বাংলাদেশে উচ্চমানের বিজ্ঞান গবেষণার হাল: নেচার ইনডেক্স ২০১৪ - ২০১৫

সজীব ওসমান's picture
Submitted by Shajib Osman on Tue, 24/11/2015 - 8:14am
Categories:

পৃথিবীজুড়ে বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় প্রকাশ হওয়া উচ্চমানের গবেষণার একটি তথ্যভান্ডার বছরমাফিক প্রকাশ করে নেচার প্রকাশণা সংস্থা। উচ্চমানের (হাই ইমপ্যাক্ট) ৬৮ টি বিজ্ঞান পত্রিকায় প্রকাশিত গবেষণার দিকে নজর দেয়া হয় এই তথ্যভান্ডার তৈরিতে। গত এক বছরে বিভিন্ন দেশ এবং প্রতিষ্ঠান থেকে কয়টি উচ্চমানের গবেষণার নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে, সেগুলো কী নিয়ে, কোন কোন প্রতিষ্ঠান বা দেশের সঙ্গে সমন্বয়ে বা কোলাবোরেশানে গবেষণাগুলি হয়েছে তার তথ্য জমা করা আছে তাদের একটি ওয়েবসাইটে: www.natureindex.com। এই ইনডেক্সটি কোন দেশের উচ্চমানের গবেষণার হালনাগাদ বুঝতে এবং উন্নয়নকে অনুসরণ করতে সাহায্য করতে পারে। আমি এবছরের ইনডেক্সকে বাংলাদেশের গবেষণার নিরিখে আলোচনা করছি।

প্রথমেই 'বাংলাদেশ' শব্দটি দিয়ে খুঁজলে দেখা যাবে যে গতবছর ১৮টি উচ্চমানের গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে যার সঙ্গে বাংলাদেশের গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলি জড়িত। নিচের ছবিটায় দেখে নিন। কয়টি নিবন্ধ প্রকাশ হয়েছে (AC), তাতে বাংলাদেশ থেকে কতজন গবেষক ভূমিকা রেখেছেন (FC) এবং সে অনুযায়ী পয়েন্ট কত (WFC) - সেসব উল্লেখ করা হয়েছে। WFC এর মান দিয়েই বিভিন্ন দেশ এবং প্রতিষ্ঠানকে সাজানো হয়েছে। গত এক বছরে দেখতে পাচ্ছেন যে 'জীববিজ্ঞান' বিভাগের অধীনে দেশের বেশিরভাগ গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে উচ্চমানের পত্রিকায় এবং এই বিভাগে WFCর মানও সবচেয়ে বেশি। অন্যান্য বিভাগের প্রকাশণা জীববিজ্ঞান বিভাগের চেয়ে তুলনামূলকভাবে বেশ কম।

[ছবিগুলি পরিষ্কারভাবে দেখতে ছবির উপর ক্লিক করুন]

এখন চলুন আরেকটু খতিয়ে দেখি কী ধরনের গবেষণাগুলি হচ্ছে সেটা নিয়ে। আমি জীববিজ্ঞান বিভাগকে এখানে হাইলাইট করছি। নিচের ছবিতে দেখতে পাবেন এই বিভাগে প্রকাশিত নিবন্ধগুলির মধ্যে পৃথিবীসেরা কিছু পত্রিকায় গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে যার সঙ্গে বাংলাদেশের গবেষণা প্রতিষ্ঠান জড়িত। যেমন, গত বছর ১ টি গবেষণা নেচার (Nature) পত্রিকায়, ১ টি সায়েন্স (Science) পত্রিকায় এবং ৪টি পিএনএএস (PNAS) এর মত পত্রিকায় প্রকাশিত। তবে 'নিবন্ধের তুলনায় গবেষকের সংখ্যা'র মানে (WFC) জেবিসি (Journal of BIological Chemistry) সবচেয়ে আগানো, ০.৩৩ পয়েন্ট নিয়ে। গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হল, ১৮ টি গবেষণা নিবন্ধের মধ্যে শুধুমাত্র ৪ টি গবেষণায় প্রধাণ গবেষক (নিবন্ধের লেখকদের মধ্যে প্রথম) হিসেবে বাংলাদেশী গবেষকের নাম এসেছে।

একটি প্রকাশণায় মনযোগ দিলে দেখতে পাবো নেচার পত্রিকায় কলেরা জীবাণু নিয়ে প্রকাশিত গবেষণাটিতে বাংলাদেশের বিখ্যাত গবেষণাগার আইসিডিডিআর,বি'র (ICDDR,B) গবেষকগণ জড়িত। দেখতে পাচ্ছেন এই নির্দিষ্ট গবেষণার পরীক্ষাগুলিতে ভূমিকা রাখায় (নিবন্ধে লেখকে সংখ্যা হিসেবে) যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের (WUSM, WUSTL) পরেই অবস্থান করছে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠানটি। ৩ জন বাংলাদেশী গবেষক এই গবেষণাটিতে অংশ নেন।

