বাংলা ভাষায় বাংলাদেশের পাখির ফিল্ডগাইড

তারেক অণু's picture
Submitted by tareqanu on Thu, 02/07/2015 - 6:28pm
Categories:

Print

দশ হাজারের উপর প্রজাতির পাখি আছে আমাদের নীল গ্রহে, পালকওয়ালা এই বাসিন্দাদের প্রায় সাড়ে ছয়শ প্রজাতি দেখা যায় এই একরত্তি বাংলাদেশেও। সারা পৃথিবীতেই পাখিপ্রেমী, বা পাখি নিয়ে উৎসাহীদের কাছে, যারা প্রকৃতিতে যেয়ে পাখি দেখতে চায়, অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জিনিস হচ্ছে পাখির ফিল্ডগাইড। ফিল্ডগাইড নাম থেকেই বুঝতে পারছেন যে আসলে মাঠে যে বইটি আপনাকে গাইড করবে। সাধারণত ফিল্ডগাইডে একটি নিখুঁত স্কেচ থাকে (আলোকচিত্রও থাকতে পারে), সেই সাথে খুব অল্প কথায়, অসম্পূর্ণ বাক্যে পাখিটির বর্ণনা। অনেকটা টেলিগ্রাফিক ভাষায়, যেমন- নীলচে মাথায় লালা ছোপ, কালো গলা, সাদা পেট, লম্বা লেজ। এর ফলে পর্যবেক্ষক দ্রুত পাখিটি চিনতে সক্ষম হবেন। আরেকটি কারণে এই সংক্ষিপ্ত ভাষা ব্যবহার করা হয় হয়, তা হচ্ছে বইটির কলেবর ছোট করার জন্য, যাতে তা সহজেই সাথে নিয়ে ঘোরা সম্ভব হয়।

কুড়ি বছর আগে বাংলায় পাখির ফিল্ডগাইড লেখার কাজে হাত দেন ইনাম আল হক। লেখা শেষ হলেও ৫০০ পাখির চিত্রকর্ম কত দিনে জোগাড় করতে পারবেন এই নিয়ে চিন্তার অন্ত ছিল না, একাধিকবার কয়েকজন চিত্রশিল্পীর সাথে যোগাযোগ করে চারুকলার কয়েকজন ছাত্রের সাথে কথাও বলেন। কিন্তু রিয়েল লাইফ ৫০০ পাখির বাস্তব ছবি আঁকার লোক তখন খুঁজে পাওয়া যায় নি। আসলে সারা বিশ্বেই যারা পাখি ডিটেইল ছবি আঁকে, তারা সাধারণত আর কিছু করার সময় পায় না, কারণ নিখুঁত পাখির ছবি আঁকা যেমন সময়সাপেক্ষ, তেমনই তা নিবিড় মনোযোগের দাবীদার। পাশ্চাত্য থেকে আবস্ট্রাক্ট আর্ট আসলেও এখনও সেখানে ভুরি ভুরি শিল্পী মিলবে যারা রিয়েলিস্টিক ঘোড়া, কুকুর, মাছ, সরীসৃপ, পাখির ছবি আঁকতে সক্ষম, কিন্তু আমাদের অঞ্চলে এই দৈন্যতা প্রকট।

ফিল্ডগাইডের স্কেচ নিয়ে চিন্তাভাবনা যখন নানা সঙ্কটের সম্মুখীন তখন নানা যোগাযোগের পরে বিখ্যাত ব্রিটিশ প্রকাশক ‘ক্রিস্টেফার হোম্স’ অমূল্য ইল্যুস্ট্রেশনগুলো ব্যবহারের জন্য লিখিত অনুমতি দেন। এরপর যাবতীয় তথ্যসহ কম্পিউটারের হার্ড ডিস্ক ক্রাশ করে ! এভাবে বারবার পিছাতে থাকে মূল্যবান বইটির প্রকাশ। এখানে ২০০৪ সালে হাতে লেখা প্রথম দিকের কয়েকটি পাখির বর্ণনা দিলাম সেই অধ্যবসায়ের কথা স্মরণ করে-

