দেজাভু

চরম উদাস's picture
Submitted by udash on Tue, 03/03/2015 - 4:37am
Categories:

মাঝেমাঝে মনে হয় এই জীবনে আর নতুন করে লেখালেখি করার দরকার নেই। যা যা লিখেছি গত দুই তিন বছরে সেগুলো সময়ে সময়ে একবার করে কপি পেস্ট দিয়েই বাকি জীবন কাটিয়ে দেয়া যাবে। অদ্ভুত এক দেশ আমাদের। এখানে একই ঘটনা বারেবারে হয়, ঘটনার পর একই নাটকও বারেবারে হয়। নাটকের কুশীলবের একটু অদলবদল হয় কিন্তু বাকি সবই একইরকম। উদাহরণ দিয়ে বলি। প্রথমে দুই বছর আগে রাজীবের মৃত্যুর পরে লেখা থেকে একটা অংশ কপি পেস্ট করি -

নরম মুসলমান হবার মূল কায়দাটা বলি। আমরা আইডিয়াল স্কুলে থাকতে এই কায়দা অনুসরণ করতাম। টুপি পরা বাধ্যতামূলক ছিল। আবার স্কুল থেকে বের হয়ে যেই কলোনির ভেতর দিয়ে বাসায় যেতাম, সেখানে একটা গার্লস স্কুল ছিল। টুপি পরে ওখান দিয়ে গেলে মেয়েরা খি খি করতো। মান ইজ্জত এর ব্যাপার । আবার অন্যদিকে এমনকি স্কুলে আসার পথে বা ফেরার সময় টুপি মাথায় না থাকার অপরাধে শিক্ষকের প্যাঁদানি খেত অনেকে। একদিকে মাইরের ভয়, অন্যদিকে ইজ্জত। আমরা তাই দ্রুত টুপি পরা ও খোলায় এক্সপার্ট হয়ে গিয়েছিলাম। দূর থেকে স্কুলের কোন শিক্ষক মহোদয়কে দেখলে টুপি মাথায়, নাইলে পকেটে। ব্লগার রাজীবকে কুপিয়ে কয়েক টুকরা করার পর দেখলাম অনেক বাঘা বাঘা প্রগতিশীল লোকেরা আস্তে করে পকেটের টুপিটা বের করে মাথায় পরে নিলো।পরিশেষে তাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথাটি মনে রাখবেন, বেকুব এবং গোঁয়ার মুসলমান টুপি মাথায় পরে। চালাক আর নরম মুসলমান পকেটে রাখে। শুধুমাত্র যখন দরকার হয় ফট করে বের করে মাথায় পরে ফেলে। আবার পরক্ষণেই খুলে ফেলে। টু ইন ওয়ান। মাথাও বাঁচল, টুপিও বাঁচল। জানও বাঁচল, ইজ্জতও বাঁচল। ইহকালও বাঁচল, পরকালও বাঁচল।

এবারে উপরের লেখা থেকে 'রাজীব' শব্দটি মুছে দিয়ে সেখানে 'অভিজিৎ রায়' বসিয়ে দেই। ব্যস হয়ে গেল নতুন লেখা। একেবারে দেজাভু। উপরের লেখাটি কি আমি দুই বছর আগে লিখেছিলাম নাকি এই মাত্র লিখলাম। অভিজিৎ রায় এর মৃত্যুর পর কি সবাই এসে বলল , অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। এরকম হত্যা মেনে নেয়া যায়না কিন্তু ধর্মকে আঘাত করাও ঠিক না! নাকি রাজীবের মৃত্যুর পর নাকি হুমায়ুন আজাদের মৃত্যুর পর? অভিজিৎ রায়ের মৃত্যুর পর কি অনেক প্রগতিশীলরাই দুঃখ প্রকাশ করে আড়চোখে ডানে বামে তাকিয়ে পকেট থেকে টুপিটা বের করে মাথায় পরে নিল? নাকি রাজীবের মৃত্যুর পর সেটা হয়েছিল? নাকি হুমায়ুন আজাদ। নাকি তিনবারেই?

জামাতে ইসলাম এবং বৃহত্তর জামাতে ইসলাম উরফে বিএনপির নতুন করে টুপি পরার কিছু নেই। এরা টুপি পরেই আছে। প্রথম সুযোগ পাওয়া মাত্র আরেকটা চোদ্দই ডিসেম্বর ঘটিয়ে দেশের সকল অভিজিৎ রায়দের রাতারাতি নিঃশেষ করে দিতে এদের হাত একটুও কাঁপবে না। নিঃশেষ করে দিয়ে এরাই আবার বিবৃতি দিবে, সবই সরকারের দোষ। কেমন সরকার এরা গুম হত্যা সন্ত্রাস ঠেকাতে পারে না। দেশে আইন নাই, শৃঙ্খলা নাই, গণতন্ত্র নাই ...

মজার ব্যাপার হচ্ছে এরকম ঘটনার পর সবার আগে পকেট থেকে টুপি বের করে পরে নেয় আওয়ামীলীগ। বিশেষ করে তাদের নব্য গঠিত মুসলমান শাখা আওয়ামী মুসলিম লীগ এবং তার ছানাপোনা সিপি গ্যাং (পুরো নাম সম্ভবত কওমি প্লাটুন গ্যাং!) টাইপের সংগঠনগুলো। অভিজিৎ রায়ের রক্তের দাগ শুকানোর আগেই তারা পেমেন্ট হালাল করতে বিবৃতি দেয়া শুরু করে, "আওয়ামীলীগ কখনোই নাস্তিকতা সমর্থন করেনা, আওয়ামীলীগ বড়ই ধর্মপ্রাণ, তারা ধর্মেও থাকে জিরাফেও থাকে।" অভিজিৎ রায়রা মরে পচে গলে গেলেও তাদের কিছু আসে যায় না, এর আঁচ যেন সরকারের গায়ে না লাগে সেটাই একমাত্র চেষ্টা। এই চেষ্টা সফলের জন্য অভিজিৎ রায়ের মৃত্যুর জন্য সে নিজেই দায়ী থেকে শুরু করে সে আসলে নিজেই নিজের গায়ে কোপ মেরে মরে গেছে পর্যন্ত যা খুশী তাই বলতে এদের সমস্যা নেই।

এরপরের ধাপে টুপিটা পরে নেয় আব্দুন নূর তুষার ঘরানার বুদ্ধিজীবীরা। রক্ত তাজা থাকতে প্রথমে 'অভিজিৎ রায়ের সাথে একমত না হইলেও আমি তার মৃত্যুতে একটু কষ্ট পাইয়াছি' বলে শুরু করে। তারপর রক্ত একটু শুকালেই বের হয় আসল ন্যাজখানা -
আমি সবরকম আগ্রাসনের বিপক্ষে, সন্ত্রাসের বিপক্ষে ... সন্ত্রাস কি কেবল শারীরিক? মোটেও তা নয়। সন্ত্রাস মানসিকও হতে পারে। যদি কেউ আপনাকে মানসিকভাবে মৃত্যুভয়ে, অপমানের ভয়ে ভীত করে তুলতে পারে, তবে সেটাও সন্ত্রাস।

অভিজিৎ রায় সন্ত্রাসী? তিনি কি মানসিক সন্ত্রাস করতেন? আপনি সকল রকমের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে? সকল রকম সন্ত্রাসটা কি কি রকমের সন্ত্রাস? ঘুরেফিরে সেই উগ্র নাস্তিক আর উগ্র আস্তিকের সন্ত্রাসের ত্যানা? এইতো? অভিজিৎ রায় কি মাইক নিয়ে নাস্তিকতার বাণী প্রচার করতেন? নাস্তিক হয়ে গেলে পরকালে কয়টা হুর-পরী পাওয়া যাবে আর কি কি খাওয়া যাবে সেই বেনিফিট প্যাকেজের বর্ণনা দিতেন? কেমন ছিল তার সন্ত্রাস? কেমন ছিল অভিজিৎ রায়ের মাইক? আবার সেই পুরনো লেখা থেকে কোট করি -

মসজিদের মাইক আর রবীন্দ্রসঙ্গীত গাওয়ার মাইক এক জিনিস না। প্রথমটা দিয়ে হাঁক দিয়ে স্বর্গের টিকেট দেখিয়ে লাখ লাখ ডলার চান্দা উঠানো থেকে শুরু করে মানুষ খুন করানো পর্যন্ত সম্ভব অনায়াসে। দ্বিতীয়টায় চার আনা আটআনা টাইপের কিছু ভিক্ষা মিলতে পারে বড়োজোর। ঠিক যেমন আমি জ্ঞান বিতরণ করলে বড় সত্য কথা বলেছেন মাইরি বলে আহা উঁহু প্রশংসা করবে লোকে। কিন্তু আমার ডাকে আন্দোলনে বেড়িয়ে পরবে না। তবে বাঁশের কেল্লার ডাকে দুই চারটা জবাই টবাই করে ফেলা অনায়াসে সম্ভব। আমি মুগ্ধ হয়ে মাঝেমাঝে আমার জ্ঞানী বন্ধুদের আলোচনা শুনি। কে কোরআনের কোন সুরার বাজে ব্যাখ্যা করেছে, আমাদের নবীকে নিয়ে কে বাজে কথা বলেছে সেটা বলতে বলতে উত্তেজনায় তাদের হাত আপনাআপনি মুষ্টিবদ্ধ হয়ে যায়, মাথার দুপাশের শিরা দপদপ করতে থাকে, কেউ কেউ আবেগে কেঁদে ফেলে। অথচ আমি এখন পর্যন্ত এক বালকের পুড়ে কিমা হয়ে যাওয়া দেহ দেখে কাউকে কাঁদতে দেখিনি। মাইক হাতে নিয়ে আজকে যদি পনের বছরের ঝলসানো বালকের কথা বলি, তবে কেউ আমার ডাকে বের হয়ে আসবে না। উল্টোদিক থেকে মাইক হাতে ধরে বিশ্বজিৎ এর কথা বলবে, ফেলানির কথা বলবে, বলতেই থাকবে বলতেই থাকবে। অথচ মাইক হাতে নিয়ে যদি কেউ ডাক দেয় আমাদের নবীর অবমাননা করা হয়েছে তাহলে শতসহস্র ক্রোধান্মত্ত মানুষ বের হয়ে আসবে। কেউ বলবেনা ওই যে রামকে নিয়ে যে বাজে কথা বলা হল, ঐযে বৌদ্ধ বিহারের অপমান করা হল।

মসজিদের মাইক দিয়ে ডাক দেয়া হয়, চাঁদে সাঈদিকে দেখা গেছে। সেই ডাকে হাজার হাজার মানুষ বের হয়ে আসে। নিজে মরে, অন্যকে মারে। হেফাজতের মাইক দিয়ে ডাক দেয়া হয়, নবীকে অবমাননা করা হয়েছে। সেই ডাকে লাখেলাখে মানুষ জমায়েত হয়। কে অবমাননা করলো, কোথায় করলো, কিভাবে করলো সেই উত্তর তারা দিতে পারে না। শুধু শুনেছে তারা, কোথায় যেন কে অবমাননা করেছে। তাতেই ক্রোধে উন্মত্ত হয়ে বের হয়ে এসে নিজে মরে, অন্যকে মারে। অন্যদিকে অভিজিৎ রায়ের মাইকের ডাকে বের হয়ে দলেদলে লোকে কি নাস্তিক হয়ে হুজুরদের গিয়ে ঠ্যাঙ্গাচ্ছে? লোকজনকে মসজিদে যাবার পথে আটকাচ্ছে? তারপরেও সেই সন্ত্রাসের সাথে অভিজিৎ রায়কে সমান সমান করে দেশের বুদ্ধিজীবীরা কেন বিবৃতি দেন, আমরা দুই ধরণের উগ্রতাই অপছন্দ করি। কেন তারা গাছেরটা খেয়ে তলারটা টোকানোর লোভ সামলাতে পারেন না কোনবারেই? শুধুমাত্র ডক্টর জাফর ইকবাল ছাড়া আর কোন বুদ্ধিজীবী কেন কোনরকম যদি কিন্তু তবে বাদ দিয়ে, দুই পক্ষকে ব্যালেন্স করা বাদ দিয়ে শুধু অভিজিৎ রায়কে নিয়ে কিছু লিখতে পারেন না? মাত্র একবারের জন্য শুধু এই ভয়ঙ্কর অন্যায়ের বিরুদ্ধে, এই মৌলবাদের বিরুদ্ধে সরাসরি কলম ধরতে পারেন না? আপনাদের কেউ অভিজিৎ রায় হতে বলছে না। চেষ্টা করলেও সেটা আপনারা হতে পারবেন না। কিন্তু অভিজিৎ রায়ের হত্যার বিচার চাইতে বসে কেন সাথে জানিয়ে দিতে হবে, 'আমি কিন্তু নাস্তিক নারে ভাই। আমি কিন্তু দুই ধরণের সন্ত্রাসই অপছন্দ করি!' মৌলবাদীদের নাস্তিকতার ট্যাগ খেয়ে যাবার ভয় নাকি জনপ্রিয়তা হারানোর ভয়?

