ধর্মের কল বাতাসে নড়ে, আসুন ফুঁ দেই ঘরে ঘরে!

সাক্ষী সত্যানন্দ's picture
Submitted by silent_watcher [Guest] on Thu, 30/10/2014 - 7:20am
Categories:

ছোটবেলায় আমি স্কুলে পড়েছি একাধিক জেলায়, এবং অতি অবশ্যই একাধিক প্রতিষ্ঠানে। তন্মধ্যে প্রথমটি শহীদ শিক্ষক সামসুজ্জোহার রক্তেভেজা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ ক্যাম্পাসের এক কোণের ছোট্ট একরত্তি নার্সারি-স্কুল। (তখন মা-চাচা-ফুফুরা সদলবলে রাবিতে পাঠরত ছিলেন, একেকজন একেক পর্যায়ে।) রাবি ক্যাম্পাসে ঢুকতেই চোখে পড়ত নিতুন কুণ্ডুর স্থাপত্য। সাবাশ বাংলাদেশ! ‘সাবাশ বাংলাদেশ/ এ পৃথিবী অবাক তাকিয়ে রয়/ জ্বলে পুড়ে মরে ছারখার/ তবু মাথা নোয়াবার নয়’ এই কথাগুলো আমি শিখে ফেলেছিলাম স্কুলে ভর্তি হবার আগেই। আমি বরাবরই একটু হাবাগোবা টাইপের ছিলাম, তাই অনেক পরে সুকান্তের কবিতায় এই বাক্যগুলো খুঁজে পেয়ে বাড়াবাড়ি রকমের অবাক হয়েছিলাম! ৯০’র এরশাদ পতনের সমসাময়িক কোনও এক বিজয় দিবসে সেখানেই প্রথম বইমেলা দেখি। সেই বইমেলায় আব্বা কিনে দিয়েছিলেন কালিপদ দাসের লেখা জীবনী গ্রন্থমালার ‘বঙ্গবন্ধু’ খন্ডটি। তখন বেজায় মেজাজ খারাপ হয়েছিল। হবে নাইবা কেন? আমার বয়স তখন সাকুল্যে তিন হয়েছে কিনা গুনে দেখতে হবে। আর এমন এক বই পেলাম যে তাতে রংচং দূরে থাক, সাদাকালো ছবি পর্যন্ত নেই। পরদিন চাচা-ফুফুদের এক বন্ধুস্থানীয় ছাত্রনেতা উপহার দিলেন মোহাম্মদ হান্নানের ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধঃ কিশোর ইতিহাস’ বইটি। আমার জীবনের প্রথম ইতিহাসের পাঠ (পুস্তকপাঠ অর্থে) সেখান থেকেই। পেছনের কথা আমি ভুলতে পারিনা, ভুলতে চাইও না। তাই, পেছন ফিরে তাকালে আজ কিন্তু ভালোই লাগে, বইমেলা থেকে কেনা ‘প্রথম’ বইদুটোর স্মৃতিচারণ করতে।

রাবি ক্যাম্পাসেই প্রথম দেখেছিলাম “শহীদ স্মৃতি সংগ্রহশালা”। (সত্যি বলতে কি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় বহুদিন মনে আফসোস ছিল- আহা চারপাশে এত ইতিহাসের ছড়াছড়ি, অথচ সংগ্রহশালা তো নেই। আমার ধারণা ছিল বিশ্ববিদ্যালয় মানেই তাতে ডিন অফিস কিংবা রেজিস্ট্রার বিল্ডিঙের মত খুব স্বাভাবিক ভাবেই সংগ্রহশালাও থাকবে। আমাদের ছাত্রজীবনের শেষভাগে অবশ্য তা হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা গোপাল দাসের হাত ধরে গড়ে উঠেছিল “ডাকসু সংগ্রহশালা”। সে গল্প আরেক দিন করা যাবে।) রাবি ক্যাম্পাসের শহীদ স্মৃতি সংগ্রহশালায় ঢোকবার মুখে চোখে পড়ত পাক হানাদার বাহিনীর পরিত্যক্ত একটি ট্যাংক অথবা সাঁজোয়াযানের ধ্বংসাবশেষ। ভেতরে ছিল অধ্যাপক জোহা’র শার্ট ও আরো অনেক কিছু। সে জায়গা ঘুরে এসে আমার মনে হত আমারও থাকা দরকার একটা শহীদ স্মৃতি সংগ্রহশালা। সেই বয়সের মুসকিল আসান একজনই, আব্বা (আগেই বলে রাখি, ভদ্রলোক একটু আধ-পাগলা কিসিমের, অনেকটা রাশেদের বাবার মত)। সোৎসাহে বাপ-বেটা সাজিয়ে তুলতাম আমাদের ছোট্ট সংগ্রহশালা। এখন ভাঙ্গা ট্যাংক পাই কোথায়? সপ্তাহখানেক আগেই চমৎকার লাল টুকটুকে একটা চাবি দেয়া খেলনা গাড়ি পেয়েছিলাম। বাপ-বেটা কার মাথায় যে সেটা ভাংবার বুদ্ধি এসেছিল তা ইতিহাসবিদেরা ঘেঁটে বার করবেন। আপাতত ইতিহাসের সত্য এই যে- নতুন খেলনা গাড়ী এক আছাড় দিয়ে ভেঙ্গে ভেতরের কালো প্লাস্টিকের ফ্রেমটুকু বের করে নেয়া হয়েছিল। কেননা ওই বেচারা ফ্রেমটুকুর প্রচণ্ড মিল ছিল সেই ট্যাঙ্কের ধ্বংসাবশেষের সঙ্গে। তারপর সেই ভাঙ্গা গাড়ী (মতান্তরে ভাঙ্গা ট্যাংক) শোভা পেতে লাগল আমাদের সংগ্রহশালার প্রবেশদ্বারে। মিষ্টির বাক্স কেটে বেদি বানিয়ে দিলেন আব্বা। কাঁচা হাতে তার নামফলকটা মূল ফলকের অনুকরণে আমিই লিখলাম।

