সড়ক পথের রোমান্টিকতা

অতিথি লেখক's picture
Submitted by guest_writer on Sat, 23/03/2019 - 5:48am
Categories:

আমি এখন পর্যন্ত উড়োজাহাজে চড়িনি। আমার জানা নেই, উড়োজাহাজ যখন মেঘের মধ্য দিয়ে উড়ে চলে তখন যাত্রীদের পাখীর মত উপলদ্ধি হয় কি না। উড়োজাহাজে উঠতে না পারার আফসোস আছে বটে। আকাশ পথে ভ্রমনের অভিজ্ঞতা না থাকলেও আমার মনেহয় স্থল পথে, নদী পথে, সমুদ্র পথে ভ্রমণ বেশী উপভোগ্য হয়। তবে নিশ্চয় উড়োজাহাজে আরাম বেশী, সময় বাঁচে।

স্বর্গে অনেক আরামে থাকার ইঙ্গিত পাওয়া যায় কিন্তু স্বর্গের প্রকৃতিও যে সুন্দর, এমন কাল্পনিক তথ্য আমার জানা নেই। কাশ্মীরের সৌন্দর্যকে তুলনা করা হয় স্বর্গের সাথে। কাশ্মীরকে ডাকা হয় ভূস্বর্গ। তাহলে ভুটানকে কি ডাকা হবে? নাম তার 'সুখী দেশ' আছে বটে। কিন্তু তার সৌন্দর্যের জন্যও তো একটা নাম চাই। নাম হোক স্বর্গরাজ্য। এই স্বর্গরাজ্যেই আমরা বেড়াতে গিয়েছিলাম । আমি , আমাদের দুই ছেলে এবং তাদের পিতা।

ঢাকা থেকে নৈশকোচে বুড়িমারী বর্ডার পর্যন্ত যাত্রাটি মন্দ নয়। ভালকরে ঘুমাতে পারলে একঘুমেই বুড়িমারী। ট্রানজিট ভিসা দিয়ে ইন্ডিয়ার চেংড়াবন্দ বর্ডার পার হয়ে একটা ট্যাক্সি নিয়ে রওনা হলাম ভুটানের উদ্দেশ্যে। ইন্ডিয়ার কুচবিহারের জঙ্গল আর চা বাগানের পাশ দিয়ে জয়গা বর্ডারে পৌঁছানোর এই পথটুকু স্বর্গরাজ্য প্রবেশের শুভ সূচনা। দুই আড়াই ঘণ্টা পূর্বে পাসপোর্টে ভারত প্রবেশের সিল পড়েছে জয়গা বর্ডারে সিল পড়ল ভারত ত্যাগের। সামান্য একটু দূরেই ভুটান গেইট এবং ফুলসলিং ইমিগ্রেশন অফিস। তিন চার ঘন্টার মধ্যে তিনটি দেশের অবস্থানের এই সড়ক পথে ভ্রমনের একটা আলাদা রোমান্টিকতা আছে বলেই বোধহয়।

ভুটান ভ্রমণে সার্ক বহির্ভুত দেশের নাগরিকদের জন্য স্থানীয় গাইড রাখা আইন। সার্কভুক্ত দেশের লোকদেরও গাইড রাখতেই হয়। এরাই হোটেল, রেস্ট্রুরেন্ট, ভ্রমনের সব রকম দ্বায়িত অত্যন্ত সুন্দরভাবে পালন করে। ড্রাইভাররা শিক্ষিত তাই তাদের উপরও এককভাবে নির্ভর করা যায়। ভুটান প্রবেশের সব প্রক্রিয়া শেষ করতে বিকেল গড়িয়ে গেল। এরপরে ট্যাক্সি সহযোগে থিম্পু যাত্রা। পাহাড়ের দেশ। পাহাড়ী পথ কিন্তু সুব্যবস্থাপনার অত্যন্ত মসৃন রাস্তা। সমতলের মানুষ আমরা গাড়ীর জানালা দিয়ে পাহাড়ের দিকে তাকিয়ে পথ চলায় মন উৎফুল্লতায় ভরে ওঠে। আমাদের সাথেই যেন মেঘেরা ছুটে চলছে থিম্পুর উদ্দেশে। থিম্পু পৌঁছাতে সাড়ে চার ঘণ্টা লেগেছে। পথিমধ্যে রাতের খাবারটা খেয়ে নিলাম অত্যন্ত ঝিমঝাম, নিরিবিলি, ঘরোয়া পরিবেশের রেস্ট্রুরেন্টে। তখনই জেনেছি অতিথি নিয়ে যাবার জন্য ড্রাইভারের খাবারটা রেস্ট্রুরেন্ট ফ্রি দেয়। থিম্পু পৌঁছালাম রাত সাড়ে নয়টায় ড্রাইভের মাধ্যমে বুকিং দেয়া হোটেলে। ডিসেম্বরের শেষ পক্ষ , ভুটানে শীত তখন একেবারে জাকিয়ে বসেছে। রাতের শুরুতে তাপমাত্রা থাকে ২/৩ ডিগ্রি, মধ্যরাতে শুন্য।

