মনুষ্যজাতির সংক্ষিপ্ত ইতিহাস- অধ্যায়ঃ ২ (১/৩)

নিটোল's picture
Submitted by nitol1991 [Guest] on Sun, 09/08/2015 - 12:29pm
Categories:

এই সিরিজটি ইউভাল নোয়া হারারি রচিত Sapiens: A Brief History of Humankind এর ধারাবাহিক অনুবাদ।

১ম অধ্যায়- [পর্ব-১] [পর্ব-২]

জ্ঞানবৃক্ষ

প্রথম অধ্যায়ে আমরা দেখেছি যে, সেপিয়েন্সরা ১৫০,০০০ বছর আগে থেকেই পূর্ব আফ্রিকায় বসতি গড়ে তুলেছিল; তবে কেবল ৭০,০০০ বছর আগে থেকেই ওরা বাকি পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে এবং অন্যান্য মানব প্রজাতিকে বিলুপ্তির পথে চালিত করে। সেই মধ্যবর্তী সহস্রাব্দগুলোয়, আদিম সেপিয়েন্সরা দেখতে ঠিক আমাদের মতোই ছিল, তবে তাদের মস্তিষ্ক আমাদের মতোই বড় হওয়া সত্ত্বেও, ওরা অন্যান্য মানব প্রজাতির তুলনায় কোনো লক্ষণীয়/বাড়তি সুবিধা উপভোগ করে নি। ওই সময়কালে, ওরা কোনো জটিল হাতিয়ার বা সরঞ্জাম তৈরি করতে পারে নি, এবং পারে নি কোনো অসাধারণ কীর্তি গড়তে।

সত্যি বলতে কি, সেপিয়েন্সনিয়ান্ডারথালের মধ্যে প্রথম যে লড়াইয়ের ব্যাপারে জানা যায়, সেখানে নিয়ান্ডারথালরা জয়ী হয়েছিল। প্রায় ১০০,০০০ বছর পূর্বে, কিছু সেপিয়েন্স দল আফ্রিকা ছেড়ে উত্তরের লেভান্তে (আজকের দিনের লেবানন, জর্ডান, ইজরায়েল) পাড়ি দেয়, যা ছিল নিয়ান্ডারথাল রাজ্য। কিন্তু সেখানে ওরা শক্ত খুঁটি গাড়তে পারে নি। এর পেছনে সেখানকার হিংস্র অধিবাসী, রুক্ষ জলবায়ু কিংবা স্থানীয় কোনো পরজীবীর হাত থাকতে পারে। তবে যে কারণই এর পেছনে থাকুক না কেন, সেপিয়েন্সরা অবশেষে পিছু হটতে বাধ্য হয় এবং নিয়ান্ডারথালরা রয়ে যায় মধ্যপ্রাচ্যের হর্তাকর্তা।

এই ব্যর্থতার কারণে গবেষকরা জল্পনা করেছেন যে, খুব সম্ভবত ওইসব সেপিয়েন্সের মস্তিষ্কের অভ্যন্তরীণ গঠন আমাদের চেয়ে কিছুটা আলাদা ছিল। ওরা দেখতে ঠিক আমাদের মতোই ছিলো, তবে তাদের বৌদ্ধিক সামর্থ্য, যেমন- শেখার ক্ষমতা, মনে রাখার দক্ষতা, যোগাযোগ দক্ষতা ইত্যাদি ছিল অনেক সীমাবদ্ধ। যদি ওই সেকেলে সেপিয়েন্সকে আমরা ইংরেজি শেখাতে যাই, অথবা খ্রিষ্টীয় ধর্মমতে আকৃষ্ট করতে চাই কিংবা বিবর্তন তত্ত্ব বোঝাতে যাই, তাহলে তা পুরোপুরি অর্থহীন প্রচেষ্টা ছাড়া আর কিছুই হবে। আবার উল্টোভাবে, ওদের ভাষা শিখতে এবং চিন্তাধারা বুঝে উঠতে যাওয়াটা আমাদের জন্য প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে।