আমার বাবা বইয়ের পোকা। গতবছর আমার এখানে আসলেন একগাদা বই নিয়ে। তার মাঝে অভিজিৎ রায়ের বিশ্বাসের ভাইরাস বইটিও ছিল। একদিন গভীর মনোযোগে বই পড়ছেন। এদেশে নামাজের সময়ের হিসেব তার থাকে না। আমি মনে করিয়ে দিলাম মাগরিবের নামাজের ওয়াক্ত যায়। তিনি বই বন্ধ করে গিয়ে নামাজে বসলেন। নামাজ শেষ করে আবার বই নিয়ে বসলেন। যেদিন বই শেষ করলেন, আমি জিজ্ঞেস করলাম কি বুঝলা? আব্বা উত্তরে বলল, ছেলেটা অনেক পড়াশোনা করে, দারুণ দারুণ যুক্তি দিয়ে কথা বলছে। বইটি আমার হাতে দিয়ে বললেন, পড়ে দেখ পুরোটা। নাহ, আব্বা বই পড়ে নাস্তিক হয়ে যাননি। বই ছ্যা ছ্যা করে হাত থেকে ফেলে দিয়ে আমাকেও লাইনে এসে আস্তিক হয়ে যেতে বলেননি। আব্বা আব্বার মতো আছে, আমি আমার মতো। আব্বা অভিজিৎ রায়ের বই পড়তে পড়তে বিরতি দিয়ে নামাজ পড়তে গিয়েছে। ফিরে এসে আবার তার বই পড়া শুরু করেছে। এই মজার খবরটা অভিজিৎদাকে জানিয়েছিলাম। তিনি শুনে হা হা করে হেসেছিলেন বেশ।

অভিজিৎ রায়ের মৃত্যুর খবর দেশ থেকে আব্বাই দেয় প্রথমে। হন্তদন্ত হয়ে আমাকে ফোন দেয় সকালে উঠে। হাহাকার মাখানো গলায় বলে, খবর শুনছো কিছু? ঐযে ছেলেটা অভিজিৎ, ওকে তো মেরে ফেললো। আমি উত্তরে মৃদু গলায় বলি, জানি আব্বা। সারাজীবন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া পিতা আমার আমাকে জ্ঞান দিয়ে বলেলনি, দুই ধরণের সন্ত্রাসই আমি অপছন্দ করি। আমার পিতা আমাকে বলেননি, অভিজিৎ রায় উগ্র নাস্তিক ছিল, এই পরিণতি তার জন্য ঠিক ছিল। আব্বা শুধু হাহাকার মাখানো গলায় বলে গেছেন, ছেলেটাকে তো মেরে ফেললো, ছেলেটাকে তো মেরে ফেললো।

সহজ কথা সহজে বলেনা লোকে। ব্যালেন্স না করে কিছু করতে পারেনা এই দেশের মানুষ। কোদালকে কোদাল বলতে পারেনা। একটা অন্যায়কে ঢাকা দেয়ার জন্য অন্য অন্যায়কে না টেনে থাকতে পারেনা। আমি রসিক লোক। অসময়েও রসিকতা করেই শেষ করি। শিবরামের গল্প, লিখেছিলাম ফুটবল বিশ্বকাপের সময়, স্পেনকে পচাতে। সেই একই গল্পটা একটু অদলবদল করে আবার লিখি। যেই দেশে একই ঘটনা বারবার ঘটে, সেখানে একই গল্পও বারবার লিখা যায়।

এক ছোকরা একবার এক মধ্যবয়েসি নিরীহ মহিলাকে ধরে বেদম পিটুনি দিল। তাকে আদালতে হাজির করা হল। ঘটনা শুনে জজ সাহেবের চোখ কপালে। কেন এরকম নিরীহ মহিলাকে অকারণে এরকম নির্মমভাবে পিটালিরে শয়তান। আসামী বলে, হুজুর আগে ঘটনা শুনেন। আমি ছিলাম বাসে, পাশে এই মহিলা। কনডাক্টর এসে ভাড়া চাইলো। মহিলা তার বিশাল একটা ব্যাগের চেন খুললেন। সেইখানে থেকে একটা হ্যান্ড ব্যাগ বের করলেন। করে তার বড় ব্যাগের চেন লাগালেন। এরপর তার হ্যান্ড ব্যাগ খুললেন। সেখান থেকে একটা পার্স বের করলেন। তারপর তার হ্যান্ড ব্যাগের চেন লাগালেন। লাগিয়ে পার্স খুললেন। খুলে পার্স থেকে ছোট একটা পয়সা রাখার ব্যাগ বের করলেন। করে পার্সের চেন লাগালেন। লাগিয়ে পয়সার ব্যাগ খুললেন। খুলে সেখান থেকে দশ টাকার নোট বের করে কনডাক্টরকে দিলেন। তারপর পয়সার ব্যাগ বন্ধ করলেন। করে তার পার্সের চেন খুললেন। খুলে সেখানে ছোট ব্যাগ ভরলেন। তারপর পার্সের চেন লাগিয়ে তার হ্যান্ড ব্যাগ খুললেন। খুলে সেখানে পার্স ভরে তার চেন লাগালেন। তারপর তার বড় ব্যাগের চেন খুললেন। খুলে সেখানে তার হ্যান্ড ব্যাগ ভরে সেটার চেন লাগালেন। এর মধ্যে কনডাক্টর এসে তার ভাংতি টাকা ফেরত দিল। তিনি তখন আবার তার বিশাল একটা ব্যাগের চেন খুললেন। সেইখানে থেকে তার হ্যান্ড ব্যাগ বের করলেন। করে তার বড় ব্যাগের চেন লাগালেন। এরপর তার হ্যান্ড ব্যাগ খুললেন। সেখান থেকে তার পার্স বের করলেন। তারপর তার হ্যান্ড ব্যাগের চেন লাগালেন। লাগিয়ে পার্স খুললেন ...
এই পর্যায়ে জাজ সাহেব চরম বিরক্তি হয়ে চিৎকার করে উঠলেন, একই কথা বলে যাচ্ছ বাপু। কি কারণে মারলে সেটা বল।
আসামী হাত জোড় করে বলে, এইতো দেখেন। শুনেই আপনার এরকম মেজাজ চড়ে গেল। তাইলে আপনার সামনে এরকম ঘটনা ঘটলে আপনার কেমন লাগত। এজন্যই তো আমি সহ্য করতে না পেরে কয়েক ঘা বসিয়ে দিলাম।

ইন এ নাটশেল নাস্তিক ব্লগারের ঘটনাও এরকম। কোপ খেয়ে মরে নাস্তিক ব্লগার। মডারেটগণ তার বড় ব্যাগের চেন খুলে। সেইখানে থেকে একটা হ্যান্ড ব্যাগ বের করে। করে তার বড় ব্যাগের চেন লাগায়। এরপর তার হ্যান্ড ব্যাগ খুলে। সেখান থেকে একটা পার্স বের করে । তারপর তার হ্যান্ড ব্যাগের চেন লাগিয়ে পার্স খুলে। খুলে পার্স থেকে ছোট আরেকটা ব্যাগ বের করে। করে পার্সের চেন লাগিয়ে ছোট্ট ব্যাগ খুলে। খুলে সেখান থেকে একটা ত্যানা বের করে। তারপর ছোট ব্যাগ বন্ধ করে । করে তার পার্সের চেন খুলে । খুলে সেখানে ছোট ব্যাগ ভরে । তারপর পার্সের চেন লাগিয়ে তার হ্যান্ড ব্যাগ খুলে। খুলে সেখানে পার্স ভরে তার চেন লাগায়। তারপর তার বড় ব্যাগের চেন খুলে। খুলে সেখানে তার হ্যান্ড ব্যাগ ভরে সেটার চেন লাগায়। লাগিয়ে ত্যানা দিয়ে মুখ মুছতে মুছতে বলে,
হত্যা কখনোই ভালো কিছু নয়। তবে উগ্র নাস্তিকতাও ভালো কিছু নয়।
শুনে কিছু লোক প্রতিবাদ করে উঠলে আবার তার বিশাল একটা ব্যাগের চেন খুলে । সেইখানে থেকে তার হ্যান্ড ব্যাগ বের করে। করে তার বড় ব্যাগের চেন লাগায়। এরপর তার হ্যান্ড ব্যাগ খুলে। সেখান থেকে তার পার্স বের করে। তারপর তার হ্যান্ড ব্যাগের চেন লাগায় । লাগিয়ে পার্স খুলে সেখান থেকে ছোট ব্যাগ বের করে। পার্সের চেন লাগিয়ে ছোট ব্যাগের চেন খুলে। ছোট ব্যাগে তার পুরনো ত্যানা ভরে, সেখান থেকে আরেকটা নতুন ত্যানা বের করে। সেই নতুন ত্যানায় মুখ মুছে এরপর সে কি বলে জানতে হলে আবার তার চারখানা ব্যাগ খোলা বন্ধ করা দেখতে হবে। আপাতত যদি এই পর্যায়ে এসে ধৈর্য হারিয়ে আমি তাকে 'শুয়োরের বাচ্চা' বলে গালি দিয়ে কথাবার্তার সমাপ্তি ঘটাই তাহলে আমাকে কি জজ সাহেবরা খুব বেশী সাজা দিবেন? সাজা না দিয়ে বরং আমাকে রাস্তায় মুক্ত ছেড়ে দিয়ে অপেক্ষা করতে পারেন কেউ একজন এসে আমার গলা কাটবে কবে সেটা দেখার জন্য। তারপর মনের দুঃখে মাথা নাড়তে নাড়তে একযোগে বলতে পারেন, এহহে গেল আরেকটা। আগেই বলেছিলাম গালিগালাজ আর উগ্রতা একদমই উচিৎ কাজ নয়। উগ্র নাস্তিক আর উগ্র আস্তিক দুটোই বড় খারাপ জিনিস বাপু!


