চাকরী নাইরে, চাকরী নাইরে...

এস এম মাহবুব মুর্শেদ's picture
Submitted by mahbub on Sun, 14/12/2008 - 1:00pm
Categories:

আমেরিকার অর্থনীতির অবস্থা খারাপ হচ্ছে দিনকে দিন। একের পরে এক কোম্পানী হাজারে হাজারে কর্মী ছাটাই করছে প্রতিদিন। শুধুমাত্র গত নভেম্বর মাসে প্রায় ৫ লাখ তেত্রিশ হাজার কর্মী ছাটাই হয়েছে। আমেরিকার ইতিহাসে দ্বিতীয় বৃহত্তর মাসিক চাকরী ছাটাই এটা। এর আগে ১৯৭৪ সালে ডিসেম্বরে ছাটাই হয়েছিল ছয়লাখ। [১,২]

আমেরিকার কর্মী ছাটাই (১)আমেরিকার কর্মী ছাটাই (১)

পুকুরে একটা ঢিল ছুড়লে যেমন ঢেউ ছড়িয়ে পড়ে তেমনি চাকুরী ছাটাইয়ের ধাক্কাটা স্বাভাবিক ভাবে আমাদের গায়ে এসেও লাগছে। প্রায় প্রতিদিন নতুন নতুন গল্প শুনি। এক বাঙ্গালী চাকুরী না পেয়ে দেশে পরিবার পাঠিয়ে দিয়েছে। নতুন বাড়ি কিনেছিলেন তিনি। কিস্তির টাকাটা না পেয়ে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে তাকে। আরেক বাঙ্গালী ভিসা সমস্যার দরুন বাধ্য হয়ে চলে গেছেন বাংলাদেশে। প্রায় সপ্তাহে একটা দুটা করে পরিচিত জন ফোন করছেন চাকুরী আছে কিনা জানতে চেয়ে। আমাদের নিজেদের অবস্থাও সুবিধার না। আমার স্ত্রীর কোম্পানীতে ৫% ছাটাই হবে। কবে হাতে ছাটাইয়ের নোটিশ দেয় বলা যাচ্ছে না। আমার কোম্পানী এখনও খানিকটা স্থীর আছে। কিন্তু কবে কি হয় বলা যায় না।

কিন্তু কেন এমন হল? ইকোনমিস হেল্প নামের একটি ব্লগে জানা যায় যে নীচের কারনগুলো দায়ী এই খারাপ অবস্থার জন্য [৩]:

১। জাতীয় ঋণ ১০,০০০ বিলিয়ন ডলার (জাতীয় প্রবৃদ্ধীর ৬৮%)
২। বর্তমান একাউন্ট ডেফিসিট ৮৫৭ বিলিয়ন ডলার (জাতীয় প্রবৃদ্ধীর ৬.৫%)
৩। গৃহায়ন বাজারে ধ্বস - কিছু কিছু জায়গায় বাড়ির দাম ৩০% বেশী পড়ে গেছে
৪। উঠতি অসাম্যতা (Rising Inequality)
৫। ডলারের মূল্য পতন, ইত্যাদি

বিশেষ করে গৃহায়ন বাজারে ধ্বস এই অর্থনৈতিক দুর্গতির একটা বড় কারন। ২০০১ এ আইটি নিয়ে যে অর্থনৈতিক মন্দা শুরু হয়েছিল সেটা কাটাতে আমেরিকার প্রধান অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান ফেড খুব সস্তায় কর্পোরেট লোন দেয়া শুরু করে ছিল। আর এই সুযোগ ব্যবহার করে আমেরিকায় বাড়ি কেনার লোন দেবার জন্য বিখ্যাত দুটি কোম্পানী ফেনী মে (Fannie Mae) আর ফ্রেডী ম্যাক (Freddie Mac) ধুমসে কনজিউমার লোন দেয়া শুরু করেছিল। বুশের অন্যতম পলিসি ছিল কে কিরকম ব্যবসা করবে সেদিকে নজর না দেয়া। অর্থাৎ পুঁজিপতিরা যেমন করে হোক ব্যবসা করলেই হল। তাই লোন শোধ করতে পারবে কিনা এটা বিবেচনা না করে যখন ফেনী মে আর ফ্রেডী ম্যাক কনজিউমারকে লোন দিচ্ছিল তখনও সরকার কিছুই বলেনি। ফলাফল হল যারা জীবনে কোনদিন বাড়ি কেনার মত সচ্ছল হতে পারত না তারাও বাড়ি কিনে ফেলেছে।

