এক খর লাল দুপুরে জগদল বিহার থেকে ফেরার পথে পেটপূজার জন্য থামা হল স্থানীয় রেস্তোরায়, সেখানেই খাবার ফাঁকে ফাঁকে সাথে বয়ে আনা আবুল কালাম মোহাম্মদ জাকারিয়ার বাংলাদেশের প্রাচীন কীর্তি বইটির ১ম খণ্ড দেখে আবিস্কার করলাম মঙ্গলবাড়ির প্রাচীন মন্দির এবং সুবিখ্যাত গরুড় স্তম্ভ যা কিনা ভিমের পান্টি বলে পরিচিত তা আমাদের যাত্রা পথেই! ব্যস আর কী লাগে? জোড়া মোটর সাইকেলে সওয়ার হয়ে ভো করে ধূলি ধূসরিত পথ মাড়িয়ে যাওয়া হতে থাকল মঙ্গলবাড়ির দিকে।
ভ্রমণসঙ্গী হিসেবে ফোকলোরবিদ উদয়, তার ছাত্র রুহুল, ফটোসাংবাদিক ইকবাল ভাই, বরেন্দ্রভূমির চারণসন্তান তোজাম ভাই সহ অযাচিত ভাবে যোগ দিলেন স্থানীয় এক তরুণ, তার কাছে ভিমের পান্টির কথা জানতে চাইতেই বললেন- চলেন, আমি নিজেই নিয়ে যাচ্ছি! সাথে সাথে মোটর সাইকেল সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল পৌনে এক হালিতে।
মাটি বাঁধানো পথে বেয়ে সোজা নতুন সঙ্গীকে নিয়ে দাঁড়ালাম মঙ্গলবাড়ি শিবমন্দির প্রাঙ্গণে, সেখানে এখন নতুন মন্দির, কিন্তু আমাদের মূল উৎসাহ সেই আদি স্থাপনাকে ঘিরে, যা হিন্দু মন্দির না বৌদ্ধ মন্দির ছিল তারই সুরাহা আজ পর্যন্ত হয় নি!
ধারণা করা হয় সেটি পাল যুগের নির্মিত। বর্তমান পূজারি এসে আপ্যায়ন করে ঘুরিয়ে দেখালেন পূজার মণ্ডপ, প্রতিমা, অর্চনার স্থান, এই সময়ে মন্দিরের কোন দাড়িয়ে থাকা এক অচিন বৃক্ষ কথা বলে উঠল আমাদের দিকে চেয়ে-
মনের ভিতরে যেন রূপোলী ফিতে ঘরঘর করে চলতে থাকল- সেই সুপ্রাচীন মন্দিরের দেয়ালের কোন চিড় ধরা স্থানে হয়ত পাখি বা বাদুড়ের মুখ থেকে ফলের বীজ পড়েছিল, কালক্রমে সম্পূর্ণ উপাসনালয় বিলুপ্ত হয়ে গেছে কিন্তু সেদিন সেই বীজ পরিণত হয়েছে মহীরুহতে, এবং গাছটি তার বুকে পরম মমতায় আগলে রেখেছে প্রথম আশ্রয়দাতা মন্দিরকে! সেই কয়েকটি প্রাচীন ইট যেন নিয়ে আমাদের সেই সুবর্ণ অতীতে।
এর খানিক দূরেই ভিমের পান্টি নামের সেই স্তম্ভ ( আঞ্চলিক ভাষায় পান্টি মানে গরু চরানোর কাজে রাখালের ব্যবহৃত লাঠি, যদিও এমন বিদঘুটে নাম কেন দেওয়া হল তা জানতে পারি নাই), সাথের স্থানীয় বন্ধু বললেন এই স্তম্ভটি এক দশক আগেও মাটির বেশ উপরে অবস্থান করছিল, কিন্ত ক্রমাগত তা মাটির অভ্যন্তরে দেবে যাচ্ছে। আর বজ্রঝড়ের সময় বিদ্যুৎ শিখা প্রায়ই আঘাত করে স্তম্ভ শীর্ষকে এই কথা হলফ করে বললেন মাঠের কৃষকেরা।
মঙ্গলবাড়ি শিবমন্দির থেকে প্রায় ১৫০ মিটার দক্ষিণে অপেক্ষাকৃত নিচু স্থানে গরুড় স্তম্ভ নামের একটি উল্লেখযোগ্য প্রাচীন কীর্তি আছে। এটি সম্ভবত একটি মজে যাওয়া বিল, মানুষের তৈরি কোন জলাশয় নয়। স্তম্ভটি যেখানে অবস্থিত সেই নিম্নভূমিও এককালে সেই বিলের অংশ ছিল বলে ধারণা করা হয়। বিলের উত্তরাংশে খুব সম্ভব স্তম্ভটি স্থাপন করা হয়েছিল, অথবা এমনও হতে পারে যে স্তম্ভটি যখন স্থাপিত হয় তখন সমগ্র এলাকা জুড়ে উচু ভুমি ছিল। পরবর্তীকালে কোন প্রাকৃতিক কারণে সেই স্থান নিচু ভুমিতে রূপান্তরিত হয়, তবে পর্যাপ্ত তথ্য ছাড়া এমন সিদ্ধান্তে আশা কঠিন।
