"উগ্র"ভুদাই

অরফিয়াস's picture
Submitted by arfias on Tue, 22/04/2014 - 6:41am
Categories:

[উগ্রভুদাই = যুক্তি ছাড়াই জায়গা-বেজায়গায় "উগ্র" শব্দ জুড়ে দিয়ে নিজেকে ভুদাই (বলদ) হিসেবে প্রমান করে যে ব্যক্তি।]

ঈশ্বরে বিশ্বাস-অবিশ্বাস, ধর্ম পালন- না পালন, নাস্তিক-আস্তিক নিয়ে বছরের বেশিরভাগ দিন মাঠ গরম থাকে আমাদের দেশে। শাহবাগকে কেন্দ্র করে গণজাগরণের সময় ব্লগার রাজীবের হত্যাকাণ্ডের পরে অধিকাংশ মানুষের "টুপি পরিধান" এবং তার পরবর্তী হেফাজতে ইসলামের মত ধর্মীয় উগ্রপন্থী দলের উত্থানের মাধ্যমে নাস্তিক-আস্তিক বিতর্ক হালে বাতাস পায় যথেষ্ট ভালভাবে। হেফাজতে ইসলামের মূল দাবিই ছিল নাস্তিক ব্লগারদের শাস্তি। তাদের সাথে সুর মিলিয়ে নানা রাজনৈতিক দল থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন শ্রেণীর মুমিনরা তাল মিলিয়ে গেছে। কিছুদিন আগেই আবার হেফাজতে ইসলামের "নাস্তিক কতল" এর আহ্বানে নড়েচড়ে বসেছে অনেকে।

নাস্তিক আসলে কি? মানুষ না অমানুষ? খায় না মাথায় দেয়? অধিকাংশ মানুষের কাছে নাস্তিক শব্দটি গালির সমতুল্য। প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে নাস্তিকতার প্রসঙ্গ তুলে বিতর্কের মূল বিষয়কে পরিবর্তন করা এখন হালের ফ্যাশন। অনেকের কাছে নাস্তিক আবার খুনি-ধর্ষকের থেকেও খারাপ বস্তু। বলার প্রয়োজন থাকেনা যে, অশিক্ষিত মানুষ না জেনে-বুঝে তাল মেলালেও শিক্ষিতরা জেনে বুঝেই এই তালে তাল মিলিয়ে যাচ্ছে নিজেদের পিঠ বাঁচাতে। কিন্তু এই সংস্কৃতির পরিবর্তন আবশ্যক, ব্যক্তিস্বার্থে হোক কিংবা দেশের স্বার্থে হোক।

একজন মানুষ মাত্রই তাকে ঈশ্বরে বিশ্বাস করতে হবে, কোন একটি নির্দিষ্ট ধর্মের অনুসারী হতে হবে, এই ধরনের মানদণ্ড যারা মাথায় রাখেন তারা আমার দৃষ্টিতে ধান্দাবাজ। মানুষকে ধর্ম এবং এ সম্পর্কিত নানা শ্রেণিতে বিভাজিত করে নিজেদের ফায়দা হাসিলের একটি চিন্তা আবশ্যকভাবে এদের মাথায় থাকে। কোন কারন ছাড়াই যুক্তি-বিশ্লেষণ-প্রমানের তোয়াক্কা না করে এরা শুধুমাত্র অন্ধবিশ্বাসের ভিত্তিতে নিজের এবং সকলের কর্মকাণ্ড যাচাই করার ঔদ্ধত্য প্রদর্শন করে থাকে। নাস্তিক মাত্রই এদের বিশেষ গাত্রদাহের কারন।

একজন ব্যক্তি সৃষ্টি এবং সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাস করবেন কি করবেন না, ধর্ম পালন করবেন কি করবেন না, এটা সম্পূর্ণভাবেই তার ব্যক্তিগত বিষয়। "বিশ্বাস" কারো উপর চাপিয়ে দেয়া যায় না, যদি চাপিয়ে দেয়া হয় তাহলে তা আর বিশ্বাস থাকেনা। বিশ্বাসকে মানুষের উপরে চাপিয়ে দেয়া শোষণের একটি হাতিয়ার মাত্র। কিন্তু যুগের পর যুগ ধরে এর চর্চা করা হয়েছে। শুধু তাই না, শক্তিশালী গোষ্ঠী এবং রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতাও পেয়েছে এই প্রক্রিয়া।

মোটাদাগে, ঈশ্বরে অবিশ্বাসী একজন ব্যক্তিই নাস্তিক। যিনি যুক্তি-তর্ক-প্রমান-বিশ্লেষণের বাইরে গিয়ে শুধু বিশ্বাসের খাতিরেই ঈশ্বরের অস্তিত্ব স্বীকার করেন না এবং যুক্তিবাদী চিন্তাশীল হিসেবে অবশ্যই ঈশ্বর এবং ধর্মের ধারনাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেন। অনেকেই আস্তিক-নাস্তিক, ধর্ম-বিশ্বাস এই বিষয়গুলোতে গভীরভাবে চিন্তা না করেই নাস্তিক হিসেবে নিজেকে জাহির করে ঠিকই কিন্তু বাস্তবে একজন নাস্তিকের শক্তি তার মুক্তচিন্তায়, সে ধর্ম এবং ঈশ্বর সম্পর্কে তার যাবতীয় প্রশ্নের উত্তর যুক্তি-প্রমানের ভিত্তিতে করতে আগ্রহী। তাই যৌক্তিক সমালোচনাবিহীন নাস্তিকতার কোন মূল্য নেই। একজন আস্তিকের সাথে মূল পার্থক্য এখানেই। ঈশ্বরে বিশ্বাসী একজন ধার্মিকের কাছে তার বিশ্বাসটাই মূল। এখানে যুক্তি কিংবা প্রমানের কোন দায়বদ্ধতা নেই। আবার একটি নির্দিষ্ট ধর্ম "ক" অবলম্বনকারীর কাছে যেমন অন্য সকল ধর্মের ধর্মীয় যুক্তি হাস্যকর এবং অপ্রয়োজনীয় একইভাবে "খ" কিংবা "গ" ধর্ম অবলম্বনকারীর কাছেও "ক" এর ধর্মীয় যুক্তি হাস্যকর এবং অপ্রয়োজনীয়। এক ধর্মের বিশ্বাসীর কাছে স্বাভাবিকভাবেই অপর ধর্মে বিশ্বাসীর "ঈশ্বর" কাল্পনিক এবং গুরুত্বহীন, আর নাস্তিকের কাছে তেমনই যেকোন ধর্মের ঈশ্বরই কাল্পনিক। রিচার্ড ডকিন্সের এসম্পর্কে উল্লেখযোগ্য একটি উক্তি হচ্ছে- “We are all atheists about most of the gods that humanity has ever believed in. Some of us just go one god further.”

ধার্মিকের ধর্মচর্চা যেমন তার ব্যক্তি অধিকারের পর্যায়ে পড়ে, তেমনই নাস্তিকের জ্ঞানচর্চাও তার অধিকারের মধ্যে পড়ে। ধার্মিক যদি জনসম্মুখে নিজের বিশ্বাস প্রচার করতে পারে, নাস্তিকেরও অধিকার থাকে যুক্তি-প্রমানের ভিত্তিতে সেই বিশ্বাসের বিরুদ্ধাচারণ করার। কিন্তু অধিকাংশ ধার্মিকই এই ধারনাটি মেনে নিতে পারেনা। ধার্মিকের বিশ্বাসের সাথে দ্বিমত করা মানেই তার ধর্মানুভূতিতে আঘাত। হাস্যকর হলেও সত্যি, শুধু আমাদের দেশে না, বহু দেশেই এই ধর্মানুভূতি বিষয়টি প্রাধান্য পায় যুক্তি-তর্কের ঊর্ধ্বে। বাংলাদেশে যেমন ৫৭ ধারার মত কালো আইন করে ধর্মীয় আগ্রাসন এবং নির্যাতনকে জায়েজ করা হয়েছে একইভাবে ব্লাসফেমি আইন করে পাকিস্তান, সৌদি আরবের মত দেশগুলোতে ধর্মানুভূতিতে আঘাতের শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত ধার্য করা হয়েছে। আশ্চর্য হলেও সত্যি নাস্তিকতার শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ড ধার্য করা দেশগুলোর সবকটিই ইসলাম ধর্মালম্বি অধ্যুষিত। মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা না করলেও অন্যান্য দেশগুলোও যে খুব বেশি ভদ্র তা নয়।

আবার রাজনীতির উপর ভিত্তি করে কোন কোন ক্ষেত্রে নাস্তিকতাও চাপিয়ে দেয়া হয়, যেমন- গণচীন। সেখানে নাস্তিকতাকে একটি পন্থা হিসেবে রাজনৈতিকভাবে চাপিয়ে দেয়ার মূল উদ্দেশ্য যৌক্তিক নাস্তিকতা না বরং সংঘবদ্ধ ধর্মীয় শক্তি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হিসেবে কম্যুনিজমের বিরুদ্ধে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে এই ভয়। তাই এখানে নাস্তিকতার চর্চা না বরং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যই মূল। এখানে নাস্তিকতাকে একটি পন্থা হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে মাত্র এবং জনগনের কাছে ভিন্ন কোন পন্থার সুযোগ নেই।

ধর্মীয় উগ্রবাদের এই আগ্রাসনের মূল শক্তিটা আসলে কি শুধুই মূর্খতা, শিক্ষার অভাব নাকি আরও বেশি কিছু?

ধার্মিক মাত্রই সে উগ্রবাদী নয়। ধার্মিক মাত্রই বোমা মেরে বিধর্মীদের উড়িয়ে দেয়ার মানসিকতা নয়। কিন্তু ধার্মিক ব্যক্তিদের মাঝে খুব কম ব্যক্তিই ধর্মীয় উগ্রবাদ-সাম্প্রদায়িকতা এই স্পর্শকাতর বিষয়গুলোর ব্যাপারে সোচ্চার। "Moderate Religious" বা মধ্যপন্থা অবলম্বনকারি ধার্মিকেরা সাধারনত তাদের ধর্মের স্পর্শকাতর বিষয়গুলো সযত্নে এড়িয়ে চলে শুধুমাত্র যতটুকুতে তাদের আত্মতৃপ্তি ঠিক ততটুকুতেই সীমাবদ্ধ থাকতে ইচ্ছুক। ভাল এবং মন্দের মাঝখানে নিজের মত একটি কমফোর্ট জোন তৈরি করে নিয়ে তারা ভারসাম্য রক্ষা করে চলে। মধ্যপন্থা অবলম্বনকারীদের বড় সমস্যা হল, তারা জানে না তাদের কমফোর্ট জোন এর পরিধি ঠিক কতটা, তাই সময় এবং ঘটনার প্রেক্ষিতে তাদের অবস্থান বদলাতে থাকে।

যারা উগ্র ধার্মিক, তারা ধর্মগ্রন্থের উগ্র কথাগুলোকেই উপজীব্য করে, নরম কথাগুলোকে উপেক্ষা করে। আর তাদের উগ্র সমাজে প্রচলিত আরো নানা উগ্র রীতি, যেমন শরিয়া, সেগুলোকেও কড়াভাবে মানে। তারা আবার বইয়ের উগ্র কথাগুলোকে উপেক্ষা করার জন্য নরম ধার্মিকদের ধর্মপালনকে অসম্পূর্ণ মনে করে, তাদের ধর্মহীন বলে গালি দেয়। নরম ধার্মিকরা এক্ষেত্রে উগ্র ধার্মিকদের সমালোচনা কমই করে। হয়ত খুব দৃষ্টিকটু একটা খারাপ কাজ হলে "এটা ঠিক ধর্মের কথা নয়, ধর্ম এসব খারাপ কথা বলে না, এই তো এই সব ভালো ভালো কথা বলে যেগুলো আমরা পালন করি" বলে দায় সারে। ধর্মের বইতে যে উগ্র কথাও লেখা আছে সেটা তারা 'অনুবাদের ভুল, ব্যাখ্যার ভুল' এসব বলে অস্বীকার করে। কিন্তু এটা সত্যি যে ধর্মের মূল গ্রন্থ বা সহায়ক গ্রন্থে ওসব উগ্র কথা লেখা থাকে বলেই উগ্র ধর্মবাদীরা সেগুলো আঁকড়ে ধরতে পারে। মৌলবাদ যদি মূলের অনুসরন করা বোঝায় তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে, ধর্মীয় মৌলবাদীরা যদি ধর্মীয় পুস্তকের পুঙ্খানুপুঙ্খ অনুসরন করে চলে এবং তা যদি উগ্রপন্থার সমতুল্য হয়, তাহলে সমস্যাটা কোথায়, মৌলবাদীর আচরণে নাকি মূল ধর্মের বিশ্বাসেই? এক হিসেবে দেখলে মধ্যপন্থা অবলম্বনকারিরাই ধর্মকে নিজের মত করে পরিবর্তন-পরিমার্জন করে ব্যবহার করে থাকে, মৌলবাদীরা না।

শুধু তাই না, মধ্যপন্থা অবলম্বনকারীদের মৌনতা উগ্রবাদীদের শক্তি যোগায় বহুমাত্রায়। এই মধ্যপন্থায় বিশ্বাসীদের মাঝে একদল আবার "উগ্র আস্তিক-উগ্র নাস্তিক" থিউরির উদ্ভাবক। ধর্মীয় মৌলবাদীদের বিরুদ্ধে প্রসঙ্গ উঠলেই তারা "উগ্র নাস্তিকতা" নামক একটি শব্দ ব্যবহার করে বিষয়বস্তুতে ভারসাম্য আনার চেষ্টা করে। কিন্তু "Militant Atheist/Atheism", "Atheist fundamentalism", "Atheist dogmatism" এবং বাংলায় "উগ্র-নাস্তিক" এই শব্দগুলোর দিকে তাকালেই বোঝা সম্ভব এদের উদ্ভাবনই হয়েছে ধর্মীয় উগ্রতা, মৌলবাদের মত বিষয়গুলোর বিরুদ্ধে ভারসাম্য তৈরি করার জন্য। এগুলো মূল শব্দগুলো নিয়ে মনগড়া কিছু শব্দ তৈরি করা ছাড়া আর কিছুই না।