পরেরদিন সকাল দশটা থেকে শুরু হলো আমাদের থিম্পু নগর ভ্রমন। 'সিম্পলী ভুটান' একটি আয়োজন। যেখানে গ্রামীন ভুটান প্রদর্শিত হয় এক ঝাঁক উজ্জ্বল তরুণ তরুণীর উপস্থাপনায়। আপ্যায়নে, বর্ণনায়, গানে, নৃত্যে, নাটকীয়তায় চলতে থাকে তাদের পারফরমেন্স। খুব সুন্দর, শান্ত একটা সময়। এর পরের গন্তব্য বিশাল বুদ্ধমূর্তি দর্শন। পাহাড়ের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে পথচলা। দুদিন আগে তুষারপাতের বরফ জমে আছে পথের পাশে, পাহাড়ের গায়ে। ভুটানের দর্শনীয় স্থানগুলোতে ( সমগ্র ভুটানই তো দর্শনীয় ) পৌঁছেই একটা হুরাহুড়িতে মেতে উঠতে হয়। অভাবনীয় সৌন্দর্য্য দর্শনের বিস্ময় কাটিয়ে উঠতেই সময়ের টানাটানিতে পড়ে যেতে হয় সবকিছু উপভোগে, স্মৃতিধরে রাখতে ছবি তোলার ব্যস্ততায়।সুস্থির সময় মেলে এক স্থান থেকে আরেক স্থানে, এক শহর থেকে আরেক শহরে যাবার পথে। পাহাড়ের রাস্তা তবে রাষ্ট্রের ব্যবস্থাপনায় অত্যন্ত মসৃন সে পথ। নিজেদের মত করে নেয়া গাড়ি ছুটে চলে দক্ষ ডাইভিংএ । গাড়ীর জানালা দিয়ে তাকালেই চোখ জুড়িয়ে যায়। মন তখন অবস্থান করে উচ্চতায়। পাহাড়, পাহাড় আর পাহাড়। কোনটি বরফে ঢাকা সাদা, কোনটি সূর্যের আলো পড়ে চকচক করছে। কোনটিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বরফগুলিকে মনেহয় শিমুল তুলা। কোথাও মেঘ এসে সোহাগে ঢেকে দিয়েছে পাহাড়ের শরীরটিকে। ভুটানের পাহারগুলোকে যেন ঠিক কঠিন মনেহয় না। বিশালতার মাঝে যেন ছোট ছোট, মিষ্টি মিষ্টি সৌন্দর্য বিলায়। বিশাল, বিশাল বৃক্ষে ছোট ছোট রঙিন ফুল যেমন ফুটে থাকে।

বুদ্ধমূর্তি ও মন্দিরের কাছে গিয়ে আমরা মুগধ। বিশাল বুদ্ধ মূর্তি এবং সে মূর্তিকে ঘিরে আরো প্রায় বিশ পঁচিশ টি একই চেহারা , একই ভঙ্গির অত্যন্ত সুন্দর নারী মূর্তি দেখে তো আমরা মুগধ হয়েছি সেইসাথে মুগধ হয়েছি পরিবেশটি দেখে। চারিদিকে পাহাড় বেষ্টিত একটি উন্মুক্ত স্থানে মূর্তিগুলো স্থাপিত। বিশাল পাহাড়, বিশাল মূর্তি, উন্মুক্ত আকাশ এমন একটা পরিবেশে আমাদের মনটাকে ভরিয়ে দিল এক অপার প্রাপ্তিতে।