এই বিলের পূর্ব এবং দক্ষিণ-পূর্ব দিকে বেশ কিছু দূরে কয়েকটি প্রাচীন জলাশয়ের অস্তিত্ব আজও টিকে আছে, কিন্তু সেখানে কোন প্রাচীনকীর্তির ধ্বংসাবশেষের সন্ধান পাওয়া যায় না। হয়ত এককালে থাকলেও কালের করাল গ্রাসে সেগুলো বিলুপ্ত হয়ে গেছে। স্তম্ভের উত্তর, উত্তর-পশ্চিম ও উত্তর-পূর্ব দিকে প্রাচীন উঁচু ভূমি এবং সমগ্র অঞ্চল জুড়ে ঘন বসতি বিদ্যমান। মঙ্গলবাড়ি হাটকে কেন্দ্র করে চারদিকে আছে বেশ কয়েকটি প্রাচীন দীঘি-পুষ্করিণী। কিন্তু এই এলাকায় তেমন কোন উল্লেখযোগ্য প্রাচীন ইমারতের ধ্বংসাবশেষ দেখা যায় না, যদিও মাটির নিচ হতে মাঝে মাঝেই প্রাচীন ইটের সন্ধান পাওয়া যায়। মঙ্গলবাড়ি হাট থেকে মেইল তিনেক দূরে বাদাল নামে একটি প্রাচীন স্থান আছে, সেখানে ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির একটি কুঠিবাড়ী ছিল, সেই কুঠিবাড়ীরই অধ্যক্ষ স্যার চার্লস উইলকিন্স ১৭৮০ খ্রিস্টাব্দে আলোচ্য গরুড় স্তম্ভটি একটি বনভূমির মাঝে আবিস্কার করেছিলেন!
কৃষ্ণাভ ধূসর প্রস্তরে ( Black Basalt) নির্মিত স্তম্ভটি বর্তমানে ভগ্নাবস্থায়ও প্রায় ৩.৬ মিটার উঁচু, এবং নিচের দিকে এর পরিধি ১.৭৬ মিটার। স্তম্ভটি আদিও আরও অনেক উঁচু ছিল এবং এর চূড়ায় একটি গরুড় মূর্তি ছিল। পরবর্তীকালে বজ্রপাতে মূর্তিসহ উপরের অংশ ভেঙ্গে গেছে এবং স্তম্ভটি একদিকে কিছুটা হেলে পড়েছে। দেশ বিভাগের বেশ কিছুকাল আগে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ স্তম্ভের মূলদেশ ইট দিয়ে বাধিয়ে দিয়েছে। এই বাঁধানো অংশের পরিধি ৫.৭ মিটার। বর্তমানে বাঁধানো বেদী থেকে ০.৫ মিটার উপরে সংস্কৃত ভাষার ২৮ পঙক্তির একটি শিলালিপি আছে। পঙক্তিগুলি প্রায় ০.৫৩ মিটার দীর্ঘ এবং অক্ষরের আয়তন প্রায় আধা ইঞ্চি। স্তম্ভের গায়ে বজ্রলেপ ছিল। তা স্থানে স্থানে উঠে গেলেও স্তম্ভটির গাত্র মসৃণ।
স্তম্ভটির বাংলা অনুবাদ নিচে দেওয়া হল-
১- শান্ডিল্য বংশে (বিষ্ণু ?) তদীয় অন্বয়ে বীরদেব, তদগোত্রে পাঞ্চাল এবং পাঞ্চাল হইতে (তৎপুত্র) গর্গ জন্ম গ্রহণ করিয়াছিলেন।
২- সেই গর্গ বৃহস্পতিকে এই বলিয়া উপহাস করিতেন যে- ( শত্রু) ইন্দ্রদেব কেবল পূর্বদিকেরই অধিপতি, দিগন্তরের অধিপতি ছিলেন না ( কিন্তু বৃহস্পতির মত মন্ত্রী থাকিতেও ) তিনি সেই একটি মাত্র দিকেও ( সদ্য) দৈত্যপতিগণ কতৃক পরাজিত হইয়াছিলেন, ( আর) আমি সেই পূর্বদিকের অধিপতি ধর্ম (নামক) নরপালকে অখিল দিকের স্বামী করিয়া দিয়াছি।
