এই হচ্ছেন আবু কায়সার

লুৎফর রহমান রিটন's picture
Submitted by riton on Sat, 02/05/2009 - 5:20am
Categories:

আমার কম্পিউটার মনিটরে দৈনিক জনকণ্ঠের শেষ পাতা। ওখানে আবু কায়সারের ছবিসহ মৃত্যু সংবাদ! খুব দ্রুত, নিঃশ্বাস বন্ধ রেখে প্রায়, প্রথম প্যারাটি পড়লাম। তারপর অশ্রুসজল নয়নে, চেয়ার থেকে উঠে, দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন-প্রিয় কবি, ছড়াকার, শিশুসাহিত্যিক,অনুবাদক,সাংবাদিক আবু কায়সারের বিদেহী আত্মার শান্িত কামনায়। আমার নাতিদীর্ঘ প্রবাস জীবনে এরকম কম্পিউটারের সামনে নিরবে দাঁড়িয়ে থেকে স্বদেশের প্রিয় এবং কাছের মানুষদের মৃত্যুসংবাদ পাঠ শেষে তাদের আত্মার শান্িত কামনার ব্যাপারটি কতোবার যে ঘটেছে! খুব কম সময়ের ব্যবধানে তিন তিনবার ব্যাপারটি ঘটলো। কবি ত্রিদিব দস্তিদার চলে গেলেন। এরপর গেলেন কবি আবিদ আজাদ। সবশেষে আবু কায়সার।

ত্রিদিবের মৃত্যুর পর খুবই হূদয়স্পর্শী একটি স্মৃতিচারণ মূলক রচনা লিখেছিলেন আবু কায়সার। রচনাটি পাঠ করে অন্য এক ত্রিদিবকে আবিষ্কার করেছিলাম আমি। হায়, তখন কি জানতাম, খুবই অল্প সময়ের ব্যবধানে আবু কায়সারও হয়ে যাবেন স্মৃতিচারণের বিষয়!

রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই সম্পাদিত মাসিক কচি ও কাঁচায় ছাপা হয়েছিলো আবু কায়সারের ধারাবাহিক উপন্যাস ‘‘রায়হানের রাজহাঁস’’। আমাদের শিশুসাহিত্যে আলোড়ন সৃষ্টিকারী রায়হানের রাজহাঁস বই হয়ে বেরোয় তিয়াত্তর সালে। আমাদের কৈশোরকে মু©তায় ভরিয়ে দিয়েছিলো রায়হানের রাজহাঁস। আমার ছেলেবেলার বন্ধু শার্লি (২৬ বছর ধরে আমার স্ত্রী, আমার ২০ বছর বয়েসী কন্যা নদীর জননী) নিয়মিত আমাকে বই উপহার দিতো। শার্লি একবার আমাকে টিকাটুলি-হাটখোলার ওয়ারী বুক সেন্টার থেকে একসঙ্গে চারটি বই উপহার দিয়েছিলো-মোহাম্মদ নাসির আলীর ‘লেবু মামার সপ্তকান্ড’, সত্যজিৎ রায়ের ‘প্রোফেসর শঙ্কু’, খগেন্দ্রনাথ মিত্রের ‘ভোম্বোল সর্দার’ এবং আবু কায়সারের ‘রায়হানের রাজহাঁস’। রায়হানের রাজহাঁস বইটি আমার মস্তিষ্কের ভেতরে কিছু একটা কান্ড বাঁধিয়েছিলো। এমনকি বইয়ের প্রচ্ছদটিও মোটামুটি স্থায়ী একটি বন্দোবস্ত করে নিয়েছিলো আমার করোটির ভেতরে। যার প্রতিফলন ঘটেছে দশ-বারো বছর পর।

প্রীতিভাজন আমীরুল ইসলাম তখন খুবই নবীন কিন্তু খুবই প্রতিশ্রুতিশীল একজন লেখক হিশেবে দ্যূতি ছড়াচ্ছে। আশির মাঝামাঝি সময়ের কথা বলছি। ১৯৮৫ সালে আমীরুল তার একজন বন্ধুকে নিয়ে হাজির আমাদের ওয়ারীর বাসায়। স্কুলে একসঙ্গে পড়া ওর বন্ধুটি ওর একটি বই প্রকাশের সমস্ত খরচ বহন করতে চায়। প্রকাশক হিশেবে ওই বন্ধুটির নাম থাকবে বইতে। যুবকাল প্রকাশনী বা যুব প্রকাশনীর ব্যানারে সাতটা গল্প নিয়ে আমীরুল যে বইটি করতে চায় তার নাম সে ঠিক করেছে-‘আমি সাতটা’। আমার কাছে ওর আসার কারণ-আমীরুল চায়, ওর বইটির প্রচ্ছদ এঁকে দিতে হবে আমাকে। আমীরুল বলে কথা, ওকে ফেরাই কী করে? রাজী হয়ে গেলাম। ওদের সামনেই ঝটপট এঁকে ফেললাম মায়াবী চোখের ঝাকড়া চুলের স্বপ্নবান এক কিশোরের মুখ। ফ্রি হ্যান্ডে লিখে দিলাম বইয়ের নাম এবং লেখকের নামটিও। ব্লকে ছাপা হলো চার রঙা প্রচ্ছদ। চকচকে আর্ট পেপারে। ক’দিন পর, আমীরুল আর ওর বন্ধুটি সুন্দর বাঁধাই হওয়া বইটি আমাকে দিতে এলো যেদিন, সেদিন তো আমার চক্ষু চড়কগাছ!সব্বোনাশ! এটাতো প্রায় রায়হানের রাজহাঁস!আমার করোটির ভেতর স্থায়ী আসন করে নেয়া রায়হানের রাজহাঁসের প্রচ্ছদটিই কী না ‘আমি সাতটা’র প্রচ্ছদে উড়ে এসে জুড়ে বসেছে! এটাতো আমরা টেরই পাইনি!এখন লোকজনকে কি করে বোঝাবো যে পঁচাশি সালে প্রকাশিত ‘আমি সাতটা’বইয়ের প্রচ্ছদটি তিয়াত্তর সালে প্রায় নকল হয়ে ‘রায়হানের রাজহাঁস’ নামে বেরিয়েছিলো!

অনেকদিন পর, আবু কায়সারের সঙ্গে যখন আমার খুবই ঘনিষ্ঠ অগ্রজ-অনুজ সম্পর্ক, তখন একদিন কায়সার ভাইকে বলেছিলাম ঘটনাটা। তিনি দেখতে চেয়েছিলেন। আজিজ সুপার মার্কেটের তিন তলায় আমার ছোটদের কাগজ অফিসে এক বিকেলে এলেন তিনি। তার আগমন সময়টি পূর্ব নির্ধারিত ছিলো। আমি বাড়ি থেকে ‘আমি সাতটা’ আগেই এনে রেখেছি। কায়সার ভাই চা এবং সিগারেটের ধোঁয়া উড়িয়ে টাঙ্গাইলের ডায়ালেক্টে বললেন
-শুধু কি প্রচ্ছদটিই মেরে দিয়েছো নাকি ভেতরের মাল-মসল্লাও?
-মানে? ভেতরের মাল-মসল্লা মানে?
-মানে বইটাও আমার লেখা নাতো?
বলেই স্বভাবসুলভ মৃদু মৃদু হাসতে লাগলেন কায়সার ভাই। কায়সার ভাইয়ের নির্মল রসিকতায় অট্টহাসিতে ফেটে পড়লাম আমি
-মে বি,চলেন আমীরুলের বিচার করি, কঠিন বিচার।
-তার আগে তোমার বিচারটা হওয়া দরকার।
-আমার বিচার?
-হ্যাঁ, তোমার বিচার। আর্টিস্ট হওয়ার অপচেষ্টা আর কভার নকলের দায়ে তোমার জরিমানা দুইশ টাকা। এক্ষুণি দুইশ টাকা দিলে ব্যাপারটা আমি চেপে যাবো।
আমি ওয়ালেটটা খুলে ভেতরের অবস্থাটা বুঝে নিয়ে মুখে করুণ অভিব্যক্তি ফুটিয়ে তুললাম
-কায়সার ভাই একটু কনসিডার করা যায় না? একশ টাকায় ব্যাপারটা রফা করা যায় না কায়সার ভাই?
-তোমরা ছোটভাই, দাও একশ টাকাই দাও।
আমার দেয়া একশ টাকা অবলীলায় পকেটে রাখলেন কায়সার ভাই চায়ের কাপে শেষ চুমুক দিতে দিতে। তারপর উঠে দাঁড়িয়ে বললেন
-তোমার বোধহয় লস হয়ে গেলো, না?
-জ্বি কায়সার ভাই, পুরোটাই লস। আমি সাতটা’র কভার আঁকার বিনিময়ে মগবাজার মোরের কন্টিনেন্টাল ফুডে বিরিয়ানী খেয়েছিলাম একপ্লেট। কোনো টাকা-পয়সা পাইনি। এতোদিন পর সেই বিরিয়ানীর টাকা সুদে আসলে ফেরৎ দিতে হলো।
-মন খারাপ করোনা। ওতে লাভ হবে না। কারণ জরিমানার টাকা ফেরৎ দেয়ার বিধান নেই। তবে তোমার লোকসান পুষিয়ে দিচ্ছি-বলতে বলতে বুক পকেট থেকে ভাঁজ করা একটা কাগজ আমার হাতে তুলে দিলেন কায়সার ভাই। ভাঁজ করা কাগজটা খুলে দেখি একটা পদ্য। ছোটদের কাগজের জন্য লেখা নতুন একটা পদ্য!