IMG_8806

বাংলাদেশে গত দেড় বছর অবস্থানের সময় ইনাম ভাই গুরুত্বপূর্ণ বইটির সহকারী লেখক হবার জন্য আমন্ত্রণ জানান, যদিও ৯৯%এর বেশি কাজ ওনার একা হাতে করাই ছিল, তবুও আমার মত অর্বাচীন পাখিপ্রেমী এবং দুর্বল লেখককে উৎসাহ দেবার জন্যই হয়ত এই বিরল সন্মানের ভাগ দেন সোৎসাহে। অবশেষে এই বছর প্রকাশিত হয়েছে বইটি। পাখিজগতের গুরুর সাথে সহকারী লেখক হিসেবে যোগ দেবার সুযোগ পেয়ে আমি যারপরনাই আনন্দিত।

বইটি প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ বার্ড ক্লাব।

প্রচ্ছদ - শক্তি নোমান।
বানান সংশোধনী- আব্দুল গাফফার রনি।
গ্রাফিক্স ডিজাইনে - সুজন জাহাঙ্গীর, ছায়াবীথি প্রকাশন।

সম্পূর্ণ চার কালারে ছাপা ঝকঝকে বইটির দাম প্রোডাকশন অনুযায়ী অনেক কম রাখা হয়েছে যেন ছাত্ররাও তা সহজেই কিনতে পারে। ভিতরে ৫০০ টাকা লেখা থাকলেও বাংলাদেশ বার্ড ক্লাব থেকে কিনলে মাত্র ৩০০টাকা, এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে ক্লাবের ফেসবুক পেজে ঢু মারতে পারেন। আর পরিবেশনায় থাকছে ছায়াবীথি প্রকাশন, দেশের যেখান থেকেই সংগ্রহ করতে চান তাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারবেন ০১৭২ ৩৮০ ৭৫৩৯ অথবা ০১৭৩ ৭৭২ ৭১৭২ নাম্বারে, মূল্য ঐ একই ৩০০ টাকা, সাথে পোস্টের খরচ শুধু।

এটিই বাংলা ভাষায় লেখা প্রথম পাখির ফিল্ডগাইড, ভিতরে ৫০৬ প্রজাতির পাখির নাম বাংলা, ইংরেজি এবং ল্যাটিনে দেওয়া আছে। বইটি সম্পর্কে ধারণা দিতে ২টি পাতা দেওয়া হল, এবং লেখকের কথা সম্পূর্ণটিই তুলে দিলাম।

page 16-17

page 100-101

প্রতিটি পাখির সংক্ষিপ্ত কিন্তু কার্যকরী বর্ণনা যে দেওয়া হয়েছে তা দেখতেই পাচ্ছেন।তবে সুবিধার জন্য প্রথমেই শুরু করতে পারেন একেবারে চেনা পাখি যেমন দোয়েল, পাতি-কাক, চড়ুই দিয়ে!

আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম পাখি কিছুটা হলেও আমাদের চেয়ে বেশি চিনবে, ডানাওয়ালা বন্ধুদের প্রতি আরও বেশি ভালবাসা বুকে নিয়ে বড় হবে এই আশায় বুকে পুষে রাখি। পাখিরা সব ভাল থাক, পৃথিবীটা জুড়ে থাক। যদিও বইটিতে ব্যবহৃত মানচিত্রে দেখতে পাচ্ছেন আসলে কতটুকু স্থান আছে বাংলাদেশে যেখানে পাখিরা টিকে থাকতে পারে।

MAP

প্রকাশক ও লেখকের নিবেদন

Vumika

দুরবিন কিংবা টেলিস্কোপ দিয়ে অথবা খালি চোখে দেখে প্রকৃতিতে পাখি চেনার চেষ্টা করা একটি জনপ্রিয় শখ। নানা ধরনের গবেষণা-কাজেও এর প্রয়োজন হয়। হাতে একটি ফিল্ড-গাইড থাকলে পাখি চেনার কাজটি সহজ তো হয়ই, অনেক বেশি উপভোগ্যও হয়। এ কাজে নেমে অনেকেই এদেশে বাংলা ভাষায় লেখা ফিল্ড-গাইডের অভাব বোধ করেছেন। এই অভাব পূরণের জন্যই আমরা এ বইটি প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছি।