৩- নিসর্গ- নির্মল- স্নিগ্ধা চন্দ্রপত্নী কান্তিদেবীর ন্যায়, অন্তবিবর্তিনী ইচ্ছায় অনুরূপা, তাহার ইচ্ছা নাম্নী পত্নী ছিলেন।
৪- বেদচতুষ্টয়রূপ- মুখপদ্ম- লক্ষণাক্রান্ত, স্বাভাবিক উৎকৃষ্ট পদগৌরবে ত্রিলোকশ্রেষ্ঠ, কমলযোনি ব্রহ্মার ন্যায়, তাহাদের দ্বিজোত্তম পুত্র নিজের শ্রীদর্ভপাণি এই নাম গ্রহণ করিয়াছিলেন।
৫- সেই দর্ভপাণির নীতি কৌশলে শ্রীদেবপাল ( নামক) নৃপতি মতঙ্গজ- মদাভিষিক্ত
- শিলাসংহতিপূর্ণ রেবা ( নর্মদা) নদীর জনক ( উৎপত্তি স্থান বিন্ধ্য পর্বত) হইতে ( আরম্ভ করিয়া) মহেশ- ললাট- শোভি- ইন্দু- কিরণ- শ্বেতায়মান গৌরীজনক ( হিমালয়) পর্বত পর্যন্ত, সূর্যোদয়াস্ত কালে অরুণ রাগ-রঞ্জিত ( উভয়) জলরাশির আধার পূর্ব-সমুদ্র এবং পশ্চিম-সমুদ্র ( মধ্যবর্তী) সমগ্র ভূভাগ কর-প্রদ করিতে সমর্থ হইয়াছিলেন।
-
- ৬- নানা- মদমত্ত- মতঙ্গজ- মদবারি- নিষিক্ত- ধরণিতল- বিসর্পি ধূলিপটলে দিগন্তরাল সমাচ্ছন্ন করিয়া দিকচক্রাগত- ভূপাল বৃন্দের চিরসঞ্চারমানে যাহাকে নিরন্তর দুর্বিলোক করিয়া রাখিত, সেই দেবপাল (নামক) নরপাল ( উপদেশ গ্রহণের জন্য) দর্ভপাণির অপেক্ষায়, তাহার দ্বারদেশে দণ্ডায়মান থাকিতেন।
-
- ৭- সুররাজ কল্প (দেব পাল) নরপতি (সেই মন্ত্রীবরকে) অগ্রে চন্দ্রবিম্বানুকারীকে ( মহার্হ) আসন প্রদান করিয়া , নানা নরেন্দ্র- মুকুটাঙ্কিত- পাদ- পাংসু হইয়াও স্বয়ং সচকিতভাবেই সিংহাসনে উপবেশন করিতেন।
-
- ৮- অত্রি হইতে যেমন চন্দ্রের উৎপত্তি হইয়াছিল, সেইরূপ তাঁহার এবং শর্করাদেবীর পরমেশ্বর বল্লভ শ্রীমান সোমেশ্বর ( নামক) পুত্র উৎপন্ন হইয়াছিল।
-
- ৯- তিনি বিক্রমে ধনঞ্জয়ের সহিত তুলনা লাভের উপযুক্ত ( উচ্চ) স্থানে আরোহণ করিয়াও, ( বিক্রম প্রকাশের পাত্রাপাত্র- বিচার- সময়ে ধনঞ্জয়ের ন্যায়) ভ্রান্ত বা নির্দয় হইতেন না, তিনি অর্থিগণকে বিত্ত বর্ষণ করিবার সময়ে, ( তাহাদের মুখের) স্তুতি-গীতি শ্রবণের জন্য উদগর্ব হইতেন না, তিনি ঐশ্বর্যের দ্বারা বহু বন্ধুজনকে ( সংবলিগত) নৃত্যশীল করিতেন, ( বৃথা) মধুর বচন প্রয়োগেই তাঁহাদিগের মনস্তুষ্টির চেষ্টা করিতেন না ,( সুতরাং) এই সকল জগতবিসদৃশ-স্বগুণ গৌরবে তিনি সাধুজনের বিস্ময়ের উৎপাদন করিয়াছিলেন।
১০- শিব যেমন শিবার, (এবং) হরি যেমন লক্ষ্মীর পাণি গ্রহণ করিয়াছিলেন, তিনিও সেইরূপ গৃহাশ্রম-প্রবেশ-কামনায় আত্মানুরূপা রল্লাদেবীকে যথাশাস্ত্র ( পত্নীরূপে ) গ্রহণ করিয়াছিলেন।
১১- তাঁহাদিগের কেদার মিশ্র নামে তপ্ত-কাঞ্চন-বর্ণাভ- কার্তিকেয়- তুল্য ( এক) পুত্র জন্মগ্রহণ করিয়াছিলেন। তাঁহার ( হোম কুণ্ডোত্থিত) অবক্রভাবে বিরাজিত সুপুষ্ট হোমাগ্নি-শিখাকে চুম্বন করিয়া, দিকচক্রবাল যেন সন্নিহিত হইয়া পড়িত। তাঁহার বিস্ফোরিত শক্তি দুর্দমনীয় বলিয়া পরিচিত ছিল। আত্মানুরাগ-পরিণত অশেষ বিদ্যা ( যোগ্য পাত্র পাইয়া) তাহাকে প্রতিষ্ঠা দান করিয়াছিল। তিনি স্ব-কর্মগুণে দেব-নরের হৃদয়-নন্দন হইয়াছিলেন।