কিন্তু এরপর প্রায় ৭০,০০০ বছর আগে, হোমো সেপিয়েন্স অসাধারণ কিছু কাজ করা শুরু করে। কাছাকাছি সময়ে, কিছু সেপিয়েন্স গোত্র দ্বিতীয়বারের মতো আফ্রিকা ছেড়ে অন্যান্য অঞ্চলে পাড়ি দেয়। এবার কিন্তু ওরা মধ্যপ্রাচ্য থেকে নিয়ান্ডারথাল এবং অন্যান্য মানব প্রজাতিকেই কেবল তাড়িয়ে দেয় নি, বরং পুরো পৃথিবী থেকেই নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে। বেশ অল্প সময়ের মধ্যেই, সেপিয়েন্স পৌঁছে যায় ইউরোপ ও পূর্ব এশিয়ায়। প্রায় ৪৫,০০০ বছর পূর্বে, তারা কোনো না কোনোভাবে সাগর পাড়ি দেয় এবং পৌঁছে যায় অস্ট্রেলিয়ায়- যেখানে এর আগে অন্য কোনো মানব প্রজাতির পদচিহ্ন পড়ে নি। ৭০,০০০ বছর পূর্ব থেকে ৩০,০০০ বছর পূর্বের ওই মধ্যবর্তী সময়ে জাহাজ, তেলের প্রদীপ, তীর-ধনুক এবং সুঁই (যা গরম কাপড় তৈরিতে একটি অত্যাবশ্যকীয় উপাদান) উদ্ভাবিত হয়। সর্বপ্রথম এই যুগেই তৈরি হয় কিছু সামগ্রী যা নিশ্চিতভাবে শিল্পের মর্যাদা পেতে পারে। এই যুগ থেকেই ধর্ম, ব্যবসা এবং সামাজিক স্তরবিন্যাসের সর্ব প্রাথমিক সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়।

বেশিরভাগ গবেষকই বিশ্বাস করেন যে, এই অভূতপূর্ব অর্জনগুলো হলো সেপিয়েন্সের বৌদ্ধিক বা চৈতন্য দক্ষতায় ঘটে যাওয়া একটি বিপ্লবের ফলাফল। গবেষকরা মনে করেন যে, যেসব মানুষেরা নিয়ান্ডারথালদেরকে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে, অস্ট্রেলিয়ায় বসতি স্থাপন করেছে এবং খুদেছে স্তাদেলের সিংহ-মানব, তারা ঠিক আমাদের মতোই বুদ্ধিমান, সৃষ্টিশীল এবং অনুভূতিপ্রবণ। যদি কখনো আমাদের সাথে স্তাদেল গুহার শিল্পীদের দেখা হয়ে যায়, তাহলে আমরা একে অপরের ভাষা শিখে নিতে পারব। আমরা যা জানি- ‘এলিস ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড’ থেকে কোয়ান্টাম বলবিদ্যার স্ববিরোধিতা- সবই আমরা ওদেরকে বুঝিয়ে বলতে পারব, এবং ওরাও জগত সম্পর্কে ওদের দৃষ্টিভঙ্গি আমাদের কাছে ব্যাখ্যা করতে পারবে।

৭০,০০০ বছর পূর্ব থেকে ৩০,০০০ বছর পূর্বের সময়কালে, নতুন ধরনের চিন্তা-পদ্ধতি ও যোগাযোগ দক্ষতার আবির্ভাবের ফলে, বৌদ্ধিক/চৈতন্য বিপ্লব সংগঠিত হয়। কিন্তু কেন ঘটেছিল এই বিপ্লব? আমরা নিশ্চিতভাবে জানি না। তবে সবচেয়ে প্রচলিত মত হলো এই যে, কোনো এক দৈব জেনেটিক মিউটেশনের কারণে সেপিয়েন্সের মস্তিষ্কের আভ্যন্তরীণ ব্যবস্থার পরিবর্তন ঘটে; যার ফলে তারা অভিনব পথে চিন্তাভাবনা করা শুরু করে এবং একেবারে ভিন্ন ধরনের ভাষা ব্যবহারের মাধ্যমে যোগাযোগের দক্ষতা অর্জন করে। আমরা এর নাম দিতে পারি- জ্ঞানবৃক্ষ মিউটেশন। কিন্তু নিয়ান্ডারথালের পরিবর্তে সেপিয়েন্সের ডিএনএ’তেই কেন এই মিউটেশন ঘটল? এ ব্যাপারে বলা যায় যে, এটি সম্পূর্ণই একটি দৈবঘটনা। তবে এই মিউটেশনের পেছনকার কারণ জানার চেয়ে এর ফলাফল বুঝে ওঠাই অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ। সেপিয়েন্সের নতুন ভাষাটিতে কী এমন বিশেষ বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা আমাদেরকে পুরো পৃথিবীর রাজত্ব এনে দিয়েছে?