ধার্মিকের উগ্রতা, কট্টরপন্থা আর মৌলবাদের উদাহরণ দেয়ার জন্য খুব বেশি পরিশ্রম করতে হয়না কারোই, হত্যা, আত্মঘাতী বোমা হামলা, ধর্ষণ, পাথর নিক্ষেপ, শিরচ্ছেদ থেকে শুরু করে ভয়ংকর সব বিষয়ের সাথেই ধর্মীয় মৌলবাদ জড়িত। ধর্মীয় মৌলবাদের ব্যবসায়িক রূপ হচ্ছে Religious terrorism বা ধর্মীয় সন্ত্রাসবাদ। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে নাস্তিকের উগ্রতা তীব্র ভাষায় লেখালেখি, যুক্তি প্রদর্শন, রম্য কিংবা খুব বেশি হলে অশ্লীল ভাষা প্রয়োগে সীমাবদ্ধ। নাস্তিকতার সাথে উগ্র শব্দটি ব্যবহার করে অনেকেই ধর্মানুভূতিতে আঘাত এর মত বিষয়কে যৌক্তিক হিসেবে প্রমান করার চেষ্টা করে থাকে যা যুগপৎ হাস্যকর, বিরক্তিকর এবং ধান্দাবাজি মাত্র। বাংলাদেশের অনেক মধ্যপন্থা অবলম্বনকারী সুশীল ধার্মিক, ৫৭ ধারার ভাল দিক উন্মোচনে যথেষ্ট পরিশ্রম করছেন তা একটু এদিক-ওদিক তাকালেই বোঝা সম্ভব। নাস্তিকতার সাথে উগ্র শব্দটি যোগ করে এক ধরনের ঘোলাটে পরিস্থিতির তৈরি করা এইসব কাষ্ঠভুদাইদের কাজ। কারন উগ্রতার মানদণ্ড বিবেচনায় ধার্মিকের সর্বোচ্চ উগ্রতা যদি হয় প্রাণঘাতী, নাস্তিকের সর্বাধিক উগ্রতা বড়জোর ধর্মানুভূতিতে আঘাত। আর এই অনুভূতিতে আঘাতের কোন পরিমাপ নেই, তাই অশ্লীল ভাষা প্রয়োগ না করে সাধু ভাষার প্রয়োগ করলেও যে একজন ধার্মিকের নাজুক অনুভূতি আঘাতে আঘাতে ক্ষতবিক্ষত হবেনা এর গ্যারান্টি কে দিবে। এই ভুদাইদের মাঝেই একটা অংশ ব্লগার রাজীব এর হত্যাকাণ্ডের সমর্থন জানাতে রাজীবের লেখাগুলো নিয়ে কাটাছেড়া করতে বসেছিল। ব্যাপারটা এরকম, অনুভূতিতে আঘাত লাগলে কল্লা নামিয়ে দেয়াটা জায়েজ। এই ভুদাইদের জন্যই ফারাবির মত খুনি মানসিকতার ধর্মীয় উগ্রবাদীরা প্রকাশ্যে খুনের হুমকি দিয়েও সগর্বে ঘুরে বেড়াতে সক্ষম। মধ্যপন্থা অবলম্বনকারীরা প্রকাশ্যে কোন ক্ষতি না করলেও উগ্রবাদীদের মানসিক শক্তি যোগাতে এদের মৌনতাই যথেষ্ট। আর রাষ্ট্র আর ধর্মের বন্ধুত্বের খাতিরে উগ্রবাদীদের পাল্লাই ভারি।

আবার অনেকেই "নাস্তিকতাও এক ধরনের বিশ্বাস" নামক ত্যানা প্যাঁচানোতে আগ্রহী। চুলের অনুপস্থিতি যেমন টাক, ঈশ্বর বিশ্বাসের অনুপস্থিতি তেমন নাস্তিকতা। নাস্তিকতাকে এক ধরনের বিশ্বাস বলা টাককে এক ধরনের হেয়ারস্টাইল বলার সমান। যা অযৌক্তিক, মূর্খতা এবং অবশ্যই সেই ধান্দাবাজির অংশ। বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে এসব কুতর্ক আর ধান্দাবাজি করা গোষ্ঠীর দুইটা ভাগ। একদল ধর্মীয় মৌলবাদ, সাম্প্রদায়িকতার প্রতক্ষ্য সমর্থক যারা একইসাথে জামায়েত এ ইসলামির মত সন্ত্রাসবাদী দলেরও সমর্থক। আরেকদল শুধু জামায়েত এ ইসলামির সমর্থক না। বাদবাকি বিষয়গুলোতে এরাও মৌনতা অবলম্বন করে অথবা পিছলিয়ে গিয়ে বিষয় পরিবর্তন করে।

প্রশ্ন হচ্ছে, নাস্তিক/নাস্তিকতা এই বিষয়টি বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের সমাজ ব্যবস্থায় কি ধরনের প্রভাব ফেলছে বা ফেলতে পারে। অথবা আদৌ কোন বিরূপ প্রভাব ফেলছে কিনা। ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশ বাংলাদেশ ধর্মনিরপেক্ষ হবে এই আশা দুরাশা। সুতরাং অবিশ্বাসীদের প্রশ্নে ঝামেলা কোথায়? ঝামেলা অবশ্যই রাজনৈতিক। অবিশ্বাসীদের মাঝে একদল ভীষণ বেয়াড়া, যারা কিনা জায়গা-বেজায়গায় প্রশ্ন করে বসে। রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সমস্যা সেখানেই। যতদিন আমজনতাকে ধর্মের আফিমে বুঁদ রাখা যায় ততদিন দেশের অন্যান্য সমস্যা নিয়ে হাউকাউ কম হয়। আর যতদিন হাউকাউ কম হয় ততদিন মানুষের চোখ থাকে বন্ধ। চোখ বন্ধ রাখতে, চিন্তার দরজায় খিল আঁটতে ধর্মের চেয়ে শক্তিশালী আর কিছু নেই। তাই বাংলাদেশের রাজনীতিতে হেফাজতে ইসলামের মত ধর্মীয় উগ্রবাদীদের প্রয়োজনীয়তা সব সময়। নাস্তিক-আস্তিক তর্কে আসর যতক্ষণ গরম রাখা যায়, ৫৭ ধারার মত আইনের প্রয়োগ যতক্ষণ করা যায় ততক্ষন নিশ্চিন্তে রাজনীতি করা যায় বৈকি।

শুধু তাই না, দেশের বিপুল জনসংখ্যার একটা বড় অংশ সমাজের উন্নতিতে কোন ধরনের ভূমিকা রাখে না। এদের সবাই শুধুমাত্র বিভিন্ন ধরনের ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত। বাস্তব জীবনে এরা প্রকৃত অর্থেই পরনির্ভরশীল। সামাজিক এবং অর্থনৈতিক উন্নতিতে ভূমিকা রাখতে অপারগ এই গোষ্ঠীর একমাত্র অবলম্বন হচ্ছে ধর্ম। আর তার জন্য প্রয়োজন শ্রোতা। কারন অশিক্ষিত কিংবা স্বল্পশিক্ষিত জনগোষ্ঠীর অজ্ঞানতার সুযোগ নিয়েই পরগাছার মত টিকে থাকে এই গোষ্ঠী। তাই যতদিন মৃত্যুপরবর্তী আসমানি জীবনের প্রাচুর্যের স্বপ্ন দেখিয়ে মানুষকে বশে রাখা যায় ততদিন নিজেদের রুটি-রুজির জোগাড় থাকে, থাকে রাজস্ব না দিয়ে আয়েসি জীবন যাপন করার অপূর্ব সুযোগ। এই সুযোগে কেউ বাগড়া দিলে উগ্রপন্থার জন্ম নিতে ধর্ম লাগে না, নিজের কাছা খুলে যাওয়ার ভয়ই যথেষ্ট। তাই কথায় কথায় নাস্তিক আর বিধর্মী কতল করার বয়ান দিয়ে আসর গরম রাখা আসলে নিজের পিঠ বাঁচানোর পন্থা ছাড়া আর কিছুই না। আর শিক্ষিত মানুষ যখন এতে সমর্থন যোগায় তখন এর পেছনে তার স্বার্থ জড়িত তা বলাই বাহুল্য।

নাস্তিকের অপরাধটা আসলে কোথায়? বিশ্বাসের বিরুদ্ধাচারণ করা তো অপরাধ হতে পারেনা। ব্যক্তি কিংবা গোষ্ঠীর ঈশ্বর-ধর্ম বিশ্বাসের বিরুদ্ধে কথা বলা যদি অপরাধ হয় তাহলে যেকোন ধর্মের একজন ধার্মিক মানুষও অন্য ধর্মের কাছে ঠিক একই অপরাধে অপরাধী। "বিশ্বাস" কখনই কোনক্ষেত্রে যাচাই-বাছাইয়ের মানদণ্ড হতে পারেনা। বিশ্বাসের জন্য প্রমান লাগেনা, যুক্তি লাগেনা, বিশ্লেষণ লাগেনা। তাই বিশ্বাসকে সম্বল করে আইন এর নির্মাণ অযৌক্তিক এবং শোষণের হাতিয়ার। আর ধর্মবিশ্বাসকে প্রাধান্য দিয়ে চলা রাষ্ট্রব্যবস্থা সেই নির্যাতন আর শোষণ এর পথ আরও সুগম করে। তাই বাংলাদেশে ৫৭ ধারার মত আইনের যেমন বাতিল হওয়া প্রয়োজন একইসাথে প্রয়োজন বিশ্বাস এবং অবিশ্বাস এই বিষয়ে মানুষের চিন্তার জট খোলা। আর বিশেষ প্রয়োজন, আমজনতার ভিড়ে উগ্রভুদাইদের চিনে রাখা কারন সময়-সুযোগে বহুরূপীর মত এরাই রং বদলায় খুব দ্রুত।

নাস্তিক-আস্তিক এই বিষয়গুলোতে কুযুক্তি এবং উগ্রভুদাইদের ত্যানা প্যাঁচানোর বিষয়ে বিশদভাবে বুঝতে হলে ঢু মারা যায় এইখানে।

আগ্রহীদের জন্য স্যাম হ্যারিস এর এই ভিডিওখানা। [গায়ের চামড়া মোটা হলে উগ্রভুদাইরাও দেখতে পারে বৈকি।]

[কার্টুনগুলো বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে সংগ্রহ করা।]


Comments

রকিবুল ইসলাম কমল's picture

Quote:
একজন মানুষ মাত্রই তাকে ঈশ্বরে বিশ্বাস করতে হবে, কোন একটি নির্দিষ্ট ধর্মের অনুসারী হতে হবে, এই ধরনের মানদণ্ড যারা মাথায় রাখেন তারা আমার দৃষ্টিতে ধান্দাবাজ।

চলুক (অথবা কাঠবলদ)

লেখায় পাঁচতারা।

অরফিয়াস's picture

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

কৌস্তুভ's picture

ধর্মের বিরুদ্ধে পষ্ট কথা বললেই লোকজনকে উগ্র-নাস্তিক ট্যাগ মারা দেখে বিরক্ত লাগে। লেখাটার দরকার ছিল, ধন্যবাদ।

নাস্তিকদের মধ্যেও, স্বাভাবিকভাবেই, নানা রকম মানসিকতা আছে। এক ধরনের লোকজন মনে করে, যার যার ধর্ম তার তার কাছে, তেমনই যার যার নিধর্মও তার তার কাছে। আমি নাস্তিক, কিন্তু আমি ধর্মের খারাপ প্রভাব দেখলেও তার প্রতিবাদ করতে আগ্রহী নই, যদি কারো খারাপ লাগে। আমি জানি ধর্ম অন্তঃসারশূন্য, কিন্তু সেটা মুখ ফুটে বলে কোনো ধার্মিককে কষ্ট দিতে চাই না। যারা সেটা বলে তারা বাড়াবাড়ি করছে, তারা উগ্র নাস্তিক। এই মানসিকতার নাস্তিকদেরই উগ্রভুদাইরা সবচেয়ে বেশি 'ভালো নাস্তিক' মনে করে।

আরেক ধরনের লোক মনে করে, ধর্ম খারাপ জিনিস, ধার্মিকদের যদি বুঝিসুঝিয়ে নাস্তিকতার পথে আনা যায় তাহলে খুব ভাল। তাই ধার্মিকদের সঙ্গে সৌহার্দ্য রাখতে হবে, যাতে তারা আমাদের কথা শোনে। যারা ধার্মিকদের মুখের উপর চ্যাটাং চ্যাটাং কথা বলে, ধর্ম নিয়ে হাসিঠাট্টা করে, তারা ধার্মিকদের চটিয়ে দিচ্ছে, তারা এই শান্তি প্রক্রিয়ার পথে বাধাস্বরূপ, তারা উগ্র নাস্তিক।

আর অন্য ধরনের লোকেরা ধর্মের খারাপ দিকগুলো দেখে দেখে খুবই বিরক্ত, তারা মনে করে স্রেফ একটা ধর্মকে বা একজন ধার্মিকের ধর্মানুভূতিকে বেশি তোল্লাই দেওয়ার কোনো দরকার নেই, জর্জ বুশ বা জুলিয়াস সীজারকে নিয়ে যেমন কার্টুন আঁকা হয় তেমনই মহম্মদকে নিয়েও কার্টুন আঁকাও একটা সাধারণ ব্যাপার; কিন্তু তা আঁকলে যখন কিছু খারাপ লোক বাধা দিচ্ছে তখন প্রতিবাদ হিসেবেই আরো বেশি করে আঁকা উচিত। এদের মতে, আমার কার্টুন আঁকার অধিকার আছে তাই আমি আঁকব, আঁকার আগে সব ধার্মিককে এ বিষয়ে দীর্ঘ ব্যাখ্যা দিয়ে আত্মপক্ষ সমর্থনের বাধ্যবাধকতা নেই। কলকে পায় না বলে এদের উপরেই উগ্রভুদাইরা সবচেয়ে চটা।

অরফিয়াস's picture

ধন্যবাদ তোমাকেও। হাসি

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

নির্ঝর অলয়'s picture

কৌ তিনটে প্রকার সুন্দর দেখিয়েছ।

আরেকটা মজার বিষয়, নাস্তিকতাকে যারা আরেকটি ধর্ম বলে প্রচার করেন, তারাই আবার এর প্রচারের ঘোর বিরোধী। ধর্ম হলে তো তার প্রচারের সুযোগ দিতে হবে নাকি? হাসি নাকি নাস্তিকতাও সনাতন ধর্মের মত প্রচারবিহীন?