১২- তিনি বাল্যকালে একবার মাত্র দর্শন করিয়াই, চতুবিদ্যা পয়োনিধি পান করিয়া, তাহা আবার উদগীর্ণ করিতে পারিতেন বলিয়া, অগস্ত্যপ্রভাবকে উপহাস করিতে পারিয়াছিলেন।
১৩- ( এই মন্ত্রবরের) বুদ্ধি-বলের উপাসনা করিয়া গৌড়স্বর ( দেবপাল দেব) উৎকল-কূল উৎকলিত করিয়া, হূণ-গর্ব খর্বীকৃত করিয়া এবং দ্রবির-গুর্জর- নাথ- দর্প- চূর্ণীকৃত করিয়া, দীর্ঘকাল পর্যন্ত সমুদ্র-মেখলা-ভরণা বসুন্ধরা উপভোগ করতে সমর্থ হইয়াছিলেন।
১৪- তিনি যাচকগণকে যাচক মনে করিতেন না, মনে করিতেন তাঁহার দ্বারা অপহৃত-বিত্ত হইয়াই, তাঁহারা যাচক হইয়া পড়িয়াছে। তাঁহার আত্মা শত্রু-মিত্রে নির্বিবেক ছিল। ( কেবল) ভব-জলদি-জলে পতিত হইবার ভয় এবং লজ্জা ( ভিন্ন) অন্য উদ্বেগ ছিল না। তিনি ( সংযমাদি অভ্যাস করিয়া) বিষয় বাসনা ক্ষালিত করিয়া, পরম-ধাম-চিন্তায় আনন্দ লাভ করিতেন।
১৫- সেই বৃহস্পতি- প্রতিকৃতি ( কেদার মিশ্রের) যজ্ঞস্থলে সাক্ষাৎ ইন্দ্র তুল্য শত্রু- সংহারকারী নানা-সাগর-মেখলা-ভরণা বসুন্ধরার চির-কল্যাণকামী শ্রী শূরপাল ( নামক) নরপাল, স্বয়ং উপস্থিত হইয়া, অনেকবার শ্রদ্ধা- সলিলাপ্লুত হৃদয়ে নতশিরে পবিত্র ( শান্তি) বারি গ্রহণ করিয়াছিলেন।
১৬- তাঁহার দেবগ্রাম জাতা বব্বা ( দেবী) নাম্নী পত্নী ছিলেন। লক্ষ্মী চঞ্চল বলিয়া, এবং ( দক্ষ-দুহিতা) সতী অনপত্যা ( অপুত্রবর্তী) বলিয়া, তাহাদের সহিত ( বব্বা দেবীর) তুলনা হইতে পারে না।
১৭ – দেবকী গোপাল- প্রিয়কারক পুরুষোত্তম তনড়িয়াছে করিয়াছিলেন, যশোদা সেই লক্ষীপতিকে ( আপন পুত্ররূপে) স্বীকার করিয়া লইয়াছিলেন। বব্বা দেবীও, সেইরূপ, গো-পাল-প্রিয়কারক পুরুষোত্তম তনয় প্রসব করিয়াছিলেন, যশো-দাতারা তাহাকে লক্ষ্মীর পতি বলিয়াই স্বীকার করে লইয়াছিলেন।
১৮- তিনি জমদগ্নিকূলোৎপন্ন সম্পন্ন-ক্ষত্র-চিন্তক ( অপর) দ্বিতীয় রামের ( পরশুরামের) ন্যায়, রাম ( অভিরাম) গুরুব মিশ্র এই আখ্যায় ( পরিচিত ছিলেন)
১৯- ( পাত্রাপাত্র- বিচার) কুশগুলবান বিজিগীষু শ্রীনারায়ণ পাল ( নরপতি) যখন তাহাকে মাননীয় মনে করতেন, তখন আর তাঁহার অন্য ( প্রশস্তি ) প্রশংসা বাক্য কি ( হইতে পারে?)।
২০- তাঁহার বাগবৈভবের কথা, আগমে ব্যুৎপত্তির কথা, নীতিতে পরম নিষ্ঠার কথা, মহতের গুণ-কীর্তনে আসক্তির কথা, জ্যোতিষে অধিকারের কথা, এবং বেদার্থ-চিন্তা-পরায়ণ অসীম-তেজসম্পন্ন তদীয় বংশের কথা, ধর্মাবতার ব্যক্ত করিয়া গিয়াছেন।
২১- সেই শ্রীভৃৎ ( ধনাঢ্য) এবং বাগধীশ ( সুপণ্ডিত) ব্যক্তিতে একত্র মিলিত হইয়া, পরস্পরের সখ্য-লাভের জন্যই, স্বাভাবিক শত্রুতা পরিত্যাগ করিয়া, লক্ষ্মী এবং সরস্বতী উভয়েই যেন ( একত্র) অবস্থিতি করিতেছেন।
