নির্ধারিত স্থানে কোরবানিতে ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলোর বাধা প্রসঙ্গে

হাসিব's picture
Submitted by haseeb on Fri, 01/09/2017 - 5:03am
Categories:

বিগত বেশ কয়েক বছরের মতো এবারও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে রাস্তার ওপর কোরবানির পশু জবাই না করে সিটি করপোরেশন নির্ধারিত স্থান বেছে নিতে জনসাধারণের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রী ঢাকার দুই মেয়র, সিলেট, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জের মতো গুরুত্বপূর্ণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়রদের উপস্থিতিতে এই অনুরোধ জানিয়েছেন

পাঠকদের হয়তো স্মরণে থাকবে গতবছর ঢাকার রাস্তায় জমে থাকা বৃষ্টির পানিতে রক্ত মিশে এক বীভৎস অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল। নির্দিষ্ট জায়গায় কোরবানি হয়তো পুরো সমস্যার সমাধান রাতারাতি করে দেবে না, কিন্তু এটা স্বাস্থ্যসম্মত একটা ব্যবস্থা গড়ে তোলার একটা প্রাথমিক ও অত্যাবশ্যকীয় ধাপ অবশ্যই।

যত্রতত্র কোরবানি বন্ধ করার নানা ধরণের প্রতিবন্ধকতা আছে। কোরবানি যারা দেন তাদের অসচেতনতা, প্রতিবেশীর সাথে প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব ছাড়াও ধর্মীয় ব্যক্তিত্বদের বিরোধীতা একটা বড় প্রতিবন্ধক এর সামনে। গণস্বাস্থ্য প্রসঙ্গে ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলোর প্রভাব বিশ্লেষণে নিদিষ্ট স্থানে কোরবানিতে বাধা একটা আগ্রহউদ্দীপক কেস স্টাডি হবার দাবি রাখে। এটা আরও জরুরী এ কারণে যে বর্তমান সময়ে ধর্মাশ্রয়ী দলগুলো অতীতের যেকোন সময়ের চাইতে সঙ্ঘবদ্ধ ও প্রভাবশালী। বাংলাদেশের এই পোস্ট বাংলাদেশের ধর্মীয় দলগুলো কী কারণে এই সরকারি উদ্যোগের বিরোধিতা করছে সেটা তুলে ধরার চেষ্টা করবে।

দুই বছর আগে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে প্রথমে এর বিরোধীতা করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। ১২ই অগাস্ট, ২০১৫ তারিখে ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারী জেনারেল ডাঃ শফিকুর রহমান এক বিবৃতি দিয়ে এই উদ্যোগের বিরোধীতা করে। বিবৃতিতে বলা হয়,

Quote:
পূর্ব থেকেই শহরের জনগণ যেভাবে নিজেদের সুবিধামত স্থানে কুরবানীর পশু জবাই করে এবং দরিদ্র লোকদের মধ্যে সৌহার্দ্যরে সাথে গোস্ত বিলি বন্টন করে আসছে সে নিয়মই চালু রাখা প্রয়োজন। সরকার কর্তৃক নির্দিষ্ট কোন স্থানে পশু কুরবানীর ব্যবস্থা করার সিদ্ধান্ত বাস্তব সম্মত নয় বিধায় তা কার্যকর করা সম্ভব হবে না।

দূষণ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে,

Quote:
পৌরসভার পশুর হাট থেকে পশু ক্রয় করে বাড়ী নিয়ে স্বাচ্ছন্দের সাথে কুরবানী করছে। কিন্তু কোথাও তেমন কোন যানযট সৃষ্টি বা পরিবেশ দুষণ হয়নি।

অর্থাৎ, তারা পরিবেশ দূষণের কথা অস্বীকার করে সরকার যেন "দেশের জনগণের ধর্মীয় কর্তব্যের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে কুরবানী করার ক্ষেত্রে কৌশলে বাধা সৃষ্টি না" করে তার দাবি জানিয়েছে। [সূত্র ১]

একই সময়ে উলামায়ে দেওবন্দ ঐক্য পরিষদের চেয়ারম্যান মুফতি আব্দুল করিম নির্দিষ্ট স্থানে কোরবানির বিরোধীতা করে বলেন, [সূত্র ২]

