন রূপালী গীটার ফেলে একদিন চলে যাবেন দূরে। বহু দূরে। সেদিন চোখের অশ্রু আমি যেন রাখি গোপন করে।

ঠিক আছে। রাখলাম।

স্মৃতিরোমন্থনে সামিল হবার জন্য পাঠক আপনাকেও ধন্যবাদ। এবং আপনার জন্য একটি উপহার, আইয়ুব বাচ্চুর সুর ও সঙ্গীতে নিলয় দাশের গাওয়া গান এ শহর ডুবে যায়। গত সপ্তাহে নর্স মহাদেবতা সচল ওডিন এই গানের সন্ধান দিয়েছেন আমাকে, কত সহস্র বছর আগের শোনা গান মনেও ছিলনা। ঘরের আলো কমিয়ে চুপ করে বসে রিপিট দিয়ে শুনুন আমার মত।

ভালো থাকুন। আবার কথা হবে।


Comments

ওডিন's picture

বসের সলোগুলা কি অসাধারণ, শুঞ্ছেন নাকি? আবার শোনা শুরু করলাম হাসি

সত্যপীর's picture

হ। কনসার্টের সলো অথবা একটা অ্যালবাম আছে সাউন্ড অফ সাইলেন্স। লোকটা একটা কঠিন জিনিয়াস ছিল।

..................................................................
#Banshibir.

ওডিন's picture

আপনার লেখার শিরোনামের গানটা দিয়ে দিলাম।

সত্যপীর's picture

পয়লা বিশ সেকেন্ডের বাজনা টেনে টেনে কতবার যে শুনলাম জীবনে।

..................................................................
#Banshibir.

সোহেল ইমাম's picture

আমাদের ভালোলাগার মানুষ গুলো যখন একে একে চলে যায় তখন কেন যেন মনে হয় আমরাও একটু একটু করে মারা যাচ্ছি। জীবনের ডালপালা হয়তো এভাবেই খ’সে খ’সে পড়ে একেবারে মুখ থুবড়ে পড়বার আগে।

---------------------------------------------------
মিথ্যা ধুয়ে যাক মুখে, গান হোক বৃষ্টি হোক খুব।

সত্যপীর's picture

মনে রেখো তুমি, কতরাত কতদিন। শুনিয়েছি গান আমি, ক্লান্তিবিহীন।

..................................................................
#Banshibir.

ষষ্ঠ পাণ্ডব's picture

আমার মতো অনেকের কাছেই আইউব বাচ্চু নিছক একজন গায়ক নন্‌। তাঁর গানের সাথে জড়িয়ে থাকে অজস্র ব্যক্তিগত স্মৃতি, ভালোলাগার সময়, কষ্টের সময়, কাছে থাকার সময়, নিঃসঙ্গতার সময়। তাঁর গান কাউকে ভেঙেচুরে দেয়, কাউকে ভাসিয়ে নিয়ে যায়, কাউকে আকাশে উড়ায়, কাউকে পাতালে ডুবায়। তাই আইউব বাচ্চুর মৃত্যু নিছক একজন গায়কের মৃত্যু নয়। অসংখ্য মানুষের অজস্র ব্যক্তিগত অনুভূতি আর মুহূর্তের মৃত্যু। আইউব বাচ্চুর মৃত্যুতে অমন মানুষেরা তাই কোন শোকোচ্ছ্বাস করতে পারেন না। কেউ নিজে মরে গেলে কি নিজেই শোক প্রকাশ করতে পারে!