২২- শাস্ত্রানুশীলন-লব্ধ-গভীর-গুণ-সংযুক্ত বাক্যে ( তর্কে) তিনি বিদ্বৎ সভায় প্রতিপক্ষের মদগর্ব চূর্ণ করিয়া দিতেন, এবং যুদ্ধক্ষেত্রেও অসীম-বিক্রম-প্রকাশে, অল্পক্ষণের মধ্যেই, শত্রুবর্গের ভটাভিমান ( যোদ্ধা বলিয়া অভিমান) বিনষ্ট করিয়া দিতেন।
২৩- যে বাক্যের ফল তৎক্ষণাৎ প্রতিভাত হইত না, তিনি সেরূপ (বৃথা) কর্ণ-সুখকর বাক্যের অবতারণা করতেন না। যেরূপ দান পাইয়া ( অভীষ্ট পূর্ণ হইল না বলিয়া) যাচককে অন্য ধনীর নিকট গমন করিতে হয়, তিনি কখনও সেরূপ ( কেলি- দানের) দান- ক্রীড়ায় অভিনয় করিতেন না।
২৪- কলিযুগ-বাল্মীকির জন্ম-সূচক, অতি রোমাঞ্চোৎপাদক, ধর্মেতিহাস-গ্রন্থ-সমূহে, সেই পুণ্যাত্মা শ্রুতির বিবৃতি ( ব্যাখ্যা) করিয়াছিলেন।
২৫- তাঁহার সুর-তরঙ্গিণীর ন্যায় অ-সিন্ধু-গামিনী প্রসন্ন-গম্ভীরা বাণী ( জগৎকে) যেমন তৃপ্তিদান করিত, সেইরূপ পবিত্র করিত।
২৬- তাঁহার বংশে ব্রহ্মা স্বয়ং পিতৃত্ব গ্রহণ করিয়া, আবার স্বয়ং পুত্ররূপে জন্ম গ্রহণ করিয়াছিলেন, (ইতি) এইরূপ মনে করিয়া (লোকে) তাঁহার পূর্বপুরুষগণের এবং তাঁহার আশ্রয় গ্রহণ করিত।
২৭- তাঁহার (সুকুমার) শরীর-শোভার ন্যায় লোক-লোচনের আনন্দদায়ক, তাঁহার উচ্চান্তকরণের অতুলনীয় উচ্চতার ন্যায় উচ্চতা-যুক্ত, তাঁহার সুদৃঢ় প্রেম-বন্ধনের ন্যায় দৃঢ় সংবদ্ধ, কলি-হৃদয়-প্রোথিত-শল্যবৎ সুস্পষ্ট ( প্রতিভাত) এই স্তম্ভে, তাঁহার দ্বারা হরির প্রিয়সখা ফণিগণের (শত্রু) এই গরুড়মূর্তি ( তার্ক্ষ্য) আরোপিত হইয়াছে।
২৮- তাঁহার যশ অখিল দিগন্ত পরিভ্রমণ করিয়া, এই পৃথিবী হইতে পাতাল-মূল পর্যন্ত গমন করিয়া, (আবার) এখানে হৃতাহি- গরুড়চ্ছলে উত্থিত হইয়াছে। (এই) প্রশস্তি সূত্রধার বিষ্ণুভদ্র কতৃক উৎকীর্ণ হইয়াছে।
পাল নৃপতি নারায়ণপাল দেবার রাজত্বকালে ( ৮৫৪-৯০৮ খ্রি) তার মন্ত্রী গুরব মিশ্রের এই প্রশস্তিতে তার পূর্বপুরুষ কেদার মিশ্র ( পিতা), সোমেশ্বর ( পিতামহ), দর্ভপাণি ( প্রপিতামহ), গর্গ ( প্র-প্র-পিতামহ) প্রমুখ সম্পর্কেও প্রশংসা বাক্য আছে। গুরব মিশ্র নারায়ণ পালের, কেদার মিশ্র সূরপাল ও দেবপালের, দর্ভপাণি দেবপালের এবং গর্গ ধর্মপালের মন্ত্রী ছিলেন বলে স্তম্ভলিপিতে উল্লেখ আছে।
স্তম্ভলিপিটি দেখে অতি সহজেই অনুমান করা যায় যে, এটি একটি বিশেষ লিপি এবং বিশেষ উদ্দেশ্যে এবং বিশেষ একটি স্থানে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। অথচ বর্তমানে মঙ্গলবাড়িতে প্রাচীন কীর্তির এমন কোন ধ্বংসবাশেষ মেলে না যাতে এই স্থানকে পালদের কোন জয়স্কন্ধকার না প্রশাসনিক কেন্দ্র হিসেবে ধরা যায়। কতগুলি প্রাচীন জলাশয়, একটি প্রাচীন মন্দিরের ধ্বংসবাশেষ বহনকারী একটি ঢিবি ( শিব মন্দিরের ঢিবি), মাটির নিচে এখানে ওখানে কিছু কিছু প্রাচীন কালের ইটের অস্তিত্ব এবং কিছু কিছু প্রাচীন মূর্তির ভগ্নাংশ এ স্থানের প্রাচীনত্বের নির্দেশ বহন করে তাতে কোন সন্দেহ নেই, কিন্তু এর বেশি কিছুর প্রমাণ মেলে না।
