ঈশ্বর চেনার নানা উপায় নানা পরিভাষা

শোহেইল মতাহির চৌধুরী's picture
Submitted by ShohailMC on Sun, 05/11/2006 - 6:26pm
Categories:


[ব্লগের ধুন্ধুমার আলোচনা-সমালোচনায় ফিরে এসেছে দুই কল্পিত সত্ত্বা: ছাগুরাম ও ঈশ্বর। ছাগুরাম ব্লগের সৃষ্টি, সরস বিষয় এবং এ নিয়ে অনেকেই লিখছেন মজার মজার সব লেখা। একদল আরেকদলকে ছাগুরাম উপাধি দিচ্ছেন। আর ফিরে এসেছে ইশ্বরালোচনা। আস্তিক্য আর নাস্তিক্যের পরিধি। কে কোথায় কাকে পায়। ব্লগে এগুলো কেন যেন ফিরে ফিরে আসে। চক্রাকারে। তেমন তুমুল বিতর্ক হয় না। তবে বিতর্ক করতে যাতে সুবিধা হয় সেজন্য অনেক আগে ধর্মের পরিভাষা নামে নীচের লেখাটা দিয়েছিলাম। যাতে বিতার্কিকরা বিভিন্ন টার্মিওনলজিতে সমৃদ্ধ হয়ে তর্কযুদ্ধে নামেন। ফলাফল হয়েছিল উলেটা। এত পরিভাষা দেখে বিতার্কিকরা উলেটা দৌড় দিলেন। তা এবার কি ফলাফল হয়, দেখা যাক!]ধর্ম নিয়ে কৌতুহলকে অনেকে নিন্দার চোখে দেখেন। তারা পৈতৃক সূত্রে প্রাপ্ত ধর্ম বিশ্বাসে অবিচল আস্থা দেখানোর পক্ষপাতী। কিন্তু অনেকেই পাল্টা এই যুক্তি দেন যে, সবাই যদি বংশসূত্রে প্রাপ্ত ধর্মে অবিচল থাকতো তবে পৃথিবীতে নতুন ধর্ম আসতো না। না ইসলাম, না বাহাই, না সাইন্টোলজি। সুতরাং ধর্ম নিয়ে আলোচনা হবেই। মানুষের কৌতুহল, আগ্রহ ও অনুসন্ধানী মনকে বাধাহীন চলতে দেয়াটাই সঙ্গত। এই বস্নগের ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মুক্ত পরিবেশে ঈশ্বর আর সৃষ্টি চিনত্দা নিয়ে তাই কম পোস্ট পরে না। কিন্তু একজনের কথার সাথে অন্যের কথার তুলনা করা যায় না। দেখা যায় একেকজন আসত্দিকতা ও নাসত্দিকতাকে ব্যাখ্যা করছেন একেকভাবে। যাকে এথেইস্ট বলছেন সে হয়তো এগনোস্টিক। একইভাবে যারা প্যানথিইজমে বিশ্বাসী তারা ভাবছেন তারা মনোথিইজমের অনুসারী। সুতরাং একটা সর্বজনগ্রাহ্য পরিভাষা না থাকলে কে কার বিপক্ষে কী মত দিচ্ছেন তা ধরা যায় না। সে কারণেই মূলত: সৃষ্টি রহস্য বা স্রষ্টার অসত্দিত্ব নিয়ে চালু বিভিন্ন মতবাদের বিচিত্র সব টার্মিওনোলজি বা পরিভাষা নিয়েই এই লেখা। সৃষ্টিরহস্য সম্পর্কে বিভিন্ন মতবাদের বিভিন্ন মাত্রার যদি একটা স্কেল আমরা কল্পনা করি তবে বিশ্বাসীদেরকে আমরা রাখতে পারবো স্কেলের বিভিন্ন বিন্দুতে। বিশ্বাস বলতে এখানে অবশ্যই বুঝাচ্ছে অদৃশ্য কোনো বিপুল শক্তিতে বিশ্বাস। যার একটি নাম হতে পারে ঈশ্বর। প্রথমে আসি ডানদিকে যারা আছেন। যাদের এসব বিশ্বাস সম্পর্কে আস্থা নেই। নেগেটিভ ধারণার একেবারে শেষ মাথায় হলো এথেইজম ()। ক) এথেইজম: এই মতবাদের মূল কথা হলো কোনো ধরণের কোনো ঈশ্বর নেই। সৃষ্টিকে ব্যাখ্যা করার জন্য কোনো ঈশ্বর কল্পনার প্রয়োজন নেই। প্রাকৃতিক সূত্র ও বিজ্ঞান দিয়েই ব্যাখ্যা সম্ভব। খ) এগনোস্টিসিজম: এই মতবাদের মূল কথা হলো 'আমি জানি না'। অর্থাৎ ঈশ্বরের অসত্দিত্ব মেনে নেয়ার মত বা অস্বীকার করার মত যথেষ্ট যুক্তি দেখতে পাচ্ছি না। সুতরাং আমি জানি না।