সমস্যাটা শুরু হয়েছে তখন যখন ফেড ইন্টারেস্ট রেইট আবার স্বাভাবিক করে দিয়েছে। এই সময় বাড়ীর লোন কোম্পানীর উপর চাপ এসেছে। তারা চাপ দিয়েছে কনিজউমারকে। লোকে যেখানে মাসে হাজার ডলার দিত কিস্তি বাবদ সেখানে দুহাজার দিতে হচ্ছে দেখে পড়েছে বিপদে। মাসে মাসে এই টাকা শোধ না করতে পেরে বাড়ি বাজেয়াপ্ত হয়ে গিয়েছে। মধ্যবর্তী বাড়ীর লোন কোম্পানী তখন পড়েছে বিপদে। শেষমেষ টাকা তুলতে না পেরে তারাও ধ্বসে পড়েছে। এই সাথে একে একে ধ্বসটা ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে চর্তুদিকে।

কেউ জানেনা এর শেষ কোথায়। যেহেতু আর্ন্তজাতিক বাজারে ব্যবসা হয় ডলারে, তাই এই ধাক্কা ছড়িয়ে পড়েছে আমেরিকার বাইরেও। বিভিন্ন দেশে চাকরী চলে যাওয়া লোকের সংখ্যা তাই বাড়ছে।

আপনার গায়ে কি এসে পড়তে পারে এই বিপদ? আপনি কোথায় আছেন, কি ধরনের চাকরী করছেন সেটার উপর নির্ভর করে। তবে যাই হোক না কেন আপনার উচিত হবে আগামী এক বছর চলতে পারবেন এরকম সঞ্চয়ের ব্যবস্থা রাখা। আর চোখ কান খোলা রাখা। কেন না কখন কি ঘটে যাবে কিচ্ছু বলা যায় না।

রেফারেন্স
[১] আমেরিকার ন্যাশনাল ব্যুরোর ডেটা

[২] ঐতিহাসিক পার্সপেক্টিভে যাচাই

[৩] আমেরিকার অর্থনীতি খারাপ হল কেন?


Comments

কিংকর্তব্যবিমূঢ়'s picture

ডরাইছি ইয়ে, মানে...
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...

এস এম মাহবুব মুর্শেদ's picture

অবস্থা কিন্তু সত্যি খুবই খারাপ। কানাডাতেও চাকুরীর বাজার মন্দা যাচ্ছে। চোখ কান খোলা রাইখো আর টাকা জমায়ো।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

কবি's picture

চাকুরী কবে শুরু!

সৌরভ's picture

রাগিব ভাইর কথাটায় আংশিক সহমত।
ধার করে ঘি খাওয়ার ব্যাপারটায় সামগ্রিক অর্থনীতিকে স্থূলভাবে দেখলে খুব একটা প্রভাব নাই। কিন্তু একজন ব্যক্তি বা একটা পরিবারকে দেখলে সেইটাই পতনের মূল কারণ।


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

দিগন্ত's picture

কি আর বলি ... এখন সবই শুধু সময়ের অপেক্ষা। অবস্থা ভারতেও ভাল নয়, সফটওয়্যার ছাড়া বাকি সব শিল্পে বৃদ্ধি উল্টোদিকে গড়াচ্ছে, ধাক্কা খেয়েছে রপ্তানীও। ব্যবসার বাজার ভাল নয় ... এখন একটা আঠা দিয়ে নিজের চাকরিটা আটকে রাখতে পারলে হয় ...