নির্ঝর অলয়'s picture

"ধার্মিক মাত্রই সে উগ্রবাদী নয়। ধার্মিক মাত্রই বোমা মেরে বিধর্মীদের উড়িয়ে দেয়ার মানসিকতা নয়। কিন্তু ধার্মিক ব্যক্তিদের মাঝে খুব কম ব্যক্তিই ধর্মীয় উগ্রবাদ-সাম্প্রদায়িকতা এই স্পর্শকাতর বিষয়গুলোর ব্যাপারে সোচ্চার। "Moderate Religious" বা মধ্যপন্থা অবলম্বনকারি ধার্মিকেরা সাধারনত তাদের ধর্মের স্পর্শকাতর বিষয়গুলো সযত্নে এড়িয়ে চলে শুধুমাত্র যতটুকুতে তাদের আত্মতৃপ্তি ঠিক ততটুকুতেই সীমাবদ্ধ থাকতে ইচ্ছুক। ভাল এবং মন্দের মাঝখানে নিজের মত একটি কমফোর্ট জোন তৈরি করে নিয়ে তারা ভারসাম্য রক্ষা করে চলে। মধ্যপন্থা অবলম্বনকারীদের বড় সমস্যা হল, তারা জানে না তাদের কমফোর্ট জোন এর পরিধি ঠিক কতটা, তাই সময় এবং ঘটনার প্রেক্ষিতে তাদের অবস্থান বদলাতে থাকে।"

এই মাত্রা প্রায়ই আপেক্ষিক এবং ভঙ্গুর।
অসাধারণ লিখেছ ভাই।

অছ্যুৎ বলাই's picture

"ধার্মিক যদি জনসম্মুখে নিজের বিশ্বাস প্রচার করতে পারে, নাস্তিকেরও অধিকার থাকে যুক্তি-প্রমানের ভিত্তিতে সেই বিশ্বাসের বিরুদ্ধাচারণ করার।" - এটা হওয়া উচিত "ধার্মিক যদি জনসম্মুখে নিজের বিশ্বাস প্রচার করতে পারে, নাস্তিকেরও অধিকার থাকে যুক্তি-প্রমানের ভিত্তিতে নিজের অবিশ্বাস প্রচার করার।"

একদল আরেকদলের 'বিরুদ্ধাচারণ' করা থেকেই ঝামেলার সৃষ্টি। যার ইচ্ছা ধর্মে বিশ্বাস করুক, যার ইচ্ছা ধর্মে অবিশ্বাস করুক। একজনের বিশ্বাস অবিশ্বাসের 'বিরুদ্ধাচারণ'-এর চর্চা আখেরে ক্ষতিকর। এটা নিজের গণ্ডি ছেড়ে অপরের ইয়েতে আঙুল দেয়ার সমতুল্য। এজন্যই শফি মাওলানার নাস্তিকের কল্লা চাই, আর নাস্তিক গুরু এক্স-ওয়াই-জেডের 'ধার্মিক মানেই ভুদাই' জাতীয় উক্তির মধ্যে কোনো ব্যবহারিক পার্থক্য নাই। দুইটাই সমাজের শান্তিনষ্ট করে।

Quote:
একজন ব্যক্তি সৃষ্টি এবং সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাস করবেন কি করবেন না, ধর্ম পালন করবেন কি করবেন না, এটা সম্পূর্ণভাবেই তার ব্যক্তিগত বিষয়।

স্পট অন। এই বক্তব্যে কনসিস্টেন্ট থাকলে ধর্মে বিশ্বাস-অবিশ্বাস নিয়ে কোনো ক্যাচাল হওয়ার কথা না।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

অতিথি লেখক's picture

অবিশ্বাস কি প্রচারের বস্তু? প্রচার করা হয় ধর্ম বা মতবাদ, অবিশ্বাস কবে থেকে মতবাদ হলো। নাস্তিকেরা তো কারো ব্যক্তিগত বিশ্বাস নিয়ে প্রশ্ন তোলে না। নাস্তিকেরা প্রশ্ন তোলে সামগ্রিক ধর্মীয় মতবাদ নিয়ে, অন্ধবিশ্বাসের বিরুদ্ধে। আস্তিকেরা সেটাকে ব্যক্তিগতভাবে নেয়, ধর্মের প্রশ্নে আর কোন লজিক কাজ করে না।

ভোদাই বলা আর কল্লা চাওয়ার মধ্যে কোন পার্থক্য নেই? ভালই বলেছেন, হ্যাটস অফ। বিশ্বাসের প্রশ্নে যে আস্তিকগন লজিক ভুলে যায় তার চমতকার উদাহরণ দিলেন আপনি। ধন্যবাদ।

---ইমরান ওয়াহিদ

অছ্যুৎ বলাই's picture

Quote:
বিশ্বাসের প্রশ্নে যে আস্তিকগন লজিক ভুলে যায় তার চমতকার উদাহরণ দিলেন আপনি।

এই ধরনের ব্যক্তি আক্রমণমূলক চিন্তাধারাই এই বিষয়ে ঝামেলা সৃষ্টি করে।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

অরফিয়াস's picture

ব্যক্তি আক্রমণকে আপনি কিভাবে ব্যাখ্যা করবেন সেটাও নির্ভর করে আপনার দৃষ্টিভঙ্গির উপরে। ধরুন, আপনার পাশের বাসায় একজন সাত সকালে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের চর্চা করেন, কিন্তু আপনি সকালে দেরি করে ঘুম থেকে উঠতে অভ্যস্ত। এখানে আপনাদের দুজনের মত পার্থক্য স্পষ্ট। আপনি প্রতিবেশীকে আপনার অবস্থান ব্যাখ্যা করতে পারেন, আপনার ঘুমের গুরুত্ব তুলে ধরতে পারেন, যুক্তি দিয়ে বোঝাতে পারেন যে তার সঙ্গীত চর্চা আপনার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে। আপনার প্রতিবেশীও পারে সঙ্গীত এবং ঘুমের মাঝখানে সঙ্গীতকে প্রায়োরিটি দিয়ে তর্ক করতে। এটাকে ব্যক্তি আক্রমন বলার কিছু নেই, কিংবা নিলেও কোন অপরাধের পর্যায়ে পড়েনা।

কিন্তু আপনি কিংবা আপনার প্রতিবেশী যদি একে অপরের জানালায় ইট মেরে কাচ ভেঙ্গে দেয়ার মতলব করেন, কিংবা ইট মেরে মাথা ফাটিয়ে দেয়ার মতলব করেন কিংবা সেটা বাস্তবায়ন করেন সেটা অবশ্যই অপরাধ।

ব্যক্তি আক্রমন আর শারীরিক আক্রমন এর চিন্তাধারা ভিন্ন। শারীরিক আক্রমনকে ভাষা প্রয়োগের সাথে একসাথে একই পাল্লায় মাপার কিছু নেই।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

অছ্যুৎ বলাই's picture

Quote:
ব্যক্তি আক্রমন আর শারীরিক আক্রমন এর চিন্তাধারা ভিন্ন। শারীরিক আক্রমনকে ভাষা প্রয়োগের সাথে একসাথে একই পাল্লায় মাপার কিছু নেই।

এটা সব কনটেক্সটে সত্য না। অনেক কনটেক্সটে মানুষ বায়বীয় 'মান-সন্মান'-এর জন্য নিজের জীবনও দিয়ে দেয়। সুতরাং যতোক্ষণ ইচ্ছা কাউরে গাইলামু, গায়ে হাত দেয়া / হুমকি না দিলেই আর কোনো প্রবলেম নাই, এরকম চিন্তাধারা সঠিক না।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

অতিথি লেখক's picture

গালি দেয়া আর কারো লজিকের দুর্বলতা তুলে ধরে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়া কি এক?অবশ্য এটাও থিক, কারো যুক্তির অসারতা দেখালে সেটাকে সে তার প্রতি ব্যক্তি আক্রমণই মনে করবে। জের লজিক অলঙ্ঘ্যনীয় মনে করাটাও একপ্রকার যুক্তিহীন অন্ধত্ব।

----ইমরান ওয়াহিদ

অছ্যুৎ বলাই's picture

আপনার মন্তব্য ছিলো,

Quote:
বিশ্বাসের প্রশ্নে যে আস্তিকগন লজিক ভুলে যায় তার চমতকার উদাহরণ দিলেন আপনি

এখানে আপনি প্রথমেই আস্তিকের উদাহরণ হিসেবে ব্যক্তি আমাকে টেনেছেন। এই আলোচনার কোথাও ব্যক্তি আমি ছিলাম না।

এরপর জেনারেলাইজ করে আস্তিকগণ লজিক ভুলে যায় বলে আক্রমণ করেছেন।

আপনি আপনার যুক্তি উপস্থাপন করছেন। আমি আমার যুক্তি উপস্থাপন করছি। এখানে আপনি এবং আমি একে অন্যের বিচারক না। যারা আলোচনা ফলো করছে, তারা তাদের কাছে যেটা গ্রহণযোগ্য মনে হবে, সেটা গ্রহণ করবে। যেটা গ্রহণযোগ্য মনে হবে না, সেটা বর্জন করবে। বেসিক

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

তাপস শর্মা's picture

Quote:
এজন্যই শফি মাওলানার নাস্তিকের কল্লা চাই, আর নাস্তিক গুরু এক্স-ওয়াই-জেডের 'ধার্মিক মানেই ভুদাই' জাতীয় উক্তির মধ্যে কোনো ব্যবহারিক পার্থক্য নাই। দুইটাই সমাজের শান্তিনষ্ট করে।

ইন্টেরেস্টিং। উদাহারণ হিসেবে একজন মৌলবাদীর নাম এনে (একজন ধার্মিক গুরু অর্থে ) তার সাথে নাস্তিক 'গুরু' প্রসঙ্গ আবির্ভূত করে সেটাকে একত্রিত করে দেয়াটা দারুণ। অর্থাৎ ধার্মিকদের মৌলবাদী গুরু (শফি ) এবং একজন নাস্তিক্যতা ধারণ করা ব্যক্তি যে নাকি একজন ধার্মিককে তার ভুদাইসুলভ আচরণ করার জন্যে ভুদাই বলেন ( যেমন এই পোস্টের লেখক ) তার মধ্যে কোনো 'ব্যবহারিক' পার্থক্য নেই হাসি

শফি হুজুরদের মতো নাস্তিকদেরও তাহলে গুরু আছে। হুম। বেশ বেশ। তাহলে নিশ্চয়ই সেই গুরুর পরিচয়ও আছে, তার আখাড়াও আছে, সঙ্ঘ কিংবা আশ্রমও থাকার কথা। সেই ''নাস্তিক গুরু এক্স-ওয়াই-জেডের'' পরিচয় পেতে চাই

অছ্যুৎ বলাই's picture

Quote:
সেই ''নাস্তিক গুরু এক্স-ওয়াই-জেডের'' পরিচয় পেতে চাই

নাম লিখেছিলাম একটা, এডিট করে দিলাম। ব্যক্তি-আক্রমণ হয়ে যেতে পারে। ব্যক্তি মূখ্য না, সিম্পটম মূখ্য।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

অতিথি লেখক's picture

তাপসদা, ইনাদের কাছ থেকে কোন নাম পাবেন না। নাস্তিকগুরু বলতে এঁ্রা মূলত: আসিফ মহিউদ্দীন এবং আকাশ মালিককে বুঝিয়ে থাকেন। আসিফ মহিউদ্দীন বিতর্কিত মানুষ, তাঁ্র মোটিভ নিয়ে আস্তিক নাস্তিক নির্বিশেষে সকলেরই সন্দেহ আছে। তবে আস্তিকেরা এই আসিফকে দিয়েই নাস্তিকের উদাহরণ দিয়ে থাকেন। তাছাড়া এই ভদ্রলোক কাল্ট ঘরাণায় বিশ্বাসী। তার অনেক ভোদাই ফলোয়ার আছে। ইনি অন্যের লেখা চুরি করে নিজের বলে চালান এবং প্যাঁচে পড়লেই কেটে পড়েন।

আকাশ মালিক ঠিক তার বিপরীত। তিনি ব্লগের বাইরে কোথাও একটিভ নন। অনেক গবেষনা করে চমতকার কিছু লেখা পোস্ট করেছেন গত সাত আট বছরে। চমতকার লজিক ব্যবহার করেন। যৌক্তিক তর্কে কখনো পিছিয়ে আসতে দেখা যায় না। অনেকে আকাশ মালিকের লেখার ধারা অনুসরণ করে লেখালেখি করেন, কিন্তু তিনি কোন কাল্ট সৃষ্টি করেননি।

আস্তিকদের সমস্যা হচ্ছে, নাস্তিকতার প্রশ্নে মুড়ি মিছরি এক দর করে ফেলা। দুইজনকে এক ছাঁচে ঢেলেই তাঁ্রা নাস্তিকদের গুরু বলে প্রচার করেন। প্রচারের কাজটা নাস্তিকেরা করেন না।

----ইমরান ওয়াহিদ

অছ্যুৎ বলাই's picture

আসিফ মহিউদ্দিন কি খারাপ লোক?! একজন নাস্তিক খারাপ হয় কেমনে!

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

অতিথি লেখক's picture

আমি কোন মন্তব্যে কোথায় উল্লেখ করেছি আস্তিক খারাপ বা নাস্তিক ভাল? আসিফ একজন সন্দেহজনক, বিভিন্ন কারণে বিতর্কিত এবং স্বলেহনকারী ব্যক্তি। তাকে খারাপ লোক বলা হবে কি হবে না সেটা পাঠক চিন্তা করুক, তবে তিনি একটি পঁচা আপেল। এখন ঝুড়িতে একটা পঁচা আপেল থাকলে বড়জোর অন্য আপেলগুলো চেক করে দেখা যেতে পারে, ঝুটিভর্তি আপেলকে পঁচা ট্যাগ দেয়া লজিকাল নয়।

---ইমরান ওয়াহিদ

অছ্যুৎ বলাই's picture

আসিফ মহিউদ্দিন একজন হিটখোর খাসি। সে নাস্তিক পরিচয়ের আড়ালে লুকানোর পরে সে নাস্তিক, তাই তার পক্ষ নেয়া আর শফি মুসলমান, তাই তার পক্ষ নেয়ার মধ্যে কোনো বেসিক পার্থক্য নাই।

আসিফকে পঁচা আপেল হিসেবে ট্যাগাতে পারলে শফিকেও পঁচা আপেল হিসেবে ট্যাগানো উচিত। "শফির ১৩ দফা আর ইসলাম সমতুল্য। অতএব ইসলামকে ধোলাই করো।" - এরকম 'যুক্তি' আলটিমেটলি স্বমেহনের চাইতে গুরুত্বপূর্ণ কোনো ব্যবহারিক কাজে আসবে না, বিশেষ করে, বাংলাদেশের কনটেক্সটে।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

অরফিয়াস's picture

অছ্যুৎ বলাই,

Quote:
এটা হওয়া উচিত "ধার্মিক যদি জনসম্মুখে নিজের বিশ্বাস প্রচার করতে পারে, নাস্তিকেরও অধিকার থাকে যুক্তি-প্রমানের ভিত্তিতে নিজের অবিশ্বাস প্রচার করার।"

অবিশ্বাস প্রচার করার কিছু নেই, ভ্রান্ত বিশ্বাসের বিরোধিতা করা যায়, ধর্মের ভুল-ত্রুটি তুলে ধরা যায়, সেটাই আপনার বক্তব্য অনুযায়ী অবিশ্বাসের প্রচার হবে। কিন্তু সেটাও তো বিশ্বাসীর বিরোধিতাই হল। এক্ষেত্রে কোন মধ্যপন্থা তো নেই। আর বিশ্বাসীর বিরোধিতা করলে, বিশ্বাসী নিজের যুক্তি তুলে না ধরে কল্লা নামাতে চাইবে কেন?

