(দৈনিক বাংলা, ৪ঠা ডিসেম্বর, ১৯৭২) ৫৯ সালের শেষদিকেই বঙ্গবন্ধু আন্ডারগ্রাউন্ড সেল গঠনের নির্দেশ দেন - ফজলুল হক মনি

শেহাব's picture
Submitted by shehab on Thu, 11/09/2014 - 11:24pm
Categories:

১৯৭২ সালের দৈনিক বাংলায় প্রকাশিত হওয়া ফজলুল হক মনির এই সাক্ষাৎকারটি মনে হল এই সময় প্রাসংগিক। তাই দিয়ে দিলাম। এই ইমগুর লিংকে আরো ভালো রেজ্যুলুশনে এটি পড়া যাবে।


Comments

সুবোধ অবোধ's picture
নজমুল আলবাব's picture

মনির নয় মনি

শেহাব's picture

ধন্যবাদ, ঠিক করে দিয়েছি!

এক লহমা's picture

চলুক

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

সাক্ষী সত্যানন্দ's picture

তৎকালীন সব পত্রিকাটিং নিয়ে অনলাইন আর্কাইভ দরকার

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

ইয়াসির আরাফাত's picture

চমৎকার হাততালি হাততালি

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর's picture

যদিও এটাই সবাই বলবে যে 'বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা চান নি!' হাসি