যদিও এটি প্রাণীজগতের প্রথম ভাষা নয়। প্রত্যেক প্রাণীরই কোনো না কোনো ধরনের ভাষা রয়েছে। এমনকি মৌমাছি এবং পিঁপড়ার মতো কীটপতঙ্গও একে অপরের সাথে জটিল পদ্ধতিতে যোগাযোগ করে খাদ্যের হদিস জেনে নিতে পারে। এটি এমনকি প্রথম মৌখিক ভাষাও নয়। সকল এপ ও বানর প্রজাতিসহ, অনেক প্রাণী মৌখিক ভাষা ব্যবহার করে। উদাহরণস্বরূপ, সবুজ বানরেরা বিভিন্ন ধরনের চিৎকার বা ডাক দিয়ে একে অপরের সাথে যোগাযোগ করে। প্রাণীবিজ্ঞানীরা শনাক্ত করেছেন যে, একটি নির্দিষ্ট ধরনের চিৎকারের অর্থ হলো, ‘সাবধান! ঈগল!’ আবার সামান্য ভিন্ন একটি চিৎকারের অর্থ, ‘সাবধান! সিংহ!’ যখন গবেষকরা প্রথম ধরনের চিৎকার রেকর্ড করে একদল বানরকে শোনালেন, তখন বানরগুলো সব কাজকর্ম বন্ধ করে ভয়ে ভয়ে উপরের দিকে তাকাতে লাগল। আবার যখন একই বানরের দলকে দ্বিতীয় ধরনের ডাক (সিংহের আগমন-বাণী) শোনানো হলো, তখন সবাই হুড়োহুড়ি করে একটি গাছে চড়ে বসল। সবুজ বানরের তুলনায় সেপিয়েন্স অনেক বেশি ধরনের স্বতন্ত্র ও পৃথক শব্দ উৎপন্ন করতে পারে; কিন্তু নীল তিমি এবং হাতিরও তো এমন চিত্তাকর্ষক সামর্থ্য রয়েছে। একটি তোতা পাখি সেই সব কিছুই বলতে পারে যা আলবার্ট আইনস্টাইন বলেন; এটি এমনকি টেলিফোন বেজে ওঠার শব্দ, ধড়াম করে দরজা বন্ধ হবার শব্দ কিংবা সাইরেনের শব্দও নকল করতে পারে। স্পষ্টতই, সামর্থ্যের বিচারে তোতাপাখির তুলনায় আইনস্টাইন যেদিক থেকেই এগিয়ে থাকুন না কেন, সেটি নিশ্চয়ই কণ্ঠস্বরে শব্দ উৎপাদনের ক্ষেত্রে নয়। তাহলে, আমাদের ভাষায় কী এমন বিশিষ্টতা রয়েছে?

এই প্রশ্নের সবচেয়ে প্রচলিত জবাব হল- আমাদের ভাষা বিস্ময়করভাবে নমনীয়। আমরা সীমিত সংখ্যক ধ্বনি ও প্রতীক ব্যবহার করে অসীম সংখ্যক বাক্য তৈরি করতে পারি, যার প্রত্যেকটির থাকবে আলাদা আলাদা অর্থ। যার ফলে আমরা আমাদের পারিপার্শ্বিক জগত সম্পর্কে একটি প্রকাণ্ড তথ্যের ভাণ্ডার সঞ্চয় করে রাখতে পারি এবং অন্যকে সেসব তথ্য জানাতে পারি। একটি সবুজ বানর ‘সাবধান! সিংহ!’ বলে চিৎকার করে তার গোত্রের অন্যদেরকে সতর্ক করে দিতে পারে। কিন্তু একজন আধুনিক মানুষ তার বন্ধুদেরকে বলতে পারে যে আজ সকালে, নদীর ধারে, সে একটি সিংহকে একপাল বুনো মোষ অনুসরণ করতে দেখেছে। এরপর সে ঐ জায়গাটি কোথায় তা একেবারে নির্ভুলভাবে ব্যাখ্যা করতে পারবে; এমনকি ঐ এলাকায় যাওয়ার পথও ঠিকঠিক নির্দেশ করতে পারবে। এই তথ্য পাওয়ার পর, গোত্রের সব সদস্যরা মিলে আলাপ-আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে যে, কী করে তারা নদীর ধারে গিয়ে সিংহটিকে তাড়াবে এবং বুনো মোষ শিকার করবে।

একটি ভিন্ন মতবাদ রয়েছে যা স্বীকার করে যে, আমাদের এই ধরনের স্বতন্ত্র ভাষা বিবর্তিত হয়েছে আশেপাশের তথ্যাবলী অন্যের সাথে ভাগাভাগি করে নেয়ার একটি উপায় হিশেবে। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যেসব তথ্য অন্যের সাথে ভাগাভাগি করে নেয়ার প্রয়োজন ছিল সেসব কিন্তু সিংহ কিংবা মোষের সম্পর্কে নয়, বরং অন্য মানুষদের সম্পর্কে। আমাদের ভাষা বিবর্তিত হয়েছে গল্পগুজব করার একটি উপায় হিসেবে। এই তত্ত্বানুসারে, হোমো সেপিয়েন্স মূলত একটি সামাজিক প্রাণী। সামাজিক সহযোগিতাই হল আমাদের বেঁচে থাকা ও প্রজননের মূল চাবিকাঠি। কেবলমাত্র সিংহ ও বুনো মোষের তথ্য জানাটাই কোনো একক নর এবং নারীর জন্য যথেষ্ট নয়। তারচেয়ে আরো গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো এটা জানতে পারা যে, তাদের গোত্রে বসবাসকারী লোকজনের কে কাকে ঘৃণা করে, কে কার সাথে শুতে যায়, কে সৎ এবং কে প্রতারক।