এবার আসি কোলাবোরেশান বা সমন্বিত গবেষণার প্রেক্ষিতে। সমন্বিতভাবে গবেষণা আধুনিক বিজ্ঞান গবেষণার প্রায় অপরিহার্য্য অঙ্গ। একটি নির্দিষ্ট গবেষণাগারে কোন নির্দিষ্টধরনের গবেষণার সুব্যবস্থা থাকলেও সম্পূর্ণ ফলপ্রসু কোন গবেষণার জন্য অন্যান্য অনেক পরীক্ষার দরকার হতে পারে। সেজন্য, অন্য একটি গবেষণাগারের সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করা হয়। আর বৈশ্বিক যোগাযোগ সহজ হওয়ায় আধুনিক বিশ্বে বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন গবেষণাগারের মধ্যে সমন্বয় ঘটানো হয়। এই সমন্বয়ের ধরন, সংখ্যা এবং তার ফলে যে গবেষণাটি হচ্ছে তার মান দেখে কোন প্রতিষ্ঠান বা দেশের গবেষণার অবস্থা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যেতে পারে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গবেষণায় যোগাযোগগুলি দেখতে পাবো নিচের ছবিতে। যুক্তরাষ্ট্র স্বাভাবিকভাবেই একবারে প্রথমে আছে। তারপরে আছে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ এবং এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের ৩ টি দেশ (অষ্ট্রেলিয়া, চীন, জাপান)। সমন্বিত গবেষণায় বাংলাদেশের অবস্থান ৮৪ তম।

এধরনের যোগাযোগে এশিয়া-প্যাসিফিক দেশগুলির মধ্যে ১২ তম অবস্থানে। আর এই সমন্বয়গুলি থেকে প্রাপ্ত গবেষণাগুলিতে বাংলাদেশের গড় ভূমিকা প্রায় ২১ শতাংশ।

গত বছরে যেসব দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের গবেষণায় আন্তর্জাতিক যোগাযোগ সবচেয়ে ভাল ছিল তার তালিকা নিচে দেয়া হল। অষ্ট্রেলিয়া এগিয়ে আছে। কেন কিছু নির্দিষ্ট দেশ প্রতিবছর বেশি পরিমানে বাংলাদেশের সঙ্গে বিজ্ঞান গবেষণায় আগ্রহী সেটা নিয়েই আসলে একটা গবেষণা করা যায়। এই বিশ্লেষণের ফলে পৃথিবীর অন্যান্য অঞ্চলের বা দেশের সঙ্গে সমন্বিত গবেষণা বাড়ানো সম্ভব হতে পারে।

সমন্বিত গবেষণাগুলির মধ্যে জীববিজ্ঞানেই সবচেয়ে বেশি যোগাযোগ ঘটেছে বিশ্বের অন্যন্য গবেষণাগারের সঙ্গে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রধাণ ১০ টি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের নামগুলি দেখা যাচ্ছে। বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলির প্রাধান্য লক্ষ্যনীয়, কিন্তু বিষ্ময়কর নয়।

তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সমন্বিত গবেষণায় বাংলাদেশে সবচেয়ে এগুনো। বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত ১৮ টি উচ্চমানের গবেষণার মধ্যে ৭ টির সঙ্গেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জড়িত।

এখন ভাবতে পারেন উচ্চমানের গবেষণা নিয়ে ধরনের ইনডেক্স তৈরিতে এবং এর বিশ্লেষণে বাংলাদেশের লাভটা কী। সেটার উত্তর পাওয়া খুব কঠিন কিছু না যদি আমরা তুলনামূলক আলোচনায় যাই। তাহলে বুঝতে পারবো বিশ্বের তুলনায় বাংলাদেশের গবেষণার মান কোথায়। এখানে, বাংলাদেশের প্রতিবেশী দুইটি দেশের বিজ্ঞান গবেষণার হাল লক্ষ্য করতে পারি।

ভারত স্বাভাবিকভাবেই অনেক বৃহৎ পরিসরে গবেষণা করে, তাদের গবেষণাগারের সংখ্যা, মান এবং ধরন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বাংলাদেশের চেয়ে বহুগুনে ভাল। সেজন্য, ভারত থেকে প্রকাশিত উচ্চমানের গবেষণার সংখ্যা এবং ধরন বাংলাদেশের চেয়ে বেশি হবে সেটা ধারণা করাই যায়। কিন্তু পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের তুলনা করতে গিয়ে আমি একটু অবাক হলাম (নিচের ছবি)। দুইটা দেশের অর্থনীতি প্রায় কাছাকাছি (আমি যতটুকু বুঝতে পারি)। কিন্তু বাংলাদেশের সঙ্গে শুধু এক বছরের তুলনা করলেই দেখতে পাবো গবেষণায় পাকিস্তান অনেকখানি এগিয়ে। তাদের প্রকাশিত নিবন্ধের সংখ্যা বাংলাদেশের চেয়ে প্রায় ৪ গুণ বেশি। তার ধরণও বিস্তৃত। যদিও সমন্বিতভাবে প্রকাশিত নিবন্ধে ভূমিকার হার বাংলাদেশের প্রায় সমান। কিন্তু এই তুলনা প্রায় নিশ্চিতভাবেই দেখায় যে পাকিস্তান গড়ে বিভিন্ন উচ্চতর গবেষণায় বাংলাদেশ থেকে এগিয়ে।