দ্বিতীয় জেলার প্রথম স্কুলটিতে মূল ভবনের মাথায় বড় অক্ষরে লেখা থাকতঃ ‘মওলানা কছীমউদ্দীন স্মৃতি ট্রাস্ট’। একই জেলায় অবস্থিত পরের স্কুলটিতেও দেখি একটি ভবনের গাড়ি বারান্দার কার্নিশে কালো অক্ষরে লেখাঃ ‘মওলানা কছীমউদ্দীন ছাত্রাবাস’। পিচ্চিকালের বুদ্ধিতে বুঝলাম উনি বিশাল কেউকেটা কেউ হবেন। এখন কেন কেউকেটা এই প্রশ্নের জবাব স্কুলে কেউ জানেন না (এটা দন্ডনীয় অপরাধ হওয়া উচিৎ)। শেষমেশ ভরসা আবার সেই আব্বা। আগেই বলেছি ভদ্রলোক একটু পাগলা কিছিমের (নইলে আড়াই বছরের ছেলেকে কেউ ডিকশনারি আর মানচিত্র দেখা শেখায় নাকি?) উনি ছিলেন ব্যাবহারিকে বিশ্বাসী। সেই সূত্রে তিনি একদিন আমাকে নিয়ে গেলেন মওলানা কছীমউদ্দীনের কবর দেখাতে। সেটা কি পথে পড়েছিল নাকি কবর দেখার উদ্দেশ্যেই যাওয়া হয়েছিল সেটা বের করবার ভারও ইতিহাসবিদদের ওপর ছেড়ে দিলাম। কবরে গিয়ে বাপ-বেটা সেই কবর জিয়ারত করে ফেরার পথে আব্বা শোনালেন নিজামীর আল-বদর বাহিনীর হাতে নিরীহ একজন মাওলানা কছীমুদ্দিনের শহীদ হবার শোকাবহ কাহিনী। ততদিনে মোহাম্মদ হান্নানের লেখা কিশোর ইতিহাস পড়ে একেবারে বখে গিয়েছি। সাথে আছে আব্বার প্রয়োজনীয় টিকা-টিপ্পনি। সব মিলিয়ে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী কি, জামায়াত-শিবির কি, আল-বদর কি জেনে গেছি ভালমতই। অন্তত ঐ বয়সে যতটুকু জানা প্রয়োজন।

৯০’র পরে যারা জন্মেছে তারা ইতিহাস চেপে রাখা সেই অন্ধকার সময় টুকু না দেখায় এই জানার গুরুত্বটুকু হয়তো আলাদা করে বুঝবে না। আমি নিজেই কি ছাই বুঝেছিলাম নাকি? ইতিহাসের এই তত্বীয় ও ব্যাবহারিক পাঠের গুরুত্ব হাড়ে হাড়ে বুঝেছিলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবনে। সেখানে আমি সংযুক্ত ছিলাম আব্দুল কাদের মোল্লার স্মৃতি-কলুষিত শহীদুল্লাহ হলে। হল জীবনে ইসলামী ছাত্র শিবির বহুবার কাবাডি-কাবাডি-কাবাডি বলে আমাকে টেনে-হিঁচড়ে তাদের কোর্টে নিয়ে যাবার চেষ্টা করেছে। কিন্তু আব্বার শিক্ষায় দম ধরে রাখতে পেরেছি ভালভাবেই। বহুবছর পরে বাবার সাথে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের স্মৃতি মেলাতে গিয়ে এমন কিছু ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি রকমের মিল পেয়ে দুজনেই মজা পেয়েছি। আব্বাকে শিবিরের দাওয়াত দিতে পিছু লেগেছিল মীর কাশেম আলী। ভাগ্য বড় রসিক, তিন দশক পরে আমি যখন শহীদ মিনারে কোনও এক মানব্বন্ধনে অংশ নিই আমার গলায় ঝোলানো প্ল্যাকার্ডে কাকতালীয় ভাবে শোভা পাচ্ছিল সেই একই মীর কাশেম আলীর নাম! যাহোক, আব্বার ওপরেও কিন্তু আরেক আব্বা ছিলেন, অর্থাৎ দাদা। সেকারণে মীর কাশেম আলীর মত ধুরন্ধর খেলোয়ারের সাথেও আব্বা দম ধরে নিজের কোর্টে গ্যাঁট হয়ে বসে ছিলেন। দুই প্রজন্মের এই ইতিহাস থেকেই আমি জীবন থেকে নেয়া একটি সত্য অনুভব করিঃ নৈতিকতা আর ইতিহাসের প্রথম হাতেখড়ি হতে হবে পরিবারেই। আজ থেকে আর দু-এক দশক পরে কোন শিশুটি শাহবাগে যাবে আর কোন শিশুটি গোলামের পরের প্রজন্মের জানাজায় যাবে সেটি কিন্তু (অনেকাংশে, পুরোপুরি নয়) নির্ধারিত হয়ে যাচ্ছে শিশুকালেই। তা, আমরা কি করছি?