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সত্যপীর's picture

হ্যাঁ ঠিক কথা। বাচ্চুর একটা গান আছে সারারাত তুমি হেঁটেছ আমার নিঝুম স্বপ্ন পথে। ফেরারী স্মৃতিরা গিয়েছে চলে আমায় একাকী ফেলে। এই গানটা বাজলেই আমার হঠাৎ মনে হয় আমি ১৯৯৬ এ ফিরত গিয়েছি। ফুলার রোড। রাত আটটা নয়টা। সামনে প্রি টেস্ট। ঢাউস একটা টেস্ট পেপার সামনে। আমি নিচু ভল্যুমে গান শুনছি। আম্মা ভাত দিবে একটু পরে।

যতবার গানটা বাজে ততবার আমার মস্তিষ্ক এই স্মৃতি ফেরত নিয়ে আসে।

..................................................................
#Banshibir.

আলতাইর's picture

আমি তাইলে আপ্নের থেকে বেশি পিছের না। এক বছর পরের টেস্ট পেপার নিয়া বসছিলাম আমিও। এই গানটা আর সুখেরই পৃথিবী ... এই দুইটা গান ক্যাসেটের দুইপাশে রেকর্ড করছিলাম। বীজগাণিতিক ভ্যাজাল সলভ করার টাইমে কামে দিতো। আমার ওই চিপা টেবিল, লাল জানালা, ম্যাক্স এর কালো ক্যাসেট, ফিলিপ্স এর ক্যাসেট প্লেয়ার এক ধাক্কায় মনে পড়ে গেল।

ষষ্ঠ পাণ্ডব's picture

টেস্টপেপার সলভ করার বছর হিসাবে আমি সত্যপীরের যতোটা আগের সেই সময়ে 'মোহাং আইয়ুব বাচ্চু'র আধুনিক গানের অ্যালবাম 'রক্ত গোলাপ' বের হলেও সেটা শোনার সুযোগ হয়নি। তবে শহীদ মাহমুদ জঙ্গীর লেখা আর নিজের সুর করা ও গাওয়া 'হারানো বিকেলের গল্প বলি' সোলসের তিন নাম্বার ক্যাসেটে শোনা হয়ে গেছে।

একবার সেই কালে বছরের অন্যতম আকর্ষণীয় টিভি অনুষ্ঠান ঈদের 'আনন্দমেলা'তে উপস্থাপনার ভার ছিল সোলসের ওপর। গোটা স্টেজ জুড়ে ড্রামসে রনি বড়ুয়া, মাইক্রোফোন হাতে তপন চৌধুরী, কী-বোর্ডে নকীব খান এবং গিটার হাতে নাসিম আলী খান আর আইয়ুব বাচ্চু। সোলসের গান, গান নিয়ে কথা আর তার ফাঁকে ফাঁকে অন্য সব শিল্পীদের নানাবিধ পারফর্ম্যান্স। ঐ আনন্দমেলায় সুদেহী, আত্মপ্রত্যয়ী আইয়ুব বাচ্চুর অনবদ্য পারফর্ম্যান্স আমাদের কাছে তাঁকে হারানো বিকেলের গল্পের ফ্রেম ভেঙে বাইরে নিয়ে আসলো।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সত্যপীর's picture

দেখিনাই আমি, ইউটিউবে আপনি বা সৌমিত্র পালিতের মত সহৃদয় কোন পাঠক পেলে লিঙ্ক দিয়ে যাবেন নিশ্চয়ই।

...টিভি অনুষ্ঠানের কথা যখন হচ্ছেই, অন্য একটা প্রোগ্রামের লিঙ্ক দিয়ে দেই। এল আর বি লাইভ শো, ফোনে পার্থ বড়ুয়া কল করলেন। বাচ্চু বললেন এই পার্থ চলে আয়। গান গাই। মিনিট দশেক পরে পার্থ বড়ুয়া সত্যিই সেটে হাজির। বললেন, এই মানুষটা আমাকে গীটার শিখাইসে। এই মানুষটা আমারে যখন বলসে আসতে, আমারে আসতেই হবে।

এরপর বাচ্চু বললেন গীটার বাজা। পার্থ বলেন না আপনার সাথে কীভাবে বাজাব। বাচ্চু বললেন আচ্ছা গান গা। আরে না আপনার সাথে কিভাবে গাব।