তুলনা করতে গিয়ে আরেকটা গুরুত্বপূর্ন বিষয় আমার চোখে পরেছে। দেখতে পাচ্ছেন, উচ্চতর গবেষণার ধরণ এবং মানে ভারত এবং পাকিস্তানে ফিজিকাল সায়েন্স বা ভৌত/পদার্থ বিজ্ঞান এবং রসায়নে বাংলাদেশের চেয়ে বেশি প্রকাশ করেছে। কারন কী সেটা অনুসন্ধান করলে হয়তো আমরা বুঝতে পারবো এই দেশগুলির গবেষণায় প্রাধান্য দেয়ার বিষয়কে। তবে আমি ধারণা করি, মিলিটারি সায়েন্স বা সমর বিজ্ঞান এ এই দুইটি দেশে বেশি মনযোগী বলে সেখানকার গবেষণা বড় ভূমিকা রেখেছে এই পরিসংখ্যানে। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ্য। প্রকাশিত ১৮ টি উচ্চমানের গবেষণায় বাংলাদেশের কোন গবেষকই পরিচালকের ভূমিকায় আমি খুঁজে পাইনি। অর্থাৎ কোন গবেষণার এবং প্রকাশের মূল দায়িত্বে বাংলাদেশি গবেষণাগার নেই। নিবন্ধগুলির করেস্পন্ডিং লেখকের তালিকা দেখলে বিষয়টি স্পষ্ট হয়। এটা দেশের গবেষণার দৈন্যতার একটা উদাহরণ। তবে হতাশ হলে চলবেনা, এই তুলনামূলক হালগুলিকে বরং কাজে লাগাতে হবে নিজস্ব গবেষণাকে উন্নত করার লক্ষ্যে।

কোন দেশের বিজ্ঞান গবেষণার তুলনামূলক অবস্থা যাচাই দেশটির উন্নতির পথে ভূমিকা রাখতে পারে। তথ্য-প্রযুক্তি, স্বাস্থ্য, দেশের নিজস্ব সমস্যা / বিষয় নিয়ে গবেষণা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেটা বোঝার জন্য চাই দেশের গবেষণার হালের সঠিক মূল্যায়ন এবং কর্তাব্যক্তিদেরকে সেটা বোঝানো। যেন, বিজ্ঞান গবেষণার খাতে তারা আরও মনযোগী হন। আবার, দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলি কোন রেংকিং এ কততম সেই হিসেবনিকেশ করার চাইতে এভাবে নিজেদের প্রতিষ্ঠানগুলির গবেষণার হাল বোঝাটা বেশি যুক্তিযুক্ত মনে হয়েছে আমার কাছে।

আমি আশা করছি দেশে বিজ্ঞান গবেষণায় যারা আগ্রহী তাদের মধ্যে কৌতুহল জাগাবে এই ইনডেক্সের মাধ্যমে বাংলাদেশের গবেষণার হাল খোঁজা। যারা আগ্রহী তারা নেচার ইনডেক্স এর ওয়েবপেইজ এ গিয়ে নিজেরাই গুঁতোগুঁতি করে মেটাতে পারেন কৌতুহলগুলি। শুভ গুঁতোগুঁতি।


Comments

হাসিব's picture

ন‍্যাচারের প্রবন্ধটা কয়েকটি বিষয়কে কেন্দ্র করে তৈরি। এই কয়টি সেক্টরে বাংলাদেশের অবদান আরো কমে আসবে সামনের দিনগুলোতে। এই আশংকার কারণ হলো বাংলাদেশে বিজ্ঞান শিক্ষার মাধ‍্যমে আয়রোজগারের সুযোগের উন্নতি না হওয়া। দ্বিতীয়ত, আমার ধারণা সবগুলো বিষয়ভিত্তিক গবেষণা গোনায় নিলে হেলথ সেক্টরে বাংলাদেশের গবেষকদের অনেক গবেষণা নজরে আসবে। এর থেকে বেশি আসবে উন্নয়ন অর্থনীতি বিষয়ক গবেষণা। আর দেশি পরিমন্ডলে আর্টস ফ‍্যাকাল্টগুলোতে গবেষণা হয় অনেক। সেগুলো গুগল করলে পাওয়া যাবে না।

সজীব ওসমান's picture

দুইটা মন্তব্যের সঙ্গেই একমত। গবেষণার মাধ্যমে আয়রোজগারের গুরুত্বটা দেশের মানুষকে, বিশেষ করে সরকারকে বোঝানোটা খুব কঠিন কাজ মনে করি।

এই প্রসঙ্গে আরেকটা কথা মনে হল:
কয়েকদিন আগে একজন ঢাবি অধ্যাপকে দেখলাম অভিযোগ করছেন সকল শিক্ষক এবং অন্যান্য একাডেমিক পোষ্টে নিয়োগে পিএইচডি নুন্যতম যোগ্যতা নির্ধারন করা হয়না কেন বলে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ছাত্রছাত্রীরা দেশে কেন পিএইচডি করবে? কে তাদেরকে অর্থ দেবে একটা বাড়তি ডিগ্রী নেয়ার, যেখানে ব্যাচেলর, মাস্টার্স শেষ করতেই ৬ বছর লেগে যায় এবং এরপরে অন্যান্য চাকুরী করে অর্থোপার্জন করা যায়। পিএইচডি সহ যা পাওয়া যায় তারা প্রায় সবই বিদেশী ডিগ্রীধারী।