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

রাজিব মোস্তাফিজ's picture

শারমিন আহমদের বই 'তাজউদ্দীন আহমদ নেতা ও পিতা'-তে বঙ্গবন্ধুর পার্সোনাল এইড হাজী গোলাম মোরশেদের সাক্ষাৎকার পড়লাম। হাজী গোলাম মোরশেদ হচ্ছেন সেই ব্যক্তি যিনি ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চের রাতে বঙ্গবন্ধুকে ছেড়ে যেতে অস্বীকার করেন এবং তাঁর সাথেই পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়ে পরবর্তী সময়ে অপরিসীম নির্যাতনের শিকার হন। তিনিই ওইদিন রাত বারোটার দিকে একটি ফোন রিসিভ করেন যেখানে বলা হয় --"আমি বলদা গার্ডেন থেকে বলছি। মেসেজ পাঠানো হয়ে গিয়েছে, মেশিন নিয়ে কী করব?" উনি বললেন মেশিনটা ভেঙে ফেলে পালিয়ে যেতে বল।' বঙ্গবন্ধু বললেন মেশিনটা ভেঙে পালিয়ে যেতে। আমি তাকে (বার্তা প্রেরক) সে কথা বললাম। তিনি দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বঙ্গবন্ধুর পরিবারকে পাকিস্তান বাহিনীর কবল থেকে মুক্ত করার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন ১৯৭১ এর ১৭ই ডিসেম্বর । বঙ্গবন্ধু ফিরে আসার পর তিনি Honorary Aide to the Prime Minister হিসেবে কাজ শুরু করেন কিন্তু এক সময় সে পদ থেকে পদত্যাগ করেন। পদত্যাগপত্রে তিনি এক জায়গায় তিনি বঙ্গবন্ধুকে বলেন যে, '১৯৬১ তে আপনার নির্দেশে আমি তৈরি ছিলাম'। এ প্রসঙ্গে লেখক তাঁকে বিস্তারিত জিজ্ঞেস করলে তিনি নিচের কথাগুলো জানান -- " ১৯৬১ সালেন মাঝামাঝি সময় আমাকে জানানো হলো যে মুজিব ভাই ভারত সীমান্তে যাবেন এবং সেখান থেকে বাংলাদেশে স্বাধীন করার প্রচেষ্টা শুরু করবেন। পূর্ব পাকিস্তান ও ভারত সীমান্তের কোনো জায়গায় ক্যাম্প করে আমরা বাংলাদেশ স্বাধীনের আন্দোলন শুরু করব এবং ভারত সরকার আমাদের সাহায্য করার আশ্বাস দিয়েছে। মুজিব ভাই (বঙ্গবন্ধু), সিএসপি রুহুল কুদ্দুস, সিএসপি আহমেদ ফজলুর রহমান, মহম্মদ মোহসীন(আওয়ামী লীগের ট্রেজারার- খুলনা) ও আমি এই প্ল্যানে ছিলাম। পাকিস্তান আমলের একমাত্র হিন্দু সিএসপি,নামটা মনে নেই, উনি আশ্বাস দিয়েছিলেন যে আমরা যদি স্বাধীনতার মুভমেন্ট করতে চাই, ভারত সরকার সাহায্য করবে। He was a link between Ahmed Fazlur Rahman and ours. উনি একসময় বরিশালের ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন। আইউব খান মার্শাল ল জিরি করার পর উনি পূর্ব পাকিস্তান ত্যাগ করে পশ্চিমবঙ্গে ট্রান্সপোর্ট কমিশনার হন। ১৯৬১ সাল থেকে আমরা স্বাধীনতা মুভমেন্টের প্রস্তুতি নিতে থাকি। তারপর নাইনটিন সিক্সটি টু'র সেকেন্ড কি থার্ড উইকে মুজিব ভাইয়ের শ্যালক, হাসুর মামা(প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) মহম্মদ আলী যশোরে আমার কাছে চিঠি নিয়ে আসলেন। ওখানে এয়ারফোর্সের রিটায়ার্ড অফিসার মিজানুর রহমানের একটি দোকান ছিল। সে দোকানে তিনি মিজানুর রহমানকে বললেন যে উনি টুঙ্গিপাড়া থেকে এসেছেন এবং গোলাম মোরশেদের বাসা খুঁজছেন। মিজানুর রহমান বাসা দেখিয়ে দেয়ার পর মহম্মদ আ্লি আমার বাসায় গেলেন। আমি তখন বাসার বাইরে। আমি বাসায় ঢোকার মুখে মিজানুর রহমান বললেন যে টুঙ্গিপাড়া থেকে এক ভদ্রলোক আপনার সাথে দেখা করতে এসেছেন। তারপর বাসায় ঢোকার পর মহম্মদ আলি একটা স্লিপ দিলেন। ঐ স্লিপে মুজিব ভাই লিখেছিলেন 'আমি কয়েকদিনের ভেতর আসছি। তুমি তৈরি থেকো।' অর্থ হলো যে আমি গাড়ি নিয়ে রেডি থাকবো। উনি সোজা সাদিপুর বেনাপোলের বরডার দিয়ে আমাকে নিয়ে ভারতে ঢুকবেন। That was the original plan. আমি তখন মহম্মদ আলীকে বললাম যে মুজিব ভাইয়ের সাথে কথা বলব, তারপর জানাব। কারণ ব্যাপারটা ছিল হাইলি সেনসিটিভ। আমি মহম্মদ আলীকে আগে দেখিনি, আবার মুজিব ভাইয়ের হাতের লেখাও চিনতাম না। যার জন্য বিশ্বাস করাও মুশকিল ছিল। যেজন্য আমি ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। তারপর তখন ফোনও ছিল না এবং যোগাযোগ ব্যবস্থাও তখন এত উন্নত ছিল না যে, তাড়াতাড়ি যোগাযোগ করব। যাই হোক, এদিকে আমাকে না পেয়ে, মুজিব ভাই around third week of February, কুমিল্লা দিয়ে ইন্ডিয়াতে কসবায় পৌঁছে গেলেন। আগরতলায় উনি যাননি। কসবা থেকে উনি দিল্লির সাথে যোগাযোগ করলেন। তখন দিল্লি থেকে উত্তর আসলো 'Sorry we cannot help you.' তখন উনি ঢাকায় ফিরে আসলেন। এসে শুনলেন পুলিশের ডিআইজি ওনাকে খুঁজছেন। উনি বললেন, 'আপনারা নাকি আমাকে খুঁজছেন?'ওনারা বললেন আপনার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট আছে।" তারপর পুলিশ ওনাকে অ্যারেস্ট করল। মুজিব ভাই অ্যারেস্ট হবার পর আমার মামা যশোরের শহীদ মশিউর রহমানের কাছে আমি ব্যাপারটা ডিসক্লোজ করি। আমার তখন চিন্তা হল যে শেখ সাহেব যে অ্যারেস্ট হলেন তাতে কি মুভমেন্ট ফেল হলো? তখন দু-এক মাস পরেই কোলকাতা গেলাম খোঁজ নিতে। ওখানে হোম মিনিস্টার কালীপদ মুখার্জির সা্থে দেখা করি। জেল মিনিস্টার ড: জীবন রতন ধরের মাধ্যমে তার সাথে আমার যোগাযোগ হয়। ইস্ট পাকিস্তান ত্যাগের আগে ড. জীবন রতন ধর, যশোর ডিস্ট্রিক্ট কংগ্রেস কমিটির প্রেসিডেন্ট ছিলেন তখন ওনার সাথে জানা শোনা হয়। যাই হোক, হোম মিনিস্টার কালীপদ মুখার্জি আমাকে তিন চারদিন অপেক্ষা করতে বললেন। আমি অপেক্ষা করলাম। উনি দিল্লি থেকে সংবাদ নিয়ে আমাকে বললেন 'Nehru has refused to help'

শেখ সাহেব বাষট্টির অগাস্ট বা সেপ্টেম্বরের প্রথ সপ্তাহে ছাড়া পেলেন। আমি যশোর থেকে ঢাকায় গেলাম ওনার সাথে দেখা করতে। তখন উনি কসবাতে যাওয়ার ঘটনা বললেন। উনি বললেন 'কসবাতে আমি দু-তিন দিন ছিলাম প্রধানমন্ত্রী নেহরুর জবাবের অপেক্ষায়, কিন্তু আমাকে জানানো হলো যে দিল্লি থেকে বলেছে 'Sorry we can't help you.'