হাতি ঘোড়া গেল তল, মশা বলে কত জল।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

অতন্দ্র প্রহরী's picture

আগেই শুনসিলাম, আবারও খুবই খারাপ লাগল এই খবরে। মন খারাপ

পেপারেও বেশ কিছু খবর দেখলাম- বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অনেক বড়-বড় কোম্পানীতেই নাকি কর্মী ছাটাই হবে। খুবই বাজে অবস্থা।

দেখে-শুনে থাকেন মুর্শেদ ভাই, আশা করি, আপনাদের কোনও বিপদ হবে না। ভাল থাকেন।


A question that sometimes drives me hazy: am I or are the others crazy?

এস এম মাহবুব মুর্শেদ's picture

আমাদের সিইও খুব বড় বড় কথা বলল সেদিন। আমাদের কোম্পানীর অবস্থা নাকি ভাল। কিন্তু ধাক্কা একটা যে লাগবে সেটা বুঝতে পারছি। দেখা যাক কি হয়।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

সৌরভ's picture

হাহ হা। আর ভালো ! কেউই ভালো নাই।
বাজারে যে জিনিষটার অভাব সেইটা হইলো, "কনফিডেন্স"।

সরকার বলেন আর কর্তৃপক্ষ বলেন, সবাই চেষ্টা করতেসে প্রতিদিন কিছু স্টিমুল্যান্ট ধরনের গুড নিউজ বা আশ্বাস দিয়ে রোজ রোজ বাজারকে চাঙা রাখতে। কারণ বিনিয়োগকারীরা সবাই পুঁজি তুলে নেয়ায় ব্যস্ত। খোদ ভারত বলেন আর ব্রাজিল, বাইরে থেকে যারা বিনিয়োগ করেছেন, সবাই এখন যেভাবে পারেন, টাকা ফিরিয়ে নিচ্ছেন। কারণ কনফিডেন্স এর অভাব।

বিনিয়োগনির্ভর মুক্তবাজার অর্থনীতির সবচেয়ে বড়ো দুর্বলতা এই জিনিষ - যাদের হাতে বিনিয়োগের মতো টাকা আছে, তাদের মাঝে কনফিডেন্স না থাকলে বাজার তার স্থিতিশীলতা হারাবে। এবং এই কারণই অনেকগুলো ধাপ পেরিয়ে আপনার-আমার ঘরে এসে ঢুকে ঘর পোড়াচ্ছে।
লিম্যান পড়েছে, মেরিল বিক্রি হয়েছে - সবই একই কারণ, কনফিডেন্সের অভাব এবং গুজবভিত্তিক শেয়ারবাজার।


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

সৌরভ's picture

তবে সবকিছুর পরেও আমি আশাবাদী। পরবর্তী বছরের শেষ নাগাদ আবার হয়তো কিছু স্থিতি আসবে সবখানে। কিন্তু তার আগে অ্যামেরিকানদের ধার করে ঘি খাওয়ার খরচের অভ্যাস বদলাবে। পৃথিবীর বাজারের চাহিদায় কিছু ভৌগোলিক পরিবর্তন আসবে - যেমন জাপানী গাড়ির চাহিদায় ইউরোপ-আমেরিকার অংশ কমে গিয়ে বাড়ছে চীন-ভিয়েতনাম-ভারতের অংশ।

কয়েকদিন আগে একটা জাপানি পত্রিকা দেখছিলাম (ওয়েব লিংক দিতে পারছি না) - নিউইয়র্কে চার্চগুলোতে সাপ্তাহিক প্রার্থনাসভায় ভীড় বাড়ছে, এবং বিয়ে-থেকে-ছাড়াছাড়ির হার কমছে।
উন্নত বিশ্বের সংস্কৃতি থেকে উন্নয়নশীল বিশ্বের সংস্কৃতিতে রুপান্তর বলা যেতে পারে।


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

কীর্তিনাশা's picture

এসব খবর শুনলে কেমন ভয় লাগে। মন খারাপ

বাংলাদেশে এর কি প্রভাব পড়ে তাই চিন্তা করছি।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

আলমগীর's picture

অস্ট্রেলিয়াতে মড়ক আকারে শুরু হয়নি।
ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক ম্যাকুয়রি, কদিন আগে ১০০ এক্সিকিউটিভ (ডেস্ক শ্রমিক না) বিদায় করেছে। এএনজেড ৮০০এর মতো কর্মী ছাটাই করেছে। ছোট ছোট কিছু কম্পানি লিকুইডেট হচ্ছে। কিন্তু বড় আকারে এখনও কোন ধ্বস নামেনি। এটা আশার কথা।