ক’দিন আগে দীপাবলির বাজি-পটকার শব্দে মোড়ানো উৎসবমুখর পরিবেশে চমৎকার একটি ঘটনা ঘটেছে। ছড়াকার মৃদুলদা’র ভাষায়ঃ জামায়াতের গোআ-মারা গেছে। তার ১% অনুসারীরা আত্মীয়স্বজনের ছুতোয় আড়াই দিন ধরে মানুষ-জন জড়ো করে বিশাল শোডাউন করে পল্টনে জানাজা করেছে। একজন হিসেব কষে দেখিয়েছেন সেখানে উপস্থিতি ৩০ হাজারের ঘরে, মোটেই দাবীর মত লক্ষাধিক না। যাই হোক, লাখ-হাজারে কিছু যায় আসে না। ১% ছিল এবং আছে সেটি বাস্তবতা। ভবিষ্যতেও বোধকরি থাকবে সেটিও বাস্তবতা। কিন্তু তাদের হার আরও বেড়ে যেন না যায়, সেই দায়টুকু আমার আপনার সবার। বাংলা প্রবাদে বলেঃ ‘ঘুমিয়ে আছে শিশুর পিতা সব শিশুরই অন্তরে’। সেই অনাগত সেই সুপ্ত পিতাটি জামায়াতী হবে না কি মানুষ হবে সেটি নির্ধারনের সুযোগ অনেকটাই বর্তমানের পিতাদের হাতে। নেবেন কি সে সুযোগটা? চাইলে স্বার্থপরের মত নিজের সন্তানকে ইতিহাস না জানিয়ে “আই হেইট পলিটিক্স” শেখাতে পারেন। তাতে শিবির কিন্তু তার ভাগটা ছেড়ে দেবে না, বরঞ্চ সুযোগ পাবে। পারলে বাপ-বেটা একসঙ্গে বসে ইতিহাসের আদান প্রদান করুন। হাননান সাহেবের বইয়ের মত সাবলীলভাবে ইতিহাসের গল্পগুলো শিশুকালেই সন্তানকে জানিয়ে দিন। পরে কিন্তু অনেক দেরী হয়ে যাবে। আজকে সূদীর্ঘ ৪৩ বছর পরে হলেও মওলানা কছিমউদ্দীনের হন্তারকের ফাঁসির রায় হয়েছে। তাঁর স্বজনেরা নিশ্চয় বহুরাত পর একটু শান্তিতে ঘুমাবেন। আপনার স্বজনের শান্তি যেন ৪৩ বছর পরে আদায় করে নিতে না হয় সে দায় কিন্তু আপনারই।

ক’দিন আগে টকশোজগতের বিখ্যাত হেজেমনি ও বিশিষ্ট বামায়াতী রেটোরিক ফরহাদ মজহার ইনিয়ে বিনিয়ে বলেছেনঃ “নেতিবাচকতা পরিহার করার গুরুত্ব” সম্পর্কে। আমি সম্পূর্ণ একমত। নেতিবাচকতা পরিহার্য, তবে তার প্রথম ধাপ হল নেতিবাচক এলিমেন্ট (উদাহরণঃ গোআ, পিয়াস করিম ইত্যাদি) চিহ্নিত করণ। আর এই নেতিবাচক এলিমেন্ট চিহ্নিত করণ শুরু হোক পরিবারেই, একেবারে শিশুকাল থেকে। আমরা শিশুমনে উল্টোপাল্টা অকাজের জিনিস না ঢুকিয়ে খারাপকে খারাপ, রাজাকারকে রাজাকার, আল-বদরকে আল-বদর হিসাবে চেনাতে পারি। আমরা বাচ্চাদের যে গল্প শোনাব তাতে নেতিবাচক চরিত্রে রাক্ষস-খোক্কস না বলে নিজামি-ছাইদি বলতে পারি। তাতে ছোট থেকেই তারা নেতিবাচককে নেতিবাচক হিসেবে চিহ্নিত করতে শিখবে, যে শিক্ষা কাজে দেবে আজীবন। (সত্যি বলতে কি, আমি গোআ’র ইতিহাসটুকু চেপেচুপে বাচ্চাদের উপযোগী গল্প বানিয়ে লেখবার চেষ্টা করছি, আধখানা হয়েছে। জানেনই তো আমার বড্ড মুখ খারাপ, তাই শেষ করে উঠতে পারছি না।) সচলের চমৎকার শিশু-লেখিয়েরা যোগ দিলে আমরা কিন্তু এইসব নেতিবাচক চরিত্রের আমলনামাগুলো শিশুদের উপযোগী করে একটা আর্কাইভে জমা করে ফেলতে পারি।

তারপর? তারপর আবার কি, বাচ্চাকে ডালিমকুমারের পাশাপাশি গোলামকুমারের গল্পও একটু শোনাবেন। ‘বিউটি এন্ড দ্যা বীস্ট’ শোনানোর সঙ্গে ‘মুক্তি এন্ড দ্যা বদস’ এর রূপকথাও একটু শোনাবেন। তারপর ছুটি। এই বাচ্চারা বড় হলে নিজেরাই কাবাডি-কাবাডি-কাবাডি বলে সবাইকে নিজের কোর্টে নিয়ে আসবে। আমরা খালি দমটুকু ধরিয়ে দিই, নাকি বলেন? সারা বাংলার আনাচে-কানাচে এমন হাজারো নিরীহ কছিমউদ্দীনেরা ঘুমিয়ে আছেন। তাদের অভিশাপটা যেন আমাদের অথবা আমাদের শিশুদের গায়ে না পড়ে। খবরদার!