বইটি লেখার জন্য আমরা উপমহাদেশের পাখি নিয়ে প্রকাশিত বিভিন্ন বই ও বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধের সাহায্য নিয়েছি। দুই দশক ধরে বাংলাদেশে পাখি দেখা ও পাখিশুমারি করার অভিজ্ঞতাও এই ক্ষেত্রে কাজে এসেছে। পাখি ধরে মাপজোখ নিয়ে এর পায়ে শনাক্তকারী আংটি দেওয়ার যে প্রক্রিয়া এদেশে এখন চলছে তার মাধ্যমে বহু প্রজাতির বিরল পাখি হাতে নিয়ে দেখার সুযোগ হয়েছে আমাদের। আশা করি পাখির বর্ণনায় আমাদের সে অভিজ্ঞতার প্রতিফলন থাকবে।

বাংলাদেশে সচরাচর দেখা মেলে এমন ৫০৬ প্রজাতির পাখি এখানে বর্ণনা করা হয়েছে। আমাদের দেশের বন্যপ্রাণীর তালিকায় আরো দেড় শত প্রজাতির অনিয়মিত আগন্তুক ও অতি-বিরল পাখি আছে। দীর্ঘ অধ্যবসায়ের পর অথবা ভাগ্যক্রমে অমন কয়েকটি পাখির দেখা জীবনে মিললেও মিলতে পারে। সে সব পাখির বর্ণনা এ ফিল্ডগাইডে দেয়া হয়নি। দেখা পাওয়ার সম্ভাবনা অতি-ক্ষীণ এমন পাখির তথ্য দিয়ে বই মোটা করলে খুব কম লোকই উপকৃত হতেন। ফিল্ডগাইডটি সহজে বহনযোগ্য ও ব্যবহার্য রাখাও আমাদের অন্যতম লক্ষ্য।

পাখির বৈজ্ঞানিক ও ইংরেজি নামের জন্য আমরা ‘বার্ডলাইফ ইন্টারন্যাশনাল’ প্রকাশিত সর্বাধুনিক তালিকাটি অনুসরণ করেছি। পাখির বাংলা নামের জন্য ‘বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ’ অনুসরণ করা হয়েছে। বাংলাদেশের পাখির প্রজাতি-পরিচয়ে অধুনা কিছু পরিবর্তন হওয়ায় দু-এক ক্ষেত্রে নতুন নাম ব্যবহার করতে হয়েছে। সম্প্রতি জানা গেছে যে বাংলাদেশ, ভারত ও শ্রীলঙ্কার পম্পাডুর-হরিয়াল আসলে তিনটি পৃথক প্রজাতি এবং ‘পম্পাডুর-হরিয়াল’ নামটি শ্রীলঙ্কার প্রজাতিকে দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশের পম্পাডুর-হরিয়ালের তাই আমরা নতুন নাম দিলাম।

পাখির আবাসের ধারণাটি মানচিত্রে না দিয়ে এখানে লিখে দেয়া হয়েছে। প্রতিটি পাখির বর্ণনার শেষে তার আবাসের তালিকা রয়েছে। আমাদের ব্যবহৃত প্রধান বারোটি আবাসের নাম হাওড়, বিল, সুন্দরবন, পাহাড়ি চিরসবুজ-বন, পাতাঝরা-বন, উপকূল, নদীতীর, বাগান, চা-বাগান, ফসলের-জমি, খোলা-প্রান্তর এবং লোকালয়। সবুজ-বেষ্টনী নামে খ্যাত উপকূলের প্যারাবনকে ‘উপকূল’ এবং পদ্মা-যমুনার বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলকে ‘নদীতীর’ হিসেবে ধরা হয়েছে। ক্ষেত্র-বিশেষে কাপ্তাই ও মুহুরি বাঁধে সৃষ্ট কৃত্রিম জলাধারের পৃথক উল্লেখ আছে।