বাচ্চু কইলেন মহা বিপদ। গানও গাবি না গীটারও বাজাবি না। জোর করে তার হাতে গীটার ধরিয়ে গান ধরতে বললেন। বৃষ্টি দেখে অনেক কেঁদেছি। সাথে নিজে লিড গীটারে দিলেন কড়া টান।

বাচ্চু আজকে নাই কিন্তু রেখে যাওয়া এইসব ছোট ছোট সোনার টুকরা মুহুর্ত ছড়িয়ে আছে সবখানে। কেবল কুড়িয়ে নেবার অপেক্ষা। এই তো।

..................................................................
#Banshibir.

আলতাইর's picture

ওইটা পাই নাই। তবে একখানা ইন্টারেস্টিং জিনিস পেলুম কত্তা

https://www.youtube.com/watch?v=QdVQp1o_1SQ

সত্যপীর's picture

Quote:
আমার ওই চিপা টেবিল, লাল জানালা, ম্যাক্স এর কালো ক্যাসেট, ফিলিপ্স এর ক্যাসেট প্লেয়ার এক ধাক্কায় মনে পড়ে গেল।

এক্কেবারে ঠিক। ম্যাক্সের কালো ক্যাসেট চোখের সামনে ভেসে উঠল আপনি বলার পরে।

..................................................................
#Banshibir.

ষষ্ঠ পাণ্ডব's picture

ম্যাক্সেল, সনি, টিডিকে, জেভিসি - ৬০ মিনিট, ৯০ মিনিট, ১২০ মিনিট - নরমাল, ক্রোম, মেটাল। নিচে দুই পাশের কোনা ভেঙে 'অ্যাক্সিডেন্টাল রেকর্ডিং' ঠেকানো। আবার কোন গান পছন্দ না হলে ভাঙা কোনায় টিস্যু পেপারের পুলটিশ লাগিয়ে অন্য গান রেকর্ড করা। রোলারে ফিতা জড়িয়ে যাওয়া। ছেঁড়া ফিতার উলটো দিকে চিকন করে স্কচটেপ কেটে জোড়া লাগিয়ে পাউডার দিয়ে মুছে আবার চালানো। ময়লা জমা 'হেড' ডেটল ভেজানো তুলো দিয়ে পরিষ্কার করা।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

তাসনীম's picture

ওডিনের দেওয়াটা গানটা ক্রমাগত শুনে যাচ্ছি।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

সত্যপীর's picture

এ শহর কেঁদে যায়, অবহেলায় মিশে যায়। দূরে থাকা দুঃখের মেলায়...

এরপর গীটারের কান্না। কী একটা গান, যেন সত্যই হারিয়ে যাওয়া মানুষ দুজনের শোকে পুরো শহর ডুবে যাচ্ছে রাত্রির মায়ায়।

..................................................................
#Banshibir.

অবনীল's picture

পান্ডবদা যা বলার বলে দিয়েছে। আর কিছু বলার নেই আইয়ুব বাচ্চু সম্পর্কে । বড় তাড়াতাড়ি চলে গেলেন আর সাথে নিয়ে গেলেন কৈশোর তারুণ্য ঘিরে হাজারো স্মৃতি।

___________________________________
অন্তর্জালিক ঠিকানা

সত্যপীর's picture

হ্যাঁ কিন্তু সবগুলি গান রেখে গেছেন।

..................................................................
#Banshibir.

ষষ্ঠ পাণ্ডব's picture

আমি বৃহত্তর চট্টগ্রাম এলাকার কাউকে কাউকে 'মোহাং' ব্যবহার করতে দেখেছি। বাংলাদেশের অন্যত্র এই ফর্মটা চোখে পড়েনি।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সত্যপীর's picture

আমি এই প্রথম দেখলাম।

..................................................................
#Banshibir.