তো দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশ স্বাধীন করার জন্য চেষ্টাচরিত্র বঙ্গবন্ধু অনেক আগে থেকেই শুরু করেছিলেন। আমার এক চাচা আছেন আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার আসামী। তাঁকে আমি একবার জিজ্ঞেস করেছিলাম যে ওই মামলা সত্য ছিল কিনা অর্থাৎ তারা আসলেই কোন পরিকল্পনা করেছিলেন কিনা। তিনি বলেছিলেন যে করছিলেন!

----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!

শেহাব's picture

যারা একাত্তরে তরুণ ছিলেন এবং এখন দাবী করেন কোন প্রস্তুতি ছাড়াই মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়েছিল তারা মনে হয় বাহাত্তরে পত্রিকা পড়তেন না।

অতিথি লেখক's picture

Quote:
যারা একাত্তরে তরুণ ছিলেন এবং এখন দাবী করেন কোন প্রস্তুতি ছাড়াই মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়েছিল...

এই দাবী সাম্প্রতিক না। বামপন্থীরা ১৯৭০-র দশক থেকেই এই কথা বলে আসছে যে সশস্ত্র সংগ্রামের জন্য আওয়ামী লীগের কোন পূর্বপ্রস্তুতি ছিল না। আহমদ ছফার মত সূক্ষ্ম এবং সতর্ক পর্যবেক্ষক ১৯৭৭ সালে রচিত "বাংলাদেশের রাজনৈতিক জটিলতা" (পুনঃপ্রকাশ ২০০৭) লিখেছেনঃ

Quote:
আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ শেষ পর্যন্ত বিশ্বাসই করতে পারেন নি যে তাঁরা সত্যি সত্যি পাকিস্তানি ধর্মতান্ত্রিক রাষ্ট্রকাঠামো থেকে বাংলাদেশকে বের করে আনার জন্য পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সঙ্গে একটি সম্মুখ সমরে অবতীর্ণ হতে যাচ্ছেন। তাঁদের দৃষ্টি যদি পূর্ব থেকে স্বচ্ছ থাকত, তাহলে সে সম্বন্ধে পূর্বপ্রস্তুতিও তাঁরা গ্রহণ করতেন। বাঁশের লাঠি দিয়ে ঘরে ঘরে দুর্গ তৈরির 'যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা' ঘোষণার বদলে অন্য কোন কার্যকর পন্থা অবলম্বন করতেন...'যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা'র পরিণতিস্বরূপ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ পায়ে হেঁটে সীমান্ত পেরিয়ে আশ্রয় ভিক্ষা করতে ভারতে চলে যেতে বাধ্য হল। এতে কারো পূর্বপরিকল্পনা ছিল না, ঘটনার নিয়মে ঘটনাটি ঘটে গিয়েছে।

সুত্রঃ

ছফা, আহমদ (২০০৭) বাংলাদেশের রাজনৈতিক জটিলতা। সঙ্কলিতঃ খান, সলিমুল্লাহ (সম্পাদনা), বেহাত বিপ্লব ১৯৭১। ঢাকাঃ অন্বেষা প্রকাশন। পৃষ্ঠাঃ ৮৯-১৩৯।

Emran

হিমু's picture

সমস্যা হচ্ছে ছফা আর ছফামার্কা লোকজন বিকল্প রণকৌশল প্রস্তাব করে না। আম্লীগ নাহয় আবুধা ছিলো, ছফার দল ১৯৭১ সালে তো জোয়ান ছিলো, তারা যদি এতোই বেশি বোঝে, নিজেরা আম্লীগের মুখের দিকে না তাকিয়ে থেকে কোনো রণকৌশল অবলম্বন করে নাই কেন?

অতিথি লেখক's picture

Quote:
সমস্যা হচ্ছে ছফা আর ছফামার্কা লোকজন বিকল্প রণকৌশল প্রস্তাব করে না।

তাঁরা তো সেই সময় বিপ্লবের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। বিপ্লবকে হাইজ্যাক করলো বলেই না আওয়ামী লীগের উপর তাদের এত রাগ!

Emran

রাজিব মোস্তাফিজ's picture

যে সাংবাদিক শেখ মণির সাক্ষাৎকার নিয়েছেন তিনিও যুদ্ধকালীন বাংলাদেশ সরকারের সাথে মুজিব বাহিনীর সম্পর্কের ব্যাপারে প্রশ্ন করতে ভুলে গেছেন

----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!

Post new comment

The content of this field is kept private and will not be shown publicly.