Quote:
যুগ যুগ ধরে মুসলমানদের ঘরে ঘরে চলে আসা কুরবানীর ঐতিহ্যকে বন্ধের ষড়যন্ত্র যে কোন মুল্যে রুখে দিতে হবে। মনে রাখতে হবে পাশ্ববর্তী দেশে মুসলমানদের ধর্মীয় ঐতিহ্য কুরবানীর উপর যে অন্যায়-অযৌক্তিক বিধি নিষেধ আরোপ করে লক্ষ লক্ষ মুসলমানের কলিজ্বায় যে আঘাত করা হচ্ছে বাংলাদেশে মুসলমানদের ঘরে ঘরে কুরবানীর ঐতিহ্য বন্ধের অশুভ পায়তারা সে ষড়যন্ত্রের অংশ বিশেষ। তিনি বলেন, ভিনদেশী প্রভুদের খুশি করার জন্য এধরণের চক্রান্ত।

মুফতি আব্দুল করিম আরও বলেছেন,

Quote:
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও কতিপয় পরিবেশবাদীদের এ সমস্ত অযৌক্তিক চিন্তাধারা উম্মাদনার শামিল।
১. কারণ আবহমানকাল থেকে মুসলমানদের ঘরে ঘরে কুরবানীর পশু জবাই হয়ে আসা কোন দেশ কিংবা সমাজ বা পরিবেশের ক্ষতির কথা কোন সুস্থ বিবেকবান মানুষ ভাবেনি বরং অনেকে কুরবানীর তাজা রক্ত হাতে কিংবা রোগে আক্রান্ত স্থানে রোগ আরোগের জন্য ব্যবহার করে আসছেন। যা নিজ বাড়ীর আঙ্গিনায় কুরবানী করা ব্যতীত নারী-পুরুষের অনেকের জন্যই ব্যবহার করা দুষ্কর।
২. অপরদিকে হাদীস শরীফে নিজ নিজহাতে নিজ পশু জবাই করতে উৎসাহিত করা হয়েছে। সম্ভব না হলে কুরবানীর স্থলে স্বশরীরে উপস্থিত থেকে নিজ চোখে প্রত্যক্ষ করতে বলা হয়েছে। যা মাঠে-ময়দানে করলে পর্দানশীন নারীসহ মাযুর বা দুর্বলদের জন্য সম্ভব হবে না।
৩. এভাবে মাঠে কুরবানী করলে প্রচলন হয়ে গেলে কুরবানীর জবাইকৃত গোস্ত বিতরণ ও খরচ বেড়ে যা অনেক মানুষ গোস্ত চামড়া ইত্যাদি বহন করার মত প্রয়োজনীয় লোকবল না থাকার অজুহাতে কুরবানী করা থেকেই বিরত থাকবে। ফলে দেশে কুরবানীর হার কমে যাবে।
৪. একজন মুসলমান ওয়াজিব কুরবানীর সওয়াব থেকে বঞ্চিত হবে। ওয়াজিব তরককারী হিসেবে গুনাহগার সাব্যস্ত হবে।
৬. বিভিন্ন টাউট বাটপার সন্ত্রাসীদের হাতে নিজ চামড়া ও কুরবানীর গোস্ত চলে যাবে। ফলে দেশের দরিদ্র মানুষ, এতিমখানা, প্রকৃত প্রাপকরা তাদের হক থেকে বঞ্চিত হবে।

দেওবন্দি কওমি মাদ্রাসার প্রধান নেতা হেফাজতে ইসলামের আমীর হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালক শাহ আহমদ শফী [সূত্র ৩]। উনার অলঙ্কারখচিত বক্তব্যের পুরোটাই এখানে তুলে রাখি।

তিনি বলেছেন,

Quote:
পরিকল্পিতভাবে দেশে একদিকে নগ্নপনা, বেহায়াপনাসহ ক্ষতিকর সংস্কৃতির বিকাশ ঘটানো হচ্ছে, অন্যদিকে ইসলামী সংস্কৃতিকে হেয় প্রতিপন্ন ও সংকোচনের অপতৎপরতা চালানো হচ্ছে।

শুধু পাড়া-মহল্লা থেকে কুরবানীর সংস্কৃতিকে সরিয়ে দেয়া নয়, যানজটের অজুহাত খাড়া করে পশুর হাটে নিয়ন্ত্রণ আরোপের মাধ্যমে কুরবানীদাতাদের জন্য পশু ক্রয়েও সংকট তৈরির ষড়যন্ত্র চলছে।