মাত্র কয়েক ডজন মানুষের মধ্যকার নিয়ত-পরিবর্তনশীল সম্পর্কের ব্যাপারে সবসময় ওয়াকিবহাল থাকতে হলে, যে পরিমাণ তথ্য আমাদেরকে জানতে এবং মনে রাখতে হয় তা বিস্ময়কর। (একটি হিসাবে জানা যায়- পঞ্চাশ জন লোকের একটি গোত্রে, প্রায় ১২২৫ টি মুখোমুখি সম্পর্কে তৈরি হতে পারে, এবং থাকতে পারে আরো জটিল সামাজিক সমবায়।) সব ধরনের নরবানরই এসব সামাজিক তথ্যের ব্যাপারে খুবই কৌতূহলী, কিন্তু তারা সকলেই সার্থকভাবে গল্পগুজব করতে গিয়ে ঝামেলায় পড়ে। নিয়ান্ডারথাল এবং প্রথম দিকের হোমো সেপিয়েন্সরাও সম্ভবত অন্যের পিঠ-পিছে গুজব ছড়ানোর কাজে খুব একটা পারদর্শী ছিল না। এটি বেশ নিন্দনীয় দক্ষতা হলেও সত্যি বলতে কি, বিশাল সংখ্যক লোকের মধ্যকার সমবায় বজায় রাখার জন্য একটি দরকারি উপাদান। নতুন যে ভাষাগত দক্ষতা আধুনিক সেপিয়েন্স আয়ত্ত করেছে প্রায় সত্তর হাজার বছর আগে, তা তাদেরকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আড্ডাবাজি করার সামর্থ্য এনে দিল। কাকে ভরসা করা যায়- এই ব্যাপারে নির্ভরযোগ্য তথ্য থাকলে, ছোট সেপিয়েন্স গোত্র তাদের সদস্যের সংখ্যা বাড়াতে পারে, এবং সেপিয়েন্স আরো শক্তিশালী ও জটিলতর বন্ধন গড়ে তুলতে পারে।

গুজব তত্ত্বটি শুনতে হাস্যকর মনে হতে পারে, কিন্তু অসংখ্য গবেষণা একে সমর্থন করছে। এমনকি আজকের দিনেও, মানুষের আদান-প্রদান করা তথ্যের বেশিরভাগই- সেটা ইমেইল বার্তা হোক, টেলিফোনে আলাপ বা সংবাদপত্রের কলামই হোক- হলো পরচর্চা। কাজটি আমরা এতো স্বাভাবিকভাবে করি যে, এতে প্রতীয়মান হয়- আমাদের ভাষা যেন ঠিক এই উদ্দেশ্যেই বিবর্তিত হয়েছে। আপনি কি মনে করেন - ইতিহাসের অধ্যাপকেরা যখন মধ্যাহ্নভোজে মিলিত হন তখন প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কারণ নিয়ে আলাপ করেন, কিংবা নিউক্লীয় পদার্থবিদেরা কোনো বৈজ্ঞানিক সম্মেলনের পানীয় বিরতিতে কোয়ার্ক নিয়ে আলোচনা করে সময় কাটান? হয়তো মাঝেমধ্যে। কিন্তু তাঁরা বেশিরভাগ সময়, সেই অধ্যাপককে নিয়ে রসালাপ করেন যার স্বামীর প্রতারণা সম্প্রতি ধরা পড়েছে, কিংবা বিভাগীয় প্রধানের সাথে ডিনের ঝগড়াঝাঁটি নিয়ে আড্ডা মারেন, কিংবা কোনো সহকর্মীর নামে রটানো গুজব নিয়ে জল্পনা করেন যিনি নাকি তাঁর গবেষণার টাকা মেরে দিয়ে একটি লেক্সাস কিনেছেন। গুজব-রটনাকারীরাই হলো একেবারে আদিকালের চতুর্থ স্তম্ভ- সাংবাদিক, যারা প্রতারক ও পরগাছাদের ব্যাপারে সমাজকে অবহিত করে এবং ওদের হাত থেকে সবাইকে বাঁচায়।