Quote:
এজন্যই শফি মাওলানার নাস্তিকের কল্লা চাই, আর নাস্তিক গুরু এক্স-ওয়াই-জেডের 'ধার্মিক মানেই ভুদাই' জাতীয় উক্তির মধ্যে কোনো ব্যবহারিক পার্থক্য নাই। দুইটাই সমাজের শান্তিনষ্ট করে।

পার্থক্য অবশ্যই আছে এবং খালি চোখেই তা স্পষ্ট। মর্মার্থ খোঁজার দরকার পড়ে না এখানে। একজন হত্যার হুমকি দিচ্ছে, আর একজন আরেকজনকে বুদ্ধিহীন বলছে। দুটোর মাঝে পার্থক্য অনেক। কোন সভ্য দেশেই আপনি কাউকে হত্যার হুমকি দিতে পারেন না, তার কারন যাই হোক না কেন। হত্যা আর কটুবাক্যতে যদি পার্থক্য না পেয়ে দুটোকেই এক করে দেখতে চান, তাহলে এই সমস্যার উত্তর লেখাতেই পেয়ে গেছেন আশা রাখি।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

অতিথি লেখক's picture

ধর্মের প্রশ্নে সবথেকে লজিক্যাল মানুষটিও হাস্যকর সমস্ত কথা বলেন। বিশ্বাসের অন্ধত্ব কি আশ্চর্য্য মনবৈকল্য সৃষ্টি করে, অবাক না হয়ে থাকাটাই মুশকিল। আপনারা হয়তো আজকাল আর আমারব্লগে ঢোকেন না। ঢুকলে দেখতেন, লজিকের বিপরীতে কি হাস্যকর এন্টি-লজিক ব্যবহার করেন আস্তিক ব্লগারেরা।

----ইমরান ওয়াহিদ

অছ্যুৎ বলাই's picture

Quote:
আর বিশ্বাসীর বিরোধিতা করলে, বিশ্বাসী নিজের যুক্তি তুলে না ধরে কল্লা নামাতে চাইবে কেন?

সবাই তো আর আপনার সিস্টেমে চলবে না। 'বিশ্বাসী'র স্বাধীনতা আছে বিশ্বাস করার। আমি/আপনি যদি তার এই স্বাধীনতার বিরোধিতা করি, সে হয়তো আমার/আপনার সাথে সেটা নিয়ে জ্ঞানগর্ভ আলোচনা করার চাইতে শক্তির প্রয়োগ করাকেই শ্রেয়তর মনে করবে।

Quote:
পার্থক্য অবশ্যই আছে এবং খালি চোখেই তা স্পষ্ট। মর্মার্থ খোঁজার দরকার পড়ে না এখানে। একজন হত্যার হুমকি দিচ্ছে, আর একজন আরেকজনকে বুদ্ধিহীন বলছে। দুটোর মাঝে পার্থক্য অনেক।

দুটোর মাঝে মৌলিক কোনো পার্থক্য নাই, দুটোই ব্যক্তি আক্রমণ, দুটোই সমাজে শান্তি নষ্ট করে। একজন ধর্মে বিশ্বাস করে বলে তাকে বুদ্ধিহীন বলার রাইট কারো নাই।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

অরফিয়াস's picture

Quote:
সবাই তো আর আপনার সিস্টেমে চলবে না। 'বিশ্বাসী'র স্বাধীনতা আছে বিশ্বাস করার। আমি/আপনি যদি তার এই স্বাধীনতার বিরোধিতা করি, সে হয়তো আমার/আপনার সাথে সেটা নিয়ে জ্ঞানগর্ভ আলোচনা করার চাইতে শক্তির প্রয়োগ করাকেই শ্রেয়তর মনে করবে।

শক্তি প্রয়োগকে শ্রেয়তর মনে করতেই পারে, কথা হচ্ছে সেটা সমর্থনযোগ্য কিনা আর অনুভূতিতে আঘাত করা আর হত্যা করা/ হত্যার হুমকি দেয়া সমান কিনা?

Quote:
দুটোর মাঝে মৌলিক কোনো পার্থক্য নাই, দুটোই ব্যক্তি আক্রমণ, দুটোই সমাজে শান্তি নষ্ট করে। একজন ধর্মে বিশ্বাস করে বলে তাকে বুদ্ধিহীন বলার রাইট কারো নাই।

মৌলিক পার্থক্য এটাই যে, একটার ফলাফল প্রান সংহার পর্যন্ত হতে পারে আরেকটায় গালমন্দ। সমাজের শান্তি বিনষ্ট করে অনেক কিছু তাই বলে সব সমান মাত্রার অপরাধ না, আপনার অনুভূতিতে আঘাত লাগলে আপনি যুক্তি-তর্কের মাধ্যমে বক্তব্যের অসারতা প্রমান করুন, উল্টো সেই ব্যক্তির অনুভূতিতে আঘাত করুন। কিন্তু ঐ ব্যক্তিকে শারীরিক আঘাত করা কিংবা হুমকি দেয়া কোন তুলনায় আসেনা, স্রেফ অপরাধ।

শেষের কার্টুনটা খেয়াল করেন।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

অছ্যুৎ বলাই's picture

অপরাধের মাত্রা নির্ধারণ করা সবসময় সরলরৈখিক না। এক্ষেত্রে একমাত্র উপায় যতোদূর সম্ভব উষ্কানি পরিহার করা। আমি একজনকে গালি দিমু, তারপর তার শক্তি আছে বলে আমারে থাপড়াইলে, সেটা নিয়া কান্নাকাটি করা মানায় না।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

অরফিয়াস's picture

Quote:
অপরাধের মাত্রা নির্ধারণ করা সবসময় সরলরৈখিক না।

হত্যা আর চুরি করা সমান মাত্রার অপরাধ না, এটা বুঝতে আইনজ্ঞ হওয়া লাগে না।

Quote:
আমি একজনকে গালি দিমু, তারপর তার শক্তি আছে বলে আমারে থাপড়াইলে, সেটা নিয়া কান্নাকাটি করা মানায় না।

শক্তি আছে বলেই কারো কল্লা নামিয়ে দেয়াটা জায়েজ না, থাপড়ানোও জায়েজ না। তাহলে আইন-আদালত-থানা-পুলিশের দরকার থাকেনা, থাপড়া-থাপড়ি করেই মামলা খালাস করা যায়। কেউ গালি দিলে উল্টো গালি দেন, থাপড়াইতে গেলে ফিজিক্যাল এসালট এর কেসে ঘাড়ে ধরে জেলে ঢুকালেই হয়।

Quote:
শক্তি প্রয়োগকে শ্রেয়তর মনে করতেই পারে, কথা হচ্ছে সেটা সমর্থনযোগ্য কিনা আর অনুভূতিতে আঘাত করা আর হত্যা করা/ হত্যার হুমকি দেয়া সমান কিনা?

প্রশ্নের উত্তরটা দিয়েন।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

অছ্যুৎ বলাই's picture

হুদাই আস্তিককে গালি দেয়াও সমর্থনযোগ্য না, আর সেই গালির প্রতিক্রিয়া হিসেবে তার মাথার দাম ঘোষণা করাও সমর্থনযোগ্য না।

আপনার প্রশ্নের 'সমান' এর উত্তর, আমার মতে যে আগে ঝামেলা সৃষ্টি করবে, অপরাধ তারই বেশি। ঝামেলার উপকরণ কি, সেটা সেকেন্ডারি বিষয়।

Quote:
কেউ গালি দিলে উল্টো গালি দেন

এটা তো আগেই বললাম, দুনিয়ার সব মানুষ এক ছাঁচে তৈরি না। আপনি কাউরে হুদা গালি দিলে সে গালিটা উপেক্ষাও করে যেতে পারে, আবার আপনার কল্লাও নামিয়ে ফেলতে পারে। রিস্ক আপনার। কারণ, প্রক্রিয়াটার শুরু আপনি করছেন।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

অরফিয়াস's picture

প্রশ্নের সরাসরি উত্তরটা আবার এড়ায় গেলেন।

Quote:
আমার মতে যে আগে ঝামেলা সৃষ্টি করবে, অপরাধ তারই বেশি। ঝামেলার উপকরণ কি, সেটা সেকেন্ডারি বিষয়।

ঝামেলার উপকরণ বাদ দেন। ধর্মের বিষয়ও বাদ দেন। শুধু বলেন "হত্যা/হত্যার হুমকি আর অনুভূতিতে আঘাত (যে কোন অনুভূতি, মুরগি আগে না ডিম আগে তর্কের অনুভূতিও হইতে পারে)" সমান মনে করেন কিনা।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

অছ্যুৎ বলাই's picture

আগের মন্তব্যেই তো বললাম। অন্যের বিশ্বাসের অধিকারে আঘাত হোক আর অন্যের কল্লায় আঘাতের হুমকি হোক, যে আগে আঘাত করবে, আমার বিবেচনায় সে বেশি অপরাধী।

উপকরণ হিসেবে কোনটা বেশি খারাপ, সেটা নির্ভর করে কনটেক্সটের ওপর। কোনো কোনো কনটেক্সটে শরীরের মূল্য বেশি, কোনো কোনো কনটেক্সটে মনের। আবার কোনো কোনো কনটেক্সটে কিছু শব্দ বিরাট আকারের ক্যাচাল সৃষ্টির 'আঁঠা'ও হতে পারে। উপকরণের নিজস্ব কোনো ওজন নাই, এটা যে কনটেক্সটে ব্যবহৃত হয়, তার ওপর ব্যাপকতা নির্ভর করে।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

অরফিয়াস's picture

যদি ছবির দুই পাল্লারে সমান মনে করেন, তাইলে আর তর্ক না করি।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

ঋতানৃত তূর্য্য's picture

Quote:
অন্যের বিশ্বাসের অধিকারে আঘাত হোক আর অন্যের কল্লায় আঘাতের হুমকি হোক, যে আগে আঘাত করবে, আমার বিবেচনায় সে বেশি অপরাধী।

সেক্ষেত্রে কেউ যদি বিশ্বাস করে জিয়া স্বাধীনতার ঘোষক আর আপনি তাতে আপত্তি করেন তাহলে তো আপনি অপরাধী! আপনার অপরাধ স্বীকার করছেন কি??

অতিথি লেখক's picture

আপনি আবার কই গিয়া প্যাঁচ লাগাইলেন তূর্য্য ভাই

----ইমরান ওয়াহিদ

সুবোধ অবোধ's picture

বিশ্বাস আর ইতিহাস কি এক জিনিস??!!!! আপনার এনালজি দেখে তো পুরাই টাস্কি খাইলাম!!!! অ্যাঁ

অতিথি লেখক's picture

হে হে হে! এইখানেই তো মজা ভাইজান। ধর্ম কি ইতিহাসের অংশ না?? ৫৭০ খ্রিস্টাব্দে কোন মহাপুরুষ জন্মাইছিলো সেইটা কি আপনি ইতিহাস ছাড়াই বিশ্বাস করেন??

সুবোধ অবোধ's picture

একটা ঈমান(কোন রকম প্রমাণ ছাড়া বিশ্বাস) আরেকটা প্রমাণ। এর পরও কি গায়ের জোরে পাহাড় ঠেলবেন??

অতিথি লেখক's picture

ইশকুলের বিজ্ঞান ক্লাশে মাষ্টার সাহেব পড়াচ্ছেনঃ “মানুষের উৎপত্তি হয়েছে বিবর্তনের প্রক্রিয়ার মাধ্যমে, বানর-জাতীয় প্রাণী থেকে।“ ছাত্র দাঁড়ায়ে বলল, “সার, আমাদের ইসলামিয়াত ক্লাশে হুজুর বলছেন যে আমরা সবাই আদম আর হাওয়া থেকে আসছি।“ মাষ্টার সাহেব বললেন, “হুজুর কী বলছেন আমি জানি না; কিন্তু বিজ্ঞান প্রমাণ করেছে যে মানুষ বিবর্তিত হয়েছে বানর- জাতীয় প্রাণী থেকে।“ ছাত্রের কাছে এই কথা শুনে হুজুর ফতোয়া দিলেন, “মানুষ আদম-হাওয়া থেকে আসছে, এইটা কোরানে লেখা আছে। কোরান আল্লার নিজের কথা, এতে কোন ভুল নাই। বিজ্ঞান-মাষ্টার যখন বলে যে মানুষ বিবর্তিত হয়েছে বানর-জাতীয় প্রাণী থেকে, তখন সে কোরানকে অস্বীকার করে, আর কোরানকে অস্বীকার করা মানে আল্লাকে অস্বীকার করা। মাষ্টারের মুসলমানিত্ব খারিজ হয়ে গেছে; সে এখন মুরতাদ। আর মুরতাদের একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।“

এখানে মাষ্টারের “অপরাধ” হল সে ক্লাশে একটা ফ্যাক্ট পড়িয়েছে। কিন্তু যেহেতু সে হুজুর তথা মুসলমানদের বিশ্বাসে আঘাত করেছে, সেহেতু আপনার যুক্তি অনুযায়ী ক্যাচাল মাষ্টারই আগে লাগিয়েছে, অতএব সে অপরাধী, অতএব শাস্তি তার পাওনা। এখন হুজুরের সাগরেদরা যদি মাষ্টারের কল্লা নামায়, তাতে মাষ্টারের কান্নাকাটি করার কোন কারণ নাই। আর বেচারা মাষ্টার এই পরিণতি সহজেই এড়াতে পারতো, যদি সে বিবর্তনের কথা না বলত, অথবা বলত বিবর্তন নামে কিছু নাই--এটাই তো আপনি বলতে চাচ্ছেন, নাকি?

Emran

মেঘলা মানুষ's picture

লেখা উপভোগ্য হয়েছে, জমজমাট আলোচনাও আশা করছি পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম

Quote:
"একজন ব্যক্তি সৃষ্টি এবং সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাস করবেন কি করবেন না, ধর্ম পালন করবেন কি করবেন না, এটা সম্পূর্ণভাবেই তার ব্যক্তিগত বিষয়। "

-এটা যে ক্যানো যে বেশিরভাগ মানুষের মাথায় ঢোকে না সেটা বুঝি না।

অরফিয়াস's picture

চলুক

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

মেঘলা মানুষ's picture

বেশ অনেক কাল আগের কথা, আমার এক পরিচিত ভারতীয় খৃষ্টানের সাথে কথা হচ্ছিল, কিছু কিছু বিষয়ে সে বেশ লজিক্যাল চিন্তা করতে পারে বলে মনে হত আমার। আমাদের দেশের কোন একটা ধর্মীয় অসহিষ্ণু ঘটনা নিয়ে আলাপ হচ্ছিল।

তখন সে বলল, "আমি শুধু মুসলমানদের দোষ দিই না। দেখ, সব ধর্মই মোটামুটি একটা Shitty পর্যায়ের ভেতর দিয়ে এসেছে। কোন ধর্মই এই Shit থেকে মুক্ত না"

আমি বললাম, "কি রকম?"