সরকার, কয়েক বিলিয়ন ডলার উপহার দিচ্ছে জনগণ যাতে খরচ করতে পারে বড়দিনে। কিন্তু পত্রিকায় যা দেখা যাচ্ছ, এবং অনেকে যা আশংকা করেছিল, তাই হচ্ছে, উপহারের টাকা বিয়ার খেয়ে উড়াচ্ছে। বিয়ারের চাহিদা বেড়ে গেছে, রাত ৮টার পর বিক্রি বন্ধ করা হয়েছে কিছু জায়গায়, জনপ্রতি এক কার্টুন সীমা দেয়া হয়েছে, কিন্তু চোরাই বাজারে দেদারছে বিক্রি হচ্ছে।

এখানে সাব-প্রাইম সমস্যা তত প্রকট না। কিছু আছে। ক্রেডিট কার্ডেও তত খারাপ অবস্থা না। জনপ্রতি হাজার আড়াই ডলারের মতো। কিন্তু চাকরি বাজার স্থবির।
রিয়েল এস্টেট বাজার নিন্মমূখী, কারণ ব্যাংক লোন পাওয়া কঠিন হয়ে গেছে।

শালার এই মন্দা সময়েই আমার পড়াশোনা শেষ হতে যাচ্ছে মন খারাপ

সবজান্তা's picture

ভাই, যাদের যাদের পড়াশোনা শেষ, তারা দেশে চলে আসেন। এই দেশে এখনো মোটামুটি চাকরির বাজার আছে, বিশেষত যারা বিদেশ থেকে পড়ে আসছেন। নর্থ সাউথ কিংবা এ আই ইউ বি র মত বড় বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে নর্থ আমেরিকান ডিগ্রীর প্রচুর কদর। এ ছাড়া আরও অনেক বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় তো আছেই।

টেকনিক্যাল লোকজনের জন্যও অন্যান্য কোম্পানীও খুব খারাপ অবস্থায় নেই ( যতটা আমেরিকায় আপনারা বলছেন তার চেয়ে ভালো, যদিও বাংলাদেশের টেলিকম সেক্টর বেশ টলায়মান, বেশ কিছু কোম্পানী রীতিমত ঝামেলায় আছে )।

তাই ভাইয়েরা, ঘরের ছেলে ঘরে চলে আসেন পড়াশোনা শেষ হলে, নিশ্চিন্তে নিজের ঘরে আলুভর্তা ভাত খান।


অলমিতি বিস্তারেণ

এস এম মাহবুব মুর্শেদ's picture

সবাই দল বেঁধে ফিরে যাওয়া শুরু করলে কিন্তু বাংলাদেশের বাজারও খারাপ হবে। বাংলাদেশে রিপল ইফেক্টটা এভাবেই হয়ত পড়বে।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

এনকিদু's picture

বাংলাদেশে অনেক ভাবেই রিপল এফেক্ট পড়তে পারে, তার মধ্যে এটা সম্ভাব্য একটি । কিন্তু এই কথা চিন্তা করে কি সবাই দেশে না এসে বিদেশেই মাটি কামড়ে পড়ে থাকবে । উচ্চশিক্ষিত যারা, তাদের পক্ষে আশা করি পরিস্থিতি সামাল দেয়া সম্ভব হবে । কিন্তু অনুচ্চশিক্ষিত অনেক প্রবাসী ভাইয়েরা আছেন পৃথিবী জুড়ে, তাদের পক্ষে পরিস্থিতি সামাল দেয়া একেবারেই সমস্যা হয়ে উঠবে । এবং তাদের অনেকেই দেশে ফিরে চলে আসবে । একটা বিরাট সমস্যা দানা বেঁধে উঠছে ধীরে ধীরে ।

-----------------------------------------
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

সুবিনয় মুস্তফী's picture

হপায় শুরু। ২০০৯ সাল হবে স্মরণকালের সবচেয়ে দুর্যোগময় বছর। মন্দা কি ডিপ্রেশনে পর্যবসিত হয় কি না, সেটাই দেখার বিষয়। আমেরিকা ইউকে'তে সবাই আল্লাহ আল্লাহ করেন।