এই হচ্ছেন কায়সার ভাই।

ঝুট-ঝামেলাহীন নিপাট শান্ত প্রকৃতির সজ্জন ব্যক্তি। নিষ্ঠা এবং সততার সঙ্গে সাহিত্য চর্চা করেছেন। অনাদর অবহেলা আর অবজ্ঞার শিকার হয়েছেন পদে পদে। কিন্তু তবুও কারো বিরুদ্ধেই কোনো অভিযোগ ছিলো না তাঁর। নির্বিরোধ নিভৃতচারী এবং প্রচারবিমুখ। অসৎ জীবন যাপন করেন নি বলেই সম্ভবত অনটন তার পিছু ছাড়েনি। সারাটা জীবন তিনি লড়াই করেছেন অনটনের সঙ্গে। অস্বচ্ছল ছিলেন না। আবার ছিলেন না যথাপ্রয়োজন স্বচ্ছলও। ইত্তেফাক, গণকণ্ঠ,সংবাদ,ভোরের কাগজ,যুগান্তর কিংবা সাপ্তাহিক বিচিত্রা আর সাপ্তাহিক বিপ্লব ছিলো তাঁর কর্ম ক্ষেত্র। তাঁর সহকর্মীরা সকলেই স্বীকার করবেন তিনি ছিলেন অনুচ্চকণ্ঠ সদালাপী এবং বন্ধুবৎসল সরল একজন মানুষ।

আমার পরম সৌভাগ্য, আমি আমার লেখালেখির সূচনাকাল থেকে কায়সার ভাইয়ের øেহ ভালোবাসা এবং আশ্রয় প্রশ্রয় পেয়েছি বিপুল ভাবে। আর ছোটদের কাগজ সম্পাদনা করতে গিয়ে পেয়েছি তাঁর অকুণ্ঠ সহযোগিতা। আমি লেখা চাইলে কখনোই না করতে পারতেন না। যুগান্তরের সাহিত্য সাময়িকীতে একবার তিনি লিখেওছিলেন যে-আমি একজন নাছোড়বান্দা সম্পাদক। আমার অবিরাম তাগাদায় পড়ে ছোটদের জন্যে বেশ কিছু লেখা তিনি লিখতে বাধ্য হয়েছেন।
কথাটা সত্যি। ছড়া-কবিতা-পদ্যের কথা না হয় না-ই বললাম। আমার জবরদস্তিমূলক আচরণের শিকার হয়ে বাংলাদেশের শিশুকিশোর জন্যে ছোটদের কাগজে তিনি লিখেছিলেন তিন তিনটি উপন্যাস-ইনকা রাজার গুপ্তধন,কাফ্রির কাটা হাত এবং পাতাল পিশাচ। উপন্যাস তিনটি আমাদের শিশুসাহিত্যে মূল্যবান সংযোজন। তিনটি উপন্যাসই পাঠকপ্রিয় হয়েছিলো।

কায়সার ভাই জানতেন আমার পত্রিকা ছোটদের কাগজ পাঠকপ্রিয় হলেও ব্যবসা সফল ছিলো না। হ্যান্ড টু মাউথ অবস্থা ছিলো পত্রিকাটির। আর তাই তিনি বাড়িয়ে দিয়েছিলেন তাঁর উদার সহযোগিতার হাতটি। আর্থিক দিক থেকে স্বচ্ছল ছিলেন না তিনি নিজেই। কিন্তু তার পরেও ছাড় দিয়েছেন আমাকে অপ্রত্যাশিত এবং অব্যাহত গতিতে। বলতেন,আমাদের দূর্ভাগ্য দেশে ছোটদের জন্যে ভালো কোনো পত্রিকা নেই। শত কষ্ট হলেও পত্রিকাটা বন্ধ করো না। চালিয়ে যেও।

১৯৯৫ সালের ডিসেম্বরের শেষান্েত ঈদ সংখ্যার জন্যে একটা উপন্যাস চাইলাম। বললেন
-টাকা-পয়সা তো দিতে পারবে বলে মনে হয় না। ঠিক আছে তুমি শুধু কাগজ কেনার টাকাটাই দিও। উপন্যাস লেখার কাগজ নাই ঘরে।
-নিশ্চয়ই দেবো কায়সার ভাই, কাগজ কেনার টাকা।
পরদিন তাঁকে ফোন করলাম। শুধু কাগজের দামটা দিতে চাই আজই। কখন এবং কোথায় দেবো?
-দুপুর দেড়টায় আসো। দৈনিক বাংলার মোড়ে। পত্রিকা স্ট্যান্ডের সামনে।

যথা সময়ে গিয়ে দেখি কায়সার ভাই পৌঁছে গেছেন আমার আগেই। ক্যাফে ঝিল-এ গিয়ে বসলাম। একটা খাম এগিয়ে দিলাম তাঁর দিকে। ভেবেছিলাম খামটি তিনি খুলবেন না আমার সামনে। পকেটে ঢুকিয়ে নেবেন। পরে খুলে দেখবেন। কিন্তু না। আমার ধারণা ভুল। কায়সার ভাই নিঃশঙ্কোচে আমার সামনেই খামটা খুলে চারটা পাঁচশ টাকার নোট দেখে হই হই করে উঠলেন তাঁর চিরাচরিত টাঙ্গাইল্যা ডায়ালেক্টে
-আরে! কি আশ্চর্য, আমি তো চেয়েছিলাম শুধু কাগজ কেনার টাকা। ভেবেছিলাম পাঁচশ টাকা আনবে তুমি। এখানে তো দেখছি দুই হাজার টাকা!
-তিনটা নোট ফেরৎ দিন কায়সার ভাই, আমার ভুল হয়ে গেছে।
-তুমি ভুল করতেই পারো কিন্তু আমি তো টাকা ফেরৎ দেয়ার মতো ভুল করতেই পারি না হাহ্‌ হাহ্‌ হাহ্‌।
এই হচ্ছেন কায়সার ভাই।
-দাঁড়াও তোমার লস কিছুটা পুষিয়ে দেই, বলে আমাকে সেই দুপুরে লাঞ্চ করালেন তিনি ক্যাফে ঝিল-এ। খাওয়ার শেষে বিল পরিশোধ করতে গেলে কপট রাগে ধমক লাগালেন কায়সার ভাই
-‘খুব বড় সম্পাদক হইছো? আরে মিয়া আমার পকেটে এহন দুই হাজার ট্যাকা। কতো খাইবা খাও। ভাইবো না নিজের ট্যাকায় খাইলা। এইটা লেখকের সম্মানীর ট্যাকায় খাইছো। হালাল কামাই।’
আমি হেসে ফেললাম
-আরে কায়সার ভাই আপনে তো ফ্যান্টাস্টিক লোক! কৈ মাছের তেলে কৈ মাছ ভাইজ্যা ফেললেন!!