খুব সম্ভবত, ‘গুজব তত্ত্ব’ এবং ‘নদীর-ধারে-সিংহ তত্ত্ব—দু’টোর মাঝেই সত্যতা রয়েছে। তবে আমাদের ভাষার সবচেয়ে অনন্য বৈশিষ্ট্য কিন্তু মানুষ ও সিংহ সম্পর্কে তথ্য আদান-প্রদানের ক্ষমতা নয়। বরং, এটি হলো সেই বিশেষ ক্ষমতা যা দিয়ে আমরা এমন সব বিষয় বর্ণনা করতে পারি যা আদতে বাস্তবে নেই। যতদূর আমরা জানি, কেবল সেপিয়েন্সই এমন সব বিষয় বা সত্তা সম্পর্কে কথাবার্তা বলতে পারে যা তারা কখনোই দেখে নি, ছোঁয় নি বা ঘ্রাণ নেয় নি।

কিংবদন্তী, মিথ, দেবতা এবং ধর্ম সর্বপ্রথম দেখা দেয় চৈতন্য/বৌদ্ধিক বিপ্লবের পর। এর আগেকার সময়ে, অনেক প্রাণী এবং মনুষ্য প্রজাতির সদস্যরা বলতে পারত, ‘সাবধান! সিংহ!’ তবে চৈতন্য বিপ্লবের কারণে, হোমো সেপিয়েন্স অর্জন করে সেই সামর্থ্য যা দিয়ে তারা বলতে পারে, ‘সিংহ হলো আমাদের গোত্রের রক্ষাকারী আত্মা’। এই বানানো গল্প বলতে পারার সামর্থ্যই হলো সেপিয়েন্সের ভাষার সবচেয়ে অনন্য বৈশিষ্ট্য।

ছবি: জার্মানির স্তাদেল গুহায় প্রাপ্ত ‘সিংহ-মানব’। ৩২ হাজার বছর আগের এই ক্ষুদ্র গজদন্ত-মূর্তিটির মাথা সিংহের, কিন্তু শরীর মানুষের। তর্কাতীতভাবে, প্রাপ্ত নমুনাগুলোর মধ্যে এটিই শিল্পের সর্বপ্রথম নিদর্শন, যা সম্ভবত ধর্মের দিকেও নির্দেশ করে। এটি প্রমাণ করে, তখন মানুষের মস্তিষ্ক সেসব জিনিস কল্পনা করার সামর্থ্য অর্জন করেছিল যা বাস্তবে নেই।

আমরা একটি ব্যাপারে সহজে একমত হতে পারি যে, কেবল হোমো সেপিয়েন্সই সেসব বিষয়ে কথা বলতে পারে যার আসলে বাস্তব অস্তিত্ব নেই, এবং ওয়ান্ডারল্যান্ডের এলিসের মতো প্রাতরাশের পূর্বে ছয়টি অসম্ভব জিনিসে বিশ্বাস করতে পারে। মৃত্যুর পর মর্কট-স্বর্গে পাবে অসীম সংখ্যক কলা- এমন একটি প্রতিশ্রুতি দিয়ে আপনি কোনো বানরকে কখনোই ওর হাতের কলাটা আপনাকে দিয়ে দেবার জন্য রাজি করাতে পারবেন না। কিন্তু কেন এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার? সত্যি বলতে কি, বানানো গালগল্প আমাদেরকে বিপজ্জনকভাবে বিভ্রান্ত করতে পারে এবং ভুল পথে চালিত করতে পারে। যে মানুষগুলো পরী ও উইনিকর্নের খোঁজে বনে-জঙ্গলে ঘুরে বেড়াবে- তাদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা, যারা মাশরুম ও হরিণের খোঁজে ঘুরে বেড়ায় তাদের চেয়ে কম। আর আপনি যদি ঘণ্টার পর ঘণ্টা বনের রক্ষী-আত্মার প্রতি প্রার্থনা করেন, তাহলে কি আপনি আপনার মূল্যবান সময়টুকু নষ্ট করছেন না, যে সময়টি আপনি খাদ্যের সন্ধান, যুদ্ধ এবং সঙ্গমে ব্যয় করতে পারতেন?