হাসিব's picture

সরকারকে বোঝানোর কথা বলিনি। দেশে এঞ্জিনিয়ারিং বা ফিজিক্স কেমিস্ট্রি গণিত - এরকম জায়গা থেকে গ্রাজুয়েশন করে চাকুরি পাওয়া যায় না। কারণ হলো এদের ধারণ করার মতো শিল্প কাঠামো নেই। এই শিল্প কাঠামো না থাকার কারণ উদ‍্যোক্তা লেভেল ও সরকারি লেভেল দুই দিক থেকেই আসে। এই কারণে আমার স্কুলবেলায় যেমন ভাল ছাত্ররা সায়েন্সে যেত এরকমটা এই যুগে এতো আত্মবিশ্বাসের সাথে বলা যায় না। সবাই যায় বিজনেস পড়তে। কারণ সেটা পড়ে আয় রোজগারের বন্দোবস্ত সম্ভাবনা ইত‍্যাদি ভাল।

আর দেশে পিএইচডি দুঃখজনক পরিস্থিতি। এদের কোন ফান্ডিং নেই। আর থাকলেও সেই ফান্ডিং তামাশা পর্যায়ের ফান্ডিং। এর ওপর আছে যোগ‍্য সুপারভাইজরের অভাব।

সজীব ওসমান's picture

গবেষণাভিত্তিক চাকুরিও তো তেমন নাই। কিন্তু চাকুরির অভাবে বিজ্ঞান পড়তে না আসা এবং বিজ্ঞান গবেষণায় পর্যাপ্ত মনযোগ না দেয়া (প্রাতিষ্ঠানিক এবং সরকারিভাবে) - দুইটা বিষয়ের মধ্যে হয়তো কিছু পার্থক্যও আছে। ধরে নিন, বিজ্ঞান পড়ে বেশ আয়রোজগার করলো, কিন্তু শুধু তাতে তো প্রতিষ্ঠানগুলায় গবেষণায় মনযোগী ছাত্র পাওয়া যাবেনা। গবেষণার মাধ্যমে উপার্জনের জন্যই আলাদাভাবে অর্থ বরাদ্দ থাকতে হবে। সেজন্যই সরকারকে বোঝানোর কথা উল্লেখ করেছি।

হাসিব's picture

তেমন নেই না বলে আমি বলবো নেই। বাংলাদেশে অপারেটর লেভেলে কাজ হয়। সব কিছু ডেভেলপমেন্ট হয় বাইরে অন‍্য কোন দেশে।

ইফতেখার's picture

ইতিমধ্যেই যারা পিএইচডি করে ফেলেছেন বা যারা করছেন তাদের গবেষণার মান যাচাইসাপেক্ষে মাস্টার্স ডিগ্রিধারিদের উপরে প্রাধান্য দেয়া যায়। আমি নিশ্চিত এতে অনেকে দেশে ফিরে আসার ব্যাপারে উৎসাহী হবেন। এতে যোগ্য সুপারভাইজরের সংখ্যাও বাড়বে।

সজীব ওসমান's picture

আমার কথা হইলো দেশেই পিএইচডি শিক্ষার্থী, পোষ্টডক গবেষক তৈরি করতে হবে এবং গবেষণাগারের অন্যান্য কাজকর্মকে দেখাশোনার জন্য যোগ্য লোক নিয়োগ করতে হবে। নাহলে হবেনা, এমনকি বাইরে থেকে পিএইচডি করে আসা লোকজনকে নিয়োগ দিলেও।

বিপ্লব পাল 's picture

দেশে গবেষণার অবস্থা হতাশাজনক। Corresponding author হিসেবে বাংলাদেশী কারও নাম নেই। তাই মনে হচ্ছে, যে গবেষণা প্রবন্ধগুলোতে বাংলাদেশের নাম আছে তার বেশিরভাগই বাংলাদেশের বাইরে করা, শুধু বাংলাদেশী প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পৃক্ত কেও একজন graduate student অথবা post-doc এইসব গবেষণার সাথে যুক্ত আছে। বাংলাদেশে গবেষণার quality প্রকৃতপক্ষে এর থেকেও খারাপ।

সজীব ওসমান's picture

অন্য কোনভাবে কি এই মানকে যাচাই করা যায়? এসব পরিসংখ্যানকে গুরুত্ব সহকারে নিতে হবে সরকারি কর্তাব্যক্তিদের, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের গবেষক নেতাদের।

বিপ্লব পাল 's picture

আমার জানা নেই যেসব গবেষণাগুলো বাংলাদেশে হচ্ছে সেগুলো কেমন জার্নালে প্রকাশিত হচ্ছে তার কোন পরিসংখ্যান আছে কিনা। তবে nature index এই বিষয়টা পরিষ্কার যে বাংলাদেশে কোন high impact গবেষণা হয় না। আমার জানা নেই বাংলাদেশের নীতিনির্ধারক এবং গবেষকরা গবেষণার মান নিয়ে চিন্তাভাবনা করে কিনা। স্বাধীনতার পর আমরা অনেক ক্ষেত্রেই অগ্রগতি করেছি কিন্তু বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে কোন আগ্রগতি হয়েছে বলে মনে হয় না। আপনার এই লেখাটা হয়ত নীতিনির্ধারক এবং গবেষকদের চোখে পরবে না। পরলেও এই ১৮ টা hight impact নিয়েই তারা গর্ব করবে। আমার মন্তব্য হয়তো অনেক বেশি নেতিবাচক মনে হবে, কিন্তু আমারা এই অবস্থার পরিবর্তন করতে পারি আমাদের সেই ক্ষমতা আছে।