-"সব ধর্মই একসময় খুব বিশ্রি কাজ করেছে, বা পরোক্ষভাবে সমর্থন করেছে। এখন কেবল মুসলিমদের মারামারিগুলো ঘটছে, তাই তুমি আমি এটা নিয়ে আলোচনা করছি। ভেবে দেখ, এক সময় ইউরোপে চার্চ কি করতে বাকি রেখেছে? উইচহান্টের পেছনেও ছিল ধর্মীয় উন্মাদনা। আবার, ভারতে একসময় সতীদাহ ছিল, নিচু শ্রেণীর উপরে অনেক বৈষম্য ছিল। এমন করে যদি তুমি সব ধর্মের ভেতরের খবর নাও, তাহলে বেশ কিছু Shitty জিনিস পাবে"

ব্যাটা মন্দ বলেনি। আর, ঐ 'জিনিস' এর ভালো প্রতিশব্দ পেলাম না, বিষ্ঠা বললে খুব একটা শ্রুতিমধুর হয় বলে মনে হল না। তাই, ইংরেজিটাই রেখে দিলাম।

[আশা রাখছি কাউকে আঘাত করে ফেলিনি। আর, এগুলো আমার কথা না; কথা পছন্দ না হলে ঐ ব্যাটাকে বকে দেবেন]।

শুভেচ্ছা হাসি

অরফিয়াস's picture

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

তারেক অণু's picture
অতিথি লেখক's picture

ব্লগে বা অনলাইন মাধ্যমে ইদানিং তৈরী হয়েছে নির্মোহ খাঁটি নাস্তিকতত্ব। আমারব্লগে প্রশ্ন উত্থাপন করাহয়েছিলো "নির্মোহ নাস্তিক'' কি বস্তু? দুই তিন দিনব্যাপী আলোচনার পর আস্তিকতের কথার সারমর্ম ছিলো, "যে সাপের চোখ নেই, শিং নেই নখ নেই, ছোটেনাকো হাঁটেনা, কাউকে সে কাটেনা"। অর্থাথ একজন খাঁটি নির্মোহ নাস্তিককে সমাজ সংসার সাওম্পর্কে উদাসীন হতে হবে, ধর্ম কর্ম সম্পর্কে কোন প্রশ্ন তোলা যাবে না ইত্যাদি ইত্যাদি। শিক্ষিত ব্যক্তিরা নিজেদের জ্ঞানের ছটায়, আমাদের আলোকিত করেন, কিন্তু সেই তাঁ্রাই যখন আস্তিক মুডে বিরাজমান হন, তখনই তাঁ্রা হাস্যকর সব লজিক দিতে থাকেন। আবার প্রশ্ন ওঠে, মুক্তমনারা কেন মুক্ত মন নিয়ে ধর্মকে দেখতে পারেন না। বিশ্বাসী এও ভুলে যান, ধর্মের মূলতত্বই হচ্ছে অন্ধবিশ্বাস। আর মুক্তমনারা অন্ধবিশ্বাসের বিপক্ষে কথা বলবেনই।

সবথেকে অবাক হবার বিষয় হলো, নাস্তিকদের প্রশ্নের ধাক্কায় আস্তকদের ব্যক্তি আক্রমণ, গালাগালি এবং ব্যান। নাস্তিকেরা যখন প্রশ্ন তোলে বা লজিক দিয়ে অসারতা প্রমাণ করতে যায়, এর বিপরীতে আস্তিকেরা লজিক দিয়ে দিব্বি জবাব দিতে পারেন, বিতর্ক করতে পারেন। কিন্তু না, তাঁ্রা বেশিক্ষন লজিক্যাল থাকবেন না, তাঁ্রা বিভিন্ন অস্ত্র ব্যবহার করবেন। কেউ গালি দেবেন, কেউ ফাঁসি চাবেন, কেউ পকেট থেকে ৫৭ধারা বের করবেন, ক্ষমতা হাতে থাকলে কেউ আবার ব্লগ থেকে ব্যান করে দেবেন। এতে কি প্রমাণিত হয়, তাঁদের বিশ্বাস আসলে কতটা ঠুনকো যে বিপরীত কথা শুনলে সে বিশ্বাস টলে যায়। তবে এমন বিশ্বাস না থাকলে কি হয়।

---ইমরান ওয়াহিদ

অরফিয়াস's picture

Quote:
সবথেকে অবাক হবার বিষয় হলো, নাস্তিকদের প্রশ্নের ধাক্কায় আস্তকদের ব্যক্তি আক্রমণ, গালাগালি এবং ব্যান। নাস্তিকেরা যখন প্রশ্ন তোলে বা লজিক দিয়ে অসারতা প্রমাণ করতে যায়, এর বিপরীতে আস্তিকেরা লজিক দিয়ে দিব্বি জবাব দিতে পারেন, বিতর্ক করতে পারেন। কিন্তু না, তাঁ্রা বেশিক্ষন লজিক্যাল থাকবেন না, তাঁ্রা বিভিন্ন অস্ত্র ব্যবহার করবেন। কেউ গালি দেবেন, কেউ ফাঁসি চাবেন, কেউ পকেট থেকে ৫৭ধারা বের করবেন, ক্ষমতা হাতে থাকলে কেউ আবার ব্লগ থেকে ব্যান করে দেবেন। এতে কি প্রমাণিত হয়, তাঁদের বিশ্বাস আসলে কতটা ঠুনকো যে বিপরীত কথা শুনলে সে বিশ্বাস টলে যায়। তবে এমন বিশ্বাস না থাকলে কি হয়।

চলুক

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

সংগ্রাহক 's picture

কোনও ধর্মের সমালোচনা করা আর সেই ধর্মকে একচোখা ভাবে ব্যাশিং(তুলা-ধুনা) করে যাওয়া কি এক জিনিস ???

যেকোনো ধর্মের সমালোচনা করতে গেলে উক্ত ধর্মের কি নিয়ে সমালোচনা করা উচিত ??
=> ঐ ধর্মের বিতর্কিত বিষয় নাকি ঐ ধর্মের নবী/দেবতাদের ব্যক্তিগত/যৌন জীবন !!

নাস্তিকেরা উগ্র হতে পারে না বলে এক ধরনের ভুল ধারণা নাস্তিকদের মাঝে প্রচলিত আছে ---> এটা পরিবর্তন করা জরুরী !!!

(ইবনে কাথির)

অতিথি লেখক's picture

ধর্ম কি ধর্মের প্রধাণ এবং প্রথম উপস্থাপক বা বিশিষ্ট প্রচারক বা দেবতার ব্যক্তি আচরণের সাথে সংশ্লিষ্ট নয়? নৈতিকতার শিক্ষা দেবেন যেই শিক্ষক, তাঁ্র নিজের নৈতিক বোধই তো সবার আগে পরিষ্কার থাকতে হবে, তাইনা? সর্ব যুগের সমগ্রর মানবজাতির জন্য যিনি নৈতিকতার শিক্ষক তাঁ্র নৈতিকতাবোধের কোথাও তো সামান্যতম কালির আঁচড় থাকার কথা নয়। অনেকেই বলেন যুগের বিচারে শ্রেষ্ঠ আচরণ, সেক্ষেত্রে সেসমস্ত আচরণগত বৈশিষ্ট বা কৃত কর্ম সে যুগের জন্যই রেখে দিয়ে, যুগোপযোগী শিক্ষক এবং শিক্ষা অভ্যাস করাটাই কাম্য। কিন্তু তা যখন হচ্ছে না, আজকের দিনের কর্মের ফল যখন ১৪০০ বা ২-৩হাজার বছর আগের রেফারেন্স নির্দেশ অনুযায়ীই প্রদান করা হয়, সেক্ষেত্রে নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে এটাই স্বাভাবিক।

আপনাদের এই উগ্রতার সংজ্ঞা খুব চমকপ্রদ। প্রথমে নিজেদের সুবিধামত উগ্র ট্যাগ দিয়ে পরে আবার উগ্র আস্তিক আবং উগ্র নাস্তিককে এক পাল্লায় মাপেন। অনেকটা দূর্বা এবং বাঁশ দুইই যেহেতু ঘাসজাতীয় সুতরাং দুইয়েরই আকই ব্যবহার বলার মত। একজন উগ্রতম নাস্তিক সর্বোচ্চ দুইটা গালি দিতে পারে, কিন্তু একজন উগ্র আস্তিক কি করতে পারে তা যদি আপনার না জানা থাকে তবে আপনি একজন নির্বোধ।

----ইমরান ওয়াহিদ

অতিথি লেখক's picture

Quote:
একজন উগ্রতম নাস্তিক সর্বোচ্চ দুইটা গালি দিতে পারে, কিন্তু একজন উগ্র আস্তিক কি করতে পারে তা যদি আপনার না জানা থাকে তবে আপনি একজন নির্বোধ

বোল্ড করা অংশের কথা বলছি।গালি নয়, অনেক নাস্তিক নামধারী সুবিধাবাদী আছে যারা গালি নয় বরং চরিত্র হনন করে থাকে ধর্মগুরুদের সাধারন মানুষ খেপে যাবে এটা জানার পরেও।মুসলিমরা তাঁদের নবী মুহাম্মদকে অনেক ক্ষেত্রে নিজের পিতামাতার থেকেও ভক্তি করে থাকেন বেশি। সেক্ষেত্রে ক্রমাগত তার চরিত্র হনন করা হলে সেখানে ভাল কিছুই হবে না। খারাপ হবে, এবং সেটাকে ক্রমাগত উস্কাতে থাকলে হিতেবিপরীত হবার চান্স আছে। যুগে যুগে সব ধর্মের অনুসারীদের মধ্যেই উগ্রতা ছিল। আস্তে আস্তে সেটা অনেকটা কমে এসেছে, আর এই কমানোটা কিন্তু ধর্মপুরুষদের চরিত্র হননের মাধ্যমে হয়নি, বরং চরিত্র হনন এবং বিজাতীয় বিদ্বেষের বশবর্তী হয়ে বিষদ্গার করলে সমস্যা বাড়ে বই কমেন না। আর এই চরিত্র হন যারা করে থাকে তারা আসলে বিকৃত মজা লোটার জন্যই করে থাকে। কাজেই যতই লম্বা লম্বা যুক্তি দেয়া হোক না কেন আগে মানুষের অনুভুতিকে বুঝতে হবে। চরিত্রহননের মাধ্যমে মানুষের জন্য ভাল কিছু করা সম্ভব নয়।

এবার আন্ডারলাইন করা কথাটার প্রেক্ষিতে বলা যেতে পারে যে অন্যের বুদ্ধিমত্তা যাচাইয়ের আগে নিজের বুদ্ধিমত্তা যাচাই করাটাই মনে হয় উচিত কারন এটা খুব কঠিন কাজ ( নিজেকে যাচাই করা)। বেশিরভাগ মানুষ পরচর্চা করতে ভালবাসে, কিন্তু যেই অন্য কেউ তার সম্পর্কে একই মুল্যায়ন করে তবে সে ভুলে যায় যে সে নিজেও একই কাজ করেছিল। সভ্যতা, ভদ্রতা বা ব্যক্তিত্ব আসলে কাউকে শেখানো যায় না, যদি নিজে থেকে সেটার চর্চা না করা যায়।

অর্ফিউস

অরফিয়াস's picture

Quote:
কোনও ধর্মের সমালোচনা করা আর সেই ধর্মকে একচোখা ভাবে ব্যাশিং(তুলা-ধুনা) করে যাওয়া কি এক জিনিস ???

একচোখাভাবে তুলোধুনো করার কিছু নেই, কেউ সরাসরি বলে, কেউ একটু ছাড় দিয়ে বলে। সরাসরি বলার ব্যাপারে আপনাদের গাত্রদাহ। ধর্মের সমালোচনা করতে হলে তাতে একটু মাখন লাগিয়ে বলতে হবে এই ধারনা এখন অচল। আর যতদিন যাবে, ধর্মীয় উগ্রপন্থা মানুষের আরও নজরে আসবে, কাছা তত আলগা হবে।

Quote:
যেকোনো ধর্মের সমালোচনা করতে গেলে উক্ত ধর্মের কি নিয়ে সমালোচনা করা উচিত ??
=> ঐ ধর্মের বিতর্কিত বিষয় নাকি ঐ ধর্মের নবী/দেবতাদের ব্যক্তিগত/যৌন জীবন !!

ধর্মের সবকিছু সমালোচনার মধ্যে আসবে, ধর্ম কোন আলাদা জিনিস নয়, সমাজেরই একটা অংশ, এর সমালোচনা হলে বিশ্বাস-প্রচারক-দেবী-আচার ইত্যাদি সবকিছুই আসবে, কারন এরা পরস্পর সম্পর্কযুক্ত।

Quote:
নাস্তিকেরা উগ্র হতে পারে না বলে এক ধরনের ভুল ধারণা নাস্তিকদের মাঝে প্রচলিত আছে ---> এটা পরিবর্তন করা জরুরী !!!

নাস্তিক আত্মঘাতী বোমা হামলার কোন খবর থাকলে দিয়ে যাবেন প্লিজ।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

অছ্যুৎ বলাই's picture

Quote:
নাস্তিকেরা উগ্র হতে পারে না বলে এক ধরনের ভুল ধারণা নাস্তিকদের মাঝে প্রচলিত আছে ---> এটা পরিবর্তন করা জরুরী !!!

Quote:
নাস্তিক আত্মঘাতী বোমা হামলার কোন খবর থাকলে দিয়ে যাবেন প্লিজ।

হাতে-কলমে প্রমাণিত। হাসি

নাস্তিক মানেই ভালু, কারণ সে নাস্তিক। দুনিয়ায় কোনো উগ্র নাস্তিক নাই! নাস্তিক হলেই বাই ডিফল্ট অনুগ্র। তাছাড়া আত্মঘাতী বোমাহামলা ছাড়া উগ্রতা প্রকাশের আর কোনো পরিমাপকও নাই।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

অরফিয়াস's picture

Quote:
আত্মঘাতী বোমাহামলা ছাড়া উগ্রতা প্রকাশের আর কোনো পরিমাপকও নাই।

অবশ্যই আছে, আমি একধরনের উদাহরণ চাইলাম, থাকলে দিবে, না থাকলে নাই।

উগ্রতা প্রকাশ কারো প্রানঘাতী কিনা সেটাই মূল প্রশ্ন। "উগ্রতার মানদণ্ড বিবেচনায় ধার্মিকের সর্বোচ্চ উগ্রতা যদি হয় প্রাণঘাতী, নাস্তিকের সর্বাধিক উগ্রতা বড়জোর ধর্মানুভূতিতে আঘাত।"

লেখার ভেতরেই ছিল, খেয়াল করেন নাই?

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

অছ্যুৎ বলাই's picture

তো, এই ব্যাপারে আপনার অনুসিদ্ধান্ত কি? কেউ নাস্তিক হলে কি তার পক্ষে সন্ত্রাসী হওয়া সম্ভব না? নাস্তিকতা কি সন্ত্রাসী প্রতিরোধক কোনো টিকা?

