শহীদুল জহির

উজানগাঁ's picture
Submitted by pranabesh on Wed, 18/01/2017 - 1:07am
Categories:

এমনই কোনো এক শীতের রাতে শহীদুল জহির চলে গিয়েছিলেন। আমি দেখি এই হাওয়া-বাতাসের রাতে আচমকা আজ জহির ঢুকে পড়েছেন আমার বেডরুমে। শোনাচ্ছেন এক আশ্চর্য শৃগালের কথা। কোনো-কোনো পূর্ণিমার রাতে সেই চতুর শৃগাল কেমন করে তাঁর লেখায় শব্দ জুড়ে দিয়ে যেত! কিংবা তাঁর স্বপ্নের ভেতর আটকা পড়া মানুষগুলো, যারা অতীত থেকে ভবিষ্যতে, ভবিষ্যত থেকে অতীতের দিকে তেড়ে যেতে-যেতে যে বিভ্রম তৈরী করতো সেসব কথা।

জহির নিজেও কি সেই বিভ্রান্তি, বিপন্ন-বিস্ময়ের ভেতরে থেকে বেরিয়ে এসে আমাদের গল্প শোনাতেন?

কিন্তু জহির কি কোথাও আছেন? শীতকাল বা পরকালে? ঐতো দেখা যায় তাঁর ডুমুর খেকো মানুষ। এইতো তাঁর ডলু নদীর হাওয়া।


Comments

অতিথি লেখক's picture

শহীদুল জহির বহুল পরিচিত নন্‌ - জীবদ্দশায় অথবা প্রয়াণের পর; বহুল পঠিতও নন্‌। তাঁর বই পাওয়া যায় খুবই অল্পসংখ্যক বিপণীতে। আজিজ-কনকর্ড-নিউমার্কেট-বাতিঘর ধরনের খুব অল্পকিছু বিপণী বিতান ছাড়া অধিকাংশ বই বিপণীর লোকজন তাঁর বা তাঁর বইয়ের নাম শোনেননি। এই দেশে বইয়ের পাঠকেরা বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতি; সেই পাঠকদের বড় অংশের কাছেও তাঁর নাম বা লেখা পৌঁছায়নি।

তার মানে কি এই যে শহীদুল জহির বাংলা সাহিত্যের একজন অনুল্লেখযোগ্য লেখক? এই প্রশ্নটার উত্তরের জন্য তাঁর যে কোন একটি উপন্যাস বা গল্প সংকলন পাঠ যথেষ্ট। তাঁর লেখাগুলো যদি পাওলো কোয়েলহো বা হারুকি মুরাকামি'র লেখার মতো দ্রুত অনেক ভাষায় অনুদিত হতো, দুনিয়াজুড়ে ভালো বিপণন করা যেতো তাহলে গোটা দুনিয়ার বইয়ের পাঠকেরা বুঝতে পারতেন শহীদুল জহির কী সৃষ্টি করে গিয়েছেন। তাঁর প্রয়াণের পরেও যে এমন কিছু করা যায় না তা নয়, কিন্তু বেড়ালের গলায় ঘন্টা বাঁধবে কে?

*******************************************

তারপর কোন একদিন এক্সিম ব্যাংকের অফিসার মামুনুল হাই ভূতের গলি থেকে মৈশুণ্ডী হয়ে রথখোলা যাবার পথে স্যান্ডেলের স্ট্র্যাপ ছিঁড়ে যাওয়ায় পা টেনে হাঁটতে হাঁটতে ভাবে এবার জহিরের একটা উপন্যাস সে ইংলিশে অনুবাদ করেই ছাড়বে। সেই অনুবাদ খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলতে চলতে একদিন শেষ হয় অথবা হয় না। কম ওয়াটের এনার্জি বাল্বের আলোয় প্যারী দাস রোডে অথবা আরামবাগে দি ঢাকা বুক সেন্টারে চান মিঞা সেই বই কম্পোজ করতে থাকে অথবা ছাপতে থাকে। সেফটিপিন নাকি কালো ক্লিপ অথবা গরম হাড়ি ধরার লুছ্‌নি খুঁজতে খুঁজতে জুলি ফ্লোরেন্স অথবা হুরে জান্নাত আসমান তারা গাউছিয়া চাঁদনী চকের ফুটপাথ হেঁটে হেঁটে ভুলে বাকু শাহ্‌ মার্কেটের কাছে চলে আসে। ফুটপাথের ওপর সে কোন এক জহিরের লেখা একটা ইংলিশ বইয়ের অনেক কপি পঞ্চাশ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখে। দি ঢাকা বুক সেন্টারের অনিয়মিত ও অপ্রতুল বেতনের কর্মচারী চান মিঞাকে এভাবেই হয়তো আয়ের সংস্থান করতে হয়। বিলিয়ন বিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরের কোন এক গ্রহে বসে অথবা দুই স্পেসের মধ্যবর্তী অন্য কোন এক স্পেসে বা অন্য কোন মাত্রায় বসে এই দৃশ্য দেখে জহির বিরক্তও হন না, বিমর্ষও হন না। তিনি কেবল দেখে যান অথবা লিখে যান।

উজানগাঁ's picture

আপনি গুছিয়ে একটা লেখা দেন শহীদুল জহিরকে নিয়ে। আপনি পারবেন। হাসি

অতিথি লেখক's picture

ছাগল দিয়ে হাল চাষ হয় না। তাই আমার ব্যাপারে আপনার আশাবাদ ফলপ্রসূ হবার নয়। এরচেয়ে আপনি একটা ছবিব্লগ দেন, তাহলে এই ব্লগে আমরা যেটুকু কম পেয়েছি সেটা পুষিয়ে যাবে। ছবিব্লগ মানে শহীদুল জহিরকে নিয়ে নয়, আপনার পছন্দসই যে কোন একটা।

কাকাতুয়া's picture

এত ছোট লেখায় কি মন ভরে?

উজানগাঁ's picture

এরচে বড় লেখার ক্ষমতা নাইরে ভাই!

অরূপ's picture

আপনারও লেখা দরকার, অনেক বেশী দরকার হাসি


অরূপের ব্লগ @ http://etongbtong.blogspot.com
অরূপের ফ্লিকার @ http://www.flickr.com/photos/harvie-krumpet

অতিথি লেখক's picture

আপনি ভালো লেখেন, খুব ভালো লেখেন উজানগাঁ।
-মোখলেস হোসেন।

উজানগাঁ's picture

ধন্যবাদ আপনাকে।

উজানগাঁ's picture

হয় না আর! মন খারাপ @অরূপ দা

আয়নামতি's picture

বাপরে বাপ! সেই ১৯৪৫ এ আপনাকে দেখেছি, আর আজ দেখলাম।
তাও ভালো, শহীদুল জহিরের ডলু নদীর হাওয়া মেখে ডুমুর খেঁকো মানুষের খোঁজ পড়লো!
সে ছুতোয় আপনি তো দেখা দিলেন। কিছুমিছু লিখবেন আরো, হারায়ে যাবেন না ভাইজান।

দেবদ্যুতি's picture

চলুক

...............................................................
“আকাশে তো আমি রাখি নাই মোর উড়িবার ইতিহাস”

Post new comment

The content of this field is kept private and will not be shown publicly.