দুপুরে দক্ষিণ ভারতের একটা রেস্টুরেন্টে আমরা খাবার খেলাম। রৌদ্রোজ্জ্বল দুপুরের পরে ছায়াময় অপরাহ্ন। শীতের তীব্রতা তখন কেবলই বাড়ছে। খুবই ছোট পরিসরের একটা চিড়িয়াখানার গেটে একটু উঁকি দিয়ে আমরা গেলাম একটা পিক পয়েন্টে। খুব কাছে গিয়ে বুদ্ধ মূর্তি দেখে এসেছি। তবে এই পিক পয়েন্ট থেকে দূরে পাহাড়ের মাঝে বুদ্ধ মূর্তির একটা আলাদা সৌন্দর্য চোখ জুড়িয়ে দেয়। ততক্ষনে তাপমাত্রা কেবলই নীচের দিকে নামছে। আছে শীতল বাতাস। রাতের খাবার খেয়ে হোটেলে রুমে ফিরলাম। রাত বেশী হয়নি। কিন্তু রুমে ফিরে শীতের তীব্রতায় আর কিছু করা সম্ভব নয়। খুব ঝটপট ফ্রেশ হয়ে সোজা বিছানায়। ।

পরের দিনের গন্তব্য দোচুলা পাশ এবং পুনাখা। তবে ওখান থেকে আর থিম্পু ফেরা নয়, যাওয়া হবে পারো। ওখানের হোটেলে থাকা হবে। পুনাখা, পারো যেতে থিম্পু থেকে পারমিশন নিয়ে যেতে হবে। শুরু হলো আমাদের তৃতীয় দিনের ভ্রমন মসৃন পাহাড়ী পথ জুড়ে। পৌঁছে গেলাম দোচলা পাশে। এ আমরা কোথায় এলাম! বিস্ময়ে আমরা হতবাক। আকাশের বুকে ভেসে আছে হিমালয়ের কয়েকটি চূড়া। পাহাড়ের সে চূড়াগুলো মেঘ আর রৌদ্রর সাথে মিলে যে অভাবনীয় দৃশ্যপটের অবতারণা করছিল তা বর্ননা করার ভাষা নেই আমার। দোচুলার যেখানে আমরা দাঁড়িয়ে সেখানে স্তুপ হয়ে আছে কয়েকদিন পূর্বে তুষারপাতের বরফকুচি। এই দুই অপার সৌন্দর্য একই সময়ে উপভোগে আমাদের তখন দিশেহারা অবস্থা। ওই জায়গা থেকে আমরা কিছুতেই বের হতে পারছিলাম না। তবুও ছুটতে হলো পরবর্তী গন্তব্য পুনাখা জং-এ। একটি অপ্রসস্থ নদী একটি কাঠের সাঁকোর উপর দিয়ে পার হলেই পুনাখা জং। তবে এই নদীটির দিকে তাকিয়ে পার করে দেয়া যায় ঘন্টার পর ঘন্টা। অগভীর তবে স্রোতস্বিনী নদী । নূরী পাথরের স্পর্শে স্বচ্ছতা নিয়ে ছুটে চলছে উচ্চস্বরে। সূর্যের কিরনে অত্যন্ত স্বচ্ছ এই জলধারা চিকচিক করে উঠছে। কলকল শব্দে চলছে নদীটি। ইচ্ছে করছিল না এখান থেকে চোখ ফেরাতে। এই অপ্রস্থ নদীটির উপর দিয়ে ছোট্ট একটি পুল। পুলের ওপাশে পুনাখা জং । বহু পুরাতন বাড়ী। দেয়াল, সিলিং, দরজা, জানালা সর্বত্র খুব সূক্ষ্ম কারুকাজ করা। বুদ্ধ এবং আরেকজন গুরুর বড় মূর্তি আছে মন্দিরে। এখান থেকে বের হয়ে আমরা গেলাম ঝুলন্ত ব্রীজ দেখতে। ব্রীজে দাঁড়িয়ে স্রোতস্বিনী নদীর কলকল রব, শীতল বাতাস, গোধলীলগ্নের পাহাড় দেখার শান্তি ছেড়ে ফিরে আসাটা কঠিন। একটা ঘরয়া রেস্ট্রুরেন্ট রাতের খাবার খেলাম। এখানে প্রধানত মেয়েরাই রেস্ট্রুরেন্ট চালায়। থিম্পু থেকে পুনাখা, পারোতে শীতের তীব্রতা বেশী। গাড়ীতে হিটার থাকায় রক্ষা। হিটারের উষ্ণতা নিয়ে অন্ধকারের পাহাড় উপভোগ করতে করতে এবং সেই সঙ্গে সারাদিনের বিস্ময়, আনন্দ, প্রকৃতি যা ক্যামেরায় বন্দি করা হয়েছে তা দেখতে থাকলাম। আর আমাদের গাড়ি ছুটে চলল পাহাড়ের মসৃন পথে পারোর উদ্দেশ্য। পারোর হোটেলে যখন পৌঁছালাম তখন ঘড়ির কাঁটা নয়টা ছাড়িয়ে গেছে। ও হ্যাঁ ভুটান আর বাংলাদেশের ঘড়ির সময় একই ।

