পুরানা প্যাচাল

সুমন চৌধুরী's picture
Submitted by suman on Thu, 26/07/2007 - 9:01pm
Categories:

পুরানা প্যাচাল সরাইয়া নিয়া আসতেছি সামহোয়ার থিকা। যারা আগে পড়ছেন তারা সেন্টু খাইয়েন না দেঁতো হাসি

১৫.০৯.২০০৩। মাস দেড়েক যেমন টেনশানে ছিলাম তাতেভিসা পাওয়ার পরে উল্লসিত হওয়া স্বাভাবিক হলেও পাসপোর্ট পাবার পরে তেমন কোন প্রতিক্রিয়া হলো না,বাসায় ফেরার পথে ১ নম্বর মার্কেটের সামনে ঝগড়াও করলাম ট্যাক্সিক্যাব চালকের সাথে । বাড়িতে ভাংচুর চলছিল । ঢোকার মুখেই রাজমিস্ত্রিবলে, ছোট ভাইয়া একটু ধরেন, ধরলাম বুক শেলফের একাংশ । খালি থাকায় ভারি ছিলনা ততটা । বাসায় ঢুকলাম । মা বহুপ্রকার গৃহস্থালী দ্রব্যের ভিড়ে ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা । আস্তে আস্তে বল্লাম, ভিসা দিয়া দিছে । মা(ঠিকমতো না শুনে) বল্লেন, তা তো বুঝলাম , রাজুর মা(বাসায় অস্থায়ীভিত্তিতে কাজ করতেন)রে ডাক দে..আমি বেশ বিরক্ত হয়ে বল্লাম, মা আমার ভিসা হইয়া গ্যাছে,আগামী সপ্তাহের মধ্যে ফ্লাই করতে হবে। মা'র মুখটা উজ্জ্বল হয়ে উঠলো । তোর বাবারে গিয়া ক ,বলে মা টেলিফোন নিয়ে বসলেন। বাবা শুনে খুশী হয়ে কিছুক্ষণের মধ্যেই গোছগাছ প্রসঙ্গে চলে গেলেন.....

পরের ৯টি দিন উড়ে গেল ফুড়ুৎ করে । সবাই কয়েক বস্তা উপদেশ ঠেসে দিলেন মাথায় । কেনাকাটার ফিকিরে আমার ঢাকায়, আমার শেষ ঘুরে বেড়ানো ......

২৪ সেপ্টেম্বর ২০০৩,সন্ধ্যা ৭টা। রিপোর্টিং এর সময় আমিরাতের অফিসার বেঁকে বসল..৩৬ কে.জি. লাগেজ ছেড়ে দেওয়া অসম্ভব , আপনে ৬ কেজি কমাইয়া আনেন,দিয়া দিমু, ইত্যাদি । বাইরে এসে ভাবছিলাম সুটকেস খুলে কিছু কমাবো কিনা বা কি কমানো যায়, প্রচন্ড ধমক দিল বড় ভাই,সু্টকেস খুলবি ক্যান..!?!
বিমান বন্দরের কিছু ভ্রাম্যমান ট্রাবল শুটার এগিয়ে এলে শেষ পর্যন্ত ২০০০টাকায় এ রফা হলো। বিশেষ কৌশলে ৩৬ কে.জি. বদলে গেল ২৪ কে.জি. তে। সময় আর বেশী ছিল না । সবার চোখ ভিজে আসছিল কিন্তু কান্নাকাটি হয়নি । আমিরাতের এক কর্মচারী বল্লেন সময় নাই তাড়াতাড়ি যান ভিতরে ।

ঢাকা-দুবাই প্লেন কদাচিৎ ভালো হয় কথাটা শুনেছিলাম প্রাজ্ঞজনের কাছে। আগের বার মিউনিখ যাবার সময়ে খেয়াল করেছিলাম কিন্তু অতটা অনুভব করিনি। এবার মনে হলো যেন হাড়ে হাড়ে টের পাইয়ে দিল। সিট পড়েছে মাঝের সারির থ্রি-সিটেড গুলোর ঠিক মাঝ খানে । একপাশে আর একপাশে বোরখা পরিহিতা এক মধ্য বয়সী ভদ্রমহিলা । কই যাই, কেন যাই,স্টুডেন্ট ভিসা কেমনে পায় ইত্যাদি প্রশ্নে মাথা ধরিয়ে দিয়ে তিনিও ঘুম ।আমি চেষ্টা করছিলাম অন্যকোন কিছুতে মন দিতে । একটা অত্যন্ত বাজে হিন্দি ছবি হচ্ছিল । তাই দেখে কাটলো বাকি পথ ।

