ব হুদিন পর ঠিক এই জায়গাটাতে দাঁড়িয়ে আমি!
আপাতঃ ঝক্ঝকে, বিত্তের ঝিলিক দেয়া আমার এই ক্লান্ত, মলিন, বিষণ্ন শহরের এটা হলো জিরো পয়েন্ট।
আচ্ছা জিরো পয়েন্ট মানে কি? এখান থেকে সবকিছুশুরু না এখানে এসে শেষ?
এটা কি নো ম্যানস লেন্ড? কিন্তু এই বৃষ্টি মুখর সন্ধ্যায় আমি তো বেশ মানুষ দেখছি। দুপাওয়ালা মানুষ!
নাকি ওরা কেউ মানুষ না, অথবা আমি নিজেই! কাফকার তেলাপোকা আমি, নাকি জীবনানন্দের দোয়েল ফড়িং, নাকি আমার মালটি ন্যাশনাল কোম্পানীর মালটিফর্মের চাকর!
যে পাশে দাঁড়িয়ে আছি তার উলটো দিকে তিনটে মেয়ে। তিনটেই মেয়ে। তিনটেই রমনযোগ্য। অতএব রমনী। নাকি মেয়ে মাত্রই রমনী?
হাত নেড়ে খুব ব্যাকুল হয়ে তিনজনই রিক্সা ডাকছে। কিন্তু একজন রিকশাওয়ালাও ঘুরে তাকাচ্ছে না। রিকশাওয়ালাগুলো নিরাসক্ত কেন? মেয়ে তিনটা তাদের রমনযোগ্য অথবা তারা মেয়েগুলোর নয় বলে?
একটা মোটর বাইকে তিনটা ছেলে। তিনটাই ঘুরে তাকাল। মেয়েগুলো তিন জোড়া চোখের লালসায় ধর্ষিত হলো।
ঠিক মাঝখানের মেয়েটার লম্বা গলার দিকে তাকিয়ে আমার আরেকটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস। ' লঘূ মরালীর মত মেয়েটিরে উড়িয়ে নেবে বিদেশী বাতাস' -- এবার আমার চমকে উঠার পালা। কি আশ্চর্য্য, মাথার ফাঁক ফোঁকরে এখনো তাহলে দুএকটা লাইন রয়ে গেছে!
বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে একটা গাড়ী এসে থামল। এই শহরে একটা বিদ্যালয় আছে, বিশ্ববিদ্যালয়। গাড়ীর পেট থেকে কয়েক ডজন বিদ্যাথর্ী নামলেন ।আমি যে রেষ্টুরেন্টের বারান্দায় দাঁড়িয়ে ওটাই 'তাহাদের' গন্তব্য । ওখানে বসে প্রেম হবে, শিক্ষা হবে, রাজনীতি আর অর্থনীতির হাতিঘোড়া হবে। ওদের দিকে তাকিয়ে আমি একপাল ছাগল দেখি। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যাথর্ীগন আমলা হন। আমলাদের প্রিয় খাদ্য ঘুষ যেমন ছাগলের প্রিয় কাঁঠালপাতা।
আচ্ছা ছাগল এত কাঁঠালপাতা চিবোয় কেন?
রেষ্টুরেন্ট থেকে বের হয়ে আমাকে পাশ কাটাল একজোড়া কপোত-কপোতী। দুজনের গায়েই এপ্রোন , সম্ভবত:হবু ডাক্তার । একটা প্রশ্নের উত্তর আমি মেলাতে পারি না কিছুতেই। কসাই হবার জন্য বোকা ছেলে মেয়েগুলো এত পড়ালেখা আর এত সময় নষ্ট করে কেন?
বৃষ্টি থামছে।
ফিরে যেতে হবে আমার আপন গুহায়।
ফুসফুসের খুব গভীরে টেনে নিয়ে যাই প্রিয় বেনসন হেজেজের একটান নিকোটিন।
ধোঁয়া ধোঁয়া নিকোটিন, ধোঁয়া ধোঁয়া প্রশ্ন ।
চমৎকার ব্লেন্ড হয়ে উড়ে যায় আকাশে, প্রিয় শুন্যতায়!
Comments
Post new comment