ষষ্ঠ পাণ্ডব's picture

'মোহাং' লিখে সার্চ দিয়ে দেখুন। দেখবেন বৃহত্তর চট্টগ্রাম এলাকার নানা খবর চলে আসছে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

তিথীডোর's picture

বে-ইনসাফি লেভেলের মন খারাপ করিয়ে দিলেন রে ভাই।

পাঁচ তারা।

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

সত্যপীর's picture

হ।

আবার একদিন দম-ফাটানো হাসির পোস্ট দিবনে। তাড়া কী।

..................................................................
#Banshibir.

অতিথি লেখক's picture

পীর'দা, আজম খান আর আইয়ুব বাচ্চুর 'অগ্নিঝরা' পারফরম্যান্সটা ইউটিউবে খুঁজে পেলাম। রেললাইনের ঐ বস্তিতে...।

https://www.youtube.com/watch?v=7CsxEhT-Mik

______________
সৌমিত্র পালিত

সত্যপীর's picture

হায় করছেন কী! বুকে আসেন ভাই।

আজম খানের তুফান ড্যান্স দেখে মনে পড়ে যায় আমিও ছিলাম দর্শকের সারিতে সমান তালে নৃত্যরত...

..................................................................
#Banshibir.

অবনীল's picture

গাও বাচ্চু

___________________________________
অন্তর্জালিক ঠিকানা

অনার্য সঙ্গীত's picture

এইটুকু লিখলেন, কতটা তো এখনি মনে পড়ছেনা দেখবেন। হঠাৎ হঠাৎ একটু একটু মনে পড়বে, বিষন্ন হবেন! এইসব হাহাকারগুলোই বোধহয় জীবন!

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

নীড় সন্ধানী's picture

সোলস এবং অল্প কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া আমি ব্যাণ্ডের গান তেমন শুনিনি। সেই ব্যতিক্রমগুলোর একটি ছিল আইয়ুব বাচ্চুর ''সেই তুমি'। এই গানের সাথে আমার দীর্ঘকালের সখ্য। কিন্তু আইয়ুব বাচ্চু চলে যাবার পর দেখলাম আস্ত একটা জেনারেশান এই গানের সাথে যুক্ত হয়ে পড়েছিল। তাই আপনার নীচের লাইনগুলো আমার কথাও বটে।

আপনি বলেছেন-
",,,,,,খুব চেনা, সাধারন কিছু কথা সেই তুমি। চেনা সাধারন সেই কথাগুলোকেই রূপালী গীটারে সুর বসিয়ে এরকম আস্ত একটা জেনারেশনকে বুঁদ করে ফেলার মত গান যে মানুষটা বেঁধেছিলেন তাকে এই অলস ছুটির সকালে আমার মনে পড়বে এতে হ্যাশট্যাগ অবাক হবার কিছু নেই"।

এরপর আমি যা বলতে চেয়েছি সেটা পাণ্ডবদার মুখে শুনে চুপ করে যাই-
",,,,,আমার মতো অনেকের কাছেই আইউব বাচ্চু নিছক একজন গায়ক নন্‌। তাঁর গানের সাথে জড়িয়ে থাকে অজস্র ব্যক্তিগত স্মৃতি, ভালোলাগার সময়, কষ্টের সময়, কাছে থাকার সময়, নিঃসঙ্গতার সময়। তাঁর গান কাউকে ভেঙেচুরে দেয়, কাউকে ভাসিয়ে নিয়ে যায়, কাউকে আকাশে উড়ায়, কাউকে পাতালে ডুবায়"।

এইসব ভাঙচুরের মাঝে যখন আবার ক্যাসেট যুগের গান শোনা স্মৃতির দীঘল পর্দা উন্মোচন করেন পাণ্ডবদা, তখন বিপুল এক নস্টালজিকতা এসে ভাসিয়ে নিয়ে যায় আমাকে। এই লাইনগুলোকে আমি আমার কোন স্মৃতিচারণমূলক লেখা বা স্ট্যাটাসে ব্যবহার করার অনুমতি নেবো-