পাখির বর্ণনা সংক্ষিপ্ত রাখার জন্য ব্যকরণ-বিবর্জিত খ--বাক্যে তা লেখা হয়েছে। তবে প্রচলিত ফিল্ডগাইডের দূর্বোধ্য ‘টেলিগ্রফিক’ ভাষা এবং অপ্রচলিত শব্দ অত্যন্ত কম ব্যবহার করা হয়েছে। অপ্রচলিত ও বিশেষ শব্দের ব্যাখ্যা ... পৃষ্ঠায় রয়েছে। প্রচলিত শব্দ ‘পাখির ঠোঁট’ না লিখে অপেক্ষাকৃত অপ্রচলিত ‘চঞ্চু’ ব্যবহার করা হলো। কারণ, ঠোঁট ও চঞ্চুর মধ্যে যে পার্থক্য তা উপেক্ষা করার মতো নয়। পাখির চঞ্চু মোটেই স্তন্যপায়ীর ঠোঁটের মতো রক্তমাংসের অঙ্গ নয়। পাখির চঞ্চুর সাথে স্তন্যপায়ীর নখ বা নখরেরই মিল বেশি। নখের মতোই চঞ্চুর শেষাংশ কাটলে রক্ত ঝরে না।

পাখির স্ত্রী-পুরুষে ও প্রাপ্তবয়স্ক-অপ্রাপ্তবয়স্কে যে সব পার্থক্য থাকে এবং প্রজননকালে ও বিভিন্ন বর্ণ-পর্বে যে সব পরিবর্তন আসে তার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা এ ফিল্ডগাইডে দেয়া হয়েছে। একটি পাখির যে সব অঙ্গের আকার কিংবা রং দেখে অন্য পাখি থেকে আলাদা করা হয় তার বর্ণনা এখানে মোটা অক্ষরে লেখা হলো। আশা করি, বর্ণনা পড়ার পাশাপাশি অভিজ্ঞ শিল্পীদের ইলাস্ট্রেশন দেখে পাখি চেনার পথে পাঠক বহুদূর এগোতে পারবেন। পাখির অমূল্য ইলাস্ট্রেশনগুলো এ বইটিতে ব্যবহারের অনুমোদন দিয়ে বিখ্যাত প্রকাশক ‘ক্রিস্টেফার হোম্স’ আমাদেরকে কৃতজ্ঞতাপাশে আবদ্ধ করেছেন।

বর্ণনার নিচে যেখানেই কিছুটা ফাঁকা যায়গা পাওয়া গেছে সেখানে আমরা পাখির ছোট ছোট আলোকচিত্র জুড়ে দিয়েছি। পাখির বর্ণনা পড়া ও ইলাস্ট্রেশন দেখার পর পাঠকের জন্য আলোকচিত্রের পাখি শনাক্ত করার খেলায় মেতে ওঠার একটা সুযোগ এখানে রইল।

ইনাম আল হক
তারেক অণু

Print


Comments

এক লহমা's picture

অভিনন্দন অণু-দাদা!
ধন্যবাদ ইনাম আল হক-কে। ধন্যবাদ এঁদের সকলকেওঃ
প্রকাশক - বাংলাদেশ বার্ড ক্লাব।
প্রচ্ছদ - শক্তি নোমান।
বানান সংশোধনী- আব্দুল গাফফার রনি।
গ্রাফিক্স ডিজাইনে - সুজন জাহাঙ্গীর, ছায়াবীথি প্রকাশন।

বইটা পেলে ভাল লাগত। থাকি আম্রিকায়। এখান থেকেই পাওয়ার কোন উপায় ঠিক হয়েছে কি?

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

তারেক অণু's picture

ইচ্ছে আছে পাঠাবার। দেখা যাক-

আব্দুল্লাহ এ.এম.'s picture

বাংলাদেশ বার্ড ক্লাব থেকে পোষ্টাল মারফত সংগ্রহ করলে তাতে আপনার এবং ইনাম আল হক এর শুভেচ্ছা স্বাক্ষর পাওয়ার সুযোগ আছে কি?

একটি অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্নঃ ইনাম আল হক একবার একটি টিভি সাক্ষাতকারে বলেছিলেন- বাংলাদেশে বছরে প্রায় পাঁচ কোটি অতিথি পাখির আগমন ঘটে, ঢাকা শহরেই প্রায় পাঁচ লক্ষ। একটু কনফার্ম করতে পারেন, সংখ্যাগুলো ঠিক শুনেছি কি না?