কিন্তু কল্পকাহিনী নিছকই আমাদেরকে কিছু জিনিস কল্পনা করার সামর্থ্য দেয় নি, বরং তা করতে শিখিয়েছে সমষ্টিগতভাবে। আমরা বাইবেলের সৃজন কাহিনী, অস্ট্রেলীয় আদিবাসীদের স্বপ্ন-পুরাণ, এবং আধুনিক রাষ্ট্রের জাতীয়তাবাদী মিথের মতো কিংবদন্তী রচনা করতে পারি। এধরনের মিথগুলো বিশাল সংখ্যক সেপিয়েন্সকে সহজে পরস্পরের সহযোগী হয়ে ওঠার অভূতপূর্ব সক্ষমতা প্রদান করে। পিঁপড়া আর মৌমাছিও বিশাল সংখ্যায় একসাথে কাজ করতে পারে, কিন্তু তাদের এই সম্মিলন খুবই অনমনীয়। নেকড়ে এবং শিম্পাঞ্জিরা পিঁপড়ার তুলনায় অনেক নমনীয়ভাবে সহযোগিতার সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারে; কিন্তু ওদের অল্পসংখ্যক সদস্যই কেবল এই সম্পর্ক গড়ে তোলে, যাদেরকে তারা ঘনিষ্ঠভাবে চিনে। সেপিয়েন্সরা অত্যন্ত নমনীয় পন্থায় অগণিত অচেনা লোকের সাথে সহযোগিতার সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারে। এই কারণেই সেপিয়েন্স পৃথিবীতে রাজত্ব করে, যখন অন্যদিকে পিঁপড়া আমাদের উচ্ছিষ্ট খেয়ে বাঁচে এবং শিম্পাঞ্জিরা আটকে থাকে চিড়িয়াখানায় ও গবেষণাগারে।

(চলবে)


Comments

আব্দুল্লাহ এ.এম.'s picture

তাহলে দেখা যাচ্ছে গুজব তত্ত্ব তথা মিথ্যাচারের ক্ষমতা মানুষের উন্নতিতে প্রধান ভূমিকা পালন করেছে।

নিটোল's picture

প্রধান না হলেও, বেশ খানিকটাই করেছে।

_________________
[খোমাখাতা]

অতিথি লেখক's picture

ভাল লাগছে সিরিজ টি।

অনন্যা

নিটোল's picture

ধন্যবাদ, অনন্যা।

_________________
[খোমাখাতা]

হাসিব's picture

যে ছবিটা দিয়েছেন সেটা জার্মানির উলম শহর থেকে একটু দুরে হোয়েলেনস্টাইন থেকে পাওয়া। ওটা ৪০ হাজার বছর পুরনো এবং গুহাটার স্টাডেল হোয়েলে নামে বেশি পরিচিত।

নিটোল's picture

এটা অসাধারণ একটা নিদর্শন।

_________________
[খোমাখাতা]

মাহবুব লীলেন's picture

সাংবাদিকের ইতিহাস তো এক্বেবারে গান্ধা কইরা ফালাইলেন

নিটোল's picture

সাংবাদিকরা যে সব সময়ই ঝামেলাপূর্ণ লোক আছিল, এই বই পড়ে অনেকটাই নিশ্চিত হয়েছি! দেঁতো হাসি

_________________
[খোমাখাতা]

তাহসিন রেজা's picture

বইটির অর্ধকের বেশী পড়ে ফেলেছি। অনুবাদ দারুণ হচ্ছে। বাংলায় এই বইয়ের একটি অনুবাদ থাকা খুব জরুরী।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------
“We sit in the mud, my friend, and reach for the stars.”

অলীক জানালা _________

নিটোল's picture

অনেক ধন্যবাদ, রেজা ভাই। হাসি

_________________
[খোমাখাতা]

এক লহমা's picture

ভাল লাগছে। চলুক।

(উইনিকর্ন ---> ইউনিকর্ন)

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

নিটোল's picture

অনেক ধন্যবাদ। হাসি

_________________
[খোমাখাতা]

শাহেনশাহ সিমন's picture

ভালো লাগছে; চলুক। ইবুকের সাজেশনটা বিবেচনায় রাখবেন বলে আশা রাখি

_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

নিটোল's picture

অবশ্যই মাথায় থাকবে সিমন ভাই।

_________________
[খোমাখাতা]

সাক্ষী সত্যানন্দ's picture

চলুক

হুমম... মিথ-অনুভূতির জন্ম হল কিভাবে সেটাও আসবে কি? পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

অতিথি লেখক's picture

আসবে, ৬ নম্বর অধ্যায়ে হাসি

- উদ্দেশ্যহীন

সাক্ষী সত্যানন্দ's picture

পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

মন মাঝি's picture

এর জবাব তো এই পর্বেই আছে --

Quote:
৭০,০০০ বছর পূর্ব থেকে ৩০,০০০ বছর পূর্বের সময়কালে, নতুন ধরনের চিন্তা-পদ্ধতি ও যোগাযোগ দক্ষতার আবির্ভাবের ফলে, বৌদ্ধিক/চৈতন্য বিপ্লব সংগঠিত হয়। কিন্তু কেন ঘটেছিল এই বিপ্লব? আমরা নিশ্চিতভাবে জানি না। তবে সবচেয়ে প্রচলিত মত হলো এই যে, কোনো এক দৈব জেনেটিক মিউটেশনের কারণে সেপিয়েন্সের মস্তিষ্কের আভ্যন্তরীণ ব্যবস্থার পরিবর্তন ঘটে; যার ফলে তারা অভিনব পথে চিন্তাভাবনা করা শুরু করে....