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

অতিথি লেখক's picture

ধর্ম এবং ধর্মীয় প্রাধাণ্যকে উদ্দেশ্য হিসেবে রেখে আস্তিকেরা সন্ত্রাস সৃষ্টি করে, কিন্তু ধর্মবিরোধীতাকেস উদ্দেশ্য হিসেবে রেখে নাস্তিকেরা সন্ত্রাস সৃষ্টি করে না।

ধর্মীয় বা ধর্মবিরোধীতার উদ্দেশ্যের বাইরে অন্যান্য সন্ত্রাসের ক্ষেত্রে নাস্তিকতা আস্তিকতা বিচার করতে যাওয়া বোকামী।

----ইমরান ওয়াহিদ

তাপস শর্মা's picture

Quote:
কেউ নাস্তিক হলে কি তার পক্ষে সন্ত্রাসী হওয়া সম্ভব না? নাস্তিকতা কি সন্ত্রাসী প্রতিরোধক কোনো টিকা?

--আগের মন্তব্যে নাস্তিক গুরুকে চেনান নি। এইবার এই মন্তব্যের মধ্যে থেকে বলি, আমি শুনিনি ও পড়িনি কোথাও যে কোন নাস্তিক নাস্তিকতার নাম দিয়ে সন্ত্রাসবাদ করছেন। এইবার যদি আপনি কয়েকজন নাস্তিক সন্ত্রাসীর নাম বলতেন তাহলে জানতে পারতাম কারা বা কে কিংবা কি করলে একজন এথিস্টকে 'নাস্তিক সন্ত্রাসী' বলা হয়ে থাকে এবং তারা কারা কারা

অরফিয়াস's picture

নাস্তিক হলে সন্ত্রাসী হওয়া সম্ভব না এরকম সিদ্ধান্ত কেউ দেয় নাই। কিন্তু একজন নাস্তিক ঈশ্বরে বিশ্বাস করে না দেখে বিশ্বাসীদের উপাসনালয়ে বোমা হামলা করতে যায় না। একজন ধার্মিক উগ্রবাদীর পক্ষে সেটা সম্ভব। নাস্তিক তার অবিশ্বাসের জন্য সন্ত্রাসী কার্যকলাপে লিপ্ত হল কিনা সেটা দেখেন আর একজন আস্তিক তার বিশ্বাসের জন্য সন্ত্রাসী কার্যকলাপে লিপ্ত হল কিনা সেটা দেখেন।

কথা গোল গোল ঘুরাইলে ঘুরতেই থাকবে, এরজন্য এই লিঙ্ক দেয়া আছে, ইচ্ছা থাকলে পইড়া দেইখেন।

অফ গেলাম।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

অতিথি লেখক's picture

বোমা হামলা ছাড়াও আস্তিকের উগ্রতা প্রকাশের কিন্তু বেশ কিছু পদ্ধতি আছে। কল্লা নামায়া দেয়া, চাপাতি দিয়া কোপানো, ভিন্ন মতাবলম্বিদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভিন্নধর্মীদের দেশ ছাড়া করা, নাস্তিকের মাথার উপর বাউন্টি ঘোষনা দেয়া ইত্যাদি ইত্যাদি।

আর উগ্রতম নাস্তিক যেন কি করে? কার্টুন আঁকে, দুইটা গালি দেয়, একটা ভিডিও তৈরী করে ইত্যাদি ত্যদি। গতবুও বলতে চান এগুলো সমানুপাতিক? বাংলাদেশের পটভূমিতেই বলেন, সামাজিক বিশৃঙ্খলা কাদের মাধ্যমে হচ্ছে, আস্তিক নাকি নাস্তিক? একটা উদাহরণ দেন, যেখানে সামাজিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিতে নাস্তিকের ভুমিকা আছে।

এটা ভালো খারাপের প্রশ্ন নয়, প্রশ্ন সামাজিক জীবনে প্রভাব বিস্তারের। নিজের বিশ্বাস প্রতিষ্ঠা করতে বা চাপিয়ে দিতে কারা সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে? হেফাজতে ইসলামীর ১৩ দফা কি সামাজিক জীবন সম্পূর্ণভাবে বিপর্যস্ত করে ফেলার দাবী নয়? অথচ এটা ধর্মীয় অনুশাসনেরইপ্রতিফলন। আস্তিকেরা কিসের ভিত্তিতে এর বিরুদ্ধাচারণ করে? বিশ্বাস আগে না সমাজ আগে? তবে কি আস্তিকের ধর্মবিশ্বাসের পারদ নিজের সুবিধানুযায়ী ওঠানামা করে? নাস্তিকদের কিন্তু এই ডাইলেমা নেই, তারা স্রেফ বিশ্বাস করেনা আর ভিবিন্নভাবে বোঝাতে চায় ধর্মীয় অনুশাসন এবং ধর্মের প্রতি অন্ধত্ব কতটা অসার।

----ইমরান ওয়াহিদ

অছ্যুৎ বলাই's picture

হুদাহুদি অন্যের ইয়েতে আঙুল দেয়া যে কোনো উপায়েই খারাপ, সেটা যতো শৈল্পিকভাবেই দেয়া হোক না কেন। নাস্তিক পরিচয়ে আয়েশার ঋতুচক্রের হিসাব আর মুহাম্মদের সেক্স পাওয়ারের গবেষণার সাথে আস্তিক পরিচয়ে অন্যের কল্লার দাম ঘোষণার সাথে কোনো বেসিক পার্থক্য নাই। দুইটারই এন্ড রেজাল্ট ক্যাচাল।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

অতিথি লেখক's picture

শিক্ষকের আচরণ এবং কার্যক্রম যখন শিক্ষাক্রমের অংশ, শিক্ষকের নৈতিকতাবোধ নিয়ে কেউ না কেউ প্রশ্ন তুলতেই পারে।

ধর্মের বৈশিষ্ট যেখানে জোর করে ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়া বা ইয়েতে আঙ্গুল দেয়া, সেখানে ধর্মবিরোধীরাও ইয়েতে আঙ্গুল দিতেই পারে। নাকি ইয়েতে আঙ্গুল দেয়ার অধিকার শুধু একপক্ষের? আর কারা আগে শুরু করেছিলো ধার্মিকেরা নাকি নিধার্মিকেরা? নিধার্মিকদের যদি শান্তিতে থাকতে দেয়া হতো আজ হয়তো তারা চুপচাপই থাকতো। কিন্তু পায়ে পা বাধিয়ে ধর্মই শুরু করেছিলো ক্যাচাল।

এবং কল্লার দাম ঘোষনা কখনই স্রেফ ক্যাচালের মধ্যে স্থির থাকেনা, কেউ না কেউ ক্লেইম করতে আসেই। নাস্তিক ঐ ক্যাচাল পর্যন্তই থাকে তারপর আর আগে বাড়ে না। সামাজিক বিশৃঙ্খলা অন্তত নাস্তিকের হাত ধরে আসে না।

----ইমরান ওয়াহিদ

অতিথি লেখক's picture

শফি একজন সার্টিফায়েড আলেম। বাংলাদেশের আলেম সমাজের মাথা। তার থেকে বা আলেম সমাজের থেকে তো আর ইসলাম এদেশে বেশি বোঝেনা কেউ। তাকে বা তাদেরকে আপনি পঁচা আপেল বলে বাতিল করে দিচ্ছেন? এনারা কি কুরান সুন্নাহর বাইরে কিছু বলেছেন? যদি না বলে থাকেন এনাদেরকে কেন পঁচা আপেল বলছেন?

----ইমরান ওয়াহিদ

অতিথি লেখক's picture

এটি হলো সবচেয়ে জনপ্রিয় ধারা মধ্য অবস্থান নেওয়ার। ওরা ঠিক করছে না, ধর্ম এইসব বলে নাই, যারা বলে তারা শফিদের চেয়ে ধর্মকে অনেক কম জানে। কম জেনেই ধর্মের সকল বই যাদের মোটামুটি মুখস্থ তাদেরকে বাতিল করে দেয়। এর চেয়ে হাস্যকর আর কি হতে পারে?

মাসুদ সজীব

অতিথি লেখক's picture

Quote:
হুদাহুদি অন্যের ইয়েতে আঙুল দেয়া যে কোনো উপায়েই খারাপ, সেটা যতো শৈল্পিকভাবেই দেয়া হোক না কেন। নাস্তিক পরিচয়ে আয়েশার ঋতুচক্রের হিসাব আর মুহাম্মদের সেক্স পাওয়ারের গবেষণার সাথে আস্তিক পরিচয়ে অন্যের কল্লার দাম ঘোষণার সাথে কোনো বেসিক পার্থক্য নাই। দুইটারই এন্ড রেজাল্ট ক্যাচাল।

চমৎকার। চলুক

তাপস শর্মা's picture

দারুণ লিখেছো। এই লেখাটার দরকার ছিল

আজকাল মার্কেটে নানা নাস্তিকতত্ব আবিষ্কার হয়ে গেছে। কোনো নাস্তিককে ''উগ্র'' আখ্যা দিয়ে তার উগ্রতাকে একজন ধর্মকে কেন্দ্র করে মৌলবাদের চর্চা করা ধর্মান্ধ মৌলবাদীর সাথে জুড়ে দেয়াটা একটা সুশীল ট্রেন্ড হিসেবে ম্যানুফেকচার হচ্ছে। আজকাল সেটা খাচ্ছেও ভালো

ধর্ম নিজের মধ্যেই একটা অন্ধত্ব -- এটা বললেই ভুদাইদের অনুভূতিতে আঘাত লাগে আর তুমি হয়ে গেলে উগ্র নাস্তিক হে হে হে। মাঝেমাঝে মনে হয় নাস্তিক মানেই একটা আলাদা 'জীব' হাসি

অতিথি লেখক's picture

না দাদা উগ্রতা পুরোন হয়ে গেছে, মার্কেটে নতুন তত্ব হচ্ছে "নির্মোহ খাঁটি নাস্তিক"" এবং "এসাইলাম প্রত্যাশী খাসি নাস্তিক"। শ্রেণী বিভাজনের দায়িত্ব আস্তিকেরা দয়া করে নিজেদের কাঁধেই তুলে নিয়েছেন

----ইমরান ওয়াহিদ

অরফিয়াস's picture

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

হাসিব's picture

Quote:
ধার্মিকের ধর্মচর্চা যেমন তার ব্যক্তি অধিকারের পর্যায়ে পড়ে, তেমনই নাস্তিকের জ্ঞানচর্চাও তার অধিকারের মধ্যে পড়ে। ধার্মিক যদি জনসম্মুখে নিজের বিশ্বাস প্রচার করতে পারে, নাস্তিকেরও অধিকার থাকে যুক্তি-প্রমানের ভিত্তিতে সেই বিশ্বাসের বিরুদ্ধাচারণ করার।

এবং

Quote:
একজন ব্যক্তি সৃষ্টি এবং সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাস করবেন কি করবেন না, ধর্ম পালন করবেন কি করবেন না, এটা সম্পূর্ণভাবেই তার ব্যক্তিগত বিষয়। "বিশ্বাস" কারো উপর চাপিয়ে দেয়া যায় না, যদি চাপিয়ে দেয়া হয় তাহলে তা আর বিশ্বাস থাকেনা।

বিষয়টা একটু সরলীকরণ হলো। দুইটা কেইস স্টাডি বলি,

১. আমি ধার্মিক লোক। আমি ধর্মচর্চা করি। আমার ধর্মে বলে টিকা দেয়া নিষেধ। তাই আমি আমার শিশু সন্তানদের টিকা দেই না।
২. একইভাবে আমি ধার্মিক লোক। আমার ধর্মে গর্ভপাত নিষিদ্ধ। অতএব আমি আমার স্ত্রী গর্ভকালীন জটিলতায় সংকটাপন্ন অবস্থায় থাকলেও আমি গর্ভপাত করাতে দেব না।

এই দুইটা কেইসেই একজনের ধর্মবিশ্বাস আরেকজনের জীবনকে অস্তিত্বের হুমকিতে ফেলছে। এক্ষেত্রে ধর্মভিরু আমিকে রাষ্ট্র আমার নাবালক সন্তান বা সংজ্ঞাহীন স্ত্রীর হয়ে সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষমতা দিচ্ছে। এই দুইটা কেইসই যার যার ধর্ম তার তার কাছে বা ধর্মপালন ব্যক্তিগত বিষয় এই আর্গুমেন্টকে ইনভ্যালিড করে।

অরফিয়াস's picture

ধর্মীয় বিশ্বাসটা শেষপর্যন্ত তো সেই ব্যক্তিগত পর্যায়েই পড়ল, তাই না?

Quote:
ধর্মভিরু আমিকে রাষ্ট্র আমার নাবালক সন্তান বা সংজ্ঞাহীন স্ত্রীর হয়ে সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষমতা দিচ্ছে।

কারো ব্যক্তিগত "বিশ্বাস" যদি অন্যের ক্ষতির কারন হয় তাহলে সেটা তো আর ব্যক্তিগত থাকলো না, অন্যের উপরে নিজের সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয়া হয়ে গেল।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

হাসিব's picture

আমি মনে হয় বোঝাতে পারি নাই বিষয়টা।
শেষ পর্যন্ত ব্যক্তির পর্যায়ে আসলে থাকে না বিষয়টা। ব্যক্তির ইচ্ছা অনিচ্ছা অন্য নাগরিকের ওপরও পড়ছে। যেমন শিশুর টিকা পাবার অধিকার। এখনও ধর্মানুভুতির ছায়া থেকে নির্ভরশীল পরিবারের সদস্যদের বের করে আনতে অনেক আধুনিক রাষ্ট্র ও সব অনাধুনিক রাষ্ট্রে বের করে আনতে অক্ষম।
আমরা প্রতিটা মানব জীবনকে একেকটা ইউনিট ধরলে ইন থিওরী সবাই নিজের মতো করে বিকশিত হবার (যেমন টিকা, সঠিক শিক্ষা ইত্যাদি) অধিকার রাখে। এই অধিকারটা খর্ব হচ্ছে পরিবারের প্রধানের সিদ্ধান্তের কারণে। এ কারণে যেসব ধার্মিকেরা যার যার ব্যক্তিগত বিষয় বলেন তারা আসলে নিজ ও নিজ ক্ষমতাবলয়ে থাকা মানুষদের এক করে দেখেন যেটার অধিকার নর্ম্যাটিভ দৃষ্টিকোণ থেকে তার থাকা উচিৎ না।

অরফিয়াস's picture

আমি বলতে চেয়েছি, ব্যক্তিগত বিশ্বাসের কারনে উপনীত সিদ্ধান্ত যদি অন্যের উপর চাপিয়ে দেয়া হয় তাহলে তো যার উপরে চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে সেটা তার বিশ্বাস থাকেনা। যেমন শিশুর উদাহরনে, শিশুটির কোন বিশ্বাস নেই কিংবা প্রাধান্য নেই, এটাই বলতে চেয়েছি আর কি। আর যখন অন্যের উপর চাপিয়ে দেয়া হয় তখন ব্যক্তিগত গণ্ডি অতিক্রম করে এবং তখন অবশ্যই সেটার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হতে পারে।