তারেক অণু's picture

ঐটা অবশ্য একটু মুস্কিল, ঐ নাম্বারে বলে দেখতে পারেন।

২০ কোটি মানুষের দেশে ৫ কোটি পাখি খুবই ক্ষুদ্র একটা নাম্বার। টুনটুনি, চড়ুইয়ের মত ছোট পাখিদেরও গোনায় ধরতে ভুলেন না। প্রতিটি বৃক্ষে একাধিক পাখি থাকতে পারে, তাহলে কত বৃক্ষ আছে দেশে? এইভাবে তথ্য নিয়ে চিন্তা করলেই দেখবেন ৫ কোটি পাখি এমন কিছুই না, শুধু সুন্দরবন বাঁচাতেই এই সংখ্যার পাখি থাকা উচিত।

আব্দুল্লাহ এ.এম.'s picture

না, সংখ্যাটা বেশী মনে হয় নি, উনি সংখ্যাটা কত বলেছিলেন সেইটা কনফার্ম করে নিতে চাইছিলাম।

তারেক অণু's picture

হাসি ঠিকই মনে রেখেছেন তাহলে

সাক্ষী সত্যানন্দ's picture

চলুক

বই সংস্লিষ্ট সকলকে অভিবাদন। প্রথম সুযোগেই সংগ্রহ করব।

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

তারেক অণু's picture

এবং পাখি চিনবেন, ও চেনাবেন

স্পর্শ's picture

অভিনন্দন! আপনাদের দুজনকেই।

মাত্র ৩০০ টাকায় এমন অমূল্য বই! খুব লোভ হচ্ছে...


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

তারেক অণু's picture

ধন্যবাদ, হ্যাঁ চেষ্টা করেছি দাম যত পারি কম রাখতে, সাধারণত এমন বইয়ের দাম ১০০০ প্লাস হয়, বাহিরের ছাপা হলে আরও বেশি

অতিথি লেখক's picture

মাত্র তিনশ টাকায় এমন অমূল্য খনি?
এর আগে কেনা 'পাখিদেরও আছে নাকি মন' পড়েছি রোমাঞ্চ উপন্যাসের আনন্দ নিয়ে, যেখানে রম্য ও বিয়োগ সুর একই সাথে বেজে উঠে ক্ষনিকে ক্ষনিকে। অবধারিতভাবেই আমার শ্রেষ্ঠ বই-বিনিয়োগগুলির একটি। বইটি ক্ষনিক পড়ি, ক্ষনিক তাকিয়ে দেখি, ক্ষনিক নেই এর সুঘ্রান!
অনেকেই পাখি, নিসর্গ, প্রকৃতি নিয়ে লেখেন, কিন্তু ইনাম আল হকের 'পাখিদেরও আছে নাকি মন' এর এক একটি অধ্যায় পড়েছি, আর বুকের মধ্যে তীব্র হাহাকার অনুভব করেছি! কি পরিমাণ ভালবাসা থাকলে এমন স্বর্গীয় ভাষা তৈরী করা যায়?
।।।।।।।।।।
অনিত্র

তারেক অণু's picture

'পাখিদেরও আছে নাকি মন' একটা সত্যিকারের মাস্টারপিস।

সুহান রিজওয়ান's picture

অধ্যবসায় দেখে সেলাম দিয়ে দারোয়ান হয়ে গেলাম হাসি

আদি অকৃত্রিম বইয়ের দোকানে দিয়ে রাখলে আমার মনে হয় বই সংগ্রহ করাটা অনেকের জন্যেই সহজ হতো। ফোনের ঝামেলায় যেতে চাইবে না অনেকেই।

তারেক অণু's picture

দেয়া আছে তো নানা দোকানে, বিশেষ করে আজিজে

ইশতিয়াক রউফ's picture

হাতে পাওয়ার অপেক্ষায় রইলাম। দারুণ কাজ!