Comments

গৃহবাসী বাউল's picture

মিজান, পিষে ফ্যালো
আঙ্কেলের জন্য গুরু গুরু
আপ্নের জন্য হাততালি এবং কোলাকুলি

-----------------------------------------------------------
আঁখি মেলে তোমার আলো, প্রথম আমার চোখ জুড়ালো
ঐ আলোতে নয়ন রেখে মুদবো নয়ন শেষে
-----------------------------------------------------------

সাক্ষী সত্যানন্দ's picture

লইজ্জা লাগে আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- কোলাকুলি

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

মর্ম's picture

বই করার জন্যই কাজ হোক। যেটা বাজারে পাওয়া যাবে, কেনা যাবে, পড়া যাবে, উপহার দেয়া যাবে।

সুহান রিজওয়ানের গল্পগুলোর মত গল্প লাগবে, হুমায়ূন আহমেদের 'সূর্যের দিন' অবলম্বনে করা কমিক্সের মত কমিক্স। চমৎকার ইলাস্ট্রেশন, ছবিঠাসা বই, চাই কি নিয়মিত আসার ম্যাগাজিন- কত কিছুই তো হতে পারে। আসুক না এসব।

বইমেলা থেকে খুঁজেপেতে 'গোয়েন্দা ঝাকানাকা'র কমিক্স যদি আমরা পেয়ে খুশি হই, এগুলো পেলেও সমান কি তার চাইতে একটু বেশি খুশিই হব।

সচলায়তনের ব্যানারে একটা সুসংগঠিত উদ্যোগ নেয়া হোক- কে জানে, আমরা হয়ত এ ফেব্রুয়ারিতেই কিছু একটা হাতে পেয়ে যাব।

ইচ্ছা থাকলেই উপায় হবে। হাসি

~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...

সাক্ষী সত্যানন্দ's picture

প্রিয় ছড়াকার কাম লাল-খাতাকার,
এই প্রকল্পে যে কটা নাম এক চান্সে মনে আসছিল তার মধ্যে আপনার নামটাও ছিল।
(যদি বাইচান্স কারো নাম বাদ পড়ে যায় এই ভয়ে কারো নাম লিখি নি।)
বহুদিন পর আপনাকে দেখে ভাল লাগল। চলুন শুরু করি। হাসি

ইচ্ছা থাকলেই উপায় হবে।

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

অতিথি লেখক's picture

পরিবারতো বটেই, প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষকরাও এগিয়ে আসতে পারে।

গোঁসাইবাবু

সাক্ষী সত্যানন্দ's picture

চলুক
অবশ্যই, নিচে মাসুদ সজীবের মন্তব্য দ্রষ্টব্য হাসি

[ তবে, পরিবারের শিক্ষা ঠিক না হলে হাজার বছরের স্কুলিংও কোনও কাজে আসে না রে ভাই। ]

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

তিথীডোর's picture

তারা দাগিয়ে গেলাম।

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

সাক্ষী সত্যানন্দ's picture

হাসি আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

Sohel Lehos's picture

সচলে সচরাচর গল্প, কবিতা, ভ্রমণ, ছবি ব্লগ, এবং রান্না-বান্না ছাড়া অন্য কিছু পড়ি না। আপনার লেখাটি পড়লাম। ভাল লাগল। যেকোন ব্যাপারে শিক্ষা শিশু বয়স থেকে হওয়া উত্তম। সেটা চিরকালের জন্য মনের ভেতর দাগ রেখে যায়। চলুক

সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল হাসি

সাক্ষী সত্যানন্দ's picture

ধন্যবাদ সোহেল লেহস,
আপনি গল্পবাজ মানুষ। আপনার সংস্পর্শে আসা শিশুদের মুক্তিযুদ্ধের বীরত্বের আর ত্যাগের পাশাপাশি কুলাঙ্গারদের গল্পগুলোও নিয়মিত শোনাবেন তাহলে। হাসি

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

মাসুদ সজীব's picture

চলুক চলুক

বাংলাদেশের বেশিভাগ পরিবার এই মুক্তিযুদ্ধ-রাজাকার বিষয়ে অসচেতন, বাংলাদেশের গ্রামে-মফস্বলে পরিবারগুলো তাদের সন্তানকে ৭১ এর অভিজ্ঞতা কিংবা গল্প শোনায় না। ফলে তাদের সন্তানদের মাঝে ৭১ এর জ্ঞান থাকে না, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ভালোবাসা জন্মায় না। আর এইসব শিশু-কিশোর বন্ধু এবং নানান সংগঠন দ্বারা এক সময় ব্রেইন ওয়াশ হয়ে যায় আর একবার যে ছাগুদের দ্বারা ব্রেইন ওয়াশ হয় তাকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে নিয়ে আসা সম্ভব না। অপরদিকে জামাতি পরিবার তাদের সন্তানকে জামাতি জ্ঞান দিতে কখনো কার্পণ্য করে না, তারা মূলত মাদ্রাসায় পড়ালেখা করে। আর মাদ্রাসা শিক্ষায় মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কোন আলোচনা থাকে না। ফলে তারা যতই শিক্ষিত হোক তারা চেতনাগত অবস্থান থেকে বাব-দাদার উত্তরসূরি হয়ে থাকে। এদেরকে পরিবর্তন করা সম্ভব না।