কুরবানীর দিন জনসাধারণকে পশুবর্জ্য সুনির্দিষ্ট জায়গায় ফেলার জন্য উদ্বুদ্ধ করে ব্যাপক প্রচারণা চালানোর পাশাপাশি সিটি কর্পোরেশন পশুবর্জ্য অপসারণে কুরবানীর দিন বাড়তি জনবল নিয়োগ দিতে পারতো। অথচ সিটি কর্পোরেশনকে রাস্তা মেরামত, নালা-নর্দমা পরিষ্কার ও জলাবদ্ধতা নিরসনের চেয়েও কুরবানীর ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি সংকোচনেই উৎসাহী দেখা যাচ্ছে। তিনি সরকারের প্রতি শত শত বছর ধরে চালু থাকা ইসলামী নিদর্শন পবিত্র কুরবানীর ঐতিহ্যবিরোধী এই উদ্যোগ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, এতে করে সরকারের বিরুদ্ধে জনগণের মনে মারাত্মক ক্ষোভ ও প্রতিক্রিয়া তৈরি হতে পারে।

হেফাজত আমীর আরো বলেন,

Quote:
একদিকে শহুরে ধনীক শ্রেণীর পান্তা-ইলিশের ক্ষতিকর সংস্কৃতির প্রসার ঘটানোর নানা উদ্যোগ নিয়ে দেশের ৮০-৯০ ভাগ গরীব ও সামর্থ্যহীন জনগণকে উপহাস ও অসহায়ত্বের কথা মনে করিয়ে দেয়ার চর্চা চলছে, অন্যদিকে পবিত্র কুরবানীকে উপলক্ষ করে বেকার পরিবারে গরু পালন, গরু বেচা-বিক্রির সাথে গরীব মানুষের সম্পৃক্ততা, ঈদের দিন গরীব-মজদুরদের উচ্চ বেতনে কামলা খাটা থেকে শুরু করে কুরবানীর গোশত বিলি-বণ্টন, কুরবানীর পশুর চামড়া বিক্রির মূল্য দানসহ সবক্ষেত্রেই গরীবদের জন্য উপকারী সার্বজনীন মুসলিম সংস্কৃতির পবিত্র কুরবানীকে নানাভাবে বাধাগ্রস্ত ও সংকুচিত করার প্রচেষ্টা চালিয়ে গরীবদের স্বার্থে আঘাত হানা হচ্ছে।

পরিবেশ দূষণের প্রসঙ্গ টেনে হেফাজত আমীর বলেন,

Quote:
পরিবেশ দুষণ! রাজপথ মাসের পনের দিন মল-মূত্র ও ময়লা-আবর্জনা মিশ্রিত পানিতে ডুবে একাকার হয়ে থাকলেও সিটি কর্পোরেশনের কার্যকর তৎপরতা দেখা যায় না। অথচ গরীবদের জন্য অত্যন্ত উপকারী এবং মুসলিম ভ্রাতৃত্ববোধের বহিঃপ্রকাশের এই মহান সংস্কৃতির দিনেই তারা পরিবেশ দূষণকে বড় করে দেখাতে চায়।

পবিত্র কুরবানীর মাধ্যমে গভীর আত্মত্যাগের পাশাপাশি মুসলমানদের ধনী-গরীব, ফকির-মিসকীনদের মধ্যে যে গভীর সহমর্মিতা, আত্মীয়তার মজবুত বন্ধন ও ঐক্যের সংস্কৃতির চর্চা হয়, তাতে ইসলামবিদ্বেষী চক্র চরম অস্বস্তিতে ভোগেন। এ কারণে বহু পূর্ব থেকেই তারা নানাভাবে পবিত্র কুরবানীর বিরুদ্ধে গভীর অপপ্রচার ও চক্রান্তে লিপ্ত।

হেফাজত আমীর আরও বলেন,

Quote:
পবিত্র কুরবানীর পশু জবাইকে কেন্দ্র করে বাড়িতে বাড়িতে, পাড়া-মহল্লায় শিশু-কিশোর, নারী-পুরুষসহ ধনী-গরীব মিলে সর্বস্তরের মুসলমানদের মধ্যে এক ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ আবেগময় ধর্মীয় উৎসব বিরাজ করে থাকে। যারা মাসে, ছয় মাসে একবার পরিবারের সবাইকে নিয়ে ভালো খাবারের আয়োজন করতে পারে না, এমন সব গরীবদের মাঝে বাড়িতে বাড়িতে অকাতরে কুরবানীর গোশত বিতরণ করা হয়ে থাকে। গরীব-মিসকিন ছাড়াও আত্মীয়-স্বজনদের মাঝে কুরবানীর গোশত বিতরণের মাধ্যমে সহমর্মিতা ও আত্মীয়তার সম্পর্ক আরো গভীর হওয়ার সংস্কৃতির চর্চা হয় পবিত্র কুরবানীর ফলে। এ ধরনের অগণতি কল্যাণকর প্রথা পবিত্র কুরবানীর মাধ্যমে জনসমাজে চালু রয়েছে।