প্রাপ্ত তথ্য মতে মনে হয় এখানে পাল বংশীয় নৃপতিদের কোন প্রশাসনিক কেন্দ্র ছিল না। খুব সম্ভব এখানে গুরবমিশ্র- কেদার মিশ্রের বাসস্থান বা মিশ্রবংশীয় ব্রাহ্মণদের আদি নিবাস ছিল এবং তাদের বংশের প্রশস্তি প্রচার করার প্রকৃষ্ট স্থান হিসেবে স্তম্ভ লিপিটি তাদের বংশপরম্পরাগত বাসস্থানের নিকটবর্তী স্থানে প্রোথিত হয়েছিল। তাদের আবাসবাটি যে এখানে ছিল তা লিপির পাঠ থেকে বোঝা যায়। ১৫ নং শ্লোকে আছে -- সেই বৃহস্পতি- প্রতিকৃতি ( কেদার মিশ্রের) যজ্ঞস্থলে সাক্ষাৎ ইন্দ্র তুল্য শত্রু- সংহারকারী নানা-সাগর-মেখলা-ভরণা বসুন্ধরার চির-কল্যাণকামী শ্রী শূরপাল ( নামক) নরপাল, স্বয়ং উপস্থিত হইয়া, অনেকবার শ্রদ্ধা- সলিলাপ্লুত হৃদয়ে নতশিরে পবিত্র ( শান্তি) বারি গ্রহণ করিয়াছিলেন। এতে কেদার মিশ্রের যজ্ঞ শেষে শান্তিবারি প্রদান করার সুস্পষ্ট উল্লেখ দেখা যাচ্ছে।
এই অঞ্চলে এ ব্যাপারে যে জনশ্রুতি যুগ যুগ ধরে চলে আসছে তা থেকে জানা যায় যে, এই শান্তিবারি ( মঙ্গলবারি) প্রদান করার প্রথা পালদের পরেও বহুকাল ধরে প্রচলিত ছিল। নানা স্থান থেকে বহুলোকের সমাগম হত এখানে এবং এখানকার ব্রাহ্মণগণ তাদের মঙ্গলবারি প্রদান করতেন। সেই সংস্কৃতির অস্তিত্ব প্রতি বৈশাখে অনুষ্ঠিত একটি বাৎসরিক মেলার মাঝে এখনো বেঁচে আছে। প্রতি মঙ্গলবারে এখানে একটি হাট বসে, মুকুন্দপুর মৌজায় অবস্থিত এই মঙ্গলবাড়ি হাট যে মঙ্গলবারি নামেরই রূপান্তর তাতে কোন সন্দেহ নেই। অক্ষয় কুমার মৈত্রেয় গৌড়লেখমালা গ্রন্থে এ স্থানকে মঙ্গলবারি নামেই উল্লেখ করেছেন।
এখানে পালদের রাজধানী ছিল বলে অক্ষয় কুমার মৈত্রেয় বলেছেন, ৬ষ্ঠ শ্লোকের টীকায় তিনি বলেছেন- এই শ্লোকের বর্ণনাকৌশলে রাজভবনের নিকটেই মন্ত্রীভবন অবস্থিত থাকিবার আভাস প্রাপ্ত হওয়া যায়। এখানে গরুড় স্তম্ভটি অদ্যপি তাঁহার পুরাতন প্রতিষ্ঠাভূমির উপর দন্ডায়মান আছে, তাহা যে মন্ত্রী ভবনের একাংশমাত্র, তদ্বিষয়ে সংশয় উপস্থিত হবার কারণ নাই, সুতরাং রাজধানীও তাঁহার অনতিদূরেই বর্তমান ছিল। শ্রী মৈত্রেয় স্তম্ভটি সরেজমিনে দেখেছিলেন কিনা, জানা নেই। দেখে থাকলে তিনি এ মন্তব্য কেমন করে করেছিলেন তা বোধগম্য হচ্ছে না।