এই বিষয়গুলো বিবেচনা নিলে আমার মনে হয় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো প্রাথমিক শিক্ষা। স্কুল-মাদ্রাসার সর্বত্র মুক্তিযুদ্ধের ত্যাগের গল্প, রাজাকারদের হিংস্রতার গল্প বলতে পারলে পরিবর্তনটা দ্রুত হবে। কারণ ছেলেবেলায় যে বিশ্বাসের বীজ বোপণ করা হবে সেটিই পূর্ণ বয়সে শাখা-প্রশাখা নিয়ে বিকাশিত হয়, তখন সেটিকে উপড়ে ফেলা সহজ নয়। মাদ্রাসায় লক্ষ কোটি শিশুকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস থেকে দূরে রেখে সবাইকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে নিয়ে আসা সম্ভব না। সরকারকে এইদিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত।

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

সাক্ষী সত্যানন্দ's picture

হাসি আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

Quote:
বাংলাদেশের বেশিভাগ পরিবার এই মুক্তিযুদ্ধ-রাজাকার বিষয়ে অসচেতন, বাংলাদেশের গ্রামে-মফস্বলে পরিবারগুলো তাদের সন্তানকে ৭১ এর অভিজ্ঞতা কিংবা গল্প শোনায় না। ফলে তাদের সন্তানদের মাঝে ৭১ এর জ্ঞান থাকে না, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ভালোবাসা জন্মায় না।

এর একটা কারণ কন্টেন্টের অভাব, যেটা মেটানোর চেষ্টা আমরা করতে পারি। সবাই তো আর গল্পবলার ক্ষমতা নিয়ে জন্মে না। খুব কম মানুষই আছে যারা বাচ্চাকে বানিয়ে গল্প শোনায়।

Quote:
আর এইসব শিশু-কিশোর বন্ধু এবং নানান সংগঠন দ্বারা এক সময় ব্রেইন ওয়াশ হয়ে যায় আর একবার যে ছাগুদের দ্বারা ব্রেইন ওয়াশ হয় তাকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে নিয়ে আসা সম্ভব না।

একজ্যাক্টলি! ব্রেইন যখন ধোয়ামোছা হবেই, তখন পরিষ্কার ফোটানো পানি দিয়েই হোক। ইবোলা-এইচাইভি মেশানো পানি দিয়ে শিশুদের মগজ ধোয়া হোক এটা চাইনা। তাই নিরাপদ পানির যোগান দিতে হবে আমাদেরই।

Quote:
অপরদিকে জামাতি পরিবার তাদের সন্তানকে জামাতি জ্ঞান দিতে কখনো কার্পণ্য করে না, তারা মূলত মাদ্রাসায় পড়ালেখা করে। আর মাদ্রাসা শিক্ষায় মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কোন আলোচনা থাকে না। ফলে তারা যতই শিক্ষিত হোক তারা চেতনাগত অবস্থান থেকে বাব-দাদার উত্তরসূরি হয়ে থাকে। এদেরকে পরিবর্তন করা সম্ভব না।

দাগানো এই অংশটুকুর সাথে একটু দ্বিমত আছে। মাদ্রাসা ছাত্রদের পরবর্তীতে জামাতে ঢুকে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু জামাতি পরিবারের বাচ্চারা মাদ্রাসায় পড়ছে এটা সাধারনত হয় না। বিচিত্রায় গোলাম আজম একবার এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলঃ 'আমি আমার সন্তানদের মাদ্রাসায় দেইনি যেন তারা উচ্চশিক্ষিত হতে পারে'। আফসোস, মাদ্রাসাপড়ুয়াদের প্রতি এতটা কটাক্ষ করার পরেও গোলাম আজমের প্রতি তাদের অনুরাগ কমে না, ক্ষেত্রবিশেষে বাড়ে।

Quote:
এই বিষয়গুলো বিবেচনা নিলে আমার মনে হয় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো প্রাথমিক শিক্ষা। স্কুল-মাদ্রাসার সর্বত্র মুক্তিযুদ্ধের ত্যাগের গল্প, রাজাকারদের হিংস্রতার গল্প বলতে পারলে পরিবর্তনটা দ্রুত হবে। কারণ ছেলেবেলায় যে বিশ্বাসের বীজ বোপণ করা হবে সেটিই পূর্ণ বয়সে শাখা-প্রশাখা নিয়ে বিকাশিত হয়, তখন সেটিকে উপড়ে ফেলা সহজ নয়।

একমত, সেই ত্যাগের গল্প কিংবা রাজাকারদের হিংস্রতার গল্পওলা কনটেন্ট খুব বেশি নেই। সেগুলো তৈরির কাজ শুরু হয়ে যাক, এক্ষুনি।