মনে হয় একই পথে চিন্তা করছি। হাসি

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

অতিথি লেখক's picture

হাসিব্বাই, অর্ফিয়াস আপনারা দুজনে একই পথে চিন্তা করছেন শুধু প্রস্তাবনা ভিন্ন। ব্যাক্তির বিশ্বাস যতক্ষন ব্যক্তিকেন্দ্রীক থাকে ততক্ষন আসলে কোথাও সমস্যা থাকে না। কিন্তু ব্যক্তির বিশ্বাসের প্রভাব যখন সমষ্টির উপরে গিয়ে পড়ে তখন তো আর ব্যক্তিকেন্দ্রীকতা বলে কিছু থাকে না। যেখানে বিশ্বাসের মূলমন্ত্রই হচ্ছে প্রাধাণ্যবিস্তার সেখানে বিশ্বাসের ব্যক্তিকেন্দ্রীকতা রাআসলে সোনার পাথরবাটির মত। রাষ্ট্র আসলে নিজস্ব ক্ষমতাবলয়ে প্রভাব্বিস্তার রোধে প্রত্যক্ষ কোন ব্যবস্থা নিতে পারে না। বড়জোর ব্যক্তিস্বাধীনতার পথ সুগম করতে পারে মাত্র। কিন্তু সমাজে যদি ধর্মীয় গোঁড়ামী জাঁকিয়ে বসে থাকে, সেক্ষেত্রে রাষ্ট্রের আর কিছুই করার থাকেনা, রাষ্ট্র তো সমাজের অংশ্মাত্র।

----ইমরান ওয়াহিদ

অতিথি লেখক's picture

পৃথিবীতে রক্তাত্ত ইতিহাসগুলো আস্তিকদের হাত ধরে এসেছে, নাস্তিকদের দিয়ে একটিও ছুরি রঞ্জিত হয়নি লালে। অথচ বলার সময় উগ্র আস্তিক থেকে নম্র আস্তিক সবাই বলবে ধর্ম হলো শান্তির, ধর্ম মানবতার কথা বলে! অপরদিকে কাউকে কতল না করলেও নাস্তিকদের মাঝে সাহসী দেরকে বলা হয় উগ্র নাস্তিক।
অছ্যুৎ বালাই ভাই বললেন

Quote:
সবাই তো আর আপনার সিস্টেমে চলবে না। 'বিশ্বাসী'র স্বাধীনতা আছে বিশ্বাস করার। আমি/আপনি যদি তার এই স্বাধীনতার বিরোধিতা করি, সে হয়তো আমার/আপনার সাথে সেটা নিয়ে জ্ঞানগর্ভ আলোচনা করার চাইতে শক্তির প্রয়োগ করাকেই শ্রেয়তর মনে করবে।

কেন শক্তি প্রয়োগ করাকে শ্রেয়তর মনে করবে? কারণ ধর্ম-সমাজ-রাষ্ট্র তাকে সেই সুযোগ দিয়েছে বহুকাল থেকে। যদি কোন অজুহাতেই কাউকে খুন করার হুমকি দেওয়া কিংবা খুন করলে কঠিন শাস্তির বিধান থাকতো তাহলে এই চর্চা হতো না।অপরদিকে নাস্তিকতা এক প্রকার জ্ঞান, অজ্ঞ কারো পক্ষে নাস্তিক হওয়া সম্ভব না। নাস্তিক হতে হলে পড়াশুনা লাগে, যুক্তিলাগে, প্রমাণ প্রয়োজন। এগুলো কোন এক বইপড়ে পৃথিবীর সব কিছু জেনে ফেললাম এমন নয়।

নাস্তিক রা কেন কল্লা নামার হুমকি দেয় না? প্রথম কারণ হলো জ্ঞান মানুষকে নত করে, মানবতাবাদী করে তুলে। তার জ্ঞান কখনো বলে না যে অন্যকে খতম করে দাও। নাস্তিকতা কোন বিশ্বাস নয়।

Quote:
একদল আরেকদলের 'বিরুদ্ধাচারণ' করা থেকেই ঝামেলার সৃষ্টি। যার ইচ্ছা ধর্মে বিশ্বাস করুক, যার ইচ্ছা ধর্মে অবিশ্বাস করুক। একজনের বিশ্বাস অবিশ্বাসের 'বিরুদ্ধাচারণ'-এর চর্চা আখেরে ক্ষতিকর। এটা নিজের গণ্ডি ছেড়ে অপরের ইয়েতে আঙুল দেয়ার সমতুল্য

কি ঝামেলা? মতের পার্থক্য হলেই ঝামেলা (মেরে ফেলা) করে কে? আপনি বলছেন যে ইচ্ছে বিশ্বাস করুক আর যে ইচ্ছে অবিশ্বাস করুক এখন বিশ্বাসের কথা প্রচার করলে ঝামেলা হবে না, আর অবিশ্বাসের কথা বললেই ঝামেলা শুরু হবে। তাহলে ঝামেলা টা করছে কে? এগুলো স্ব-বিরোধী কথাবার্তা। আর নিজের গন্ডি বলে কিছু নেই, অন্ধকারের সব বিষয় নিয়ে কথা বলার অধিকার আমার আছে। মানুষের জ্ঞানের কোন সীমারেখা টেনে দেওয়া যায় না।

মাসুদ সজীব

অরফিয়াস's picture

Quote:
মানুষের জ্ঞানের কোন সীমারেখা টেনে দেওয়া যায় না।

কথাটা ভাল লাগল।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

অতিথি লেখক's picture

অছ্যুত বালাই ভাই আমার প্রশ্নের উত্তরগুলো দিলে প্রীত হতাম।

মাসুদ সজীব

অছ্যুৎ বলাই's picture

Quote:
অছ্যুত বালাই ভাই আমার প্রশ্নের উত্তরগুলো দিলে প্রীত হতাম।

বেসিকে পার্থক্য বেশি থাকলে উত্তর দিয়া লাভ হবে না।

বেসিকে পার্থক্য কেন বললাম?

Quote:
অপরদিকে নাস্তিকতা এক প্রকার জ্ঞান, অজ্ঞ কারো পক্ষে নাস্তিক হওয়া সম্ভব না। নাস্তিক হতে হলে পড়াশুনা লাগে, যুক্তিলাগে, প্রমাণ প্রয়োজন।

এর বিপরীতে যদি বলা হয়, "আস্তিকতা এক প্রকার জ্ঞান, অজ্ঞ কারো পক্ষে আস্তিক হওয়া সম্ভব না। আস্তিক হতে হলে পড়াশুনা লাগে, যুক্তি লাগে, প্রমাণ প্রয়োজন।" - যদি সেটা আপনি না মানেন, তাইলে মিউচুয়াল রেসপেক্টের ওখানেই পরিসমাপ্তি। মিউচুয়াল রেসপেক্ট ছাড়া আলোচনা হয় না, ক্যাচাল হয়।

জ্ঞানের সাথে আস্তিকতা বা নাস্তিকতার কোনো বিরোধ নাই। মানুষের জানার গণ্ডি খুবই সীমিত। সুতরাং জ্ঞান নিয়ে অহঙ্কার ঢুকে গেলে বিগ প্রবলেমো। তখন শমসেরের আর কিছু জানার প্রয়োজন অনুভূত হবে না।

বিশ্বাসের কথা প্রচার করতে যেমন বাধা নাই, অবিশ্বাসের কথা প্রচার করতেও বাধা নাই। সমস্যা অন্যের ওপর জোর করে বিশ্বাস অবিশ্বাস চাপাতে গেলে, বিশ্বাস-অবিশ্বাসের জন্য অন্যকে আক্রমণ করতে গেলে। আক্রমণের ফর্ম্যাট সেকেন্ডারি ইস্যু।

Quote:
পৃথিবীতে রক্তাত্ত ইতিহাসগুলো আস্তিকদের হাত ধরে এসেছে, নাস্তিকদের দিয়ে একটিও ছুরি রঞ্জিত হয়নি লালে।

- নোতুন জ্ঞানার্জন করলাম। গুল্লি

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

অতিথি লেখক's picture

Quote:
এর বিপরীতে যদি বলা হয়, "আস্তিকতা এক প্রকার জ্ঞান, অজ্ঞ কারো পক্ষে আস্তিক হওয়া সম্ভব না। আস্তিক হতে হলে পড়াশুনা লাগে, যুক্তি লাগে, প্রমাণ প্রয়োজন।

ভালো বলেছেন, আমিও নতুন করে শিখলাম আস্তিক হতে জ্ঞানের প্রয়োজন, প্রমাণের প্রয়োজন। বাংলাদেশে তো আস্তিকের সংখ্যা বেশি, তাই বাংলাদেশে জ্ঞানীর সংখ্যাও বেশি। সেই জ্ঞানী আস্তিকরা আবার চাঁদে সাঈদীকেও দেখে। হো হো হো আপনি এমন শর্ত দিয়ে আলোচনায় যেতে চাইছেন যে আমার টা মানলেই তবে যুক্তি-তর্ক, আলোচনা, নইলে নয়। আপনার কথা মানলেই মিউচুয়াল রেসপেক্ট আর না মানলে ক্যাচাল, এমন সীমারেখা টেনে দেওয়া কথা আপনার কাছে আশা করি নাই।

Quote:
বিশ্বাসের কথা প্রচার করতে যেমন বাধা নাই, অবিশ্বাসের কথা প্রচার করতেও বাধা নাই।

অবিশ্বাসের কথা প্রচার করতে অবশ্যই বাধা আছে সেটি আপনি খুব ভালো করেই জানেন। বিশ্বাসের কথা প্রচার করতে গিয়ে কেউ এখন পর্যন্ত গ্রেফতার হয়নি এ দেশে, খুন তো দূরের কথা। আর অবিশ্বাসের কথা লেখেছে বলেই খুন হয়েছে রাজীব হায়দার। গ্রেফতার হয়েছে বেশ কয়েকজন ব্লগার।

Quote:
সমস্যা অন্যের ওপর জোর করে বিশ্বাস অবিশ্বাস চাপাতে গেলে, বিশ্বাস-অবিশ্বাসের জন্য অন্যকে আক্রমণ করতে গেলে

অন্যের উপর জোর করে বিশ্বাস কে চাপাতে চায়? জোর বলতে বুঝায় যে মানতে বাধ্য করা, বিরুদ্ধাচরণ না করতে দেওয়া। সেটি মোটেও অবিশ্বাসী রা করছে না। বিশ্বাসের কথা প্রচার করতে গিয়ে এদেশে কে উ আক্রমনের স্বীকার হয়নি, কিন্তু নিজের অবিশ্বাসের কথা প্রচার করতে গিয়ে(শুধু মাত্র নিজের ব্লগ/ফেসবুকে) অসংখ্য অবিশ্বাসী (নাস্তিক) আক্রমনের স্বীকার হয়েছে। হুমায়ূন আজাদ আক্রমনের স্বীকার হয়েছেন তার লেখার জন্যে, সাঈদী-গোলাজ আযম কিংবা অন্য কোন বিশ্বাসী তাদের বইয়ের জন্যে আক্রমনের স্বীকার হননি।

মাসুদ সজীব

তারেক অণু's picture

“We are all atheists about most of the gods that humanity has ever believed in. Some of us just go one god further.”

অরফিয়াস's picture

চলুক

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

স্যাম's picture

চলুক

চরম উদাস's picture

ছোটবেলা থেকে শুরু করি। আপনার বয়স তিন কি চার। মুখে আধো আধো বুলি ফুটে। থুতনি নাড়িয়ে, গাল টিপে ওরে সোনা কুটুকুটু পুটুপুটু করে আপনাকে জিজ্ঞেস করা হল, বলতো বাবু আব্বু ভালো না আম্মু ভালো। আপনি ললিপপ চুষতে চুষতে আব্বুর দিকে একবার আম্মুর দিকে একবার তাকিয়ে ফোকলা দাঁতে হেসে বললেন, আব্বুও ভালো, আম্মুও ভাল। প্রশ্নকর্তা ঘাউরা হলে আবার বলে, না না বল বাবু কে বেশী ভালো। আপনি আরও হেসে, আব্বুও বেতি বালো, আম্মুও বেতি বালো।
হ্যাঁ, এভাবেই শুরু হয় আমাদের সমান সমান করার ট্রেনিং একেবারে ন্যাদাকাল থেকেই। তাই আপনি যদি ছোটকালের মতোই স্মার্ট বড়কালেও হয়ে থাকেন তবে আপনাকে যখন থুতনি ধরে জিজ্ঞেস করা হবে, বলতো বাবু ইন্ডিয়া আর পাকিস্তানের মধ্যে কোনটা বেশী খারাপ? আপনি গম্ভীর গলায় বলবেন দুইটাই খারাপ। একটা মেরেছে নয় মাস ধরে, আরেকটা মেরে যাচ্ছে চল্লিশ বছর ধরে। একই কথা আওয়ামীলীগ আর জামাতের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। জামাতকে গালি দিলে সাথে আওয়ামীলিগকেও একেবারে সমান পরিমাণে গালি দিতে হবে। না হলে নিরপেক্ষতা বজায় থাকবে না। একই কাজ করতে হবে ধর্মান্ধ মৌলবাদী আর উগ্র(!) নাস্তিক উভয়ের ক্ষেত্রে। মৌলবাদী যেমন তরবারির এক কোপে আপনার বডি টুকরা টুকরা করে ফেলে উগ্র নাস্তিকও তেমনি কলমের এক কোপে হৃদয় টুকরা টুকরা করে ফেলে। আর কে না জানে মনভাঙ্গা হলো মসজিদ ভাঙ্গা বা বডি ভাঙ্গা থেকেও বড় অপরাধ। আর তাই রাজাকার দুত্তু, শাহাবাগও দুত্তু, হেফাজত পতা, নাস্তিক বলগারও পতা, আফ্রিদি অসব্বো (অল্প) কোহলিও অসব্বো ...

আরও অনেক কিছু লিখার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু আজকাল লিখতে বসলেই কেন জানি হাই উঠে। এর চেয়ে বসে বসে লোকজনের চমৎকার গোলগোল যুক্তি শুনতে বেশ ভালো লাগে দেঁতো হাসি । নাস্তিক বলগার ... উগ্র নাস্তিক ... জঙ্গি নাস্তিক ... এই শব্দগুলার সৃষ্টিই হয়েছে মাত্র কয়েক বছর আগে। অপ্রয়োজনে তৈরি হয়নি, নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য নিয়েই তৈরি হয়েছে। ওরে আমার জল ঘোলা করলি কেন বলে যুগে যুগে আঘাত পাবার একটা না একটা কারণ খুঁজে নিয়েছে নেকড়েরা, ভবিষ্যতেও নেবে।

আরেকটা ব্যাপার মনে হয় সবসময়, যে কোন হাইব্রিড জিনিস বেশী ভয়ঙ্কর হয়। মৌলবাদী জামাতি থেকে মৌলবাদী আওয়ামীলীগ আরও বেশী ভয়ঙ্কর, মাদ্রাসার গছাগুর চেয়ে পিএইচডি করা লছাগু বেশী ভয়ঙ্কর, নাস্তিককে কোপানো ধর্মান্ধের চেয়ে সেই কোপ দেখে মিটিমিটি হাসা সুশীল অনেক বেশী ভয়ঙ্কর!