তারেক অণু's picture

আপনার পিচ্চির জন্য অনেক বেশি কাজে দেবে আশা করি

ফাহমিদুল হান্নান রূপক 's picture

অসাধারণ। এমন একটা বইই মনে মনে খুঁজছিলাম। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। কেনা হলেই মেসেজ দিয়ে জানাব।

ফাহমিদুল হান্নান রূপক।

তারেক অণু's picture
সাক্ষী সত্যানন্দ's picture

কিনে ফেলেছি দেঁতো হাসি

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

তারেক অণু's picture

পাখি চিনতে বেরিয়ে যান বনে না হয় বাগানে!

কল্যাণ's picture

বাহহ দারুণতো হাততালি

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

তারেক অণু's picture

কুতি গো?

কল্যাণ's picture

আর কুতি, বুঝে ল্যাও না (টুট-টুট) খাইছে

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

আয়নামতি's picture

দারুণ কাজ হে! অভিনন্দন!!

তারেক অণু's picture

শুভেচ্ছা--

সুলতানা সাদিয়া's picture

অভিনন্দন!

-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু

আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে

তারেক অণু's picture
মাসুদ সজীব's picture

সোমবার আজিজ থেকে সংগ্রহ করে নিবো। শুভকামনা হাসি

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

তারেক অণু's picture

জানিয়েন কেমন লাগল-

ষষ্ঠ পাণ্ডব's picture

পাখির বাংলা নামকরণ করা নিয়ে একটু খটকা।

Heron = কোথাও বক, কোথাও বগা
Egret = বগা (এরা আসলে Heron)
Bittern = বগলা (এরা আসলে Heron)
Stork = মানিকজোড়
Openbill = শামখোল (নাকি শামুকখোল? এরা আসলে Stork)
Adjutant = মদনটাক (এরা আসলে Stork)
Crane = সারস

সারস, মদনটাক, শামুকখোল, মানিকজোড় নামগুলো প্রচলিত ও ব্যবহৃত; কিন্তু বক-বগা-বগলার শ্রেণীবিভাগটা চাপিয়ে দেয়া লাগছে। এজন্য Heron-কে কোথাও বক, কোথাও বগা বলার মতো ঘটনা ঘটেছে।

এর বাইরে কিছু বাংলা নাম আছে যেগুলো আগে শুনিনি। যেমন, Pelican = গগনবেড়। এই নাম কোথা থেকে আসলো? পাখির নতুন নাম দেয়ার চেয়ে প্রচলিত নাম খুঁজে বের করলে ভালো হয়। আর পর্যবেক্ষক, গবেষক, সংরক্ষক আর দর্শকদের মধ্যে নতুন নামের ব্যবহার না থাকলে সে নাম হারিয়ে যাবে; অথবা অন্য কেউ অন্য কোন নাম দেবে। এই ব্যাপারে বিধি থাকা দরকার।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

তারেক অণু's picture

অবশ্যই বিধি থাকা দরকার! বাংলা নাম কিভাবে বাংলাদেশ বার্ড ক্লাব দিয়েছে এই নিয়ে দীর্ঘ তালিকাসহ পোস্ট দিয়েছি কিন্তু সচলে, বিশেষ করে বক, বগা, বগলার নাম নিয়েও আছে। বিটার্ণ, ইগ্রেট, হেরন সব আলাদা আলাদা পরিবার, একটার থেকে আরেকটা অনেক আলাদা যদিও দেখে এক গোত্রের বলে হয়ত এক বলে মনে হয়। Openbill, Adjutant, Stork এদের আলাদা আলাদা নাম প্রথমে ইংরেজিতেই দেওয়া হয়েছে, সম্ভবত ডি এন এ প্রিক্ষার পর প্রাপ্ত ফলাফলে, তারপর বাংলাতেই।

এই যে লিঙ্কটা দাদা-- http://www.sachalayatan.com/tareqanu/49575

ষষ্ঠ পাণ্ডব's picture

আমার মন্তব্যটি আসলে তোমার ঐ পোস্টের প্রেক্ষিতেই করা। প্রাসঙ্গিক বিবেচনায় আলোচনাটি এখানে করেছি।