-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

এস এম মাহবুব মুর্শেদ's picture

কি ঘটতে পারে এটা নিয়ে একটা পোস্ট দেন সুবিনয় দা।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

ইশতিয়াক রউফ's picture

৫ টা বছর ধরে ঘানি টেনে এই সময়েই বের হব মাস্টার্স সেরে (মে, ২০০৯)। কপাল একেই বলে আর কি।

সেদিন হিসেব করে দেখলাম, সবাই থিসিস ডিফেন্ড করার সময় পাশ করতে চায়। আমার প্রফেসরদের বলতে হবে অনুগ্রহ করে "ইম্প্রুভমেন্ট"-এর ফাপড়ে ফেলতে, যাতে সামারটুকুও থাকতে পারি।

ওপিটি-তে তো এখন ৩ মাসের মধ্যেই চাকরি পেতে হয়। ঝামেলা-ই ঝামেলা।

দেশে তো যেতে চাইই, শুধু কিছুদিন চাকরি করে বাইরের দুনিয়াটা দেখে যাওয়ার ইচ্ছা ছিল। মন খারাপ

এস এম মাহবুব মুর্শেদ's picture

যতদিন ছাত্র থাকা যায় তত ভাল। যেমনটা সুবিনয় বললেন ডিপ্রেশন আসছে। কথা হল কতদিন স্থায়ী হবে ব্যাপারটা। আগামী একবছর তো চাকরীর বাজার ভালো হবেই না বরং আরো খারাপ হবে। সুতরাং পিএইচডিতে ভর্তি হয়ে যাও।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

ইশতিয়াক রউফ's picture

ডিপার্টমেন্টে যথেষ্ট ফান্ড নেই। এখন পিএইচডি অ্যাডমিশনও দেয় ফান্ড ছাড়া! তাই ভার্জিনিয়া টেক ছেড়ে ফাও কোন জায়গায় অ্যাপ্লাই করবো কিনা ভাবছি।

মেজাজটা আসলেই খুব খারাপ লাগে। যখন আসলাম এই দেশে, তখন সবার কী রমরমা অবস্থা। পাশ না করতেই কত বেতনের চাকরি। নিজের বেলাতেই এই সব যন্ত্রণা।

ফাহা's picture

ভাইরে, আমি কই যামু, আমার তো মাস্টার্স না, পিএইচডি শ্যাষ হইতেছে আর মাস ছয়েক পরে। সিঙ্গাপুরে চাকরির যে ব্যাড়াছ্যাড়া অবস্থা, কি হয় আল্লাই জানে। ব্যাংকিং সেক্টর টলায়মান, যার কারণে আর সব সেক্টরই ডরাইয়া কোনো হায়ারিং তো দূরে থাক, নিত্য ফায়ারিংয়ের উপর আছে।
একাডেমির অবস্থাও ভালো না। ছয় মাস আগেও ফান্ডিংয়ের নহর বইয়া যাইতো,এখন পদ্মার চর জাগতেছে জায়গায় জায়গায়। আর ম্যারিকার যে খবর, মন টানতেছে না।

দোআ রাইখেন।

অমিত [অতিথি]'s picture

"দেশে তো যেতে চাইই, শুধু কিছুদিন চাকরি করে বাইরের দুনিয়াটা দেখে যাওয়ার ইচ্ছা ছিল।"

৯৫% প্রবাসে সেটলড লুকজনের মনে হয় একইরকম ইচ্ছা থাকে। চোখ টিপি

এস এম মাহবুব মুর্শেদ's picture

হোঃ হোঃ হোঃ

ঠিকই বলছো!

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

স্নিগ্ধা's picture

আর আমার অবস্থা তো আরও করুণ, মানে নিদারুণ করুণ যাকে বলে - আমি চাকরির বাজারে যাচ্ছি এই এখন ...... !!!! ওঁয়া ওঁয়া

ইশ্তিয়াক - সামারে চলেন একসাথে ভার্জিনিয়ার রাস্তায় রাস্তায় ভিক্ষা করি। আপনার এলাকা ডি সি র ওইদিকে, আমারটা এই দিকে। অথবা আমি ভাবতেসি ডি সি তে ক্যাব চালাবো, অথবা ... আর জানি না কি করা যায় ... বুদ্ধি দ্যান তাড়াতাড়ি ...