Quote:
মাদ্রাসায় লক্ষ কোটি শিশুকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস থেকে দূরে রেখে সবাইকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে নিয়ে আসা সম্ভব না। সরকারকে এইদিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত।

শুধুমাত্র মাদ্রাসাকে আলাদা করে দেখা কি খুব দরকার? প্রাইমারী পর্যায়ে একটা অভিন্ন সিলেবাস থাকা উচিৎ। সবার অবস্থা কমবেশি একই। তাছাড়া কারা সেই সিলেবাস পড়াবেন সেটাও চিন্তার বিষয়। জাফর স্যারের গল্প-উপন্যাসে চিত্রিত রাজাকারপন্থী শিক্ষকেরা ছড়িয়ে আছেন আমাদের আশেপাশেই। (তবে মাদ্রাসায় সহপাঠ্যক্রমিক কার্যক্রমের তীব্র অনুপস্থিতি রয়েছে। সেখানে আলাদা নজরের প্রয়োজন অবশ্যই।)

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

মাসুদ সজীব's picture

Quote:
শুধুমাত্র মাদ্রাসাকে আলাদা করে দেখা কি খুব দরকার?

প্রাইমারি থেকে হাইস্কুল অল্প মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে পড়ানো হলেও মাদ্রাসায় একেবারেই হয় না তাই মাদ্রাসাকে জোর দিলাম। একটা অভিজ্ঞতা শেয়ার করি। কিছুদিন আগে গ্রামের বাড়ীতে গিয়ে দেখি বাড়ীর সামনেই একখান মাদ্রাসা হয়েছে। প্রতিষ্ঠাতা হুজুর পরিচিতজন, ছোটবেলায় মক্তবে উনার কাছে পড়েছিলাম। এবং উনার সাথেই স্লোগান দিয়েছিলাম “আমরা হব তালেবান এবং বাংলা হবে আফগান।যাকগে, সে বহুকাল আগের কথা, পুরানো পাপের কথা বলতে নেই চোখ টিপি তো সেখানে হুজুরের সাথে কথা বললাম কি পড়ানো হয়, কিভাবে পড়ানো হয়, কারা পড়ায় এইসব। এবং জানলাম কোথাও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিন্দুমাত্র পড়ালেখা নেই, হুজুর জবাব দিলেন দুনিয়ার এই ফ্যাসাদ নিয়ে তারা পড়ান না অ্যাঁ । তারা আখিরাত আর আমল নিয়ে পড়ান খাইছে ! মুক্তিযুদ্ধ যাদের কাছে ফ্যাসাদ তাদের কাছে ৭১ নিয়ে কিছু আশা করা যায় না। তবু বিকেলে আমি মাদ্রাসার ছেলেদের সাথে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কথা বলেছি, তাদের বেশিভাগ আমার কথা শুনে আকাশ থেকে পড়েছে। এবং কয়েকজন বলেছে তাদেরকে তাদের শিক্ষক বলেছে সাঈদী হুজুর-নিজামী হুজুর আল্লাহর পাকবন্দা, তাদেরকে ষড়যন্ত্র করে নাকি বিচার করা হচ্ছে! এই সরকার নাস্তিক সরকার! এক হুজুরকে জিজ্ঞেস করলাম কি ব্যাপার আপনারা না দুনিয়ার ফ্যাসাদ নিয়ে পড়ান না তো আওয়ামি লীগ, সাঈদী-নিজামী এগুলো কি দুনিয়াদারী না? উত্তর নেই, ফলাফল সন্ধ্যায় বাজারে গেলাম, বেশ কয়েকজন মুরুব্বী বলাবলি করলো আমি বখে গিয়েছি, বাপ-দাদার পথ থেকে সরে গিয়েছি। সেই কারণে বললাম মাদ্রায় জোর দিতে হবে বেশি। অভিন্ন সিলেবাস করলেও কারা পড়াচ্ছেন সেটা গুরুত্বপূর্ণ।

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

সাক্ষী সত্যানন্দ's picture

Quote:
অভিন্ন সিলেবাস করলেও কারা পড়াচ্ছেন সেটা গুরুত্বপূর্ণ।

চলুক

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

অতিথি লেখক's picture

পোষ্ট পড়ে চোখ জ্বালা করে কেন?

রিপন

সাক্ষী সত্যানন্দ's picture

মন খারাপ

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

অতিথি লেখক's picture

অসাধারন উদ্যোগ । চলুক

কয়েকদিন থেকেই ভাবছিলাম
- এই চরিত্রগুলার বর্ননা,
- এদের উথ্বান,
- মুক্তিযুদ্ধে এদের নৃশংস ভুমিকা,
- সেই নৃশংসতার ভিকটিমদের পরিচয়,
- এদের বিচার প্রক্রিয়া,
- এবং সবশেষে রায় নিয়ে একটা সামারি ওয়েবসাইট বানাবো ।

রাজাকার সমগ্রের ওয়েব ভার্সন আরকি । যাতে আজকালকার আই হেট পলিটিক্স জেনারেশন এবং আই হেট বুকস জেনারেশন ইন্টারনেট ঢুকে ফেসবুকিং পাশাপাশি এক নজরে দেখে নিতে পারে নরপশুদের ।