Comments

অতিথি লেখক's picture

আব্দুন নূর তুষার একটা কথা বলতে ভুইলা গেসেনঃ আসল বাঘ মানুষখেকো হয়ে গেলে সেইটারে তখন গুলি কইরে মারা হয়; সে কেন মানুষখেকো হইল, সেইটা নিয়ে কেউ মাথা ঘামায় না। আর আমাদের মানুষখেকোদের আমরা কোলে তুইলে রাখি।

Emran

ঈয়াসীন's picture

চলুক , অভিজিতের মৃত্যু নতুন একটি ফিল্টার এনে দিল। এ বিষয়গুলো কদিন ধরে দেখছি, বিরক্ত হচ্ছি, এই ভণ্ডামির সংখ্যাই বেশী। পৃথিবীটা এই এদেরই জন্যে।

------------------------------------------------------------------
মাভৈ, রাতের আঁধার গভীর যত ভোর ততই সন্নিকটে জেনো।

ইকারাসের ডানা 's picture

অঞ্জন রায়কে এখনও বাতিলের দলে ফেলে দেয়ার সময় বোধ হয় আসে নি। কারণ উনি কখনো এইসব বিষয় নিয়ে মাথা ঘামান না। উনার স্ট্যাটাসের টার্গেট সম্ভবত, শাহবাগের কিছু প্রগতিশীল। এখানে যতটা না আস্তিক-নাস্তিক ইস্যু, তার চেয়েও বড় ফ্যাক্টর হচ্ছে শাহবাগের অভ্যন্তরীণ বিরোধ। কারণ, উনার স্ট্যাটাসের পরপর শাহবাগের কিছু এনজিওজীবী পালটা আক্রমণ দাগানো শুরু করে। তবে, এইসময়েই এইসব বক্তব্য দেয়াটা যথেষ্ট আপত্তিকর। অন্য কোন সিচুয়েশনে বললে ব্যাপারটা এভাবে প্যাচাতো না। হয়তো এইটা নিছক ভুল বুঝাবুঝি।

মেঘলা মানুষ 's picture

লেখার জবাব লেখায়ই দেয়া যায় -এটা পরিষ্কার করে লিখে রাস্তার মোড়ে ঝুলিয়ে রাখা দরকার।
আর অনুভূতির কথা বলতে গেলে বলতে হবে, সবাই কেবল নিজেরটাকেই 'নাজুক' মনে করে।

[আপনার নাম না আবার লিস্টে উঠে যায়! ভালো থাকেন]

সত্যপীর's picture

বোকাচোদায় ভরিয়া গেল দেশ।

..................................................................
#Banshibir.

অতিথি লেখক's picture

চরম দা,আমি তো ভন্ড প্রগতিশীলদের কথা শুনতাম কিন্তু স্বচক্ষে দেখিনি কিন্তু অভিজিত দার মৃত্যুর পর মুখোশধারী প্রগতিশীলরা যে কত রকমের গিরগিটির বেশ ধারন করে তা দেখলাম ও দেখছি। সবচেয়ে বড় ব্যপার এই যে বড় বড় ডিগ্রীনেওয়া মানুষগুলো কি কোন সময় তাদের মগজ যুক্তি দিয়ে সাফাই করেছে? এই প্রশ্নটাই মনের মধ্যে ঘুরপাক খায় আমার মনের মধ্যে। এ দেশে এত ধার্মিক কিন্তু পাপাচার তো করছে ওরাই। যেখানে যাই সেখানে একই কথা ,ইসলাম শান্তির ধর্ম , এটা সমর্থন করেনা ঐটা সমর্থন করে না। আমি শুনতে শুনতে এতো বিরক্ত যে আমি আগেই বলে দিই , ভাই আমি নাস্তিক!

------------
রাধাকান্ত

অতিথি লেখক's picture

গত ক’দিন ধরে চারপাশের মানুষগুলোর ভণ্ডামি আর এই চর্চা, সেই চর্চা দেখতে দেখতে আমি হতাশ, বিরক্ত, ক্রুদ্ধও। দম নেওয়া যাচ্ছে না এমন গুমোট অবস্থা, এই মানুষগুলোর সাথে একই বাতাস শেয়ার করাটাও গ্লানির।

দেবদ্যুতি

অতিথি লেখক's picture

সক্কালবেলাতেই আন্তর্জাতিক বেতারের বাংলা খবরপাঠিকা ফারাবি-র গ্রেফতার প্রসঙ্গে বললেন-‘তিনিও একজন লেখক।’ অফিসের বাসে বসে মনে হলো বমি করে দিই।

দেবদ্যুতি

সচল জাহিদ's picture

চলুক


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

এক লহমা's picture

"এখানে একই ঘটনা বারেবারে হয়, ঘটনার পর একই নাটকও বারেবারে হয়।" আর তাতে কেউ আশ্চর্য পর্যন্ত হয়না। সকলেই সিরিয়াল দেখে যায়। কখনো দলবেঁধে গিয়ে কবির মৃত্যু দেখে আসে। কখনো নানা সুরে নাস্তিকের হত্যার যথার্থতা বয়ান ও আস্বাদ করে।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

মিনহাজ's picture

ঝামেলাটা কিন্তু ব্যালেন্স করা নিয়ে নয়! আমিও এমন কথাই লিখেছি আমার স্ট্যাটাসে। কিন্তু অবশ্যই ব্যালেন্স করা অর্থে নয়! আমি নিজে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি, এবং আমি অবিশ্বাসের ভাইরাস বইটি পড়েছি! বইটি আমার কাছে অসাধারণ লেগেছে। আমার বিশ্বাস নড়ে যায়নি। কারণ পুরো বইয়ে অভিজিৎ রায় কোথাও ধর্মকে কটাক্ষ করে কিছু লিখেননি। উনি উনার যুক্তি উপস্থাপন করেছেন মাত্র। আর কিছু না। সমস্যাটা সেখানে না। সমস্যা আসে যখন কটাক্ষ করে, বিদ্রুপ করে কথা লেখা হয়। নাস্তিকতাও একজন মানুষের নিজের ধর্ম! একজন মুসলিম/হিন্দু ধর্মপ্রচারক যেমন তার ধর্ম প্রচার করতে পারেন, একজন নাস্তিকও যুক্তি দিয়ে তার নাস্তিকতা প্রচার করতে পারেন। কিন্তু কক্ষনোই একজন মানুষ অন্য ধর্মকে কটাক্ষ করে কথা বলতে পারেন না! আপনি না জেনে মুহাম্মদ (স) এর বহুবিবাহ নিয়ে কথা বলতে পারেন না, পঞ্চপান্ডবের এক স্ত্রী দৌপদ্রীকে নিয়ে কোন কথা বলার অধিকার রাখেন না, বুদ্ধের বাড়ি পালানো নিয়ে উপহাস করতে পারেন না, ভার্জিন মেরীর পবিত্রতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারেন না! কোনভাবেই না! ঝামেলাটা সেখানেই বাঁধে! আমার বাবাও অভিজিতের মৃত্যুর পর থেকেই খবর দেখলেই বিলাপ করছেন। বুয়েটের এতো মেধাবী ছেলে। ছেলেটাকে মেরে ফেললো! আমার বাবা আবার বুয়েটিয়ান ভক্ত। মূল প্রসঙ্গে আসি। অভিজিৎ যখন যুক্তিভরা বই "অবিশ্বাসের ভাইরাস" অথবা "মহাবিশ্বে প্রাণ ও বুদ্ধিমত্তার খোঁজে" বইগুলো অসাধারণ। আমি উনার এই দুইটা বই পড়েছি। সেখানে ধর্মকে কটাক্ষ করা কিছু লেখা নেই। তার নিজস্ব যুক্তি আছে। আমার বিশ্বাস শক্ত বলে এই লেখায় আমার বিশ্বাসের উপর কোন প্রভাব পড়ে নাই। সমস্যা হয় তখন যখন অভিজিৎ হাদিসের ব্যাখ্যা যেতে গিয়ে লেখেন "মুহাম্মদ দেখলেন সাফিয়ার অপূর্ব সুন্দর দেহপল্লবী তারই উপযুক্ত!" অথবা, অন্য উগ্র নাস্তিক "তোমার ঈশ্বর এসে মেরীর সাথে সেক্স করে গেসিলো।"-- লিখে পোস্ট দেন! এগুলো কিন্তু যুক্তি না। এগুলো খুব সরাসরি ভাষায় আক্রমাত্মক এবং অনুভূতিতে আঘাত হানা লেখা! আমি বলব যে, অনেক সুশীলেরা যেমন অন্ধ থাকেন, আপনারাও ঠিক তেমনই অন্ধ থাকবার ভান করেন। আপনারা যখন লিখছেন, তখন অভিজিতের জ্ঞান-বিজ্ঞানে ভরা লেখাগুলোই প্রচারে আনছেন। আমি মুহাম্মদ জাফর ইকবাল স্যারকে কোন দোষ দেই না। স্যার ব্লগ, ফেসবুকে লেখা পড়েন না। উনি শুধু বই পড়েন। তাই উনি যখন "অবিশ্বাসের ভাইরাস" বইটি শুধু পড়েছেন তার ভিত্তিতে লিখেছেন যে অভিজিৎ কোন কটাক্ষমূলক কথা বলেননি। উনি সম্পূর্ণ ঠিক! কিন্তু আপনারা পড়েছেন। পড়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে, আপনারা উনার ঘৃণাপূর্ণ, উপহাসমূলক লেখাগুলোকে সামনে আনবেন না। উগ্র নাস্তিকদের একেবারেই নিরীহ জ্ঞানী মানুষ হিসেবে সবার সামনে আনবেন। আপনার যুক্তিকে প্রচার করার জন্যে সামনে আনছেন শুধু উনার ভালো লেখাগুলোকেই।

সমস্যা হয়েছে আমাদের। আমরা যারা অন্ধ থাকতে পারি না। নিজের বিবেকের কাছে, নিজের বিশ্বাসের কাছে সৎ থাকতে চাই। তারা সবই বলি! এটা কোনভাবেই ব্যালেন্স করা না। এটা যা দেখছি তার পুরোটা বলা। আমি অভিজিতের বই পড়ে তার জ্ঞানে মুগ্ধ হয়েছি, তার বই খুবই ভালো- এই কথাগুলো যেমন বলব। ঠিক তেমনি অভিজিতসহ অন্য অনেক উগ্র নাস্তিকের ফেসবুক-ব্লগে উগ্র কথায় অনুভূতিতে আঘাত পেয়েছি সেই কথাও বলব! আমার জন্য দুইটাই সত্যি। একটা বলে আরেকটা চুপ করে থাকবো কিভাবে, কেন, কেমনে? আর যেহেতু নিজেদের বিবেকবান, যুক্তিবান এবং ধর্ম বিশ্বাসী মানুষ হিসেবে মনে করি তখন কোন ধরনের হত্যা, রাহাজানি, ধর্ষণ কিচ্ছু সমর্থন করি না। এই কথাও অবশ্যই বলব। এটাও ব্যালেন্স করা না। এটাও সব দেখে বিবেকের কথা। আমার বিবেক বলে যে, অভিজিৎ যাই লিখেছে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তাকে বিশ্বাসী হবার সুযোগ দেয়া যেতো, তার বিচার সৃষ্টিকর্তা করবেন। আমার অনুভূতিতে আঘাত হানলে আমি দেশে মামলাও করতে পারি। আইন শুধু লতিফ সিদ্দিকীর জন্য হবে, অথচ আসিফ মহিউদ্দিনের জন্য হবে না; এটা তো হতে পারে না। আইন তো সবার জন্যেই প্রযোজ্য! আমি মামলা করি, সে যেন বিশ্বাসী হয় সেজন্যে প্রার্থনা করি; কিন্তু কোনভাবেই তাকে হত্যা করা সমর্থন করি না। সেই হত্যাকারীর ফাঁসি চাই।

উপরে যেই কথাগুলো বললাম, একটা কথাও ব্যালেন্স করা নয়। একটা কথাও সুশীলতা প্রদর্শন নয়। প্রত্যেকটা কথা বিবেকে যা আসে, যুক্তিতে আসে তার থেকে বের হওয়া অনুভূতির কথা। সেই অনুভূতি আমাকে অভিজিতের যুক্তির কথায় মুগ্ধ করে, সেই অনুভূতি আমাকে অভিজিতের কটাক্ষতে ক্ষুব্ধ করে, সেই অনুভূতি অভিজিতের হত্যাকারীর ফাঁসি চায়! এটা কোনভাবেই ব্যালেন্স করা নয়!