অর্থাৎ উত্তর আমরা নিশ্চিতভাবে জানি না। শুধু একটা অস্পষ্ট অনুমান করতে পারি এইরকম - "এক দৈব জেনেটিক মিউটেশনের কারণে সেপিয়েন্সের মস্তিষ্কের আভ্যন্তরীণ ব্যবস্থার পরিবর্তন ঘটে"। এইটুকুই। তাই তিনি আরও বলেন -

Quote:
এ ব্যাপারে বলা যায় যে, এটি সম্পূর্ণই একটি দৈবঘটনা। তবে এই মিউটেশনের পেছনকার কারণ জানার চেয়ে এর ফলাফল বুঝে ওঠাই অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ

আমার কাছেও ফলাফলটাই আসলে বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়। তাই এই অংশগুলি আরও বেশি জরুরি --

Quote:
বরং, এটি হলো সেই বিশেষ ক্ষমতা যা দিয়ে আমরা এমন সব বিষয় বর্ণনা করতে পারি যা আদতে বাস্তবে নেই। যতদূর আমরা জানি, কেবল সেপিয়েন্সই এমন সব বিষয় বা সত্তা সম্পর্কে কথাবার্তা বলতে পারে যা তারা কখনোই দেখে নি, ছোঁয় নি বা ঘ্রাণ নেয় নি

কিংবদন্তী, মিথ, দেবতা এবং ধর্ম সর্বপ্রথম দেখা দেয় চৈতন্য/বৌদ্ধিক বিপ্লবের পর। এর আগেকার সময়ে, অনেক প্রাণী এবং মনুষ্য প্রজাতির সদস্যরা বলতে পারত, ‘সাবধান! সিংহ!’ তবে চৈতন্য বিপ্লবের কারণে, হোমো সেপিয়েন্স অর্জন করে সেই সামর্থ্য যা দিয়ে তারা বলতে পারে, ‘সিংহ হলো আমাদের গোত্রের রক্ষাকারী আত্মা’। এই বানানো গল্প বলতে পারার সামর্থ্যই হলো সেপিয়েন্সের ভাষার সবচেয়ে অনন্য বৈশিষ্ট্য

মোদ্দা কথায় এই লেখা (বইটা না, এই অনুবাদই শুধু পড়েছি) আর হারারির কিছু সাক্ষাৎকার আর লেকচার শুনে আমার মনে হয়েছে তাঁর মতে মিথানুভূতি এবং অন্যান্য কিছু সমধর্মী অনুভূতির উৎস বা কারন যেটা, মানুষের বৌদ্ধিক ও বিবর্তনীয় শ্রেষ্ঠত্বের উৎস ও কারনও সেটাই- দুটোই একই জায়গায়, একই উৎসজাত, একই ইউনিক ক্ষমতার ফসল, যা না থাকলে দুটার কোনোটাই সম্ভব হতো না - আর তা হলো সম্পূর্ণ কাল্পনিক, অবাস্তব, অস্তিত্ত্বহীণ বিষয় কল্পনা ও বিশ্বাস করার ক্ষমতা এবং সেই কল্পনা ও বিশ্বাস লার্জ-স্কেলে স্বজাতীয়দের মধ্যে কমিউনিকেট করার মাধ্যমে তারই ভিত্তিতে - অর্থাৎ কাল্পনিক, অবাস্তব, অস্তিত্ত্বহীণ বিষয়ের ভিত্তিতে নিজেদের মধ্যে কোঅপারেট করার ক্ষমতা। অন্যভাবে বললে, মিথানুভূতি আর মিথবিরোধীনুভূতি আসলে একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। একটা না থাকলে আরেকটা সম্ভবই হতো না। এজন্যেই, হারারির মতে মানুষের বিবর্তনীয় শ্রেষ্ঠত্বের মূলে আরেকটি জিনিষ আছে - কগনিটিভ ডিসোনেন্স - অর্থাৎ একইসাথে পরস্পরবিরোধী জিনিসে বিশ্বাস করার ক্ষমতা!