"ম্যাক্সেল, সনি, টিডিকে, জেভিসি - ৬০ মিনিট, ৯০ মিনিট, ১২০ মিনিট - নরমাল, ক্রোম, মেটাল। নিচে দুই পাশের কোনা ভেঙে 'অ্যাক্সিডেন্টাল রেকর্ডিং' ঠেকানো। আবার কোন গান পছন্দ না হলে ভাঙা কোনায় টিস্যু পেপারের পুলটিশ লাগিয়ে অন্য গান রেকর্ড করা। রোলারে ফিতা জড়িয়ে যাওয়া। ছেঁড়া ফিতার উলটো দিকে চিকন করে স্কচটেপ কেটে জোড়া লাগিয়ে পাউডার দিয়ে মুছে আবার চালানো। ময়লা জমা 'হেড' ডেটল ভেজানো তুলো দিয়ে পরিষ্কার করা।"

পোস্টের সাথে মন্তব্যের বাড়তি পাওনাগুলো অসাধারণ। পার্থ বড়ুয়ার সাথে লাইভ প্রোগ্রামের গান কিংবা আজম খানের সাথে ফেস্টিভ্যাল মঞ্চে গান গাওয়ার ঘটনা এই পোস্টে না আসলে জানা হতো না।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

মন মাঝি's picture

আমি ক্যাসেটে গান রেকর্ড করাতাম সাইন্স ল্যাবের রেইনবো আর মাঝেমাঝে তার পাশের দোকানটা থেকে (নাম মনে নেই)। ক্যাসেটের কথা যা যা বললেন তার সব মনে পড়ছে। হা হা! তবে আমি "স্পিরিট" দিয়ে প্লেয়ারের হেড পরিষ্কার করতাম ডেটল দিয়ে না। আমার ধারণা ছিল ডেটল/স্যাভলনের একটা রেসিডিউ থেকে যাবে হেডে যা ক্যাসেটের ফিতার ক্ষতি করবে। আর ক্যাসেটের ফিতায় ফাঙ্গাসও পড়তো বৃষ্টির মৌসুমে। এটা নিয়ে বড়ই উচাটনে থাকতাম প্রিয় গানগুলি নষ্ট হয়ে যাওয়ার ভয়ে।

****************************************

ষষ্ঠ পাণ্ডব's picture

অসংখ্য ছেলেমেয়েকে গান শোনানো, গান শুনতে শেখানো, গায়ক-গায়িকা-ব্যান্ড চেনানো, গানের জনরাঁ চেনানো, ইংলিশের একটা নতুন ফন্ট আবিষ্কার, পাশ্চাত্য সঙ্গীতের ভুবনের দরজা খুলে দেবার জন্য 'রেইনবো' আর 'কবির ভাই'কে নিয়ে বিশাল স্মারক গ্রন্থ প্রকাশ করা উচিত। 'রেইনবো' আর 'কবির ভাই'-এর সুবিধাভোগী আমরা মরে যাওয়ার বা স্মৃতিভ্রংশ হওয়ার আগেই এটা করে যাওয়া উচিত। পাশের দোকানটার নাম কি 'সুরের ভুবন' ছিল? সেখানে একজন প্রৌঢ়ত্বের সীমা ছাড়ানো সেলসপারসন ছিলেন যার ঠোঁটে লম্বালম্বি সাদা দাগ ছিল।

বাসায় কাঠের, বার্নিশের বা রঙের মিস্ত্রি কাজ করলে মেথিলেটেড স্পিরিট পাওয়া যেতো। সেখান থেকে ছোট বোতলে করে খানিকটা হাতানো গেলে ক্যাসেট প্লেয়ারের হেড পরিষ্কার করা ছাড়াও আরও সব গুরুত্বপূর্ণ বৈজ্ঞানিক গবেষণায় সেই স্পিরিট ব্যবহৃত হতো। কখনো আবার বড় বোনের নেইলপলিশ রিমুভার সরানো গেলে সেটাও হেড পরিষ্কারে ব্যবহৃত হতো। স্পিরিটের গন্ধ আমার বরাবরই ভালো লাগতো তা সেই আমলের বার্নিশের মেথিলেটেড স্পিরিট হোক আর এই আমলের নানা প্রকার সুগন্ধি ও স্বাদযুক্ত পরিশোধিত স্পিরিটই হোক। তবে সমস্যাটা দুই আমলেই এক, চাইলেই পাওয়া যায় না।