সজীব ওসমান's picture

হেহে।। সেটাই, আমাদের দৈন্যতাটা না বুঝলে অবস্থার উন্নতি সম্ভব না।

রকিবুল ইসলাম কমল's picture

দারুণ একটা জিনিস শেখালেন! কাজ-কাম সব বাদ দিয়া সকাল থেকে এটা নিয়েই গুঁতোগুঁতি করতেছি। দেঁতো হাসি

সজীব ওসমান's picture

দেঁতো হাসি

ইফতেখার's picture

দেশের কয়েকটা বিষয় খেয়াল করুন।

১. বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা শুরুর জন্য পিএইচডি দরকারি নয়। কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্ডারগ্রাজুয়েট ডিগ্রি হলেই চলে। এরা একসময় পিএইচডি করেন ঠিকই তাদের ডিগ্রির কোয়ালিটি যাচাইয়ের কোন মানদন্ড নেই। পিএইচডিতে কি করলেন সেটা ব্যাপার না, সার্টিফিকেট থাকলেই চলে। এমতাবস্থায় পিএইচডিতে যারা ভালো করেন সেটা সেলফ-মোটিভেশন থেকে, দায়বদ্ধতা থেকে নয়।

২. নিয়োগ/পদোন্নতিতে নেচার পেপার আর পাকিস্তান জার্নালের পেপারের সমান দাম। ছাপার অক্ষরে নাম থাকলেই হয়। এমতাবস্থায় নুন্যতম মানসম্পন্ন জার্নালে পেপার করার দরকার আছে কি? কে হায় 'অযথা' পরিশ্রম করতে ভালোবাসে! এর মধ্যে যারা ভালো করছেন তারা নিজেদের আগ্রহে করছেন, পেশাগত বাধ্যবাধ্যকতা নেই।

এরকম অবস্থায় নেচার দূরে থাকুক, ০.৫ ইম্প্যাক্ট ফ্যাক্টরের পেপার আশা করাই অযৌক্তিক চিন্তা।

সজীব ওসমান's picture

আমি তো মনে করি লেকচারার হিসেবে শিক্ষক নিয়োগে পিএইচডি দরকারি না থাকার সিদ্ধান্তটাই সঠিক। যতদিন দেশের পিএইচডি ছাত্রদেরকে সুযোগ এবং পর্যাপ্ত বেতন দিতে না পারবেন ততদিন শিক্ষক নিয়োগ এরকমই হতে হবে। বিদেশে গিয়ে ডিগ্রী আনার সৌভাগ্য সবার হয়না।

হাসিব's picture

জার্মানিতে দুই ধরণের বিশ্ববিদ‍্যালয় সিস্টেম আছে। এক ধরণের সিস্টেম বলা চলে গবেষণা নির্ভর ও আরেকটা শিক্ষানির্ভর। প্রথম প্রকার পিএইচডি দিতে পারে দ্বিতীয়তটা পারে না। এই দ্বিতীয় পদের ইউনিগুলোতে পিএইচডি করা যায়। শর্ত হলো সাথে সাথে একটা পিএইচডি করতে হবে এবং ইউনির হয়ে কিছু গবেষণা, এ‍্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ডিউটি পালন করতে হবে। বাংলাদেশে এই ফর্মে কিছু একটা ভাবা যেতে পারে। লেকচারারশীপ দেয়া যেতে পারে পিএইচডি স্টুডেন্টদের। নির্দিষ্ট সময় তারা এটা শেষ করার শর্তসাপেক্ষে চাকুরির পরবর্তী প্রমোশন।

সজীব ওসমান's picture

চলুক

বটপাকুড় 's picture

Quote:
যতদিন দেশের পিএইচডি ছাত্রদেরকে সুযোগ এবং পর্যাপ্ত বেতন দিতে না পারবেন ততদিন শিক্ষক নিয়োগ এরকমই হতে হবে।

এখানে কিছু কথা বলি, একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের কাজ কিন্তু শুধু পড়ানো না। উন্নত বিশ্বে নিজের বেতনের টাকাটা অনেক প্রফেসরকে ফান্ডের মাধ্যমে যোগাড় করতে হয়। তারপর নিজের গবেষনা গ্রুপ চালানোর জন্য দিন রাত দ্বারে দ্বারে প্রকল্প পত্র লিখতে থাকো। আমার নিজের চোখে দেখা। Tenure track হলে ভিন্ন হিসাব। কিন্তু কাজের কোন বিরাম নেই। সেখানে দেশের পাবলিক ভার্সিটি এর টিচার হওয়া মানে আগামী ২৫ বছর আরামে চাকুরী করে যাওয়া, আর কোন দলের ব্যানারে থাকলে তো ভিসি হওয়া ঠেকায় কে, নিদেন পক্ষে বিদেশে কূটনীতিক পদ চোখ টিপি
এখন আপনার যুক্তি হবে ভাই দেশে বসে এই রকম বিদেশের বুলি কপচাই কেন, দেশে কাজ করার কোন পরিবেশ নেই। আমার নিজের দেশের একটি পাব্লিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে ইউরোপের বিশ্ববিদ্যালয়ের ( টপ ১০০ এর মধ্যে) একটি সম্মিলিত প্রকল্প লেখার এক তিক্ত অভিজ্ঞতা আছে। দেশের প্রফেসর সাহেব শুধু নিজের সিভিখানা পাঠিয়ে দিয়ে খালাস। একটা লাইনও যোগ করেন নি । এমনকি কোন আগ্রহ দেখাননি। বলেন তো, যারা এতো অলস হয়ে বসে থাকেন তাদের দিয়ে কি গবেষণা হবে। আমার নিজের মতামত বলি, দেশের গবেষণা অগ্রগতির পেছনে টাকার অভাব যেমন একটা কারণ, তেমনি আমাদের গবেষণায় অনীহা থাকা আরেকটা কারণ। ইচ্ছা থাকলে, স্বল্প টাকাতেও অনেক গবেষণা করা যায়। ভারত যেটা করা শুরু করেছে অনেক আগে থেকে। আর আমরা এক্ষণও সেটার ধারে কাছেও যেতে পারিনি।
পাবলিক ভার্সিটি এর টিচার নিয়োগ হওয়া উচিত চুক্তি ভিত্তিক। নিজে বিদেশে এর সাথে কোলাবরেশন প্রকল্প লিখে পরে নিজের বেতন আর গ্রুপ চালানোর টাকা জোগাড় করার মানসিকতা যতিদিন গড়ে না উঠবে, ততদিনে আমাদের গবেষণার বাতি এইরকম নিভু নিভু হয়ে জ্বলতে থাকবে। আমার কথাগুলো নেতিবাচক হলেও নির্মম সত্য কথা