ভ্রমনের চতুর্থ দিনে আমাদের গন্তব্য পাঁচ মাইল উচ্চের পাহাড়ের চূড়ায় 'টাইগার নেস্ট' মন্দির। সকাল আটটায় আমরা হোটেল থেকে বের হলাম। দিনের আলোয় পারো। চারিদিকে পাহাড়। রাস্তার পাশ দিয়ে কলকল রবে চলেছে একটি অগভীর, অপ্রস্থ নদীর। পাহাড়ে ওঠার আগে আমরা একটি বাড়িতে নাস্তা করলাম। সকলে বাঁশের লাঠি কিনে নিয়ে রওনা হলাম। অনেক অভিযাত্রী। অনেক বৃদ্ধাকে দেখে ভেবে পাইনি কি করে এতটা পথ তারা পাড়ি দিবেন। তবে আশ্চর্য তারা ঠিকই পৌঁছে গেছেন গন্তব্যে। ওঠার সময় সিকি পথ ঘোড়ায় যাওয়া যায়। তবে নামার সময় ঘোড়া পাওয়া যায় না। দীর্ঘ পথ। পথ আর ফুরায় না। তবে কোন তাড়াহুড়া নেই। সকলে খুব আস্তে ধীরে হাঁটছে। ঠান্ডা আবহাওয়া তাই ক্লান্তি বোধ হয়না। চারিদিকে উচ্চ উচ্চ পাহাড়। কোনটায় বরফ জমে সাদা। কোনটা সূর্য্যের কিরণে চকচক করছে। যে মন্দির আমাদের শেষ গন্তব্য সেটি একটি গুহার মধ্যে। তবে গুহার মুখেই মন্দির তাই গুহার মধ্যে ঢুকেছি বলে ঠিক মনেহয়নি। মন্দিরের দোরগোড়ায় পাহাড়ের গা ঘেষে একটি ছোট্ট ঝর্ণা। অতি প্রাচীন মন্দির। মন্দির ঘুরে একই পথেই ফেরা। ফিরতে ফিরতে রাত হয়ে যায়।

পঞ্চম দিনে আমরা পারো শহরটি ঘুরলাম। পারোর প্রায় সর্বত্রই একটি নদী বয়ে চলেছে। ভুটানের অন্য নদীর মতই এই নদীটি। অপ্রস্থ, অগভীর । ছোট ছোট পাথরের উপর দিয়ে কলকল রবে ছুটে চলে। খুব স্বচ্ছ জলধারা। আমরা প্রথমেই গেলাম একটি সুন্দর নিরিবিলি এলাকা। সেখানে ভুটানের জাতীয় পোশাক ভাড়া করে বড় ছেলেকে পড়িয়ে আমরা একটা কাঠের ব্রীজে নদীর স্বাদ নিলাম আবার । একটা ছোট আর্ট গ্যালারী ঘুরলাম। এরপরে আমরা গেলাম একটু দূরে থেকে এয়ারপোর্ট দেখতে। মূলত রানওয়েটাই দেখলাম। এটি পৃথিবীর দশটি বিপদজনক এয়ারপোর্টের একটি। দুই পাহাড়ের মধ্যে দিয়ে উড়োজাহাজের চলাচল। ভুটানের নিজস্ব এয়ারক্রাফটই এখানে একমাত্র বাহন। খুব দক্ষ পাইলটের দক্ষ চালনায় এখানে কখনও কোন দুর্ঘটনা ঘটে নি। এর পরে যে উঁচু পিকে গেলাম সেখানেও রানওয়েটা দেখা যায়। এই উঁচু জায়গায় দাঁড়িয়ে পাহাড় দর্শন এবং রানওয়ে দেখার সময়টা খুব নির্মল । এর পর দুটো জং বাইরে থেকে দেখে আমরা ভুটানের জাতীয় যাদুঘরে গেলাম। খুবই ছোট জাদুঘর। খুব বেশী দেখারও কিছু নেই। অত ছোট জাদুঘরেই একটু বেশী জায়গা নিয়ে আছে একটি ফটো গ্যালারি - ইন্ডিয়া ও ভুটানের বিভিন্ন সময়ের রাষ্ট্র প্রধানদের বন্ধুত্বের ফটোগ্রাফ। সন্ধ্যাটা কাটালাম বিপণী বিতানে। অনেক সুন্দর সুন্দর শৈল্পিক দ্রব্যাদি পাওয়া যায় । বেশির ভাগই অত্যন্ত দামী। তবে এরা ইউরোপিয়ানদের জন্য সব জিনিসের দাম বেশি রাখে। এই উপমহাদেশের জন্য দামটা খানিকটা কম রাখে। এর পরেও দরকষাকষি করলে তারা রেগে যায়।