ক্যাসেট কিছু দিন পর পর সকালের হালকা রোদে দুই/তিন ঘন্টার জন্য শুকাতে দিলে আর ফাঙ্গাস পড়তে পারে না। তবে দুপুরের রোদে দেয়া যাবে না, বেশিক্ষণও রোদে রাখা যাবে না।

ঈদুল ফিতরের সময় নতুন নতুন সব গান নিয়ে ৬০ মিনিটের ক্যাসেট বের হতো - একক শিল্পী, একক ব্যান্ড, মিক্সড শিল্পী, মিক্সড ব্যান্ড - দাম পঁয়ত্রিশ টাকা। দুর্গা পূজায় কলকাতাতে নতুন গানের অ্যালবাম বের হতো। কিছুদিনের মধ্যে সেগুলো ঢাকায় চলে আসতো।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

ষষ্ঠ পাণ্ডব's picture

ক। বাংলা ভাষায় গান গাওয়া ব্যান্ডগুলোর মধ্যে প্রথম সারির ব্যান্ডগুলোর বেশিরভাগ চট্টগ্রাম থেকে উঠে আসা। আর আপনি বস্‌ চট্টগ্রামের মানুষ হয়ে 'সোলস' ছাড়া তেমন কিছু না শুনলে আপনার তো ন্যাড়ার মতো 'সাত দিনের ফাঁসি আর তিন মাসের জেল' হওয়া উচিত! দেঁতো হাসি

খ। আমার মন্তব্য আপনি নির্দ্বিধায় ব্যবহার করতে পারেন, আমার নাম উল্লেখ করে বা না করে।

গ। পতিত সামরিক স্বৈরাচার এরশাদের পতনের পর থেকে, মানে একানব্বই সাল থেকে সারা দেশে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে একটু বড় মাপের অনুষ্ঠান মানে সেখানে এক বা একাধিক ব্যান্ডের (স্থানীয় বা জাতীয়) কনসার্ট থাকা একটা অবধারিত ব্যাপার ছিল। অবশ্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আর চট্টগ্রাম মহানগরের বড় কলেজগুলোতে তখন শিবিরের প্রচণ্ড দাপট। শিবিরের রাজ্যে 'সাইমুম শিল্পী গোষ্ঠী' ছাড়া আর কেউ কনসার্ট করার সুযোগ পেতো কিনা সেটা আপনি ভালো বলতে পারবেন।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

নীড় সন্ধানী's picture

ক) আসলে আমি জন্মেছিলাম একটু বুড়ো হয়ে। কারণটা আমার বাবা। আমার গান শোনার গুরু। বাবা ছিলেন গানপাগল মানুষ। শত শত সনি টিডিকে ম্যাক্সেল ক্যাসেটে ভর্তি ছিল বাসা। সবই বাবার সংগ্রহ। যতক্ষণ বাসায় থাকতেন ততক্ষণ গান বাজতো বাসায়। বাবার কারণে ব্যাণ্ডের যুগ আসার আগে লতা কিশোর হেমন্ত রফি মেহদী হাসান জগজিত সিং আমাকে গ্রাস করে নিয়েছিল। ব্যাণ্ডের যুগ আসলো আশির দশকের মাঝামাঝিতে আমাদের কলেজ ভার্সিটি জীবনে। ফলে পুরোনো যুগ ফেলে আমি ঠিক ব্যাণ্ডে ঝাঁপিয়ে পড়তে পারিনি। কিন্তু বাছাই কিছু গান আমাকে বুঁদ করে রাখতো। বাছাই কিছু ব্যাণ্ডের ক্যাসেট কিনেছি আমি সেই ৩৫ টাকার ফিতা ক্যাসেটের যুগে। আপনি ফিতা ক্যাসেটের যে স্মৃতি উসকে দিলেন তাতে সাত দিনের ফাঁসি কিছুই না হাসি