দুবাই-ফ্রাঙ্কফুর্ট সারা পথই ভাবছিলাম রাতে কোথায় থাকবো । ইয়ূথ হস্টেলের কথা শুনেছিলাম,কিন্তু সেখানে নাকি খুব ভিড় ইত্যাদি ভেবে মাথা ভোঁ ভোঁ করছিল । ২৫.০৯.২০০৩ জার্মান সময় বেলা ১২টার দিকে ল্যান্ড করলাম। কোন ঝামেলা ছাড়াই যাবতীয় ফর্মালিটি সেরে লাগেজের কাছে গেলাম । সু্টকেস এসে গেল,কিন্তু নামাতে গিয়ে বিপত্তি। হাতল গেল ভেঙে ।যাই হোক বাসায় ফোন করে বল্লাম ফ্রাঙ্কফুর্ট এসে গেছি,কাসেলে গিয়ে,আজকে সম্ভব না হলে কাল ফোন করবো । আই.সি.ই.র টিকেট কেটে চলে এলাম কাসেল । তখন বেলা সোয়া তিনটা ।

২৫.০৯.২০০৩.

ট্রেন থেকে যখন নামি তখন আমার হ্যান্ডট্রলিটা পিঠে, কাধে ব্যাগ আর একটা প্রাণঘাতি সু্যটকেস । কিভাবে সেদিন ম্যানেজ করেছিলাম জানিনা, এখন ভাবলে আঁতকে উঠি। যাই হোক..সমস্যা হইলো,যামু কই? ৬০০০ বছর ধরে সমাধান খুজে না পাওয়া দার্শণিক প্রশ্ন । বানহফ ভিলহেলমসহোয়ের এমাথা ওমাথা করলাম সিটি গাইড জাতীয় প্রতিষ্ঠানের খোজে । ঢাকা থেকে শরফুদ্দিন স্যার য়ুগেন্ড হেরবেয়ারগের (ইয়ুথ হোস্টেল)কথা বলে দিয়েছিলেন । কিন্তু জিগাই কারে...? ইনফরমেশান ডেস্কে যাকে জিজ্ঞাসা করলাম তিনি হেসেন প্রদেশের উত্তরাঞ্চলের উচ্চারণে (এটা জেনেছি অনেক পরে)জবাব দিলেন । আমি তখন সবে মাত্র ঢাকা থেকে ডয়েটশ শেখা লোক, বানহফ ছাড়া কিছুই বুঝলাম না । হঠাৎ একটা রাইজে ব্যুরো ( ট্র্যাভেলিং এজেনসি) দেখে ধড়ে প্রাণ এলো। বেশ টানটান এক স্বর্ণকেশীনি আমার কথামত ইয়ুথ হস্টেলে ফোন করে জানলেন এইমুহুর্তে সীট নাই । আমার মাথায় তখন আকাশ না বানহফ(রেল স্টেশন ) ভেঙ্গে পড়লো। তখন দৈবক্রমে আরো এক সুন্দরীর আবির্ভাব!চমৎকার ইংরেজীতে বল্লেন,ওখানে ফোন করলে লাভ নাই। গেলে একটা সিট ঠিকই পাবেন । আমাকে নিয়ে গেলেন সামনের স্টপেজে..ট্রামে উঠলাম.. লাগেজ গুলো নিয়ে রাস্তায় বহু নাটক করে অবশেষে পৌছলাম গন্তব্যে। সীট পাওয়া গেল। তিনটা পিচ্চির সহায়তায় সেই কালানতক সু্টকেস দোতলায় উঠলো। স্নান করার আর শক্তি ছিল না। বালিশে মাথা দিয়েই ঘুম ।
পরদিন সকালে বাসায় ফোন করে,ব্যাপকভাবে সব ঠিক আছে জাতীয় আশ্বাস দিয়ে,রোডম্যাপ ধরে গেলাম ইউনিভার্সিটিতে । ইন্টারন্যাশনাল অফিসে অস্তিত্ব জানান দিয়া,হলে সীটের জন্য অ্যাপ্লাই কইরা গেলাম ব্যাঙ্কে। গিয়া শুনি বাসার ঠিকানা দিয়া রেজিস্ট্রেশন না করলে অ্যাকাউন্ট খোলা যাইবো না । মাসের ২৬তারিখ আর সেদিন শুক্রবার ছিল । মাথা ভো ভো করতে শুরু করলো আসার আগে আমার বুয়েটি বন্ধুদের জিজ্ঞাসা করেছিলাম কাসেলে কারো ঠিকানা জানে কিনা । কেউ বলতে পারেনি । এখন ২৬তারিখে বাসা ভাড়া পাই কই। শুরু হলো লোকাল কাগজ আর ইন্টার নেট মিলিয়ে অনুসন্ধান।এরকম চলল মঙ্গলবার পর্যন্ত।পয়সা উড়ে যাচ্ছিল কিছু বুঝে উঠবার আগেই। এর মধ্যে অ্যাপয়েন্টমেন্ট করে ৩টা বাসায় ইন্টারভিউ দিলাম । সবাই ভদ্রভাবে প্রত্যাখ্যান করলেন । এক জায়গায় চোখের সামনে হলুদ হলুদ দাঁত দেখিয়ে এক চাঙ্কু চাবি পেয়ে গেল। আমার দূরাবস্থা দেখে সেই বাড়ির মালকিন আমাকে একটা ঠিকানা দিয়ে বল্লেন বাছা এখানে ফোন কর। ফোন করলাম। কাজ হলো। হলো মানে, নাম্বারটা ছিল একটা প্রতিষ্ঠানের যারা অস্থায়ী থাকার জায়গা খুজে দেয় পাগড়ির বিনিময়ে । মঙ্গলবার বিকেলেই চাবি পেয়ে গেলাম । সেদিন ৩০সেপ্টেম্বর ।