ষষ্ঠ দিন। আমাদের বিদাযের দিন। ভোর সাড়ে পাঁচটায় আমরা যাত্রা শুরু করলাম। তাপমাত্রা তখন কেবল শুন্য থেকে এক- এ উঠেছে। গাড়ীর হিটারই ভরসা। গাড়ী ছুটে চলল মসৃন পথে। ধীরে ধীরে আলো উঠছে। শেষবারের মত পাহাড়গুলোর দিকে তাকিয়ে নিলাম। রাস্তার একদম কাছেই একটি স্রোতস্বিনী ঝর্না। আমাদের ড্রাইভার ভাই নেমে ঝর্ণার জলে হাতমুখ ধুয়ে নিলেন। এত কাছে এমন একটা ঝর্ণা দেখে খুব ভাল লাগছিল। কিন্তু শীতের তীব্রতায় এবং বিদায়ের বিষণ্নতায় গাড়ী থেকে নেমে দেখার ভাবনাটা মনে আসল না।
ফুলসলিং বর্ডারে পৌঁছলাম সাড়ে দশটায়। আরেকটি তথ্য, ভুটানের ছোট ছোট দোকান, রেস্ট্রুরেন্ট, রাস্তার বিলবোর্ডে, মন্দিরে সর্বত্র রাজা রানীর ছবি। এমনকি শিশু রাজপুত্রেরও। ভুটানীরা বলে এটা তাদের ভক্তি, ভালবাসা। অলিখিত নিয়ম কিনা সেটা আবিষ্কার করতে পারলাম বা। ভুটান ভ্রমন শেষে বর্ডারে এসে আমরা ড্রাইভার ভাইয়ের পারিশ্রমিক মিটালাম অসীম কৃতজ্ঞতায়, বিদায়ের বিষণ্নতায়। এর আগে তাকে কেবল হোটেল ভাড়া ছাড়া আর একটা রুপিও দিতে হয়নি। ভুটানে ইন্ডিয়ান রুপি এবং ভুটানের রুপি সমানভাবেই চলে।
ভুটানের ড্রাইভার ভাইয়ের ঠিক করে দেয়া ইন্ডিয়ান গাড়ীতে উঠলাম ভুটান গেইটকে বিদায় বলে। জয়গা বর্ডারে এন্ট্রি নিয়ে চেংড়াবন্দ বর্ডার দিয়ে একজিট করব।

গাড়ীতে উঠতেই হাসিখুশি ইন্ডিয়ান বাঙালী ড্রাইভার বলল, কাকু একহাজার রুপি দাও, তেল ভরতে হবে।

করবী মালাকার

ছবি: 
24/08/2007 - 2:03পূর্বাহ্ন

Comments

তিথীডোর's picture

আরো ছবি যোগ করতে পারতেন। হাসি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

তিথীডোর's picture

ডুপ্লি ঘ্যাচাং।

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

করবী মালাকার's picture

ডুপ্লি ঘ্যাচাং মানে কি? আমি বয়স্ক , যথেষ্ট শিক্ষিতও নই। তাই এই মানেটা ধরতে পারলাম না। আমি সত্যিই মানেটা জানতে চাচ্ছি।

নজমুল আলবাব's picture

এটা তেমন কিছুনা। উনি একই কমেন্ট দুবার করেছিলেন, একটা মুছে দিয়েছেন তাই ডুপ্লি ঘ্যাচাং লিখেছেন।

ব্লগিং এর জন্য বয়েস কোন বিষয় নয় কিংবা কথিত শিক্ষা নিয়েও কথা বলার কিছু নাই। আপনি চমৎকার লিখেছেন। অনেক বড় ব্লগ। আরো কিছু ছবি যোগ করতে পারতেন। ছবি যোগ করলে হয়তো লেখা বড় হয়ে যায়, তখন চাইলে পর্ব ভাগ করে দিতে পারতেন।

আরো লিখুন।

করবী মালাকার's picture

আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

Post new comment

The content of this field is kept private and will not be shown publicly.