পৃথ্বী's picture

কটাক্ষতে ক্ষুদ্ধ হওয়া এক জিনিস, আর একটা মানুষের খুনের নিন্দা করার সময় সে যে কটাক্ষ করছে সেটা অপ্রাসঙ্গিকভাবে টেনে আনা ভিন্ন জিনিস। যেহেতু বাঙ্গালী মমিন আর সব কিছুর ব্যাপারে গণ্ডমূর্খ ও নিষ্প্রভ হলেও ইজরায়েল-ফিলিস্তিন ইস্যুতে খুবই সরব, তাই তাদের পরিচিত উদাহরণ দিয়েই বুঝাই। ইজরায়েলী সেনাবাহিনীর গুলিতে কোন ফিলিস্তিনি খুন হলে সেটার প্রতিবাদ করতে হবে একারণে যে বিনা বিচারে মানুষ খুন অন্যায়। এর সাথে ইজরায়েলি দখলদারিত্ব ও ফিলিস্তিনিদের জাতীয় বঞ্চনাও যোগ হইতে পারে। কিন্তু এসব বলে হত্যাকাণ্ডের নিন্দা করার পাশাপাশি আমি যদি একই সাথে উক্ত ফিলিস্তিনি ব্যক্তির যাবতীয় পাপ ও অপরাধের(লক্ষ্ করুন, পাপ আর অপরাধ এক জিনিস না) ফিরিস্তি দেওয়া শুরু করি, তাহলে আমার প্রতিবাদটা নিশ্চয়ই আন্তরিক হবে না? নিশ্চয়ই সেটা পরোক্ষভাবে ইজরায়েলি সেনার কৃতকর্মেরই সাফাই হবে?

কলমের বিরুদ্ধে কলম চালাতে হবে। অভিজিত রায়রা যদি কলম দিয়ে খোঁচা মারে, আপনি আপনার কলম দিয়ে পালটা খোঁচা মারুন। কলম আর চাপাতির মাঝে কোন মধ্যম অবস্থান নাই। অভিজিত রায়ের হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানাতে গিয়ে আপনার যদি অভিজিতের যাবতীয় মিথ্যা কথা, ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ, ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন, আর্থিক দেনা টেনে নিয়ে আসা লাগে, আপনি তাহলে খুনী পক্ষেরই এক প্রকার ফুটসোলজার।


Big Brother is watching you.

Goodreads shelf

মিনহাজ's picture

হাহা! আগেই বলেছি, স্বীকৃত সুশীলদের মতো আপনাদেরও জাল কেটে বের হয়ে আসা, অথবা কথার মোড় অন্য দিকে ঘোরানোতে জুড়ি নেই। কথা কিন্তু ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন, আর্থিক দেনা টানা নিয়ে হয়নি। কথা খুব স্পেসিফিকভাবে শুধুমাত্র উগ্র নাস্তিকদের ধর্মানুভূতিতে আঘাত হানা নিয়ে হয়েছে। "কলমের জবাব কলম দিয়ে হবে। কলম আর চাপাতির মাঝে কোন মধ্যম অবস্থান নাই।"- এটা খুবই সত্য কথা। এই নিয়ে কোন দ্বিমত নাই। কিন্তু আপনি কলমে কি লিখবেন তার অবশ্যই সীমারেখা আছে। ধর্ম একজন মানুষের কাছে সবচেয়ে বড় অনুভূতির ব্যাপার। যারা ইসলামে বিশ্বাস করে তাদের কাছে বাবা-মায়ের উপরে সৃষ্টিকর্তার স্থান। এখন কেউ আমাদের কারো মা-কে হঠাৎ করে ইচ্ছেমতো 'পতিতা' বলে গালি দিয়ে লিখলো; আর আমি সেটাকে শুধুমাত্র বাক স্বাধীনতা বলে ছেড়ে দিতে পারি না। বাক-স্বাধীনতা মানে অন্য একজনের অনুভূতি নিয়ে গালাগাল নয়। যা ইচ্ছে তা-ই লেখা নয়। এখন ধর্মমতে যখন আমার মায়ের ব্যাপারে অনুভূতির চেয়ে সৃষ্টিকর্তা সংক্রান্ত অনুভূতির মূল্য বেশি; এবং আপনি সেটা জানেন তখন চাইলেই আপনি আমার সৃষ্টিকর্তার নামে যা ইচ্ছে তা লিখতে পারেন না। ওটা বাক স্বাধীনতা নয়! নাহলে আমার দেশ বন্ধের জন্য লিখতাম না।

ধরে নেই, মৌলবাদী জঙ্গী গোষ্ঠী একেবারেই নেই। সব বিলীন হয়ে গেছে। তারপরেও কি অন্য কেউ আমার অনুভূতি নিয়ে কটাক্ষ করবার অধিকার রাখেন? উত্তর হচ্ছে না! কটাক্ষ আর যুক্তির মধ্যে সীমারেখাটা অন্তত এই শিক্ষিত মানুষেরা বুঝবেন এটা আশা করা যায়। যারা লিখছেন, তারা যে অনেক পড়াশোনা করা মানুষ; সেটা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। বাংলাদেশ নিয়ে কেউ কিছু বললে আমার গায়ে অবশ্যই তা লাগে। যুক্তি দিয়ে কেউ যদি বলে যে, "নানা রাজনৈতিক কারণে বাংলাদেশের উন্নতি যতটুকু হবার কথা ছিল, ততটুকু হচ্ছে না। বাংলাদেশের এই সমস্যা, সেই সমস্যা।" আমাকে অবশ্যই সেটা মানতে হবে। কিন্তু ফুয়াদ যখন এইসব সমস্যাকে একবারে "ফা* দিস কান্ট্রি" বলে সেটা অবশ্যই আমার অনুভূতিকে আঘাত হানে। এইটাই যুক্তি দিয়ে কথা বলা আর কটাক্ষের মধ্যে পার্থক্য।

আর প্রথম প্যারাতে যেটা বলেছেন, সেটার সাথে যৌক্তিকভাবে একমত হওয়া যায়। হাসি আপনার ফিলিস্তিন সংক্রান্ত যুক্তিটি ভালো। হাসি আমরা শুধুমাত্র হত্যার বিচার চাইতেই পারি। সব লেখা যেন শুধুমাত্র হত্যার বিচার চাওয়াতেই সীমাবদ্ধ থাকে। চরম উদাসের এই লেখাটার মধ্যে কোন ধর্মীয় বিদ্বেষ নেই, তা অবশ্যই স্বীকার করি। কিন্তু আমি লক্ষ্য করেছি অনেকেই অভিজিতের হত্যার বিচার চাইতে গিয়ে খোদ সিলেটে "ইসলাম মানে ভায়োলেন্স" এমন প্ল্যাকার্ড নিয়ে মিছিল হয়েছে। অনেকেই এই ইস্যুটাকে ব্যবহার করে ধর্ম জিনিসটা কতো খারাপ সেটা প্রমাণ করার জন্য নতুন উদ্যমে ঝাপিয়ে পড়েছেন। আমরা যখন তুমুলভাবে এই ধর্মান্ধতার প্রতিবাদ করছি, তখন যেন উগ্র ধর্মহীনতাকেও প্রমোট না করি সেটাও লক্ষ্য রাখতে হবে।

আরেকটা কথা বলি, সব লেখায় আমি কেবলমাত্র অভিজিৎ, রাজীব হত্যার বিষয়ে কথা বলতে দেখি। আমরা ভুলে যাই মাওলানা ফারুকীকেও একই কায়দায় হত্যা করা হয়েছিলো। ফারুকি কিন্তু নাস্তিক ছিলেন না। তিনি মারফতি লাইনের লোক ছিলেন। মৌলবাদিরা শুধু অভিজিৎ রায়কে খুন করেনা, তারা তাদের মতের বিরুদ্ধের সবাইকেই খুন করে। তারা শিয়াদের খুন করে, তারা মারফতিপন্থীদের খুন করে। আপনি হয়তো ভাবছেন, এই যে, এ আবার অভিজিৎ, রাজীবের সাথে ফারুকীকে এনে ব্যালেন্স করে দিচ্ছে! এটা ব্যালেন্স নয়। আমার মনে একটা আসলে আরেকটাও মনে পড়ে! :/ তখন চুপ থাকতে পারি না। আপনারা বলেন তো, ফারুকীর মৃত্যুর পরে প্রতিবাদ করে একটা স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন কি না? আমি দুই সময়েই দিয়েছি। এবং ফারুকীর মৃত্যুর সময়েও একই কথা লিখেছিলাম যে, উনার মতের সাথে ফ্যানাটিকদের না মিলতেই পারে, তাই বলে হত্যা করতে হবে কেন? হাসি

পৃথ্বী's picture

Quote:
হাহা! আগেই বলেছি, স্বীকৃত সুশীলদের মতো আপনাদেরও জাল কেটে বের হয়ে আসা, অথবা কথার মোড় অন্য দিকে ঘোরানোতে জুড়ি নেই। কথা কিন্তু ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন, আর্থিক দেনা টানা নিয়ে হয়নি। কথা খুব স্পেসিফিকভাবে শুধুমাত্র উগ্র নাস্তিকদের ধর্মানুভূতিতে আঘাত হানা নিয়ে হয়েছে। "কলমের জবাব কলম দিয়ে হবে। কলম আর চাপাতির মাঝে কোন মধ্যম অবস্থান নাই।"- এটা খুবই সত্য কথা। এই নিয়ে কোন দ্বিমত নাই। কিন্তু আপনি কলমে কি লিখবেন তার অবশ্যই সীমারেখা আছে। ধর্ম একজন মানুষের কাছে সবচেয়ে বড় অনুভূতির ব্যাপার। যারা ইসলামে বিশ্বাস করে তাদের কাছে বাবা-মায়ের উপরে সৃষ্টিকর্তার স্থান। এখন কেউ আমাদের কারো মা-কে হঠাৎ করে ইচ্ছেমতো 'পতিতা' বলে গালি দিয়ে লিখলো; আর আমি সেটাকে শুধুমাত্র বাক স্বাধীনতা বলে ছেড়ে দিতে পারি না। বাক-স্বাধীনতা মানে অন্য একজনের অনুভূতি নিয়ে গালাগাল নয়। যা ইচ্ছে তা-ই লেখা নয়। এখন ধর্মমতে যখন আমার মায়ের ব্যাপারে অনুভূতির চেয়ে সৃষ্টিকর্তা সংক্রান্ত অনুভূতির মূল্য বেশি; এবং আপনি সেটা জানেন তখন চাইলেই আপনি আমার সৃষ্টিকর্তার নামে যা ইচ্ছে তা লিখতে পারেন না। ওটা বাক স্বাধীনতা নয়! নাহলে আমার দেশ বন্ধের জন্য লিখতাম না।