মিসেস মিহালসিয়া ছিলেন বাড়ির মালিক । অসম্ভব সুন্দর বাড়ি। আর জায়গাটাও কাসেলের যাকে বলে পশ এলাকায় । ২১ কিউ.এম.এর ফার্ণিশড ঘর । দালালকে নিয়মিত টাকা দিতে না হলে ঐ বাসাতেই হয়তো থেকে যেতাম । সমস্যা ছিল মাত্র ৩টা। এরমধ্যে ভাড়া বেশীটাই সবার আগে। সকালে রান্নাঘরে যাবামাত্রই পেয়ে বসতেন ফ্রাউ মিহালসিয়া । আমার সম্পর্কে বাংলাদেশ সম্পর্কে তাবৎ প্রশ্ন। এক পর্যায়ে ভদ্রমহিলা তার আত্মজীবনী শুরু করলেন । আমার যে খুব খারাপ লাগতো তা না তবে ভদ্রমহিলা কথা একবার শুরু করলে আর থামতে পারতেন না । আর একটা সমস্যা ছিল রান্না নিয়ে । উনি রসুনের গন্ধ একদম সহ্য করতে পারতেন না । ঐ বাসায় থাকতে তাই বেশীর ভাগ দিন লাঞ্চ করেছি মেনজা তে(ইউনিভার্সিটির ক্যাফেটেরিয়ার মতো) অথবা পোটলার খাবারে । আর নি:সঙ্গতা এইসময় পেয়ে বসেছিল আমাকে । আমি গায়ে পড়ে আলাপ করা টাইপ না। তাই পরিচিতির পরিধিও বাড়ছিল না ।জলের মতো টাকা খরচ হয়েছে এই সময় । বেশ ভীত হয়ে পড়ছিলাম । এদিকে ভাষার পরীক্ষায় পাশ না করা পর্যন্ত জব পারমিট নেই । ডিসেম্বর মাসের ২য় সপ্তাহে চিঠি পেলাম হলে সীট পাওয়া গেছে ,জানুয়ারি থেকে । ভাড়া অনেক কম । মন মেজাজ খুব ভালো হয়ে গেল । রওনা দিলাম ব্রেমার হাভেনে বাল্যবন্ধুর কাছে ।ওরা সবাই আমাকে জার্মানীর জীবন সম্পর্কে নানাভাবে নিরুৎসাহব্যঞ্জক কথাবার্তা বলে ঘাবড়ে দেবার চেষ্টা করেছে। একদিন ম্যাকডোনালডস এ অনেক্ষণ বসে বসে দেখলাম পোলাপানের কুত্তা খাটনি। ভাবছিলাম আমিও তো নামবো দুদিন পরে কাজের ধান্ধায়, আমার কপালে কি আছে ?