==============================
দস্যু ঘচাং ফু

সাক্ষী সত্যানন্দ's picture

সাবাস দস্যুমশায়, লেগে পড়ুন। হাততালি

Quote:
রাজাকার সমগ্রের ওয়েব ভার্সন আরকি । যাতে আজকালকার আই হেট পলিটিক্স জেনারেশন এবং আই হেট বুকস জেনারেশন ইন্টারনেট ঢুকে ফেসবুকিং পাশাপাশি এক নজরে দেখে নিতে পারে নরপশুদের ।

ঠিক তাই! মর্ম ভায়ার কথা ধার করে বলিঃ

ইচ্ছা থাকলেই উপায় হবে।

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

স্যাম's picture

খন্দকার ঘাঁটতে ঘাঁটতে হয়রান হয়ে গেছি... আহারে! শয়তানী হাসি

সাক্ষী সত্যানন্দ's picture

ভাইরে, ঐ ময়লা ঘাঁটা আসলেই ম্যালা কষ্টের কাম ওঁয়া ওঁয়া

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

সুলতানা সাদিয়া's picture

বাবার বইয়ের আলমারির সারি সারি বই আর মুক্তিযুদ্ধের আগে পরে প্রকাশিত দৈনিক পত্রিকা গুলোর বাঁধাই করা বিশাল পত্রিকা আকৃতির বই। এসবই আমার শৈশব। পত্রিকার বাঁধাইটা কি যে দুর্লভ সংগ্রহ ছিল! ছিল বলছি কারণ একদিন বাসা থেকে বইটা উধাও হয়ে গেল। অথচ আমি ভেবেছিলাম এটা মুক্তিযুদ্ধ লাইব্রেরীতে দেয়া যাবে বা আমার বাচ্চাদের দেখানো যাবে। বিয়ের পর যেই বাবার বাড়ি ছাড়লাম, আমার দেশের ইতিহাস আমার ঘর থেকে চুরি হয়ে গেল। কি যে কেঁদেছি। তবে ভাবনায়ও পড়েছি, একি ঠোঙাওয়ালার হাতে গেল? নাকি কোনো ইতিহাস চোর চুরি করে নিয়ে গেল? আমার বাবার সেই সংগ্রহ খানা থাকলে আমিও শেহাব ভাইয়ের মত একখানা পোস্ট দিতে পারতাম! আফসোস! তবে আমার বাচ্চাদের কাছ থেকে ইতিহাস চুরির ব্যাপারে ব্যাপক সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে, এটুকু হাড়ে হাড়ে বুঝেছি।

-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু

আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে

সাক্ষী সত্যানন্দ's picture

শুনে দুঃখ পেলাম। মন খারাপ

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

ইয়াসির আরাফাত's picture

পাঠ্যপুস্তকে রাজাকারদের তালিকা অন্তর্ভুক্তি একটি জাতীয় দাবীতে পরিণত হোক।

তার আগ পর্যন্ত শিশুদের সঠিক ইতিহাস জানাবার গুরুদায়িত্ব পরিবারের হাতেই

চলুক

সাক্ষী সত্যানন্দ's picture

একমত
লইজ্জা লাগে আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

মরুদ্যান's picture

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- উত্তম জাঝা! কোলাকুলি

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

সাক্ষী সত্যানন্দ's picture

লইজ্জা লাগে আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- কোলাকুলি

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

রংতুলি's picture

চলুক চলুক

আপনার বাবাকে সালাম!

আর হ্যাঁ,

Quote:
সেই অনাগত সেই সুপ্ত পিতাটি জামায়াতী হবে না কি মানুষ হবে সেটি নির্ধারণের সুযোগ অনেকটাই বর্তমানের পিতাদের হাতে।

বর্তমান মায়েদের হাতেও নয় কেন?! চিন্তিত পাক সেনাদের হাত থেকে বাঁচতে খড়ের গাদায়, চিলেকোঠায় লুকিয়ে থাকার দমবদ্ধকর গা'কাঁটা দেয়া গল্পগুলো আমরা কিন্তু মায়ের কাছ থেকেই বেশি শুনেছি। হাসি

সাক্ষী সত্যানন্দ's picture

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- লইজ্জা লাগে

দুঃখিত,
পিতা এসেছে আগে উদ্ধৃত প্রবাদের লেজে লেজে। আক্ষরিক অর্থে পিতা বলিনি, বলেছি 'Parents' অর্থে। বাংলায় এর ভাল প্রতিশব্দ আছে কি? না থাকলে বানাতে হবে। হিমু ভাই কোথায়? চিন্তিত

[ পুনশ্চঃ আমি মায়েদের কোনভাবেই খাটো করার চেষ্টা করছিনা। ইনফ্যাক্ট ৭১ সালে আম্মা কি করে জুতা পায়ে দিয়ে ঘুমাত যেন দরকার পড়লেই ছোট খালাকে কোলে নিয়ে দৌড় দিতে পারে সেই লোমহর্ষক বর্ননা আমিও আমার মায়ের কাছেই শুনেছি। তাছাড়া, আমার মাও রাশেদের বাবার মতই। এখনও ছুটিতে বাড়ি গেলে তাঁর সাথে ঘন্টার পর ঘন্টা রাজনীতি/ ইতিহাস/ সাহিত্য/ দর্শন ইত্যাদি নিয়ে সুদীর্ঘ আলোচনা হয়। তবে রাজনীতি সংক্রান্ত আলোচনা এখনও আব্বার সাথেই বেশি হয় তাঁর বয়স ও অংশগ্রহণজনিত অভিজ্ঞতার কারণে। ]