ইশতিয়াক রউফ's picture

আইডিয়া খুঁজতেসি, আপু। যদি ২ টা পাই, তাহলে ২য় টা আপনার। ভিসা তো শেষ আমার... যদি অ্যাডপ্টেড সান বানান, তাহলে প্রথম আইডিয়া আপনার! এক দাম, গেইট লক!

স্নিগ্ধা's picture

ইশতিয়াক - "অ্যাডপ্টেড সান" বানাতে আমার কোনই আপত্তি নাই, সাত বছরের একটা মেয়ে তো আছেই, ২৭/২৮ বছরের একটা ছেলে থাকলে কি আর এমন অসুবিধা?!

কিন্তু, ইয়ে মানে - আমি অবশ্যই সচলের অফিসিয়াল 'আপু' (বা 'খালা', in fact why not 'নানি'?) - তবে, তারপরও আমার ডেট অফ বার্থ দেখলে আহাম্মক, উজবুক, বেকুব আমেরিকানগুলা যদি আপনাকে আমার ছোট ভাই বানায় ফ্যালে বা 'সান' হিসাবে এডপ্ট করতে দিতে রাজী না হয়, তখন কিন্তু আপনি প্লিজ কিছু মনে করবেন - রিকোয়েস্ট .. দেঁতো হাসি

ইশতিয়াক রউফ's picture

সেটাও কোন ব্যাপার না। ঘর-দোর সাফ করার জন্য এইচ-ওয়ান স্পন্সর করতে পারেন কিনা দেখেন তাহলে। খাইছে

স্নিগ্ধা's picture

Quote:
সেটাও কোন ব্যাপার না। ঘর-দোর সাফ করার জন্য এইচ-ওয়ান স্পন্সর করতে পারেন কিনা দেখেন তাহলে।

করতাসি, খাড়ান একটুস - দেঁতো হাসি

প্রকৃতিপ্রেমিক's picture

আমি কানাডার বেশ কয়েকটা ফ্যামিলির কথা জানি যারা চাকুরি নিয়ে পেন-স্টেটে গিয়েছিল। দু:খের বিষয় হলো তিন মাসের মধ্যেই আবার ফেরত চলে এসেছে। কানাডায় চাকুরি না থাকলেও ইমিগ্রান্ট হলে এটলিস্ট পথে বসতে হবেনা। গ্রাড স্কুলে ভর্তি হয়ে সরকারি লোন নিয়ে হয়তো কিছুদিন চলতে পারে। তবে মন্দা দীর্ঘায়িত হলে কতদিন সরকার লোন দিতে পারবে সেটা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যায়।

এস এম মাহবুব মুর্শেদ's picture

ভিসার চিন্তা, চাকুরীর চিন্তার সাথে মিশে এক বিষাক্ত পরিবেশ তৈরী করে দেয়। একেতো চাকরী নেই তারউপর কখন বের করে দেয়! বিচ্ছিরী!!

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

সুমন চৌধুরী's picture

সবুজ বাঘের ভাষায় নিজেরে তখন একটা ভ্রান্ত ধারণা মনে হয়....
আমি অধিক শোকে পাথর না হৈয়া প্রাথমিকভাবে অধিক রসিক হৈয়া যাইতেছি...পোঙ্গামারা একটা টোট্যালিটিতে পৌছাইলে হয়ত তব্দা লাগমু...তার্পরে ?



অজ্ঞাতবাস

সৌরভ's picture

হাহ হা। এইটা বছরের অন্যতম সেরা কমেন্ট।


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

এনকিদু's picture

সবাই দেখি আমেরিকা আর কানাডার কথা বলছেন । মাঝে শুধু বদ্দা বললেন ইউরোপের কথা । ইউরোপে নাকি এশিয়ানদের চাকরি দেয়া অনেকটা অলিখিত আইন করে বন্ধ - এরকম একটা কথা শুনেছি কিছুদিন আগে । কেউ কি ব্যাখ্যা করতে পারেন ব্যাপারটা আসলে কী ?