১ জানুয়ারি ছিল ছুটি । ৩১ আর ১তারিখ কাটাইলাম সদ্য অর্ধ পরিচিত একজনের বাসায় । বাংলাদেশী ছাত্র জনা দুয়েকের সাথে পরিচয় হইলেও খাতির হয় নাই । সেই প্রসঙ্গে পরে আসি । যেই হলে সিট পাইলাম সেইটা কাসেলের সবচাইতে বাজে হল গুলার একটা । যাইহোক ভাড়া কম,এইটাই সর্বোচ্য প্রাপ্তি । চারজনের অ্যাপার্টমেন্ট । দুই জার্মান মার্টিন আর মালাইকে এবং পোল্যান্ডের ওলগা । রান্নাঘর আর শৌচাগার কমন । দালানটা বাইরে থিকা দেখলে টমাস মানের ড.ফাউস্টুসের কথা মনে পড়লেও ভিতরে বেশ পরিস্কার পরিচ্ছন্ন । একটু ভয় পাইলাম । আমি বরাবরই চ্যারাব্যারা স্বভাবের লোক । তখন মাথার মধ্যে ডে.এস.হা. নামের ভাষা বিষয়ক পরীক্ষার দুশ্চিন্তা ।পাশ না করলে পুরা ধরা,চাট্টি-বাট্টি গোল কইরা দ্যাশে ফেরত যাওয়া লাগবো ।ওদিকে টেকাও খালি কমতাছে। দুশ্চিন্তায় খরচ বাড়ে । ভাষার অবস্থা দেশে থাকতে যা ছিল তার কোন পরিবর্তন অনুভব করছিলাম না। মডেল টেস্টগুলাও একেকটা একেকরকম হইতেছিল। অন্যদিকে বাইরে কুত্তার মত ঠান্ডা। আগের বার মিউনিখে আইছিলাম ফেব্রুয়ারির শেষে। ঠান্ডা ছিল,কিন্তু জানুয়ারির ঠান্ডা তখন আমার কাছে নতুন। প্রায়ই কারণ পান করে শীতনিবারণ করতাম । এতে নি:সঙ্গতাও কিছুটা কাটতো। ২৫ জানুয়ারি বিদেশী ছাত্রদের নববর্ষের অনুষ্ঠান। গেলাম । কিছুক্ষণ দেইখা বিরক্ত লাগার পরে বাইরে আইছি বিড়ি খাইতে,হঠাৎ দেখি টাক মাথার একলোক আমারে জিগায়,"এক্সকিউজ মি, আপনি কি সুমন ?" আমি ভালো কইরা তাকাইলাম..হ হ ওরে আমি চিনি ...দশ বছর আগে শেষ দেখা ..তেজগাঁও কলেজে..তবে তখন ওর চুল ছিল। কয় একজন নতুন বাঙ্গালী আইছে শুনছিলাম, কিন্তু তুই এইটাতো বুঝি নাই ..ইত্যাদি..সেদিনই পরিচয় বাকি 8 জনের সাথে। সবাই তড়িৎকৌশলী। খাতির হইয়া গেল ঐদিনই। ওদের ক্যাম্পাস আলাদা,তাই এতকাল দেখি নাই। দেখলেও বৃক্ষ হিসাবে। এরপরের মাস খানেক পরীক্ষা নিয়া ব্যাপক ব্যাস্ত হইয়া গেলাম। কোর্সের কিছু পোলাপানের লগে ও দুস্তি পাতাইলাম। একলগে বইসা পরীক্ষা দিতাম। সবই হইতো আমার বাসায়। এতদিনের শুণ্যতা পূরণ হইলো হালকায়ে। ব্যাপক দুশ্চিন্তা সত্বেও পাশ কইরা গেলাম। আমি তো রাপু খাপাং মানে পুরা পাংখা। তারপর ভর্তি হলাম ঠিক মত। হপ্তায় ২০ ঘন্টা কাজের অনুমতিও পাইলাম। ইতিমধ্যে প্রতিবেশীরা একে একে সব গেলগা। বাসা পুরা খালি। ভৌতিক পরিস্থিতি । এইসময় বাসায় থাকছি খুব কম। খালি ভাবতাম কবে আইবো কোন মিটবেভোনার (প্রতিবেশী)। একদিন সকালে হলের কর্মচারি নক কইরা ঘুম ভাঙ্গাইলো। পাশে জনৈকা শ্বেতাঙ্গীনী । আপনার নতুন প্রতিবেশীনী...হাই হ্যলো করে পরিচয় হলো । শুরুতে মনটা একটু নেচে উঠলেও একটু পরেই তার ছেলে বন্ধুর আবির্ভাবে পুরানা মুড়ির মতো পোতাইয়া গেল। ইতিমধ্যে বাঙ্গালীদের সাথে খাতির বৃদ্ধি পাওয়ায়,বাসায় উপস্থিতি আরো কমলো। ক্লাস শুরু হবার পরের কিছুদিন খুব ভালো কেটেছে। কিন্তু পকেটের অবস্থা ক্রমশ খারাপের দিকে যাচ্ছিল। মে মাসের দিকে শুরু করলাম মরিয়া হয়ে কাজ খোঁজা । আমার স্বদেশী বন্ধুরা বলেছিল জার্মান জানলে কাজ পাওয়া কোন ব্যাপার না। কথাটা আসলে সর্বৈব ভুল । কাসেল শহরের সেইসময়ে মনে হয় খুব বেশী রেস্টুরেন্ট,বার বাকি ছিল না যেখানে ঢু মারি নাই । ক্যাম্পাসের ভিতরে কাজের দুরাশা করি নাই তখন, আর আমাদের ফ্যাকালটিতে কাজ পাওয়া আরো কঠিন ছিল..কারণ আমার শিক্ষার মাধ্যম জার্মান...। শহর আঁতি পাতি করে যখন মাথা খারাপ অবস্থা তখন এক বুয়েটি ত্রাতার ভুমিকায় অবতীর্ণ হলো । আগেই বলে দিলো যে কাজটা খুব নোংরা, তবে পয়সা মোটামুটি ভালো । গেলাম কাসেল থেকে কিছুটা দুরে বাউনাটাল নামে একটা জায়গায়,ভক্স ওয়াগনের কারখানায় । কাজ জুটলো। যেদিন প্রথম বেতন পেলাম সেদিন আমার আগের রসদ প্রায় তলানিতে । কানের পাশ দিয়া গুলি্ল গেল আর কি । সেই শুরু । ভক্স ওয়াগনের বাঘা বাঘা মেশিন সাফ সুতরো করতে হতো । সেইসঙ্গে প্রথম সেমিস্টারের বাধ্যতামূলক পরীক্ষাতেও উৎরে গেলাম।
নতুন পোলিশ মেয়েটা খুব অমায়িক ভদ্র । তবে নিরামিশাসী । চা,কফি পর্যন্ত খায় না ।তার বয় ফ্রেন্ডেরও একই অবস্থা । মে মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত বাকি ঘর দুইটা খালিই ছিল । তার পর রঙ্গমঞ্চে মুডোর আর্বিভাব । পরবর্তী পোস্টে আসছে মুডোর গল্প।


