শব্দকুহক

অতিথি লেখক's picture
Submitted by guest_writer on Wed, 19/10/2011 - 10:33pm
Categories:

মাঝে মাঝে জ্বর হয়। আচ্ছন্নতার মাঝে তখন কানে ভেসে আসে একটানা পুঁথিপাঠ। লবঙ্গ গন্ধ বাতাসে ছড়িয়ে খুব কাছে বসে পা দুলিয়ে কপালে কেউ ঠান্ডা হাত রাখে। তখন লাল আর নীল রঙ মিলে বেগুনী রঙের এক একটি বৃত্ত সারা দেওয়াল জুড়ে বসে। জ্বর সেরে গেলে চাবিওয়ালা খুঁজতে বেরোই। সাথে নিই সেই ধর্মগ্রন্থ। চাবি বা নিজের ঘর হারিয়ে গেলেও ধর্মগ্রন্থটি যেন হারিয়ে না ফেলি তাই সাথে সাথে রাখি। নাজারেথ শহর থেকে পাওয়া এ গ্রন্থের এক একটি শব্দ যেন কুহক, তার মৌতাতে ডুবে যেতে যেতে নির্ঘুম কাটে রাত। বিস্তারে তাই নিজেকে খুলে দেখানো ছাড়া আর কোনো উপায় থাকে না।

**
ঝুলনের রাতে ঝুমঝুমি সমেত একটা বাঁশী কুড়িয়ে পেয়েছি। চিত্রকূটের চুড়োয় পৌঁছুতে তবু বেলা পড়ে এলো। তীব্র আলোকচ্ছটায় অদৃশ্য দৈবকন্ঠ প্রশ্ন করে থেমে থেমে, আমি ভাগ্যে বিশ্বাসী কি না। আলোর তীব্রতায় আমার দু’চোখ ঝলসে যায়।

কে! আমার দৃষ্টিশক্তি ধ্বংস করে আড়ালে থেকে কথা বলো.. কে তুমি? কোনো ধর্মাবতার কী?

বুঝি অবধূত এলে ওই!

অভয় দাও তো এই বেলা বলি, আমিই চিত্রা এবং ভাগ্যে বিশ্বাসীও বটে। ও কি! আমার খঞ্জনী নেই বলে পরিহাস কোরো না আমার ঈশ্বর। প্রবজ্যায় অতি ধীরে নীলকান্তমণি হয়ে ওঠার রহস্য জেনেছি।

অদৃশ্য সে কন্ঠস্বর পুনরায় কোনো প্রশ্ন রাখে না তবে আমি জেনে যাই সরল স্বীকারোক্তির কাছে ম্লান হবে সব। আমিও অন্ধ হয়েছি তাই অন্ধকারে কালো রঙের গাঢ়ত্ব প্রসঙ্গে তোমাদের সাথে আলোচনায় যাবো না। শুধু বলি, দেখে এসেছি খরগোশের চোখদুটো রোদ চশমায় ঢাকা। অনুজ্জ্বল পথে তাকে প্রশ্ন করেছি, হে শাস্ত্রজ্ঞ অপেক্ষা শব্দটি তবে কোথায় প্রযোজ্য!

**

মেঘ অদিতি


Comments

তানিম এহসান's picture

“সরল স্বীকারোক্তির কাছে ম্লান হবে সব” - অদ্ভুত প্রেরণা দিলো পুরো লেখার আবহের মাঝে থেকে! চলুক

 তাপস শর্মা 's picture

নিমগ্ন একটা অনুভুতিতে মনটা ভরে গেলো। চেতনা গুলি যেন দুমড়ে মুচড়ে কেঁদে উঠছে। আর অনুজ্জ্বল নিমগাছের ফেরারে একটা বোধ বলে দিচ্ছে - তুমি ভালো থাকার চেষ্টা করো, তুমি ভালো থেকো।

অদিতি লেখা চালিয়ে যান।

পাঠক's picture

এই লেখার কোন মানে বুঝলাম না। বাক‌্যগুলো সুন্দর, কিন্তু সেগুলোকে জোড়া দিয়ে তেমন কোন নিগূঢ় জিনিস পেলাম না। "খরগোশের চোখদুটো রোদচশমায় ঢাকা"। কে এই খরগোশ? কেউ যদি দয়া করে বুঝিয়ে দিতেন।

-নিলম্বিত গণিতক

কর্ণজয়'s picture

১,২,৩,৪,৫,৬,৭,- শুভ সংখ্যা পেরিয়ে ৮,৯,১০,১১,১২,১৩ - অশুভ সংকেতকে পেছনে রেখে- ১৪, ১৫, ১৬,....., ১০১ বার আপনার লেখাটা পড়লে ঈশ্বরের, সাথে সাথে নিজের ১০১ টি অভিজ্ঞানের রূপ উন্মোচিত হবে...
প্রণতি রইলো।।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর's picture

হ, খঞ্জনী না থাকলে ঈশ্বরও পরিহাস করে... স্বাভাবিক

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

প্রখর-রোদ্দুর's picture

""" দেখে এসেছি খরগোশের চোখদুটো রোদ চশমায় ঢাকা। অনুজ্জ্বল পথে তাকে প্রশ্ন করেছি, হে শাস্ত্রজ্ঞ অপেক্ষা শব্দটি তবে কোথায় প্রযোজ্য!"""

মেঘ অদিতি's picture

ধন্যবাদ সবাইকে।

ব্যাঙের ছাতা's picture

ভাল লেগেছে। লেখকের আরো লেখা চাই।

মেঘা's picture

অপেক্ষা শব্দটি তবে কোথায় প্রযোজ্য?

আমারও প্রশ্ন মন খারাপ

Post new comment

The content of this field is kept private and will not be shown publicly.