দুই
তিন সপ্তাহের মাথায় কায়সার ভাই আমার হাতে তুলে দিলেন ঢাউস একটা প্যাকেট। উপন্যাসের নাম ‘ইনকা রাজার গুপ্তধন’। প্রায় দেড়শ পৃষ্ঠা লিখেছেন। কায়সার ভাই লেখেন গোটা গোটা বড় বড় অক্ষরে। অন্য যে কোনো লেখক যেটা লিখবেন পঞ্চাশ ষাট পৃষ্ঠায়, কায়সার ভাই সেটাই লিখতে দেড়শ পৃষ্ঠা খরচ করে ফেলবেন। তবে এতে কম্পোজিটরের সুবিধে।
এরপর কায়সার ভাই আরো দুটো উপন্যাস লিখেছেন ছোটদের কাগজের জন্যে। কাফ্রির কাটা হাত এবং পাতাল পিশাচ। কাফ্রির কাটা হাত ছাপা হয়েছিলো ধারাবাহিক উপন্যাস হিশেবে। তবে লেখাটা আমি কিস্তিতে নিইনি। নিয়েছিলাম পুরো উপন্যাসটাই, একবারে। তারপর ছেপেছি ধারাবাহিক হিশেবে। তাঁর অফিসে গিয়ে কাফ্রির কাটা হাত উপন্যাসটা চেয়েছিলাম এইভাবে
-কায়সার ভাই কাগজ কেনার টাকা লাগবে?
-আমাদের পত্রিকা অফিসে নিউজপ্রিন্টের প্যাডের অভাব নাই।
-নিউজপ্রিন্টের প্যাড না। দামি কাগজ। শাদা অফসেট কিংবা রুলটানা। এক প্যাকেটে পাঁচশ শিট।
-উপন্যাস দরকার সরাসরি বললেই তো হয়।
-সেইটাইতো বললাম!
-কাগজের দাম বাইড়া গেছে। (সব্বোনাশ, সম্মানীর অঙ্ক বাড়াতে চাইছেন!)
-বলেন কি! কাগজের দামতো বাড়ানো চলবে না। আগের রেট।
-সময় কতোদিন দেবে?
-আগামীকাল পেলেই ভালো হয় তবে আপনি, শুধু আপনি বলেই সময়টা দুসপ্তা বাড়িয়ে দিলাম।
-পুলিশ কিংবা ক্রাইম রিপোর্টাররে ডাকোনের আগে খামটা রাইখ্যা তুমি এক্ষণ বিদাই হও। এক মাসের আগে এইদিকে আইবানা। ঠিক একমাস কইলাম।
হ্যাঁ। কায়সার ভাই কথা রেখেছিলেন। একমাস পর ফোন করে তিনি নিজেই আমাকে বলেছিলেন
-ক্যাফে ঝিল-এ তোমার প্রিয় ঝালফ্রাই খাইবা না খাওয়াইবা?
-উপন্যাস নামাইয়া দিছেন ওস্তাদ?!! আমি অক্ষণ-ই আইতাছি।
এই হচ্ছেন কায়সার ভাই।

তিন
অসাধারণ ঝরঝরে গদ্য ছিলো কায়সার ভাইয়ের হাতে। আর তাঁর অনুবাদের হাতটাও ছিলো রীতিমতো ঈর্ষণীয়। লিখতে পারতেন বিরামহীন। অনটনের সঙ্গে লড়তে গিয়ে বহু আজেবাজে বইয়েরও অনুবাদ করেছেন তিনি। হ্যারê রবিন্স-এর যৌনতা নির্ভর টেক্সাস, সেক্সাস, নেক্সাস জাতীয় বইও কায়সার ভাই অনুবাদ করে দিয়েছেন প্রকাশকের রুচি ও চাহিদা অনুযায়ী। পেপারব্যাক হিশেবে বইগুলোর বিক্রিও ছিলো ভালো। তবে এগুলো তিনি অনুবাদ করে দিয়েছিলেন কেবলমাত্র টাকার প্রয়োজনেই। কায়সার ভাই আমাকে জানিয়েছিলেন তাঁর বেদনার কথা। এই বইগুলোর প্রকাশক নাকি তাঁকে অনেক ঘুরিয়েছিলো। প্রাপ্য টাকা সময় মতো পরিশোধ করছিলো না(সেই প্রকাশক এখন খুবই নামি,প্রতিষ্ঠিত)। তো টাকা আদায়ের জন্যে একদিন খুব সকাল সকাল, সাতটা আটটার দিকে কায়সার ভাই হাজির হয়েছিলেন সেই প্রকাশকের বাড়িতে। হাতে ছিলো তাঁর বাজারের ব্যাগ। প্রকাশককে তিনি ঘুম থেকে তুলে বলেছিলেন- বাজার করতে হবে। আমার পাওনা বাকি টাকাগুলি দ্যান।

অগত্যা কি আর করা। পরিবারের সদস্যদের কাছে নিজের সম্মান বাঁচাতে প্রকাশক সেদিন তাঁর প্রাপ্য বাকি টাকাগুলো শোধ করেছিলেন।

চার
বাংলাদেশের খুব বিখ্যাত বনেদী একটি প্রকাশনা সংস্থা থেকে কায়সার ভাইয়ের একটি কিশোর উপন্যাস বেরিয়েছে। উপন্যাসটি ছোটদের কাগজে প্রকাশিত। চমৎকার প্রোডাকশন। প্রকাশক ভদ্রলোক শিক্ষিত এবং রুচিশীল। তিনি ছোটদের কাগজে প্রকাশিত কায়সার ভাইয়ের অন্য উপন্যাসগুলোও প্রকাশ করবেন। দ্বিতীয় পান্ডুলিপিটিও (প্রেস কপি) কায়সার ভাই জমা দিয়েছেন সেই প্রকাশনা সংস্থায়। তো প্রথম উপন্যাসটি বই হয়ে বেরুনোর কিছুকাল পর কায়সার ভাই আমার অফিসে এলেন। একথা সেকথার পর জানালেন, প্রকাশক ভদ্রলোক তাঁর দ্বিতীয় বইটি প্রকাশ করবেন না। কায়সার ভাই তাঁর পান্ডুলিপিটি ফেরৎ চান। কিন্তু প্রকাশক তাঁকে তাঁর পান্ডুলিপিটি ফেরৎ দিচ্ছেন না। অন্য একজন প্রকাশকের সঙ্গে কথা ফাইনাল হয়েছে, বইটি তারা করবেন। কবি আবদুল মান্নান সৈয়দ তাঁকে বলেছেন যে আমার সঙ্গে সেই প্রকাশক ভদ্রলোকের ব্যক্তিগত সম্পর্কটি অত্যন্ত মধুর। এবং আমার পক্ষেই বিনা ঝামেলায় তার কাছ থেকে পান্ডুলিপিটি দ্রুত উদ্ধার করা সম্ভব। কায়সার ভাই আমাকে বললেন
-কামটা তুমিই পারবা বুঝছো। অ্যাডভান্স লইয়া ফালাইছি। কি মুশকিলের কথা কওতো?