Comments

শোহেইল মতাহির চৌধুরী's picture

মুডোর গল্প আসতেছে তো?
আসুক। তাড়াতাড়ি আসুক।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন ---- সচল রাখুন

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

শামীম's picture

সামহোয়ারের খোঁজ পাইছিলাম দেরীতে। তাই এগুলা পড়া হয় নাই .. মজা পাইলাম, একই সাথে কঠিন যুদ্ধ দেখলাম।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

ইশতিয়াক রউফ's picture

তবুও অনেক আরামেই ছিলেন, ভাই। আমার কিস্যা শুনাবো নে কিছুদিনের মধ্যেই। নস্টালজিক লাগলো পড়ে।

হাসিব's picture

সব কিছু নিয়া আইয়া ঐ ঘর গোটায় ফেলো


আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে

মুহম্মদ জুবায়ের's picture

অতীব সুস্বাদু লেখা। কুত্তার মত ঠাণ্ডা। আগে শুনিনি। মজা লাগলো।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

অমিত's picture

মুডোর লগে আবার জুডো না হয়। খাড়ান ঐটা পইড়া লই।

এস এম মাহবুব মুর্শেদ's picture

পুরাটা আবার গিললাম। মজা লাগল।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

দ্রোহী's picture

হে হে। পুরাতন হইলেও এখনো "বিরাট গরু-ছাগলের হাটের" মতোই উপাদেয়।

বদ্দা, বিদেশী মেয়ের সাথে প্রেমাভিজ্ঞতা বিষয়ক কোন ঘটনা নাই?


কি মাঝি? ডরাইলা?

???'s picture

এইতো... আমার লেখার খোঁজ পাওয়া যাইতেসে! হাসি

.................................
শুশুকের ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে সাঁতরে এসেছি কুমীরে-ভরা নদী!

Post new comment

The content of this field is kept private and will not be shown publicly.