-----------------------------------------
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

সুমন চৌধুরী's picture

আইন আছে। তবে এশিয়ানরা চাকরি ঠিকই পায়, মানে এখনো পাইতেছে। কতদিন পাবে বলা মুস্কিল...



অজ্ঞাতবাস

এনকিদু's picture

আইন আছে ? মানে লিখিত আইন ইয়ে, মানে...

ব্যাপারটা কি গোটা ইউরোপের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য নাকি জার্মানী, যুক্তরাজ্য ইত্যাদি মার্কামারা দেশে ?

-----------------------------------------
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

সুমন চৌধুরী's picture

জার্মানীতে আছে। বাকি ইইউ ভুক্তদের বিষয়ে নিশ্চিত নই। জার্মানীর আইনটা এরকম,

Quote:
কোন কর্মখালি বিজ্ঞাপন দেবার ক্ষেত্রে সেই প্রতিষ্ঠান জার্মান নাগরিকদের তারপরে ইইউভুক্ত দেশের নাগরিকদের অগ্রাধিকার দিতে বাধ্য থাকবে। শুধুমাত্র যখন ঐ পদে সংশ্লিষ্ট দেশের লোক না পাওয়া যাবে তখনই সেখানে একজন অ-জার্মান বা অ-ইউরোপিয়ানকে নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে।

...


অজ্ঞাতবাস

এস এম মাহবুব মুর্শেদ's picture

একজাক্টলী এই আইনটা আমেরিকাতেও আছে।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

সুমন চৌধুরী's picture

বুঝলাম। সফেদরা একই লাইনে আছে।



অজ্ঞাতবাস

অমিত [অতিথি]'s picture

বাংলাদেশেও তো মনে হয় এই রকম একটা কিছু আছে।

নির্জর প্রজ্ঞা's picture

আমাদের ব্যাচের যারা শিঘ্রি গ্র্যাজুয়েট করছি, আমাদের দুশ্চিন্তা মাথা ছাড়িয়ে চারপাশে ভর করছে। ভালো চাকুরি হবে এই ভরসায় প্রায় সবাই ডাবল মেজর নিয়ে পড়াশোনা করছে। তারপরো তো নিশ্চয়তা নেই। আমি এমনিতেই খুঁতখুঁতে মানুষ বিশেষ করে চাকুরীর ব্যাপারে । আমার দূর্গতি ঠেকবে অনেকদূর।

ব্যক্ত হোক তোমা-মাঝে অনন্তের অক্লান্ত বিস্ময়
(রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর )

এস এম মাহবুব মুর্শেদ's picture

চিন্তার কিছু নেই খুঁতখুঁতানি ছুটে যাবে শিঘ্রী। জীবন বাঁচানো নিয়ে কথা।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

প্রকৃতিপ্রেমিক's picture

সবাই না বলল ওবামা আসলে সবঠিক হয়ে যাবে? অর্থনীতিবিদরা কী বলেন? সুবিনয়দা, আপনি কিছু ছাড়েন না।

এস এম মাহবুব মুর্শেদ's picture

প্রথমতঃ ওবামা আসার আগেই সব ওলট পালট হয়ে যাচ্ছে। দ্বিতীয়তঃ ওবামার হাতে জাদুর কাঠি নেই যে সব ছু মন্তবর দিয়ে ঠিক করে দিবে। তার কাছে ভাল কিছু প্ল্যান আছে ঠিক কিন্তু সেগুলো বাস্তাবায়নে সময় লাগবে। আর যদি ডিপ্রেশনে চলে যায় তাহলে খবর আছে। ওবামা নিজেই বলেছে, "থিংস আর গনা গেট ওয়ার্স বিফোর দে ক্যান গেট বেটার।"

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

সৌরভ's picture

আপনি উপ্রে যে আইনের কথা বলছেন চাকুরির ব্যাপারে, এইটা ওবামা আসলে আরো পাকাপোক্ত হওয়ার কথা, ডেমোক্রেট ম্যানিফেস্টো পইড়া আমার যা মনে হইসে।