পরদিনই আমি আমার প্রিয় প্রকাশক আলমগীর রহমানকে সবিনয়ে বললাম যে, কায়সার ভাইয়ের বইটি যদি আপনি প্রকাশ না করেন তো প্লিজ তাঁর পান্ডুলিপিটি আমার কাছে দিয়ে দিন। প্রকাশক ভদ্রলোক স্বভাবে প্রকৃতিতে একদম নারকেলের মতোন। বাইরে ভীষণ শক্ত। তবে ভেতরটা তার খুবই কোমল। তিনি বললেন
-জানেন আপনার কায়সার ভাই কী করেছেন?
-কি করেছেন কায়সার ভাই?
-রয়্যালিটির টাকাসহ লেখক কপি পঁচিশটি বই তাকে আমি দিলাম। তিনি টাকাগুলো পকেটে রেখে অদ্ভুত একটা প্রস্তাব করলেন। এমন প্রস্তাবের কথা আমি এই জীবনে কোনোদিন শুনিনি।
-কি প্রস্তাব করেছিলেন কায়সার ভাই?
-তিনি বলেছেন,‘আমার লেখক কপি পঁচিশটা বই আপনি রেখে দিয়ে পঁচিশটা বইয়ের দাম আমাকে দিয়ে দ্যান’। ভাবতে পারেন? কী সাংঘাতিক কথা! কোনো লেখক এমন কথা বলতে পারেন?
(আলমগীর রহমান একজন সাংবাদিক। বিচিত্রায় কাজ করতেন। একসময় গল্পও লিখতেন। সাহিত্যের পাঠক হিশেবেও তুখোড়। সারাক্ষণ মেজাজ খারাপ করে থাকেন এবং নানা কারণে বিরক্ত হয়ে দৃশ্যমান এবং অদৃশ্য কাউকে কাউকে ফার্দাফাই করেন। গরমমেজাজি বা হটহেডেড হিশেবে লেখক-প্রকাশক মহলে তার নিন্দুকেরও অভাব নেই। কিন্তু প্রকাশনার ক্ষেত্রে তার রুচি এবং বিষয় নির্বাচনের ক্ষেত্রে তার ঝুঁকি গ্রহণের পারঙ্গমতা আর দায়িত্বশীলতা তাকে একটি সম্মানজনক অবস্থানে অধিষ্ঠিত করে রেখেছে। আবদুল মান্নান সৈয়দের ‘সত্যের মতো বদমাশ’ বইটি তিনিই প্রকাশ করেছিলেন সেই কবে! ১৯৬৮ সালে। সাম্প্রতিক কালে প্রকাশিত গোলাম মুরশিদের ‘মধুর খোঁজে’র প্রকাশকও তিনি।)
আলমগীর রহমানকে অবাক করে দিয়ে আমি বললাম
-পারেন। কোনো লেখকের যদি সীমাহীন অর্থকষ্ট থাকে, তবে তিনি পারেন। কায়সার ভাইয়ের সংকটটা আপনি কিংবা আমি হয়তো কল্পনাও করতে পারছিনা। তাই আপনি রাগ করেছেন। রাগটা একটু কমান ভাইজান। তাছাড়া আপনি তো একজন লেখকের পান্ডুলিপি আটকে রাখতে পারেন না।
-ওটা আমি ক্ষিপ্ত হয়ে বলেছি। আমি কেনো তার পান্ডুলিপি আটকে রাখবো? আসলে তার লেখা আমি পছন্দ করি। তবে অর্থ সংকটের ব্যাপারটা ওভাবে চিন্তা করিনি। ঠিক আছে, আপনি নিয়ে যান পান্ডুলিপিটা।
আজিজসুপার মার্কেটে আমার অফিসে এসে পান্ডুলিপিটা ফেরৎ পেয়ে কায়সার ভাই এমন উচ্ছ্বসিত হয়ে উঠলেন যে আমি রীতিমতো বিষ্মিত। মনে হলো কায়সার ভাই যেনো তাঁর হারিয়ে যাওয়া সন্তানকে ফিরে পেয়েছেন। আমাকে কতো যে ধন্যবাদ দিলেন
-মান্নান সৈয়দ আমারে ঠিকই কইছিলেন, তুমিই পারবা । আলমগীর যেমন রাগের রাগী, তারে কায়দা করোন সোজা কথা না। চলো তোমারে ঝালফ্রাই খাওয়ামু।
এই হচ্ছেন কায়সার ভাই।

পাঁচ
‘আমি খুব লাল একটি গাড়িকে’, ‘জাদুঘরে প্রজাপতি’, ‘জ্যোৎøায় মাতাল জেব্রাগুলো’ লিখে বড়দের আধুনিক কবিতার অঙ্গণে কিংবা ‘রায়হানের রাজহাঁস’ ‘দোয়েলের দেশ’ লিখে শিশুসাহিত্যের অঙ্গণে আবু কায়সার নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন একজন শক্তিমান এবং বিশুদ্ধ লেখকের সম্মানজনক আসনে। জীবিত আবু কায়সার শত অবজ্ঞা উপেক্ষা আর অবহেলাকে (আবদুল হাই শিকদাররা কবিতায় বাংলা একাডেমি পুরস্কার বাগিয়ে নেয়, আবু কায়সার থেকে যান গোণাগুন্িতর বাইরে!) বুড়ো আঙুল দেখিয়ে টিকে ছিলেন যেমন করে, তেমন করেই টিকে থাকবেন লোকান্তরিত আবু কায়সারও, তাঁর পাঠক-হ্রদয়ে।



সম্প্রতি জিফরান খালেদ সচলায়তনে আবু কায়সারকে নিয়ে তার আগ্রহের কথা জানিয়ে বিশেষ করে সুমন রহমান এবং ইমরুল হাসানকে অনুরোধ করেছিলেন এ বিষয়ে লিখতে।ওরা নিশ্চয়ই লিখবেন। মুহম্মদ জুবায়ের মন্তব্য করতে গিয়ে আমার নামটিও উত্থাপন করেছেন। ২০০৫ এ আবু কায়সারের মৃত্যু সংবাদ পাঠ করে লিখেছিলাম এই রচনাটি। কাগজে-কলমে লেখা স্মৃতিচারণটি সামান্য এদিক-ওদিক করে সদ্য কম্পোজকৃত।


Comments

অমিত's picture

ভাল লাগল। ছোটবেলায় বা বড়বেলায় তাঁর ‘‘রায়হানের রাজহাঁস’’ বইটা পড়া হয় নি, খুব বড় কিছু মিস করলাম হয়ত।
ছোটবেলায় আর একজন লেখকের একটা বই পড়েছিলাম, উনি মনে হয় একটাই বই লিখেছিলেন। খান মোহাম্মদ ফারাবী। এই লেখাটা পড়তে যেয়ে তাঁর কথা কেন বারবার মনে হচ্ছিল বুঝলাম না।
__________________________
suspended animation...

লুৎফর রহমান রিটন's picture

অসাধারণ মেধাবী খান মোহাম্মদ ফারাবীর সেই বইটির নাম ছিলো মামার বিয়ের বরযাত্রী। মাত্র 21-22 বছরের আয়ু ছিলো তার।

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

আরিফ জেবতিক's picture

কাইজার চৌধুরী আরেকজন ।আহা,বিল্টুমামা .....।
(খুব সম্ভবত: আনোয়ারা সৈয়দ হকের )ছানা চরিত্রটি ।
অসাধারন এই সব কিশোর সাহিত্যিকদের মতো আর কি আসবে আগামীতে ?

-----------------------------
কালের ইতিহাসের পাতা
সবাইকে কি দেন বিধাতা?
আমি লিখি সত্য যা তা,
রাজার ভয়ে গীত ভনি না।

অতিথি লেখক's picture

কাইজার চৌধুরীকে খুব মিস করি ... সে কি ভাষার কারুকাজ ! আমি উনার বিরাট ফ্যান হাসি

ছায়ালীন
offroad ডট shahan অ্যাট gmail ডট com

আব কায়সারের লেখা পড়া হয় নাই ....

রণদীপম বসু's picture

প্রাইভেট ব্যাংকের এমডি'র গুরু দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে হয়তো কাইজার চৌধুরী আমাদের শিশুসাহিত্যকে বঞ্চিত করে যাচ্ছেন তিনি। একেবারেই যে লিখছেন না, তা না। তবে আগের মতো হচ্ছে না।

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

আরিফ জেবতিক's picture

কায়সার ভাই কেমন নিভৃতচারী ছিলেন তার একটা উদাহরন দেই ।ভোরের কাগজ অফিসে আমি উনার কয়েকটেবিল দূরেই বসতাম ।মইনুল আহসান সাবেরের সাথে আমাদের খাতির ছিলো (উনারা মুখোমুখি বসতেন) ।সেখানে আরো অনেক কবি লেখক আসতেন,যাদের সাথে সালাম-হাই -হ্যালো পর্যায়ের খাতির ছিল ।

কিন্তু কায়সার ভাই যে লেখক আবু কায়সার,সেটা জানতেই আমার বোধহয় একবছর লেগেছিলো ।

শোহেইল মতাহির চৌধুরী's picture

আমারও একই অবস্থা। একদম কোণার দিকে একটা টেবিলে দিয়ে দেখি আবু কায়সারের দুটো বই। অলক তখন জানালো এই বই দুটোর লেখকই এখানে বসেন। আমি অবাক হয়ে গেলাম একথা শুনে। ভদ্রলোক এতো চুপচাপ ও নিভৃতচারী ছিলেন। কতদিন কত হাতি-ঘোড়া মেরেছি মুখে মুখে, তার সামনে বসে। বুঝতেই পারিনি তিনি শুধু একজন সংবাদকর্মী নন, লেখক আবু কায়সার।