আগেই বলা হয়েছে যে একটি নিচু ভূমির উত্তরাংশে স্তম্ভটি অবস্থিত। সে স্থানে যদি সে সময়েই উঁচু ভূমি থাকত এবং পরবর্তীকালে তা যদি প্রাকৃতিক কারণে বিলে পরিণত হয়ে থাকত ( যা অসম্ভব নয়) তবে শ্রী মৈত্রেয় বর্ণিত তথাকথিত মন্ত্রীভবনের কিছু না কিছু ধ্বংসচিহ্ন সেখানে অবশ্যই থাকত, স্তম্ভের মাত্র ১৫০ মিটার উত্তরে অবস্থিত শিব মন্দিরের ধ্বংসবাশেষ রূপে অবস্থিত ঢিবি এই ধারনার পিছনে প্রবল সমর্থন যোগায়, অথচ স্তম্ভের চারপাশের বিস্তীর্ণ এলাকার নিম্ন ভূমিতে কোন প্রাচীন কীর্তির ধ্বংসবাশেষ দূরে থাক, একখন্ড প্রাচীন ইট বা মৃৎপাত্রের ভগ্নাংশেরও সন্ধান পাওয়া যায় না। স্তম্ভটি যদি এতকাল টিকে থাকতে পারে সেক্ষেত্রে এখানে যদি ইমারতাদি ( মন্ত্রীভবন ইত্যাদি ) থাকত তবে সেগুলোর কোন না কোন চিহ্ন, তা যতই ক্ষুদ্র হোক না কেন, টিকে থাকার কথা। অথচ একখণ্ড প্রাচীন ইটও এই স্তম্ভ এলাকায় খুঁজে পাওয়া যায় না। তাতে সহজেই ধারণা করা যায় যে এখানে কোন ইমারতের অস্তিত্ব ছিল না। এবং শিবমন্দিরের সামনে নিচু ভূমিতে ( খুব সম্ভব বিলে) ইচ্ছা করেই এই স্তম্ভটি স্থাপন করা হয়েছিল ( দিবর দীঘির স্তম্ভ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে অনুরূপ দৃষ্টান্ত পাওয়া যায়। ।
খুব সম্ভব গুরব মিশ্রদের আবাসভবন ছিল স্তম্ভের উত্তর দিকে মঙ্গলবাড়ি হাটের নিকটবর্তী কোন স্থানে এবং পালদের রাজধানী ছিল মঙ্গলবাড়ি থেকে কয়েক মাইল দূরে, সেখানের আমাইর বা আমৈর, জগদল, যোগীর, ঘোপা ইত্যাদি প্রাচীন ধ্বংসবাশেষে পরিপূর্ণ অতি প্রাচীন স্থানগুলোর কোন একটিতে পালদের তৎকালীন রাজধানী ছিল বলে ধারণা করা হয়। মঙ্গলবাড়ি থেকে মাত্র ১২ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত পাহাড়পুর ( সোমপুর) বিহারও এই ধারণার পিছনে সমর্থন যোগায়। রাজধানীর কাছাকাছি স্থানেই যে ধর্মপালদেব এই বিশাল কীর্তি ( সোমপুর বিহার) স্থাপন করেছিলেন তাও ধারণা করা যায়।
( উপরের অনুবাদ সহ প্রায় পুরো অংশটিই আবুল কালাম মোহাম্মদ জাকারিয়ার বাংলাদেশের প্রাচীন কীর্তি বইটি থেকে নেওয়া হয়েছে)
বেলা পড়ে যাচ্ছে, তখনো অনেক পথ বাকী পাড়ি দেবার। আবার যাত্রাপথে জীবনের নেশায় মাতাল আমরা কজনা, মনের পর্দায় বার বার ভেসে উঠছে প্রাচীন মন্দিরের স্মৃতি বহন করতে থাকে নির্বাক সেই অচিন গাছটি।
Comments
খুব ভাল লেখা। বাংলাদেশের প্রাচীন কীর্তি বই টার আর কিছু ডিটেলস মিলবে ? দেখি কোলকাতায় আনাতে পারি কিনা ।
আর লেখা, এবারের টা তো একেবারেই মৌলিক না।
উনার সেই বইয়ের ২ খণ্ড একসাথে বাংলাদেশের প্রত্নসম্পদ নামে বাহির হয়েছে, আমার পড়া সেরা কাজ বাংলাদেশের পুরাতত্ত্ব নিয়ে।
facebook
http://rokomari.com/book/40343
http://rokomari.com/book/40345
শিলালিপিটা দেখে খুব ভালো লাগলো। কিন্তু এই অমূল্য প্রত্নসম্পদের গায়ে B+K জাতীয় বীজগাণিতিক রাশি দেখে মেজাজটাই খারাপ হয়ে গেল।
এমন আরো অনেক কিছুই ছিল, কয়েকটা তো ১৭৮৬ সালে লেখা!
facebook
বাংলা অনুবাদ খাসা! কী ভাষা!