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

রংতুলি's picture

রূপক অর্থে 'পিতা' শব্দটা এসেছে, মা'দের খাটো করেন নি - এটা বুঝেছিলাম। হাসি

সমস্যাটা আমার। অর্থাৎ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যেমনটা হয় ঐ কেবল 'পিতা' দিয়ে অভিভাবক/parents বোঝানো হয়। যেমন আগে অভিভাবকের নাম কোথাও উল্লেখ করতে হলে কেবল বাবার নাম, বাবার অবর্তমানে বড় ভাই বা মা'র নাম উল্লেখ করা লাগতো। অর্থাৎ অভিভাবক বলতে কেবল বাবাকেই বোঝানো হতো। এখনো যে অবস্থার পরিবর্তন খুব একটা হয়েছে তা বলব না, হয়ত স্কুল কলেজে বাবা'র পাশাপাশি মায়ের নাম উল্লেখ করা হচ্ছে। বাদবাকি সবখানেই (বিশেষত মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি'র) অবস্থা একই আছে। আমার মেয়ে'র জন্মের পর তার পাসপোর্ট করতে গিয়ে, অভিভাবকের স্থানে আমার সিগনেচার দেখে ফর্ম গ্রহণকারী চোখ কপালে তুলে জানতে চেয়েছিল, 'বাবা নাই?' আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করেছিলাম, 'কেন, মা কি অভিভাবক না?' ব্যাটা মিনমিন করে 'পিতার অবর্তমানে... না থাকলে...' আর কি সব বলছিল।

আসলে 'পিতা', 'বাবা' শব্দগুলো নিজেই প্যাট্রিয়াকিক্, এগুলো দিয়ে 'প্যারেন্টস' বোঝানো হলে রূপক অর্থে হলেও শিশুর জন্ম থেকে শুরু করে মনন, ব্যক্তিত্ব, বেড়ে ওঠা, মানুষ হিসেবে সামাজিক জীব হিসেবে তার আচরণ নির্ধারিত হওয়ায় বরং বেশি ভূমিকা পালনকারী মায়ের অবদানের পুরোটাই অদেখা থেকে যায়।

আমার ছেলের বয়স আট বছর, দু'বছর বয়সে ওকে দেশের বাইরে নিয়ে আসি। স্বভাবতই বাংলা চিনতো না এক বর্ণ, মাঝখানে মেয়ে'র জন্মের কারণে দীর্ঘ (প্রায় আট মাস) দেশে থাকার সময় আমি ওকে বাংলা পড়তে শিখানো শুরু করি। মজার ব্যাপার হলো এই একটা জিনিসই ওকে আমি একদম ধরে ধরে শিখিয়েছি। এখন সে আগ্রহ নিয়ে বাংলা পড়ে। বেশিরভাগ কমিকস - হাঁদা-ভোঁদার কান্ডকারখানা, নন্টে-ফন্টে... জাহানারা ইমামের অনুবাদ লরা ইঙ্গলস ওর প্রিয় বই। 'আমার বন্ধ রাশেদ' মুভিটা সে দেখেছে। ভাবছি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক অন্য বইগুলোও আনিয়ে নেব। কিন্তু বাংলায় পড়ার ক্রেডিট আমি ওর পিতা বা অন্য কাউকে দিতে রাজি না! বাংলা পড়ে ও যা জানবে, যা শিখবে তার পুরো ক্রেডিট আমার! হাসি

সাক্ষী সত্যানন্দ's picture

উত্তম জাঝা!

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

অতিথি লেখক's picture

শুভকামনা রইলো।
ভালো থাকবেন। অনিঃশেষ।

দীপংকর চন্দ

সাক্ষী সত্যানন্দ's picture

লইজ্জা লাগে আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

এক লহমা's picture

এমন চমৎকার লেখাটায় মন্তব্য করা হয়নি, ধিক, ধিক, শতধিক মোরে!
সজীব-এর লেখায় রাজর্ষির মন্তব্য ধরে এসে পড়া হল। অনেক ধন্যবাদ তাদের।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

সাক্ষী সত্যানন্দ's picture

ধন্যাবাদ লহমা'দা।

বহুদিন সচলে উঁকি দিলেও মন্তব্যের সুযোগ পাচ্ছিলাম না। এক বিতিকিচ্ছি প্রশিক্ষণের পাল্লায় পড়ে অনেক লেখা মিস হয়ে গেছিল, মাসুদ সজীব ভাইয়ের পোস্টে এক পলকে অনেক না-পড়া লেখা পাওয়া যাবে।

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

সাক্ষী সত্যানন্দ's picture

নিজামীর রায় হবার পর এই লেখাটা লিখেছিলাম, আজ দেশে কোনও নিজামী নাই! শয়তানী হাসি

শান্তিতে ঘুমান মাওলানা কসীমউদ্দীন, খবরটা এখানে টুকে রেখে যাই। হাসি

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

সোহেল ইমাম's picture

গুরু গুরু

---------------------------------------------------
মিথ্যা ধুয়ে যাক মুখে, গান হোক বৃষ্টি হোক খুব।

সাক্ষী সত্যানন্দ's picture

লইজ্জা লাগে আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- লইজ্জা লাগে

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

Post new comment

The content of this field is kept private and will not be shown publicly.