আলমগীর ভাইকে নিয়ে রিটনের বিশ্লেষণে খুব মজা পেলাম। আলমগীর ভাই সম্পর্কে একেবারে বন্ধু আমার। তবু তার সাথে কথা শুরু করতে এতো ভয় লাগে। অবশ্য প্রাথমিক ধাক্কাটা পার করতে পারলে তারপর আর কোনো চিন্তা নাই। প্রকাশক হিসেবে আলমগীর ভাই বেশ নীতিবাগিস, প্রায় আমলা গোত্রীয়। আমার আমলাতন্ত্রের ময়নাতদন্ত বের করেছেন, দেখি দ্বিতীয় সংস্করণ বের করা যায় কিনা।

লেখাটা পড়তে খুব ভালো লাগলো। ধন্যবাদ।
-----------------------------------------------
খড়বিচালি জোগাড় করি, ঘর বানাবো আসমানে

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

বন্যা's picture

আলমগীর ভাইয়ের সম্পর্কে কথাগুলা শুনে খুবই শান্তি পেলাম। আমি এতদিন ভাবতাম আমাকে দেখলে বা ফোনে আমার কথা শুনলেই বোধ হয় উনি চেইত্যা উঠেন ঃ)। ওনাকে ফোন করার দরকার পড়লেই আমি আর অভিজিত বেশ কয়েকদিন ধরে দুজন দুজনকে ঠ্যলাঠেলি করতে থাকি, এ নিয়ে মনে হয় ঝগড়াও হয়ে গেছে কয়েকবার। কিন্তু একটা কথা মানতেই হবে যে উনি বাংলাদেশের প্রকাশকদের মধ্যে একটু ব্যতিক্রম। উনি বইয়ের প্রকাশনার সময় বেশ সতর্ক থাকেন, আমার বিবর্তনের পথ ধরে বইটার প্রকাশনার সময় বেশ কিছু ইংলিশ বানান ভুল ছাপা হয়েছিল, উনি তা জানার সাথে সাথে সাত সকালে ফোন করে এমন হৈচৈ ফেলে দিলেন যে রীতিমত ভয়ই পেয়ে গেছিলাম। তারপর প্রথমবারের ছাপানো বইগুলো শেষ হওয়ার সাথে সাথেই ওই প্রিন্ট বাদ দিয়ে লোক লাগিয়ে সব কিছু কারেকশন করে আবার নতুন করে দ্বিতীয় সংস্করন বের করার সিদ্ধান্ত নেন।

লুৎফর রহমান রিটন's picture

ভয়াবহ রকমের নিভৃতচারী ছিলেন আবু কায়সার।
আবার দারূণ আড্ডাবাজও।

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

লুৎফর রহমান রিটন's picture

মন্তব্য লিখলাম আরিফ জেবতিকের ঘরে আর ওটা পোস্টেড হলো শোহেইলের তলায়!
নাহ্‌ আমাকে দিয়ে এইসব হবে-টবে না।

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

আরিফ জেবতিক's picture

ওটা আপনার ত্রুটি নহে,উহা সিস্টেম ।

মন্তব্যের উত্তর প্রথম দিয়েছেন শোহেইল ভাই,তাই সেটি এসেছে মন্তব্যের ঠিক নিচে ।তারপর আপনি দিয়েছেন,তাই আপনারটি শোহেইল ভাইয়ের পরে ।এখন আর কেউ দিতে গেলে,সেটি আপনার পরে দেখাবে ।

"জবাব" বাটনে এই ধারাবাহিকতা রাখা হয় । হাসি

লুৎফর রহমান রিটন's picture

উহা অতিশয় মন্দ সিস্টেম।

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

শোহেইল মতাহির চৌধুরী's picture

আমি আরিফ জেবতিকের জবাব দেয়ার আগেই আপনি মন্তব্য লিখেছেন। কিন্তু সেটা ছিল মন্তব্য, তাই আলাদা হয়ে স্বতন্ত্র মন্তব্য হিসেবে দেখাচ্ছে।
আমি আরিফের মন্তব্যের নিচের জবাবে খোঁচা দিয়ে লিখেছি তাই আমার মন্তব্যটা ডানে একটু ইন্ডেন্ট হয়ে তারপর প্রকাশিত হয়েছে। এ হচ্ছে আরিফের মন্তব্যের জবাব। আলাদা বা সরাসরি আপনার লেখার পরিপ্রেক্ষিতে মন্তব্য নয়।
কে কাকে কী বললো তা বুঝার জন্য এই পদ্ধতি। কয়েকদিন ব্যবহার করেন তবেই বুঝবেন বেশ কাজের।
-----------------------------------------------
খড়বিচালি জোগাড় করি, ঘর বানাবো আসমানে

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

লুৎফর রহমান রিটন's picture

আচ্ছা দেখি কয়েকদিন।

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

লুৎফর রহমান রিটন's picture

ধন্যবাদ।

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

হাসিব's picture

নিয়মিত লেখেন।নয়তো আপনারা চলে গেলে এগুলো হারিয়ে যাবে।

লুৎফর রহমান রিটন's picture

নিয়মিত লিখতে চাই কিন্তু আমি টেকনিক্যালী পুউর।
কমম্পুকানা দি গ্রেট!

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

হাসিব's picture

কম্পুকানা হলেও সমস্যা নাই । দরকার হলে হাতে লিখে ডাকে পাঠিয়ে দেবেন । বান্দা টাইপ করে আপনাকে মেইল করে দেবে ।

লুৎফর রহমান রিটন's picture

ধন্যবাদ হাসিব। বান্দা টাইপ করে আমাকে মেইল করে দেবে জেনে সাহসী হলাম,তবে ঐরকম কষ্ট আপনাকে দেবোনা।

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

মুস্তাফিজ's picture

"কম্পুকানা দ্যা গ্রেট!"
নামটা সুন্দর, এই নামেই কিছু একটা নামাইয়া দ্যান হাসি

...........................
Every Picture Tells a Story

এস এম মাহবুব মুর্শেদ's picture

অসাধারন লাগল। কায়সার ভাইকে নতুন আলোয় আনার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে এনাদের লেখাগুলো যদি ইন্টারনেটে অমর করে রাখা যেত!

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

লুৎফর রহমান রিটন's picture

ধন্যবাদ মাহবুব।

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

জ্বিনের বাদশা's picture

ভাল লাগল পড়ে ,,, মনে হলো লুৎফর রহমান রিটন কবিতার ছন্দে ছন্দে আবু কায়সারের গল্প বলছেন ,,,

মুর্শেদের প্রস্তাবটা ভাল ,,,সুনীল সাইফুল্লাহর মতো আর্কাইভড করে ফেলা যায় মনে হয় ... দ্যা সচলস রকস!!
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

লুৎফর রহমান রিটন's picture

জ্বিনের বাদশাকে ধন্যবাদ।

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

ভানু's picture

রিটন ভাই এই চব্বিশ বছর বয়েসে এসেও আপনার ছোটদের কাগজ স্মৃতিটাকে কাতর করে দিয়ে চলে যায়। কয়েকদিন আগে নিজের ব্লগে এই আবু কায়সারকে নিয়েই লিখেছিলাম(সচলে নয়)। সেই ইনকা রাজার গুপ্তধন ছোটদের কাগজ থেকেই পড়েছিলাম, আর পরে যে বইটা বের হয়েছিল সেটা কিনে দিয়েছিলাম ছোটভাইটাকে। সচলে আপনাকে দেখলেই খালি ছোটদের কাগজের কথা মনে পরে। কী জ্বালা!