Quote:
খুব বেশী সমস্যা হয়ে ছিল বকের নাম দিতে যেয়ে, বাংলাদেশে ইগ্রেট, হেরণ এবং বিটার্ণ এই তিন পরিবারের বেশ কয়েক প্রজাতির বক পাওয়া যায়। ইগ্রেট বা সাদা বকদের পরিবারের নাম দেওয়া হল বগা, রঙিন বক বা হেরণদের বক, কিন্তু সমস্যা বাঁধল বিটার্ণদের নিয়ে! তাদের জন্য অনেক খুঁজেও এমন কোন নাম পাওয়া যাচ্ছিল না যা দিয়ে বকজাতীয় পাখিও বোঝা যাবে আবার অন্য বকদের চেয়ে আলাদা সেইটাও বোঝা যাবে! শেষে এক পাখিপর্যবেক্ষণ ট্রিপের সময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাণীবিদ্যা বিভাগের প্রধান ডঃ আব্দুল মান্নান বললেন তাদের সময়ে বগলা নামের এক সিগারেট খুবই জনপ্রিয় ছিল, সেইখান থেকে আসল বগলা নামটি!

- এই পদ্ধতিটি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি হলো? তাছাড়া স্থানীয়ভাবে বগলা বলা হয়ে থাকে কিংস্টর্ককে।

এদের পরিবারটির বৈজ্ঞানিক নাম Ardeidae, সাধারণ ইংলিশ নাম Heron। এই পরিবারের অন্তর্ভূক্ত গণগুলোর মধ্যে Heron, Egret, Bittern, Zeltornis, Proardea, Pikaihao, Matuku অন্যতম। এখানে শ্রেণীবিন্যাসের বাংলা পরিভাষাটি উল্লেখ করা প্রয়োজনীয় মনে করছি।

Kingdom:: রাজ্য
Phylum:: বর্গ
Class: শ্রেণী
Order: গোত্র
Family: পরিবার
Genus: গণ
Species: প্রজাতি


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

মরুদ্যান's picture

হাততালি

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

মরুদ্যান's picture

গুরু গুরু দারুণ কাজ অণু ভাই

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

তারেক অণু's picture

কিংস্টর্কের ইংরেজি নামও এখন পাল্টে রাখা হয়েছে কিন্তু।

আর পরিবারের নামে হিসেবে বক, বগা, বগলা খুব ঠিক আছে, যদি সেটা দিয়ে আলাদা আলাদা বোঝা যায়। প্রতিটি বৈজ্ঞানিক নামের অথরিটি আছে, কারণ সেগুলোর একজন অথর আছেন, কিন্তু ইংরেজি, বা বাংলা বা স্প্যানিশ নামের কিন্তু নেই। যদি ভবিষ্যতে আরও সহজ কিন্তু বোধগম্য নাম পাওয়া যায় যেটার টিকে থাকার সম্ভাবনা বেশি তাহলে সেটাই চালু হয়ে যাবে

নীড় সন্ধানী's picture

বইটা কিনতে হবে। এরকম পরিশ্রমসাধ্য বই প্রকাশের জন্য অনেক ধন্যবাদ দিয়েও শেষ করা যায় না। আমি নিজে অনেক পাখির নাম জানি না। ইয়ে, মানে...

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

তারেক অণু's picture

এখন জেনে যাবেন এবং চিনবেন, সমস্যা নাই

হিমু's picture

পাখিদের বাংলা নামের পাশাপাশি "ফিল্ডগাইড"-এরও একটা বাংলা করা গেলে ভালো হতো।

সো's picture

চলুক

তারেক অণু's picture

হ্যাঁ, যথার্থ বাংলা খুজতেছি, আইডিয়া আসলে জানায়েন

nion's picture

বইটা দরকার।বাইরের দোকানে কিনলে কত নিতে পারে?
আর আমার মনে হয় ষষ্ঠ পান্ডব যা বলেছেন যে পাখির বাংলা নাম।নিয়ে খটকা জেগেছে।এখানে আমরা একটা কাজ করতে পারি।একটা মেইল বা ফেবু আইডি বা একটা গুগল ডক থাকতে পারে যেখানে আমরা আমাদের পরিচিত লোকাল নাম এলাকার নাম উল্লেখ সহ বলব।

সাক্ষী সত্যানন্দ's picture

৪০০

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

Post new comment

The content of this field is kept private and will not be shown publicly.