সমালোচনা আর বিদ্বেষের মধ্যকার সীমারেখাটা মমিনরা ইচ্ছেমত এঁকে দেয়। কেউ ইসলামের শ্রদ্ধেয় চরিত্রদের গালাগালি করলে সেটা স্পষ্টতই বিদ্বেষ, কিন্তু মোহাম্মদ আসলেই সর্বকালের জন্য স্মরণীয় ব্যক্তিত্ব কিনা সেটা নিয়ে প্রশ্ন তুললে এবং হাদিস-কোরান থেকে উদাহরণ টেনে সমালোচনা করলে সেটা "বিদ্বেষ" এর সংজ্ঞায় পড়ে না। তবে সমালোচনা-বিদ্বেষ যাই হোক, একটা খুনের নিন্দা করতে গিয়ে এসব টেনে আনা অবান্তর। মসজিদের হুজুররা জুম্মার নামাজে বিধর্মীদের ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করে ইসলামের শ্রেষ্ঠত্ব জাহির করার জন্য কুখ্যাত(বিখ্যাতও হতে পারে, আপনার ধর্মানুভূতির উপর নির্ভর করে), তারা কেউ এসূত্রে খুন হলে সেই খুনের নিন্দা করতে গিয়ে আমি তাদের উস্কানিমূলক বক্তব্যকে উদ্ধৃত করলে কি সেটা গ্রহণযোগ্য হবে? আমি বুঝতে পারছি আপনি এখানে সজ্ঞানে খুন জাস্টিফাই করছেন না। কিন্তু ধরেন, ভারতের কোন এক মসজিদের ইমামকে ঠিক এধরনের পরনিন্দার অপরাধে হিন্দুত্ববাদী সন্ত্রাসীরা খুন করল। সেই খুনের নিন্দা জানাতে গিয়ে আমি যদি বারবার সেই ইমামের পরনিন্দাজ্ঞাপক মন্তব্যগুলো স্মরণ করি, তাহলে সেটা কি একটা বিপদজনক মানসিকতার ইঙ্গিতবাহী নয়? আপনি এখানে ঠিক সেই কাজটাই করছেন। খুনকে সরাসরি জাস্টিফাই না করলেও আপনি পারতপক্ষে ইঙ্গিত দিচ্ছেন যে আপত্তিকর কথা বললে খুন করার মধ্যে সামান্য হলেও নৈতিকতা আছে। আপত্তিকর কথা অনেকেই অনেক ইস্যুতে বলে, কারও উপর রাগ থাকলে মানুষ বাপ-মা তুলেও গালাগালি করে, সেসব ক্ষেত্রে খুনাখুনি জায়েজ না হলে এখানেও খুনাখুনি জায়েজ নয়। ব্যক্তিগত আক্রোশে যখন কেউ খুন করে, তখন সে সমাজ ও আদালত দু'টোর চোখেই ত্যাজ্য গণ্য হয়।

Quote:
আরেকটা কথা বলি, সব লেখায় আমি কেবলমাত্র অভিজিৎ, রাজীব হত্যার বিষয়ে কথা বলতে দেখি। আমরা ভুলে যাই মাওলানা ফারুকীকেও একই কায়দায় হত্যা করা হয়েছিলো। ফারুকি কিন্তু নাস্তিক ছিলেন না....

অভিজিতকে কারা খুন করছে এখনও জানা যায়নি, কিন্তু যদি জামায়াত-শিবিরের সাথে সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হয়, তবেই কেবল অভিজিত আর ফারুকি হত্যাকাণ্ড এক সূত্রে বিদ্ধ হবে। অভিযোগ আছে ফারুকী সরাসরি জামায়াতের সমালোচনা করতেন বলে তিনি খুন হয়েছেন। যদি তা-ই হয়ে থাকে, তবে তাঁরটা রাজনৈতিক হত্যাকান্ড। কিন্তু অভিজিতকে খুনের পেছনে রাজনীতি থাকুক বা না থাকুক, একটা নীতির প্রশ্ন জড়িত আছে। আপত্তিকর কথা মুসলমানরা কম বলে না। বস্তুত, একজনের ধর্ম পালন আরেকজনের কাছে আপত্তিকর ঠেকতেই পারে। পশ্চিমা বিশ্বের মানুষ যদি বাঙ্গালী মুসলমানের মতো এরকম সন্ত্রাসী মনোভাবাপন্ন হয়ে উঠে, ইউরোপ-আমেরিকায় মুসলমানদের রক্তবন্যার নিন্দা জানানোর আপনার অন্তত কোন ভ্যালিড গ্রাউন্ড থাকবে না। আমার থাকবে। আমি ধর্মানুভূতি-নাস্তিকানুভূতির দোহাই দিয়ে খুনাখুনির সাফাই গাই না। কোন হিযবুতিকেও যদি উগ্রবাদী উস্কানিমূলক বক্তব্যের জন্য বিচার না করেই ক্রসফায়ারে মারা হয়, আমার আপত্তির মাত্রা বিন্দুমাত্র কমবে না। জার্মানিতে পেগিডাবিরোধী আন্দোলনে অমুসলিম জার্মানরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিল। তারা মুসলমানদের মতো অনুভূতিপ্রবণ হলে জার্মান মুসলমানদের কপালে মুসলিম উম্মাহর অমুসলিম ও নির্ধর্মীদের মতই দুঃখ থাকত।

ফারুকির হত্যাকান্ড অবশ্য আরেকদিক দিয়ে কৌতূহলোদ্দীপক। অভিজিতের অনেক মার্জিত সমালোচনাতে প্রচুর মানুষের ধর্মানুভূতি আহত হয়, কিন্তু ফারুকীর মতো নির্দোষ মানুষের জবাই হওয়াতে তাদের ধর্মানুভূতি আহত হয় না। ফারুকি খুন হওয়ার পর ফেসবুকের আল্লামাসমাজ আর জিহাদীদের আমি তেমন কোন একটিভিটি দেখি নাই, এখন অভিজিত হত্যার নিন্দায় যারা মুখর তারাই তখন সবচেয়ে সরব হয়েছিল। জামায়াতি ঘরানার অনেক ব্যক্তি-পেইজ-গ্রুপ তখন ফারুকীকে ইসলাম-বিকৃতকারী হিসেবে উপস্থাপন করেছে। এসব কিছুতে যাদের অনুভূতি আক্রান্ত হয় না, তাদের অনুভূতি ছিন্নভিন্ন হওয়াই ন্যায্য।


Big Brother is watching you.

Goodreads shelf

মিনহাজ's picture

"খুনকে সরাসরি জাস্টিফাই না করলেও আপনি পারতপক্ষে ইঙ্গিত দিচ্ছেন যে আপত্তিকর কথা বললে খুন করার মধ্যে সামান্য হলেও নৈতিকতা আছে। আপত্তিকর কথা অনেকেই অনেক ইস্যুতে বলে, কারও উপর রাগ থাকলে মানুষ বাপ-মা তুলেও গালাগালি করে, সেসব ক্ষেত্রে খুনাখুনি জায়েজ না হলে এখানেও খুনাখুনি জায়েজ নয়। ব্যক্তিগত আক্রোশে যখন কেউ খুন করে, তখন সে সমাজ ও আদালত দু'টোর চোখেই ত্যাজ্য গণ্য হয়।"-- আমি পরোক্ষভাবে এমন কোন ইঙ্গিত ভুলেও দেই নাই! -_-

লিখতে চাচ্ছিলাম না, তবু লিখি। অভিজিতের মৃত্যুর পরের দুইদিন আপনি কিবোর্ড ছেড়ে কি করেছেন জানিনা। কিন্তু নিউ ইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে অভিজিতের হত্যার প্রতিবাদে একটা প্রতিবাদ সমাবেশ হয়েছে। সন্ধ্যায় -১০ ডিগ্রী সেলসিয়াসে রাস্তায় দাঁড়িয়ে আমি সেই প্রতিবাদ সমাবেশে অংশ নিয়েছি! হাসি এটা ছিল হত্যাকাণ্ডের বিরূদ্ধে আমার প্রতিবাদ। আমার বিবেক আমাকে এই হত্যাকাণ্ডকে কোন অ্যাঙ্গেল থেকেই জাস্টিফাই করতে দেয় নাই বলে আমি হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ সমাবেশে অংশ নিয়েছি! প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে এশার নামাজ পড়ে বাসায় এসেছি! কথা খুব স্ট্রেট এন্ড সিম্পল, আবারও বলি। একই কথা রাজীব হত্যাকাণ্ডের পরেও বলেছিলাম।

"আমি একজন মানুষ। একজন মানুষ হিসেবে যেকোন হত্যাকাণ্ডের বিপক্ষে আমি। প্রতিবাদ সমাবেশের খবর শুনে সেখানে প্রতিবাদ করতে গিয়েছি।"

"আমি একজন বাংলাদেশি। সেজন্যে বাংলাদেশের আদর্শ বিরোধী কোন শক্তি এখানে থাকা সমর্থন করি না। সেজন্যে জামাতে ইসলামীর রাজাকারদের বিচার চাই। সেজন্যে শাহবাগ আন্দোলনের সাথে একাত্ম ছিলাম।"

"আমি একজন ধর্ম বিশ্বাসী মানুষ। কেউ ধর্মকে আঘাত হানলে কলমের জবাব কলম দিয়েই যুক্তি দিয়েই দিচ্ছি! হাসি জ্ঞান কম আমার, তাই যুক্তি দিয়ে আঘাতের প্রতিবাদ করছি। নাহলে আইনের আশ্রয় নেই।"

বঙ্গবন্ধুর ওই কথার মতো, "আমি বাঙালি, আমি মানুষ, আমি মুসলমান।"-- সবগুলোই আমার সত্ত্বা। সবগুলোর কথাই আমি বলি। একটাও ব্যালেন্স করা নয়। হাসি না বুঝলে নাই।

মিনহাজ's picture

ভালো কথা। ফারুকীর হত্যার প্রতিবাদে আমি স্ট্যাটাস লিখেছিলাম। তবে আমরা তো ছাপোষা জনতা। আপনাদের মতো সেলিব্রিটি না। গুছিয়ে লিখতে পারি না, জ্ঞানও কম। তাই আমাদের লেখা মানুষের চোখে পড়ে না। তবে আপনাদের লেখা তো মানুষের চোখে পড়ে। আপনারা কিন্তু লিখেননি। আপনাদের লেখা একপক্ষীয়। আপনাদের আদর্শের পক্ষীয় কিছু যখন আক্রান্ত হয় আপনাদের তখনই কলম চলে। আমরা যারা ছাপোষা মানুষ তাদের কিবোর্ড সাদা চোখে সব অন্যায়ের বিরূদ্ধে চলে। সেটা অভিজিতের খারাপ-ভালো সবই দেখে। ফারুকীরও খারাপ-ভালো সবই দেখে।

হিমু's picture

আপনি যদি চোখ খুলে দেখেন, দেখবেন ফুয়াদকে কেউ চাপাতি দিয়ে কোপাতে যায় নাই। তাকে পাল্টা টিজ করেছে নানাভাবে। অনুভূতিতে আঘাতের জবাব সাধারণ লোকে কীভাবে দেয়, ফুয়াদের উদাহরণ দেখেই শিখতে পারেন তো। হাতে চাপাতি নিয়ে যাকে অনুভূতি বাঁচাতে হয়, সে একটা অসুস্থ মানুষ।

সমস্যা হচ্ছে, আপনার কাছে যেটা যুক্তি, সেটা আরেক চাপাতিওলার কাছে কটাক্ষ মনে হতে পারে। স্কেল যখন ধর্মানুভূতির, তখন সীমারেখার দাগটা আপনি মিলিতে কাটবেন নাকি ন্যানোতে, সেটা কে ঠিক করে দেবে? আপনি এখানে এসে যেটা করছেন, সেটা হচ্ছে চাপাতিওলার স্কেলটাকে হালাল করছেন।

আপনি অনুভূতিতে ব্যথা পেলে ক্ষুব্ধ হতে পারবেন না, এই কথা কেউ বলছে না। কিন্তু আপনার ক্ষোভকে আপনি ফৌজদারি অপরাধের দিকে নিয়ে গিয়ে হালাল করতে পারবেন না, এটা হচ্ছে বটমলাইন।