লুৎফর রহমান রিটন's picture

এ জ্বালা আনন্দময় জ্বালা আমার জন্যে।

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

হাসান মোরশেদ's picture

হাসিবের মতো আমি ও বলি,এইসব গল্প-এইসব মানুষের গল্প আরো নিয়মিত হোক রিটন ভাই । বারবার উচচারনে এইসবে স্মৃতিতে সংরক্ষন করতে হবে ।

এই লেখা কি আগে কোথাও পড়েছিলাম?
----------------------------------
মানুষ এখনো বালক,এখনো কেবলি সম্ভাবনা
ফুরোয়নি তার আয়ু

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

লুৎফর রহমান রিটন's picture

পুরোটা পড়েননি।

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

হিমু's picture

Quote:
ধাক্কা মেরে সরিয়ে দিলাম নিজের ছায়াটাকে।
দেয়ালে এক কাঁচাপাকা
ব্যাবিলনের সিংহ আঁকা
চাঁদের থেকে আধেক কেটে কে সাজিয়ে রাখে
পুরানারীর স্তনের পাশে নীলাদর্্র বৈশাখে---
ভিখিরিদের শহর ছুঁয়ে একটা রোগা নদী।
কিনারে তার দীঘল ডুমুর
গাছের তলায় হঠাৎ চুমুর
শব্দ উঠলে কেউ বলে না, কে খেয়েছে কাকে।
কালো কাদামাটির ভেতর
পাথরগুলো পাকে।
অগত্যা খুব আচম্বিত
নিজেই হলাম দ্বিখন্ডিত
লাত্থি মেরে তাড়িয়ে দিলাম আপন ছায়াটাকে
পন্ড চেষ্টা---ছায়া আমার সঙ্গে শুয়ে থাকে।

ভালো লাগলো এই লেখাটা। হাসিব ভাইয়ের সাথে একমত। এমন স্মৃতিচারণমূলক লেখা আরো চাই।


হাঁটুপানির জলদস্যু

লুৎফর রহমান রিটন's picture

হাঁটুপানির জলদস্যুর ভয়ে হলেও লিখবো।

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

জিফরান খালেদ's picture

রিটন ভাই, বড় ভাল লাগলো... আমার আসলে আপনার সাথে ওনার পরিচয়ের ব্যাপারটা জানা ছিলো না, এরম জানলে তো আপনারে আরো আগেই ধরা দরকার ছিলো... জুবায়ের ভাইরে অসংখ্য ধন্যবাদ রিটন ভাইকে ধরাই দেওয়ার জন্যে...

আমিও মুর্শেদ ভাইএর সাথে একমত... কোনো মতে যদি কায়সার ভাই এর লিখা আনা যাইতো এখানে...

আবারো ধন্যবাদ, রিটন ভাই... ওনার লিখালিখি নিয়ে পারলে ভবিষ্যতে লিখিয়েন... সুখী হবো...

লুৎফর রহমান রিটন's picture

আচ্ছা।

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

ভাস্কর's picture

লেখা পইড়া ভালো লাগলো...


স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...


স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...

লুৎফর রহমান রিটন's picture

লেখা পইড়া ভালো লাগলো...
শুইনা আমারও ভালো লাগলো...

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

সংসারে এক সন্ন্যাসী's picture

'রায়হানের রাজহাঁস' নামটি আমাকে মুহূর্তে ফিরিয়ে নিয়ে যায় শৈশবে। আর সেই প্রচ্ছদ! এখনও চোখে ভাসে।

রিটন ভাই, পদ্যের মাঠ পুরো দখলে নিয়ে এবার হাত বাড়িয়েছেন গদ্যের দিকে?

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

লুৎফর রহমান রিটন's picture

নারে ভাই,বড় কঠিন কাজ গদ্য লেখাটা।
ছড়ার মতো সহজ না।
আপনার ছড়া কখন পাচ্ছি?

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

আনোয়ার সাদাত শিমুল's picture

অনেক কিছু জানলাম। ধন্যবাদ!

লুৎফর রহমান রিটন's picture

'জানার কোনো শেষ নাই,
জানার চেষটা বৃথা তাই!'

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

আনোয়ার সাদাত শিমুল's picture

যদি থাকে চেষ্টা
বাড়বে জানার তেষ্টা।

মুহম্মদ জুবায়ের's picture

জিফরান খালেদ তাঁর আবু কায়সার বিষয়ে পোস্টের মন্তব্যে বলেছিলেন, এঁরাই তো তখন দাপিয়ে বেড়াতেন...। তবে ঘটনা এই যে আবু কায়সার দাপিয়ে বেড়ানো মানুষ ছিলেন না। লিখে গেছেন আপনমনে। এই ধরনের নিভৃতচারী লেখকদের ভাগ্যে যা ঘটে - স্বল্প পরিচিতি ও সাহিত্য বিষয়ক আলোচনায় কম উল্লিখিত হওয়া বা একেবারেই না হওয়া - আবু কায়সারের ক্ষেত্রে তার ব্যতিক্রম কিছু হয়নি, হবে বলে মনেও হয় না।

সময়ের তুলনায় কতো যে অগ্রসর ছিলেন তা বোঝার জন্যে ষাটের দশকের এই কবির প্রথম কাব্যগ্রন্থের নামটি এবং তার প্রকাশকাল উল্লেখ করলেই যথেষ্ট হয় বলে মনে করি। সত্তর দশকের গোড়ার দিকে প্রকাশিত এই বইটির নাম আমি খুব লাল একটি গাড়িকে

এই মানুষটির সঙ্গে আমার কখনো পরিচয় হয়নি। অল্প কিছু জানা ছিলো। রিটনের লেখায় তাঁকে আরেকটু জানা হলো।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

লুৎফর রহমান রিটন's picture

Quote:
আবু কায়সার দাপিয়ে বেড়ানো মানুষ ছিলেন না। লিখে গেছেন আপনমনে।

ঠিকই বলেছেন।

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

সুজন চৌধুরী's picture

দাদা, আপনার স্মৃতির ঝোলাটা ঈর্ষা করার মত।
____________________________
লাল গানে নীল সুর হাসি হাসি গন্ধ......

লুৎফর রহমান রিটন's picture

বলে কি পোলাটা ? স্মৃতির ঝোলাটা এহনো তো খুলিই নাই!

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

সুজন চৌধুরী's picture

বলেছে পোলাটা
খুলিতে ঝোলাটা।
____________________________
লাল গানে নীল সুর হাসি হাসি গন্ধ......

লুৎফর রহমান রিটন's picture

বলেছে পোলাটা
খুলি-তে ঝোলাটা...

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

সুজন চৌধুরী's picture

খুলির ভিতরে
স্মৃতির ঝোলাটা?
____________________________
লাল গানে নীল সুর হাসি হাসি গন্ধ......

???'s picture

ধন্যবাদ লুত্ফর রহমান রিটন। জিফরান-এর আজ্ঞা পালন করা সম্ভব হয় নাই আমার পক্ষে, কারণ আবু কায়সার বিষয়ে আমার বলার মত পড়াশোনা ছিল না। রায়হানের রাজহাঁস পড়েছিলাম, ভালো লেগেছিল। আর কিছু কবিতা পড়েছিলাম, এখানে ওখানে। কবিকে শ্রদ্ধা জানাই।
..............................................................
শুশুকের ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে সাঁতরে এসেছি কুমীরে-ভরা নদী!

লুৎফর রহমান রিটন's picture

ধন্যবাদ।

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

অমিত আহমেদ's picture

"ইনকা রাজার গুপ্তধন", "কাফ্রির কাটা হাত", "পাতাল পিশাচ" - শ্রদ্ধেয় আবু কায়সারের এ তিনটে উপন্যাস পড়া হয়েছে ছোটদের কাগজের বদৌলতে। আরেকটা উপন্যাস পড়েছিলাম পার্বত্য চট্টগ্রামের পটভূমিকায়, নামটা কিছুতেই মনে পড়ছে না। "রায়হানের রাজহাঁস" পড়ার সৌভাগ্য আমার হয়নি।

লেখাটা পড়ে নতুন করে চিনেছি লেখক ও কবি আবু কায়সারকে। রিটন'দাকে অসংখ্য ধন্যবাদ!