দাঁত ভেঙ্গে গেছে...
তাহলে লিখতে যেয়ে আমার কি অবস্থা বুঝেন! এখন বেড রেস্টে আছি
facebook
এতো কঠিন কেনু?
আজকে থেকে পড়া শুরু করে দিলাম সব। মেলা কিছু লিখে ফেলেছো পড়তে পারি নাই অনেকদিন। সব শেষ করে ফেলবো দুইদিনেই।
এক কমেন্ট তিনবার পোষ্ট করলাম কিন্তু যায় না। এটা কোন সমস্যা?
--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি
বেশ খাসা ভাষা, সমস্যা কিসের !
facebook
পুরাতন একটি প্রাসঙ্গিক লেখা শেয়ার করলাম:
গোরা
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ গোরা
facebook
তাহলে নওগাঁতো যেতেই হয়।
বইটি কোথায় পাওয়া যাবে ?
লেখাটার জন্য আবারও ধন্যবাদ। ধন্যবাদ আপনাকে, আমাকে পৃথিবীটাকে ঘুরিয়ে দেখাবার জন্য।
আজিজেই পাবার কথা, কিন্তু বাংলাদেশের প্রত্নসম্পদ ( অখন্ড ) নামে
facebook
অনেক কিছু জানছি, অনেক কিছু। অসাধারণ হচ্ছেরে অণু, চালিয়ে যা।
-মনি শামিম
চইলছে না খো মামু
facebook
অনেক অজানা তথ্য জানতে পারছি আপনার লেখা পড়ে। চমৎকার আপনার লেখা!
============================
কত আর রবে দেশ রাহু গ্রাস কবলে?
সমূলে উপড়ে ফেলি দূর্নীতি সবলে।
ধন্যবাদ, জায়গাগুলো অচেনা তো তাইই হবে
facebook
বহু আগে একজন আমাকে একটা টিশার্ট দিয়েছিল। কালো চশমা; কানে দুল আর মাথায় পাংকু ছাট দেয়া চুল লাগানো শেক্সপিয়রের ছবি। নীচে লেখা: Rebel with applause
সচলে দুইজন মানুষের লেখা পড়লে কথাটা মনে পড়ে যায়;
একজন মুস্তাফিজ ভাই; যিনি ছবিকে কথা দিয়ে সবাক করে তোলেন
আর আরেকজন তারেক অণু যে গল্পকে ছবি দিয়ে দৃশ্যমান করে তোলে...
০২
মাঝে মাঝে কিছু জায়গায় আমারও যাওয়া হয়। মাঝে মাঝে কিছু ছবিও তোলা হয়। মাঝে মাঝে শব্দ টব্দ নিয়ে কিছু নাড়াচাড়াও হয়। মাঝে মাঝে এরকম কিছুর পরিকল্পনাও হয় কিন্তু অবশেষে আর দুইটা মিশ খায় না...
০৩
অন্য সবগুলোর মতো এইটার পোস্টের জন্যও একটাই মন্তব্য: Rebel with applause
লীলেন দার কথা শুনে মনে হচ্ছে বরফ সাগরে একটু সাঁতার কেটে আসি, জ্যাক সহ।
আবার আসেন দাদা, এইবার সুইডেন যামু জাহাজে চেপে, পাক্কা।
facebook
লেখা পড়ার আগেই মন্তব্যঃ ছবিটা দেখে আগে এই প্রশ্ন মাথায় আসছে। গরুড় না একরকম বিশাল পাখি? এই ডান্ডির সঙ্গে কি পাখির ঠ্যাং এ দড়ি দিয়ে বেন্ধে রাখত?
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
গরুড় হচ্ছে পাখির রাজা, বিষ্ণুর বাহন।
গরুড় স্তম্ভ স্থাপনের চল সমগ্র উপমহাদেশে হাজার হাজার বছর ধরে চলে আসছে-
facebook
ঐ হইলো আর কি, এইতা তাইলে বিষ্ণুর পার্কিং স্পট।
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
facebook
হেলে গেছে, নাকি এটা একটা সূর্যঘড়ি? হেলে যাবার পরেও স্তম্ভের গায়ের লেখাকে বেশ আনুভূমিক মনে হল, তাই এই মন্তব্য।
হেলেই গেছে
facebook
মারে মা!! আনুবাদ পড়তে যেয়ে আমার দাঁত কয়টা আর বুঝি নাই!
আর লিখতে লেগে আমার দাঁত কপাটি লেগেছিল, ভাগ্যে অনুবাদ নিজেকি করতে হয় নাই
facebook
চলুক, চলুক, এই সিরিজ চলুক...
চেষ্টা করছি-
facebook
Post new comment