তিনি বলেন,

Quote:
আমার জোরালো সন্দেহ, পরিবেশ দূষণের অভিযোগ ও পরিচ্ছন্নতার লেবেলে ইসলামবিদ্বেষী নাস্তিক্যবাদী চক্র এবং প্রতিবেশী দেশের ব্রাহ্মণ্যবাদী চক্রের সূক্ষ্ম ষড়যন্ত্রে প্ররোচিত হয়ে ক্ষমতাসীন মহলের কেউ কেউ এমন পদক্ষেপে উদ্বুদ্ধ হয়ে থাকতে পারেন। ষড়যন্ত্রকারীদের উদ্দেশ্য, পবিত্র কুরবানী উদযাপনে ক্রমান্বয়ে বাজার সংকট, পশু সংকট, গরু জবাইয়ে সমস্যা তৈরি, গরীবদের মাঝে গোশত বিলির প্রথা বিলোপ, গরীব মাদ্রাসা ছাত্র ও ছিন্নমূল প্রতিবেশীদের হক কুরবানীর পশুর চামড়া দখলসহ নানা প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে মানুষকে কুরবানীর প্রতি নিরুৎসাহিত করা এবং নির্ধারিত জায়গা ঠিক করে দিয়ে শিশু-কিশোরদের পবিত্র কুরবানীর চিরাচরিত সংস্কৃতি চর্চা থেকে দূরে রেখে ইসলামের এই গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শনকে সমাজ থেকে বিলোপ বা গুরুত্বহীন করে দেয়া। পাশাপাশি ইন্টারনেটভিত্তিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও নাস্তিক্যবাদীদের তল্পিবাহক বিভিন্ন মিডিয়ায় পশুপ্রেম ও পশুবধের অপপ্রচার চালিয়ে নতুন প্রজন্মকে কুরবানীর প্রতি বীতশ্রদ্ধ ও নিরুৎসাহিত করা। অথচ এই পশুপ্রেম ও পশুবধের বন্দনা যারা তুলেন, দেখা যায় একদিনের জন্যও বিফ, মাটন ও চিকেন ছাড়া তাদের ডিশ কল্পনা করা যায় না।

তাহলে দেখা যাচ্ছে আলিয়া মাদ্রাসায় প্রভাব রাখা জামায়াতে ইসলামি, কওমি মাদ্রাসার বিভিন্ন গ্রুপ নির্দিষ্ট স্থানে কোরবানী একটা চক্রান্ত এবং ধর্মের উপরে আঘাত হিসাবে দেখছে। কোরবানিতে যেহেতু হুজুরদের একটা প্রত্যক্ষ সংযোগ থাকে সেহেতু কোরবানি কীভাবে হবে সেটা বলারও একটা নির্দেশক অবস্থানে তারা থাকে। উন্নত বিশ্বের মতো জবাইখানা প্রতিষ্ঠা করলে কোরবানিকে কেন্দ্র করে ধর্মীও গ্রুপগুলোর যে অর্থনীতি (চামড়া ইত্যাদি) চালু রয়েছে সেটা হুমকির মধ্যে পড়বে। সম্ভবত নানাপ্রকার ধর্মকথার ঘেরাটোপে নির্ধারিত স্থানে কোরবানির বিরোধীতার মূল কারণ এটাই।

সূত্র

১। মুসলমানদের কুরবানী করার ক্ষেত্রে কৌশলে বাধা সৃষ্টির এখতিয়ার কোন সরকারের নেই
২। ‘মুসলমানদের কুরবানী প্রথা বন্ধের ষড়যন্ত্রে রুখে দাড়াতে হবে’
৩। কুরবানী নিয়ে কোন ষড়যন্ত্র জনগণ মেনে নেবে না -হেফাজত আমীর

বোনাস বিনোদন

১। আওয়ামী ওলামা লীগের বক্তব্য ১
২। আওয়ামী ওলামা লীগের বক্তব্য ২


Comments

অতিথি লেখক's picture

সৌদি আরবে তো জানতাম কোরবানির পশু জবাই করার জন্য সরকারী জবাইখানা আছে। তাহলে বাংলাদেশে সমতুল্য ব্যবস্থা নেয়া হলে হুজুরদের এতো চুল্কায় ক্যান?