খ) অবশ্যই নামসহ উল্লেখ করবো আপনার ফিতামূলক স্মৃতিবাক্যগুলো।

গ) চবিতে শিবিরের দাপট থাকলেও ৯০ ইলেকশনে সম্মিলিত ছাত্রঐক্য বিজয়ী হবার পর যেসব বড় অনুষ্ঠান হয়েছে তাতে ব্যাণ্ডেরই জয়জয়কার ছিল। সাইমুম গোষ্ঠির পাত্তা ছিল না আর। নব্বই দশকের শুরুতে আইয়ুব বাচ্চুও গেয়েছিলেন একাধিকবার। সম্ভবত সেই তুমি গানটার জোয়ারে অডিয়েন্সের চেয়ার টেবিল মটমট করে ভেঙ্গে পড়েছিল একবার।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

এস এম মাহবুব মুর্শেদ's picture

লেখাটা খুব ভালো লেগেছে।

ওডিন's picture

আজ এবি'র চলে যাওয়ার পাঁচ বছর।

কল্যাণ's picture

গত কয়দিন ঘুমন্ত শহরে শুন্তেছি, এই নেন সুখি ছেলে

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

সত্যপীর's picture

আমরা দেখেছি যারা বুনোহাঁস শিকারীর গুলির আঘাত
এড়ায়ে উড়িয়া যায় দিগন্তের নম্র নীল জ্যোৎস্নার ভিতরে,
আমরা রেখেছি যারা ভালোবেসে ধানের গুচ্ছের ’পরে হাত,
সন্ধ্যার কাকের মতো আকাঙ্ক্ষায় আমরা ফিরেছি যারা ঘরে;

..................................................................
#Banshibir.

ষষ্ঠ পাণ্ডব's picture

১৯৯৬ সালের মার্চের প্রথম সপ্তাহে আমাদের ব্যাচের Rag Day ছিলো। Rag বলতে এখন যে ইতরামীকে বোঝায় তখন তা ছিলো না। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদায়ী বর্ষের শিক্ষার্থীরা তাঁদের অ্যাকাডেমিক জীবনের শেষ কয়েকটা দিন নানা আয়োজনে মেতে উঠতেন। সেটাকেই Rag বোঝাতো। আমাদের আয়োজনের শেষ রাতের কনসার্ট ছিল এলআরবি'র। বিকেলে অ্যাঞ্জেল শফিক আমাদের নিয়ে একটা চার লাইনের গান লিখলেন, আইয়ুব বাচ্চু সুর দিলেন, রাতে এলআরবি আর তার সাথে উপস্থিত গোটা অডিটোরিয়ামের দর্শক সেই গান গাইলেন।

এগুলো সব অন্য ভুবনের, অন্য সময়ের, অন্য সব মানুষের গল্প। এগুলো এখন বাস্তবতার সীমানার বাইরে চলে গেছে। যেমন আইয়ুব বাচ্চু আর এলআরবি'ও এখন অন্য ভুবনের, অন্য সময়ের হয়ে গেছে।

নিশ্চয়ই তিনি যা নিয়েছেন তা তাঁরই
এবং যা দিয়েছেন তাও তাঁরই
সব কিছু তাঁর কাছে নির্ধারিত সময়ে বাঁধা
অতএব তুমি ধৈর্য্য ধারণ করো
এবং সুফলের প্রত্যাশা করো


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

Post new comment

The content of this field is kept private and will not be shown publicly.