এক লহমা's picture

চলুক

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

সাইদ's picture

ধন্যবাদ হিমু আপনাকে চলুক
আমি এমন কিছুই লিখতে চাচ্ছিলাম।

@ মিনহাজ
আর হ্যাঁ, মাওলানা ফারুকী হত্যার পরেও তার হত্যাকান্ডকে জাস্টিফায়েড করতে দেখেছি অনেককে যে উনি প্রকৃত ইসলাম প্রচার করতেন না, ব্লা ব্লা। উনার হত্যাকান্ডটি শুধু রাজনৈতিক (জামাত যে কারণে সংশ্লিষ্ট / জড়িত) না ধর্মীয় কারণ ও ছিল। কারণ উনি সুফীবাদকে প্রাধান্য দিতেন।
শুধু জামাত না, তাবলীগ জামাতপন্থী (কওমী মাদ্রাসা) এবং হিজবুতপন্থী লোকেরাও ফারুকীকে ইসলাম বিকৃতিকারি হিসেবে চিহ্নিত করেছেন এবং তার হত্যাকাণ্ডকে অনেকটা জাস্টিফাইও করেছেন। আপনি এর প্রমাণের জন্য যে কোন তাবলীগপন্থী মাওলানা যারা ফারুকীকে চিনতেন বা তার অনুষ্ঠান এর খবর রাখতেন তাদের যে কাউকে যদি সম্ভব হয় জিজ্ঞাসা করে দেখতে পারেন।

মিনহাজ's picture

যারা মাওলানা ফারুকী হত্যা জাস্টিফাইড করতে গিয়েছেন তাদের সম্পূর্ণ বিপক্ষে আমি! আমার কথা খুব সিম্পল। এই ধরনের যেকোন হত্যার বিপক্ষে আমি। সে অভিজিৎ হোক, ফারুকী হোক আর পেট্রোল বোমা খেয়ে যাওয়া মানুষই হোক। তার হত্যাকাণ্ডের বিরূদ্ধে আমি সেসময় লিখেছিলাম, এখন অভিজিতের হত্যাকাণ্ডের বিপক্ষেও লিখেছি। হাসি

আপনাদের এক চোখা নীতিটি হলো, আপনারা শুধু একটাই লিখেন, আরেকটা লিখেন না!

হিমু's picture

মাওলানা ফারুকীর হত্যাকাণ্ডের বিপক্ষে লেখার সময়ও কি আপনি কোনো "উগ্র সুফিবাদী" নামের বিচিত্র স্ট্রম্যান পয়দা করে অনুভূতিতে ব্যথা পাওয়ার কথা লিখেছিলেন? আপনার কায়দাটাই কি এমন যে নিজেকে সকল হত্যাকাণ্ডের বিপক্ষে ঘোষণা দিয়ে চাপাতির কোপে কেউ খুন হলে "বিপক্ষে" লেখা পয়দা করতে গিয়ে নিহত কবে কারে কোথায় ক্যামনে অনুভূতিতে ব্যথা দিয়েছিলো সেই ফিরিস্তি টানা?

মিনহাজ's picture

যেটা বলা হয়নি, বোঝানো হয়নি, সেটাকে ধরে যুক্তি দিতে গেলে তো মুশকিল! -_- "অনুভূতিতে আঘাতের জবাব সাধারণ লোকে কীভাবে দেয়, ফুয়াদের উদাহরণ দেখেই শিখতে পারেন তো। হাতে চাপাতি নিয়ে যাকে অনুভূতি বাঁচাতে হয়, সে একটা অসুস্থ মানুষ। কিন্তু আপনার ক্ষোভকে আপনি ফৌজদারি অপরাধের দিকে নিয়ে গিয়ে হালাল করতে পারবেন না"- আমি কি কোন জায়গায় বলেছি যে হাতে চাপাতি নিয়ে অনুভূতি বাঁচাতে হবে? কোথাও, কোন শব্দে, কোন বাক্যে এ বিষয়ে সমর্থনযোগ্য একটা কথাও বলেছি??!! আমি তো এ বিষয়ে সম্পূর্ণ একমতই। কথার জবাব কথা দিয়েই দেয়া হবে, কলমের জবাব কলম দিয়ে। সেকথা খুব সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে। এই অপরাধকে হালাল করবার কোন ধরনের অসুস্থ চিন্তা আমার মধ্যে নেই। অভিজিতের মৃত্যুর পরে রাস্তায় দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ আপনি করেছেন কি না জানিনা; তবে অনলাইন ছেড়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে এর প্রতিবাদ আমি করেছি! কথা বলবার আগে জেনে বলবেন। যেখানে তর্কের কোন অবকাশ নেই, সেখানে শুধু শুধু গায়ে পড়ে ত্যানা পাঁচানির কোন দরকার নেই।

আবার বলেছেন, "সমস্যা হচ্ছে, আপনার কাছে যেটা যুক্তি, সেটা আরেক চাপাতিওলার কাছে কটাক্ষ মনে হতে পারে। স্কেল যখন ধর্মানুভূতির, তখন সীমারেখার দাগটা আপনি মিলিতে কাটবেন নাকি ন্যানোতে, সেটা কে ঠিক করে দেবে? আপনি এখানে এসে যেটা করছেন, সেটা হচ্ছে চাপাতিওলার স্কেলটাকে হালাল করছেন।"-- এই লাইনে এসে আপনি কিছুটা যুক্তিতে এসেছেন। আমি একমত পোষণ করি যে, আমার সীমারেখার দাগটা কে সেটা আমি নির্ধারণ করতে পারি না। তবে আইন কিন্তু পারে! দেশে ব্লাসফেমী আইন আছে। ধর্মানভূতিতে আঘাত দেবার জন্য কিন্তু লতিফ সিদ্দিকীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমার অনুভূতিতে আঘাত হানলে আমি কখনো হাতে চাপাতি তুলতে পারি না। আমি বড়জোর কিবোর্ডে লেখা লিখতে পারি, আর আমার যদি সে জ্ঞান না থাকে খুবই আঘাত লাগে তাহলে আইন ব্যবহার করে মামলা করতে পারি। একটাও অবৈধ নয়। এরপর মামলায় কোর্ট যদি নির্ধারণ করে যে সে সত্যিই অনুভূতিতে আঘাত দিয়েছিলো, তাহলে সে শাস্তি পাবে। নাহলে পাবে না। আর শেষ বিচারের জন্য সৃষ্টিকর্তা তো রয়েছেনই। হাসি কথা খুব সিম্পল। আমার চোখ খোলা দেখেই আমি লতিফ সিদ্দিকীর কথারও প্রতিবাদ করি, অন্যদের কটাক্ষেরও প্রতিবাদ করি। আপনারা হচ্ছেন সুযোগ-সন্ধানী মানুষ। যখন দেখেছেন যে, লতিফ সিদ্দিকীর পক্ষে কথা বললে তো ব্যাপারটা জন আবেগের বিপক্ষে চলে যাবে, তখন আপনারা চুপ থেকেছেন। আর এখন চুপ থাকছেন। হাহা!! হাসি কথা বলবার সময় মূল যুক্তিতে থাকুন। ধন্যবাদ!

হিমু's picture

আপনার "হাহা" শব্দটা বেশ ইন্টারেস্টিং। হাহা, আপনি দেখি সিরাতুল মুস্তাকিমের মতো মূল যুক্তির রাস্তাটার ট্রাফিক কনট্রোলেও বেশ পারঙ্গম। হাহা!

আপনি অভিজিতের হত্যার প্রতিবাদে যেমন রাস্তায় নেমেছেন (আপনার দাবি মোতাবেক, হাহা!), তেমনি অনলাইনে ঢুকে "উগ্র নাস্তিক" নামে এক বিচিত্র স্ট্রম্যান খাড়া করে অনুভূতিতে তারা ব্যথা দেয়, এই ব্যাপারটাকে চাপাতির উল্টো পাশ হিসেবে দাঁড় করাতে চাইছেন। এটা একটা অসততা, হাহা!

আপনার অনুভূতিতে আঘাত লাগলে আপনি চাপাতি তুলতে পারেন না, কেবল কীবোর্ড তুলে নিয়ে যে চাপাতি তোলে তার সঙ্গে কলম তোলা লোকজনকে ইকুয়েট করেন। আপনি হচ্ছেন এমনই ধান্দাবাজ, হাহা!

মজিবুর রহমান 's picture

সিলেটে "ইসলাম মানে ভায়লেন্স লিখা ছিলনা, ছিল- "ইসলাম মানে ভায়লেন্স?"
?- এর মানে বোঝেন?

সুমন চৌধুরী's picture

ধর্ষিতার পোষাক যেমন ধর্ষণের বিচারে অপ্রাসঙ্গিক, ধর্মীয় অনুভুতিতে হুমায়ুন আজাদ বা অভিজিৎ বা রাজিব আঘাত করেছে কি করে নাই, সেটা তাঁদের হত্যার বিচারে অপ্রাসঙ্গিক। সম্পূর্ণ দায় একতরফাভাবেই ধর্ষণকারীর আর খুনির। এখানে আর কোন বাড়তি কথার দরকার নাই।

পিরিয়ড।

আব্দুল্লাহ এ.এম.'s picture

মিনহাজ সাহেব,
আপনি তো "উগ্র" শব্দটির সংজ্ঞা সম্পর্কেই বিভ্রান্তিতে ফেলে দিলেন। অভিজিৎ যদি নবীজি সম্পর্কে ব্লগ কিংবা কোন বইয়ে কোন নেতিবাচক মন্তব্য করে থাকেন, তাহলেই কি তাঁকে উগ্র হিসেবে চিহ্নিত করা যায়? অভিজিৎ হয়ত তাঁর নাস্তিক্যের দর্শন প্রমানের চেষ্টায় নবীজির কোন কর্মকাণ্ডকে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গীতে তুলে ধরেছেন। এমনটা হর হামেশা করে যাচ্ছেন জাকির নায়েক সহ ইসলামপন্থী অনেক ব্লগার ও লেখক। বস্তুতপক্ষে নিজের ধর্মকে সত্য হিসেবে প্রমান করতে হলে অন্যান্য ধর্মকে মিথ্যা প্রমান না করে উপায় নাই, তাই অন্য ধর্মে বিশ্বাসী অনেক মানুষও ইসলাম কিংবা অপরাপর ধর্মকে মিথ্যা হিসেবে প্রমানের চেষ্টা করছেন। সঙ্গত কারনেই তাঁদের কাউকেই "উগ্র" হিসেবে অভিহিত করা যায় না এবং তা করাও হচ্ছে না, কেউ তাঁদের হত্যা করার কথাও ভাবছে না। কাউকে "উগ্র" হিসেবে অভিহিত করা যায় তখনই, যখন সে নিজ ভাবনার প্রতিকূল কোন কিছু যে কোন মূল্যে প্রতিহত করতে চায়, অভিজিৎ কি তেমন কিছু করেছে? যে কাজের জন্য একদল ইসলাম পসন্দ মানুষকে "উগ্র" বলা যায় না, সেই একই রকম কাজের জন্য অভিজিৎকে কেন "উগ্র" বলছেন?

দিগন্ত's picture

পড়তে পড়তে প্রশ্ন জাগল, আস্তিকদের নাহয় বিশিষ্ট ধর্মীয় চরিত্রে কালিমা-লেপনের প্রচেষ্টায় ক্ষুব্ধ হবার অধিকার আছে, তাহলে নাস্তিকদের ঠিক কিসে কিসে ক্ষুব্ধ হবার অধিকার আছে?


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

সজল's picture

কালকে হাউজ অফ কার্ডস দেখতেছিলাম। একটা এপিসোডে প্রেসিডেন্ট যীশুর মুখে থুতু মারলো। তারপর সেটা মুছার চেষ্টা করতে গিয়ে আস্ত মূর্তিটাই ভেঙ্গে পড়লো। কই, ক্রীশ্চানরা কয়জনের কল্লা ফেলছে এই পর্যন্ত?