****************************************

নিটোল's picture

চলুক

_________________
[খোমাখাতা]

সাক্ষী সত্যানন্দ's picture

হু, সেটা তো কল্পনাশক্তির উৎস হল, আমি সে কাল্পনিককে ঘিরে মারমার কাটকাটের বিবর্তনীয় উৎসের আরো বিস্তারিত বিবরণের অপেক্ষায় আছি, দেখা যাক পরের পর্বগুলোয় আসবে নিশ্চয়।

কস্কি মমিন! তাহলে, কগনিটিভ ডিসোনেন্স = আশরাফুল মাখলুকাত! চিন্তিত

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

মন মাঝি's picture

কগনিটিভ ডিসোনেন্স = বাস্তবতা + কল্পনা বলতে পারি হয়তো এক্ষেত্রে। স্কুলে থাকতে বিজ্ঞান আশীর্বাদ না অভিশাপ জাতীয় রচনা লিখেছেন? কগনিটিভ ডিসোনেন্সটাও মনে হচ্ছে এক্ষেত্রে অনেকটা সেইরকম! চিন্তিত

****************************************

নিটোল's picture

সামনের পর্বগুলোয় চোখ রাখুন। হাসি

_________________
[খোমাখাতা]

অতিথি লেখক's picture

কেমন অদ্ভুত লাগে এই রকম লেখাগুলো পড়তে। কী ছিলাম, কী হয়েছি, কী হবো!

চালিয়ে যান হাসি চলুক

- উদ্দেশ্যহীন

নিটোল's picture

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- হাসি

_________________
[খোমাখাতা]

মন মাঝি's picture

এই অনুবাদটার সাথে হারারির এই বিস্তারিত ব্যাখ্যামূলক লেকচারটা খুব মানানসই হবে মনে হয় --

****************************************

নিটোল's picture

ধন্যবাদ মনমাঝি। হাসি

_________________
[খোমাখাতা]

নজমুল আলবাব's picture

শেষ।

নতুন পর্ব আসুক।

নিটোল's picture

হাসি
আসবে, একটু সময় দেন। হাসি

_________________
[খোমাখাতা]

তানভীর নাহিদ's picture

আপনার দেয়া উইকিপিডিয়ার “স্তাদেলের সিংহ-মানব” লিংকে বলা হয়েছে মূর্তিটি “ ivory sculpture” অর্থাৎ মূতিটি হাতি অথবা ম্যামোথ, অথবা অন্য কোন প্রানীর দাতঁ খোদাই করে বানানো।কিন্তু আপনি ছবির ক্যাপশনে লিখেছেন “প্রস্তরমূর্তি” কোনটি ঠিক?

হাসিব's picture

আমি এটা পয়েন্ট আউট করবো ভাবছিলাম। আপনি বলে দিলেন। সঠিক তথ‍্য হলো এটা হাতির (ম‍্যামথ) দাঁত দিয়ে বানানো। মুর্তি (বা পুতুল) যেখান রাখা আছে সেখানকার একটা লিংক সূত্র হিসেবে নিতে পারেন।

নিটোল's picture

তানভীর নাহিদ, হ্যাঁ, আপনার কথাই সঠিক। আমারই আসলে লিখতে গিয়ে ভুল হয়েছে গেছে। ব্যাপারটা দেখিয়ে দেয়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা।

আমি মূল লেখায় শব্দটি বদলে দিলাম।

_________________
[খোমাখাতা]

রানা মেহের's picture

Quote:
এই প্রশ্নের সবচেয়ে প্রচলিত জবাব হল- আমাদের ভাষা বিস্ময়করভাবে নমনীয়।

এখানে নমনীয় কি ঠিক হলো? বিভিন্নভাবে ব্যবহার্য বা এরকম কিছু হবেনা?

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

নিটোল's picture

আপু, লেখক এক্ষেত্রে supple শব্দটি ব্যবহার করেছেন। আমি মূলের কাছাকাছি থাকতে চেয়েছি। আর এই লাইনটা তো পরের লাইনে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।

Quote:
আমরা সীমিত সংখ্যক ধ্বনি ও প্রতীক ব্যবহার করে অসীম সংখ্যক বাক্য তৈরি করতে পারি, যার প্রত্যেকটির থাকবে আলাদা আলাদা অর্থ।

_________________
[খোমাখাতা]

সো's picture

হাততালি
দারুন! চলুক।

sankudas's picture

অপেক্ষায় দিন যায় । অধ্যায়-২ এর আরও ২টি পর্ব খুঁজে পাচ্ছিনা । যদি অনুগ্রহ ক'রে পোস্ট বা ইনবক্স ক'রেন ভালো হয় । এত সুন্দর লেখাটি মাঝপথে মনঃকষ্ট নিয়ে থমকে আছি ভাই...। অনুরোধ রাখলে কৃতজ্ঞ থাকবো । ধন্যবাদ ।

Post new comment

The content of this field is kept private and will not be shown publicly.