অরফিয়াস's picture

আপনার উগ্রতার পারদ পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল ভেদ করে মহাশুন্যে যাত্রা করেছে, আপনি একজন অতীব উগ্র নাস্তিক। হুজুরদের লিস্টে আপনার নাম আসল বলে। শয়তানী হাসি

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

অতিথি লেখক's picture

চউদা, বিশ্বাসীদের বিলো দি বেল্ট হিট করছেন, আস্তিকদের টুনটুনি ধরে টান দিচ্ছেন আপনি। আপনি একজন ব্যাক্তি আক্রমণকারি উগ্র নাস্তিক। এখনো সময় আছে নির্মোহ খাঁটি নাস্তিকতা বরণ করেন। কঠিন কঠোর ইস্পাতদৃঢ় যুক্তির বদলে কোমল মোলায়েম পালকমসৃন যুক্তি প্রয়োগ করেন। নয়তো মডারেট আস্তিকেরা খন্ডন করবে কিভাবে? এ আপনার বড় অন্যায়। আপনি ক্যাচাল সৃষ্টি করছেন। সাপধান। চাল্লু

----ইমরান ওয়াহিদ

কৌস্তুভ's picture

হাততালি চলুক

এক লহমা's picture

গুরু গুরু

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

তারেক অণু's picture
স্যাম's picture

গুরু গুরু চরম উদাস মন্তব্য সমগ্র প্রকাশ এখন সুমায়ের দাবী

ঋতানৃত তূর্য্য's picture

Quote:
যে কোন হাইব্রিড জিনিস বেশী ভয়ঙ্কর হয়। মৌলবাদী জামাতি থেকে মৌলবাদী আওয়ামীলীগ আরও বেশী ভয়ঙ্কর, মাদ্রাসার গছাগুর চেয়ে পিএইচডি করা লছাগু বেশী ভয়ঙ্কর, নাস্তিককে কোপানো ধর্মান্ধের চেয়ে সেই কোপ দেখে মিটিমিটি হাসা সুশীল অনেক বেশী ভয়ঙ্কর!

সোনার হরফে বাধিয়েঁ রাখার মত
হ্যাটস অফ

সজল's picture

আমি একজন মডারেট নাস্তিক। দেশে আত্মীয়স্বজন আছে, তাই মডারেট আর উগ্র উভয় প্রজাতির আস্তিকদের ভয়ে কোন ট্যাঁফো করি না।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

অরফিয়াস's picture

কতদিন চুপ করে থাকা যায়?

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

অনিকেত's picture

অরফিয়াস, বস আপ্নের ভক্ত হয়ে গেলাম এই লেখা দিয়েই। 'অসাধারন লেখছেন' 'ফাডায়ালাইসেন' এইসব না বলে স্রেফ এইটুকু বলি---এইরকম একটা লেখা আসা দরকার ছিল খুব---আরো একটু আগে আসলে আরো ভাল হতো!

যাই হোক আমি আমার নিজের দুই পয়সা যোগ দিলামঃ

১। একজন উগ্র ধর্মাবলম্বিকে ক্ষেপিয়ে দিন --- তারা আপনাকে হত্যা করবে, আপনার বউ-মেয়ে কে ধর্ষন করবে, বৃদ্ধ পিতাকে রশি বেঁধে গাছে ঝুলিয়ে দেবে, আপনার চৌদ্দ গুষ্টিকে দেশ ছাড়া করবে। এক জন উগ্র নাস্তিককে ক্ষেপিয়ে দিন---ফলাফল আরো ভয়াবহ!! সে আপনাকে গালাগাল করবে!

২। আমরা সকলে যে কথাটা সযত্নে এড়িয়ে যেতে চাই নানা কারণে, সেইটে আসলে এড়ানোর কোন কথা নয়। খুব সহজ একটা কথা--অথচ আমরা সকলেই ভাসুরজ্ঞানে দূরত্ব বজায় রাখি । কথাটা আর কিছুই না। ধর্ম একটা ব্যর্থ প্রতিষ্ঠান। যত দিন না আমরা এই বুজুরুকি থেকে বেরুতে পারব তত দিন আমাদের কোন পরিত্রাণ নেই। মানুষের সভ্যতার পথে এগিয়ে যাওয়ার একটা যৌক্তিক পরিনতি হওয়া উচিত ছিল আমাদের সবার 'নাস্তিক' না হোক, অন্তত 'নির্ধামিক' হওয়া। কিন্তু সেইটা নানা কারনে হয়ে ওঠেনি। অনেক কারণের মাঝে মূল কারণ অবশ্যই সমাজ-রাজনৈতিক। ধর্ম একটা অব্যর্থ অস্ত্র। এক বিশাল জনগোষ্ঠীকে মুহূর্তের মাঝে একাট্টা করে ফেলতে ধর্মের মত হাতিয়ার দু'টো মেলা ভার। এর কোটি কোটি উদাহরণ ছড়ানো। খুব বেশি দূরে নয়--গত বছর এই সময়ে গনজাগরণের মাঝে ভাঙ্গন ধরানোর জন্যে, সাধারণ মানুষের মনে আর কিছু না হোক, একটা অস্বস্তি ঢোকানোর জন্যে খালি নাস্তিক শব্দ উচ্চারণ করাই যথেষ্ট ছিল। এখনো দেশে আপনাকে স্রেফ নাস্তিক বলে বিনা বিচারে রাস্তা ঘাটে উত্তম মধ্যম দেয়া যেতে পারে---কেউ কোন প্রতিবাদও করতে আসবে না। একটা পকেটমারও খুব সম্ভবত আমাদের দেশে এখন অনেক নিরাপদ। নাস্তিক নাস্তিক রব তুলে দুই কিশোরকে আমরা পিটিয়ে হাতের সুখ করে নিলাম। তাদের ভবিষ্যত ধ্বংস করে দিয়ে সেদিন নিশ্চয়ই ঐ মানুষগুলো যার যার ঘরে গিয়ে আল্লাহর কাছে শোকরানা আদায় করেছেন। বিপথে চলে যাওয়া দুই মানবসন্তানকে ভাল করে 'নসিহত' করতে পারার আনন্দে তাদের কারো কারো চোখে হয়ত এসেছে আনন্দাশ্রু। আমাদের ভেতরে এই যে অমানুষত্ব এইটা কে জাগ্রত করেছে জিজ্ঞেস করলে উত্তর হিসেবে 'ধর্ম' আসবে না। উত্তর হবে 'নাস্তিকতা'। আমি এতই ক্ষুব্ধ, এতই হতাশ যে ঠিক কী ভাষায় এর প্রতিবাদ করা যেতে পারে সেইটাও ভেবে উঠতে পারছি না।

আমাদের শিক্ষিত মহল দুই ভাগে বিভক্তঃ এক মহলের মাঝে শিক্ষা নামে মাত্র প্রবেশ করেছে, অন্য মহল শিক্ষিত হলেও 'সমাজ'-এর ভয়ে ভীত। প্রথম মহল জোরেশোরেই ধর্ম বিষয়ক অন্ধত্ব বজায় রাখে। তারা উচ্চ ডিগ্রীধারী শিক্ষিত সম্প্রদায়। বিজ্ঞানের নানা শাখায় হয় বিপুল রকমে সফলও। কিন্তু একটি জায়গা বাদে। ধর্মের কথা উঠলেই টিকি-দাড়ি সব মুহুর্তের মাঝে গজিয়ে ওঠে। আমার কাছে এ এক রহস্য। একজন পদার্থবিজ্ঞানী যিনি যে কোন কিছুর বিচারে অত্যন্ত বুদ্ধিমান মানুষ--তিনি কী করে এই আদিম হঠকারী প্রতিষ্ঠানটির আসল রূপ দেখতে পান না? এর একটা মাত্রই ব্যাখ্যা হতে পারে---ধর্মের বিষয় আসলেই তিনি তার মস্তিষ্কের এনালিটিক্যাল অংশটুকুর সুইচ বন্ধ করে দেন। কিভাবে সেটা সম্ভব আমি জানিনা--তবে নিশ্চিত ভাবেই এটা করা হচ্ছে। শমশের আলীর ক্লাশ আমি নিজে করেছি। মুগ্ধ হয়েছি তার জ্ঞানের গভীরতায় ও বৌদ্ধিক প্রাখর্যে। সেই একই লোককে যখন দেখি সন্ধ্যে বেলায় কোরান শরীফের অত্যন্ত স্থুল কিছু আয়াতের 'বৈজ্ঞানিক' ব্যাখ্যা দেবার জন্যে হাস্যকর প্রয়াস চালাতে তখন আমি কেবল অবাক হই না---দুঃখিতও হই। এইটা প্রতিভার একটা মারাত্মক অপচয় বললে কম বলা হয়।

আমাদের শিক্ষিত দ্বিতীয় মহলের অবস্থা আরো করুণ----তারা জানে যে জিনিসটা হাস্যকর। কিন্তু সাহসের অভাবে তারা সেইটা মাথা পেতে নিয়ে নেন। মনে কোন সাড় নেই--কিন্তু লোকে কী বলবে, এইটা ভেবে প্রতি শুক্রবার জুম্মার নামাযে যান, বছরে দুই বার ঈদের জামাতে যান। রোজার সময়ে হয়ত রোজা রাখারও চেষ্টা করেন। আমার কেন জানি মনে হয় প্রথম মহলের শিক্ষিত গ্রুপ আমাদের যত না ক্ষতি করছেন---এইসব নপুংসক দ্বিতীয় মহল ক্ষতি করছেন আরো বেশি।

দ্বিতীয় মহলের লোকজন হয়ত বলবেন, আমাদের প্রাণের নিশ্চয়তা দিন, আমাদের পরিবারের সুরক্ষা দিন--তারপর দেখেন আমরা কী করি। এই নিশ্চয়তা, সুরক্ষা দেবে কে? এগুলো দেবার দায়িত্ব সরকারের। এবং আমার বক্তব্য এইখানেই মুখ থুবড়ে পড়ে যাবে। সরকার। ধর্মের কোন ইস্যুতে আমি হয়ত আমার পাশের চরম আস্তিক মানুষকেও ভুল করে নির্ভর করে ফেলতে পারি--কিন্তু আমাদের দেশের সরকার--হোক সে বর্তমান বা বিগত---কখনোই নির্ভরতার স্থান নয়। বর্তমান সরকার কাগজকলমে সবচেয়ে হিন্দু-সহনশীল সরকার হবার কথা হলেও গত বছর থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত যত জ্বালাও-পোড়াও-হঠাও ঘটেছে তাদের উপর, সেই ক্ষেত্রে সরকার আশ্চর্যরকমের নীরব। মন্দির-গির্জা ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যায়--সরকার বসে বসে তসবী টিপে যায়। সরকার যেখানে হিন্দুদের, বৌদ্ধদের, খ্রীষ্টানদের নিরাপত্তা দিতে অনিচ্ছুক, সেইখানে তারা কী আশায় দেশে রয়ে যান---সেটা এক ভীষন আশ্চর্যের বিষয় বটে।

বার্ট্রান্ড রাসেলকে একবার জিজ্ঞেস করা হয়েছিল--মানব সভ্যতার ইতিহাসে মানুষের জন্যে সবচেয়ে ক্ষতিকর জিনিস কী আবিষ্কৃত হয়েছিল? তাঁর উত্তর ছিল-ধর্ম। পালটা প্রশ্ন করা হয়েছিল---ধর্ম কী আসলেই এতই খারাপ? কোন ভাল কিছুই কি ধর্ম এই পৃথিবীতে আনে নি? কোন ভাল কিছুই কি ধর্ম করে নি? উত্তরে রাসেল হেসে বলেছিলেন--করেছে, নিশ্চয়ই ভাল কিছু করেছে---তবে অনেক অনেক খানি খারাপ করার পরে সামান্য একটু ভাল করায় কিছু আসে যায় না।

আমার মনে হয় আমাদের সময় হয়েছে কথা গুলো সম্যক ভাবে উপলব্ধি করার।

অরফিয়াস's picture

চমৎকার সারমর্ম হয়েছে। ধন্যবাদ আপনাকে। চলুক

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

তারেক অণু's picture
এক লহমা's picture

দরকারী লেখা। অসাধারণ অনেক মন্তব্য ও এসেছে। চলুক

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

অরফিয়াস's picture

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ's picture

উত্তম জাঝা!

____________________________

অরফিয়াস's picture

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

অতিথি লেখক's picture

চলুক

“মডারেট ধার্মিকরা” প্রয়োজনে শফি সম্পর্কেও সহীহ্ ধর্মের চর্চা করে না বলে মাথা নাড়িয়ে গাঁইগুঁই করতে পারে- -সে সম্ভাবনা কিঞ্চিৎ হলেও যে আছে, তা জানা ছিল না।
---

The world will not be destroyed by those who do evil, but by those who watch them without doing anything'

কড়িকাঠুরে

অরফিয়াস's picture

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

মৃত্যুময় ঈষৎ's picture

দারুণ লেখা হৈছে, অরফিয়াস চলুক

বিজ্ঞান আর সংস্কৃতি দিয়া মৌলবাদ দূর করতে হবে, এর চেয়ে বড় ওষুধ নাই!


_____________________
Give Her Freedom!

অরফিয়াস's picture

Quote:
বিজ্ঞান আর সংস্কৃতি দিয়া মৌলবাদ দূর করতে হবে, এর চেয়ে বড় ওষুধ নাই!

চলুক

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

অর্বাচীন's picture

উত্তম জাঝা!

অরফিয়াস's picture

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

রানা মেহের's picture

লেখা অনেক ভাল লাগলো।

বলাই দা, আপনার মন্তব্যগুলো পড়ে হতাশ লাগলো। খুব হতাশ

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

অরফিয়াস's picture

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

অছ্যুৎ বলাই's picture

হতাশার স্পেসিফিক কারণগুলো জানতে পারি?

আমি হুদাকামে অন্যকে ধর্মে বিশ্বাস-অবিশ্বাসের জন্য আক্রমণের বিপক্ষে বলেছি। এটার জন্য হতাশ হলে আমি নিরূপায়। আমি কনফিডেন্ট আমি ভুলপথে নাই।

অফটপিক:
এই পোস্টটা আরেকটু ফলো করে ফ্রেন্ডলিস্টে ক্লিনআপ দেয়া লাগবে মনে হয়। ছাগু বা খাসি (উগ্রআস্তিক বা উগ্রনাস্তিক) মুক্ত ফ্রেন্ড দরকার।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

Post new comment

The content of this field is kept private and will not be shown publicly.