গ) স্কেপটিসিজম: শুধুই সন্দেহ। অর্থাৎ ঈশ্বর আছেন কিনা সে বিষয়ে আমার সন্দেহ রয়েছে। ঘ) ন্যাচারালিজম: এই মতবাদের অনুসারীরা মনে করেন, মানুষের জীবন, তার অভিজ্ঞতা, তার মূল্যবোধ বা তার ধর্মপরায়ণতাকে বুদ্ধিমান প্রাণী হিসেবে আমাদের প্রাকৃতিক পরিবেশের সাথে তার সম্পর্কের ভিত্তিতে ব্যাখ্যা করা যায়। অর্থাৎ সৃষ্টি রহস্য ব্যাখ্যা করার জন্য যা আমরা দেখছি, এই যে প্রকৃতি, এই-ই যথেষ্ট। প্রকৃতিই ঈশ্বর বা ঈশ্বরহীনতা। এতো গেলো ডানে যারা আছেন ঈশ্বরহীনতার মতবাদ নিয়ে। এখন স্কেলের বামদিকে যারা আছেন তারা যদি এই ঈশ্বর বিশ্বাসের ধ্বনাত্মক মানে পজেটিভ অনুসারী হন তবে তারাও বিভক্ত কয়েকটি ভাগে। তাদের ভাগগুলো হলো:ঙ) ডিইজম: এরা বিশ্বাস করেন ঈশ্বর এই বিশ্বব্রহ্মান্ড তৈরি করে তারপর বিশ্রামে গেছেন। তারা একধরনের "এ্যাবসেন্টি" গডের ধারণা নিয়ে ন্যাচারাল থিওলজির শিৰা দেন। চ) থিইজম: এদের বিশ্বাস ঈশ্বর হচ্ছেন একটি ব্যক্তি সত্ত্বা। অর্থাৎ এটা কোনো ধারণা বা শক্তি নয়। ব্যক্তি-ঈশ্বর বা পার্সোনাল ডেইটির ধারণা নিয়েই চালু হয়েছে থিইজম।এই থিইজমের আবার নানা রূপ। চ-1) পলিথিইজম: মানে সোজা কথায় ম্যানি-গড-ইজম। প্রাচীন সমাজে এর চল ছিল ব্যাপক। এর চূড়ানত্দ রূপ আমরা দেখতে পাই গ্রিস আর রোমানদের বহু দেব-দেবীর উপাসনায়। একেক দেবতা জীবনের একেক ক্ষেত্রকে শাসন করছেন। কেউ ফসলের দেবত, কেউ ভালবাসার। চ-2) হেনোথিইজম: এধরনের বিশ্বাসীরা মনে করে ইশ্বর অনেক তবে তারা একজনের কাছেই আনুগত্য স্বীকার করে। এই একজনকেই তারা মানে তাদের গোত্রের ঈশ্বর হিসেবে। চ-3) প্যানথিইজম: এই বিশ্বাসের মূল কথা হলো সবকিছুই ঈশ্বর। বাউল, সুফি বা ভাববাদী কবিরাই মূলত: এরকম বিশ্বাসের স্রষ্টা। তাদের বক্তব্য হলো প্রকৃতি, পৃথিবী সব মিলিয়েই ঈশ্বর। এই বিশ্বে যা আছে সবকিছুই ঈশ্বরের অংশ।চ-4) মনোথিইজম: এই বিশ্বাসের মূল কথা ঈশ্বর এক। সেই সর্বৈব ক্ষমতার অধিকারী। সে ব্যক্তি-ঈশ্বর, তিনি কোথাও থাকেন, আদেশ দেন, ইশারা করেন, তার বাহিনী আছে, তারা তার হয়ে নানা কাজ করে। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো এই ঈশ্বর চান তার সৃষ্টির বিনাশর্তে আত্মসমর্পণ। নতজানু হওয়া। বর্তমান ও পরজীবনের জন্য তার কাছে প্রার্থনা করা। এসব মিলিয়েই এই মতবাদ। একত্ববাদীদের সংখ্যাগরিষ্ঠতার দৌরাত্মে থিইজম এখন অনেকের কাছে মনোথিইজমে পরিণত হয়েছে। কিন্তু থিইজমেরও যে ভাগ রয়েছে তা আমরা উপরে দেখতে পাচ্ছি। তো এই যে একক, সয়ম্ভু, অসীম, পবিত্র, ব্যক্তি-সত্ত্বার দয়াময় ঈশ্বর তার ধারণাটা মানুষ কখন প্রথম শুনতে পেলো কানে। সেই বাক্যটি ছিলো:


Comments

Post new comment

The content of this field is kept private and will not be shown publicly.