ভালবাসি, ভালবাসি, ভালবাসি তোমায়!
ব্লগস্পট | ফেসবুক | ইমেইল

আবু রেজা's picture

Quote:
জীবিত আবু কায়সার শত অবজ্ঞা উপেক্ষা আর অবহেলাকে (আবদুল হাই শিকদাররা কবিতায় বাংলা একাডেমি পুরস্কার বাগিয়ে নেয়, আবু কায়সার থেকে যান গোণাগুন্িতর বাইরে!) বুড়ো আঙুল দেখিয়ে টিকে ছিলেন যেমন করে, তেমন করেই টিকে থাকবেন লোকান্তরিত আবু কায়সারও, তাঁর পাঠক-হ্রদয়ে।

লেখাটি খুব ভালো লাগল। ধন্যবাদ রিটন ভাই।
প্রসঙ্গক্রমে বলছি, আমি তখন একটা শিশু-কিশোর পত্রিকায় কাজ করি। এই লেখা দেখাশোনা-কাটাকুটির কাজ আর কি। একটা লেখা এলো সম্পাদকের হাত দিয়ে। লেখকের নাম লেখা আবু কায়সার। তাঁর লেখা আগেও পড়েছি। যাক, সন্ধ্যাবেলায় পড়তে শুরু করলাম, গা কাঁটা দিয়ে উঠল! গা ছমছম করা রহস্য গল্প!..............

যে জন বঙ্গেতে জন্মি হিংসে বঙ্গ বাণী
সে জন কাহার জন্ম নির্ণয় ন জানি।।

হাসান মোরশেদ's picture

রিটন ভাই,
আজ আবু কায়সারের চলে যাওয়ার দিন । আপনার মনে আছে নিশ্চয়ই ।
সচলায়তনের পুরনো পাতা খুঁজে আপনার এই জরুরী লেখাটা বের করলাম, পুনঃ পাঠের অভিজ্ঞতা হলো ।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

লুৎফর রহমান রিটন [অতিথি]'s picture

ওরে ভাই হাসান মোরশেদ, আমার প্রিয় আবু কায়সারের চলে যাওয়ার দিনে তাঁকে এভাবে স্মরণ করে আপনি আমাকে কৃতজ্ঞতায় আবদ্ধ করলেন। ঋণী করলেন। আমি খুব নিরবে তাঁকে শ্রদ্ধা জানাবো ভেবেছিলাম। আপনি তো আমাকে অশ্রুসজল করে ফেললেন মোরশেদ!

এই সচলায়তন এবং এখানকার মানুষগুলোকে আমার খুব আপন মনে হয়.........

জিফরান খালেদ's picture

রিটন ভাই,

চিন্তা করবেননা... কায়সার ভাইরে নিয়া বড় কামের প্ল্যান আসে...

জিফরান খালেদ's picture

ধন্যবাদ হাসান ভাই।

আমি বাংলাদেশ থেকে আবু কায়সার আনাচ্ছি। আমার খুব ইচ্ছা নিজের স্বল্প, সীমিত অথচ দুর্বিনীত কাব্যবোধ এবং অনুবাদজ্ঞানে আবু কায়সারের কবিতা অনুবাদ করা শুরু করবো এবং বিভিন্ন সাপ্লিমেন্টে পাঠাবো।

তাঁর কবিতা নিয়ে বিশদ আলোচনারো প্রয়োজন আছে।

হাসান মোরশেদ's picture

আমার কাছে তার শ্রেষ্ঠ কবিতা আছে হাসি
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

জিফরান খালেদ's picture

আমারে পাঠায় দেন।

হাসান মোরশেদ's picture

উঁহু । গোটা কয়েক কবিতার বই আমার বাইবেল হাসি । হাতছাড়া করিনা ...
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

জিফরান খালেদ's picture

জিফরানের জন্যে কবিতার বই তথা বাইবেল, কোরান বা গীতা হাতছাড়া করবার বিধান আছে।

শুভস্য শীঘ্রম...

হাসান মোরশেদ's picture

বিদায় ইজিচেয়ার

আমার বর্ণান্ধতা

যদি পড়া না থাকে , তাহলে আপাতত এই দুটো দেখো ।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

জিফরান খালেদ's picture

এগুলো পড়েছিলাম। আপনার ব্লগে এবং আগেই।

তাঁর বেশ কিছু কবিতা আমার পড়া আছে। কিন্তু, গোছানোভাবে ওভাবে নেই। ওঁনার ছেলে এখানে থাকে শুনলাম। তার সাথেও যদি যোগাযোগ হতো!

আপনি আমারে ফটোকপি করে পাঠান... আমি আপনারে ভয়ঙ্কর কিছু কবিতা পাঠাবো বিনিময়ে...।

হাসান মোরশেদ's picture

ওকে... বাইবেলের বিনিময়ে তৌরাত পেলে আপত্তি নাই হাসি
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

সবজান্তা's picture

উনার কিশোর উপন্যাসগুলি কোন প্রকাশনীতে কি এখন আর পাওয়া যাবে মানে ওগুলো কি আর মুদ্রন হয় ?


অলমিতি বিস্তারেণ

লুৎফর রহমান রিটন's picture

প্রতীক, অবসর, সময় প্রকাশনীতে তাঁর কিছু বই পাওয়া যাবে।

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

নুরুজ্জামান মানিক's picture

শ্রদ্ধা

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

মাহবুব লীলেন's picture

প্রকাশ্য ঘোষণা দিয়ে রায়হানের রাজহাঁস বইটা একবার আমি নকল করতে চেয়েছিলাম...

এনকিদু's picture

করলেন না কেন ? আপনি তো দেখি কত কিছুই "করতে চেয়েছিলাম" । অতঃপর ডট ডট ডট ।


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

ষষ্ঠ পাণ্ডব's picture

রিটন ভাই, আপনার পোস্টের জন্য ধন্যবাদ নয়, কৃতজ্ঞতা। আমরা জানি আপনার চারপাশে এমন অনেকেই ছিলেন, আছেন। তাদের কথা আপনাকেই বলতে হবে, লিখতে হবে। নয়তো আমরা সেসব জানবো কী করে?

"এক যে ছিল সাদা ঘোড়া"র স্বল্পপ্রজ লেখক মলয় কুমার ভৌমিকের কথা কী কেউ জানাতে পারেন? রিটন ভাই, আপনি?

কাইজার চৌধুরীর লেখা নিয়ে একটা পোস্ট দেবার ইচ্ছে অনেক দিনের। হয়তো একদিন ঠিকই দেবো। কিন্তু মানুষ কাইজার চৌধুরীকে নিয়েতো আমি লিখতে পারবো না। এমন সব লেখা রিটন ভাই আপনাকেই তো লিখতে হবে।

এ'কথা ঠিক যে আরো অনেকেই এ'সব মানুষের কথা জানেন। কিন্তু তাদের কাছে তো আমার আবদার করার উপায় নেই। তাই আপনাকে অনুরোধ করা ছাড়া তো আমি কোন বিকল্প দেখতে পাচ্ছি না।

hr]
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

লুৎফর রহমান রিটন's picture

ধন্যবাদ ষষ্ঠ পাণ্ডব। সচলায়তনে আমি আপনার লেখার একজন গোপন অনুরাগী পাঠক। আলস্যের কারণে মন্তব্য করি কম। সচলায়তনে যাঁদের রচনাসমূহ আমার আনন্দ-বেদনার অংশীদার হয়ে আছে, তাঁদের নিয়ে একটা আলাদা পোস্ট দেবার ইচ্ছে আমার বহুদিনের।

......"এক যে ছিল সাদা ঘোড়া"র স্বল্পপ্রজ লেখক মলয় কুমার ভৌমিকের কথা কী কেউ জানাতে পারেন? রিটন ভাই, আপনি?

অনেক দিন পর এই প্রথম কোনো একজন মলয় কুমার ভৌমিকের কথা বললেন। এক যে ছিলো সাদা ঘোড়া---হাশেম খানের সেই প্রচ্ছদ............

কাইজার চৌধুরী আমার খুব কাছের এবং প্রিয় একজন মানুষ। লিখুন না আপনি তাঁকে নিয়ে।আমি খুব আগ্রহ নিয়ে পড়বো। এবং আমিও লিখবো অবশ্যই।

আবদার বলছেন কেনো, এটা তো আমার দায়িত্বও।

অফ টপিকঃ বাংলাদেশে আপনার সংগে আমার কি কখনো দেখা হয়েছে?