ইফতেখার's picture

এই অনীহা বা আলস্যের প্রধান কারণ হল পেশাগত উন্নতির জন্য (পদোন্নতি) গবেষণাপত্র বা ফান্ড পাওয়ার প্রয়োজন নেই বললেই চলে। কাজেই দেশে গবেষণা এখনো একধরণের শখের বিষয়।

সজীব ওসমান's picture

কয়েকটা ভাল পয়েন্ট বলেছেন। কিন্তু 'ইচ্ছা থাকলে স্বল্প টাকাতেও অনেক গবেষণা করা যায়' এই মন্তব্যের সঙ্গে আমি একমত নই। যারা কোন প্রতিষ্ঠানে চাকুরিরত আছেন তারা স্বল্প টাকাতে যতটুকুই করতে পারবেন তাতে দেশের সার্বিক গবেষণার হালের তেমন পরিবর্তন হবেনা। যদিও সেটা আমার দেখা অনেকেই করেন, কেউই করেন না বলাটা ভুল মন্তব্য। দরকার সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ এবং অর্থ বিনিয়োগ। গবেষণার ইচ্চাশক্তিতেই দেশ গবেষণায় আগাবে না। মেধাবী মানুষকে গবেষণায় আনতে হলে ভাল বেতন দিতে হবে, গবেষণার খরচ দিতে হবে। সেটা সরকারী সহায়তায় না হয়ে শুধু নিজেদের ফান্ডিং বিদেশ থেকে জোগাড় করে সম্ভব না। আবার আমেরিকা-কানাডাতেও ফান্ডিং এর অধিকাংশ আসে সরকারি ফান্ড থেকে। গবেষকদের এই ফান্ডিং এর জন্য এপ্লাই করতে হয়। এখন সরকার যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি বিভাগের জন্য ১০ লাখ টাকা মাত্র গবেষণায় বরাদ্দ করে থাকেন, যার বেশিরভাগটুকু ব্যয় হয় চেয়ার-টেবিল-এয়ার কন্ডিশন কিনতে তবে তো গবেষনার ছাইটা হবে!

ইফতেখার's picture

গবেষকদের আর্থিক সুবিধা হতাশাজনক এ বিষয়ে সন্দেহ নেই। আর্থিক সুবিধা বাড়ানো একান্ত দরকার। বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে অব্যবহৃত যন্ত্রপাতি, কেমিক্যাল দেখে আমার মনে হয়েছে টাকার অভাব এক নম্বর সমস্যা না। টাকা খরচের প্রায়োরিটি নির্ধারণই বড় ব্যাপার। আগে এসি কিনবেন বা টাইলস লাগাবেন নাকি যে সমস্ত যন্ত্রপাতি আছে সেগুলিকে কাজে লাগানোর জন্য দরকারি কেমিক্যাল ও অন্যান্য ব্যয় মেটাতে টাকা খরচ করবেন। কাজ করতে চাইলে দুনিয়ার সেরা কোম্পানির চড়া মুল্যের যন্ত্রের অনেক কমদামি বিকল্প আছে। স্থানীয়ভাবেও অনেক কিছু বানিয়ে নেয়া যায়। জিনিস পত্র শেয়ার করে ব্যবহার করা যায়। আসলে যা নেই তা নিয়ে আপনি কখনই শুরু করতে পারবেন না। যা আছে তা নিয়েই শুরু করতে হবে।

পরিবর্তন আনতে হলে বেশিরভাগ শিক্ষককে/অন্যান্য গবেষণা পেশাজীবিকে উপযুক্ত নীতিমালার আওতায় গবেষণায় আনতে হবে। আবার এরা কার্যকর গবেষণায় আসবেন না, যদি না এর সাথে আর্থিক সুবিধা (যেমন পদোন্নতি) যুক্ত থাকে। এটা একটা চক্রের মত হয়ে গেছে। কেউ ভাংগতে চান না। না সরকার না গবেষক।