আউটসোর্সিং না কইরা দেশের ভিতরে কাজ বাড়াইলে ট্যাক্স কাট দিতে চাইসে ওবামা। তার মানেটা কি? আরিফ ভাই যেটা কইলো, সেইটা আরো বেশি কইরা ঘটবে। গারমেন্টস কর্মীরা গ্রামে ফিইরা যাওনের হার আরো বাড়বে।


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

এস এম মাহবুব মুর্শেদ's picture

আপনার ইন্টারপ্রেটেশন মনে হয় ভুল। ওবামা বলছে চাকুরী ঘরে রাখতে হবে, এক্সপোর্ট করা যাবে না। যেহেতু বাইরে চাকরী যাবে না তাই ঘরেই মাথাওয়ালাদের ধরে রাখতে হবে। ওবামা আসলে তাই H1 এবং গ্রীন কার্ড সহজ লভ্য হবে, আউটসোর্সিং কঠিন হয়ে যাবে।

ওবামার এডভাইজরী বোর্ডে আছে গুগলের সিইও শিমিড। কড়া H1 আইনের কারনে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে সোচ্চার হয়েছিল তাদের মধ্যে গুগল একটা। তারউপর যে ১২টা স্টেটের গর্ভনর H1 বাড়াতে বলেছিল তাদের অন্যতম অ্যারিজোনার গভর্নর জ্যানেট ন্যাপোলিটানোকে ওবামা হোম ল্যান্ড সিকিউরিটির প্রধান করেছে। সুতরাং সহজেই বোঝা যাচ্ছে যে H1 শিথল হতে যাচ্ছে।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

আরিফ জেবতিক's picture

যারা ভাবছেন তাদের উপর ধাক্কা লাগবে না , তারা নিশ্চিতই সাহসী মানুষ ও সৌভাগ্যবান ।
ধাক্কা গিয়ে বরগুনাতেও লেগেছে ।
আমার জানামতেই ঢাকায় ৪/৫টি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরী ক্যাপাসিটি কমিয়ে দিয়েছে , আমাদের একটা ফ্যাক্টরীতে ক্যাপাসিটি কমানো হবে মার্চ মাস থেকে , শুধু এই গরীব গার্মেন্টস ফ্যক্টরীতেই ছাটাই হবে ৩শ নারী শ্রমিক । এরা কি বরগুনা ফিরে যাবে ? আমি জানি না ।

মুর্শেদের পরামর্শই আসল পরামর্শ । সবাই যতোদূর সম্ভব সঞ্চয় করে রাখুন , ঝড় এলে কিন্তু মধ্যবিত্ত উলুখাগড়ারাই আগে বিপদে পড়ে যায় ।

আসাদ [অতিথি]'s picture

Quote:
ঋণ করে হলেও ঘি খাওয়ার মনোভাবই পতনের মূল কারণ। ক্রেডিট এতো সহজলভ্য ছিলো এদেশে, সবাই ধার করে চলছে। ক্রেডিট কার্ডের বাবল ফাটলো বলে ... তখন রীতিমত সবাই রাস্তাতে নামবে। ৭০০ বিলিয়নের বেইল-আউটেও কাজ হবে না।

এই ঋণ করে ঘি খাওয়ার গল্প শুনে আমাদের দেশের শান্তির পায়রা মাইক্রো-ক্রেডিট সাহেবের একটা মহান বাণী মনে পড়ে গেল ---
" ঋণ পাওয়া টা প্রত্যেক মানুষের মৌলিক অধিকার"
মনে হয় তিনি সোজা কথাটা একটু ঘুরিয়ে বলেছিলেন -
"ঋণ খাওয়ানো টা প্রত্যেক পুজিপতির মৌলিক অধিকার" --- নইলে এই এত এত মাল বানাইতাছি--- কিনব কেডা?

মাহবুব লীলেন's picture

বাংলাদেশে চলে আসেন
চাকরি দেবো
যার যা লাগে

Md yousuf Ali 's picture

chakury khub kdin bapar.

অতিথি লেখক's picture

অতি আহংকার তাদের পতন আনবে ... তারা এই পথে আছে

Post new comment

The content of this field is kept private and will not be shown publicly.