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

ত্রিমাত্রিক কবি's picture

খ্রিস্টানরা ফেলে নাই বলে মুসলমানরা ফেলবে না? মুসলমানদের কি নিজস্ব কোনো ক্রিয়েটিভিটি, নিজস্ব চিন্তা-ভাবনা থাকতে পারে না?

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

মাসুদ সজীব's picture

মিনহাজ
আমার এক দুলাভাই আমেরিকা থেকে দেশে এসেছিলো অভিজিতদা হত্যার দুই-চারদিন আগে। তিনি অত্যান্ত ধার্মিক মানুষ (পাঁচ বেলা জামাতের সহিত নামাজ পড়েন আমার দেখা গত একযুগ)। অভিজিতদা খুন হওয়ার খবর যখন প্রকাশ পেল তখন আমার অনেক পরিচিত মানুষজন, এমনকি নিজেকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার দাবি করা কাছের মানুষজন ও বলেছে ’কি এমন লিখেছেন যে খুন করে ফেললো’। অর্থাৎ লেখার মাত্রা দিয়ে খুনের অপরাধ মাপার যে সিস্টেম আমাদের সমাজে চালু আছে তার পূ্র্ণ প্রতিফলন। আর তিনি বলেছেন “মানুষ খুন করার কোন বৈধ কারণ থাকতে পারে না”। কি লিখেছে আর না লিখেছে সেটা পড়ে দেখার কোন প্রয়োজন নেই, খুন করাই অপরাধ। খুন করা মানা যায় না।

দু-দেশের দু-ঘরনার মানুষের মনস্তাত্ত্বিক বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষন করলেই অামাদের দেশের প্রগতিশীলতা কোথায় দাঁড়িয়ে আছে সহজে বুঝা যায়। আমাদের দেশের সত্যিকার ধার্মিকরা তো দূরের কথা আপনার মতো প্রগতিশীলরাও একটা অন্যায়কে অন্যায় বলা আগে আরো কতগুলো বিষয় কে টেনে আনেন। সেখানে একজন খাঁটি ধার্মিক মানুষ হত্যাকান্ড কে সরাসরি সেটাকে অন্যায় বলে, তার পেছনে কারণ খুঁজতে যায় না, অনুভূতি কপচায় না।

অন্যায়কে সরাসরি অন্যায় বলতে শিখুন। অন্যায়কে অন্যায় বলতে গিয়ে অনুভূতিতে আঘাত দিয়েছেন, কটাক্ষ করেছেন বলার অর্থ হত্যাকান্ডকে অনেকটা বৈধতা দেওয়া আর ‍উগ্র ধর্মান্ধদের হাতে কতগুলো অস্ত্র তুলে দেওয়া।

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

আরফিন পিয়াল চৌধুরী 's picture

অভিজিৎ দার রক্তের ঋণ কোনোদিন আমরা শোধ করতে পারবো না। কিন্তু ওনার জ্বালিয়ে দেওয়া আলোর মশাল নিয়ে আমরা পৃথিবীর পথে পথে ঘুরতে থাকবো। বেঁচে থাকার একটা কারন উনি আমাকে শেখালেন- তাই এই তুচ্ছ জীবনটা ওনার আদর্শের বাণী প্রচারের জন্য উৎসর্গ করলাম।
অভিজিৎ দা আমাদের স্পার্টার রাজা লিওনাইডাস। তার আত্মত্যাগ আমাদের সবার নতুন করে যুদ্ধে যাবার প্রেরনা।
মুক্ত মনের জয় হোক-মুক্তচিন্তার আলো সবার মগজে পৌছাক-বিশ্বাসের ভাইরাসমুক্ত হয়ে উঠুক এই পৃথিবী।

অতিথি লেখক's picture

এখানে আপনার বাবার উদাহরনটি সব সমস্যার সমাধানের টনিক!ভিন্নমতে শ্রদ্ধা থাকলে এইরকম ঘটনা ঘটা অসম্ভব।আমি যেই মতবাদে বিশ্বাসী সেটাই সবচে সেরা,এর বিপক্ষে কোন যুক্তি দেয়া যাবে না,দিলে কল্লা নামিয়ে দেয়া হবে,এইরকম মনোভাব থাকলে অবস্থার পরিবর্তন অসম্ভব।তার চেয়েও বড় ব্যাপার,ভিন্ন মতকে সহজে গ্রহন করার ক্ষমতা খুব কম মানুষের আছে। নামের পাশে দুই চারটা ডক্টরেট ডিগ্রি থাকলেও এই গুন পাওয়া সম্ভব নয়।

Nitol Chandra Das

অতিথি লেখক's picture

মিনহাজ ভাই, এগুলোকে ব্যালেন্স বলা হয়, কারণ, একটা মানুষের নৃসংষ হত্যাকান্ডের পর শোক বা প্রতিবাদ করার ভাষা, বা বক্তব্যতে, তিনি ধর্মকে আঘাত করেছেন কি করেন নি এই আলাপ অর্থহীন এবং যারা ধর্মানূভুতিতে আঘাত এর কথা বলে হত্যাকান্ড ঘটায় তাদের অপরাধ কে লঘূ করে। আপনি ওই ব্যাক্তির সাথে বা নাস্তিকতা, আস্তিকতা বিষয়ক অন্য আলোচনায়, একাডেমিক বা নন একাডেমিক, যে কোন আলোচনায় এই প্রসংগ আন্তে পারেন, তাতে কোন সমস্যা নাই। কিন্তু আপনি যখন আমার হত্যা কান্ডের বিচার চাবেন, তখন আমি কেমন ব্যাক্তি বা কাকে কখন আঘাত করে কথা বলেছি, তা বলা অন্যায় ও দৃষ্টিকটু।
অনন্যা

স্পর্শ's picture

সমাধান কী?

কিয়েরেস্তেমি ফারুকীকেও এক নোটে টুপি পরতে দেখকলাম।


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

নিটোল's picture

ফায়ারফক্সের জন্য একটা এডঅন বানানো উচিত- "সুশীল ডিটেক্টর"।

_________________
[খোমাখাতা]

ভাবুক পাঠক's picture

উদাসভাই, গত কয়েকদিন ধরে ভাবছি আমাদের বাঙ্গালীদের মেরুদণ্ডগুলো কে যেন কেড়ে নিয়ে গেছে। ...নিজেকেই অপদার্থ মনে হচ্ছে... ... একটা লাইনই মাথায় ঘুরছে " কেউ নেই, কিছু নেই, সূর্য নিভে গেছে" ।

অতিথি লেখক's picture

আমার কথা হলো- অভিজিৎ রায় চরম নাস্তিক, তিনি আঘাত করেছেন ধর্মের মিথগুলোকে- এটা জানার পরও কারা সাথে আছেন? এটাই। আর কিছু না।

ওই যে, রাজিব হত্যার পর, টুপি পরে মসজিদে দৌড়াদৌড়ি আর সেই ছবি ফেসবুকে দিয়ে মুসলিম প্রমাণের আপ্রান চেষ্টা, ওই যে মতিঝিলে হেফাজত আসলে নরম নরম কথা কওয়া--- এইসব ঘটনাই আবার অভিজিৎহত্যার পিছনে দায়ি।

একটা জিনিস ভালো যে, অনেকের কৌতুককর চেহারাটা স্পষ্ট হচ্ছে।

স্বয়ম

অতিথি লেখক's picture

তুষারকে এক সময় আইডল মনে করতাম, আর এখন আফসোস করি! তবে সচলকে ধন্যবাদ দিতেই হয়, এই জাতীয় চুপা ছাগুদের চিনিয়ে দিতে সচলের জুড়ি নেই, সচলের কলম সর্বদাই সচল থাকে এদের মুখোশ উন্মোচনে!

সবচেয়ে হাস্যকর কি জানেন, চরম উদাস ভাই? এক একজন প্রগতিশীল মানুষকে মেরে ফেলার পর বাজারে ছেড়ে দেয়া হয়ঃ "বিদেশীদের কাছে বাংলাদেশকে মৌলবাদী প্রমান করতেই মহলবিশেষ এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে।" কথা হচ্ছে, যখন এ দেশে শুধু মত প্রকাশের জন্য একজন লেখককে ওপেন থ্রেট দেয়া হয়, এবং লাইকের বন্যায় ভেসে যায় চরম সাম্প্রদায়িক স্ট্যাটাসগুলি, তখন আলাদা করে মৌলবাদী প্রমানের কি দরকার পড়ে?

বস্তুত, আমরা উঠতে-বসতে-শুইতে-খাইতে-নাইতে প্রতিটি বেলায় মৌলবাদপনা করিব আর কেহ আমাদিগকে মৌলবাদী কহিলেই ভাবমূর্তি নষ্টের ষড়যন্ত্র বলিয়া প্রচার করিব!

অন্ধকূপ

ধ্রুব আলম's picture

আপনারে রাজাকার ট্যাগ দেয়া সময়ের ব্যাপারমাত্র। আর দেখলাম আপনার ফেবু একাউন্ট গেছেগা, কওমি লিগের কাজ নাকি বাঁশেরকেল্লা? ইয়ে, মানে...

আর বুয়েটের চৌদ্রিসাবদের গ্রুপে গিয়ে দেখেন, বিশাল মজা হচ্ছে। উনারা কেউ অভিজিৎ হবেন না, সেই মেধা-বুদ্ধি-মনন তো নাই-ই, হ্যাডমটাও নাই। উনার সব পরিচয় ছাপিয়ে বড় হয়ে উঠলো উনি নাস্তিক ছিলেন।

আয়নামতি's picture

চলুক
------
তুষার নামের এই মহান তার্কিক 'আসল বাঘ আর সার্কাসের বাঘ' বলতে আসলে কী বুঝাতে চাইলেন র‍্যা!
তিনিসহ তার মত যারা তারা(অধিকাংশই আসলে) সার্কাসের বাঘ, আর যারা সাহস করে সাদা কে সাদা বলে তারা আসল বাঘ শয়তানী হাসি
এক লাইন কবিতা পড়ি আসেন,

Quote:
বলে এক আর করে আর এক যারা,
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে- হরষে, এই প্রতারক কালে

তুষার আঙ্কেলের কথাবার্তায় মর্মাহত হইলেও আরেক মহান ব্যক্তির বক্তব্যে 'যেন প্রাণ আসলো ধড়ে' প্রশ্নটা নিয়ে ভাবনা চিন্তা করেছিলাম, মুক্তমনা মানেই নাস্তিক হওয়া মাস্ট? আমার এক বন্ধু বললো 'হ্যাঁ মাস্ট!' কিন্তু মাহফুজ আঙ্কেলের কথায় স্বস্তি আসলো।
ঈমান বাঁচিয়ে দেখা যাক এখন মুক্তমনা হবার জন্য কতটা কি করা সম্ভব।

অতিথি লেখক's picture

কিন্তু মাহফুজ আঙ্কেল তো বললেন অভিজিৎ রায়কে যারা হত্যা করেছে, তারা "ছহীহ ইসলাম" পালন করে না!