হাসিব's picture

বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই সম্পদের প্রাচুর্য সমস‍্যা নয়, সম্পদের বন্টনই সমস‍্যা — এটা ইকোনমিক্স যারা পড়েছে তাদের সবাই তাদের কোর্সওয়ার্কে শুনেছে। কথাটা সত‍্য অবশ‍্যই। আমি ৮বছরের মতো ঢাবির সাথে ছাত্র হিসেবে যুক্ত ছিলাম। যে ফ‍্যাকাল্টিতে পড়তাম সেখানে কোন টাকাপয়সা ছাড়াই অনেক কাজ করা সম্ভব। শিক্ষকেরা সেটা করেন না। তাদের নজর ক‍্যান্টিন, লাইব্রেরির শোভাবর্ধন, এসি, কার্পেট ইত‍্যাদিতে। অভিযোগ করা সহজ, যা আছে তা দিয়ে কতোটুকু চেষ্টা হচ্ছে সেটার হিসেব অনেক কঠিন।

বটপাকুড় 's picture

আমার নিচে হাসিব ভাই বলে গেছেন 'বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই সম্পদের প্রাচুর্য সমস‍্যা নয়, সম্পদের বন্টনই সমস‍্যা' এই কথা ধ্রুব সত্য। কোন গবেষণা প্রকল্পে যখন টাকা আসে, তখন টিচাররা বসে থাকেন কিভাবে নতুন টেবিল চেয়ার কিনবেন আর নিজের জন্য নতুন ল্যাপটপ বাগাবেন। এর বদলে যে নিজের একটা গবেষণা গ্রুপ দাঁড় করাবেন সেইটা মাথায় রাখেন না। আপনি যদি পদার্থ বিজ্ঞান কিংবা গণিতের মত বিষয়ে কিন্তু বিশাল আকারে গবেষণাগার লাগে না। আমার জানা মতে রাশিয়ায় এভাবে পদার্থ বিজ্ঞান কিংবা গণিতের বেশি জোড় দিয়েছিল, কারণ অনেক স্বল্প খরচে গবেষণা করা সম্ভব হত। আর প্রাকৃতিক গবেষণা সম সময় ব্যয়বহুল। কিন্তু স্থানীয় ভাবে অনেক যন্ত্র পাতি বানিয়ে নিলে সেটার খরচও কমানো সম্ভব।

ইফতেখার's picture

এই মাথায় না থাকা বা ল্যাপটপ বাগানোকে প্রাধান্য দেবার মত প্রবনতার কারণ হলো গবেষণা বাধ্যতামুলক নয়। উন্নত দেশগুলিতে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষকদের এই গবেষণা কোনো না কোনোভাবে করতেই হয়। এটা তারা কেবল সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে করেন না। আসলে এটা না করলে তারা পেশায় সাসটেইন করতে পারবেন না। কাজেই আমাদের সমস্যা বুদ্ধিবৃত্ততে, সম্পদে বা ইচ্ছে শক্তিতে নয়। আসল সমস্যা নীতিমালাতে। ঐ যায়গায় হাত না দিলে কেন ন্যাচারে পেপার হলো না বলে হাপিত্যেশ করে কোনো লাভ নেই।

মোবাশ্বের আলম 's picture

গবেষণা বিষয়ে একটা কথা মনে পড়ে গেল। আমার পরিচিত একজন আমাকে একবার বলেছিল যে বাংলাদেশ আমলে সর্বজন শ্রদ্ধেয় জাফর ইকবাল স্যারের কোনো জার্নাল (ইমপ্যাক্ট ফ্যাক্টর সহ) প্রকাশনা নেই। সর্বশেষ প্রকাশনা ১৯৯৬ সালে। তাও নাকি ওই কাজ উনার আমেরিকাতে করা, দেশে না। যে আমাকে এই কথা বলেছিল সে ছাগু প্রকৃতির তাই বিশ্বাস করি নাই। ছাগুদের কাজ সারাদিন স্যারের সমালোচনা করা। লেখক সাহেব যদি আমাকে একটু বিষয়টা তথ্যভান্ডার ঘেটে জানান, তবে ওই ছাগুকে জবাব দিতে সুবিধা হবে। আমার জানামতে নিয়মিত জার্নাল প্রকাশনা একজন অধ্যাপকের পেশাগত কর্তব্য। এইখানে অবহেলা করার কোনো সুযোগ নাই। স্যারের মত লোক এই কাজ করবে এইটা বিশ্বাস করা আমার পক্ষে সম্ভব না ওই ছাগু নিশ্চিত মিথ্যা বলেছে। জাফর ইকবাল স্যার এইরকম করতেই পারে না।

নজমুল আলবাব's picture

দেশে আসার পরতো জাফর ইকবালের ভূমিকাটাই বদলে গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজের বিভাগ দাড় করাবার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়টাকেও গড়ে তুলতে হয়ছে। এর বাইরে দেশের পুরো শিক্ষাব্যবস্থা নিয়েই উনাকে কাজ করতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত।