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

ষষ্ঠ পাণ্ডব's picture

হ্যাঁ, হয়েছে অল্প কয়েকবার। আপনি দেশে থাকতে একবার আপনার বাসায়ও গিয়েছিলাম। তখন ভাবী আর আপনাদের কন্যার সাথেও দেখা হয়েছিল। তবে আমার নাম বা মুখ আপনার মনে থাকা সম্ভব বলে মনে হয়না।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

ummehasina's picture

শিক্ষাজীবনে মাত্র একবারই মেধা তালিকায় স্থান পেয়েছিলাম (দ্বিতীয় হয়েছিলাম ক্লাস টু থেকে থ্রি তে ওঠার সময়)। পুরস্কার পেয়েছিলাম এই বইটি। প্রত্যেকটা লাইন, শব্দ! "আমার নিজের বই" বালিশের নিচেয় রেখে ঘুমাতাম প্রথম কয়েকদিন, পরে তুলে রেখেছিলাম। আফসোস! বইটা হারিয়ে গেছে।

জুম্ম 's picture

অনেক কিছুই জানতাম না, এখন জানলাম । ধন্যবাদ রিটন ভাইকে । আমরা দাত থাকতে দাতের র্মম বুঝি না (সরি দাত-এ চন্দ্রবিন্দু দিতে পারলাম না, কেমনে দিতে হয় তা জানি না) ।

লুৎফর রহমান রিটন's picture

চন্দ্রবিন্দু না থাকলেও দাঁতের কিছুই যায় আসে না।
ধন্যবাদ আপনাকে।

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

লুৎফুল আরেফীন's picture

হুমম...

আর এই হলো জীবন!
___________________________
বাংলাদেশ আমার বাংলাদেশ

রণদীপম বসু's picture

রিটন ভাই বরাবরই চমৎকার গদ্য লিখেন। অথচ এ দিকটাকেই তিনি হেলাফেলা করে থামিয়ে রাখেন ! সময়ের সারথীদের কথা তো সময়কেই বলতে হয়। আপনারা হলেন চলমানতার মধ্যেও সেই ধরে রাখা স্থির সময়। আপনারা না বললে স্রোতের উজানে যারা, তারা জানবে কী করে !
রিটন ভাই, চমৎকার এ লেখাটার জন্য কৃতজ্ঞতা তো বটেই, আগামী লেখাগুলোর জন্যও আগাম অভিনন্দন জানিয়ে রাখি।
ভুলবেন না কিন্তু, আগাম অভিনন্দন কিন্তু গ্রহণ করে ফেলেছেন !

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

লুৎফর রহমান রিটন's picture

আগাম অভিনন্দন গ্রহণ করা হইল।

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

সুলতানা পারভীন শিমুল's picture

জানলাম অনেক কিছু।

...........................

সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

থার্ড আই's picture

ছড়াকার বলিয়াই জানিতাম। এখন দিখি গদ্যে ও নিপুন দক্ষতা!
-------------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে

-------------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে

লুৎফর রহমান রিটন's picture

বিটলামি করো?

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

এনকিদু's picture

রিটন ভাই, আপনি একটা অমনিবাস করেন । আপনার সমস্ত ছড়া নিয়ে । আমার মনে হয় আমাদের প্রজন্মে এমন কেউ নেই যে ছোট কালে বই পত্র পড়ত কিন্তু আপনার ছড়া পড়েনি । আপনার সেই সব ছড়া গুলো একসাথে পাওয়ার ইচ্ছাটা আশা করি বাড়াবাড়ি বায়না হবে না ।


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

লুৎফর রহমান রিটন's picture

বাড়াবাড়ি না এনকিদু তাড়াতাড়িই হবে।
আপনার মন্তব্যে অনুপ্রাণিত হলাম।

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

জুলফিকার কবিরাজ [অতিথি]'s picture

রিটন ভাইকে বেশ কয়েক বার দেখেছি, আপনার ছড়ার ভক্তও আমি। কায়সার ভাইকেও দেখেছি কিন্তু উনি যে এত বড় লেখক সেটা আপনার এই লেখা পড়ে এই মাত্র জেনে খুব আফসোস হচ্ছে। উনার বই পড়ে এ পাপ মচন করতে হবে।

লুৎফর রহমান রিটন's picture

জুলফিকার, আপনি আবু কায়সারকে পাঠ করে অবশ্যই একটা পোস্ট দেবেন এখানে। অপেক্ষায় থাকলাম।

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

ইশতিয়াক রউফ's picture

লেখাটা চেনা-চেনা লাগছিল। আগে পড়েছি মনে হচ্ছিল। ঘুমের ঘোরে ছিলাম, তাই সেভাবে খেয়াল করিনি। একে একে মন্তব্যগুলো পড়ছিলাম। হঠাৎ জুবায়ের ভাইয়ের নাম দেখে পুরনো দিনের মত উৎসাহ নিয়ে সোজা হয়ে বসলাম। দু'সেকেন্ড পর বাস্তবে ফিরলাম। এতটা ধুম করে চলে গেলেন জুবায়ের ভাই... এখনও মনে হয় তিনি শীতনিদ্রায় আছেন নয়তো ছুটি নিয়েছেন কিছুদিনের। কিছু সম্পর্কের কোন সমাপ্তি হয় না।

আরেকটু ঘন ঘন লিখুন, রিটন ভাই। আপনাদের কাছে অনেক জানার আছে। যে-অভিমানটা জুবায়ের ভাইয়ের উপর কাজ করে, চাই না তা আপনার উপরেও হোক কোনদিন। এই অভিজ্ঞতাগুলো, এই মানুষগুলোর কথা জানা উচিত সবার।

লুৎফর রহমান রিটন's picture

ধন্যবাদ ইশতিয়াক।
এই রকম হালকা ঝাড়ি খেতে মন্দ লাগে না।
অবশ্যই লিখবো।

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

সুমন কায়সার's picture

লুৎফর রহমান রিটনকে অনেক ধন্যবাদ আমার বাবাকে নিয়ে এই লেখাটার জন্য। এখানের কয়েকটি ঘটনা স্বাভাবিকভাবেই আমারও জানা ছিলোনা। আবু কায়সারকে নিয়ে তার মৃত্যুর আগে প্রতিষ্ঠিতদের স্বীকৃতিমূলক লেখা চোখে পড়েছে খুবই কম। দেশটি বাংলাদেশ বলে এ নিয়ে আমার কোনো বিস্ময় নেই। সে কারণেই নেই ক্ষোভও।
লুৎফর রহমান রিটনকে ব্যক্তিগতভাবে তার একজন ভক্ত পাঠক ও øেহভাজন হিসেবে দেখেছি। তিনি এবং তাকে এ লেখায় উৎসাহিত করেছেন যারা, তাদের প্রতি আমার ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা। আর ইন্টারনেটে তার রচনা প্রকাশের ব্যাপারে আগ্রহীরা আমার সঙ্গে কথা বলতে পারেন। আর প্রিয় রিটন ভাই (বলা উচিত কাকা) আপনার সঙ্গে আমার কথা বলা দরকার। আমার ফোন : ০১৭১৩ ৩৮৯৯৩৭. ই মেইল: . প্লিজ আমার সঙ্গে যোগাযোগ করুন একটু। আপনার কানাডার কন্ট্যাক্ট আমার কাছে নেই।

সুমন কায়সার

সহকারী বার্তা সম্পাদক

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

লুৎফর রহমান রিটন's picture

আরে সুমন কেমন আছো তুমি?
কাকা না, রিটন ভাইই ভালো।

তুমি ভালো থেকো। শিগগিরই কথা হবে। আমিই তোমাকে কল দিচ্ছি।

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

সুমন কায়সার's picture

রিটন ভাই, ধন্যবাদ।
আমি নিয়মিত সচলায়তন দেখিনা বলে আজই আপনার জবাব চোখে পড়লো। যাই হোক আপনার ফোন পাইনি। লাইন না পাওয়া বা যেকোনো কারণেই হোক। আপনার সঙ্গে কথা বলা খুব জরুরি। আমি আমার ফোন নম্বর আবার দিচ্ছি: 01713389937

আর ই-মেইল:

প্লিজ আমার সঙ্গে একটু যোগাযোগ করুন। ভালো থাকবেন---
সুমন

অতিথি লেখক's picture

খুব ভাল মানুষ। রিটনের লেখাও ভাল, বরাবরের মত।

Facebook: Tutul Ahsanul Hakim

Post new comment

The content of this field is kept private and will not be shown publicly.