Emran

অতিথি লেখক's picture

অনুভূতি সবারই আছে। আর অনুভূতি থাকলে তাতে আঘাত বা চরমাঘাত লাগার ঝুঁকি থাকবেই। আপনি কে তার প্রমান আপনি আপনাকে কি হিসেবে (হিন্দু, মুসলমান, নাস্তিক প্রভৃতি) দাবী করেন তার ভিত্তিতে হবে না। আপনার সেই বিশেষ অনুভূতিতে আঘাত আসার পর আপনি কি প্রতিক্রিয়া দেখান তার ভিত্তিতেই নির্ধারিত হবে। আর কারও দেখানো প্রতিক্রিয়ার প্রেক্ষিতে আপনি আপনার প্রতিক্রিয়া কিভাবে প্রকাশ করেন তার ভিত্তিতেই বিচার করা হবে। আপনি যখন চাপাতি হাতে প্রতিক্রিয়া দেখান বা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে সেই প্রতিক্রিয়াকে সমর্থন করেন তবে বুঝতে হবে আপনি আসলে ধার্মিক, নাস্তিক বা নীতিবান কেউ নন। আপনি আসলে ধর্ম বা নাস্তিকতার লেবাসে আবৃত এক অপরাধী। সুযোগ পেলে আপনার খুন করার বা খুনকে সমর্থন করার যোগ্যতা আছে।
- পামাআলে

অতিথি লেখক's picture

মিনহাজ ভাই আপনার সব কথার সাথে একমত হতে পারিনি। আবার সবগুলোকে ফেলে দেই নি। আমি একটা কথা বলি, ধর্মীয় অনুভুতির ব্যপারটা কি মূলতো? যেমন ধরুন ইসলাম ধর্মের কথা, আপনাকে আপনার শাস্ত্র যা বলেছে আপনি তাই মেনে নিলেন এখানে কোন প্রশ্ন করা যাবে না, এই তো? এখন একজন মানুষ বিশ্লেষন করতে গিয়ে এমন কিছু যুক্তি উপস্থাপন করলো যেটাতে কিছু কিছু মানুষের মনে হবে ঘটনাটা এ রকম না হয়ে ঐ রকমও তো হতে পারতো আবার কিছু মানুষ বিনাশর্তে তার বিরোধিতা করবে।
তারপর আসি রুলস এন্ড অর্ডিন্যান্স গুলো নিয়ে । বিভিন্ন মত ও পথের সম্মিলন ইসলামেও আছে কিন্তু কোন সুনিদ্দিষ্ট গোষ্ঠি তার নিজস্ব মত ছাড়া বাদ বাকী মতগুলোকে ও অন্যান্য ধর্মগুলোকে বাতিল করে দিতে চাইছে। কেন?
আমার প্রশ্ন, যত ধরনের কঠোর খোচা ই দেওয়া হোক না কেন আপনি সহ্য করতে পারবেন না বলে কি খুন করবেন? তাহলে খুনের অধিকার কে দিল? শাস্ত্র? নাকি ঈশ্বর?
যাক, সচলের মধ্যে মাহবুব লীনেন দা মহাভারত নিয়ে একটা বিশ্লেষন ধর্মী গবেষনা করেছেন । এখন তার কথাগুলো আমার মতে হয় নি বলে কি আমি তার কল্লা ফেলে দেব?
আমি অনেক কিছুই হয়তো বললাম । সব শেষে স্বামী বিবেকানন্দের একটা উক্তি বলি যেটা আমি সবসময় মনে রাখি যুক্তিকে শান দেওয়ার জন্য:
উক্তিটা হলো ” আমি আমার গুরুর বা অবতারপুরুষের সমালোচনা নি:সন্দেহে করতে পারি কিন্ত এই সমালোচনার করার কারনে গুরুর প্রতি বা অবতার পুরুষের প্রতি আমার ভক্তি বিন্দু পরিমান ও হ্রাস পাবে না”
--------------------
রাধাকান্ত

চরম উদাস's picture

সবাইকে ধন্যবাদ মন্তব্য করার জন্য। মনটা ভালো নেই, আলাদা করে মন্তব্যের উত্তর দেয়ার শক্তি, ইচ্ছা, উৎসাহ কোনটাই নেই। অনেকেই মন্তব্যের ঘরে সুন্দর সুন্দর যুক্তি দিয়ে উলুবনে মুক্ত ছড়াচ্ছেন। আমার সেই শক্তি নেই, ক্ষমা করবেন।

আব্দুল্লাহ এ.এম.'s picture

ঠিক উলুবনে মুক্তো ছড়ানো নয়, মন্তব্যগুলোর মাধ্যমে আসলে সবাইকে দুটো মেসেজ দেয়া। এক- এই পৃথিবীতে তো বটেই, এমনকি এই বাংলাদেশেও কতিপয় ছাগলের পাশাপাশি কিছু মুক্তবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষও আছেন। দুই- ছাগলেরা পাগল হয়ে উঠলেও, হিংস্র শ্বাপদের মত তাদের চোয়ালে তীক্ষ্ণ শ্বদন্ত গজিয়ে উঠলেও মুক্তবুদ্ধিসম্পন্ন সেই মানুষগুলো নির্বাক নিস্তব্ধ হয়ে থাকবে না। প্রয়োজনে আবার জড়ো হবে শাহবাগে, প্রয়োজনে আবার সংগঠিত হবে মুক্তির যুদ্ধে।

চরম উদাস's picture

চলুক
আপনার কথা ঠিক। দুঃখিত একে উলুবনে মুক্তা বলার জন্য। মন, মেজাজ, মাথা কোনটাই ঠিক নেই। এর মধ্যে লোকজন এসে খালি এই হত্যা নিয়ে বললেন, ওই নিয়ে বললেন না, এই সমস্যার কথা বললেন, ওই সমস্যার কথা বললেন না ... এই একই পুরান ত্যানা নিয়ে ঘ্যানঘ্যান করে গেলে আরও মাথা ঠিক রাখতে পারিনা। মাওলানা ফারুকী, লতিফ সিদ্দিকী দুজনের ঘটনার সময়েই আমার যা বলার বলেছি, দু লাইন লিখে হলেও প্রতিবাদ করছি। অভিজিৎদার রক্তের দাগ এখনও শুকায়নি, তার জন্য কথা বলার আগে আমাকে মাওলানা ফারুকী, লতিফ সিদ্দিকীকে নিয়ে কি কি বলেছি তার ক্লিয়ারেন্স নিয়ে এসে তারপরে মিনমিন করে কেন বলতে হবে - ভাই ঐগুলা একটু বিচার কইরেন, তারপরে সময় পাইলে অভিজিৎদা এর ব্যাপারটাও একটু দেইখেন। এইসব ধান্দাবাজ আবালের সাথে কথা বলা তাই সময় নষ্ট মনে হয়। অভিজিৎদাকে নিয়ে কথা বলতে যাবেন তারা বিশ্বজিৎ, ফেলানি, গাজা থেকে শুরু করে যত কিছু আছে সব নিয়ে এসে হাজির করে ঝাড়ি দিবে - কেন এইটা দিলেন না, কেন ওইটা করলেন না। সত্য সহজ ... এদের বিশ্বজিৎ, অভিজিৎ, ফেলানি, লতিফ সিদ্দিকী, মাওলানা ফারুকী এদের কারো জন্যই বিন্দুমাত্র কোন অনুভূতি নেই। একটাকে ঢাকার জন্য অন্যটা ব্যবহার করে শুধু।

তবে আপনার কথা ঠিক, এসব লোকের কথার জবাব দেয়ার দরকার আছে। আমাদের পাল্টা যুক্তি এদের হেলমেট লাগানো মাথায় ঢুকবে না, তবে আরও অনেকে নীরব শ্রোতা আছে। তর্ক বিতর্ক থেকে নিজের বিবেক বুদ্ধিমতো ঠিকটা বেছে নিবে হয়তো।

মাসরুফ হোসেন's picture

আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে যেটুকু বুঝলাম,মিনহাজ ভাই আর বাকিরা অন্ততঃ একটা বিষয়ে একমতঃ কটাক্ষের বদলা খুন সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য- মনে হয় এটা নিয়ে উনাকে নতুন কিছু বলার প্রয়োজন নেই। তবে উনি যে হিপোক্রেসি, সুবিধামূলক নীরবতা ইত্যাদির কথা বললেন সে ব্যাপারে কথা বলা যেতে পারে, যেমন নীচের লাইনটিঃ

///আপনারা হচ্ছেন সুযোগ-সন্ধানী মানুষ। যখন দেখেছেন যে, লতিফ সিদ্দিকীর পক্ষে কথা বললে তো ব্যাপারটা জন আবেগের বিপক্ষে চলে যাবে, তখন আপনারা চুপ থেকেছেন। আর এখন চুপ থাকছেন। হাহা!!///

এস এম মাহবুব মুর্শেদ's picture

টুপির উদাহরণটি খুব অ্যাপ্রোপ্রিয়েট। সবাই যে যার পিঠ বাঁচাতে ব্যাস্ত।

অতিথি লেখক's picture

চরম দা , আপনার লেখা পাইলেই ক্ষমা করুম, না হইলে করুম না!

------------
রাধাকান্ত

গগন শিরীষ's picture

মাহফুজ ভাইঃ আমি মুক্তমনা নই,আপনার মতই বদ্ধমনা।মোটামুটি প্র্যাকটিসিং মুসলিম বলতে পারেন। আমিও আপনার মতই অভিজিৎ রায়ের বিভিন্ন বিষয়ে চমৎকার সব লেখা পড়ে মুগ্ধ হয়েছি, আবার কখনো কখনো ধর্ম বিষয়ে তার নির্মম সমালোচনায় আহত হয়েছি। তার সব সমালোচনার সাথে একমতও হতে পারিনি।কিন্তু যখন তার লেখা মুগ্ধ হয়ে পড়তাম তখন ভাবতে যেতাম না যে তিনি কবে কোন লেখায় আমাকে আহত করেছিলেন।ঠিক একইভাবে যখন আহত হতাম,তখন ভাবতে যেতাম না যে তিনি কোন লেখায় আমাকে মুগ্ধ করেছিলেন।সেই কারনেই তিনি নেই জানার পরই বুকের ভেতর একটা দুঃখ দলা পাকিয়ে আছে।মত প্রকাশের অপরাধে একজন মানুষকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে,এটি আমার বুকে শুধুই হাহাকার জাগায়।এ মহবিশ্বের বিলিয়ন বিলিয়ন গ্যালাক্সির ট্রিলিয়ন নক্ষত্রে অনেক কিছুই ঘটে চলছে, তার জন্য এই হাহাকার কমার কোন কারন দেখছিনে।

গগন শিরীষ 's picture

মিনহাজ ভাই,মন্তব্যটি আপনার উদ্দেশ্যে ছিল।অন্যমনস্ক হয়ে মাহফুজ লিখে ফেলেছি বলে দু:খিত!

অতিথি লেখক's picture

চলুক

রাসিক রেজা নাহিয়েন

রানা মেহের's picture

আপনার বাবার প্রতি শ্রদ্ধা থাকলো।
আগে যেমন গানের ক্ষেত্রে বন্দনা থাকতো উত্তর দক্ষিন চাঁদ সূর্য সবাইকে জানিয়ে
তেমনি অভিজিতদা হত্যার প্রতিবাদ করার জন্য আসলে আগে একটা বন্দনা দিতে হবে
সাগর রুনি, ফারুকী, বাসে বোমা হামলা আরো সব হত্যাকান্ডের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে।

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

অতিথি লেখক's picture

এই দেশ মরা পোড়া ঠাডার দেশ।
এখানে স্বাভাবিকের চেয়ে অস্বাভাবিক মৃত্যুই বেশি হয়।
আমরা গা বাঁচিয়ে চলি। আমি নিজে যাতে না মরি।
বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ আত্মকেন্দ্রিক। আর সাম্প্রদায়িক লোকদের জন্যই যত্তসব গন্ডোগোল।
শান্তির মা মরে গেছে কবেই।
তবু শান্তি ফিরে আসুক।
এই প্রত্যাশাই করি।

ফয়সাল সিকদার

Post new comment

The content of this field is kept private and will not be shown publicly.