গবেষণা বিষয়ে মন্তব্য অন্যরা হয়তো দেবেন। সম্পূরক উত্তর দিয়ে রাখলাম আমি।

সজীব ওসমান's picture

আপনার উদ্দেশ্য আমি ভালভাবে ধরতে পারছিনা, কারন এই লেখার সঙ্গে আপনার কমেন্টের কোন সম্পর্ক খুঁজতে ব্যর্থ হচ্ছি। তবে আপনার কথায় কয়েকটা ভুল আছে। হয়তো ইচ্ছা করে ত্যানা প্যাঁচানোর জন্য বলেছেন। যেমন, 'আমার জানামতে নিয়মিত জার্নাল প্রকাশনা একজন অধ্যাপকের পেশাগত কর্তব্য।' এইটা ভুল কথা। শিক্ষককে জার্নাল প্রকাশণা করতে হয়না। পৃথিবীর বহু প্রথিতযশা শিক্ষকের খুব ভাল পত্রিকা প্রকাশণা নাই। তবে কেউ যদি গবেষণা করতে চান তবে তাকে প্রকাশ করতে হয়। গবেষক এবং শিক্ষকের মধ্যে পার্থক্য আছে। তবে আপনার যদি অতি কৌতুহল থাকে তবে কম্পিউটার বিজ্ঞানের কোন জার্নাল ডাটাবেইজ থেকে নাম দিয়ে খুঁজে দেখুন।

অতিথি লেখক's picture

উইকির মতে ১৯৯৭ সালের একটা প্রকাশনা আছে। আর আপনি 'সুপার কপ' মাশরুফের একটা লেখা পড়তে পারেন। শিরোনাম সম্ভবত, জাফর ইকবালের ভন্ডামি ফাঁস। চোখ টিপি

আমি একটা ব্যক্তিগত কথা বলি। ভার্সিটির আরকি! দুই স্যারের মধ্যে কথা হচ্ছে, একজন আরেকজনকে তেঁল দিচ্ছে, কি স্যার আপনার নামটাও দিয়ে দিব নাকি? দিয়ে দেন, ঐ স্যারের বক্তব্য। ন্যুনতম মান-সম্মান থাকলে স্টুডেন্টদের সামনে একথা তাঁরা বলতে পারতো না। তো একসময় আবিষ্কার করলাম, আসলেই ওই স্যারের নাম যুক্ত করা হয়েছে।

আসলে এরকমই অধিকাংশ ক্ষেত্রে হয়, বিশেষ ক্ষেত্রে আন্ডার-গ্র্যাড পর্যায়ে। লাস্ট টার্মে সুপারভাইজেরা এক একটা টপিক সিলেক্ট করে দেয়, পেপার পড়তে বলে, নিজেদের আইডিয়া বের করতে বলে। ইমপ্লেমেন্ট করতে বলে, এরপর অন্য পেপারগুলোর সাথে তুলনা করতে বলে। সামান্য একটু ভালো রেজাল্ট আসলেই সেটার পেপার বের করে ফেলা হয়। এখন দেখেন একটা ব্যাপার। মনে করেন আপনি একটা অবজেক্টের (A) উপর অন্য একটা অবজেক্ট(B) নিয়ে কাজ করছেন। তো মনে করেন A-B রিলেশনে ভালো রেজাল্ট দেয় কিন্তু ধরেন B না হয়ে যদি C হয়ে তবে ভালো রেজাল্ট দেয়না। তখন করা হয়কি, শুধু ভালো রেজাল্টগুলোই দেখানো হয়, খারাপ গুলো বাদ দেয়া হয়। তো আপনিই বলেন, এরকম জগাখিচুড়ি মার্কা পেপার পাবলিশড করার দরকার কি? আর এরকম ২০/৩০টা পেপার নামের পাশে রাখারই স্বার্থকতা কোথায়?

বিপ্লব পাল 's picture

এখানে কথা হচ্ছে বাংলাদেশের গবেষণার মান নিয়ে নির্দিষ্ট কোন প্রফেসরের গবেষণার মান নিয়ে নয়। তাই আপনার মন্তব্য অপ্রাসঙ্গিক বলে মনে করি। একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব প্রফেসরই গবেষণা করবে তা কিন্তু নয়।

পদ্মাচর's picture

আলম ভাইয়া, আপনার ছাগু বন্ধুর কাছে নিশ্চয়ই আমেনা মহসীন, আসিফ নজরুল আর এমাজুদ্দিন আহমদের জার্নাল প্রকাশনার লিষ্টও আছে। ওগুলো একটু দেখে এসে আমাদের জানাবেন ভাইয়া?

আব্দুল্লাহ এ.এম.'s picture

ছাগুরাম কাগুরে
তুই বড় ঘাগুরে!

সজীব ওসমান's picture

হো হো হো

অতিথি লেখক's picture

আমাদের সময়ে ভাল ছাত্র মানেই ছিল বিজ্ঞানের ছাত্র। সেই জায়গা এখন দখল করেছে বাণিজ্য বিভাগ। এভাবে চলতে থাকলে সামনে কলা অনুষদের বিভাগগুলোও বিজ্ঞানকে হয়ত ছাড়িয়ে যাবে।

ফাহমিদুল হান্নান রূপক

সজীব ওসমান's picture

বানিজ্যে ভাল ছাত্র যাওয়াটা খারাপও নয়। কিন্তু শুধু বানিজ্য যেয়ে বিজ্ঞানে না যাওয়াটা ভাল লক্ষণ না। কোথায় জানি কয়েকদিন আগে পড়েছিলাম যে দেশে বিজ্ঞান বিভাগে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা কমছে স্কুল-কলেজেই।

Post new comment

The content of this field is kept private and will not be shown publicly.