সৌদি জবাইখানা সংক্রান্ত লিঙ্কঃ http://www.arabnews.com/node/977931/saudi-arabia

Emran

হাসিব's picture

আমার ধারণা চুলকানির কারণ অর্থনৈতিক। কোরবানি কেন্দ্র করে একটা অর্থনৈতিক ইকোসিস্টেম আছে যেটার একটা অংশ হুজুরদের নিয়ন্ত্রণে। এটা তাদের হাতছাড়া হয়ে যাবে এই ভয়েই এসব চুলকানি।

তাহসিন রেজা's picture

আজ বিকেলে একটু বাইরে বের হয়েছিলাম। রক্ত আর গোবরে মাখামাখি রাস্তা গুলিতে হাটতে গিয়ে দেহ মন সব কেমন অশুচি হয়ে আছে।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------
“We sit in the mud, my friend, and reach for the stars.”

অলীক জানালা _________

হাতুড়ি's picture

শুধু কি আর হুজুর, বেশ কিছু তথাকথিত শিক্ষিত লোকেরাও নির্ধারিত স্থানে কোরবানিতে রাজি নয়। আমি কানাডাতে থাকি, বাংলাদেশি একটা মিলনমেলায় যাবার সুযোগ হয়েছিল। ছোট একটা জটলায় ৪-৫ জন এই নিয়ে আলাপ করছিলেন। তাদের বক্তব্যটি মোটামোটি এই রকম, "পাশের দেশের দেখাদেখি এখন শুধু গরু কোরবানি নিষেধ করাটাই বাকী আছে। দেশটাকে অফিসিয়ালি পাশের দেশের প্রদেশ ঘোষনা করে দিলেই তো চলে। দেরী করছে কেন সরকার,..." ইত্যাদি।

ষষ্ঠ পাণ্ডব's picture

কোরবানী ইসলাম ধর্মের একটি বিধান। এই সংক্রান্ত বিধিনিষেধ তাই ইসলামের আলোকে হওয়া উচিত। অর্থাৎ কুরআন ও সহীহ্‌ হাদীসে এই ব্যাপারে যা যা বলা হয়েছে সেটাই পালন করা উচিত। সুতরাং আমাদের দেখতে হবে কুরআন বা সহীহ্‌ হাদীসে নির্ধারিত স্থানে কোরবানী করতে নিষেধ করা হয়েছে কিনা। যদি অমন কিছু না বলা হয়ে থাকে তাহলে নির্ধারিত স্থানে কোরবানী করতে কোন বাধা নেই। এই পোস্টে জামায়াতে ইসলামী, উলামায়ে দেওবন্দ ঐক্য পরিষদ ও হেফাজতে ইসলামের পক্ষ থেকে দেয়া বক্তব্যগুলোতে কুরআন বা সহীহ্‌ হাদীসের কোন রেফারেন্স দেয়া হয়নি। এই ব্যাপারে আসলেই কুরআন বা সহীহ্‌ হাদীসের রেফারেন্স কারো জানা থাকলে জানাবেন।

যে সমস্ত মুসলিমপ্রধান দেশে নির্ধারিত স্থানে কোরবানী দেয়ার নিয়ম প্রচলিত আছে তারা ইসলামের কোন বিধান লঙ্ঘন করছে কিনা সেটা জানা দরকার। কারণ, ঐসব দেশেও দরিদ্র মুসলিম ও নারী কোরবানীদাতা আছেন। তাছাড়া কোরবানীর পশুর মাংস দরিদ্রদের মধ্যে বিতরণের বিধান দেশ-কাল ভেদে সর্বত্র, সব কোরবানীদাতার সমানভাবে জন্য প্রযোজ্য। সুতরাং জেনে বা না জেনে তারা ইসলামের কোন বিধান লঙ্ঘন করে থাকলে সেটা তাদেরকে জানানো এদেশের ধর্মপ্রান ইসলামী গোষ্ঠীগুলোর ঈমানী দায়িত্ব। আশা করি তাঁরা তাদের ওপর বর্তানো দায়িত্ব পালন করবেন।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সাক্ষী সত্যানন্দ's picture

উত্তম জাঝা!

সম্পূরক তথ্য হিসেবে আমকুরবানিকারকদের উগ্র অনাগ্রহ সংক্রান্ত খবরগুলোর আর্কাইভও কি করে রাখা যায়, হাসিব ভাই?

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

Post new comment

The content of this field is kept private and will not be shown publicly.